নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
ছেলে-মেয়ে বড় হলে বাংলাদেশে এখনো বিয়ের জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা পাত্র-পাত্রী খুঁজে ফিরি। নিজের সামাজিক অবস্থান ভেদে আমরা নানা রকমের পাত্র-পাত্রী খোঁজ করি। পাত্রী খুঁজতে গিয়ে পাত্রীর বাব বা মা কেমন হতে হবে, পাত্রীর রূপ, মেধা, অন্যান্য গুণ, বংশ মর্যাদা, উচ্চতা, দীঘল কালো চুল না খাটো চুল, চোখ ও দেহের গড়ন, আর্থ-সামাজিক অবস্থান, ইত্যাদির যে বর্ণনা দেওয়া হয়, তা বাস্তবে পাওয়া যায় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মনে হয় মহাপ্রভুর কাছে এইটার পুরা বিবরণ দিয়ে একটা অর্ডার প্লেস করতে পারলে হয়তো উনি সেইমত তৈরি করে দিতে পারবেন। তাই প্রায় সব ক্ষেত্রেই তখন তাঁদের চাহিদার তালিকা ১০/১২ টা থেকে চলে কাট-ছাঁট, আপোষ। এভাবে তালিকা ছোট হতে হতে কখনো কখনো ৬/৭ টায় নেমে আসে। তার পরে যোগাড় হয় পাত্র বা পাত্রীর। হয় বিয়ে, সামাজিক বা পারিবারিক ভাবে।
আপোষ শুধু ছেলে মেয়েদের বিয়ে করাতে বা দেওয়াতেই নয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা নিরন্তর আপোষ করে চলেছি, নানা ভাবে, নানা রূপে। কারণ হচ্ছে সময়ের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো বা অ্যাডাপ্টেশন। সময়ের সঙ্গ খাপ খাওয়াতে না পেরে বহু প্রাণী, প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গেছে। সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া কত জরুরি তা ইদানীং আমাদের দেশের মানুষ বুঝতে শুরু করেছেন। সমাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতিতেও আপোষ করা হচ্ছেন দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে। আজকাল আপোষ আর সময়ের সাথে খাপ খাওয়ানোর কৌশল খুব জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের রাজনীতিতেও।
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাত্র ৯ দিনের মাথায় অর্থাৎ ২৪ আগস্ট ১৯৭৫ এ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন জিয়াউর রহমান। আর মোশতাক সরকার ছিল সম্পূর্ণভাবে সেনাসমর্থিত সরকার। ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসের পরেই জিয়া শুরু করেন তাঁর আসল আপোষ আপোষ খেলা। তিনি পলিটিশিয়ানদের জন্য ‘পলিটিক্স ডিফিক্যাল্ট’ করার মিশনে নামেন। জেলে বন্দি রাজাকার ও চৈনিক বাম যাদু মিয়াদের মত বা তার চেয়েও কুখ্যাত রাজাকার, ধর্ষক, খুনি, সন্ত্রাসী, জাসদের গণবাহিনী নামের সন্ত্রাসী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেভেন মার্ডারের সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ইত্যাদি তামাম লোক যারা বাংলাদেশ ও মুজিব সরকার বিরোধী ছিল তাঁদের মুক্ত করে দিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দিলেন ইনডেমনিটি, ইত্যাদি। ফলে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিগুলো কোণঠাসা হয়ে পড়ল, নিজের দেশে তারা যাতে ২য় শ্রেণির নাগরিকদের মতো বসবাস করে তাঁর সমস্ত আয়োজন রাষ্ট্রীয়ভাবেই করে দিলেন জিয়া। ১৯৭৫ সালে পরে শুরু করে মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত এবং তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া আজও ‘পলিটিশিয়ানদের জন্য পলিটিক্স ডিফিক্যাল্ট’ করে রেখেছেন। ১৯৭৩ সালে সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সেখানে প্রায় ১০০ জনের বেশি সাংসদ ছিলেন পেশাজীবী মানুষদের মধ্য থেকে যাতে তাঁরা দেশের বিভিন্ন খাতের সত্যিকারের প্রতিনিধি হয়ে দেশের কল্যাণে আইন প্রণয়নসহ নানা কাজ করতে পারেন সদ্য স্বাধীন একটা দেশে। কিন্তু এখন কতজন সংসদ আছে পেশাজীবী? ডিফিক্যাল্ট টু অ্যানসার।
জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ, বেগম খালেদা জিয়া সবাই ‘পলিটিশিয়ানদের জন্য পলিটিক্স ডিফিক্যাল্ট’ করে দেওয়ার পথে হেঁটে হেঁটে কুখ্যাত রাজাকার, অর্থলোভী ব্যবসায়ী, পেশীশক্তির পূজারী, সন্ত্রাসী, অবসরপ্রাপ্ত আমলা, লুটেরাদের রাজনীতিতে এনে পদ-পদবী ছাড়াও নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। যাতে স্বাধীনতার পক্ষের কোনো শক্তি কোনোদিন আর ক্ষমতায় না আসতে পারে। এসবের বাইরেও ছিল নানামুখী ষড়যন্ত্র, যার নমুনা ১৯৯১ সালের নির্বাচনের ফল। জিয়াগংদের কূটকৌশলের ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পড়ে যায় চরম নৈতিক চাপে। উপায় খুঁজতে শুরু করে তারা, বিশেষ করে দলের নেতা শেখ হাসিনা। তখন খোঁজা শুরু করেন কাদের সঙ্গে অর্থাৎ কোন কোন দলের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আপোষ করা যায়, কার সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদী নির্বাচনী আঁতাত বা জোট করা যায়, কিছু ছাড় দিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে। বাকশাল গঠনের সময় জাসদ বাদে প্রায় সব দলকে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন, সঙ্গে নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৬ সালে নির্বাচনে আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিল ১৫ দল আর বিএনপি’র নেতৃত্বে ছিল ৭ দল, জামায়াত আলাদা আলাদা করে আন্দোলন করেছে। কোনো দিন আওয়ামী লীগ জামায়াতের সঙ্গে জোট করেনি, জামায়াতের কৌশল ছিল এই যে, তারা ১৫ দল, ৭, দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যাবে। তবে ১৯৯১ সালের পরে একটি ঘটনা ঘটে, তখন বিএনপি ক্ষমতায়। সংসদের একটি ওয়াক আউটের ঘটনার পর বিরোধীদলের নেত্রীর সংবাদ সম্মেলনের টেবিলের পাশাপাশি চেয়ারে এসে বসেছিলেন জামায়াতের মতিউর রহমান নিজামী, জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ আরও কয়েকজন। শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের কেউ নিজামীকে সেখানে ডেকে আনেননি। কৌশলী নিজামী নিজের একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরির আশায় বিরোধীদলের একজন এমপির দাবিতে বিরোধীদলের নেত্রীর সংবাদ সম্মেলনের টেবিলে এসে বসে পড়েছিলেন। কিন্তু এ নিয়ে তখনই তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। কারণ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগ এসব কিছু পারে না। সেই বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ তাৎক্ষণিক সতর্ক হয়। এরপর আর কোনোদিন নিজামী বা জামায়াতের কেউ সেই মঞ্চে এসে বসতে পারেননি। কিন্তু এটাকে ভিত্তি করে এখনো প্রতিদিন মিথ্যাচার হয় বিভ্রান্ত হয় অনেকে। আসল সত্য জানার আগ্রহ খুব কমের মধ্যে।
পরবর্তীতে দেশের রাজনীতিসহ নানা ঘটনায় আওয়ামী লীগ আর তাদের পুরাতন মিত্রদের কাছে এটা স্পষ্ট হয় যে, মুখে নৈতিকতার কথা বললেও আসলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিগুলো বিএনপি’কে সঙ্গে নিয়ে মেরে কেটে বা টাকা দিয়ে বিজয়ী হবে এমন লোককে মনোনয়ন দেয়, দিয়েছে এবং দেবে এবং ক্ষমতা দখল করবে; সেখানে নীতি নৈতিকতার কোনো বালাই নেই। তাই ১৯৯১ সালের পর থেকেই আওয়ামীলীগ দলের মূল চেতনা ঠিক রেখে তাদের পুরাতন মিত্রদের সঙ্গে অল্পবিস্তর আপোষ করা শুরু করে। তাই গড়ে ওঠে ১৪ দলীয় নির্বাচনী জোট। এই প্রক্রিয়ায় ইনু সাহেবের জাসদ, এরশাদ, অনেক অবসরপ্রাপ্ত আমলা, ব্যবসায়ীর সঙ্গে কিছু গুন্ডা, পান্ডা, দলে। আমলা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর একটা বিরাট অংশ যাদের শেকড় ১৯৭১ সালে পাকিদের পক্ষে ছিল তাঁরা বলতে গেলে পাঁচ ওয়াক্তে বা প্রহর গুনে গুনে রাজনীতিকদের গালি দেয়, দোষ দেয় দেশে ঘটে যাওয়া তাবৎ অপকর্মের; আর সুনাম নেন তাঁরা নিজে। তাঁরা ক্ষমতায় গিয়ে মন্ত্রী হলে ‘ঝাঁকুনি তত্ত্বে’র বা ‘আল্লার মাল আল্লায় নিছে’ এমন তত্ত্বের জন্ম দেন, যখন মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনুলিখন করে মুক্তিযুদ্ধ বা বঙ্গবন্ধুকে বিতর্কিত করে টাকা কামান। জয়নাল হাজারী, শামীম ওসমানরা জন্ম নেয় তখন। তাই কিছু হাইপার দেশ প্রেমিকদের মধ্য থেকেই কখনো কখনো, এই ‘কাউয়া প্রজাতির রাজনীতিবিদদের মুখে লাগাম টানতে পারে, পারে মানবতাবিরোধী ও তাদের দোসরদের লোভের আগুনে বরফ পানি ঢেলে দিতে। তাই এরা দলে অপরিত্যাজ্য ঝামেলা হয়ে রয়ে যায়, দিনের পর দিন, যতদিন তাঁরা সাধারণ মানুষের জন্য চরম হুমকি হয়ে না যায়। যদিও সব শেষে সব দোষ হয় দলের নেতা আর পেশাদার পলিটিশিয়ানদের। অনেকে বলে এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার ‘কুকুরকে মুগুর দিয়ে সোজা’ করার নীতি বা কৌশল!
বিএনপি বা তার মিত্রদের সঙ্গে ‘কাউয়া প্রজাতির রাজনীতিবিদ’, আর পল্টিবাজদের মাখামাখি চরমে। তাঁরা নীতি নৈতিকতা, গণতন্ত্রের চরম ধ্বজাধারী হয়ে নানা উপদেশ বিতরণ করেন, যা তাঁরা নিজে পালন করেন না কখনোই। গণতন্ত্রের জন্য কাঁদতে কাঁদতে গলা বুক বেয়ে নোনা জলে শরীর ভিজে যায়। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সময় গণতন্ত্রকে বাক্সে বন্দি রাখে ধানমণ্ডি ৩২ নং এ যায় বন্দুক হাতে গণতন্ত্রের প্রবাদ পুরুষকে হত্যা করতে, যিনি বেসিক ডেমোক্রেসি থেকে নারীসহ সর্ব সাধারণের ভোটের জন্য সারাজীবন লড়াই করে তা’ অর্জন করেছেন এই বাংলায়। তাঁরা ও তাঁদের মিত্ররা ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গণতন্ত্রকে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে রেখে মারাত্মক যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে কেড়ে নেয় সিকি শত প্রাণ, আহত আর পঙ্গু করেছে শতাধিক নারী, পুরুষ, শিশুকে। এই উদাহরণ দিতে গেলে তাঁরা ও তাঁদের পক্ষের সুশীলগণ বলে উঠেন, ‘তাহারা অধম বলিয়া তুমি কী উত্তম হইবে না?’ কি চমৎকার বচন! তাঁরা বুঝে গেছেন যে, জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের খেলা ধরে ফেলেছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৌশলে তাঁরা এখন পর্যন্ত প্রায় ধরাশায়ী। প্রতিহিংসা আর সাম্প্রদায়িকতার দুধ কলা দিয়ে লালন পালন করা হেফাজত আন্দোলন এখন শেখ হাসিনার কথায় সবকিছু (নষ্টামি ছাড়া) করতে ওয়াদাবদ্ধ। তাই হতাশ হয়ে সেই তাঁরা গড়ে তুলেছে নানা জোট, উপ-জোট ইত্যাদি, সঙ্গে নিয়ে নষ্ট ভ্রষ্টদের। গণতন্ত্র মানবাধিকার উদ্ধারে একজোট হয়ে সব কিছু গেলো গেলো বলে চিৎকার করছেন তাঁরা। এটা শুনে একটা কথা মনে পড়ে:
তুমি যদি করো প্রেম
হয় সেটা লীলা,
আমি যদি করি প্রেম
সেটা নষ্টামি খেলা।
লেখক: উন্নয়ন কর্মী ও কলামিস্ট
তথ্যঋণ: বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল, জুলফিকার আলী, অন্যান্য
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।