নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫৮ এএম, ১০ জানুয়ারী, ২০১৯
চারিদিকে বাড়ছে দূষণ। সেই দূষণের হাত থেকে রেহাই নেই ঘরের মধ্যে বসবাস করলেও। বাইরের দূষণ নির্দ্বিধায় চলে আসছে শোবার ঘরে, রান্না ঘরে কিংবা বসে থাকার স্থানটিতেও। ঘরকে জীবাণু মুক্ত করার জন্য ব্যবহার করছি অতি উচ্চ শক্তি সম্পন্ন এসি। খরচ করছি অতিমাত্রায় বিদ্যুৎ। ভুগতে হচ্ছে হরেক রকম স্বাস্থ্যগত সমস্যায়। আর একটি উন্নয়নশীল দেশে ভবিষ্যতে দূষণমুক্ত পরিবেশের অঙ্গিকার হবে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জিং আমাদের জন্য প্রায় সব সেক্টরে। তবে আমরা আমাদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের মাধ্যমে কিছুটা হলেও আমাদের নিজেদের নিজ গৃহ দূষণমুক্ত রাখতে পারি সুস্বাস্থ্যের জন্য। প্রয়োজন সচেতনতার। তবে সাধারণ নগরকেন্দ্রিক মানুষজন কী ভাবছেন এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি একটি জরিপ করা হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধীনে ‘এনভাইরোমেন্টাল ল্যাব’ এর সহায়তায় বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে। যা এখনো চলমান। জরিপটিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক ডঃ মাসা নগুচি। ধারণা করা হচ্ছে জরিপের কাজ সম্পূর্ণরূপে শেষ হলে সেটি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রকাশ করা হবে সব ধরনের তথ্য দিয়ে।
এক্ষেত্রে লক্ষ্য করা হয়েছে যে, ডাটা সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোন ধরনের নির্ভরতা যেন কাজ না করে। এমনকি ডাটা সংগ্রহের ক্ষেত্রে বয়সের একটি বিশেষ ভূমিকা আছে। সেক্ষেত্রে ১৮ বছরের নিচে কাউকে প্রশ্নপত্র পূরণ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি কাউকে কোন কিছু সম্পর্কে উত্তর কী হবে সেটি বলা হয়নি। সবাইকে উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে কিছু কিছু ঘরবাড়ি সম্পর্কিত বিষয়াদি শুধুমাত্র ধারণা দেওয়া হয়েছে, যেন তারা সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারেন। প্রশ্নপত্রেকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে বসবাসকারীদের জন্য আর্থ-সামাজিক বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সকলের বয়স, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, চাকরি, এবং কর্মক্ষেত্র নিয়ে জানতে চাওয়া হযেছে। পরবর্তীতে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, সর্বমোট পরিবারের সদস্য সংখ্যা এবং তাদের মাসিক আয়-ব্যয় সম্পর্কে তথ্য দিতে বলা হয়েছে। যেহেতু প্রশ্নপত্রে কারো নাম লিখতে হবে না তাই সবাই সঠিকভাবে নির্ভয়ে তাদের তথ্যগুলো দিতে পারবে। এমনকি তারা বর্তমানে যে বাসায় বসবাস করছেন সে স্থানের বর্তমান অবস্থা, বাসা পরিবর্তনের তথ্য, বাসার প্রকারভেদ, নির্মাণ উপকরণ, নির্মাণের সময়কাল এবং কতদিন হলো তারা সে বাসায় বসবাস করছেন সেসব বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। প্রতিটি প্রশ্নের বিপরীতে সর্বনিম্ন ৪টি উত্তর দেওয়া হয়েছিল। তাই সবাই তাদের জন্য প্রযোজ্য সঠিক উত্তরে টিক মার্ক দিয়েছেন। এক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্তদের কে বেশী প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এই জরিপের ক্ষেত্রে। কারণ বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষিতে শহরকেন্দ্রিক অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় করা কিংবা বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করা তাদের জন্য সম্ভবপর বিষয় হিসেবে বিবেচনায় আনা হয়েছে। প্রশ্নপত্রের ২য় অংশে বসবাসকারীদের তাদের নিজ বাড়ীতে পরিবেশগত স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়েছে। প্রশ্নের ধরন নিম্নে বর্ণনা করা হলো:
প্রথম প্রশ্ন ছিলো স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকারভেদ নিয়ে, যা পরিবেশগত কারণে অনেক সময় হয়ে থাকে। যেমন সর্দি-কাশি, দুর্বলতা, চুল পড়া, এলার্জি, ডায়াবেটিস, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, মাথা ব্যথা, ব্লাড প্রেশার, চোখের সমস্যা ইত্যাদির উপর। আর যদি উপরোক্ত কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সেগুলো সাধারণত কখন হয়, কোন স্থানে বেশী হয় যেমন: শোবার ঘরে, বসার ঘরে কিংবা রান্নাঘরে ইত্যাদি। এমনকি দিনের কোন সময় গুলোতে এগুলো বেশী হয় সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছিল। এর পরবর্তী অংশে জানতে চাওয়া হয়েছিল বসবাসের স্থানটির আশপাশের অবস্থা কেমন সেগুলোর উপর। যেমন বসবাসের স্থানের সঙ্গে কোন ময়লা রাখার স্থান কিংবা গাড়ী রাখার স্থান সংযুক্ত আছে কিনা। বাসায় কোন পোষা প্রাণী আছে কিনা কিংবা বাসায় বসবাসরত যে কারো মধ্যে এমন কিছু অভ্যাস আছে কিনা যা ঘরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ নষ্ট করতে পারে, এমনকি নোংরা করতে পারে। এমনকি গত তিন মাসের মধ্যে বাসার কার্পেট কিংবা আসবাবপত্রের কোন ধরনের পরিবর্তন হয়েছে কিনা- এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে। রান্না ঘরের ক্ষেত্রে জানতে চাওয়া হয়েছে কোন ধরণের চুলা ব্যবহার করা হচ্ছে, কতক্ষণ রান্না হচ্ছে, রান্না ঘরের বাতাস বাইরে বের করে দেবার জন্য কোন সিস্টেম চালু আছে কিনা? বাড়ীতে প্রায়ই এরোসল ব্যবহার হয় কিনা এবং রুম ভেন্টিলেশন বাড়ীতে থাকলে তার অবস্থান কোথায় কোথায় আছে প্রশ্নপ্রত্রে সেগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। জানতে চাওয়া হয়েছিল বাড়ীতে কোন সময় কোন ধরণের পরিবেশগত সমস্যার অনুভূতি হয় কিনা যেমন ঠাণ্ডা-গরম লাগা প্রভৃতি এবং সেটি কোন সময়ে। সেক্ষেত্রে ‘এসরে’ কোডের ছয় মাত্রার কমফোর্ট স্কেলকে বিবেচনায় আনা হয়েছে। তাছাড়া ঘরে অবস্থানকালে কোন ধরনের খারাপ গন্ধ অনুভূত হয় কিনা এগুলোও জানতে চাওয়া হয়েছিল। ছাদ দিয়ে পানি পড়ে কিনা কিংবা ঘরের মধ্যে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা দেখা যায় কিনা বিষয়টিকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে গুরুত্ব সহকারে।
সবশেষে জানতে চাওয়া হয়েছে যদি তারা মনে করেন তাদের বসবাসের স্থানটির নকঁশা পরিবর্তন কিংবা অন্য কোন পরিবর্ধন তারা আশা করেন তাহলে সেগুলো কি হতে পারে। কারণ হয়তো এই জরিপে অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত নাও থাকতে পারে, তাই তাদের চিন্তা গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই জরিপটি করে যে ধারণা পাওয়া গেল আশা করা যায় সেটি আমাদের শহরকেন্দ্রিক বর্তমান আবাসন গুলোর জন্য মারাত্মকভাবে উপযোগী হবে, বিশেষ করে নতুন ভবন নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে নকশা প্রণয়ণের ক্ষেত্রে। জরিপে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যগত সমস্যা প্রায় সব আবাসনের বসবাসকারীদের মধ্যে বিদ্যমান। সেক্ষেত্রে ঠাণ্ডা লাগা, মাথা ঝিমঝিম করা, দুর্বলতা, একঘেয়েমী, সর্দি-কাশি, চোখের সমস্যা এমনকি ডায়াবেটিস রোগের প্রকোপ সবথেকে বেশী। তাছাড়া অনেকেরই শরীরের স্কিনে (চামড়ায়) অনেক ধরনের ভাইরাস জনিত সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। যদিও আমরা স্বীকার করি শুধুমাত্র ঘরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশই এসব রোগের মূল উৎস (কারণ) না। তথাপি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ঘরের অভ্যন্তরীণ সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ বসবাসকারিকে অনেক বেশী সুস্থ রাখতে সক্ষম। তাই আমাদের বর্তমানে কী ধরনের ব্যবস্থাপনা নিলে দূষণযুক্ত পরিবেশ থেকে মুক্ত থাকতে পারবো তার জন্য জনমত যাচাই এর প্রধান লক্ষ্য। সেক্ষেত্রে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষজন মনে করেন তাদের বসবাসের স্থানটির প্রধান সমস্যা পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশনের (বায়ূ চলাচল) সুবিধা না থাকা। বিশেষ করে ক্রস ভেন্টিলেশন এর অপর্যাপ্ততাকে এক্ষেত্রে বেশী প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া অনেকেই মনে করেন বসবাসের স্থানে পর্যাপ্ত সূর্যের আলো না পৌছানোর কারণে স্বাস্থ্যগত অনেক সমস্যা দেখা যায় বিভিন্ন সময়ে। বিশেষ করে ঘরের ভেতরের স্যাঁতসেঁতে ভাবের কারণে সর্দি-কাশি সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা প্রকোপ ভাবে দেখা দেয় তাদের ধারণা অনুযায়ী। এছাড়াও গৃহ অভ্যন্তরে গাছ রোপন কিংবা ইনডোর প্লান্ট, ছাদেও খোলা জায়গায় গাছ লাগানো, টয়লেটের ভেন্টিলেশনকে সঠিক স্থানে রাখা, বড় বারান্দার ব্যাবহারকে অনেকে প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন, যার মাধ্যমে বসবাসের স্থানটিকে স্বাস্থ্যসম্মত রাখা সম্ভব। কারণ মনে রাখতে হবে, সুস্বাস্থ্যই সকল কিছুর মূল।
লেখক: সজল চৌধুরী, শিক্ষক ও পরিবেশ বিষয়ক স্থাপত্য গবেষক স্থাপত্য বিভাগ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম।
বাংলা ইনসাইডার/বিকে/এমআর
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।