নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৯
দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের সাথে জমি অধিগ্রহণ খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। জমি অধিগ্রহণ আমাদের এই উপমহাদেশে খুব বড় একটা ইস্যু। অনেকে জানেন যে মাত্র একহাত জমির জন্যেও মার্ডার হয়েছে কয়েকজন। জমির ব্যাপারে কেউ কোন ছাড় দিতে চান না। আমাদের সামাজিক ব্যবস্থার জন্য গড়ে ওঠা মানসিকতাই এর মূল কারণ। আমাদের দেশের উন্নয়ন মহাযজ্ঞে ভৌত অবকাঠামোগত দৃশ্যমান প্রকল্পের সংখ্যা অনেক বেশি তাই জমি অধিগ্রহণ সঠিক সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে একটা বিরাট ভূমিকা রাখে।
অভিযোগে জানা যায় যে, স্থাবর সম্পত্তি ম্যানুয়াল ১৯৯৭ এর ৫০ অনুচ্ছেদ আর ১৯৮২ সালের এতদসংক্রান্ত অধ্যাদেশের ফলে অধিগ্রহণ করা জমি নিয়ে নানা মামলার জট আর তার প্রতিফলন আসে সঠিক সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায়। অন্য দিকে সাধারণের মানুষের মধ্যে সরকারের উপর চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয় অধিগ্রহণ করা জমির টাকা পেতে ‘ঘুষ বাণিজ্য’ আর হয়রানির জন্য। আর যে এলাকার জমি অধিগ্রহণ করা হয় সেই এলাকার মানুষের সততাকে পুরোপুরি ধ্বংস করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শিল্প কারখানা, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেল পথ, সড়ক বা সেতুর প্রবেশপথ তৈরিতে আমাদের মত দেশে সাধারণত জমি অধিগ্রহণ করা হয়ে থাকে। প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের আগে সম্ভাব্য এলাকায় তৃতীয় পক্ষ (আমাদের দেশে সাধারণত এনজিও) দিয়ে জরিপ চালিয়ে দেখা হয়, যে জমি অধিগ্রহণ করা হবে সেখানে কোন স্থাপনা আছে কী না। একনেকে প্রকল্প পাশ হওয়ার সাথে সাথে খবরটি সংশ্লিষ্ট এলাকায় চাউর হয়ে যায়। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীদের মাধ্যমে আর পরে জরিপ কাজে নিযুক্ত এনজিওর কুপরামর্শে রাতারাতি, জমি অধিগ্রহণ করা হবে এমন সব এলাকায়, ফাঁকা জায়গায় রাতারাতি স্থাপনা তৈরি হয়ে যায় বেশী টাকা পাওয়ার আশায়।
যাই হউক না কেন ক্ষতি পূরণের টাকা পেতে বহু মানুষকে তাদের ঘটি বাটি বেচতে হয়, ঘুষ দিয়েও ক্ষতিপূরণের টাকা পান না। কেন পান না সে কথা বিস্তারিত না বললে পরিষ্কার হবে না। তবুও বিভিন্ন ধরণের উদাহরণ দিয়ে কিছুটা আভাস দেওয়ার চেষ্টা করা যাতে পারে। যদিও জমি অধিগ্রহণ করা সব এলাকার চিত্র এক না। যাদের পৈত্রিক সম্পত্তি তাঁদের অধিকাংশের জমি মিউটেশন করা থাকে না, টাকার অভাব আর স্বল্প শিক্ষিত এসব সরল মানুষদের সম্পত্তি সংক্রান্ত জ্ঞানের অভাবে। তাই তাঁদের নাম ডিসি অফিসের ভূমি রেকর্ডে থাকে না। আবার বহু জমি বিক্রি হলেও তার নাম জারি বা মিউটেশনে স্থানীয় ইউনিয়ন তহসীল অফিস হয়ে থানা ভূমি অফিস ঘুরে ডিসি অফিসের ভলিউমে নাম ওঠাতে কয়েক বছর লেগে যায়। জমি অধিগ্রহণের পরে ক্ষতিপূরণের টাকার নোটিশ যায় ডিসি অফিসের রেকর্ড বই অনুযায়ী। তাতেই হয় জমজমাট ‘ঘুষ বাণিজ্য’। যারা এসব না দিয়ে তাড়াতাড়ি মিউটেশন করাতে যান, তখন ফাইল নড়ে শম্ভুক গতিতে, টাকা দিলেও স্পিড পায় না। অভিযোগ আছে যে ইউনিয়ন তহসীলদারের নিয়োগকর্তা হচ্ছে ডিসি অফিস। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ডিসি অফিস থকে যে ‘ওহি নাজিল’ হয় তাই তামিল করেন ইউনিয়ন তহসীল অফিস। এমপি মন্ত্রী কারো কথাই তারা শোনেন না, কারণ তাঁদের এসিআর লেখার ক্ষমতা এমপি মন্ত্রী কারো নেই। হাতে নাতে ধরা পড়ার পরেও একজন ছোট্ট কর্মচারীর চাকরী খাওয়া তো দূরে থাক তাঁকে বদলিও করতে পারেন না এমন কি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালে বাংলাদেশের একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকের খবর ছিল ‘চট্টগ্রাম জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কার্যালয়ের (এলএ) শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ রোববার দুপুরে আকস্মিক পরিদর্শনে যান (বর্তমান ভূমি মন্ত্রী) তৎকালীন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। সেখানে কয়েকজন সেবাগ্রহিতা তাঁর কাছে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন। মন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকটি অভিযোগ যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কার্যালয়ের তিন কর্মচারীকে তাৎক্ষণিক বদলির নির্দেশ দেন তিনি।
ভূমি মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে মনছুর আলী নামের এক সেবাগ্রহিতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই অফিসে টাকা ছাড়া ফাইল নড়ে না। আমি এক বছর ধরে ঘুরছি আমার জমি অধিগ্রহণের টাকার জন্য’। ওমর উল্লাহ নামের আরেক সেবাগ্রহিতা প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, ‘ঘুষ ছাড়া এখানে ফাইল নড়ে না।’ এরপর একে একে আরও আট-নয়জন মন্ত্রীর কাছে সেবা পেতে তাঁদের ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার কথা তুলে ধরেন। ভূমি অধিগ্রহণ কার্যালয়ের কর্মচারী আহমদ করিম, নজরুল ইসলাম, মো. হানিফ এবং সার্ভেয়ার সৈকত চাকমা ও মো. মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে বেশির ভাগ সেবাগ্রহিতা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। তাঁদের প্রধান অভিযোগ ছিল, ভূমি অধিগ্রহণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ যে টাকা পান, সেই টাকা ছাড় করাতে কমিশন নেওয়া হয়।
পরে কার্যালয়ের তিন শিকলবাহক (চেইনম্যান) আহমদ করিম, নজরুল ইসলাম ও মো. হানিফকে তাৎক্ষণিক বদলির নির্দেশ দেন মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। মৌখিকভাবে সতর্ক করেন সার্ভেয়ার সৈকত চাকমা ও মো. মোবারক হোসেনকে। এছাড়া রফিক আহমদ নামের এক দালালকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তির নির্দেশ দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত রফিককে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেন।’
পরে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আহমদ করিমকে কয়েক দিন আগে বদলি করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। সেটা এখনো কার্যকর হয়নি। এখন করিমসহ তিনজনকে তাৎক্ষণিক বদলির নির্দেশ দিয়েছি’।
পত্রিকায় প্রকাশিত ২০১৭ সালের আরেকটি খবরে বলা হয় যে, ‘ঢাকার নর্দারটেকের (বর্তমান উত্তরার সাত নম্বর সেক্টর) আদি বাসিন্দা মোহর আলী ২০০ বিঘা জমির মালিক ছিলেন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। উত্তরা মডেল টাউনের ৬ ও ৭ নম্বর সেক্টরের বেশির ভাগ বাড়িঘর গড়ে উঠেছে সেই জমির ওপর। অথচ ঢাকা শহরে বসবাসের জন্য এক টুকরা জমি পর্যন্ত মেহের আলীর পরিবারের জোটেনি। পাকিস্তান আমলে তাদের এ বিপুল জমি অধিগ্রহণ হলেও দীর্ঘ ৫০ বছরেও ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি পরিবারটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোহর আলীর পরিবারের সদস্যরা এখন অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন যাপন করছে। গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার আন্ধারমানিক নামে অজপাড়াগাঁয়ে এক টুকরা জমিতে আশ্রয় নিয়েছে তারা। টাকার অভাবে এ পরিবারের অনেকেই বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। মোহর আলীর নাতি মো. খুরশীদ আলম উত্তরার আজমপুরে সাইনবোর্ড লিখে জীবন ধারণ করতেন। কিছু দিন আগে তিনিও ব্ল্যাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।’
আমাদের প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা ঘোষণা করেছেন। তাই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করে র্নীতির দমনে সবার আগে প্রয়োজন দেশের বিদ্যমান আইনের সংশোধন যেমনটি করেছিলো ভারত সরকার ২০১৩ সালে। দিল্লী মেট্রো ৩য় পর্যায় বাস্তবায়নে অনেক দেরি হওয়ার কারণে সংসদে জমি অধিগ্রহণ আইন ২০১৩ পাশ করা হয়। আমাদের দেশে তা কীভাবে ভূমি অধিগ্রহণ আইন সহজ করা যায় তা এখুনি ভাবতে হবে। উন্নয়নের ট্রেনে চেপে বসা বাংলাদেশকে পিছু টেনে রাখতে চায় অনেকেই। কারণ বিদ্যমান আইনে তাদের অনেকের, বিশেষ করে সরকারী চাকুরেদের ক্ষমতা অপরিসীম। রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬ (রিভাইজড ২০১২) আর সচিবালয় নির্দেশিকা ২০১৪ তে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা খুব জরুরী। যাতে মন্ত্রী আর সচিবদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আসে। সচিব একাই মন্ত্রণালয়ের একাউন্টিং চিফ আবার প্রশাসনিক প্রধান। এতে সচিব হয়ে পড়েন দায়িত্ব ভারাক্রান্ত। সচিবের দায়িত্বভার কিছুটা কমিয়ে কিছু ক্ষমতা মন্ত্রীদের হাতে দেওয়া দরকার। তা না হলে জনগণের চাহিদা মোতাবেক কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন বা দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। জনগণের চাহিদা বুঝতে জনপ্রতিনিধির মত লাগবে, কারণ তারা জনগণের সাথে থাকেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআর
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।