নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২০ জুন, ২০১৯
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল। কিন্তু ২০০৭-২০০৮ সালের আগে-পরে এই দলের মধ্যে বহু সুবিধাবাদী রাজনিতিক ঢুঁকে পড়েছেন। কিছু ভালো লোক আসেননি তা হয়, তবে তাঁদের সংখ্যা খুব কম। বিভিন্ন দল থেকে আসা এরা টাকা পয়সা খরচ করে দলে পদ বাগিয়ে নিয়েছেন, ক্ষমতাশালী হয়েছেন, সুবিধাবাদী আর আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে একটা বলয় তৈরী করেছেন ত্যাগীদের সরিয়ে। অভিযোগ আছে যে, তারা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কমিটি নিজেদের মত করে নিতে অনেক টাকা খরচ করেছে কারণ কিছুদিন আগেই তারা ক্ষমতায় থেকে অনেক টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে কামিয়েছে। এরা রঙ বদলিয়ে এখন খুব এক্টিভ। এর ফলে স্থানীয় নির্বাচনে মাঝে মাঝেই নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হচ্ছে। এটা হচ্ছে দুইভাবে। এক- স্থানীয় কমিটি দখল করা নব্যরা ভুল নমিনেশন দিতে কেন্দ্রকে প্রভাবিত করছে। দুই- ত্যাগীদের কেউ কেউ মনের দুঃখে প্ররোচিত হয়ে বিদ্রোহ করে নির্বাচনে জিতে আসছে। এমতবস্থায় ত্যাগীদের সামনে না আনলে দলের টেকসই অবস্থান ধরে রাখা যাবে না। নব্যরা দলের দুর্দিনের আভাস পেলেই সটকে পড়বে নতুন সুবিধার সন্ধানে।
১৯৭৫ পরবর্তী ত্যাগী ছাত্রলীগাররা অধিকাংশই সৎ, নির্লোভ, কমিটেড এবং ভালো সংগঠক। ১৯৭২-১৯৭৫ সালের সরকার ও দলের যত সব নেগেটিভ ইমেজ তৈরী হয়েছিলো বিভিন্ন অপপ্রচারে, তা দূর করে মানুষের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনতে কী কষ্ট তারা করেছেন তা এখন অনুধাবন খুব কঠিন। কারণ এখন আইটির যুগ, এক আঙ্গুলের টোকা দিলে গুগল এ সব তথ্য পাওয়া যায়, তখন সেই সুবিধা ছিল না। কিন্তু বাম, বিশেষকরে চৈনিক বাম আর জামায়াতের লেখা ও প্রকাশিত বিভিন্ন বই, টেলিভিশন আর পত্রিকার অপপ্রচারে মুক্তুযুদ্ধের চেতনার মানুষের রাজনীতি করা তো দুরের কথা সমাজে টিকে থাকাই দুরহ ছিল। স্বাধীনতা বিরোধীরা জানে যে ভারত উপমহাদেশের মানুষ ছাপার অক্ষরে লেখাকে ধর্মগ্রন্থের পরেই বেশি বিশ্বাস করেন। যারা এই অপকর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন সেই সব ছাত্রলীগ, যুবলীগ কর্মীদের, নেতাদের কোন মূল্যায়ন নেই যদিও তারা অধিকাংশই ছিলেন একেকজন সাচ্চা মুজিব সেনা। জনাব ওবায়দুল কাদের সাহেব তো নিজেই মোটাদাগে সারা দেশের ত্যাগী বঙ্গবন্ধু প্রেমিকদের সবাইকেই চেনেন, কারা ছিলেন সেই দুর্দিনে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক জেলায়! এখনই সময় অভিমানে চুপ থাকা ওদের দলে ও সমাজে সম্মানের সাথে কাজে লাগানো।
বিরোধীদলের মিথ্যাচার ও রাজনৈতিক কর্মসূচী মোকাবিলা করতে দরকার নিবেদিত প্রাণ ১৯৭৫ পরবর্তী ত্যাগী কর্মীর সমন্বয়ে গড়া মজবুত মূল ও সহযোগী সংগঠন। জামায়াতসহ ইসলামপন্থী দলের লোকেরা চুপ থেকে থেকে আওয়ামী লীগ বা জোটে ঢুঁকে যাচ্ছে। তারা কাল সাপ হয়ে ছোবল দেবে। বিতাড়িত কালসাপ ‘গোলমাল রনি’র সাম্প্রতিক ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেখলে কিছুটা বুঝা যায়। ‘রাতের সব তারাই থাকে দিনের আলোর গভীরে’ কথাটা এখন মনে রাখা জরুরী। লুট ও দুর্নীতির টাকায় ১৯৭১ পরবর্তী ও বিএনপি জামায়াত আমলে বিদেশে যাওয়া একদল শিক্ষিত নষ্ট বাঙ্গালী, বিদেশে বসে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ফেক ডকুমেন্ট তৈরী করে অপপ্রচার করে, গুঁজব ছড়ায়। এতে উন্নত দেশে লোকেরা কিছুটা হলেও বিভ্রান্ত হয়। বার বার একই মিথ্যা নানাভাবে প্রচারে অনেক দেশের মানুষ, সরকার এমনকি নিজ দেশের মানুষও প্রথমে বিভ্রান্ত হয়ে পরে বিশ্বাস করতে শুরু করেন। এটাও একটা ঝুঁকি।
আমলাদের সাথে বিশেষকরে আমলা পলিটিশিয়ান যারা উপদেষ্টা হয়েছেন তাঁদের বিরোধ চরমে উঠলেও সমস্যা কম। কারণ তাঁরাও ‘সাপুড়ে’, সাপ নিয়ে তারা খেলতে পারবেন। কিন্তু আমলাদের ক্ষমতা বেশী বাড়ালে নিরাপদ খাদ্য অভিযান, দুরনীতিবিরোধী অভিযান, ইত্যাদি মুখ থুবড়ে পড়বে। কর্মীদের চাপে বিভিন্ন আবেদনপত্রে মন্ত্রি এমপিদের সুপারিশ নেতাদের কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে। এতে আমলাদের সাথে বিরোধের মাত্রা ছাড়িয়ে যাবে সারা দেশে, কারণ স্বার্থের বেলায় দুষ্টু আমলারা এক হয়ে সবাইকে লোভের ছিপে আটকাবে। বালিশ মাসুদরা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের খুব গুরুত্বপূর্ণ পদ ইতোমধ্যেই দখল করে নিয়েছে নষ্ট-ভ্রস্ট নব্য আওয়ামী লীগার আর তাদের সহযোগী আমলাদের সহায়তায়, কামিনী আর কাঞ্চন দিয়ে। সড়ক, ব্রীজ, রেলওয়ে, ইত্যাদি অবকাঠামোগত উন্নয়ন দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদের অধিকাংশই ‘হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু বিরোধী’দের দখলে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের ঝুঁকিতে আছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানেন যে শক্তি দুই প্রকার। এক- রাজনৈতিক শক্ত আর দ্বিতীয় হচ্ছে অর্থনৈতিক শক্তি। এক শক্তি আরেক শক্তিকে কিনে নিতে পারে যদি দলে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ত্যাগী কর্মীবাহিনীতে দুর্বলতা থাকে। এর একটা জলন্ত উদাহরণ হচ্ছে ১৯৯০ সালের গণভ্যুত্থানের পরে ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের দল পেয়েছিল ৩৫টা আসন। এর মূলে ছিল এরশাদ সাহেবের দলের অর্থনৈতিক শক্তি। বিএনপি- জাম্যাতের কর্মীরা এখন ব্যবসায়ী সেজে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে মোটা অংকের কমিশন দিয়ে সাব-কন্ট্রাক্ট করছে দেদারছে, যেমনটি করেছিলো রাজাকাররা ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত। সাম্প্রতিক অভিযানেই তার প্রমাণ পাওয়া গেছে মঞ্জুর হাসান শাহরিয়ারের বদলি কেসে।
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় ও নতুন ফর্মুলায় ভ্যাট আদায়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। ব্যবসায়ীদের মাঝের অসন্তোষে প্রশাসনে লুকিয়ে থাকা সরকারবিরোধী আমলা ও ব্যবসায়ীরা কালো টাকা পাচারে বাঁধা পেয়ে নতুন সমস্যা তৈরী করবে। তারা কালো টাকা দিয়ে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন বা কোটা বিরোধী আন্দোলনের মত আন্দোলনের জন্ম দিতে পারে অর্থের বিপুল অর্থের যোগান দিয়ে, যদিনা দেশে মালয়েশিয়ার মত করে সৎ ব্যবসায়ী, সৎ আমলা আর সৎ রাজনীতিবিদগণের সমন্বয়ে একটা ‘ট্রাইএংগেল অফ হোপ’ তৈরী করা যায়।
অষ্টাদশ শতকের মোগল আমলের সুবা বাংলায় গনতান্ত্রিক সরকার ছিল, এই সেই বাংলা যারা দুনিয়ার টোটাল জিডিপির ১২ শতাংশের অংশিদার ছিল একাই। যারা আমাদের শোষণ করে, আমাদের দেশের গন্তান্ত্রিক ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা ধ্বংস করেছে তারা এখন আমাদের দেশের কিছু দালাল সুশীল, দুর্নীতির টাকায় নিয়োজিত আন্তর্জাতিক লবিস্ট দিয়ে নিজেদের লাভের কাজ করছে যা আমাদের জন্য কূটনৈতিক ঝুঁকি। ইইউ এর ঘাড়ে বন্দুক রেখে কয়েকদিন আগেই একটা দল আমাদের দেশে এসে সুশীলদের সুযোগ- সুবিধা দেওয়া, মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ইত্যাদি না বিষয়ে নসিহত করে গেছে। সাবধান হতেই হয় যখন দেখি বাংলাদেশে কোন সুসময় বা খারাপ সময়ে না থাকা বাংলাদেশের উন্নয়ন বিরোধী, গরীব শোষক ড. ইউনুস বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে তাঁদের জয়ে প্রথমবারের মত অভিনন্দন জানান।
ড্রাগ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান সরকার তথা সরকার প্রধানের জন্য চরম ঝুঁকি, যদি তা সঠিকভাবে হ্যাণ্ডেল করা না হয়। ড্রাগের ব্যাবসায় এত লাভ যে অষ্টাদশ শতকের শেষের দিকে ব্রিটিশরা আফগানিস্তান থেকে আফিম নিয়ে গিয়ে চীনের বিক্রি শুরু করে। এসময় ব্রিটিশরা সারা দেশে আফিম বিক্রির অনুমতি চেয়ে জোর দাবি করে। কিন্তু কিছু দেশপ্রেমিক চীনা বিশেষ করে কমিশনার লী চরমভাবে এর বিরোধিতা করেন। ১৮৩৯ সালে তিনি অনেক ব্রিটিশ আফিম ব্যবসায়ীকে শাস্তি দেন এবং ২ লাখ কেস আফিম আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলেন। ড্রাগ বিক্রির অনুমতির জন্য ব্রিটিশরা চীনের সাথে দুই দুইটা যুদ্ধে করে জয়ী হয়। ফরাসীদের মত সরাসরি না হলেও ইউরোপের অনেক দেশের তাতে সায় ছিল। কারণ এই ড্রাগ ব্যবসায় লাভ আকাশ্চুম্বী। নতুন নতুন সিন্থেটিক ড্রাগ শুরুতে তৈরী হয় উন্নত দেশে। তারা তৈরী করে আমাদের মত গরীব দেশে মাফিয়াদের মাধ্যমে বিক্রি করে। তাই ড্রাগ ব্যসায়ীদের শেকড় অনেক গভীরে বিধায় দেশের ড্রাগ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান আমাদের জন্য আরেকটা ঝুঁকি। এমন আরও অনেক খাতে মানে বহুমুখী ঝুঁকিতে আমাদের দেশ ও সরকার প্রধান।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।