নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১০ পিএম, ২৩ জুলাই, ২০১৯
গত রোববার ইউটিউবে একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে ঢাকায় প্রিয়া সাহার এনজিও `সারি`। সেখানে প্রিয়া বলেছেন সরকারী পরিসংখ্যান থেকে তিনি এই তথ্য দিয়েছেন। নিজের অন্তরের কথা যে উনি লুকিয়েছেন তাঁর প্রমাণ তাঁর দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে বক্তব্য আর পরবর্তী এই সাক্ষাৎকার শুনলেই বুঝা যাবে। তিনি দম্ভ করে বলেছেন যে, গ্রীন কার্ড পেতে অন্য আরও উপায় আছে। সহজ উপায় হচ্ছে মিলিয়নিয়ার মাইগ্রেশন, যা ইউরোপ আমেরিকার অনেক দেশেই এখন পপুলার কর্মসূচী।
বাংলাদেশে সাধারণত ১০ বছর পর পর জন সংখ্যা জরিপ হয়। ‘‘২০০১ সালের পরিসংখ্যানে সংখ্যালঘুদের ওপর একটি চ্যাপ্টার রয়েছে। আদম শুমারি অনুসারে দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ২৯.৭ শতাংশ। এখন তা কমে ৯.৭ শতাংশ।" প্রিয়া দাবী করেন। বলেছেন সংখ্যালঘু কিন্তু হিসেব দিয়েছেন শুধু হিন্দু জনগোষ্ঠীর।
নিখোঁজ হওয়া বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন? - এই প্রশ্নে প্রিয়া সাহা বলেন, "সংখ্যালঘুদের শতকরা ভাগ যদি এখনও একই রকম থাকতো তাহলে বর্তমানে তাদের সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ বেশি হতো। সেটাই আমি বলতে চেয়েছি" এখানে একটা তথ্য দিই “হিন্দু জনগোষ্ঠীর প্রজনন হার কম। ১৯০১ সাল থেকে হিন্দুদের প্রজনন হার মূলত ২-৫ শতাংশ। ১৯৪১ সালেই তা একবার ১০% এর উপরে উঠেছিল। মুসলমানদের প্রজনন হার ১৯৪৭ এর পর থেকেই ২০% এর উপরে। অবাক করা বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশে খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি শেষ সেনসাসে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের চাইতে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ধর্মীয় নির্যাতনই যদি জনসংখ্যা কমার একমাত্র কারণ হতো তাহলে বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান জনসংখ্যা বাড়ার কোন কারণ ছিলোনা”।
তিনি সাংঘাতিক যে কথাটি বলেছে তা হল, "মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই এসব কথা বলেছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে কোনো জায়গায় কথা বলা যায় - আমি তার কাছ থেকে শিখেছি।" তাজ্জব কথা তিনি দেশে আর লোক পেলেন না উনাকে পাঠালেন!
"২০০৪ সালে যখন আমার বাড়িতে আগুন দিয়েছিল তখন গ্রামের মুসলিম একটি ছেলে প্রথম টেলিফোন করে আমাকে তা জানায়। টেলিফোনে আমি তার কান্না থামাতে পারছিলাম না।" "কিছু দুষ্ট লোক এসব ঘটনা ঘটায় ... এরা সবসময় সরকারি দল, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সেখানে গিয়ে ভেড়ে। "২০০৪ সালে বাংলাদেশে কোন দল ক্ষমতায় ছিল মিস প্রিয়া?
তিনি তাঁর তার সাক্ষাৎকারে একাধিকবার প্রিয়া সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকার বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছেন। তিনি এও বলেন তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের ৯৯ ভাগ মুসলিমই অসাম্প্রদায়িক। তাহলে কী দাঁড়ায়!
বাংলাদেশে মোট মাইনোরিটি জনসংখ্যা ১,৮০,০০০০০ মানে মোট জনসংখ্যার ১০.৭% হিসেবে। তাহলে অংক দাঁড়ালো যে, মোট জনসংখ্যার ১০.৭% মাইনোরিটি জনসংখ্যা হলে দেশের মোট জনসংখ্যা হয় ১৬,৮২,২৪, ৩৯৯ জন এর মধ্যে মুসলমান হচ্ছে ১৫,০২,২৪, ৩৯৯ জন। প্রিয়া বলেছেন ৯৯% মুসলিম ভালো তাহলে ১৪,৮৭,২২,১৫৫ কোটি মুসলমানের মধ্যে ১৫,০২,২৪৪ জন মুসলমান খারাপ। তাঁর ভাষ্যে এরা মৌলবাদী। মৌলবাদী মুসলমান হিসেবে আমরা পাই জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ কে। গত ২০১৮ নির্বাচনে তাদের প্রাপ্ত ভোট (২০১১ সালের নিরিখে) ছিল পোল্ড ভোটের শকরা ৪.২৮ ভাগ, ভোট পায় জামায়াত যখন ভোটার ছিল প্রায় সাড়ে ১০ কোটি। ৪,৯৪,০০০ জামায়াতী বা মৌলবাদী ৩ কোটি ৭০ লাক সংখ্যালঘুকে দেশ ছাড়া করেছে! বাকী সেকুলার বাম দলের নেতারা কি কাঠি লজেন্স খাচ্ছিলেন! এবার আসি আমার নিজের বক্তব্যে।
এই ‘‘সংখ্যালঘু” ব্যাপারটা কী তাঁর একটু নিকেশ করে নিতে পারি কারণ এতে আমাদের ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত, রাজনৈতিক, ধর্ম, সাংস্কৃতিক তথা দেশের ভাবমূর্তি জড়িয়ে আছে। আমরা প্রচলিত ধারণার বাইরে গিয়েই কিছু আলোচনার চেষ্টা করতে পারি, যাতে আমাদের উপলব্ধিতে সুবিধা হয়।
সংখ্যালঘুদের অধিকার বিষয়ে জাতিসংঘ সনদে বলা হয়েছে– “জাতীয়, ধমীর্য় এবং জাতীয় সংখ্যালঘু”।
UN Special Rapporteur Francesco Capotorti এর মতে– ‘‘সংখ্যালঘু হচ্ছে কোনো একটি দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় জাতিগত, ধর্মীয় অথবা ভাষাগত বৈশিষ্ট্যে সংখ্যালঘু দল বা গোত্র, যারা সুনিদির্ষ্টভাবে তাদের সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ধর্ম বা ভাষাগত বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণে তৎপর।’’
ইউরোপীয় পরিষদ ১৯৯৩ অনুসারে– ‘‘সংখ্যালঘু হচ্ছে–রাষ্ট্রের একটি জনগোষ্ঠী যার-(ক) রাষ্ট্রের নাগরিক এবং রাষ্ট্রীয় সীমানায় বসবাস করে(খ) রাষ্ট্রের সঙ্গে দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ(গ) সুনিদির্ষ্ট জাতিগত বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতি, ধর্ম বা ভাষাগত বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান(ঘ) পর্যাপ্ত প্রতিনিধিত্বশীল, যদিও সংখ্যায় রাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার অথবা রাষ্ট্রের কোনো অঞ্চলের জনসংখ্যার তুলনায় সংখ্যালঘু(ঙ) তাদের সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ধর্ম বা ভাষা রাষ্ট্রের সংস্কৃতি, রীতি-নীতি, ভাষা বা ধর্মের সঙ্গে সংরক্ষণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
আমাদের মত গরীব দেশের মানুষ রুটি রুজির জন্য বিদেশে কাজে গিয়ে, কিংবা লেখাপড়া করতে গিয়ে বা অন্য কন কারণে বিদেশে থেকে যান সংখ্যা লঘূ হিসেবে। ১৯৪৭ আর ১৯৬৪ সালের দাঙ্গায় পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) থেকে সরকারী আনুকূল্যে বহু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতে চলে যান বাধ্য হয়ে। স্কুল কলেজে পড়া তাদের সন্তানদের ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের উপর আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে চরম অত্যাচার হয় কারণ তখন তারা হয়ে পড়ে রাজনৈতিক সংখ্যা লঘু। এর পরে ১৯৭২ সালে স্বাধীনতা বিরোধীরা রাজনৈতিক সংখ্যালঘু হয়ে দলে দলে দেশ ছাড়ে। একই ভাবে ১৯৭৫ সালের পরে আওয়ামী লীগের সাথে বহু হিন্দু দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। এর পরে ১৯৯১, ২০০১, ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগ কর্মী আর হিন্দুদের উপর নেমে আসে চরম অত্যাচার যার ফলে অনেক আওয়ামী লীগ কর্মী আর হিন্দু বাংলাদেশ ছেড়ে যান। ১৯৪৭, ১৯৬৪ বাদে ১৯৯১, ২০০৬, ২০১১ যারা নির্যাতিত হয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন তারা তাদের একটা বিরাট অংশ তাদের সম্পত্তির জন্য এই হামলা শিকার হয়েছেন। যারে বিদেশে থেকে যান তাদের একটা বিরাট অংশের ছেলে মেয়েরা বিদেশে পড়তে গেলে আর ফেরেন নি, পারলে বাবা মা ভাইবোনদের নিয়ে গেছেন বিদেশে। এর সব দায় প্রিয়া সাহা বর্তমান বাংলাদেশের উপর চাপিয়েছেন। এটা কি ঠিক?
ইদানীং এশিয়া আর ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাসপোর্টধারী অসৎ কিন্তু ধনী মানুষ এখন উন্নত দেশের দ্বিতীয় পাসপোর্ট নিতে বিজি হয়ে পড়েছে। সাথে আছে গরীব দেশের কিছু অসৎ ব্যবসায়ী, আমলা, কামলা আর অসৎ ‘‘সংখ্যালঘু” যাচ্ছে উন্নত দেশে। বিভিন্ন দেশের ‘‘সংখ্যালঘু” যখন অবৈধভাবে অনেক টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে, তাঁরাও এই সুযোগ নিচ্ছেন। কারণ তাদের দেশে তেমন সামাজিক মর্যাদা নেই, বিভিন্ন কাজেও অসুবিধা হয়। অবৈধ টাকার জন্য বাংলাদেশের মত বিভিন্ন দেশের দুর্নীতি দমন ব্যুরো সক্রিয় হচ্ছে সুশাসনের জন্য। উন্নত দেশের সরকার আমাদের মর গরীব দেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র বা সুশাসন প্রতিষ্ঠার চাপের ফাঁকে আমাদের মত দেশ থেকে তাদের দেশে আমাদের দেশের মিলিয়নিয়ারদের নিয়ে যাচ্ছে তাদের দেশে বিনিয়োগ কোটায় নাগরিকত্ব দিয়ে। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে এই মিলিয়নিয়ার মাইগ্রেশনের হার বেড়েছে ১৪%। সবচেয়ে বেশি ১২ হাজার মিলিয়নিয়ার মাইগ্রেট করেছে তা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, ১০ হাজার করেছে আমেরিকায়, ৪ হাজার গেছে কানাডায়। এছাড়া ইউএই , সুইজারল্যাণ্ডে ক্যারাবিয়ান দ্বীপে গেছে ২ হাজার মত, বাকী গ্রীস, পর্তুগাল, স্পেন, ইসরাইল, সিঙ্গাপুরে গেছে ১ হাজার করে। এর বাইরেও মালয়েশিয়ার মত দেশে মোটা অংকের বিনিয়োগ করে করেছে ২য় হোমের সুবিধা। সবচেয়ে অবাক হচ্ছে, সবচেয়ে বেশী মাইগ্রেট করছে চীন, সেটা ১৫ হাজার মিলিয়নিয়ার, ৭ হাজার রাশিয়া, ৫ হাজার ইন্ডিয়া, ৪ হাজার তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স থেকে ৩ হাজার ব্রাজিল থেকে ২ হাজার, আর সুদি আরাবিয়া আর ইন্দোনেশিয়া থেকে ১ হাজার মিলিয়নিয়ার এসব দেশে পাড়ি জমিয়েছে উন্নত জীবনের আশায়।
আমাদের মত দেশে যারা অবৈধ উপায়ে টাকা কামিয়ে মিলিয়নিয়ার হচ্ছেন, তাদের একটা বিরাট অংশ ইউরোপ আমেরিকায় মাইগ্রেশন করছেন, টাকা লগ্নি করে, সুখের ও নিরাপদ জীবনের আশায়। তারা জানেন যে কোনভাবে ওইসব দেশে যেতে পারলে আর একবার কোনমতে প্রমাণ করতে পারলেই হবে যে, দেশে ফিরলে তাঁর শাস্তি পারে এমন কিছু একটা দেখালেই তাঁর সেদেশে থাকার পাক্কা বন্দোবস্ত হবে। টাকাও তো একটা বড় ফ্যাক্টর। তা না হলে “দুর্নীতির বরপুত্র” কী লন্ডনে থাকেন! বঙ্গবন্ধুর খুনিরা উন্নত দেশে থাকে। তাদের ফেরত পাঠানো হয় না, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে বলে। কথা শুনে মনে হয়- শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানার কন মানবাধিকার নেই, বাদবাকি টাকাওয়ালা, খুনি, দুর্নীতিবাজদের মানবাধিকারের খুঁটি খুব শক্ত। প্রিয়া সাহার দম্ভোক্তি দেখে মনে হচ্ছে দুর্নীতির টাকায় উনি মিলিয়নিয়ার কোটায় আমেরিকায় থাকবেন। তা না হলে কীভাবে বলেন যে, গ্রীন কার্ড পেতে শুধু কী পলিটিক্যাল এসাইলাম একমাত্র উপায়?
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা পূজা- পার্বণের ছুটি পান। ২০১৭ সালের এক জরিপে দেখা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩.৪৫ মিলিয়ন মুসলমান বসবাস করেন। মুসলমানরা কিন্তু ঈদের ছুটি পায় না। আমি দেশপ্রেমিক প্রিয়া সাহাকে বলি দয়া করে একবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামনে দাবি তুলুন যে, আমেরিকার মুসলিম সংখ্যালঘুদের ঈদের ছুটি দিতে হবে, ম্যাকডোনাল্ড গরুর মাংস বিক্রি বন্ধ করতে হবে, গরু হিন্দুদের মা। পারবেন কি?
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।