নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
বালিশ, বই, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতির পরে এবার ৩ কোটি টাকা মূল্যের হাইব্রিড ধানের বীজ নিয়ে দুর্নীতির খবর প্রকাশ হয়েছে। বিএডিসি’র ঝিনাইদহের দত্তনগর খামারে এই দুর্নীতি ধরা পড়েছে। এগুলো অনেকের চোখে ছোট হলেও বাস্তবে এই খাতে দুর্নীতি এত বড় বড় যে তাঁকে শুধু দুর্নীতি না বলে কেউ বলছেন দিনে দুপুরে কলমের খোঁচায় ডাকাতি বা তার চেয়েও বেশি কিছু। যে কয়টি বিভাগের দুর্নীতির খবর এখন পর্যন্ত প্রকাশ হয়েছে, দুর্নীতি শুধু এই কটা বিভাগেই সীমিত নেই, এটা যে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরকে ঘিরে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জেঁকে বসেছে তাতে এক শ্রেণীর আমলা আর রাজনীতিকদের সন্দেহ থাকলেও সাধারণ মানুষের নেই।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, স্বাস্থ্য দপ্তরের অনেক কথাই প্রকাশ হয়েছে, দেশের মানুষ তা জেনেছেন, কীভাবে কীভাবে ৫ শ’ কে ৫০ হাজার বা ৫লাখ কে ৫ কোটি করা হয়েছে। তবে কৃষি দপ্তরের বীজ নিয়ে বিএডিসি’র ঝিনাইদহের দত্তনগর খামারে যে কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হয়েছে বাস্তব অবস্থা তাঁর চেয়ে অবস্থা আরও ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেছেন বীজ উৎপাদনের লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যবসায়ী সূত্রে।
উর্বর জমি, পরিকল্পিত সেচ ব্যবস্থা ও উন্নত খামার ব্যবস্থাপনা, প্রাকৃতিক পরিবেশ, ইত্যাদি সব কিছু অণুকুলে থাকলেও শুধু বীজ খারাপ হলে কৃষক তার সঠিক উৎপাদন পান না। আর গরীব কৃষক একবার ফসল উৎপাদনে মার খেলে তা পুষিয়ে নিতে কম করে হলেও ৩ মওসুম লাগে। উন্নত বীজ তাই এতটাই গুরুত্বপূর্ণ। একটু কষ্ট করে আমরা তাই বীজের শ্রেণিবিভাগ জেনে নিই, পরে বুঝতে সহায়ক হবে।
কৃষির মূল উপকরণ হচ্ছে বীজ। বীজ বলতে আসলে অনেক কিছুই বোঝায়। ফসলের যে কোনো অংশ, দানা অথবা অঙ্গ যেটি অনুরূপ একটি ফসল পুনঃ উৎপাদনে সক্ষম তাকেই বীজ বলে অভিহিত করা যায়। বাংলাদেশের বীজ বিধিমালা ১৯৯৮ মোতাবেক বীজের ৪ (চার) টি শ্রেণি বিভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-প্রজননবিদের বীজ : গবেষণাগারে বীজ প্রজননবিদের এর বিশেষ তত্ত্বাবধানে নির্বাচিত জাতের বীজের মূল বীজ গবেষণা কেন্দ্রের বীজ ব্যাংক থেকে সংগ্রহপূর্বক পরিবর্ধন করে এই বীজ উৎপাদন করা হয়। এই বীজ খুবই অল্প পরিমাণে উৎপাদিত হয় এবং তা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ। এই বীজ থেকে ভিত্তি বীজ উৎপাদন করা যায় বলে সরকারী সূত্রে দাবি করা হয়।
ভিত্তি বীজ: প্রজননবিদের বীজের পরবর্তী স্তর ভিত্তি বীজ যা বীজ প্রযুক্তিবিদদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে উৎপাদন করা হয়। আমাদের দেশে মূলত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) তাদের নির্ধারিত খামারে কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভিত্তি বীজ উৎপাদন করে। তবে গত কয়েক বছর ধরে কিছু বেসরকারি বীজ কোম্পানি এবং সংস্থাকে সরকারি বিধি বিধান পালন সাপেক্ষে ভিত্তি বীজ উৎপাদনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ভিত্তি বীজ জাতীয় বীজ অনুমোদন সংস্থা কর্তৃক অবশ্যই প্রত্যয়িত হয়ে থাকে।
প্রত্যয়িত বীজ: ভিত্তি বীজ থেকে প্রত্যয়িত বীজ উৎপাদন করা হয়। বিএডিসি`র নিজস্ব খামার সমূহে এবং কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স জোন সমূহে প্রত্যয়িত বীজ উৎপাদিত হয়। জাতীয় বীজ নীতি অনুযায়ী প্রত্যয়িত বীজ সরকারি বীজ অনুমোদন সংস্থা কর্তৃক প্রত্যয়ন বাধ্যতামূলক নয়।
মান ঘোষিত বীজ: ভিত্তি বীজ বা প্রত্যয়িত বীজ থেকে মান ঘোষিত বীজ উৎপাদন করা হয়। বিএডিসি কৃষক পর্যায়ে বিপণনের জন্য যে বিপুল পরিমাণ বীজ উৎপাদন করে তা এই শ্রেণির। বেসরকারি খাতের ছোট বড় কোম্পানিগুলো আজকাল মান ঘোষিত বীজ উৎপাদন করে বিপণন করে থাকে। এসব বীজ উৎপাদনে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির প্রত্যয়ন পত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়। তবে বীজের গুণগত মান নিশ্চিত কল্পে এবং কৃষদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের যে কোনো পর্যায়ে বীজ প্রত্যায়ন এজেন্সির পরিদর্শকগণ বীজ পরীক্ষা করতে পারেন। নির্ধারিত মান লঙ্ঘিত হলে সরকারি আইন অনুযায়ী জরিমানা ও শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই।
উন্নত মানের বীজের বৈশিষ্ট্য: আমাদের দেশের বীজ শিল্পের বহুল প্রচলিত স্লোগান হচ্ছে, ‘ভালো বীজ ভালো ফসল’। ভালো বীজ মানে উন্নতমানের বীজ। মান সম্পন্ন বীজ বিভিন্ন শ্রেণির হতে পারে যেমন- মৌল বীজ, ভিত্তি বীজ, উন্নত মানের বীজ, হাইব্রিড বীজ, ইত্যাদি।
মান সম্পন্ন বীজ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- বিশুদ্ধ বীজ (কম পক্ষে ৯৪% বিশুদ্ধতা)। উজ্জ্বল, সুন্দর, সতেজ, স্বাভাবিক রঙ এর বীজ। পুষ্ট, বড় দানা সম্পন্ন বীজ। পোকা ও রোগ মুক্ত বীজ। বীজের আর্দ্রতা সর্বোচ্চ ১২% (ধান, গম) অন্যান্য ফসল ১০%। অঙ্কুরোদগম বা গজানোর ক্ষমতা ৭০-৮৫% এর উপরে। বীজের ক্ষতিকর আগাছার বীজ থাকবে না।
আইনে বেসরকারি খাতের ছোট বড় কোম্পানিগুলো মান ঘোষিত বীজ উৎপাদন করে বিপণন করার কথা থাকলেও তারা আসলে কতটুকু পরমান বীজ উৎপাদন করে তা মেহেরপুর জেলার কুতুবপুর ইউনিয়নে গেলে টের পাওয়া যাবে। নিজের খামার বা চুক্তিবদ্ধ চাষিদের কাছ থেকে বীজ উৎপাদন করার কথা থাকলেও বাস্তবে চুক্তিবদ্ধ চাষির তথ্যে চরম গোলমাল আছে। তাছাড়া খামার বা চুক্তিবদ্ধ চাষিদের কাছ থেকে পাওয়া বীজের চেয়েও অনেক বেশি বীজ কোম্পানিগুলো বিক্রি করে। কীভাবে সেটাই মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। বিএডিসি’র খামারে যে পরিমাণ বীজ উৎপাদিত হয় তার একটা বিরাট অংশ ‘নন সীড বা মান সম্মত সীড নয়’ বলে সাধারণ ফসলের দরে অর্থাৎ কম দামে বিভিন্ন ‘মাফিয়া বীজ কোম্পানির’ কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। যেহেতু এটা হয় গোপনে অনৈতিক যোগসাজশে তাই এর পরিবহণ, সংরক্ষণ যথাযথ হয় না, যার ফলে চাষিগণ প্রতারিত হন। বিএডিসি’র এই কর্মকাণ্ডে নিজেরা বা চুক্তিবদ্ধ চাষিদের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন করে ছোট ছোট কোম্পানিগুলো বাজারে টিকতে পারেনি, অনেকেই হারিয়ে গেছে। যদিও এই দফায় ধরা পড়েছে মাত্র তিন কোটি টাকার বীজ কিন্তু বাস্তবে এভাবেই বিএডিসি’র মাধ্যমে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার বীজ পাচার হয়ে যায় বলে অভিযোগ আছে।
উৎপাদনের পরে বীজ সংরক্ষণ মৌলিক তত্ত্বের একটি প্রধান নীতি হলো, যে গুণগত মান নিয়ে বীজ গুদামে ঢোকে, বাহিরে আসার পর সে মান তার চেয়ে ভালো নাও হতে পারে। মনে রাখা প্রয়োজন যে, বীজ যতই ভালো হোক না কেন তা যদি ভালোভাবে সংরক্ষণ করা না যায় তবে সে বীজ ভালো থাকবে না। সরকারী সূত্রে দাবি করা হয় যে বাংলাদেশের মোট বীজ চাহিদার প্রায় ৯০% কৃষক নিজেদের উৎপাদিত বীজ দ্বারাই নিজেদের চাহিদা পূরণ করে থাকেন। তাহলে বাস্তবে মান সম্মত বীজ উৎপাদন ১০% বা এরও নীচে করেন বিএডিসি ও কোম্পানিগুলো। কারণ বেশ কিছু বীজ আমদানি করা হয় যা সবার জানা। কৃষি দপ্তরের দাবি হচ্ছে কৃষক উৎপাদিত এসব বীজ প্রকৃত গুণগত মানসম্পন্ন নয় বলে অধিক ফলন লাভ প্রায় অসম্ভব। কারণ একজন চাষি সঠিক পদ্ধতিতে বীজ উৎপাদন করলেও তাঁর পাশের ক্ষেতের চাষি তা না করলে ক্রসপলিনেশনের কারণে বীজের শুদ্ধতা থাকে না। এর পরে যারা বাজার থেকে বীজ কেনেন সেখানেও আছে শুভঙ্করের ফাঁকি। কারণ মান ঘোষিত বীজ যা কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয় তার জন্য বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির প্রত্যয়ন পত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়।
সব চেয়ে মজার ব্যাপার হল একটা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক ও একাউন্টিং চীফ হচ্ছেন সচিব সাহেব। কিন্তু দুর্নীতির ঘটনায় তাঁরা মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন। কিছু সংবাদ কর্মী জেনে বা না জেনে প্রশাসনের রাজনৈতিক অংশের রাজনিতিকদেরই শুধু এসব দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করেন, কিন্তু সচিবগণকে করেন না। কেন করেন না তার কারণ অজ্ঞাত।
প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে `জিরো টলারেন্সের` কথা বললেও যারা এটি বাস্তবায়ন করবেন, তাদের একটি অংশের (রাজনৈতিক) মধ্যে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্নীতির ঘটনাগুলোকে আগ বাড়িয়ে বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণায়ের আমলা প্রস্তুত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তা অস্বীকার করার প্রবণতা দেখা যায়। এ ধরণের বক্তব্য যখন আসে তখন আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে যারা জড়িত, বিচারিক কিংবা তদন্ত প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত তাদের কাছে এক ধরণের ভুল বার্তা পৌঁছায়’।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।