ইনসাইড থট

বাংলাদেশে আদিবাসী এবং দলিতদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় প্রসঙ্গ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ১১ অক্টোবর, ২০১৯


Thumbnail

একথা বহুল ভাবে প্রচারিত হচ্ছে যে এক বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন  অবস্থানের উন্নতি হয়েছে তিন ধাপ। ১৮৯টি দেশকে অতি উন্নত, উন্নত, মধ্যম ও নিম্ন মানব উন্নয়নের চারটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে এবং ইউএনডিপির মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০১৮ থেকে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ রয়েছে মানব উন্নয়নের মধ্যম দেশের স্তরে। প্রতিবেদনে ১৮৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে ১৩৬তম যার বর্তমানে মাথাপিছু আয় ১,৭৫১ ডলার  যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো সর্ব্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৮৬%। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, যোগাযোগ ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার প্রসার উন্নয়নের একটি বিশেষ চিত্র তুলে ধরলেও প্রকৃত চিত্র বলছে এখনও অনেক মানুষ উন্নয়নের তলানিতেই পড়ে আছে। দেশের এই ২৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে যার মধ্যে ১২ শতাংশই হতদরিদ্র এবং এই ১২ শতাংশ  হতদরিদ্রদের মধ্যে যাদের অবস্থান অগ্রগন্য তারা সমতল ও পাহাড়বাসি সংখ্যালঘূ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়। শুধুমাত্র মাথাপিছু গড় আয়ের উলম্ফন দিয়ে এই মানুষগুলোর বেঁচে থাকার বহুমাত্রিক প্রান্তিকতা বিচার করা সম্ভব নয়। এই বাস্তবতা সরকারের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা,  টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠ, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকি পরিকল্পনা, রূপকল্প ২০২১ , বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ ইত্যাদি অর্জনের পথে সুস্পষ্ট বাঁধা তৈরী করবে।  তাই সরকারের চলমান উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে এবং উল্লিখিত বহুমাত্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তব রূপ দিতে প্রয়োজন বাংলাদেশের সমতলের, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদাইয়ের বহুমাত্রিক প্রান্তিকতা দূর করে স্থায়ীত্বশীল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সরকার উদ্ভাবনী উন্নয়ন উদ্যোগ নিতে হবে। এই নতুন ও উদ্ভাবনী উন্নয়ন উদ্যোগ নিঁখুতভাবে বাস্তবায়নের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে বাংলাদেশের সমতলের, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করতে না পারা। তাই সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় সরকারের ইচ্ছা থাকলেও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি, শিক্ষাবৃত্তি, কারিগরী দক্ষতা উন্নয়ন অবকাঠামো সম্প্রসারণ, আবাসন তৈরীতে সহায়তা, উদ্যোক্তা পর্যায়ে নগদ সহায়তা ইত্যাদি উন্নয়ন কর্মকান্ডে বাংলাদেশের সমতলের, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়কে নিশ্চিত ভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারছে না এবং অন্যদিকে, সামাজিক ও বেসরকারি সংগঠন গুলোও সরকারি সঠিক জমমিতি না পাবার ফলে সমতলের, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে পারছে না।  এই সামগ্রিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকারের ২০২১ সালের জনসুমারিতে যেন সমতলের, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের সঠিক সংখ্যা নিরূপণ করা যায় সরকারকে যে ব্যাপারে আশু পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশ বহুমাত্রিক জাতিগোষ্ঠীর একটি দেশ। বাংলাদেশের মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান বা অন্যান্য ধর্মালম্বী সকলেই বাঙ্গালি নয়। এদেশে বাস করছে বাঙ্গালি মুসলমান, অবাঙ্গালি মুসালমান, বাঙ্গালি হিন্দু, অবাঙ্গালি হিন্দু, বাঙ্গালি খৃষ্টান, অবাঙ্গালি খৃষ্টান, বাঙ্গালি বৌদ্ধ, অবাঙ্গালি বৌদ্ধ এবং অন্যান্য জাতিসত্ত্বা এবং ধর্মালম্বী মানুষ। এই নানামুখি বৈচিত্রতার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠী হচ্ছে সমতলের, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায় এবং এই সব মানুষের সংখ্যা বেসরকারি নানা হিসেবে প্রায় সাড়ে সাত মিলিয়ন। এই সড়ে সাত মিলিয়নের মধ্যে ২.৫ মিলিয়ন হচ্ছে সমতলে ও পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং ৫ মিলিয়ন জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের।  প্রায়ই ব্যাবহৃত এই সংখ্যাটি নিয়ে যদিও গবেষক মহলে ভিন্নমত আছে। সংখ্যা ভিত্তিক এই ভিন্নমত সমতলের, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের সঠিক সংখ্যা নির্নয়ে জটিলতা হিসেবে বিরাজ করে এবং সরকারি হিসেবের সাথে সাংঘর্সিক। এই সংখ্যা গত সংঘর্স আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তথ্য ব্যাবহারে নির্ভরযোগ্যতার প্রশ্ন বিদ্ধ করে বারবার। ভৌগলিক ভাবে এই জনগোষ্ঠী অতীতকাল থেকে বাসকরে আসছে বাংলাদেশের দক্ষিন-পুর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১৮ টি জেলাতে।  এই ১৮ টি জেলাতে বসবাসরত সমতলের এবং পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ মায়ানমানের আরাকান অঞ্চল থেকে, ভারিতের ত্রিপুরা, খাসিয়া, পশ্চিম বাংলা এবং অনেকে জনগষ্ঠী মধ্য ভারত থেকে সুদূর অতীতে বাংলাদেশে অভিবাসন নিয়েছে এবং আদিবাসী হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। এই নৃগোষ্ঠী গুলো যেহেতু নিজস্ব জাতি রাষ্ট্র গঠন করতে পারে নাই তাই তারা বাঙ্গালি জাতি এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ দ্বারা হরহামেশাই প্রভাবিত, নির্যাতিত এবং প্রিতারিত।  এই সমতলের এবং পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ ব্যাতিত অন্যান্ন  জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত অমুসলিম এবং দলিত সম্প্রদায়ের বসবাস বাংলাদেশের সর্ব অঞ্চলে, বিশেষত শহরাঞ্চলে। এই গোষ্ঠী পেশাগত, সনাতনী ধর্মাশ্রিত বর্ন এবং জাত-পাতের কারণে প্রতিনিয়ত নিষ্পেষণের শিকার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ৫ম আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১ হিসাব বলছে বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর তথা আদিবাসীদের সংখ্যা ২৭টি এবং মোট জনসংখ্যা ১৩,৮০,৪৮৮ জন, অর্থাৎ ১.৪ মিলিয়ন।  এই ১.৪ মিলিয়নের মধ্যে পেশাগত, সনাতনী ধর্মাশ্রিত বর্ন এবং জাত-পাতের কারনে অচ্ছুত গোষ্ঠী গুলোও রয়েছে। এই গোষ্ঠী গুলো আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর থেকে নানা মাত্রায় স্বতন্ত্র হলেও তাদের আলাদা হিসেবে গন্য করা হয়নি। তাই তার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ৫ম আদমশুমারি  ও গৃহগণনা-২০১১ এর রিপোর্টে যে তালিকা প্রদান করা হয়েছে তার বাইরে রয়ে গেছে। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে যারা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে তারা হচ্ছেঃ   চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, তঞ্চ্যঙ্গা, বম, পাঙ্খুয়া, চাক, খেয়াং, খুমি, লুসাই, কোচ,  সাঁওতাল, ডালু, উসাই, রাখাইন, মণিপুরী, গারো, হাজং, খাসিয়া, মং, ওঁরাও, বর্ম্মন, পাহাড়ি, মালপাহাড়ি, মুন্ডা, কোল, কন্দ, পাংখো, পাংগোন, মুর, রাজবংশী, পাত্র এবং গঞ্জু। দেখাযাচ্ছে সরকারি হিসাব আর বেসরকারি হিসাবের মধ্যে বিশাল ফাক রয়েছে। সরকারি হিসাবে পাকপাকি ৬.১ মিলিয়ন সমতলের, পাহাড়ের আদিবাসী মানুষ এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের কোন হদিস নেই। কেন এই বিশাল তথ্যগত ফারাক? বলতে চাচ্ছি না যে বেসরকারি হিসাবই সঠিক এবং সরকারি হিসাব সঠিক নয়। এখানে অস্বীকৃতির এবং রাজনীতির একটা ব্যাপার রয়ে গেছে। এই অস্বীকৃতির এবং রাজনৈতিক অণুঘটকের উপস্থিতি পরিষ্কার বোঝা যায় যখন দেখা যায় সরকারের দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে তথ্যের ফারাক রয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর যেখানে ২৭ টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর তথা আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে সেখানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন তারিখ: ০৫ চৈত্র ১৪২৫ বক্সগাব্দ/১৯ মার্চ ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ এস. আর. ও. নং-৭৮-আইন/২০১৯। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ২৩ নং আইন) এর ধারা ১৯ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকারি  তফসিল বলছে ৫০ টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর তথা আদিবাসীদের কথা। এই সব ক্ষুদ্র  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নাম হচ্ছেঃ ওরাওঁ, কোচ, কোল, খাসিয়া/খাসি, খিয়াং, খুমি, গারো, চাক, চাকমা, ডালু, তঞ্চক্সগা, ত্রিপুরা, পাংখোয়া/পাংখো, বম, বর্মণ, মণিপুরী, মারমা, পাহাড়ী/মালপাহাড়ী, মুন্ডা, ম্রো, রাখাইন, লুসাই, সাঁওতাল, হাজং, মাহাতো/কুর্মি মাহাতো/বেদিয়া মাহাতো, কন্দ, কড়া, গঞ্জু, গড়াইত, গুর্খা, তেলী, তুরি, পাত্র, বাগদী, বানাই,  বড়াইক/বাড়াইক, বেদিয়া, ভিল, ভূমিজ, ভূঁইমালী, মালো/ঘাসিমালো, মাহালী, মুসহর,রাজোয়াড়, লোহার, শবর, হুদি, হো, খারিয়া/খাড়িয়া এবং খারওয়ার/খেড়োয়ার। বিশ্লেষন করলে দেখা যাচ্ছে ২৩ টি গোষ্ঠী সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন ২০১৯ এ নতুন ভাবে যুক্ত হতে পেড়েছে। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে ২০১১ সাল হতে ২০১৯ অর্থাৎ ৮ বছর তারা সরকারের কাছে অস্বীকৃত ছিলো। সহজেই অনুমেয় যে এই ২৩ দল সরকার থেকে নিদেন পক্ষেও কোন অধিকার ভোগ করতে পারেনি। সরকার তাদের কোন প্রকার উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে গন্যই করেনি। এই ২৩ টি অস্বীকৃত জাতি গোষ্ঠী হচ্ছেঃ মাহাতো/কুর্মি মাহাতো/বেদিয়া মাহাতো, কড়া, গঞ্জু, গড়াইত, গুর্খা, তেলী, তুরি, বাগদী, বানাই,  বড়াইক/বাড়াইক, বেদিয়া, ভিল, ভূমিজ, ভূঁইমালী, মালো/ঘাসিমালো, মাহালী, মুসহর,রাজোয়াড়, লোহার, শবর, হুদি, হো, খারিয়া/খাড়িয়া এবং খারওয়ার/খেড়োয়ার। আবার দেখাযাচ্ছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ৫ম আদমশুমারি  ও গৃহগণনা-২০১১ যারা তালিকা ভূক্ত ছিলো যেমনঃ পাংগোন, মুর, রাজবংশী, উসাই, মং, বর্মন এরা সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন ২০১৯ থেকে ছিটকে গেছেন। আবার মালপাহাড়ি এবং পাহাড়ি যারা ২০১১ এর আদমশুমারিতে এক গোত্র ভুক্ত ছিল সেই গোত্রকে ২০১৯ সালের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রানালয়ের প্রজ্ঞাপনে আলাদা গোত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রানালয়ের প্রজ্ঞাপন নিয়েও প্রশ্ন রয়ে যায়। পাংগোন, মুর, রাজবংশী, উসাই, মং, বর্মন এরা তবে কি আলাদা নৃগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃত হবে না? তাহলে তারা কি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং  কর্মকান্ড থেকে বাদ পড়ে যাবে? সংখ্যা নিয়ে এইসব অস্বচ্ছতা সরকারী এবং বেসরকারী উন্নয়ন কর্মকান্ডে জটিলতা বাড়িয়ে চলবে। বাংলাদেশের সমতল ও পাহাড়বাসি সংখ্যালঘূ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের সংখ্যা নির্ধারনে এই চলমান জটিলতা সমাধা না হলে সমতা ভিত্তিক উন্নয়নের বদলে অসমতা ব্যাপক হয়ে উঠবে।

২০১২-১৩ আর্থিক বছরে সরকার “মাইনরিটি অ্যান্ড আন্ডারপ্রিভিলেজড কমিনিটি” দের জন্য জাতীয় বাজেটে ২১৮ এবং ২২১ নম্বর উপ-ধারায় উন্নয়ন বাজেট নির্ধারন করে। পরিতাপের বিষয় যে সেই উন্নয়ন বাজেট রাখা হয়েছিল শুধুমাত্র পাহাড়ি আদিবাসিদের জন্য, তাও অপ্রতুল। সে সময় সরকারের সমতলবাসি আদিবাসিদের স¤পর্কে কোন পরিকল্পনাই ছিল না। কারন পরিসংখ্যান গত কোন তথ্যই ছিলো না সরকারের কাছে। এই অনুন্নয়নের ধারাবাহিকতা ২০১৩-১৪ অর্থ বছরেও অপরিবর্তিত রয়ে যায় তবে সে বছর দলিত, হিজড়া, বেদে এদের জন্য কিছু বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০১১-১২ সালে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয় সমতলের আদিবাসীদের নামে যার পরিমান ছিল মাত্র ১৫ কোটি। সরকারী আদমশুমারি ২০১১ মেনে নিয়েও যদি মাথাপিছু হিসেব করা যায় তবে সমতলের সংখ্যালঘূ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের জন্য জনপ্রতি বরাদ্দ ছিল ১০৯ টাকা। এমন হাস্যকর বরাদ্দের কথা নাই বা বললাম কিন্তু এই চরম নিগৃহতার কারন জাতি হিসেবে তাদের রাজনৈতিক অস্বীকারের সংস্কৃতি আর যথাযথ পরিসংখ্যানের অভাব। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর অফিসের স্পেশাল অ্যাফিয়ারস ডিভিশন এই বরাদ্দ পরিচালনা করতো এবং তারাই বলেছে যে বিশেষ বরাদ্দ পরিকল্পনার সময় তাদের ধারনা ছিল না যে সমতলের সংখ্যালঘূ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের প্রকৃত সংখ্যা কত এবং সমতলের ক্ষুদ্র জাতি গুলোর কোন প্রতিনিধি নেয়া হয় নাই। তাই বলতেই হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে দারিদ্রতা কমলেও এখনও বিপুল সংখ্যক মানুষ উন্নয়নের মূলস্রোতধারার বাইরে রয়ে গেছে।  ফলে তাদের জীবনে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যেও ব্যাপক। ২০১০ সালের জরিপ অনুসারে গ্রামাঞ্চলে ৩৫.২% মানুষ এবং শহরাঞ্চলে ২১.৩% মানুষ চরম দারিদ্রের ভেতর বসবাস করছে । এই বছর জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী “সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ। সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের” শীর্ষক ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য যে প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেছেন, সেখানে আদিবাসী, বঞ্চিত, অবহেলিত, পিছিয়েপড়াসহ সকল মানুষের আশা আঙ্খাকার প্রতিফলন ঘটবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছিলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আসা নতুন সরকার দেশের উন্নয়নের গতিপ্রকৃতি এবং অবহেলিত আদিবাসী মানুষের প্রতি সরকারের অঙ্গীকার, সকল বিবেচনাতেই ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেট নিয়ে উন্নয়ন কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ ছিল। কিন্তু সেই বাজেট  ৫০ টি আদিবাসী ও অন্যান্ন পিছিয়ে রাখা জাতিগোষ্ঠীর ৭০ লক্ষাধিক জনগণের জীবনমান উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়নি। বরং জাতীয় বাজেটে আদিবাসীরা বরাবরই অবহেলার শিকার হয়েছে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দ্রারির্দ্য হার ৪০ শতাংশ থেকে কমে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। অতি দ্রারির্দ্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে কমে ১১ শতাংশ হয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন বেড়ে ১,৯০৯ ডলার হয়েছে। কিন্তু সরকারের কাছে সমতলের এবং পাহাড়ের সংখ্যালঘূ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায় স¤পর্কে কোন বিভাজিত তথ্য নাই যা এই সব জনগোষ্ঠীদের  মাঝে দারিদ্যের হার স¤পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পারে। তাদের প্রকৃত মাথাপিছু আয় কত কিংবা তাদের মাঝে আসল দারিদ্যের হার কত এখন? শুধুমাত্র গড়ের হিসাবে উন্নয়নকে পরিমাপ করা হলে আদিবাসীরা বঞ্চিতই থেকে যাবে, কখনই তাদের প্রকৃত বঞ্চনার তথ্য বেরিয়ে আসবে না। আমাদের ধারণা মতে, আদিবাসীদের মাঝে দারির্দ্যের হার এখনো ৬৫% এর কম হবে না। রাঙামাটি আর বান্দরবানে দারির্দ্যের হার যথাক্রমে ৬৪ শতাংশ এবং ৬৩.২ শতাংশ, সমতলের আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা দিনাজপুরে এই হার ৬৪.৩ শতাংশ। আদিবাসীদের গড় আয় জাতীয় গড় থেকে কম। পাহাড়ের আদিবাসীদের ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশ কম, সমতলের আদিবাসীদের ক্ষেত্রে ৪১ শতাংশ কম। সমতলের দুই-তৃতীয়াংশ আদিবাসী কার্যত ভূমিহীন। এটি বাস্তবতা যে সমতলের বিশ লক্ষাধিক আদিবাসী জনগোষ্ঠী বরাবরই উন্নয়ন বাজেটে অবহেলিত ও বঞ্চিত থাকে। তাদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন এবং মন্ত্রণালয় বা খাতভিত্তিক বাজেট প্রণয়ণের দাবি করে আসছে আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার সমতলের আদিবাসীদের জন্য একটি পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের অঙ্গীকার করে আসছে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার থেকে শুরু করে ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারেও । কিন্তু কোনবারই এ উদ্যোগ গ্রহণে বরাদ্দ রাখা হয় নি। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ৭৪,৩৬৭ কোটি সামাজিক সুরক্ষায় বাজেট ধরা হয়েছে । যা বাজেটের ১৪.২১ শতাংশ এবং জিডিপির ২.৫৮ শতাংশ। গত বাজেটের চেয়ে এটি ১০,১৯০ কোটি টাকা বেশি। খুবই দুঃখজনক যে, বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)-র জন্য থোক বরাদ্দ ৫০ কোটি টাকা ছাড়া সামাজিক সুরক্ষায় আদিবাসীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোন বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে সামগ্রিকভাবে সামাজিক সুরক্ষার এই বরাদ্দ বৃদ্ধি যদি অবহেলিত ও প্রান্তিক মানুষের অবস্থার উন্নতির লক্ষ্য হয় তাহলে এখানে অবশ্যই আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা উচিত এবং আরো প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার।

এই সব অতি বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য চাই ২০২১ সালের আদমশুমারি ও গৃহগণনয় সমতলের ও পাহাড়ি সংখ্যালঘূ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের প্রকৃত সংখ্যা কত তা পুংখানুপুংখু রূপে বের করা এবং সঠিক প্রতিবেদন পেশ করা।  বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ১০ বছর পর পর আদমশুমারি পরিচালনা করে থাকে। জনসংখ্যা এবং খানা জরীপ হচ্ছে একটি দেশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন কাজ যা সরকারের দেশ পরিচালনা, নীতি নির্ধারন, উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন, বাজেট বরাদ্দ নির্ধারন ইত্যাকার গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য অতীব প্রয়োজন। জাতিসঙ্ঘের টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠ ১৭ তে সরকারের জাতীয় পর্যায়ে জনসংখ্যা এবং খানা জরীপকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয়েছে। কারন যে কোন সংখ্যাগত উপাত্তের জন্য জনসংখ্যা এবং খানা জরীপ তথ্যই একমাত্র গ্রহণযোগ্য মাধ্যম। সেখানে বলা হয়েছে ২০২১ এর আদমশুমারিরে যেন কোন প্রান্তিক, ক্ষুদ্র গোষ্ঠী এমন কি ভবঘুরে যেন না বাদ যায় এবং দেশের প্রতিটি ভৌগলিক এলাকা যেন এর আওতা থেকে বাদ না পড়ে। ২০১১ আদমশুমারি তিন পর্যায়ে স¤পন্ন হয়েছে এক. মূল গণনা, দুই. পোস্ট এনুমারেশন চেক তিন. সাধারণ গণনা: একটি নির্দিষ্ট এলাকা যাচাই। ১৬ জুলাই ২০১১ সালে আদমশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।২০২১ সালে ষষ্ঠবারের মতো আদমশুমারি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এবারেও একই পদ্ধতি অনুসরন করা হবে। এরই মধ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করেছে সংস্থাটি। উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান গুলো চেষ্টা করছে এবারের সুমারিতে যেন সমতলের ও পাহাড়ের  সংখ্যালঘূ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের স¤পৃক্তটা ঘটে। সেই নিমিত্ত্বে আন্তর্জাতিক দাতা প্রতিষ্ঠানের সাথে এবারই প্রথমবারের মত সট এবং লং প্রশ্নপত্র তৈরীর কাজে চলছে।  এই শুমারিতে আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে এবং আশা রাখি আগত জনমিতি সার্ভেতে সমতলের ও পাহাড়ি সংখ্যালঘূ ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী এবং জাত ও পেশাভিত্তিক অচ্ছুত মানুষ অমুসলিম এবং মুসলিম দলিত সম্প্রদায়ের প্রকৃত সংখ্যার পাশাপাশি এদেশের মুসলিম অছ্যুত জাতি যেমন পাঙ্গাল এবং মানতা যারা যথাক্রমে সিলেট, মৌলভিবাজার এবং পটুয়াখালি অঞ্চলে বাস করে তাদের সংখ্যাও নিরূপিত হবে। আর তা না হলে বাংলাদেশর পক্ষে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট অর্জন অসম্ভব হয়ে থাকবে।

(অনিক আসাদ একজন নৃবিজ্ঞানী  এবং একই সাথে একজন মানবাধিকার কর্মী, তিঁনি বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করছেন। বর্তমান তিনি বাংলাদেশে হেক্স/ইপার এর কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসাবে কর্মরত আছেন। হেক্স/ইপার  বাংলাদেশে বহুল আলোচিত আন্তজার্তিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান যারা মানবাধিকার ভিত্তিক সমভূমি আদিবাসী ও দলিত সম্পদায়ের সামাজিক অন্তভূক্তির বিষয়টি বিশেষ ভাবে আলোকপাত করে।)

বাংলা ইনসাইডার



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

গোয়েবলসের বাড়ি কেনার জন্য তারেক জিয়াই যোগ্য ব্যক্তি


Thumbnail

মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, হিটলারের প্রচারমন্ত্রী গোয়েবলসের বাড়ি বিনা টাকায় বিক্রি করার জন্য কর্তৃপক্ষ আগ্রহী প্রার্থী পাওয়ার চেষ্টা করছে। আমার মনে হলো যে, আমাদের একজন ভালো খরিদ্দার আছে এবং তার কাছে এই গোয়েবেলসের বাড়িটি বিক্রি করলে গোয়েবেলসের আদর্শটাও বেঁচে থাকবে এবং কর্তৃপক্ষেরও উপকার হবে। আর এ খরিদ্দার হচ্ছে বিএনপি এবং এবং লন্ডনে পলাতক দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বাড়িটি কিনতে পারেন। তিনি হচ্ছেন গোয়েবেলসের এই বাড়ির যোগ্য ব্যক্তি। কারণ তিনি গোয়েবেলসের ভাবশিষ্য। 

গোয়েবেলস যেভাবে জার্মানিকে তখন গেসকাভো বাহিনী দিয়ে হত্যা করা থেকে শুরু করে সবকিছু জাস্টিফাই করতো, যুদ্ধে হেরে যাওয়ার সময়ও বলতো জিততেছে। তার একটা বিখ্যাত থিওরি ছিলো, ‘একটা মিথ্যা বার বার বললে সেটা সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।’ এরকম বিভিন্ন দিকে গোয়েবেলস সম্বন্ধে পড়ে এবং দেখে বুঝেছি যে, বিএনপি এবং তারেক জিয়ার সাথে হিটলার বাহিনীর প্রচার মাধ্যম এবং আদর্শগত মিল সাংঘাতিক। হিটলার বাহিনী যেমন তখন ইহুদিদের হলোকাস্ট করেছে বিএনপিও যখন ২০০১ এ নির্বাচনে জিতে যায়, তখন তারা আমাদের দেশের সংখ্যালঘুদের হত্যা করেছে, শিশুদের শ্লিলতাহানী করেছে এবং এমন কোন অপকর্ম নেই যা করেনি। সুতরাং তারা এই হিটলার বাহিনীরই প্রতিনিধিত্ব করে এখন। 

আমার জানা মতে, তারা এই কাজটি যেহেতু ভালোভাবে করতে পেরেছে এই কারণেই এই বাড়িটি পাওয়ার সবচেয়ে যোগ্য হচ্ছে, বিএনপি এবং বিএনপির পক্ষে তারেক জিয়া। সুতরাং আমার মনে হয়, গোয়েবেলসের বাড়িটি বিক্রি হওয়ার আগেই তাদের যোগাযোগ করা প্রয়োজন, যাতে বাড়িটা বিনা পয়সায় নিয়ে জার্মানিতে স্থায়ীভাবে তারা এবং তাদের লোকজন মাঝে মাঝে গিয়ে থাকতে পারে। এতে তাদের কাজের খুব সুবিধা হবে।

স্বাভাবিকভাবেই ঐতিহাসিক কারণে জার্মান সরকার বাড়িটাকে ধ্বংস করতে চায় না। তাই তারা এতদিন বাড়িটাকে ঠিকঠাক করে রেখেছে। কারণ জার্মানের লোকজনের ভেতরে হিটলারের আদর্শ উপস্থিত আছে। আর হিটলারের আদর্শকে ধরে রাখার মতো যেহেতু বিএনপিকে পাওয়া গেছে, তারেক জিয়াকে পাওয়া গেছে। সুতরাং আমার মনে জার্মানির এই গোয়েবেলসের বাড়িটি পাওয়ার একমাত্র যোগ্য বিএনপি এবং তারেক জিয়া। এতে বিএনপি এবং হিটলারের বাহিনীর যে কোন পার্থক্য ছিলো না সেটিও জনগণ বুঝতে পারবে। সুতরাং আমি মনে করি বিএনপির জার্মানিতে গোয়েবেলসের এই বাড়িটি কিনা উচিত। 


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

একজন উপাচার্যের কৈফিয়ত

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ০৪ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজকাল গণমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগনের যোগ্যতা-অযোগ্যতা, অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি প্রভৃতি নিয়ে প্রায়শঃ খবর প্রকাশিত হতে দেখছি। আমিও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কোন কোন গণমাধ্যমের খবরে আমার নামটিও রয়েছে। সে প্রেক্ষিতে এই লেখা। লেখাটির শিরোনাম কি দেব বুঝতে পারছি না। অগত্যা ‘একজন উপাচার্যের কৈফিয়ত’ এই নাম দিয়েই লেখাটি শুরু করলাম।

আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা থেকে অবসর নেয়ার পর পরই ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার দায়িত্ব পালনের প্রথম দিকে প্রায় এক/দেড় বছর ছিল করোনাকাল। সে সময় আমি ও আমার স্ত্রী দু’জনই দু’বার করোনা আক্রান্ত হয়েছিলাম। করোনাকালে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ন্যয় এই বিশ্ববিদ্যলয়েও কম-বেশী সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও উপাচার্যের অফিস চলতো প্রায় স্বাভাবিক সময়ের মত। এসময়ে আমাদের প্রধান চেষ্টা ছিল অনলাইন এবং পরবর্তীতে অনলাইন-অফলাইন সমন্বিত মোডে কি করে ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখা যায়। আমার একটি তৃপ্তির অনুভূতি যে, তখন থেকে এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষনা কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে অব্যহত রয়েছে; নানারকম প্রতিকুলতা সত্বেও ক্লাস-পরীক্ষা একদিনের জন্যও বন্ধ থাকেনি কিম্বা তেমন কোন অস্থিরতাও তৈরী হয়নি।

গত এক/দেড় বছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করেছে। এখানে বিশেষ করে কিছু সংখ্যক শিক্ষক রয়েছেন যাঁরা কম-বেশী সব আমলে উপাচার্যের প্রীতিভাজন হয়ে প্রশাসনকে কব্জায় নিয়ে নিজেদের মত করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে চান। এমনটি না হলে সাধারনতঃ কোন উপাচার্যই তাঁদের মেয়াদ পূর্ণ করতে সক্ষম হন না। জন্মকাল থেকে ১৩ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত এক/দু’জন উপাচার্য কেবল মেয়াদ শেষ করতে পেরেছেন। যাহোক এই শিক্ষকগণের কেউ কেউ সুবিধা করতে না পেরে অন্তত এক-দু’জন শিক্ষক আমাকে এমনও বলেছেন যে, পূর্বে কম-বেশী সকল উপাচার্য তাদের নিয়ে চলেছেন, অথছ আমার সময়ে তিনি/তারা একটু ঝাড়ুদারের দায়িত্বও পাচ্ছেন না। এরপর থেকে দিনে দিনে শুরু হয়েছে অনলাইন ও বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার আর অপপ্রাচারের প্লাবন। একটি একটি করে তা’ পাঠকের জন্য তুলে ধরতে চাই।

প্রায় দেড় বছর পূর্বে হঠাৎ করে একদিন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ভ্যানে মাইক লাগিয়ে আমার কণ্ঠ-সাদৃশ্য বাক্যাংশের একটি অডিও বাজিয়ে কে বা কারা প্রচার করতে থাকে যে, উপাচার্য হিসেবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বানিজ্য করছি। মূলত : ঘটনাটি ছিল এমন যে, ওই সময়ে শিক্ষক শুন্য একটি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল। সেখানে মাত্র তিনটি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল এবং নিয়োগ পরীক্ষায় দু’জন প্রার্থী উপস্থিত হয়েছিলেন। আমরা প্রার্থী স্বল্পতার জন্য ওই পরীক্ষা বাতিল করে পুনঃবিজ্ঞাপনের সিদ্ধান্ত নেই। এর কয়েকদিন পর আমি আমার এক ছাত্রকে (যিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও বটে) অনুরোধ করি যে, তোমরা ঢাকায় থাকো, আমাদের শিক্ষক দরকার। তুমি আমাদের একটু সাহায্য করো- তোমার বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিতজনদের বলো তারা যেন এখানে দরখস্তকরে। উত্তরে সে জানায় যে, স্যার ওখানে কেউ যেতে চায় না। তাছাড়া একটা দরখস্ত করতে গেলে ৫/৬ হাজার টাকা ব্যয় হয়-তাই কেউ দরখস্ত করতেও উৎসাহি হয় না। আমি তখন জবাবে বলি-ওরা তোমাদেরই বন্ধুবান্ধব, প্রয়োজনে টাকা পয়সা দিয়ে সহায়তা করে তাদের দরখস্তকরতে একটু উদ্বুদ্ধ করো। এই কথোপকথনের ‘টাকা-পয়সা দিয়ে’ এই বাক্যাংশটুকু নিয়ে কিভাবে তারা একটি অডিও বানিয়ে প্রচার আরম্ভ করে যে, উপাচার্য নিয়োগ বানিজ্য করছেন। শুনেছি এভাবে তারা একাধিক অডিও [যা’ শুধুমাত্র একজন অর্থাৎ আমার কন্ঠ সাদৃশ্য এবং তা’ মিথ্যা, বানোয়াট, খÐিত, এক পক্ষীয় (অন্য প্রান্তে কে কি বলছেন তার কোন হদিস নেই) এবং হয়তোবা সুপার এডিটেড] বানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে উপাচার্যকে কিভাবে হেনস্থা করে তাদের অপ-ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকার করানো যায় সে চেষ্টাই তারা অনবরত করে যাচ্ছে।

আমি আমার কণ্ঠ সদৃশ্য আরও একটি অডিও’র বক্তব্য শুনেছি। এটিও ছিল এক পক্ষীয় এবং খÐিত। আমার আলাপন সেখানে পূর্ণাঙ্গ নেই। অপর প্রান্তে কে কথা বলছেন তারও কোন অস্তিত্ব নেই। অডিও’র বিষয়টি হলো-আমি কোন একজনকে বলছি যে, ‘আপনার নির্দিষ্ট প্রার্থীকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিবেন’ ....................আমি দেখবো। সাধারণত: কোন নিয়োগের আগে অনেকেই অনুরোধ করেন যাতে তার প্রার্থীকে যেন একটা চাকুরী দেয়া হয়। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধিগণ অথবা কোন রাজনীতিক/সামাজিক ব্যক্তিত্ব ১টি পদের জন্য কখনও কখনও ৩/৪ জন প্রার্থীর রোল নম্বর পাঠিয়েও এ ধরনের অনুরোধ করেন। ধরা যাক, এদের মধ্যে একজনেরই চাকুরিটি হয়েছে। অধিকাংশ সময়ে সে ফিরে গিয়ে তার জন্য অনুরোধকারীকে সুখবরটি জানায় কি-না তা’ আমার জানা নেই। কিšদ প্রায়শ এমনটি ঘটে যে, বাকী যাদের চাকারী হয় না তারা গিয়ে তাদের স্ব-স্ব নেতা বা অনুরোধককারীকে এই বলে বিষিয়ে তোলে যে, উপাচার্য আপনার অনুরোধের কোন দামই দিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে মন খারাপ করে জনপ্রতিনিধিগণ বা রাজনৈতিক/সামাজিক নেতৃবৃন্দ টেলিফোন করে আমাকে হয়তো বলে থাকেন-আপনি আমার একটা অনুরোধ রাখলেন না। এমতপরিস্থিতিতে আমাকে জবাব দিতে হয় যে, এরপর তাহলে আপনার সুনির্দিষ্ট প্রার্থীকে আমার সাথে দেখা করতে বলবেন ............. আমি দেখবো। এই ‘দেখা করতে বলা’ কি নিয়োগ বানিজ্যের সাথে যায়? এভাবে একটি গোষ্ঠী কেবলই মিথ্যাচার করে উপাচার্য হিসেবে আমাকে নাজেহাল করার অনবরত চেষ্টা করে যাচ্ছে যাতে আমি নতি স্বীকার করে তাদের হাতের পুতুল হয়ে কাজ করি। মিথ্যার কাছে নতি স্বীকার করে চেঁচে থাকার ইচ্ছে বা অভিপ্রায় আমার নেই।

আমার বিরুদ্ধে না-কি অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজে আমি অতিরিক্ত কাজ দেখিয়ে ৬ থেকে ৮ কোটি টাকার বিল বানিয়ে অর্থ-আত্মসাৎ করেছি বা করার চেষ্টা করেছি। রুচিহীন এবং উদ্ভট এসব অভিযোগের জবাব দিতেও আমি ইতস্তবোধ করছি। উল্লেখ্য নির্মাণ কাজের বাস্তব অগ্রগতি পরিমাপ করে ৩/৪ মাস অন্তর পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর বিল ঠিকাদারের প্রদান করা হয়। এই কাজে বিভিন্ন পর্যায়ে সাইট ইঞ্ছিনিয়ার-সহকারী ইঞ্জিনিয়ার-নির্বাহী বা তত্ত¡াবধায়ক ইঞ্জিনিয়ার-প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক প্রমুখ কর্তৃক পরীক্ষিত ও নীরিক্ষিত কাজের পরিমাপ এবং প্রস্তাবিত বিল ঠিক থাকলে তা’ চলে যায় ট্রেজারার মহোদয়ের কাছে। তখন তাঁর নেতৃত্বে গঠিত ভিজিলেন্স টিম সরেজমিনে সাইট পরিদর্শন করে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তা’ উপাচার্যের নিকট অনুমোদনের জন্য উপাস্থাপন করা হয়। বর্নিত ক্ষেত্রে আমার নিকট ফেবরিকেটেড ওই বিল অনুমোদনের জন্য কোন ফাইলই উপস্থাপিত হয়নি। বরং ৪/৫ মাস পূর্বে আমার দপ্তরে একটি বেনামী চিঠি আসে যে, নির্মান কাজ বেশী দেখিয়ে আট কোটি টাকার একটি বিল প্র¯দত করে তা’ প্রক্রিয়া করা হয়েছে। এই চিঠির সাথে ফটোকপিকৃত কিছু ডকুমেন্ট ছিল যা’ দেখে অভিযোগের সত্যতা থাকতে পরে বলে আমার কাছে মনে হয়েছিল। আমি তাৎক্ষনিকভাবে এই চিঠির ভিত্তিতে একজন সিন্ডিকেট সদস্যকে আহবায়ক এবং খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপককে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি। ইতোমধ্যে কমিটি তাদের রিপোর্ট প্রদান করেছে। পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় তা’ উপস্থাপিত হবে এবং সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে উপচার্য হিসেবে আমি কি দূর্নীতি করেছি আশাকরি পাঠকবর্গ তা’ উপলব্ধি করতে পারছেন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যাপারে দু’একটি অনলাইন পত্রিকায় নিউজ করানো হচ্ছে যে, প্রকল্প সাইটে মাটির নিচে পাইলিং এর জন্য যে রড ঢোকানো হয়েছে সেখানেও না-কি উপাচার্য হিসেবে আমি দূর্নীতি বা অনিয়ম করেছি। যেকোন নির্মাণে পাইলিংয়ের জন্য মাটির নিচে রড কতটুকু ঢুকাতে হবে তা’ নির্ভর করে সয়েল টেস্ট রিপোর্টের উপর। আমি উপাচার্য হিসেবে যোগদানের বহু পূর্বেপ্রকল্পটি অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় সয়েল টেস্ট করে প্রকল্প দলিল প্রনীত ও অনুমোদিত হয়েছিল।

আমার সময়ে এসে প্রকল্পের কাজ শুরুর পর যখন পাইলিং আরম্ভ হয় তখন সংবাদকর্মীদের মাধ্যামে আমি জানতে পারি যে, প্রকল্প দলিল অনুযায়ী মাটির নিচে যে পর্যন্ত রড ঢোকানোর কথা (ধরা যাক ৫০’) তার চেয়ে কম গভীরতায় রড ঢুকিয়ে পাইলিং এর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আমি সাথে সাথে প্রধান প্রকৌশলীকে বিষয়টি দেখতে বলি এবং ভিজিলেন্স টীম পাঠিয়ে তাদের ব্যবস্থা নিতে বলি। ভিজিলেন্স টীমের সদস্য এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসের কর্মকর্তাগণ আমাকে এসে রিপোর্ট করেন যে, সয়েল টেস্টিং এর ভিত্তিতে যেভাবে পাইলিং এর রড প্রকল্প অনুযায়ী মাটির নিচে ঢোকানোর কথা বাস্তবে তা’ ঢোকানো যাচ্ছে না। রড ঢুকছে তার কম (কম-বেশী ৪০’)। এ পর্যায়ে সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে পুনরায় সয়েল টেস্ট ও তা’ ভেটিং করিয়ে টেস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী সেই গভীরতায় রড ঢুকিয়ে পাইলিং এর কাজ করা হয়েছে। এই বিষয়টি প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির (যেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, আই এম ই ডি, ইউ জি সি-র প্রতিনিধিগণ থাকেন) সভায় অবহিত করা হয়েছে। এখানে উপাচার্য কিভাবে রড কম গভীরতায় ঢুকিয়ে দূর্নীতি বা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন সে বিবেচনার ভার পাঠকদের উপর ছেড়ে দিলাম।

আমি প্রায়শঃ শুনি যে, আমার বিরুদ্ধে না-কি আরও একটি অভিযোগ যে, আমি অবৈধভাবে কর্মকর্তাদের উচ্চতর বেতন স্কেল প্রদান করেছি। বিষয়টি আমি নিচেয় ব্যাখ্যা করছি। তার আগে বলে রাখা দরকার যে, এটি ডেপুটি এবং এসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার পর্যায়ের সকল কর্মকর্তার জন্য একটি আর্থিক সুবিধা প্রদানের বিষয়। এটি প্রদানের ক্ষেত্রে আর্থিক নিয়মের কোন ব্যত্বয় ঘটলে ইউ জি সি অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বছরে একাধিকবার অডিট করেন তারা আপত্তি উত্থাপন করতে পারেন। কিন্তু উপাচার্যের দূর্নীতির উপাদান এখানে কি থাকতে পারে তা’ আমার বোধগম্য নয়।

ঘটনাটি ছিল এমন যে, ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হওয়ার পূর্বে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি এবং এসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি নির্দিষ্ট সময় পরে একধাপ উচ্চতর স্কেলে বেতন উন্নীত করে তা’ প্রদান করা হতো। ২০১৫ সালের বেতন স্কেল কার্যকর হওয়ার পর এই সুযোগ রহিত করা হয়। আমি ২০২০ সালের শেষ দিকে করোনাকালে যখন এখানে উপাচার্য হিসেবে যোগদান করি তার কয়েকদিনের মধ্যে ওই পর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি অংশ এসে আমার সাথে দেখা করে দাবী জানায় যে, এই স্কেল উন্নীতকরণ ঘটবে উপ-রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রার পর্যায়ের সকল কর্মকর্তার ক্ষেত্রে। কিšদ পূর্বের প্রশাসন ২০১৯ সালে বেছে বেছে তাদের অনুগত কর্মকর্তাদের এই সুযোগ প্রদান করেছেÑ কাজেই অবশিষ্টদেরও এটি দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে ২০২২ সালের দিকে তারা একটি বড় আন্দোলন গড়ে তোলে এবং প্রায় ২ মাস ধরে কর্মবিরতি পালন করে। এক পর্যায়ে গিয়ে এবিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি দেখতে পায় এই সুবিধাটি ২০১৫ সালের পে-স্কেলের সময় রহিত করা হলেও ঢাকাসহ রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীর নগর, মওলানা ভাষানী বিশ্ববিদ্যালয় বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি তখনও চালু রয়েছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সুবিধা পূর্বে অলরেডি কর্মকর্তাদের একটি অংশকে দেয়া হয়েছে এবং কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তখনও এই সুবিধা প্রদান বহাল রয়েছে। এই বিবেচনায় কর্মকর্তাদের আর একটি অংশ যাতে বঞ্চিত না হয় (অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে তখনকার পরিস্থিতি) সেসব বিবেচনায় নিয়ে কমিটি বঞ্চিতদের জন্য স্কেল উন্নীত করণের সুপারিশ করে। এই সুপারিশ ফিন্যান্স কমিটি এবং সিন্ডিকেটে এই শর্তে অনুমোদন দেয়া হয় যে, এব্যাপারে ভবিষ্যতে কখনও যদি অডিট আপত্তি উত্থাপি হয় তাহলে এই উন্নীতকরণ বাতিল হবে এবং কর্মকর্তাদের দেয়া অর্থ ফেরত দিতে হবে। বিষয়টি সে সময় এভাবে ফয়সালা করা হয়েছে। এখানে উপাচার্য হিসেবে আমার দূর্নীতির জায়গাটি কোথায় তা’ আমার বোধগম্য নয়। আমি মনে করি এটি বড়জোর একটি অডিট আপত্তি/অনাপত্তির বিষয়। ব্যক্তি বা সামস্টিক দূর্নীতির সংগার সাথে এটি যায়-কি?

উপাচার্য হিসেবে আমার বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ সম্পর্কে দু’একটি অনলাইন পত্রিকা এবং নষ্ট-ভ্রষ্ট ওই গোষ্ঠীর প্রচার-প্রপাগাÐা থেকে জেনেছি যে, আমি আমার ঢাকার বাসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় সিকিউরিটি নিয়োগ দিয়েছি। এটি সর্বৈব মিথ্যা রটনা। ঢাকায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রেস্ট হাউজ রয়েছে। সেখানে মাত্র ২ জন কর্মী (একজন কুক, একজন সাধারণ) কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫/২০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা (কখনও কখনও তাদের পরিবার-বিশেষ করে চিকিৎসার জন্য) ঢাকায় গিয়ে রেস্ট হাউজে অবস্থান করেন। উল্লেখ্য এসময়ে বেশ কয়েকমাস ধরে রেস্ট হাউজ ভবনের সংস্কার কাজ চলছিল। রেস্ট হাউজে ইবি পরিবারের সদস্যগণ দিনে-রাতে (কোন ধরাবাধা সময় নেই) যাতায়াত করেন। তাদের জন্য বার বার গেট খোলা এবং লাগানোর মত কোন জনবলই সেখানে ছিল না। অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী স্থায়ী জনবল নিয়োগেরও তেমন কোন সুযোগ ছিল না। সেসময় এস্টেট অফিস থেকে আমাকে জানানো হয় যে, ঢাকা রেস্ট হাউজে কিছু সিকিউরিটি ডেপুট (নিয়োগ নয়) করা দরকার। ইবি ক্যাম্পাসের কয়েকজন আনসার দিয়ে সেটা করা যায় কি-না সে ব্যাপারে এস্টেট অফিস আমাকে অবহিত করে যে, আনসার ডেপুট করা অনেক খরচের ব্যাপার এবং বারো জনের নিচেয় আনসার কর্তৃপক্ষ জনবল দিবে না। বিকল্প হিসেবে স্বল্প সংখ্যক (৫/৬ জন) জনবল বরং সিকিউরিটি সংস্থা থেকে ডেপুট করা যায়। সে অনুযায়ী যথাযথ বিধি বিধান প্রতিপালন করে ফিন্যান্স কমিটি এবং সিন্ডিকেটের অনুমোদন নিয়ে ঢাকা রেস্ট হাউজের জন্য ছয়জন সিকিউরিটির সেবা হায়ার করা হয়েছে। উপাচার্য হিসেবে প্রায়শ আমাকে শিক্ষা মন্ত্রনালয়, ইউ জি সি, ধর্ম মন্ত্রনালয় (ইসলামী ফাউন্ডেশন), এ ইউ বি-র সভা এবং গুচ্ছের সভাসমূহে যোগাযোগসহ প্রভৃতি কারণে ঢাকায় যেতে হয়। সেকারণে শিফট অনুযায়ী সিকিউরিটি সদস্য যারা রেস্ট হাউজে ডিউটি করে তাদের একজন রেস্ট হাউজে এবং একজনকে উপাচার্যের বাসায় ডিউটি বন্টন করা হয়েছে মাত্র। উপাচার্যের বাসার জন্য কোন সিকিউরিটি সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়নি। উপাচার্যের বাসার জন্য সিকিউরিটি নিয়োগ দেয়া হয়েছে এটাও একটি মিথ্যা প্রচারণা।

প্রকৃতপক্ষ আমি জানিনা উপাচার্য হিসেবে আমার বিরুদ্ধে আর কি কি অভিযোগ রয়েছে? অভিযোগগুলো কিসের ভিত্তিতে করা হয়েছে? অভিযোগগুলো কারা করেছে তা’ও আমার জানা নেই। যাহোক একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর প্রচার প্রপাগান্ডার কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে ইউ জি সি-কে দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি করিয়েছে। কমিটির সদস্যবৃন্দ আমাকে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে লিখিত মতামত/বক্তব্য দিতে বলেছিলেন। আমি তাঁদের নিকট লিখিত ভাবে (ডকুমেন্টসহ) আমার বক্তব্য প্রেরণ করেছি।

আশাকরি পাঠকবৃন্দ বিষয়সমূহ অবহিত হয়ে একজন উপাচার্যকে কিভাবে কেবল রসালো, মিথ্যা, বানোয়াট এবং বস্তনিষ্ঠহীন অভিযোগ তুলে তাঁকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে তা’ উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন। উপাচার্য এবং ব্যক্তি মানুষ হিসেবে আমি শুধু এতটুকুই বলবোÑআমি কোন দূর্নীতি করে উপাচার্যের এই চেয়ারকে কলুসিত করিনি; আমি স্বার্থান্বেষী নষ্ট-ভ্রষ্ট কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে মাথা নত করবো না।

ধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম

উপাচার্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।



বিশ্ববিদ্যালয়   উপাচার্য   কৈফিয়ত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার ও তাৎক্ষণিক ভাবনা


Thumbnail

মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?

আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা বিরোধী।  আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা  লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে  মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে  আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।

পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা

অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না, সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।

পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায় ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।

 

লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।


মিল্টন সমাদ্দার   গ্রেপ্তার   আইন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

আওয়ামী লীগে খুনি মোশতাকদের বাম্পার ফলন


Thumbnail

প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।

খুনি মোশতাকের কথা আমাদের নিশ্চিয় মনে আছে। বঙ্গবন্ধু তাকে অনেক ভালোবাসতেন, বিশ্বস্ত মনে করতেন। খুনি মোশতাকেরও এমন অবস্থা যেন তিনি যে কোন মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছেন। এমনও হয়েছিল যে, খুনি মোশতাকের মা মারা যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধুই তাকে সান্ত্বনা দিয়ে তার কান্না থামিয়েছেন। কিন্তু সেই মোশতাকই বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন। ঠিক একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আজকে আওয়ামী লীগে। দার্শনিক শেখ হাসিনা আপনাদের মন্ত্রী বানিয়েছেন, এমপি বানিয়েছেন, তার অনুকম্পায় আপনি রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেয়েছেন কিন্তু আপনার স্বার্থের জন্য আপনি তারই (শেখ হাসিনা) নির্দেশনা অমান্য করলেন। আপনি উপজেলায় আপনার মত করে প্রার্থী দিলেন। সুতরাং আপনি খুনি মোশতাকের চেয়ে কম কিসে? জেলায় জেলায় আজ খুনি মোশতাক জন্ম নিয়েছে। এমনকি উপজেলা গুলোতে একই অবস্থা। ফলে এটা স্পষ্ট যে, খুনি মোশতাকের বাম্পার ফলন হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে।

আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আওয়ামী লীগ তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকেছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি যে কোন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত চিন্তা ভাবনা করে নেন এবং দর্শন ভিত্তিতে নেন। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবে আমরা আন্দাজ করতে পারব না যে, তিনি কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তবে আমরা অনুমান করতে পারি যে, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে নিশ্চিয় তিনি বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিবেন।

দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের ব্যাপারে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের একটি বিখ্যাত উক্তি আছে সেটি হল ‘ফর গিভেন বাট নট ফরগটেন’(forgiven but not forgotten) অর্থাৎ তিনি ক্ষমা করে দেন কিন্তু সেটা ভুলে যান না। সুতরাং যারা এখন নতুন করে খুনি মোশতাক হয়েছেন এবং যাদের বাম্পার ফলন হয়েছে তাদের এটা মনে রাখতে হবে। আগামীকাল আওয়ামী লীগ তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নিবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ হল দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঠিক মতই জানেন কিভাবে এই সকল খুনি মোশতাকদের কিভাবে ধরতে হবে। খুনি মোশতাক খুব ভাগ্যবান যে তিনি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

কিছুদিন আগে বাংলা ইনসাইডারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে কেউই রাজনীতিতে ভালো করতে পারেননি।’ উনার এই বক্তব্য ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই ভালো লেগেছে। তিনি চিরন্তন একটি সত্য তুলে ধরেছেন। সুতরাং দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের এই বিষয়টি মনে রাখা উচিত।

আমি মনে করি, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারী এই নতুন খুনি মোশতাকরা বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে স্থান করে নিয়েছে। কেউ নিজে থেকে বা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ করলেও তিনি আসলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নয়, খুনি মোশতাকের আদর্শে দীক্ষিত হয়েছেন। যেমন জার্মানিতে এখনও হিটলারের সমর্থক কিছু লোক পাওয়া যায়। ঠিক তেমনি ভাবে এখন আওয়ামী লীগের ভেতর এখনও খুনি মোশতাক এর দোসররা রয়ে গেছেন। এই সমস্ত খুনি মোশতাকদের যদি এখনই প্রতিহত না করা যায় তাহলে আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে তাদের জন্য সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা সেই কঠিন সময় আসার আগেই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যেন এই খুনি মোশতাকদের বাম্পার ফলন যে ভাবেই হোক ধ্বংস করে দিবেন।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশই দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ


Thumbnail

দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী

বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।

কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায় না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।

প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয় এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে।

সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন। যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মিত হবে।

কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।


দ্য শেখ হাসিনা   ইনিশিয়েটিভ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন