নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০১ জুন, ২০২০
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশ রাষ্ট্রেরও মূল ৩ টি অংশ- একটি হচ্ছে আইন বিভাগ, অপরটি বিচার বিভাগ আর প্রশাসন। প্রশাসনের আবার আছে দুটি অংশ একটি হচ্ছে রাজনৈতিক আর অপরটি আমলা অংশ। প্রশাসনের রাজনৈতিক অংশে থাকেন, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী। আর আমলা অংশে থাকেন একদল সিনিয়র সচিব আর সচিব বা সচিব পদমর্যাদার আমলা, ইত্যাদি। তাঁরা মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী প্রধান ও একাউন্টিং হেড। তাঁরা সরকারের সকল নীতি ও কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত। সেই হিসেবেই করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ বা অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলায় ত্রাণ বিতরণে আমলাদের হাতে সরকার প্রধান ক্ষমতা দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তাঁরা এই কাজে কতটুকু দক্ষ! কাজ করা হচ্ছে তাঁদের নামে কিন্তু বাস্তবে কাজ করছেন স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিগন।
বাংলাদেশে সরকারী অফিস ৮ ঘণ্টার। জন-গুরুত্বপূর্ণ কিছু দপ্তর যারা অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবার আওতায় পড়েন তাঁরা ছাড়া সবাই ৮ ঘণ্টার বেশি অফিস করতে বাধ্য নন। বিকেল ৫ টার পরে তাঁদের ফোন করলে ফোন ধরেন না, কোন ফাইলে সই করেন না যদি না প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে কোন নির্দেশ যায়। সপ্তাহে তাঁর দুই দিন ছুটি ভোগ করেন। এছাড়াও সরকারী অন্যান্য ছুটি তাঁরা ভোগ করে থাকেন। কিন্তু একজন রাজনীতিবিদের বাস্তবে কোন অফিস টাইম নেই, ছুটি নেই। বরং সন্ধ্যার পরে তাঁর কাজের চাপ আরও বাড়ে। একজন আমলা যেমন ১৬ /১৭ বছর নিরলস পড়াশুনা করে বি সি এস পরীক্ষা দিয়ে একবার চাকরি পেলে তাঁর আর তেমন কোন পরীক্ষা দিতে হয় না। কাজ একটু ভালো করলে, মন জুগিয়ে চললে সচির হয়ে যান। ঠিক একইভাবে একজন রাজনৈতিক কর্মী কিছু ব্যতিক্রম বাদে ২০/২৫ বছর মানুষ ও সমাজ থেকে রাজনীতির পাঠ নিয়ে, প্রতি মুহূর্তে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে সাংসদ হবার টিকেট পান দল থেকে। তাঁকে প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে জনগণের কাছে পরীক্ষা দিতে হয়। একটা ভুল করলেই ৫ বছর পরে তাঁর চাকরি নট। কিন্তু আমলারা জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করলে জনস্বার্থে তাঁকে অন্যত্র বদলি করা হয়। ভাবটা এমন যে, যেখানে বদলি করা হল সেখানে কোন জনমানব নেই।
পৃথিবীর প্রায় সব উন্নত দেশেই সংসদ সদস্যদের বেশীরভাগ হন আইনজীবী বা ঝানু পলিটিশিয়ান যারা আইনের মূল বিষয়টাও খুব ভালো বোঝেন। যে সব আইনজীবী সাংসদ হন তাঁদের মধ্যেও ভাগ থাকে,পরিবেশ, বিনিয়োগ, শ্রম আইন, ইত্যাদি আইনে অভিজ্ঞ আর প্র্যাক্টিশনার। বাংলাদেশের ৩৫০ (৩০০+৫০) জন সাংসদ বা সংসদ সদস্যদের কাগজে কলমে কাজ মূলত: আইন প্রণয়ন করা। তাই আইন সম্পর্কে বেসিক ধারণা ছাড়া আইন প্রণয়ন করতে গেলে হয় ভুল। এসব ভেবে তাই যাতে করে তাঁর কাছে ঐ খাতের পুরো চিত্র থাকে কোন না কোন ভাবে। এর বাইরেও সংসদে আনা হয় নানা পেশাজীবীকে যাতে করে তারা সংশ্লিষ্ট পেশার সমস্যা আর সম্ভাবনা নিয়ে প্রয়োজনীয় আইন তৈরি করতে সহায়তা করতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলো এমনভাবেই নমিনেশন দেন যাতে ক্ষমতায় গেলে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তাঁদের অসুবিধায় না পড়তে হয়। কিন্তু বাস্তবে প্রতিটি সাংসদকে ‘জুতা সেলাই থেকে চণ্ডী পাঠ’ সবই করা লাগে।
উচ্চ পদের আমলারা সাধারণত যে কোন দেশের রাজধানীতে থাকেন, গ্রামের বা শিল্প এলাকার কলকারখানার ছোটখাটো কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সাথে তাদের নিবিড় যোগাযোগ থাকে না। সেখানে তাঁদের পক্ষে কাজ করেন তাঁদের অধীনস্থ দপ্তরের কর্মীরা। তারা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে নীতি বাস্তবায়নের কাজ করেন। আমাদের দেশে সব বিশেষজ্ঞদের মতোই একজন পল্লী উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ সারাটা সময় কাটান শহরে উনাকে দিয়ে এককভাবে পল্লী উন্নয়ন বা এমন কোন শহুরে বিশেষজ্ঞকে দিয়ে কোন খাতের উন্নয়নের নীতি বা আইনের খসড়ার পরামর্শ নেওয়া হয়, কিন্তু উন্নত দেশে নেওয়া হয় না। কারণ গ্রামীণ সমাজের রূপ প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে গ্রামীণ সমাজের পাওয়ার ফ্যাক্টর। কলকারখানার কর্ম-পরিবেশ বদলাচ্ছে। স্থায়ীভাবে গ্রামে বাস না করলে গ্রামের আসল চেহারা বা রূপ আর তাঁর সমস্যা এক বা দুই সপ্তাহ গ্রামে থেকে পাওয়া যায় না। উন্নয়নের ফ্যাক্টরের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই কথা প্রযোজ্য। সেই সেক্টরের সাথে আধা নিবিড় বা নিবিড়ভাবে কাজ না করলে তার মূল সমস্যা আর তার সমাধানের কার্যকর পন্থা নিয়ে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সবার থাকে না। যারা আইনের পেশার সাথে জড়িত, তারা আদালতের বিভিন্ন মামলায় যোগ দিয়ে সমস্যার কিছুটা অন্তত গভীরে যেতে পারেন বা যাবার সুযোগ পান। সে কারণে তাঁদের দিয়ে আইন প্রণয়ন অনেকটাই ভালো হয়।
ব্যবসায়ী আর অবসরপ্রাপ্ত আমলারা এখন দলে দলে রাজনীতিতে ঢুকছেন বাংলাদেশে। সংবিধানের আলোকে আইন করার কথা। সেই পার্লামেন্টের আইনের অধীন অধঃস্থ আইন বা স্থানীয় সরকার আইন/ বিধি প্রণয়ন বা তৈরি হয়। আইনের / বিধির খসড়া তৈরির সময় সেখানে যুক্ত হচ্ছেন মূলত: একটু ইংরেজি ও বাংলা ভালো জানা আমলারা, সত্যিকার অর্থেই রাজনীতিবিদরা নন যদিও তাঁদের নামেই হচ্ছে সবকিছু। কারণ তাদের অনেকের (সবার নয়) প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার সীমাবদ্ধতা আছে। তারা মানুষের কল্যাণের কাজে, উন্নয়নের কাজের সমন্বয়ে খুব ভালো হলেও লেখা পড়ায় দুর্বল। সেই সুযোগ নিয়ে আইন প্রণয়নের সময় এমন সব শব্দের প্যাঁচ লাগানো হচ্ছে যাতে করে রাজনীতিবিদের কাজ আর জীবন হয় খুব কঠিন, আমলা আর ব্যবসায়ীরা দিন দিন হয় শক্তিশালী। আর প্রতি বছর বাজেটের পরে কয়েকশত ব্যবসায়ী আর তাদের সহযোগী হন কোটিপতি। পরে অবশ্য ধরাও পড়েন। কিন্তু এখন আমলাদের খসড়া করা আইনের ফাঁক এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে, সরকার বদলালে রাজনীতিবিদরা যাচ্ছেন জেলে, কিন্তু তাঁর মন্ত্রণালয়ের আমলারা তাদের নির্বাহী প্রধানরা থাকছেন ধরা ছোঁয়ার একদম বাইরে। ব্যবসায়ীরা রাজনীতিবিদরা যারা সাংসদ তাঁরা আইনের খসড়া প্রণয়নে আমলাদের ব্যবহার করে, ম্যানেজ করে এমন সব আইনের খসড়া করছেন/আইন পাশ করছেন যাতে ব্যবসায়ীরাই লাভবান হন, আমলারা নিরাপদ থাকেন, আর বিপদে থাকেন পেশাদার পোড়-খাওয়া রাজনীতিবিদরা। তাই তো দিনে দিনে রাজনীতিতে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়ছে।
১৯৪৬ এ অবিভক্ত বাংলার শেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যাতে লক্ষণীয় আইনজীবী-রাজনীতিকদের উপস্থিতি রয়েছে। ১৯৫৪ এ পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে আগের অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে, ব্যবসায়ী যুক্ত হয়েছে, তবে তা মাত্র ৪% অবিভক্ত পাকিস্তানের প্রথম ও শেষ নির্বাচন-১৯৭০ : জাতীয় (ও প্রাদেশিক পরিষদে) আইনজীবী-রাজনীতিকদের প্রাধান্য বিশেষভাবে লক্ষ্য করার মত। এরপরের চিত্রটা হলো, প্রথম সংসদ-১৯৭৩ : ১৩% ব্যবসায়ী; ২য় সংসদ-১৯৭৯ : ৩৪% ব্যবসায়ী, সপ্তম সংসদ-২০০১ : ৫১% ব্যবসায়ী; অষ্টম সংসদ-২০০৮ : ৬৩% ব্যবসায়ী; নবম সংসদ-২০১৪ : ৬৩% ব্যবসায়ী। বর্তমান অবস্থা আরও খারাপ।
মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকেই লৌহ, তাম্র, ইত্যাদি নানা যুগ পেরিয়ে দাসদের ব্যাবহার করে কৃষি, শিল্প বিপ্লব হলে পরবর্তীতে দুনিয়া জুড়ে আসে জনমানুষের তন্ত্র বা গণতন্ত্র। মানুষের কল্যাণেই নাকি এসব করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের নামে এসব নানা তন্ত্র মন্ত্র আমাদের চোখের সামনে এলেও গভীরভাবে দেখলে সব ছবি একই। সময় গড়িয়েছে অনেক, কিন্তু সামাজিক সেই প্রাচীন প্রথা সেই অর্থে বদলায়নি। শোষণ আর দাস প্রথা ভিন্ন ভিন্ন রূপে এখনো টিকে আছে না বলে, বলা যায় প্রথাটি আরো শক্তিশালী হয়েছে। শোষকরা হয়েছে অনেক বেশী কৌশলী, ক্ষমতাবান। এটা এমন যে, বাঘ মারে নিতাই নাম হয় শংকরের, কারণ নিতাই গরীবের ছেলে, আর শংকর জমিদারের সন্তান। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদ্গন বাস্তবে সবাই আজ নিতাই। রাত দিন কাজ করার পরেও তাঁদের কোন সুনাম নেই সব বদনাম, আর সুনাম হচ্ছে আমলাদের।
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।