নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
গতকাল দেখলাম যে, হাইকোর্টে আল জাজিরার বাংলাদেশের সম্পর্কে যে নেতিবাচক প্রচারণা করেছে সে বিষয়ে হাইকোর্ট তাদের রায় প্রদান করেছেন। যেহেতু হাইকোর্ট তাদের রায় প্রদান করেছেন সেজন্য আমি এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য প্রদান করতে চাই না। তবে শুধু এতটুকু বলবো, আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে যে বিচারকরা যখন জিজ্ঞাসা করেছেন যে, এতদিন হয়ে গেলো জনগণ যা যা পড়ার বা দেখার তা সবাই পড়েছে বা দেখেছে এখন এটা বন্ধ করাতে কি লাভ হবে। যাইহোক এ বিষয়টি রেখে আমি আসলে কথায় আসছি সেটি হচ্ছে এই যে, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এই দলের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা আগে থেকেই ছিল এখন আরো বাড়ছে এবং দিন দিন এই নেতিবাচক প্রচারণা আরো বাড়বে।
বিশ্বব্যাপী সবাই জানে যে, যাদের অজস্র টাকা আছে তারা মিথ্যাকে ব্যবহার করে সত্যকে মিথ্যা বানিয়ে ফেলতে পারে। হিটলারের প্রচারমন্ত্রী যোসেফ গোয়েবলস তখন বার বার মিথ্যাকে লোকের কানে দিয়ে সত্য হিসেবে গ্রহণ করাতে সক্ষম হয় নি। এখন গোয়েবলস এর অভাব বর্তমান যুগে নেই। বরং পার্থক্য হচ্ছে গোয়েবলস হয়ত ততটা শিক্ষিত ছিল না কিন্তু এখন যারা এসব করে তারা যথেষ্ট লেখাপড়া করে এবং তারা যথেষ্ট পরিশ্রম করেই বাংলাদেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তি বিশ্বের সামনে প্রচার করতে চায়। তাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। যিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পরিচিত যিনি এই করোনাকালেও দেশের জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সবকিছুকেই সচল রেখেছেন এবং ভ্যাকসিন সময়মতো পেয়েছেন। আমাদের জিডিপির উন্নতি হচ্ছে, সমস্ত দিক থেকে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীতে একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় নেতিবাচক প্রচারণার উদ্দেশ্য কি?
উদ্দেশ্য হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বে এবং এদেশের জনগণের সামনে কোনও রকমভাবে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করা যায় তখনই তারা আসল আঘাতটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে করবে। এগুলো কোবলমাত্র ভূমিকা। অর্থাৎ আসল আঘাত তারা এখনো শুরু করে নি। তারা কেবলমাত্র মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রচারনা করে দেখছে যে এর ফলাফল কি হয়। আমার ধারণা তারা যেটা আশা করেছিলো সেটা হয়েছে। সেটি হলো আওয়ামী লীগের মতো একটি শক্তিশালী দলে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে এই যে নেতিবাচক প্রচারণা করা হলো এর কোনও সঠিকভাবে যুক্তি দিয়ে সত্যিকারের কোনও প্রতিবাদ আমার নজরে পড়েনি। একমাত্র ব্যাতিক্রম হচ্ছে বাংলা ইনসাইডারের সৈয়দ বোরহান কবীর। তিনি প্রথম থেকে এর প্রতিবাদ করে গেছেন। তিনি অন্যের মতো এটি সঠিক নয় না বলে একের পর এক যুক্তি দিয়ে এই বিষয়টি জনগণকে জানাবার চেষ্টা করেছেন। এমনকি তিনি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনেও লিখেছেন। এবং প্রত্যেক জায়গায় তিনি যুক্তি দিয়ে বলেছেন।
আর এরপরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী ডয়েচে ভেলেতে এর প্রতিবাদ করেছেন। সেখানে ডয়েচে ভেলের নামকরা সাংবাদিক টিম সেবাস্টিয়ানের প্রশ্নে আবার এই আল জাজিরার প্রসঙ্গ আসে। এবং তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে এইসব প্রশ্নের উত্তর দেন। টিম সেবাস্টিয়ান গওহর রিজভীকে নোটের পরে নোট অনেক বড় বইয়ের সমান হবে, সেই সমস্ত পয়েন্ট তুলে আনছিলেন যাতে তাকে একের পর এক ঘায়েল করা যায়। এমনকি যখন প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর গওহর রিজভী সঠিক, সুন্দরভাবে এবং যুক্তি দিয়ে দিয়েছেন। যেমন একটি উদাহরণ দেই, তিনি যখন আমাদের সেনাপ্রধানকে নিয়ে কথা বলেন। তখন তিনি বোঝান তিনি যখন ক্যাডেটও হননি তখন তার ভাইদের নিয়ে তাকে জড়ানো হলো। এর কি যুক্তি আছে ? কিন্তু এর কোনও জবাব টিম সেবাস্টিয়ান দিতে পারলো না।
তারপরে আর একটি জায়গায় গওহর রিজভী যাতে বিরক্ত হন সেজন্য তাকে বলা হয় আপনাকে তো উপদেষ্টা করা হয়েছে এবং টাকা দেয়া হয় যাতে করে আপনি সরকারের এই নেতিবাচক কাজগুলোকেও সমর্থন করবেন। তিনি শুধু প্রতিবাদ স্বরূপ না না বলে অন্যান্য পয়েন্টে আলাপ করলেন। এর কিছু পরে যখন গওহর রিজভীকে উত্তর দিতে না দিয়েই তারা অন্য প্রশ্নে ঢুকে যাচ্ছিলেন তখন গওহর রিজভী বলেন, শুনুন আপনি আমাকে প্রশ্ন করেছেন আমাকে উত্তর দিতে হবে। আমি সবই বুঝলাম তখন থেকে আপনি একের পর এক বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক সব প্রশ্ন করলেন। বাংলাদেশের যে উন্নতি হয়েছে, কোভিড-১৯ এ যেখানে আপনার দেশ পর্যন্ত কিছুই সঠিকভাবে করতে পারে নি সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দেশে সঠিকভাবে করেছেন। আপনার দর্শকদের তো আপনি সেটি বলছেন না। তার মানে আপনাকে টাকা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশের নেতিবাচক প্রচারণার জন্য।
আমি বলতে চাচ্ছি এই যে, জিনিষটি এর আসল প্রতিবাদের ভাষা ছিলো যুক্তিপূর্ণ দিয়ে। কারণ যখন মিডিয়াতে বলে তখন তার জবাব মিডিয়াতেই দিতে হয়। লেখার জবাব লেখায়, কথার জবাব কথায় এটিই বিশ্বে প্রমানিত এবং এতেই কাজ হয়। শুধু আন্দাজে বলে দিলাম যে ঠিক বলা হয়নি তাতেই লোকজন বিশ্বাস করবে এটা হতে পারে না। এতো বড় আওয়ামী লীগের কি কোনও প্রচার সেল আছে ? আমার তো মনে হয় নাই। হয় তারা এই করোনাতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অথবা তারা করোনার টিকা নেয়ার অপেক্ষায় আছে। যদি তাই না হতো তাহলে শুধুমাত্র একটি কাজই সফলতার সাথে হচ্ছে আর তা হলো যারা অন্য দল থেকে ঘুরে আওয়ামী লীগে আসছে তাদেরকেই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে। তারাই বড় বড় কাজ করছে। কিন্তু যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সরাসরি আঘাত আসছে তখন তার যুক্তিপূর্ণ উত্তর দেয়ার জন্য লোকের অভাব দেখা যাচ্ছে।
এতো বুদ্ধিজীবী এতো রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়া হয় বছরের পর বছর তাহলে তারা কি করছে। আমরা না হয় সাধারণ লোক, আমরা কিছু করি নাই যার জন্য রাষ্ট্র আমাদের কোনও পদক বা কিছু দেবে। আর আমি সেটা আশাও করি না। আমরা পদক পাওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বস করি না, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কারণে তার আদর্শে বিশ্বাসী। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে কথা বলি তাকে বিশ্বাসের কারণে। তিনি এতো বুদ্ধিজীবীকে পদক দিলেন কিন্তু এখন এইসব বুদ্ধিজীবীরা কোথায় গেলেন। আমি একটি উদাহরণ দেই, ১/১১ তে আমি তখনকার যে প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের অফিসে আমি একা গিয়েছিলাম। নেত্রীকে বিদেশে পাঠানো প্রয়োজন ছিল। তখন আমি কোনও লোক খুঁজে পাই নাই। সমস্ত দেশবাসি টেলিভিশনে দেখেছে বিষয়টি। তবুও তো চেষ্টা করেছি।
জনগণের চেষ্টায় সবকিছু মিল হয়েছে। আমি এখানে কোনও কৃতিত্ব নিচ্ছি না কিন্তু আমি এখানে চেষ্টা টা তো করেছি। সেটা এখন আওয়ামী লীগের মনে নাই। যদিও মনে থাকার দরকারও নেই। কিন্তু এই সময় যেখানে সরাসরি তিনি সরকারের সঙ্গে যুক্ত নয় বা দলের সঙ্গে যুক্ত নয়, তিনি নিজে অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং সত্যিকারে বুদ্ধিজীবী বলতে যদি বোঝায়, বয়স খুব কম কিন্তু আমি অবশ্যই সৈয়দ বোরহান কবীরকে একজন বুদ্ধিজীবী বলবো। কারণ যেকোনও সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আঘাত করলে আমি একটি ঘটনা আজ পর্যন্ত দেখি নাই যেখানে নাকি কোনও না কোনও ভাবে তার যুক্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সৈয়দ বোরহান কবীর করেন নি। এই বোরহান কবীর কিন্তু রাষ্ট্রীয় কোনও স্বীকৃতি পায়ও নি পাওয়ার দরকারও বোধহয় তার নেই। কারণ তার কাজ তো সে কারোর মুখের দিকে চেয়ে করেন না।
এখন এটি প্রমাণ হলো যে আসলে আওয়ামী লীগে দায়িত্বপূর্ণ কোনও লোক নেই। এরা খামোখা গলাবাজি করতে পারে। যুক্তি দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাজগুলিকে দেশে এবং বিদেশের জনগণের মধ্যে প্রচার করতে হবে। যেকোনও অপপ্রচারকে বাধা দিতে হবে তার জন্য উপযুক্ত কোনও সেল নেই। আজও পত্রিকাতে দেখলাম তারা একটি কমিটি গঠন করলেন। শুধু এগুলো করে তো কোনও লাভ হবে না। আসলে কোথায় কোন লোক আছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে এবং যদি খুঁজে বের করা না হয় মুখে যত বড় বড় কথাই বলা হোক না কেন যখন আমাদের প্রতি চরম আঘাত আসবে তখন কি হবে। ইতিমধ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের টাকা পয়সা লোকজন এবং সবচেয়ে বড় যে তাদের সম্পদ সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের দলে ভেতরে এবং আওয়ামী লীগের সরকারের ভেতরে তাদের লোক ঢুকে গিয়েছে।
সুতরাং এই আঘাতকে প্রতিহত করতে হলে এখন থেকে অবশ্যই সঠিকভাবে আওয়ামী লীগকে হতে হবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ তার সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এখন যদি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২ দিনের জন্য জ্বরে পড়ে বসে শুয়ে থাকতে হয় এবং কাজ না করেন তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কি হবে তা চিন্তা করা কঠিন। মাত্র আমি ২ দিনে কথা বললাম সেই জায়গায় বছরের পর বছর তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। দেশ অবশ্যই আগাচ্ছে এতে কোনও সন্দেহ নাই। কিন্তু শুধু আগালে হবে না। শুধু ভালো কাজ করলেই হবে না সেটি জনগণকে দেশে এবং বিদেশে বোঝতে হবে। এই জায়গাতে আমাদের বিরাট রকমের একটি ফারাক সৃষ্টি হয়েছে এবং এইখানে যোগ্য লোককে বসানোর জন্য আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।