নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৩ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
গত বেশ কিছুদিন হলো পত্রপত্রিকার পৃষ্ঠার দিকে আর তাকানো যাচ্ছে না। মানুষের নিষ্ঠুরতার কথা পড়তে ভালো লাগে না। এরকম খবর পত্রপত্রিকায় ছাপা হলে নিজের অজান্তেই চোখ ফিরিয়ে নেই। একাত্তর সালে আমাদের এরকম নিষ্ঠুরতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল তখন চোখ ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় ছিল না। আমাদের চারপাশেই ঘটনাগুলো ঘটেছিল। মনে হচ্ছে সেই দিনগুলো বুঝি আবার ফিরে এসেছে, আমি না চাইলেও আবার সেরকম ঘটনাগুলো দেখতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে। একজন মা তাঁর মৃত সন্তানের সঙ্গে মুখ লাগিয়ে শূণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এরকম দৃশ্য সহ্য করা কঠিন। কিন্তু এখন আমরা সবাই জানি খবরের কাগজের এরকমই একটা ছবির পেছনে এর চাইতেও ভয়ংকর নির্মম আরও হাজারটি কাহিনী আছে। রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মেয়েদের নিপীড়ন, গণ নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে, নারী পুরুষ শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ভয়ংকর অত্যাচার থেকে রক্ষা পাবার জন্য একজন দুজন নয়, চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এত অল্প সময়ে এত বেশি শরণার্থী আর কোথাও প্রাণ বাঁচানোর জন্যে হাজির হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থাকতো। এই মুহূর্তে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা কমে হাতে গোনা পর্যায়ে চলে এসেছে। তাদের বেশিরভাগই সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। বহুদিন থেকে মিয়ানমার এটিই করতে চেয়েছিল তারা শেষ পর্যন্ত এটি করতে পেরেছে। পৃথিবীর মানুষের সমালোচনা কিংবা ধিক্কার এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দিতে পারলে মিয়ানমার তাদের বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত চূড়ান্ত সমাধানই শেষ পর্যন্ত করে ফেলতে পেরেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম চূড়ান্ত সমাধানের কোনো আভাস নেই। ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রটি এর সবচেয়ে স্পষ্ট উদাহরণ। জোর করে একটি জায়গা থেকে সব অধিবাসীকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি তৈরি করা হয়েছে, বিশ্ব বিবেকের তাতে একটি আচড়ও পড়েনি। কাজেই হঠাৎ করে রোহিঙ্গাদের জন্য পৃথিবীর মানুষ ব্যাকুল হয়ে উঠবে আমি একবারও সেটি মনে করি না।
আমার নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছি আমাদের পাশের দেশ ভারতবর্ষের এই রোহিঙ্গা বিপর্যয় নিয়ে কোনো মাথাব্যাথ্যা নেই। চীন এবং রাশিয়া মোটামুটি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে তারা মিয়ানমারের পক্ষে। একাত্তরে যখন বাংলাদেশে গণহত্যা চলছিল, আমাদের চোখের সামনে যখন শুধু মানুষের লাশ এবং লাশ ঠিক তখন আমরা শুনতে পেতাম এটি ‘পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ এতদিন পর সেই একই ভাষায় একইভাবে আমরা শুনতে পাচ্ছি-রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি হচ্ছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়! ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ আমেরিকা ‘রিফিউজি’ বা শরণার্থী নিয়ে রীতিমতো এলার্জি আছে তাই বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে তাঁদের কোনো গরজ থাকার কথা নয়। নিউইয়র্ক থেকে শেখ হাসিনা সেটা সোজা ভাষায় আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। সদা হাস্যময় মিয়ানমারের জেনারেল সাহেব ইউরোপে খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব-‘তিনি সারা পৃথিবীতে খুবই দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অং সান সুচিকে সাধারণ মানুষজন ইন্টারনেটে একটু গালমন্দ করেছে, চোখ মুখ বন্ধ করে এই সময়টা পার করে দিলেই পৃথিবীর মানুষ এর কথা ভুলে যাবে। আমি প্রত্যেকদিন ইন্টারনেটে বিবিসিতে একবার চোখ বুলিয়ে দেখি, এর মাঝেই প্রত্যেহিক খবরে এখন রোহিঙ্গাদের কোনো খবর নেই! প্রাণ বাঁচানোর জন্য লাখ লাখ নারী শিশু পুরুষের নিজ বাসভূমি ছেড়ে অন্যদেশে আশ্রয় নেওয়ার খবরটির গুরুত্ব বিশেষ অবশিষ্ট নেই। কাজেই মোটামুটি অনুমান করা যায় মিয়ানমার তাঁদের রাখাইন রাজ্যটি মোটামুটি ঝামেলা মুক্ত করে ফেলেছে, সেখানে আর কোনো রোহিঙ্গা নেই। কাজটি করতে হয়তো অনেক সময় লাগতো কিন্তু অনেক দ্রুত করে ফেলা গেছে। রোহিঙ্গাদের চরমপন্থী দল আরসা পুলিশ মিলিটারির ঘাঁটি আক্রমণ করে অল্প কিছু পুলিশ মিলিটারিকে মেরে পুরো কাজটি খুব সহজ করে দিয়েছে। এখন মিয়ানমারের বিশাল মিলিটারি বাহিনী খুবই ‘যৌক্তিক’ ভাবে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা করতে পারছে। এভাবে যে গণহত্যা করা যায় আমরা আমাদের চোখের সামনেই অনেক বার হতে দেখেছি।
২
শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা অং সান সুচি সেদিন তাদের টেলিভিশনে একটা বক্তৃতা দিয়েছেন। বক্তৃতায় তিনি কী বলবেন মোটামুটি অনুমান করা যেতো- এবং মোটামুটি সেটাই বলেছেন। একাত্তরে বাংলাদেশে এক কোটি শরণার্থী ভারতবর্ষে আশ্রয় নিয়েছিল, পৃথিবীর বেশ কিছু দেশ যখন সেটা নিয়ে পাকিস্তানের ওপর চাপ দিয়েছিল তখন কোনো এক পর্যায়ে পাকিস্তান মিলিটারি শরণার্থীদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছিল। সেই আহ্বান শুনে একজন শরণার্থীও ফিরে যায়নি। কেন যাবে? পাকিস্তান মিলিটারিরাও জানতো সেই ফাঁকাবুলি। শরণার্থীরাও জানতো সেটা ধাপ্পাবাজি। নিজের জীবন নিয়ে কে ধাপ্পাবাজির ফাঁদে পা দেবে? মিলিটারির গুলি খেয়ে মারা যাওয়া থেকে অনাহারে রোগে শোকে কলেরায় মারা যাওয়াটাই তাদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছিল। শরণার্থী ক্যাম্পে তখন প্রায় আট থেকে ১০ লাখ লোক মারা গিয়েছিল।
এবারে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা পাকিস্তান মিলিটারি থেকে এক কাঠি সরেস। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যাচাই বাছাই করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেওয়া হবে।’ করার প্রক্রিয়া কী আমরা এখনো জানি না। যাঁরা প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসেছে তাদের কাছে কী কাগজপত্র প্রমাণ হিসেবে আছে আমার জানা নেই। সবচেয়ে বড় কথা এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির কোনো নাগরিক্ত নেই। ব্যাপারটা আমি বুঝতেই পারি না, একজন মানুষ একটি দেশে থাকে কিন্তু সে এই দেশের নাগরিক নয়। দেশের সংবিধানের কথাগুলো লেখা থাকে সেই দেশের নাগরিকের জন্য-কাজেই যারা সেই দেশের নাগরিক নয় তাঁদের জন্য রাষ্ট্রের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। যার অর্থ রোহিঙ্গা শিশু লেখাপড়া করতে পারবে না। অসুস্থ হলে চিকিৎসা পেতে পারবে না। বাসে ট্রেনে উঠতে পারবে না- দেশের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারবে না। সবচেয়ে ভয়ংকর কথা দেশের সুনাগরিকেরা যদি কিছু রোহিঙ্গা কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে সেটা অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে না? রোহিঙ্গা মেয়েরা যেহেতু নাগরিক নয় কাজেই তাদের নিপীড়ন করাও নিশ্চয়ই গুরুতর অপরাধ নয়! যে রাষ্ট্রে কিছু মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয় সেই দেশের সংবিধানটি দেখার আমার খুবই কৌতুহল!
শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলা শরনার্থীদের যাচাই বাছাই করে ফিরে যাওয়ার প্রকিওয়ার কথা বলে অবশ্যি স্বীকার করে ফেলেছেন যে শরনার্থী বলে কিছু একটা আছে। আমি ভেবেছিলাম তিনি সেটাই অস্বীকার করবেন। চীন রাশিয়া এবং ভারতবর্ষ পাশে থাকলে যে কোন মিথ্যে খুব জোর দিয়ে বলা যায়। নাফ নদীর এপার থেকে যখন দেখা যায় রাখাইন রাজ্যের গ্রামে গ্রামে আগুন জ্বলছে তখন আগুনটাকে অস্বীকার করা একটু কঠিন হয়ে যায় তখন রাখাইন রাজ্যের কর্মকর্তারা বলেছে মানুষগুলো নিজেরাই নিজেদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এর চাইতে নিষ্ঠুর কৌতুক আর কী হতে পারে!
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলার বক্তব্যের সবচেয়ে চমকপ্রদ বক্তব্য হচ্ছে যে তাদের দেশের মিলিটারিরা সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখের পর আর কিছু করেনি। বক্তব্যটিকে সোজা বাংলা অনুবাদ করলে এরকম শোনাবে ‘আগস্টের ২৪ তারিখ থেকে আমাদের মিলিটারি রোহিজ্ঞাদের নির্বিচারে হত্যা করেছে , মেয়েদের নিপীড়ন করেছে ,বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচানোর জন্য বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। মোটামুটি সবাইকে যেহেতু তাড়িয়ে দেওয়া গেছে এখন হত্যা করার জন্য আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাই সেপ্টেম্বরের পাঁচ তারিখ থেকে হত্যা ধর্ষণ বাড়ি জ্বালানো বন্ধ আছে। তবে এই কথাটি মিথ্যা, সেপ্টেম্বরের পাঁচ তারিখের পরেও রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রাম পোড়ানো হয়েছে, তাদের ওপর হামলা হয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া ভদ্রমহিলার বক্তব্য শুনে মনে হলো, সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখে মিলিটারি অ্যাকশন বন্ধ করার জন্য তিনি সারা পৃথিবী থেকে এক ধরনের বাহবা কিংবা সম্ভব হলে শান্তির জন্যে দ্বিতীয় আরেকটি নোবেল পুরস্কার আশা করছেন। তা না হলে এতো বড় গলায় এতো বড় একটা মিথ্যা কীভাবে বলা হয়?
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা মিয়ানমারে ছুটে গিয়েছিলেন, সামরিক শাসন শেষ হয়ে মিয়ানমার গণতান্ত্রিক দেশ হয়ে সেই আনন্দে সারা পৃথিবী উদ্বাস্তু হয়ে নৃত্য করেছে। রোহিঙ্গা বিপর্যয়ের কারণে আমরা এখন মিয়ানমারের প্রকৃত গণতন্ত্রের ছবিটা দেখতে পাচ্ছি। তাদের সংসদের শতকরা ২৫ ভাগ সিট মিলিটারিদের জন্যে,শুধু তাই নয় তিনি বিল পাশ করতে হলে শতকরা ৭৫ ভাগ ভোট পেতে হয়। যার অর্থ কোনো বিল পাশ হবে এবং কোনো বিল পাশ হবে না সেটি সেই দেশের মিলিটারি ঠিক করে দেয়। মজা এখানেই শেষ না। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে মিলিটারি কিন্তু দেশটাকে পৃথিবীর সামনে উপস্থাপন করার জন্য রয়েছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া সারা পৃথিবীর শ্রদ্ধা এবং ভালবাসায় সিক্ত ফটোজেনিক একজন ভদ্রমহিলা। কি মজা!
আমি দেশ, রাজনীতি, অর্থনীতি কিছুই বুঝি না সাধারণ মানুষের কমনসেন্স দিয়ে সবকিছু বোঝার চেষ্টা করি। একেবারে মৌলিক যে বিষয়গুলো কমনসেন্স দিয়ে বুঝতে হবে সেটি হচ্ছে এই পৃথিবীতে সব মানুষের সম্মাণ নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। পৃথিবীটাকে নানান দেশে ভাগ করা আছে। সব দেশের দায়িত্ব নিজের দেশের মানুষকে সুখে শান্তিতে বেঁচে থাকার জন্য সাহায্য করা। গায়ের রং মুখের ভাষা কিংবা ধর্মের জন্য কাউকে পছন্দ না হলেই তাঁকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া যাবে না। ইসরায়েল কিংবা মিয়ানমার সেটা করতে পারবে না। তাদের যত বড় খুঁটির জোরই থাকুক। কিনা সেটা অন্যায় সেই কথাটি আমরা উচ্চ কণ্ঠে বলতে পারব। আমার ‘উচ্চকন্ঠ’ আমার চারপাশের মানুষের কান পর্যন্ত পৌছায় কিন্তু একজন নোবেল পুরস্কার পাওয়া মানুষ সেই একই কথা বলেন তখন সেই কথাটা সারা পৃথিবীর বিবেককে নাড়া দেয়। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে যখন বলা হয় এটি হচ্ছে একটা জাতিকে নি:শেষ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া তখন একটুখানি হলেও পৃথিবীর সব মানুষের উপর বিশ্বাস আরও একটুখানি ফিরে আসে।
এর মানে আরও একটি ব্যাপার আছে। পৃথিবীতে বৈচিত্র হচ্ছে সৌন্দর্য। একটা দেশের মানুষের ভেতর যত বৈচিত্র থাকবে সেই দেশটি হবে তত সম্ভাবনাময়। এর সবচেয়ে বড় উদাহরন হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এই দেশে পৃথিবীর সব দেশের, সব জাতির মানুষ রয়েছে, সত্যি কথা বলতে কী এটি একটি বড় দেশ নয়, এটি একটি ছোট পৃথিবী। সে কারণে এই দেশটি এতো উন্নত হতে পেরেছে। এই মূর্হুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য দেশটির প্রকৃত সৌন্দর্যকে অঙ্গীকার করে এটাকে বৈচিত্রহীন দেশে পরিচিত করার চেষ্টা করছে। আমাদের দেশের মানুষের মাঝে বৈচিত্র খুব বেশি নয়, সে জন্যে যে কয়েকজন আদিবাসী বা ভিন্ন কালচারের মানুষ রয়েছে তাদেরকে আমাদের বুক আগলে রাখার চেষ্টা করতে হয়। মিয়ানমারের জন্যেও সেই কথাটা সত্যি, তাদের দেশের শতকরা নব্বইভাগ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মালস্বী, কাজেই যে কয়জন ভিন্ন ধর্মের মানুষ রয়েছে তাদের মূল্যবান সম্পদের মত বুক আগলে রক্ষা করার কথা ছিল। মিয়ানমারের জেনারেলদের সেই সৌন্দর্য অনুভব করার ক্ষমতা নেই, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের কাছে আপদ বালাই। তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে তাদের শান্তি। বলতে কোনো দ্বিধা নেই তারা আধুনিক পৃথিবীর মানুষ এখনো হতে পারেনি। তাদের জন্যে আমাদের করুণা হয়।
বাংলাদেশি হিসেবে আমি অনেক গর্ব অনুভব করি যখন দেখতে পাই আমাদের দেশটি হতভাগ্য রোহিঙ্গাদের বুক আগলে রক্ষা করার জন্যে এগিয়ে এসেছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের দেখতে শরনার্থীদের শিবিরে গিয়েছিলেন, তখন একজন বিদেশী সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘এই রোহিঙ্গাদের আপনি কতোদিন রাখবেন’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন,‘কতোদিন; এরা সবাই মানুষ পৃথিবীর সবাই লাভ ক্ষতির হিসেব করছে’। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী সেই লাভ ক্ষতির হিসেব করেননি, একেবারে পরিস্কারভাবে বলছেন, তিনি মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।