নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০১ এএম, ১৭ জুলাই, ২০২১
আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য, কোরবানির পশু পরিবহন ও কেনা-বেচা, পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামে যাওয়া, ঈদের জামাত, কোরবানিসহ অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সব ধরনের বিধিনিষেধ শিথিল করে। আবার ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগষ্ট রাত ১২ পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। এবারের কঠোর বিধিনিষেধের সময় সব ধরনের শিল্পকারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধে কলকারখানা বন্ধ রাখা হলে রপ্তানি খাতে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি হবে বলে পোষাক ও বস্ত্র খাতের মালিকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গত বুধবার পোশাক ও বস্ত্র খাতের পাঁচটি ব্যবসায়িক সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ ও বিজিএপিএমই’র সভাপতিগণ গুলশানে বিজিএমইএ ভবনে এক সভায় মিলিত হন। সভায় এফবিসিসিআই’র সভাপতিও উপস্থিত ছিলেন। সভায় সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পোশাক ও বস্ত্র খাতের পাঁচটি ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা চিঠিটি প্রদান করেন। আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে তাঁরা ২৩ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে দেশের বৃহত্তর রপ্তানি আয়ের পোশাক ও বস্ত্র কারখানাসহ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানাগুলো খোলা রাখার দাবি জানান।
দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ থাকলে শ্রমিকদের কর্মস্থলে ধরে রাখা যাবে না। তাঁরা ছুটে যাবেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে ব্যাপকহারে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। শ্রমিকরা ওই সব অঞ্চল থেকে কর্মস্থলে ফিরে এলে করোনা সংক্রমণের মাত্রা আরও বেড়ে যাওযার আশঙ্কা থাকবে। এছাড়া বন্ধের পর কারখানা খুললে জুলাই মাসের বেতন পরিশোধে করার প্রসঙ্গ আসবে। তখন বেতন পরিশোধ করা কঠিন হয়ে যাবে।
গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এফবিসিসিআই’র সভাপতি ঈদের পর দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধে সব ধরনের শিল্পকারখানা চালু রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রপ্তানি খাতের কারখানা বন্ধ থাকলে নির্ধারিত সময়ে পণ্য রফতানি করা সম্ভব হবে না। এতে রপ্তানির ক্রয়াদেশ বাতিলের আশঙ্কা তৈরি হবে। ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮-২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে গ্রীষ্ম ও বড়দিন এবং আগামী শীতের বস্ত্র খাতের ক্রয়াদেশ হাতছাড়া হতে পারে। এক মাসের রফতানি শিডিউল বিঘ্নিত হলে পরবর্তী ছয় মাসের রফতানি শিডিউলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কঠোর বিধিনিষেধে শিল্পকারখানা চালু চান। আপনি কি তাঁর সঙ্গে একমত? এই বিষয়ে প্রথম আলোর অনলাইন ভোটে দেখা যাচ্ছে যে, ৭৪ শতাংশ তাঁর সঙ্গে একমত নন, ২৪ শতাংশ একমত এবং ১ শতাংশ মন্তব্য নেই।
করোনার উর্ধ¦মুখী সংক্রমণ সামাল দেওয়ার লক্ষ্যে এপ্রিল মাসে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করলেও রপ্তানিমুখী পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা চালু রাখে। গত ২৮ জুন শুরু হওয়া সীমিত ও পরে ১ জুলাই শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধে পোশাকসহ অন্যান্য শিল্পকারখানা চালু রাখা হয়।
গত মে মাসে রমজানের ঈদে ছুটি সংক্ষিপ্ত করা এবং সকলকে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করার নির্দেশনা দেয়া হলেও তা প্রতিপালিত হয়নি। বিশেষ করে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারিদেরকে তাদের চাহিদা মতো ছুটি প্রদান করতে তারা কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করে। এছাড়াও রমজানের ঈদে গণপরিবহন- বাস, রেল, নৌযান বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে মানুষ গ্রামের বাড়িতে ছুটে যায় এবং সারা দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে করোনা আক্রান্তের হার ও মৃত্যু প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। বর্তমান এবং কোরবানির ঈদ পরবর্তী পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারকে অবশ্যই জনগণের জীবনরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সেই বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে সরকারকে কঠোর বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, করোনা মহামারিতে অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলায় সরকার বিভিন্ন খাতে ২৩টি আর্থিক প্যাকেজে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৩শ` ৩ কোটি প্রণোদনা ঘোষণা করে। প্যাকেজ ঘোষণার পর ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মোট বরাদ্দের প্রায় ৮৩ শতাংশ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। প্রণোদনা প্যাকেজের প্রত্যক্ষ সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১ কোটি ২৪ লক্ষ।
রপ্তানিমুখী পোশাক খাতে শুধুমাত্র শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের জন্য মালিকদের দুই শতাংশ সুদে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। যেসব কারখানা তাদের উৎপাদনের ৮০ শতাংশ রপ্তাননি করে তারাই এই প্রণোদনার টাকা পাবেন। প্রায় ১৮শ` কারখানা মালিক এ ঋণ সুবিধা নিয়ে শ্রমিকদের বেতন দিয়েছেন বলে জানা যায়। ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের জন্য বরাদ্দকৃত ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে জুন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে।
গণপরিবহন, শপিংমল, দোকানপাঠ, পশুর হাট কোথায়ও স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দুরত্ব মানা হচ্ছে না। সড়ক, নৌ ও রেলপথে ঘরমুখো যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মেনে চলার শর্তে এবং ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ায় ঈদকে সামনে রেখে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে গণপরিবহন চালানোর অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা মানছে না গণপরিবহনগুলো। অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার কথা থাকলেও সব আসনে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। দাঁড়িয়েও যাচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের অভিযোগ অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়ার স্থলে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে এবং যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে তিনগুণ।
বর্ধিত ভাড়া আদায় এবং স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব না মেনে গণপরিবহন, শপিংমল, দোকানপাঠ, পশুর হাট পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে সচেতনতা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কোনো কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এই বিষয়ে গণপরিবহন, শপিংমল, দোকানপাঠ মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি এফবিসিসিআইও নিরব।
এফবিসিসিআই এবং পোষাক ও বস্ত্র খাতের পাঁচটি ব্যবসায়িক সংগঠনের সভাপতিগণসহ অন্যান্য নেতারা ঈদ পরবর্তী করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি অবশ্যই অনুধাবন করেন। এরপরও তাঁরা আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিসহ বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে ঈদের পর দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধে দেশের বৃহত্তর রপ্তানি আয়ের পোশাক ও বস্ত্র কারখানাসহ সব ধরনের শিল্পকারখানা চালু রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের পোশাক ও বস্ত্র খাতসহ রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানার অগ্রগতি এবং বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সাফল্যের দাবিদার শুধুমাত্র শিল্পকারখানার মালিকগণই নন। এখানে শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে সরকারের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা। তিনটি পক্ষের সম্মিলিত প্রয়াসই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের মতে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে সংক্রমণের গতি আরও বেড়ে যাবে। তাদের আশঙ্কা আগষ্টের প্রথমার্ধ্বে প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বর্তমান সংখ্যার দ্বিগুনেরও বেশি হবে। যা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক ঘটনা হবে।
ঈদের পর দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে পোষাক, বস্ত্রসহ রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা চালু থাকবে কি না, সেই বিষয়ে আজ শনিবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেই বৈঠকে ঈদ পরবর্তী ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কোনো ধরনের শিথিলতা প্রদর্শন জনস্বার্থে কাম্য নয়। তবে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদন কারখানা এবং কোরবানির ঈদে সংগৃহীত চামড়া সংরক্ষণের সাথে জড়িত ট্যানারি কঠোর বিধিনিষেধের আওতার বাইরে রাখার বিষয়ে বিবেচনা করা যেতে পারে।
এফবিসিসিআই এবং পোষাক ও বস্ত্র খাতের পাঁচটি ব্যবসায়িক সংগঠনের সভাপতিগণ রপ্তানি বিপর্যয়ের কথা তুলে ধরেছেন। এছাড়াও তাদের পক্ষে জুলাই মাসের বেতন পরিশোধ করা কঠিন হয়ে যাবে। আমাদের শ্রমিকেরা অত্যন্ত কর্মঠ। তাদের অনুপ্রাণিত করে, সামান্য আর্থিক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হলে তাঁরা স্বল্পতম সময়ে ১০-১২ দিনের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সক্ষম হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন মালিক শ্রমিক একের অন্যের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধাবোধ। মালিকগণ সামাজিক দ্বায়বদ্ধতার পাশাপাশি ব্যবসা করেন। ব্যবসায় যখন লাভ লোকসান হয় তখন তিনি তাঁরাই ভোগ করেন। তাই ছুটিকালিন সময়ের বেতন দেওয়া তাদের উপরই বর্তায়।
প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান
সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং
সাধারণ সম্পাদক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।