নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩৪ পিএম, ০৩ নভেম্বর, ২০১৭
যুথবদ্ধ মানব সমাজ সভ্যতার শুরু থেকেই সামাজিক জীবন যাপনে অভ্যস্থ ছিল। আমরা কেউই কিন্তু স্বয়ংসম্পূর্ণ নই। একে অপরের সহযোগীতায় মানুষ দাঁড়িয়েছে সেই আদিম কাল থেকেই।
একটা খবর আমাকে ভীষণ ভাবে ঝাঁকুনি দিয়েছে। ফরিদপুরে একজন যুবক গনপিটুনিতে নিহত হলে, তাঁর জানাজা পড়তে ও দাফনে এলাকাবাসী বাঁধা দেয়। নিহতের বাবা এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, জানাজা আর দাফন যেহেতু করতে দিবা না তোমরা তাইলে ওর লাশ নদীতে ফেলে দাও...
ঘটনাটি এই পর্যন্ত হলে ঠিক ছিলো, কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো অতি উৎসাহী একদল তরুণ যুবা নিহতের লাশ সত্যিই নদীতে ফেলে দেয়। যথারীতি ঘটনার শেষে পুলিশের আগমন! তবে এখানে পুলিশ মানবিকতা ও মহানুভতার পরিচয় দিয়েছেন, তারা লাশ নদী থেকে তুলে এনে জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করেছেন।
তিনটি আদিবাসী পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে গত ছয় মাস যাবত। সমাজচ্যুত এই তিনটি পরিবারের সঙ্গে গ্রামের কেউ কথা বললে তাকে দশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। আর হ্যাঁ, সঙ্গে দশখানা (একটাও কম নয়) জুতার পিটুনি। তাদের অপরাধ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিজয়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে এই তিনটি দুষ্টু পরিবার ভোট দেয়নি। ঘটনাস্থলঃ তারান ইউনিয়ন, তাড়াস উপজেলা, জেলাঃ সিরাজগঞ্জ। স্থানীয় পর্যায়ে দেশের আনাচে কানাচে এই ধরনের অনেক অমানবিক কর্মকাণ্ড হয়তো প্রতিনিয়তই ঘটছে। কিন্তু এই ঘটনার শিকার পরিবারের দাবি এই চেয়ারম্যানের দৃষ্টি নাকি আগে থেকেই ছিলো তাঁদের সম্মিলিত পুকুরটির ওপর। পরিবারগুলোর দাবি এই পুকুরের আয় দিয়ে আদিবাসীদের জন্য একটি মন্দির পরিচালনা করা হয়। দুঃখের বিষয় এই বিষয়ে স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিছুই জানেন না।
খুলনায় শিশু রাকিব পেটের দায়ে একটি মটর গ্যারেজে কাজ করতো। একদিন ভরদুপুরে এই রাকিবকে নিয়ে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হলো, কারণ তার পেট ফুলে উঠেছে অস্বাভাবিক ভাবে! কারন ওর গ্যারেজের মালিক তার পায়ুপথে গাড়ির চাকায় হাওয়া দেওয়ার যন্ত্রটি চেপে ধরেছিল। রাকিব নাকি কেঁদে কেঁদে বলছিলো আমি মরে যাবো তো... কে শুনে কার কথা দুই পয়সার কামলা একটু এক্সপেরিমেন্ট তো করাই যায়, তাই না? মারা গেলো সেই ছেলেটি। ফুঁসে উঠলো খুলনা, ধিক্কার জানালো সারাদেশ। দ্রুত বিচারে দোষীদের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু চূড়ান্ত বিচারে মূল অপরাধীর শাস্তি কমে হলো যাবজ্জীবন, কারণ সে তো তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল এবং হাসপাতালেও নিয়ে গিয়েছিল! আমি না বিচার আচার খুব একটা বুঝি না...
আমরা কি তবে আমদের মানবীয় মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলছি? হাজার বছরের সামাজিক মানুষের এ কেমন বিপর্যয়? আমরা কেউ কি ভেবে দেখেছি, আমরা কোন পথে ধাবিত হচ্ছি? কথায় আছে, আগুন দেবালয় চেনে না। দাবানল ছড়িয়ে পড়ছে, আপনি আমি রক্ষা পাবো? সেইফহোম, ভিভিআইপি প্রটোকল বাঁচাতে পারবে আমাদের? আমি আমার জীবনের অর্ধেকের (গড় আয়ুষ্কাল অনুযায়ী) বেশী সময় পার করে ফেলেছি। চল্লিশের ঘরে প্রবেশ করবো শীঘ্রই। ঘন কালো চুলে রূপোলী আভা উঁকি দিচ্ছে। কিছু বলতে চাই, এতে যদি আপনার আমার একবিন্দু সচেতনতা বাড়ে এতেই আমি সার্থক।
কিছু বিষয় একটু ভেবে দেখা যাক...
যৌথ পরিবারের বিলোপ ও একক পরিবারের উত্থানঃ এটা আমাদের ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য করেছে, বিশেষ করে পরিবারের নবীন সদস্যদের জন্য। ব্যাস্ত আমরা বাবা মায়েরা দিনের সিংহ ভাগ অফিস ও ব্যবস্যা নিয়েই কাটিয়ে দিয়ে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসায় ফিরে ছেলে মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারি ঠিকমতো? যৌথ পরিবারে দাদা, দাদী, চাচা, চাচী বা বড় ভাই বোনেরা কিন্তু পারস্পরিক যহযোগীতায় এই অভাব বুঝতে পারতো না।
আলগা সামাজিক বন্ধনঃ পাড়ায় যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে আড্ডা বা সিগারেট ফোঁকা ছিল এক কথায় অসম্ভব। কারন মুরুব্বীরা সেটা মেনে নিতেন না, কেউ চাচা, কেউ বা মামা, কেউ বা বাবা বা বড় ভাইয়ের বন্ধু কারো না কারোর চোখে পড়ার ভয় ছিল। আগে মুরুব্বীদের দেখলে ছেলেরা অন্যপাশে সরে দাঁড়াত এমন কি সালামও দিতো। এখন পাড়ায় মুরুব্বীদের দেখি মাথা নত করে হাঁটতে, পাছে কারো বেয়াদবি চোখে পড়ে! অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ইদানীং কালের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী আমরাই।
দ্রুত নগরায়ন ও অবৈধ প্রতিপত্তিঃ ক্রমবর্ধমান নগরায়ন আমাদের ব্যস্থতা ও আর্থিক সচ্ছলতা দিলেও অসম প্রতিযোগীতা, অস্বচ্ছ আয়ের বন্টন ও অর্থনৈতিক মেরুকরণ নিয়ে ভাবছি না কেউ। বিশেষত আইন কানুন নিয়মের তোয়াক্কা করছে না এক শ্রেণির মানুষ, যারা ক্ষমতা ও অবৈধ প্রতিপত্তির জোরে যা খুশি তাই করে যাচ্ছেন।
বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও অন্যায় সুযোগ সুবিধাঃ আপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। এটাই সাভাবিক, কিন্তু কেউ দেখা যায় শাস্তিটাও আরামেই ভোগ করছেন। যেমন বছরের পর বছর দাগী কয়েদীরা জেলখানার বদলে হসপিটালের সুসজ্জজিত কেবিনের নরম বিছানায় বন্ধু বান্ধব এমনকি রাজনৈতিক কর্মী সমর্থকদের সাথে মিটিং বা আড্ডা দিয়ে সময় অতিবাহত করছেন। তাহলে আপনার অর্থ বিত্ত কিংবা প্রতিপত্তি থাকলে শাস্তিও হবে আনন্দময়...
মুক্ত সংস্কৃতির নেতিবাচক প্রভাবঃ বিজ্ঞানের আশীর্বাদে গোটা পৃথিবী আমাদের হাতের মুঠোয় রিমোট কন্ট্রোলে বন্দী। যা বা যারা টিভিতে অনুষ্ঠান সমূহ তৈরি করেন, তারা তাদের নিজেদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরি করেন। সকল দর্শকের সামজিক মূল্যবোধ এক নয়। এমতাবস্থায় সামাজিক বিশৃঙ্খলা আসন্ন। কিছুদিন আগে একটি সিরিয়াল দেখাকে কেন্দ্র করে একটি গ্রামে দুই দলের সংঘাত রক্তপাতে গড়িয়েছে পর্যন্ত। আমাদের দেশে কিছু টিভি সিরিয়াল এখন এতোটাই আসক্তির পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, এর জন্য বিবাহ বিচ্ছে এমক কি খুন, পারিবারিক কলহ লেগেই আছে। একাধিক বিবাহ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের দুর্বোধ্য মারপ্যাচের সিরিয়ালগুলো সত্যিই কি আমাদের রুচি কিংবা সংস্কৃতির সাথে যায়?
মাদকের নানা রুপঃ হেরোইন, পেথিড্রিনের পর ফেন্সিডিল ছিলো সবচেয়ে বড় মাদক। এখন মাদকের ধরনের সীমা পরিসীমা নেই। ইয়াবা এখন সবচেয়ে বড় মাদকের নাম। শিশা লাউঞ্জের ছড়াছড়ি গোটা নগর জুড়ে। পথশিশুরা পর্যন্ত ডান্ডিতে (জুতা ছেঁড়া অংশের জোড়া লাগাতে ব্যবহৃত গ্লু বা আটা) আসক্ত হয়ে প্রকাশ্যে রাস্থায় ঝিমায়।
অনলাইনের বিড়ম্বনাঃ ঢাকা শহরে জনসংখ্যা পৌনে দুই কোটি, কিন্তু আশ্চর্যের বিহয় হলো এই নগরে ফেইসবুক আইডি আছে সোয়া দুই কোটির উপর! তার মানে আমরা নাম পরিচয় গোপন করে সক্রিয় আছি অনলাইনে। এটা কি প্রতারণা নয়? কেন করছি আমরা? কারন আমরা আমাদের মানসিকতাকে বিকৃতির নোংরা স্থরে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা পাশে দাঁড়িয়ে কিংবা একই আড্ডায় বসেও অনলাইনে প্রতারণা করছি স্বজন বন্ধুদের।
ঘোরের মধ্যে বসবাসঃ নিজেদের যোগ্যতা কিংবা নানা কারনে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে কিংবা নিজের সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষন করে একটা ঘোরের মধ্যে বসবাস করে কেউ কেউ। এখানে বাস্তবতা অনুপস্থিত থাকায়, যে কোন প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে যা সমাজের জন্য শভনীয় হয় না বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই।
ভুঁইফোঁড় সংগঠন এবং রাজনৈতিক লেজুর বৃত্তিঃ জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের ছবির সাথে নিজেদের বিশাল আকারের ছবি যুক্ত করে কারনে অকারনে নানা অজুহাতে পোষ্টার বা ব্যানার টানিয়ে আসলে লোকজনদের জানান দেয়া হয়, তাদের যেন সমীহ করা হয়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই চাঁদাবাজির সুবিধার্থে। এক শ্রেণীর দুষ্টু রাজনৈতিক ব্যক্তি এই সব অপকর্মের সাথে যুক্ত থেকে সেই সব লোকদের আস্কারা দিয়ে থাকেন। এই সুযোগে তারা সমাজে যা খুশি তাই করার চেষ্টা করে।
বস্তি বসতি ও পথশিশুঃ সুরম্য অট্টালিকার পাশেই বিবর্ণ ধুষর বস্তিগুলো নিয়ে আমরা ভেবেছি কখনো? কিভাবে তারা বাঁচে? তাদের নূন্যতম নাগরিক সুবিধা কি আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি? স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে পয়ঃনিষ্কাশনের সুবিধা কি তারা পায়? পথশিশুরা, যাদের শিকড়ের সন্ধানে তারা ব্যর্থ, আর আমরাও পারিনি তাদের জন্য নিরাপদ একটা পরিবেশ নিশ্চিত করতে। স্মাগলিং, ড্রাগ ট্রাফিকিং, পিকেটিং এমনকি সন্ত্রাসের হাতিয়ার হচ্ছে তারা, কারন পিছুটান ও সামাজিক দায়বদ্ধতা তার নেই।
ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থাঃ বাচ্চাদের স্কুলব্যাগ বাবা মায়ের বোঝা, কারণ এতো ভার বইতে প্রস্তুত নয় আমাদের শিশুদের কোমল কাঁধ। ক্লাসের চেয়ে বেশি দৌড়াতে হয় কোচিং এর জন্য। দেশে এখন উচ্চ শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে, কারন ক্ষেত্র প্রস্তুন নয় এমন শিক্ষাও আছে এই দেশে। আবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত ছাত্র ছাত্রীদেরও ডীগ্রী দেয়া হচ্ছে। হতাশা থেকেও মানুষ ভুল আচরন করে থাকে।
বাচ্চাদের খেলার মাঠ ও পার্কের অভাবঃ মাটির মানুষ বড় হচ্ছে মাটির সংস্পর্শ ছাড়া। নগরে একের পর এক হাউজিং কোম্পানী বসতি গড়ে তুলছেন, কিন্তু বাচ্চাদের জন্য নেই নূন্যতম একটি খেলার মাঠ। ফ্ল্যাটের চারদেয়ালে বন্দী শিশুরা বেড়ে উঠছে অসাভাবিক প্রক্রিয়ায়।
আমরা কোথায় যাচ্ছি, ভাবতে হবে এখনই...
অনুপম মাহমুদ
উন্নয়ন ও অধিকার কর্মী
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক
ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার
লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন।
দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য
মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন
আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি
আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
আইনের লোকজন চুলচেরা বিশ্লেষণ করে যেন জনতাকে জানিয়ে দেয়, মিল্টন
যা করছে, তা ঠিক করছে, নাকি বেঠিক করছে। যা করছে, তা কি মানবতার পক্ষে নাকি মানবতা
বিরোধী। আসলেই কি কিডনি বা অন্য অঙ্গ বিক্রি
করছে। নাকি সব ভাওতাবাজি। নাকি আয়নাবাজি। মিডিয়া যা লিখছে, তা কি সব ঠিক। নাকি বাড়াবাড়ি। এসব জানার
অধিকার জনতার রয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে জনতা তা জানতে পারবে। নাকি সাগর রুনিকে কে
বা কারা হত্যা করেছে, সে প্রশ্নের মত এসব প্রশ্নও আকাশে মিলিয়ে যাবে। নাকি বৈশাখের আগুন ঝরা তেতাল্লিশ উর্ধ
লসিয়াসে উদ্বায়ু হয়ে যাবে। মিল্টন যদি কোন অন্যায় করে থাকে, তার যেন বিচার হয়, শাস্তি
হয়। মিডিয়া যদি অসত্য তথ্য দিয়ে বাড়াবাড়ি করে থাকে, তারও যেন শাস্তি হয়। মিল্টনের গ্রেফতারের
মাধ্যমে এ সব কঠিন প্রশ্নের যেন সহজ উত্তর বেরিয়ে
আসে, এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
পরিশেষে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কাছে মিনতি, তারা যেন আশ্রমে আশ্রিতদের
আপাতত দেখভাল করেন। তাদের তিনবেলা যেন আহার জোটে। ওষুধ পথ্যের যেন ঘাটতি না হয়। মিলটনকে
বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে যেয়ে আশ্রিতরা যেন অন্ন, বস্ত্র বা চিকিৎসাহীনতায় কষ্ট
না পায়। সবার মনে রাখা প্রয়োজন, আশ্রিতরা তো কোন অন্যায় করেনি। সমাজ সেবা
অধিদপ্তর মিল্টনের অবর্তমানে আশ্রিতদের কদরের কোন কমতি করবে না,
সে প্রত্যাশা সকল আম জনতার।
পাদটীকা: আজকের অনলাইন পত্রিকাসমূহের একটি খবর। দেশের গণমাধ্যমে
ভুয়া খবরের সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। ২০২৩ সালে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমে মোট ৪৪টি ঘটনায়
ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার হতে দেখা গেছে। তাই সাধু সাবধান।
লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট।
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০
সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের
সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি
মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের
২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল
জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর
সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন
সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন
করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন
জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা
এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম
বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের
জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা
জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের
মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু
জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির
অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের
অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে
জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে
গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।
কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে
স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের
রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা
সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায়
না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ
করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি
বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো
পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির
এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।
প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ
তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত
করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে
কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো
জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক
মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ
জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর
এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’
হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা
ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয়
এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে
বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য
করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা
চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের
কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ
একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো,
মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি
ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা
নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া
হচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন।
যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন
পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন
মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে
এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি
করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত
করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ
হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ
হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ
মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ,
যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত
হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী
এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট
গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে
যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে
বিনির্মিত হবে।
কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মন্তব্য করুন
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেফতার হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছে, মিল্টন যতটুকু ভাল কাজ করেছে, তাই বা কজন করে। আবার অনেকে বলছে, মিল্টন অনেক ভয়ঙ্কর কিছু কাজ করেছে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আবার কেউবা বলছে, মিডিয়ার লোকজন সত্য বলছে না। যা বলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব দেখে শুনে আমরা আম জনতা দিকবিদিকহীন। দিশা খুঁজে পাই না। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা, তা নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলছি। সত্য মিথ্যা খোঁজার দায়িত্ব আম জনতার না। সেসব খুঁজবে আইনের লোকজন। মিল্টন সমাদ্দার এখন আইনের লোকের হাতে। তাতেই আম জনতার স্বস্তি। এবার নিশ্চয় জনতা জানতে পারবে কে সত্যি আর কে মিথ্যা। মিল্টন নাকি মিডিয়ার লোকজন?
প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুরু হচ্ছে আগামী ৮ মে। নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশনা ছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকটতম আত্মীয় স্বজনেরা প্রার্থী হতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। কোন প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারবেন না। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার নেতাকর্মীদের এবং মন্ত্রী-এমপিদের বলেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক বারবার বলার পরেও কেউ তা কর্ণপাত করলেন না। অথচ যারা এই নির্দেশনা মানলেন না তাদের অবস্থা এমন যে, যেন তারা শেখ হাসিনার জন্য জীবনও দিতে প্রস্তুত।
এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।
১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?
দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।