ইনসাইড থট

আওয়ামী লীগ এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়


Thumbnail

ব্যবসায়ী সম্প্রদায় বলতে এখানে আমি ব্যবসায়ী এবং ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট সকলকেই বুঝচ্ছি। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিভিন্ন দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে শুরু করে আইন দিয়ে যেভাবে সহায়তা করে চলেছেন এবং এখনো করছেন কোন সরকারি বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করে তা করেনি। এখন পর্যন্ত করোনা অতিমারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে সহায়তার হাত বাড়িয়ে চলেছেন। আমি বিশ্বাস করি এই সহায়তার হাত বাড়ানোর প্রদান কারণ ছিলো ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ধারা দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হবে এবং আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। এই কারণের জন্য ব্যবসায়ী সম্প্রদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে এবং তারা বিশ্বাস করে তাদের সত্যিকারের যদি কোন নিকটজন থাকেন তবে তিনি হচ্ছেন নেত্রী শেখ হাসিনা। 

তবে একি কথা আওয়ামী লীগের সাথে বলা চলে না। একথা শোনার পর অনেকের কাছে লাইনটি বিরোধপূর্ণ লাগতে পারে কারণ আওয়ামী লীগ প্রধানত শেখ হাসিনা। তাহলে আওয়ামী লীগ আবার আলাদা করা হল কেন। আলাদা করা হল অন্য কারণে আর সেটা হল নেত্রী যে কাজ করছেন তার একটি ফলো আপ করতে হবে, ফলটা পেতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে আওয়ামী লীগের একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন। আর এটা সব সময়ই সাধারণত ব্যক্তি পর্যায়ে হয়ে থাকে। যারা মন্ত্রী পর্যায়ে থাকেন তাদের এটা করা সম্ভব নয় কারণ করতে গেলে ভাববে তারা বোধহয় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন আর না করলেও অনেকভাবে বিভিন্ন কথা বার্তা হয়। তবে তাদের সাথে নিশ্চয়ই সব ব্যবসায়ীদেরই ব্যবসার কারণে যোগাযোগ হয় সেটাকে আমি এখানে গুরুত্ব দিচ্ছি না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যারা আওয়ামী লীগের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতা যারা সরকারের সাথে সংযুক্ত নন তাদের সাথে এই ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা দরকার। তাদের ব্যবসার বাহিরে আরো অনেক বিষয় থাকে যে বিষয়ে তারা রাজনীতিবিদদের কাছেই মুখ খোলেন। অনেক সময় দেখা যায় ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক আমলারা এদেশের ব্যবসায়ীদের সাথে এমন ব্যবহার করেন যাতে তারা সরকার বিরোধী একটা মনোভাব মনের ভিতর পোষণ করেন এটা আমি বুঝে এবং জেনেই বলছি। এই ধরণের বেশ কিছু উদাহরণ আছে যেটি পাবলিকলি প্রকাশ করা দেশের এবং দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। আমি সেজন্য সেভাবে বলতে চাই না কিন্তু এরকম ঘটনা যে দেশে প্রতিনিয়ত ঘটছে সেটা আমরা সকলেই জানি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, একদিকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা অনেক জায়গায় ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছেন এবং মন্ত্রীরা সেটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন যাতে ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক থাকে। পার্লামেন্টে অনেক হিসাব করে দেখেছেন যে, মোটামুটিভাবে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় প্রধান শক্তি এবং নির্বাচনেও তারাই শুধু আমেরিকায় না, এখন বাংলাদেশেও তারা একটা বড় ফ্যাক্টর। কিন্তু এই ফ্যাক্টরটা কে কতটুকু রাখতে পারেন তার উপর নির্ভর করে। আমাদের দেশে রাজনীতি মোটামুটিভাবে দুই ভাগে বিভক্ত। একটি হচ্ছে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পক্ষ আর সকলেই হচ্ছে তার বিপক্ষ। যখন প্রয়োজন হয় তাদের মধ্যে যত ডিফারেন্স থাকুক না কেন তারা নেত্রীকে যেকোনোভাবে দাবিয়ে রাখার জন্য তারা এক হয়ে কাজ করবে এবং যে নির্বাচন সামনে আসছে তখনও করবে।

অনেকে হয়তো দু`বছর আগে ভাবছেন যে, আমাদের একজন শেখ হাসিনা। যেরকম ভাবে একটি ডায়নামো দিয়ে আমরা আলো জ্বালাতে পারি কিন্তু ডায়নামোতে ফুয়েল দিতে হয়। তাই এখন নেত্রীকে তার কাজ করার জন্য যে মনের জোর এবং তিনি যাতে উৎফুল্ল ভাবে আরো কাজ করে যেতে পারেন তার জন্য যে ফুয়েল এর প্রয়োজন সেই ফুয়েল তো দিতে হবে আমাদেরকে, জনগণকে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদেরকে। জনগণ তাদের কাজ ঠিকই করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, এমনকি ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে অনেকেই সেই ভাবে করেনা। আমি একটি জায়গায় আমি দায়িত্ব পালন করি, যেখানে প্রাক্তন ছাত্রলীগারদের নিয়ে আমার কাজ করতে হয়। আমার খুব অবাক লাগে যে, এদের অনেকের ভিতরই ন্যূনতম নৈতিক বোধ নাই। তারা একসময় ছাত্রলীগ করেছেন। সুতরাং তাদের জন্য সব প্রাপ্য। আমার কাছে ওই সুবিধা পায় না দেখে যে এসএমএস এবং লিখিত আকারে জানায় সেগুলো আমি ঠিক করেছি যে কমিটির কাছে প্রিন্ট আউট করে তাদেরকে দিয়ে কমিটি করে দেবো যেগুলোকে ঠিক করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মোদাচ্ছের ভাই বলেন এবং তাকে আমি মৃত্যু পর্যন্ত শ্রদ্ধা করব এবং শেষ নিঃশ্বাসও আল্লাহর নামের সাথে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের কথা, বিশেষ করে নেত্রী শেখ হাসিনার নাম বলে যাব। এটার কোন পরিবর্তন হবে না। এর জন্য আমাকে আলাদা কোন মূল্যায়ন করা লাগবে না এবং আল্লাহর মর্জি মূল্যায়ন করা হয়ও না। তাতে আমার কিছু আসে যায় না। কারণ আমরা যখন মুখে বলি শেখ হাসিনা এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার পিছে, তখন আসলে মিন করে যে তুমি এগিয়ে চলো, বিপদ দেখলে আমরা পিছন থেকে চলে যেতে পারবো। আমি সেটা বলিনা। আমি বলি, নেত্রী তুমি এগিয়ে চলো, আমি আছি তোমার সাথে। অর্থাৎ বিপদ আপদে সাথেই থাকব। আমার ৬০ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে আমি তাই করেছি। কিন্তু উনি কি দিয়েছেন না দিয়েছেন সেটা আমি বলছিনা। কারণ একটাই, বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত স্নেহ করতেন, যেটা আমার বিরাট সৌভাগ্য। তখন কাউকে পাঠায় নাই আমাকে নিজ খরচে এফআরসিএস করতে বঙ্গবন্ধুই পাঠিয়েছিলেন এবং করে এসেছি। সেটা একটা এক্সেপশন এবং লেখা ছিল, ইহাকে কোন উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এ জীবনে আর কি লাগে! বঙ্গবন্ধু আরো অনেক স্নেহ করেছেন সেটা আলাদা ইতিহাস। নেত্রী সবসময় মোদাচ্ছের ভাই বলেন, আলাদাভাবে এর চেয়ে বড় মূল্যায়ন আর কিভাবে করবে সেটা একটা প্রশ্ন?

তবে স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষ হিসাবে অনেক কিছুই মানুষের ইচ্ছা থাকে, সবটা যে হয় তা তো না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কি পেলাম সেই হিসাব করে যখন মুখের কথা বলি যে, না নেত্রীর ব্যাপারে তো কোন দেনা-পাওনার ব্যাপার নাই। দেনা-পাওনার ব্যাপারই যদি না থাকে তাহলে মূল্যায়ন হলো না ওইটা আশা করলাম তাহলে পরিবর্তন হবে কেন। সেই পরিবর্তন আমার জীবনে হবে না। আমি একটি জিনিস গর্ব করে বলতে পারি, তার পরিবারের বাইরে জীবিত আছে আমি ছাড়া এরকম ভাবে তার সর্ব অবস্থায় সাথে আছি এরকম আরেকটি উদাহরণ সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আমার কাছে মনে হয়না। অনেকে আছেন তারা অভিমান করেই হোক বা যেকোনো কারণে হোক হয়তো দূরে রয়ে গেছেন। যারা হয়তো আমার চেয়েও অনেক বেশি করেছেন। ব্যবসায়ীরা ব্যবসার খাতিরে যখনই যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তাদের সাথেই তারা সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে। এই সরকারের আমলেও টেলিভিশন থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা মোটামুটি একটা আগে ছিল একসময় এনজিওরা। এনজিওরা এখন বুদ্ধিজীবী সেজে তারা এখন ভালো ভালো এনজিও যারা জনগণের জন্য সত্যি সত্যি করে তাদেরকে বাদ দিয়ে বাকি যারা তারা ওই ওয়ান-ইলেভেন যারা করেছে তাদের সাথে যোগ দিয়ে তারা আরেকটি ওয়ান-ইলেভেন অন্যভাবে করবে সেই প্রচেষ্টা তারা কন্টিনিউয়াসলি করে যাচ্ছে। আমি যখন জানি তখন আমাদের সরকার নিশ্চয়ই জানে যে, নেত্রীর বিরোধীরা ভারত থেকে শুরু করে প্রতিটি বিদেশি শক্তির সাথে তাদের খুব ভালো যোগাযোগ সম্প্রতিকালে স্থাপিত হয়েছে। আমি জেনে বলছি। তো আমি যদি জানতে পারি উনারা জানবেন না এটা তো হতে পারেনা, নিশ্চয়ই জানবেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটা জেনেই করছেন। যেমন- এই মুহূর্তে বাংলাদেশে উনি ফেরার আগ পর্যন্ত কোন আন্দোলন হবেও না, আওয়ামী লীগের কেউ বড় বড় কথাও বলবে না। কেন বলবে না? কারণ, নেত্রীই যদি না শুনলো তাহলে বিরোধী দল ভাবে আন্দোলন করে লাভ হলো কি। তারাও নেত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে যে নেত্রী আন্দোলন আন্দোলন ভাব করবে, নেত্রী শুনবে, জানবে, তাদের একটু দাম বাড়বে। অন্তত চিকিৎসার একটা খরচ দিবে। সুতরাং যতদিন নেত্রী দেশে না থাকবেন ততদিন আন্দোলনের কোন সম্ভাবনা নেই তবে হ্যাঁ যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের কথা আলাদা। এবার তারা স্তর অনুযায়ী ষড়যন্ত্র করছে, এমনকি তারা ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করছে এবং তাদেরকে দুই নৌকায় পা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। তবে সবচেয়ে শংকার বিষয় হলো আমলাদের নিয়ে, আমলাদের মাঝেও সিন্ডিকেটের মত হয়ে গেছে। যারা সেই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত নয় তারা কিন্তু উপরে উঠতে পারছে না কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তো সবার পৌঁছানো সম্ভব হয় না। তবে আমি বিশ্বাস করি সত্যিকারের, সঠিক অবস্থা জানার যে পরিবেশ তা জানার জন্য হলেও তাকে তার বিশ্বাসী যেকোনো বেশ কয়েকজন আমলার উপর তাকে কিছুটা হলেও ভরসা করতে ইবে, না হলে ইন্টারমেশন আরও গ্যাপ হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে তারা অনেকেই উনাকে সত্যি কথাও বলছে না এবং উনার পক্ষে কাজ করছে এ রকম বাস্তবভিত্তিক প্রমাণ নেই। উপরে দেখানো যায়, কিন্তু সত্যিকারে যে টুকু কাজ হচ্ছে এটা রাজনীতিবিদদের দ্বারাই হচ্ছে। অনেক আমলারা একদম বিশ্বাসযোগ্য ভাবে ছাত্রলীগ থেকে এসেছে আগের রাজনৈতিক, তারা কিন্তু জান-প্রাণ দিয়ে নেত্রীর জন্য কাজ করছে যেই পজিশনেই থাকুক না কেনো তাদের অনেকেরই সামান্য কোন পরিবর্তন নেই। কিন্তু অল্প কয়েকজন যারা নেত্রীকে নেত্রীর কাছের লোক সেজে কাজ করছে তাদের বিষয়ে আমার গভীর সন্দেহ হয় যে তারাই কি এই যে যারা ব্যবসায়ী কমিউনিটি, সাংবাদিক কমিউনিটি থেকে শুরু করে প্রফেশনাল বিভিন্ন কমিউনিটির সাথে কিন্তু নেত্রীর ধীরে ধীরে গ্যাপ তৈরি হচ্ছে। এইটা বুঝার জন্য কোন পিএইচডি করার দরকার নেই। যেহেতু দুই বছর পরেই নির্বাচন এবং নেত্রীকে যারা কিছুতেই সহ্য করতে  পারে না তারা যেহেতু খুবই সচেতনভাবে সাথে রোড ম্যাপ করে কাজ করছে এই কারণের জন্য যারা নেত্রীর সত্যিকারে মঙ্গল কামনা করেন তাদেরও  রোডঃ ম্যাপ করে এবং বিভিন্ন ভাবে কাজ করতে হবে। একটি গ্রুপের দেখতে হবে যে এই যে প্রফেশনাল বিভিন্ন গ্রুপ। যেমন- ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে গণ্ডগোল হলো তার জন্য বন্ধ করে দিতে হলো আমাদের সরকার পুলিশ সবকিছু একটি মেডিকেল কলেজ আমরা কন্ট্রোল করতে পারলাম না। লোক তো আর চোখ বন্ধ করে থাকে না। এতে কি  আমাদের পজিশন খারাপ হয় নাই? এটা বুঝতে কি বিরাট বিজ্ঞ হওয়া লাগে? তার মানে হচ্ছে যে ইনহেরেন্ট ওয়েতে আমরা এখানে ফেইল করছি। যেমন এই যে মন্দিরে অ্যাটাক হলো এই সময় এবং তার আগে থেকে বারবার হোম মিনিস্ট্রি থেকে বলা হলো পূজা নির্বিঘ্নে করার জন্য অথচ যেতে যদি ৫ মিনিটও লেইট হয় সেই দুর্বলতা তো আমাদের, সরকারের। এই যে দুর্বলতাটা হলো এবং আমাদের কর্মীরা যে দেরি করলো এই দুর্বলতাটা হতেই পারে। হঠাত করে এস্টিমেট করা যায় না। এটা সবকিছু তো হয়ে যাওয়ার পরে যত বুদ্ধি বাড়ে হওয়ার আগে আমাদের নিজেদের বিষয়েও এত চিন্তা করা যায় না ফ্যাক্ট। কিন্তু ভবিষ্যতে যাতে আর কিছু না হয় তার জন্য আমরা কতটুকু প্রস্তুত হচ্ছি সে বিষয়েও কিন্তু আমাদের সজাগ থাকতে হবে। ব্যবসায়ী কমিউনিটির সাথে যারা রাজনীতিবিদ আছে আওয়ামী লীগের তাদের কি সুবিধা অসুবিধা আছে তাদেরকে কি করে নেত্রীর থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সে বিষয়গুলো তাদের দেখার দায়িত্ব। এবং দেখে যেভাবেই হউক যেহেতু নেত্রী এত কিছু করেছেন তার কারণে ফলটা আমাদের ঘরে আসার দরকার।

আমরা এই কমিনিটির সাথে কেনো যেনো ঠিক মত সম্পর্ক ধরে রাখতে পারছি না। দুই বছর আগেও যাদের সাথে আমার দেখা হত তাদের সাথে এখনো যখন দেখা হয় তখন তাদের আচরণে আমি কিছু পরিবর্তন দেখতে পাই। তারা আমার সাথে তেমন কিছু না বললেও তাদের আচরণ দেখে আমি বুঝতে পারি যে তারা আগে যেভাবে আওয়ামী লীগকে শতভাগ সমর্থন করতো কিন্তু এখন তাতে নড়চড় দেখা দিয়েছে এবং এটা আমি যেনে বলছি। এসব কাজগুলো দলীয় লোকদের দেখতে হবে এবং নেত্রীর সাথে আলাপ করে করতে হবে। এখন এসব কাজগুলো করতেছে আমলারা আর আমলারা যা করতেছে তাতে পরবর্তী নির্বাচন কঠিন হবে। যদি প্রেসিডেন্টশীয়াল নির্বাচন হত তবে কেউ ক্যান্ডিডেটই দাড়াতে চাইতো না এটা পার্লামেন্টারি নির্বাচন, এখানে অনেক ফ্যাক্টর যোগ হবে। যারা নেত্রীর বিরুদ্ধে তাদের কিন্তু দেশ-বিদেশ বিভিন্ন জায়গা থেকে কত অর্থ যে জোগাড় হচ্ছে তার কোন হিসাব করা যায় না। তবে যতই বলা হক না কেনো এই বড় বড় কথা, ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়েছে আরো অনেকে পেয়েছে অনেক রাজনীতিবিদরাও পেয়েছে এটা একটা ফ্যাক্ট কিন্তু বাস্তবতা হল নির্বাচনের সময় এই টাকা নেত্রীর হাতে আসবে না। কিন্তু বিরোধীদের টাকা অর্গানাইজ, এখানে নেত্রীকে প্রতিটা সিদ্ধান্ত একা নিতে হয় অনেক কিছু দেখতে হয় এবং আল্লাহর অশেষ রহমত তিনি নির্ভুলভাবে দেখতে পারছেন। কিন্তু এখন থেকে আমরা যদি তাকে তার কাজটি সহজ করে না দেই তাহলে সোজা কাজটি বিনা কারণে কঠিন করা হবে কারণ এখনো মেজরিটি জনগণ আওয়ামী লীগেরই পক্ষে এমনকি ব্যবসায়ীরাও পক্ষে। কিন্তু কিছু আমলারা ধীরে ধীরে এদেরকে নেত্রীর সমর্থন থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা করছেন এবং এই প্রচেষ্টা যদি তারা দুই বছর চালাতে পারে তবে নেত্রীর জন্য নির্বাচন কঠিন হবে। তাই এখন থেকে আওয়ামী লীগকে অবশ্যই সচেষ্ট হতে হবে এবং এই সচেষ্ট হওয়ার জন্য প্রথম কাজটিই হক ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করা দিয়ে। এরপর প্রফেশনাল বডি এবং একের পর এক কাজ করে গেলেই আগামী নির্বাচন খুব সহজ হবে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

আরও একটি ১৫ আগস্টের ড্রেস রিহার্সাল?

প্রকাশ: ০৩:০৭ পিএম, ২৫ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানী ঢাকা ও আশে পাশের এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাস ও তাণ্ডবের সাথে চলমান বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কি কোন সম্পর্ক ছিল? পুরো বিষয়টা সুষ্ঠুভাবে বিচার বিশ্লেষণ করলে ছিল তা মনে করার কোন কারণ নেই। তারা সরকারি চাকুরিতে কোটা প্রথা বিলুপ্তি চেয়ে শুধু মেধার ভিত্তিতে চাকুরি প্রাপ্তির যোগ্যতা হওয়া উচিত বলে যে আন্দোলন শুরু করেছিল তা যে যৌক্তিক সেই ব্যাপারে কেউ কখনো দ্বিমত করেনি যদিও বিশ্বের সকল দেশে সরকারি ও বেসরকারি চাকুরিতে কোটা ব্যবস্থার প্রচলন আছে। ইউরোপের সকল দেশে সরকারি ও বেসরকারি সকল চাকুরিতে চল্লিশ শতাংশ চাকুরি মহিলা ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আছে। যুক্তরাষ্ট্রে এই সংখ্যা আট আর জাপানে পাঁচ। এই গুলো সব উন্নত বিশ্বের দেশ বা অঞ্চল। ভারতের কথা নাই বা বললাম।

বাংলাদেশে সরকারি চাকুরিতে কোটা সংরক্ষণের বিষয়টি দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই সরকারি প্রজ্ঞাপনের দ্বারা ঘোষিত হয়। এরপর তা বাহাত্তর সালের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। যে কোন দেশেই এই কোটা ব্যবস্থা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সংস্কার করা হয়। বাংলাদেশে তেমনটি না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে পঁচাত্তর সালের পর বস্তুত পক্ষে পুরো কোটা ব্যবস্থাই অকার্যকর করে রাখা হয়েছিল। বিশেষ টার্গেট ছিল ত্রিশ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কোটা। ঐ সময় মুক্তিযোদ্ধা মানে একজন অপরাধী কারণ তারা ক্ষমতাসীনদের সাধের পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলা নামের একটা স্বাধীন দেশ সৃষ্টি করেছিলেন। দীর্ঘ একুশ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা উত্তরাধিকার সূত্রে পান জিয়া এরশাদ জামানার ও তাদের ভাবধারার একটি সর্বনাশা আমলাতন্ত্র যাদের অধিকাংশ সদস্যই জন্মগত ভাবেই ছিল আওয়ামী লীগ বিরোধী। শেখ হাসিনার সেই আমলে ঘর গোছাতেই তিনি পুরো সময় ব্যয় করেন। তার সেই মেয়াদের প্রথম দেড় বছর বিএনপি-জামায়াত জোট তাঁকেতো কাজই করতে দেয় নি। আজ এই অজুহাতে শ্রমিক ধর্মঘটতো কাল আরেক অজুহাতে হরতাল বাব চট্টগ্রাম বন্দর অচল। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় বারের মতো সরকার গঠনের আগে কেউ এই কোটা নিয়ে কোন প্রশ্নই তুলেনি বা আন্দোলনের কথাও ভাবেনি। কোটা নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রথম রাস্তায় নামে ২০১৮ সালে। সেই সময় এই আন্দোলন কিছু দিনের মধ্যে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে রূপ নেয়। তবে সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অনেকটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ও তার সংলগ্ন এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। এক সময় আক্রান্ত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও তার পরিবার। উপাচার্যের বাসভবনে চালানো হয় এক ভয়াবহ তাণ্ডব যদিও কোটা রাখা না রাখার সাথে উপাচার্যের কোন সম্পর্ক ছিল না। ঢাকার জনজীবন হয়ে যায় বিপর্যস্ত। তখন প্রধানমন্ত্রী এক নির্বাহী আদেশ বলে পুরো কোটা ব্যবস্থাকেই বাতিল করে দেন। বলতে হয় বাতিল করাটা পদ্ধতিগতভাবে হয়তো ত্রুটিযুক্ত ছিল। তার পাশে থাকা আমলাকূল এই সম্পর্কে তাঁকে সঠিক পরামর্শ হয়তো দিতে পারতেন। দেননি কারণ এই দেশে এক শ্রেণীর আমলা আছেন যারা সরকারকে সময় মতো অনেক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতে ব্যর্থ হন বা দেন না। বলা হয় সব সময় আমলার পরবর্তী সরকারের জন্য কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর ২০১৮ সালের থেকে সরকারি চাকুরিতে আর কোন কোটা ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না। সব সরকারি চাকুরিই হয়েছে মেধার ভিত্তিতে।

২০০৯ সালের পর বিএনপি-জামায়াত জোট নানাভাবে শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চেয়েছে। একাধিক পশ্চিমা শক্তি তাদের সরাসরি সহায়তা করেছে। এই কাজে তাদের পক্ষে কাজ করতে এই দেশে তারা সৃষ্টি করেছে নানা ছদ্মবেশে বেশ কয়েকটি সংগঠন যে গুলো সুশীল সমাজের সংগঠন হিসেবে পরিচিত। ২০১৩ সালের মে মাসে মাঠে নেমেছিল হেফাজতে ইসলাম নামের একটি মাদ্রাসা ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন। তাদের সর্বাত্মক সহায়তা করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট আর এক শ্রেণীর মিডিয়া। সেই সময় শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও সাহসের কারণে সরকার উৎখাতের তাদের সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি প্রধান বেগম জিয়ার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে শুরু হয় দেশে আর এক ভয়াবহ অগ্নি সন্ত্রাস। প্রায় তিনশত নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয় পেট্রোল বোমা বা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে। বাধ যায়নি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যও। কয়েকশত কোটি টাকার সরকারি ও বেসরকারি সম্পদের ক্ষতি হয়। যখনই দেশে একটা নির্বাচন আসে অথবা দেশে অর্থনীতি সচল থাকে তখনই বর্তমান সরকার বিরোধী জোট এসব কর্মকাণ্ড শুরু করে। তাদের মদদ যোগাতে এগিয়ে আসে তাদের অর্থে লালিত এই দেশে ক্রিয়াশীল বর্ণিত সুশীল সমাজের সংগঠনগুলো ও এক শ্রেণীর শিক্ষিত নাগরিক সমাজ। এবারের তাণ্ডবও পূর্বেও সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের এক ধরণের ধারাবাহিকতা। পার্থক্য শুধু এবার তা ছিল অনেকটা সুপরিকল্পিত।

সরকারি চাকুরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দেশের উচ্চ আদালতে ২০২১ সালে একটি রিট মামলা দায়ের করলে আদালত ২০১৮ সালের নির্বাহী আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে সরকার তড়িৎ দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিষয়টা পূনঃবিবেচনরার জন্য আপিল করে। কিন্তু এরই মধ্যে আবার একদল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। সকল বিবেকবান মানুষ তাদের বুঝানোর চেষ্টা করে কোন মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় সরকার এই বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না। দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে মহলটি অগণতান্ত্রিক উপায়ে বর্তমান সরকারের পতন চায় তাদের পোষা সুশীল সমাজের কিছু সদস্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নানা ভাবে বিভ্রান্ত করে তাদের সরকারের বিরুদ্ধে উসকানি দিয়ে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা ও শক্তি নিয়োগ করে। এরই মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত ৭ আগস্ট মামলার চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য করে। কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করার জন্য এই সুশীলরা বলেন এটি আদালতের কোন বিষয় নয়। সরকার প্রধান চাইলেই বিষয়টি মীমাংসা করে দিতে পারেন। এমন কপট ও স্বার্থান্বেষী শিক্ষিত নাগরিক সমাজের সদস্য এর আগে এই দেশে কখনো দেখা যায় নি। শেষ পর্যন্ত ১৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সকল প্রথা ভেঙ্গে টিভিতে এক ভাষণ দিয়ে ছাত্রদের আশ্বস্ত করেন তিনিও তাদের দাবির সাথে একমত। দেশের প্রধান বিচারপতিও শিক্ষার্থীদের দেশের বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখতে আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে মামলা নিষ্পত্তির তারিখ ১৭ দিন এগিয়ে এনে ২১ জুলাই নির্ধারণ করেন প্রধান বিচারপতি। এটিও একটি অভূতপূর্ব ঘটনা। কিন্তু মূল ষড়যন্ত্রকারীরা বসে থাকবে কেন? তাদের উদ্দেশ্যতো এই শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে দেশে এক চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সরকারকে উৎখাত করা আর সুযোগ পেলে দেশে আর একটি ১৫ আগস্ট সৃষ্টি করা। এর আগেতো এদের শ্লোগানই ছিল ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আর একবার’।

যেহেতু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কোন একক নেতৃত্ব ছিল না তাদের আন্দোলনকে পুঁজি করে সরকার উৎখাতের সকল ব্যবস্থা মোটামুটি করেই ফেলেছিল সরকার বিরোধীরা। আন্দোলনকারীদের অপরিপক্ব নেতৃত্ব বুঝতেই পারেনি কখন নীরবে তাদের আন্দোলন বেহাত হয়ে গেছে। মূল নেতৃত্ব চলে গেছে লন্ডনে। যেই আন্দোলন শুরু হতেই সুশৃঙ্খল ছিল সেই আন্দোলন হঠাৎ করে এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করলো। এই তাণ্ডবে শরিক করার জন্য নরসিংদী কারাগার ভেঙ্গে সকল জঙ্গিদের মুক্ত করে দিল যাদের মধ্যে ছিল নয়জন জঙ্গি। কারাগার থেকে লুট হলো ৮৫টি অস্ত্র আর হাজারের উপর গুলি। প্রাপ্ত তথ্য হতে দেখা যায় পুরো পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ চলে গেল একাত্তরের পরাজিত শক্তির কাছে আর তাদের সকল প্রকারের নির্দেশনা আসছে লন্ডন থেকে।

২১ জুলাই দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাদের চূড়ান্ত রায়ে বস্তুত পক্ষে শিক্ষার্থীদের সব দাবিই যথার্থ বলে রায় দিয়েছেন। এরই মধ্যে ষড়যন্ত্রকারীরা ঢাকার সকল প্রবেশমুখ তাদের দখলে নিয়েছে। শুরু করে দেয় তাদের তাণ্ডব। রায় আসার পূর্বেই ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু ঢাকাতেই রাষ্ট্রের ৭৯টি স্থাপনা সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করেছে। তাদের মূল টার্গেট ছিল বর্তমান সরকারের আমলে দেশে যত উন্নয়নমূলক স্থাপনা হয়েছে তাকে ধ্বংস করা। আর দু’একদিন সময় পেলে তারা হয়তো শাহ আমানত বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল ধ্বংস করতো আর বিশ্বনন্দিত পদ্মা সেতুর ক্ষতি করার চেষ্টা করতো। মারাত্মক ক্ষতি করতে পারতো কর্ণফুলি টানেল। তার আগেই ১৯ জুলাই দেশে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সরকার রাজধানী সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে কারফিউ জারি করে তা বলবৎ করতে সেনাবাহিনী নামালো। এই যে এত ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে ঢাকা ও তৎসংলগ্ন এলাকাকে সন্ত্রাসীরা বোমা বিধ্বস্ত সিরীয় বা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মতো করে দিল তা আরো ভয়াবহ হতো সেনাবাহিনী যদি সময়মতো তাদের উপর ন্যস্ত জাতীয় দায়িত্ব পালন না করতো।

তাণ্ডবের ভয়াবহতা দেখে এটি মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যারা এই সব কর্মকাণ্ড করেছে তারা প্রত্যেকেই বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জঙ্গি। যে সব স্থাপনার উপর সন্ত্রাসীরা হামলা করে তা ধ্বংস করেছে তা পূর্বে কখনো দেখা যায় নি। এই স্থাপনাগুলোর গুরুত্ব ও খুঁটিনাটি সম্পর্কে তারা আগে হতেই ওয়াকিবহাল ছিল। বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন বা ডাটা সেন্টার তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এই সব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে তিনজন পুলিশ সদস্য সহ নিহত হয়েছেন প্রায় দুইশত জন যাদের মধ্যে যেমন আছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী তেমন আছে সরকারি দলীয় ছাত্র লীগের কর্মীরাও। একজন পুলিশ সদস্যকে গাছের সাথে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে এই সন্ত্রাসীরা যা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কল্পনাও করতে পারে না। সন্ত্রাসীদের পরিকল্পনা ছিল ঢাকাকে শুধু সারা দেশ থেকে নয় বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া যে কারণে বিটিভিতে আর ডাটা সেন্টারে অগ্নি সংযোগ। কোন এক পর্যায়ে তারা যে গণভবনে হামলা করে আর একটি ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটাতো তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। হয়তো দখল হতো বঙ্গভবন আর সংসদ ভবন। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিবতো রুহুল কবির রিজভি স্লোগান তুলেছিলেন আন্দোলনকারীরা কারাগারে আর তারা থাকবে সংসদে।

কোটা বিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে এই দেশদ্রোহিদের কর্মকাণ্ড সরকার ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্য অনেক কিছু শিক্ষণীয় আছে। ৭৬ বছর বয়সি দেশের প্রাচীনতম দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কত চড়াই উৎরাই পার হয়ে এতদূর এসেছে তা হয়তো মৌসুমি আওয়ামী লীগাররা জানে না। যে দলটি এতদিনে একটি শত বছরে পুরানো বট বৃক্ষের মতো শক্ত হওয়ার দরকার ছিল তা যে গত চার মেয়াদে টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে কত নড়বড় হয়ে গিয়েছে তা অনেকে উপলব্ধি করে না। দলটি বট বৃক্ষের বদলে বর্তমানে সাংগঠনিকভাবে হয়ে গিয়েছে একটি পুরানো ঘুণে ধরা মান্দার গাছের মতো। এই যে এত এত পরজীবী আওয়ামী লীগের রাতারাতি মুজিব কোট বানিয়ে গত সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য হলেন এই ক্রান্তিকালে তারা কোথায় ছিল? বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্র লীগ, নেতারা চলতে গেলে সামনে পিছনে ডজন ডজন মোটর সাইকেলের এসকর্ট থাকে সেই নেতাদের ভূমিকাই বা কি? হয়তো দলের প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কাছে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীদের একটি প্রশ্ন সহজে পোঁছাবে না। তাদের একটাই প্রশ্ন ‘আওয়ামী লীগে কি আর একজন সৈয়দ আসরাফ জন্ম নিবে না?’ ৭৯ বছরে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিক ভাবে এত ভঙ্গুর এর আগে কখনো দেখা যায় নি। বর্তমান দুর্যোগ বা ক্রান্তিকাল হয়তো এক সময় কেটে যাবে তবে বুঝতে হতে দেশের বিরুদ্ধে যারা সর্বদা ষড়যন্ত্র ও যুদ্ধে লিপ্ত তারা ক্লান্তিহীন ভাবে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে। দলকে যদি দ্রুত সংস্কার করা না যায় তা হলে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই দলটি ভেঙ্গে পরতে বেশী সময় লাগবে না। একজন শেখ হাসিনা আর কতদিকে সামাল দিবেন?


সময়-অসময়   ড্রেস রিহার্সাল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াও


Thumbnail

একটি মিথ্যা অপবাদ কেমন করে সত্য করে তোলা যায়, বাংলাদেশের বর্তমান ‘রাজাকার’ আন্দোলন তার স্পষ্ট প্রমাণ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সেদিন কাউকে রাজাকার বলেননি, যা বলেছিলেন তার মর্মার্থ ছিল- আর সকলের সাথে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারই কোটা সুবিধা পাবে, রাজাকার পরিবার কেন পাবে সে প্রশ্ন তিনি জাতির কাছে করেছিলেন। এই বক্তব্যকে ফু্লিয়ে ফাঁপিয়ে, সত্য বিকৃত করে ঘোষণা করে দেয়া হলো, তিনি বলেছেন সবাই রাজাকার! রাজাকার হলে এই দেশে আর চাকুরি পাওয়া যাবে না। সুতরাং সব ভাঙ্গো, আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যের জন্ম হলো। সাথে এসে যুক্ত হলো মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত বিরোধী শক্তি, তাদের ‘নাতিপুতি’ বা বংশধরেরা আর সে ভাবধারায় বিকশিত একটি জ্ঞানপাপী সম্প্রদায়।

আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগানগুলো ছিনতাই হয়ে গেছে! আমাদের অনুপ্রেরণাগুলো ইচ্ছামতো শব্দ বসিয়ে বিকৃত করে দেয়া হয়েছে। মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে মৌলবাদী চেতনায় তথাকথিত ‘সমৃদ্ধ’ গোষ্ঠী আন্দোলন নিয়ে গান গাইছে। একাত্তর আজ আবার ভূলুণ্ঠিত। নিহত শিবির কর্মীকে করা হয়েছে জাতির সহিংসতা উস্কে দেবার ‘আইকন’! নির্দয়ভাবে চাকুরিজীবী পুলিশ কর্মীদের পিটিয়ে মারা হচ্ছে, গাড়ি পোড়ানো, দালান পোড়ানো, সরকারি সম্পত্তির ক্রমাগত ধ্বংসসাধন, রাজপথে নামিয়ে দেয়া মিথ্যার আন্দোলন, এসবের অর্থ কখনোই মানুষের ক্ষোভ নয়, এ সবই প্রতিশোধের স্পৃহা কারণ এরা একাত্তরে পরাজিত হয়েছিল। আর সেই একাত্তর যার নেতৃত্বে হয়েছিল সেই জাতির পিতাকে অসম্মান তাদের করতেই হবে। আর তাঁর কন্যা যদি এই রাষ্ট্রের সকল মিথ্যাকে ছাপিয়ে দেশটাকে দুনিয়ায় উজ্জ্বল করে তুলে ধরেন তাহলে তাদের থাকে কী? সুতরাং তাকেও মিশিয়ে দাও।

দুর্ভাগ্য এই যে, ‘বিচিত্র’ বাংলাদেশে ইতিহাস বারবার উল্টোদিকে চালনা করা হয়েছে। আর সৌভাগ্য যে, অনেক ত্যাগের মাধ্যমে ‘এই’ বাংলাদেশ আবার সত্য প্রতিষ্ঠা করে নিয়েছে। এই দোলাচলে আমাদের বঙ্গ ভূ-ভাগের ইতিহাস বারবার আবর্তিত হয়, আর জন-মানুষকে তার ঐতিহাসিক মূল্য দিতে হয়।

বাংলাদেশ নিশ্চয়ই ঘুরে দাঁড়াবে। এই দেশ রাজাকারের নয়, এই দেশ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ! বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলায়’ কোন রাজাকারের ঠাঁই থাকবে না। এই দেশ সকলের জন্যে নয়, এই কথা আমাদের মনে মেনে নিতেই হবে। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে।


সহিংসতা   বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াও  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দেশে আবার শান্তি ফিরে আসবে


Thumbnail

১৭ জুলাই জাতির উদ্দেশ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খুব গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনলাম। এই বক্তব্য শুনার সময় আমার ৭০’এর শেষের দিকের তৎকালীন ব্রিটিশ রানী এলিজাবেথ জাতির উদ্দেশ্যে যে সমস্ত বক্তব্য দিতেন তা মনে পড়ে গেলো। রানী এলিজাবেথের বক্তব্য খুবই সংক্ষিপ্ত হতো। কিন্তু তিনি সবকিছুকে গুছিয়ে বলতেন। এর আগে সময় লক্ষ্য করেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দীর্ঘায়িত হয়। কিন্তু সেদিন খুব অল্প কথায় আসল যে বার্তা সেটি তিনি জনগণকে জানিয়ে দিলেন। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে খুব সংক্ষেপে তিনটি বিষয় তিনি স্পষ্ট করেছেন। প্রথমে তিনি এই আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সেদিনই মহররম ছিলো তাই ভাষণে তিনি মহররমের কথাও বললেন। এসব বলার পর জাতির উদ্দেশ্যে তিনি যা বললেন সেটি হচ্ছে, এই আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি শুধু দুঃখ জানানোর পাশাপাশি দল মত নির্বিশেষে তাদের পরিবারের যেসকল সাহায্য প্রয়োজন তা তিনি করবেন। এছাড়াও এসব হত্যার বিচারে বিচার বিভাগীয় তদন্তের বিষয়টি স্পষ্ট করেন। 

আজ পর্যন্ত আমাদের দেশে কোন সরকার প্রধানই যখন ছাত্রদের সাথে বা অন্যকোন গন্ডগোলে কেউ বিচার বিভাগীয় তদন্তের কথা নিজের থেকে বলেন নি। বরং জনগণের দাবির মুখে এটি বাস্তবায়ন করে। আর এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে বলে জানিয়েছে। আর এতে যেই দোষী সাব্যস্ত হবে তাকেই বিচারের আওতায় আনা হবে এবং তাকে কোন ছাড়া দেয়া হবে না বলেও জানান। 

এরপর তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বললেন, যেতেতু সাংবিধান অনুযায়ী দেশের তিনটি বিভাগ আছে। এর একটি হচ্ছে, পার্লামেন্ট, শাসন ব্যবস্থা এবং বিচার বিভাগ।  পার্লামেন্টে কোন পাশকৃত আইন নিয়ে যদি আলোচনা বা বিতর্ক থাকে তবে সে বিষয়টি বিচার বিভাগ দেখতে পারে। সুতরাং এর মনে এই দাড়াচ্ছে, বিচার বিভাগকে পাশ কাটানোর কোন সুযোগ নেয়।

কোটা নিয়ে ২০১৮ সালের পরিপত্রটি যখন হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেন তখন সরকারই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেল। পরবর্তীতে এই রায়ের বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি ৭ আগস্ট দেয়া হবে জানিয়েছে। এক্ষেত্রে যারা সময় চেয়েছেন চেয়েছেন তারাই সময় চেয়েছিলেন। যার ফলে এই শুনানির তারিখ ৭ আগস্ট দেয়া হলো। নাহয় এই শুনানীটি আরও আগেই সেই কারণেই শুনানি হতে পারতো টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় থাকা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, এতে এমনভাবে বিচারবিভাগের সিদ্ধান্ত নিবে যাতে ছাত্ররা সন্তুষ্ট হবে। সুতরাং বক্তব্যগুলো খুবই স্পষ্ট।

কয়েকদিন আগে একটি লেখাতে লিখেছিলাম, দল এবং সরকারের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজর রাখতে হবে। এবং প্রয়োজনে এটিকে আবার পুনবিন্যাস করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি সেই পর্যায় এখন এসে গেছে। কারণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক যে এখন এতো দুর্বল হয়ে গেছে দেশে বর্তমানের ঘটনাগুলো না ঘটলে বুঝতে পারতাম না।

বর্তমানে আওয়ামী লীগের অন্যান্য পেশাজীবি সংগঠনগুলোও এখন দুর্বলতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। এর কারণ এই সংগঠনগুলোর ভাব এমন যে, ‘আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন’। অর্থাৎ তিনিই সবকিছু করে দেবেন। অর্থাৎ যদি মনে করা হয়, আমাদের দেশে যতো পাওয়ার জেনারেট হচ্ছে তা শেখ হাসিনাই জেনারেট করছে। এই পাওয়ার জেনারেট করতে হলে সেখানে জ্বালানী দিতে হবে। আর এক্ষেত্রে এই জ্বালানী হচ্ছে কর্মীরা। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের কর্মীরা। ঠিক সেভাবেই আমরা নেত্রীকে যে সাহস দেবার আমাদের যে দায়িত্ব, সেই জায়গায় আমরা সবাই অকৃতকার্য হচ্ছি। 

যখন এনএসএফ ক্ষমতায় তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। তখনতো আমাদের এনএসএফ এমনকি আইয়ুব খানের মতো একনায়কও আমাদের হল থেকে বের করতে পারেনি। আমরা সেখানে যুদ্ধ করে টিকে ছিলাম। আর গতকাল দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকদের হল থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। 

এই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেখা গেছে, মোটামুটি প্রায় ১৮ ঘণ্টা এ দেশটি তারেক জিয়া নিয়েই গেছিলো বলা চলে। কেননা তারেক জিয়া লন্ডনে বসে, ফোন করে বক্তৃতা দিয়ে যদি এতো জমায়াত বিএনপি একসাথে নামাতে পারে তাহলে তাকে অবশ্যই শক্তিশালী বলতে হবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যারা বেনিফিমিয়ারী তাদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি।  

বাংলাদেশে এখন একমাত্র দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যার অপর নাম বাংলাদেশ সেজন্য টিকে আছে। এজন্যই শেখ হাসিনাকে আমাদের অবশ্যই সমর্থন দিতে হবে নাহলে বাংলাদেশ পাকিস্তানের দিকে আবার এগোনোর যে ষড়যন্ত্র চলছে তাতে ষড়যন্ত্রকারীরাই সফলকাম হবে। 

বাংলাদেশের জনগণ এখন পর্যন্ত দার্শনিক শেখ হাসিনাকে বিশ্বাস করে। কারণ তিনি ১৯৮১ সালে দেশে আসার পর থেকে যে কথা বলেছেন তার প্রত্যেকটি কথা রেখেছেন। একটি ব্যতিক্রমও কেউ কোথাও খুজে পাবেনা। যে নেত্রী সবসময় সত্যের উপর প্রতিষ্ঠা করে এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেশ চালান তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করার তো কোন কারণ থাকতে পারে না। সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি দেশে আবার শান্তি ফিরে আসবে। আর তা নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আসবে। অতীতে তিনি যেমন সফল হয়েছেন আশা করি এবারও তিনি সফল হবেন।


দিনান্তের কথা   শান্তি   বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ১৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

আমাদের দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী ডাঃ সামন্ত লাল সেনকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। কৃতিত্বের প্রমাণিত রেকর্ড সহ তিনি একজন সবচেয়ে সৎ এবং কর্মমুখী ব্যক্তি। প্রথম দিন থেকেই তিনি মন্ত্রণালয়কে একটি সৎ, ফলাফলভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক, জনমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তরিত করতে শুরু করেছেন। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং পরিবর্তিত মন্ত্রণালয়ের জন্য আমরা অবশ্যই গর্বিত। তার সামনে এখনও অনেক বিশাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে, রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে আমাদের অবশ্যই কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে হবে, উত্তর খুঁজতে হবে এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করতে হবে। আর তা হল: ১) অতীতে আমরা কী অর্জন করেছি; ২) আমাদের প্রধানমন্ত্রীর জনগণের স্বাস্থ্য উন্নতির দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করতে আমাদের কী শূন্যতা রয়েছে; এবং ৩) আগামী কয়েক দশকে স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন বজায় রাখা এবং সেই দৃষ্টি ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের আলাদাভাবে কী করতে হবে তা নিয়ে শুধু চিন্তাই নয়, একটি কার্যকরী লক্ষ্য অর্জনের কৌশল এবং কৌশল বাস্তবায়নের পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

গত দশকের আমাদের অর্জন: ১৯৭৮ সালে জনগণের গড় আয়ু (একটি দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং উন্নয়নের একটি সূচক) ছিল ৫১.৬ বছর, আজ এটি ৭৩.৮ বছর - একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। ১৯৭৮ সালে মোট টিএফআর ( Total Fertility Rate) ছিল ৬.৬ এবং এখন তা নিচে নেমে হয়েছে ১.৯ (জনসংখ্যা প্রতিস্থাপনের নীচে), আমরা পরোক্ষ ভাবে বলতে পারি এটা সম্ভব হয়েছে নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষার উন্নতি এবং তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতায়নের কারণে। শিশুমৃত্যুর হার ২৫/১০০০ জীবিত জন্মে নেমে এসেছে, মাতৃমৃত্যু এখন ১২৩/১০০,০০০ জীবিত জন্মে। এটি সম্ভব হয়েছে সফল টিকাদান কর্মসূচি এবং স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলিতে সহজ অ্যাক্সেসের জন্য। ১৯৯১ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের স্টান্টিং (দীর্ঘস্থায়ী পুষ্টি সমস্যা) এর প্রবণতা ছিল ৭৩.৬% যা আজ ২৩% এ নেমে এসেছে। অন্যান্য অনেক সূচকের মধ্যে, আমি এখানে শুধুমাত্র কয়েকটি হাইলাইট করেছি। জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণের পাশাপাশি দূরদৃষ্টি, নেতৃত্ব, নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং কর্মক্ষেত্রে এগুলি উল্লেখযোগ্য অর্জন। আমাদের অর্জনের জন্য আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত কিন্তু আত্মতুষ্ট হওয়া উচিত নয় কারণ আমাদের একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে এবং একটি স্থিতিস্থাপক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

২১ শতকের চ্যালেঞ্জ: প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে যে বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশে আমরা কিছু স্বাস্থ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ১) এপিডেমিওলজিকাল ট্রানজিশন, যেখানে রোগের ধরণটি সংক্রামক রোগ থেকে ব্যাপক হারে অসংক্রামক রোগে পরিবর্তিত হচ্ছে। বর্তমানে ৬৫% এরও বেশি মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক রোগের জন্য, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, নানা ধরনের ক্যান্সার, সড়ক দুর্ঘটনা ইত্যাদি। এই অবস্থার দীর্ঘমেয়াদি ব্যয়বহুল যত্ন প্রয়োজন। ২) স্থানান্তর জনসংখ্যা: আমাদের বয়স্ক লোক সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন। এবং একই সাথে আমাদের এখনও বিশাল বয়ঃসন্ধিকালের/তরুণ জনসংখ্যা রয়েছে যাদের সুস্থ এবং সক্রিয় রাখা দেশের সার্বিক জাতি গঠন ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন। ৩) স্থানান্তরের স্থানান্তর/অভিবাসন: অভ্যন্তরীণ অভিবাসন যেখানে আমরা ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, বস্তির জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাদের সঠিক পানি, স্যানিটেশন, আবাসন এবং স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলিতে অ্যাক্সেসের অভাব মোকাবেলা করছি। এবং ভবিষ্যতের যেকোনো অশান্তি বন্ধ করতে আমাদের এই জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলিতে অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন, যাতে তারা পিছিয়ে না থাকে। আমাদের বিপুল সংখ্যক অভিবাসী এবং অভিবাসী শ্রমশক্তি রয়েছে যারা আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যাবশ্যক। তাদের স্বাস্থ্য এবং মঙ্গল একটি অগ্রাধিকার; ৪) জলবায়ু পরিবর্তন হল আরেকটি পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমানভাবে খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন বিশাল ক্ষতিগ্রস্ত জনসংখ্যার স্বাস্থ্য ও মঙ্গলের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে এবং ফেলবে। স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবায় অ্যাক্সেসের অভাব বিশেষ করে নারী, শিশু এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করছে এবং করবে। ৫) COVID-19 আমাদের দেখিয়েছে যে এমনকি সবচেয়ে ধনী দেশগুলির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সেই মহামারি মোকাবেলায় প্রস্তুত ছিল না। মহামারি আমাদের জীবন বাঁচাতে দুটি ফ্রন্টে কাজ করতে দেখিয়েছে: রোগের পাশাপাশি জীবিকা থেকেও জীবন বাঁচানো। তাই এই মহামারি মোকাবেলায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নয় রাজনীতিবিদরা ড্রাইভিং সিটে ছিলেন। আমরা কি পরবর্তী মহামারির মুখোমুখি হওয়ার জন্য এখন প্রস্তুত?; ৬) ডিজিটাল রূপান্তর: আমরা পছন্দ করি বা না করি আজ সাধারণ জনগণ তাদের স্বাস্থ্য এবং মঙ্গল সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন। বাংলাদেশের সকল জনগণের ডিজিটাল সুবিধা রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতকে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মকে একটি সুবিধা এবং সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করতে প্রস্তুত হতে হবে হুমকি নয়। ৭) এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বাড়ছে কারণ বাংলাদেশে লোকজন কোনো প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এন্টিবায়োটিক কিনছে মানুষ ও পশুর জন্য। আমাদের আরও দেরি হওয়ার আগেই কীভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার নীতি ও বাস্তবায়ন শুরু করা যায় তার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। ৮) মা, নবজাতক এবং শিশুদের স্বাস্থ্য এবং বেঁচে থাকা এখনও একটি অসমাপ্ত এজেন্ডা হয়ে রয়ে গেছে। ৯) নানা কারণে মানসিক স্বাস্থ্য একটি অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা যার জন্য জরুরি ও সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।

সিস্টেম চ্যালেঞ্জ: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বাজেটে আরও বেশি বরাদ্দ দাবি করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, কেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বরাদ্দকৃত বাজেট সময়মতো ব্যবহার করতে সক্ষম নয়, কেন প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ কোষাগারে ফেরত দিতে হচ্ছে? তাহলে কোন যুক্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তহবিল আরও বাড়ানোর কথা বিবেচনা করবে? আমরা কি বর্তমান নীতি এবং ব্যবস্থাপনা ক্ষমতা বিশ্লেষণ করেছি যা আমাদের প্রমাণ দিতে পারে কেন আমাদের এই সময়োপযোগী বাস্তবায়ন ক্ষমতার অভাব রয়েছে। আমরা কি আমলাতান্ত্রিক নীতি ও পদ্ধতি বিবেচনা করেছি যা সময়মতো বরাদ্দ এবং কাজ শেষ করতে বাধা দেয়। আমরা কি বিশ্লেষণ করেছি কি ভাবে অপচয় এবং দুর্নীতি বন্ধ করা যায়। আমরা কি পরিচালন ক্ষমতা মূল্যায়ন করেছি বা ফলাফল ভিত্তিক, জবাবদিহিতার কাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছি যার সাহায্যে আমরা স্বাস্থ্য সচিব থেকে মহাপরিচালক, প্রোগ্রাম বা হাসপাতাল সহ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার থেকে সিভিল সার্জন পর্যন্ত কর্মকর্তাদের কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করতে পারি?

অন্যান্য চ্যালেঞ্জ: ১৯৭০ দশকে আমাদের যখন বিপুল ভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছিল তখন জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে আমাদের জরুরি সময়সীমাবদ্ধ পদক্ষেপের প্রয়োজন ছিল। তাই সময়মতো তা মোকাবেলা করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুটি সমান্তরাল স্বাধীন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করে: স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। আজ জনসংখ্যা সচেতনতা, নারীর ক্ষমতায়ন, পারিবারিক অর্থনীতি বৃদ্ধি এবং সময় মত সঠিক সেবা পাওয়ার কারণে টিএফআর (total fertility rate) হ্রাস পেয়েছে এবং আরো নিচে যাবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি এখন হয়ত কোনো বিরাট সমস্যা নয়, আগামী দশকে তা কমতে শুরু করবে। এবং জনসংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সময় দীর্ঘায়িত হচ্ছে। আমাদের প্রচেষ্টার সময় এসেছে একটি কঠিন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার- আমাদের কি এখনও দুটি অধিদপ্তর দরকার বা একটি সমন্বিত অধিদপ্তর দরকার? একটি মানসম্পন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতি ব্যাপকভাবে জনগণকে উভয় পরিষেবা প্রদান করতে পারবে।

আরেকটি বিষয় হল নগর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব। বিভিন্ন বহিরাগত উত্স থেকে তহবিল দিয়ে এই ব্যবস্থা পরিচালনা করা হয়। বেশিরভাগ বেসরকারি সংস্থাগুলি পরিষেবা প্রদান করে। আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে স্বাস্থ্যের সর্বোত্তম মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকারগুলি কীভাবে জাতীয় স্বাস্থ্য লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য তাদের কাজগুলিকে সমন্বয় করে। আমাদের অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে যে বহিরাগত তহবিল অনন্তকালের জন্য নাও হতে পারে।

আমরা জানি যে বেশিরভাগ মানুষ অসংক্রামক রোগে ভুগছেন যা একটি জীবনধারার রোগ। এর প্রতিরোধ এবং দীর্ঘমেয়াদি যত্ন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এমনকি উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এটি একটি বিশাল আর্থিক এবং পরিষেবার বোঝা হয়ে উঠছে। তথ্য ও পরিষেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন ব্যবস্থা আমাদের গ্রহণ করা উচিত: ব্যয়বহুল হাসপাতাল ভিত্তিক পরিষেবা বা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ভিত্তিক পরিষেবা যা প্রয়োজনে হাসপাতালের সাথে যুক্ত হয়ে পরিষেবাগুলিকে জন সাধারণদের কাছে নিয়ে আসা এবং সম্প্রদায়কে নিজের গৃহ ভিত্তিক যত্ন পরিষেবাগুলি তৈরি করতে সহায়তা করা? আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি অনন্য কমিউনিটি সেন্টার ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা তৈরি করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থাপনা কীভাবে তাদের পরিষেবাগুলি সমন্বয় করছে বা করতে পারে তা বিবেচনা করার সময় হয়ত এসেছে। আমাদের বিবেচনা করতে হবে আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক পরিষেবাগুলিকে আরও মূল্যায়ন ও প্রসারিত করে একটি সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা যা সংযুক্ত প্রয়োজনীয় হাসপাতালের যত্ন সেবার ব্যবস্থা তৈরি করা যা হবে সবচেয়ে দক্ষ এবং খরচ কার্যকর সিস্টেম।

আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মানব সম্পদের আমাদের নীতি এবং পরিকল্পনাগুলিকে পুনর্বিবেচনা করতে হবে। আগামী কয়েক দশকে বাংলাদেশের কত চিকিৎসক, নার্স, মিডওয়াইফ, প্যারামেডিক এবং সহযোগী মানব সম্পদ প্রয়োজন তা বিশ্লেষণ করতে হবে। একের পর এক সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ নির্মাণ করা হচ্ছে। সেই ডাক্তারদের কি সরকারি, বেসরকারি বা অন্য দেশে পাঠানো যাবে? আমরা কীভাবে নিশ্চিত করব যে আমাদের মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিদেশি প্রতিষ্ঠান দ্বারা স্বীকৃত এবং স্বীকৃত হচ্ছে যদি আমরা আমাদের ডাক্তারদের অন্য দেশে নিয়োগ করতে চাই? আমাদের কি পর্যাপ্ত নার্স, মিডওয়াইফ এবং প্যারামেডিকস আছে যারা বাংলাদেশের প্রয়োজন বা অন্য দেশগুলির প্রয়োজন মেটাতে পারে। কিভাবে আমরা স্বাস্থ্যের জন্য রপ্তানি মানের মানবসম্পদ বিকাশ করতে পারি। আমি শুনেছি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিপুল সংখ্যক পদ এখনও শূন্য রয়েছে - আমাদের এর কারণগুলি খুঁজে বের করে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা দরকার।

স্বাস্থ্য উন্নয়নে বেসরকারি খাত উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। আমাদের এখন প্রয়োজন নীতিমালা , এর বাস্তবায়ন এবং পর্যবেক্ষণ কৌশল তৈরি করা বা বিদ্যমান নীতি পরিবর্তন করা যা তাদের পরিষেবা এবং কার্যগুলি উন্নত মানের যত্নের জন্য সহায়ক হয় এবং তাদের একটি সাধারণ জবাবদিহিতার কাঠামোর মধ্যে আনা যায়।

আরেকটি বিষয় হল একটি কার্যকর প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার জন্য জেলা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পরিচালনার দক্ষতা তৈরি করা। প্রতি বছর আমাদের জেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপকদের সাথে বসতে হবে, তাদের অর্জন আর চ্যালেঞ্জগুলি বিশ্লেষণ করতে হবে, এবং সেই অনুযায়ী আগামী বছরের জন্য স্বাস্থ্য জেলা ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের কর্মক্ষমতা সূচক এবং একটি জবাবদিহিতার কাঠামো তৈরি করতে হবে, শাস্তির জন্য নয় বরং কার্যকর হওয়ার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য।

এগিয়ে যাওয়ার পথ: আমি বারবার শুনছি আমার মতো যারা জাতিসংঘের ব্যবস্থায় বা বিদেশে অন্যান্য পদে কাজ করেছেন তারা বাংলাদেশের বিরাজমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত নন বা বোঝেন না এবং তাই তাদের কিছু বলার অধিকার নেই। আমি তাদের মতামতকে সম্মান করি, আমি স্বীকার করি যে এখানে বাংলাদেশে যা ঘটছে তার সবকিছু হয়তো আমি কভার করতে পারিনি। তবুও আমি বিবেচনার জন্য এগিয়ে যাওয়ার কয়েকটি উপায় নির্দেশ করার সাহস করেছি। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রয়েছে এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি সুস্থ জাতি গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি রূপান্তরমূলক পরিবর্তন এবং মানব উন্নয়নমুখী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা আনার একটি অভূতপূর্ব সুযোগ। আমাদের অতীতের অর্জনগুলো তাৎপর্যপূর্ণ কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদেরকে ফলাফল ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে একটি ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।

বাংলাদেশে এবং বিদেশে অনেক বাংলাদেশি আছে যাদের চমৎকার জনস্বাস্থ্য পটভূমি এবং দক্ষতা রয়েছে এবং তারা আর্থিক লাভ, প্রভাব বা উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছাড়াই সহায়তা প্রদানের জন্য, আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, তারা প্রস্তুত। আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের একটি উপদেষ্টা দল গঠনের চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই দলটি বর্তমান অর্জন, চ্যালেঞ্জ, সুযোগ বিশ্লেষণ করবে, তারা আগামী কয়েক দশকের স্বাস্থ্য নীতি, কৌশল, বাস্তবায়ন পরিকল্পনা, এর খরচ এবং একটি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা প্রণয়ন করবে এবং মন্ত্রীকে সম্ভাব্য পথের সুপারিশ করবে এবং লক্ষ্যমাত্রা ও জবাবদিহিতার কাঠামো নির্ধারণ করতে পারবে, তারা পর্যায়ক্রমে বসে পরিবর্তনগুলি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে এবং নির্ধারিত লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আরও পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ প্রদান করবে। ফলাফল ভিত্তিক ব্যবস্থাপনার উপর ভিত্তি করে সংগঠনের প্রতিটি স্তরের জন্য লক্ষ্যগুলি তৈরি করবে এবং একটি জবাবদিহিতা কাঠামো তৈরি করে একটি স্বচ্ছ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা তৈরি করার সুপারিশ করবে। সুপারিশ এবং তার বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার একমাত্র দায়িত্ব হবে মন্ত্রণালয়ের। এই দলটি একটি উপদেষ্টা দল হবে, তত্ত্বাবধানকারী দল নয়। উপদেষ্টা দল গঠন করা সহজ সিদ্ধান্ত নয় কারণ আমি বিশ্বাস করি যে অনেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করতে পারেন এবং হুমকি বোধ করতে পারেন। কিন্তু যত সময় যাবে আমি বিশ্বাস করি তারা অনুভব করবে যে উপদেষ্টা গোষ্ঠী কোন হুমকি নয় বরং তাদের কাজ এবং ফলাফল অর্জনের সহায়ক।

হাসপাতাল পরিদর্শন বা এখানে এবং সেখানে কিছু দুর্নীতি বা কিছু শাস্তির ব্যবস্থা যথেষ্ট নাও হতে পারে। মন্ত্রীকে তার টেবিলে বসা হাতিটিকে চিহ্নিত/সম্বোধন করতে হবে। তার ভবিষ্যৎ দৃষ্টি, লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য বিস্তৃত করা প্রয়োজন। তার সময়কালে তিনি তার সক্ষম দলের সাথে কী অর্জন করতে চান এবং কিভাবে তিনি তা অর্জন করবেন এবং বাংলাদেশের মানুষ কেন তাকে মনে রাখবে তা বিস্তৃত করা। আমি বিশ্বাস করি তিনি একজন স্বপ্নদ্রষ্টা, তিনি পরিবর্তন আনতে তার সক্ষমতায় বিশ্বাসী এবং তিনি তার দেশের মানুষের জন্য তার সক্ষমতার সেরাটা দিতে প্রস্তুত এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে তার সঠিক সিদ্ধান্তে গর্বিত করতে প্রস্তুত।

আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর শোনার এবং শেখার অনন্য ব্যক্তিত্ব রয়েছে। তার সততা, অতীতের অর্জন এবং ফলাফলের অতীত আমাদের সকলকে আশা দেয়। তার দক্ষ নেতৃত্বে মন্ত্রণালয়ে রূপান্তরমূলক পরিবর্তন সম্ভব এবং এটা একটি বাস্তবতা। আমরা তাকে নিয়ে গর্ব করতে চাই।


মতামত   স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

ফিরে দেখা: ১৬ জুলাই


Thumbnail

২০০৭ সাল। ভোররাতে ধানমন্ডির ‘সুধা সদন’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘেরাও করল। উদ্দেশ্য, শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার। তিনি তখন বিরোধীদলীয় নেতা। ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নিয়েছে ড. ইয়াজউদ্দিনের ব্যর্থ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছ থেকে।

যেটি আসলে বিএনপি সরকারেরই অন্যরূপ। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনাকে প্রথমে গ্রেপ্তার করার কারণ কেউ বুঝতে পারেনি। কারণ অতীত অভিজ্ঞতা হলো, নতুন সরকার এসে সদ্য বিদায়ী সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযান পরিচালনা করে। সে ক্ষেত্রে বিরোধী দলের নেতাকে গ্রেপ্তার বিস্ময়কর! এ থেকেই বোঝা যায়, শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীন ছিলেন। এজন্য তিনিই হন অগণতান্ত্রিক শক্তির প্রধান লক্ষ্য। তারা শেখ হাসিনাকেই সবচেয়ে বেশি ভয় পেয়েছিল।

গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ধানমন্ডির ‘সুধা সদনে’ একদিন তিনি তোফায়েল আহমেদকে বললেন, এখনই যদি আমরা এই অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে বাধা না দিই তাহলে পরবর্তীকালে খুবই অসুবিধা হবে। আমার এখনো মনে আছে, তখন তোফায়েল আহমেদ উত্তরে বললেন, ‘তাদের আরও কিছুদিন সময় দেওয়া প্রয়োজন।’ এতে আওয়ামী লীগ সভাপতি খুব অসন্তুষ্ট হলেন। তিনি সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন। নামার পথে তিনি বললেন, ‘না, তাদের কোনো সময় দেওয়া যাবে না।’ তিনি বললেন, এখনই যদি তাদের প্রতিহত না করা যায় এবং তাদের যদি গ্রহণ করা হয় তাহলে তারা ‘সিন্দাবাদের ভূতের’ মতো ঘাড়ে চেপে বসবে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা ১৯৮১ সাল থেকে বাংলাদেশের রাজনীতির যে একটি মৌলিক পরিবর্তন করেছেন, যা জনগণের চোখ এড়ায়নি। গণতন্ত্রের জন্য নিরন্তন সংগ্রাম করেছেন। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনিই প্রধান যোদ্ধা। এ লড়াই তাকে দিয়েছে অনন্য অবস্থান। শেখ হাসিনাই একটা ‘ইনস্টিটিউশন’। সুতরাং এখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর তখনকার শেখ হাসিনার মধ্যে আমি কোনো পার্থক্য দেখি না। তখন তার কথায় লোকে যেমন বিশ্বাস করত, এখনো মানুষ তা করে। এজন্যই তিনি সেনা সমর্থিত সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়েছিলেন।

কয়েক দিন পর শেখ হাসিনা আমাকে ফোনে বললেন, ‘আমি চোখ পরীক্ষার জন্য যাব।’ আর এ সময় তিনি আমাকে বললেন, তিনি কোনো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন না। কিন্তু আমি ওই সময় ফোন করে সব মূলধারার গণমাধ্যমকে জানিয়ে দিলাম, আওয়ামী লীগ সভাপতি আসবেন। এরপর শেখ হাসিনা আমার চেম্বার থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরেন। তিনি তখন বললেন, ‘আমার ফুপু অসুস্থ অথচ আমার ফুপাতো ভাই শেখ সেলিম জেলে বন্দি।’ এভাবে তার যেসব নেতা কারান্তরীণ, তাদের কথা বললেন এবং অসাংবিধানিক সরকারকে তিনি যে স্বীকার করেন না, তাদের অবিলম্বে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত—এ নিয়ে জোর গলায় বললেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দাবি করলেন শেখ হাসিনা। এর দুদিন পর তিনি ‘ল্যাবএইড’-এ গেলেন ক্যান্সার আক্রান্ত বিখ্যাত সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনকে দেখতে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেন। ড. ফখরুদ্দীনের নেতৃত্বাধীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কঠোর সমালোচনা করলেন।

সুতরাং এ দুটি ঘটনা থেকেই বোঝা যায়, অসাংবিধানিক সরকার তাকে টার্গেট করবে। এরপরই তার বাড়ি ঘেরাও করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি কয়েকজনকে ফোন করেন, তাদের মধ্যে একজন প্রয়াত অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। ফোন পেয়েই তিনি ‘সুধা সদনে’ হাজির হন। এ ছাড়া নেতাকর্মীরাও আসে। আমার ধারণা, যদি নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারের বিষয়ে আগে থেকে জানত তাহলে শেষ পর্যন্ত তারা রাস্তা ঘেরাও করত এবং শেখ হাসিনাকে কোর্ট পর্যন্ত নিয়ে যেতে দিত না।

শেখ হাসিনাকে নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনের একটি স্যাঁতসেঁতে রুমে রাখা হলো। সেখানে তাকে জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুন এবং প্রাণ গোপাল দত্ত দেখতে গিয়েছিলেন। পরে তার সহকারী একজন জানালেন, শেখ হাসিনা চান আমি যেন তার সঙ্গে দেখা করি। এরপর আমি একটি আর্টিকেল লিখি এবং ওই আর্টিকেলটি ড্রাফট করার জন্য আমি নাঈমুল ইসলাম খানের কাছে গেলাম। তিনি ঠিক করে দেওয়ার পর আমি সৈয়দ বোরহান কবীরের কাছে গেলাম এবং তিনি আমাকে ড্রাফট ঠিক করে দিলেন, যা আমি পত্রিকায় দিলাম। সেই ড্রাফটির মূল কথাটি ছিল এরকম—‘আমি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক। কিন্তু তার সঙ্গে আমাকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।’ সেই লেখাটি পরের দিন ‘আমাদের সময়’ এবং ‘মানবজমিন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েই জেলখানায় শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার দেখা করার ব্যবস্থা করে। আমি শেখ হাসিনার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করি। কিন্তু আওয়ামী লীগেরই অনেক নেতা এতে আপত্তি তোলেন। তারা বলেন যে, শেখ হাসিনা যদি চিকিৎসার জন্য বাইরে যান তাহলে তাকে আর দেশে আসতে দেওয়া হবে না। তখনকার আওয়ামী লীগের মূল যেসব নেতা মাঠে ছিলেন যেমন—প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ড. হাছান মাহমুদ, সাহারা খাতুন অনেকেই আমাকে বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। এরপর আমি সংবাদ সম্মেলন করি। সেখানে আমি দাবি করি, শেখ হাসিনা গুরুতর অসুস্থ। উন্নতর চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ নেওয়া প্রয়োজন। এরপর আওয়ামী লীগের সবাই শেখ হাসিনার চিকিৎসার প্রশ্নে সোচ্চার হন।

সংবাদ সম্মেলনে আমার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ। এ ছাড়া ছিলেন প্রাণ গোপাল দত্ত এবং শাহলা খাতুন। আমরা এই কজন এসংক্রান্ত একটি বিবৃতি তৈরি করি এবং তা পত্রিকায় পাঠাই।

২০০৭ সালের ১৬ জুলাই যখন শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়, তখন যারা অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে সাহারা আপা এখন আমাদের মধ্যে নেই। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম তখন শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ যিনি পরে আইনমন্ত্রী হয়েছেন, তিনিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই সময় ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন। এ ছাড়া মোহাম্মদ আলী নামে একজন আয়কর সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নেত্রীর সঙ্গে জেলে দেখা করেছেন এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

কিন্তু আজকে কেবিনেট মেম্বার অনেকেরই সেই সময় কোনো ভূমিকা ছিল না। অথচ তারাই আজ প্রধানমন্ত্রীর আশপাশে ঘিরে আছে। এমনকি যেসব আমলা সেই সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, তারা আজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে নেই। নতুনদের ভিড়ে পুরোনোরা চাপা পড়ে গেছেন। কিন্তু নতুনদের মধ্যে ছদ্মবেশে যদি হাইব্রিডরা আসে এবং যারা প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষতি করতে পারে তারা যদি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পায় তখন আমি শঙ্কিত হই, ব্যথিত হই।

আজকে এতদিন পর যখন ১৬ জুলাই এলো, তখন এ কথাটি মনে পড়ছে, সেই সময় শেখ হাসিনার পাশে কারা ছিল আর এখন নেত্রীর পাশে কারা আছে। আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তখন জেলে, ড. হাছান মাহমুদ, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাহারা খাতুনরা সেদিন যা করেছেন, তা প্রশংসনীয়। তা ছাড়া প্রয়াত ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক আওয়ামী লীগের লোক না হয়েও শেখ হাসিনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। অন্যদিকে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামরা শেখ হাসিনাকে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়ার মতো দায়িত্বহীন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আজ এতদিন পর এসে আমি বলছি, বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর দল এবং তার দলের সরকার নতুনভাবে সাজানো দরকার। যোগ্য, আদর্শবান এবং পরীক্ষিতদের শেখ হাসিনার চারপাশে বড্ড প্রয়োজন।

লেখক: সভাপতি, কমিউনিটি ক্লিনিক

স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট


১৬ জুলাই   এক এগারো   শেখ হাসিনা   গ্রেপ্তার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন