ইনসাইড থট

আওয়ামী লীগ এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়


Thumbnail

ব্যবসায়ী সম্প্রদায় বলতে এখানে আমি ব্যবসায়ী এবং ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট সকলকেই বুঝচ্ছি। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিভিন্ন দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যায় যে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে শুরু করে আইন দিয়ে যেভাবে সহায়তা করে চলেছেন এবং এখনো করছেন কোন সরকারি বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করে তা করেনি। এখন পর্যন্ত করোনা অতিমারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে সহায়তার হাত বাড়িয়ে চলেছেন। আমি বিশ্বাস করি এই সহায়তার হাত বাড়ানোর প্রদান কারণ ছিলো ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ধারা দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন হবে এবং আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। এই কারণের জন্য ব্যবসায়ী সম্প্রদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে এবং তারা বিশ্বাস করে তাদের সত্যিকারের যদি কোন নিকটজন থাকেন তবে তিনি হচ্ছেন নেত্রী শেখ হাসিনা। 

তবে একি কথা আওয়ামী লীগের সাথে বলা চলে না। একথা শোনার পর অনেকের কাছে লাইনটি বিরোধপূর্ণ লাগতে পারে কারণ আওয়ামী লীগ প্রধানত শেখ হাসিনা। তাহলে আওয়ামী লীগ আবার আলাদা করা হল কেন। আলাদা করা হল অন্য কারণে আর সেটা হল নেত্রী যে কাজ করছেন তার একটি ফলো আপ করতে হবে, ফলটা পেতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে আওয়ামী লীগের একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন। আর এটা সব সময়ই সাধারণত ব্যক্তি পর্যায়ে হয়ে থাকে। যারা মন্ত্রী পর্যায়ে থাকেন তাদের এটা করা সম্ভব নয় কারণ করতে গেলে ভাববে তারা বোধহয় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন আর না করলেও অনেকভাবে বিভিন্ন কথা বার্তা হয়। তবে তাদের সাথে নিশ্চয়ই সব ব্যবসায়ীদেরই ব্যবসার কারণে যোগাযোগ হয় সেটাকে আমি এখানে গুরুত্ব দিচ্ছি না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যারা আওয়ামী লীগের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নেতা যারা সরকারের সাথে সংযুক্ত নন তাদের সাথে এই ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা দরকার। তাদের ব্যবসার বাহিরে আরো অনেক বিষয় থাকে যে বিষয়ে তারা রাজনীতিবিদদের কাছেই মুখ খোলেন। অনেক সময় দেখা যায় ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক আমলারা এদেশের ব্যবসায়ীদের সাথে এমন ব্যবহার করেন যাতে তারা সরকার বিরোধী একটা মনোভাব মনের ভিতর পোষণ করেন এটা আমি বুঝে এবং জেনেই বলছি। এই ধরণের বেশ কিছু উদাহরণ আছে যেটি পাবলিকলি প্রকাশ করা দেশের এবং দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। আমি সেজন্য সেভাবে বলতে চাই না কিন্তু এরকম ঘটনা যে দেশে প্রতিনিয়ত ঘটছে সেটা আমরা সকলেই জানি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, একদিকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা অনেক জায়গায় ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছেন এবং মন্ত্রীরা সেটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন যাতে ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক থাকে। পার্লামেন্টে অনেক হিসাব করে দেখেছেন যে, মোটামুটিভাবে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় প্রধান শক্তি এবং নির্বাচনেও তারাই শুধু আমেরিকায় না, এখন বাংলাদেশেও তারা একটা বড় ফ্যাক্টর। কিন্তু এই ফ্যাক্টরটা কে কতটুকু রাখতে পারেন তার উপর নির্ভর করে। আমাদের দেশে রাজনীতি মোটামুটিভাবে দুই ভাগে বিভক্ত। একটি হচ্ছে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পক্ষ আর সকলেই হচ্ছে তার বিপক্ষ। যখন প্রয়োজন হয় তাদের মধ্যে যত ডিফারেন্স থাকুক না কেন তারা নেত্রীকে যেকোনোভাবে দাবিয়ে রাখার জন্য তারা এক হয়ে কাজ করবে এবং যে নির্বাচন সামনে আসছে তখনও করবে।

অনেকে হয়তো দু`বছর আগে ভাবছেন যে, আমাদের একজন শেখ হাসিনা। যেরকম ভাবে একটি ডায়নামো দিয়ে আমরা আলো জ্বালাতে পারি কিন্তু ডায়নামোতে ফুয়েল দিতে হয়। তাই এখন নেত্রীকে তার কাজ করার জন্য যে মনের জোর এবং তিনি যাতে উৎফুল্ল ভাবে আরো কাজ করে যেতে পারেন তার জন্য যে ফুয়েল এর প্রয়োজন সেই ফুয়েল তো দিতে হবে আমাদেরকে, জনগণকে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদেরকে। জনগণ তাদের কাজ ঠিকই করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, এমনকি ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে অনেকেই সেই ভাবে করেনা। আমি একটি জায়গায় আমি দায়িত্ব পালন করি, যেখানে প্রাক্তন ছাত্রলীগারদের নিয়ে আমার কাজ করতে হয়। আমার খুব অবাক লাগে যে, এদের অনেকের ভিতরই ন্যূনতম নৈতিক বোধ নাই। তারা একসময় ছাত্রলীগ করেছেন। সুতরাং তাদের জন্য সব প্রাপ্য। আমার কাছে ওই সুবিধা পায় না দেখে যে এসএমএস এবং লিখিত আকারে জানায় সেগুলো আমি ঠিক করেছি যে কমিটির কাছে প্রিন্ট আউট করে তাদেরকে দিয়ে কমিটি করে দেবো যেগুলোকে ঠিক করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মোদাচ্ছের ভাই বলেন এবং তাকে আমি মৃত্যু পর্যন্ত শ্রদ্ধা করব এবং শেষ নিঃশ্বাসও আল্লাহর নামের সাথে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের কথা, বিশেষ করে নেত্রী শেখ হাসিনার নাম বলে যাব। এটার কোন পরিবর্তন হবে না। এর জন্য আমাকে আলাদা কোন মূল্যায়ন করা লাগবে না এবং আল্লাহর মর্জি মূল্যায়ন করা হয়ও না। তাতে আমার কিছু আসে যায় না। কারণ আমরা যখন মুখে বলি শেখ হাসিনা এগিয়ে চলো আমরা আছি তোমার পিছে, তখন আসলে মিন করে যে তুমি এগিয়ে চলো, বিপদ দেখলে আমরা পিছন থেকে চলে যেতে পারবো। আমি সেটা বলিনা। আমি বলি, নেত্রী তুমি এগিয়ে চলো, আমি আছি তোমার সাথে। অর্থাৎ বিপদ আপদে সাথেই থাকব। আমার ৬০ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে আমি তাই করেছি। কিন্তু উনি কি দিয়েছেন না দিয়েছেন সেটা আমি বলছিনা। কারণ একটাই, বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত স্নেহ করতেন, যেটা আমার বিরাট সৌভাগ্য। তখন কাউকে পাঠায় নাই আমাকে নিজ খরচে এফআরসিএস করতে বঙ্গবন্ধুই পাঠিয়েছিলেন এবং করে এসেছি। সেটা একটা এক্সেপশন এবং লেখা ছিল, ইহাকে কোন উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এ জীবনে আর কি লাগে! বঙ্গবন্ধু আরো অনেক স্নেহ করেছেন সেটা আলাদা ইতিহাস। নেত্রী সবসময় মোদাচ্ছের ভাই বলেন, আলাদাভাবে এর চেয়ে বড় মূল্যায়ন আর কিভাবে করবে সেটা একটা প্রশ্ন?

তবে স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষ হিসাবে অনেক কিছুই মানুষের ইচ্ছা থাকে, সবটা যে হয় তা তো না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কি পেলাম সেই হিসাব করে যখন মুখের কথা বলি যে, না নেত্রীর ব্যাপারে তো কোন দেনা-পাওনার ব্যাপার নাই। দেনা-পাওনার ব্যাপারই যদি না থাকে তাহলে মূল্যায়ন হলো না ওইটা আশা করলাম তাহলে পরিবর্তন হবে কেন। সেই পরিবর্তন আমার জীবনে হবে না। আমি একটি জিনিস গর্ব করে বলতে পারি, তার পরিবারের বাইরে জীবিত আছে আমি ছাড়া এরকম ভাবে তার সর্ব অবস্থায় সাথে আছি এরকম আরেকটি উদাহরণ সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আমার কাছে মনে হয়না। অনেকে আছেন তারা অভিমান করেই হোক বা যেকোনো কারণে হোক হয়তো দূরে রয়ে গেছেন। যারা হয়তো আমার চেয়েও অনেক বেশি করেছেন। ব্যবসায়ীরা ব্যবসার খাতিরে যখনই যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তাদের সাথেই তারা সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করে। এই সরকারের আমলেও টেলিভিশন থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা মোটামুটি একটা আগে ছিল একসময় এনজিওরা। এনজিওরা এখন বুদ্ধিজীবী সেজে তারা এখন ভালো ভালো এনজিও যারা জনগণের জন্য সত্যি সত্যি করে তাদেরকে বাদ দিয়ে বাকি যারা তারা ওই ওয়ান-ইলেভেন যারা করেছে তাদের সাথে যোগ দিয়ে তারা আরেকটি ওয়ান-ইলেভেন অন্যভাবে করবে সেই প্রচেষ্টা তারা কন্টিনিউয়াসলি করে যাচ্ছে। আমি যখন জানি তখন আমাদের সরকার নিশ্চয়ই জানে যে, নেত্রীর বিরোধীরা ভারত থেকে শুরু করে প্রতিটি বিদেশি শক্তির সাথে তাদের খুব ভালো যোগাযোগ সম্প্রতিকালে স্থাপিত হয়েছে। আমি জেনে বলছি। তো আমি যদি জানতে পারি উনারা জানবেন না এটা তো হতে পারেনা, নিশ্চয়ই জানবেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটা জেনেই করছেন। যেমন- এই মুহূর্তে বাংলাদেশে উনি ফেরার আগ পর্যন্ত কোন আন্দোলন হবেও না, আওয়ামী লীগের কেউ বড় বড় কথাও বলবে না। কেন বলবে না? কারণ, নেত্রীই যদি না শুনলো তাহলে বিরোধী দল ভাবে আন্দোলন করে লাভ হলো কি। তারাও নেত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে যে নেত্রী আন্দোলন আন্দোলন ভাব করবে, নেত্রী শুনবে, জানবে, তাদের একটু দাম বাড়বে। অন্তত চিকিৎসার একটা খরচ দিবে। সুতরাং যতদিন নেত্রী দেশে না থাকবেন ততদিন আন্দোলনের কোন সম্ভাবনা নেই তবে হ্যাঁ যারা ষড়যন্ত্র করবে তাদের কথা আলাদা। এবার তারা স্তর অনুযায়ী ষড়যন্ত্র করছে, এমনকি তারা ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করছে এবং তাদেরকে দুই নৌকায় পা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। তবে সবচেয়ে শংকার বিষয় হলো আমলাদের নিয়ে, আমলাদের মাঝেও সিন্ডিকেটের মত হয়ে গেছে। যারা সেই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত নয় তারা কিন্তু উপরে উঠতে পারছে না কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তো সবার পৌঁছানো সম্ভব হয় না। তবে আমি বিশ্বাস করি সত্যিকারের, সঠিক অবস্থা জানার যে পরিবেশ তা জানার জন্য হলেও তাকে তার বিশ্বাসী যেকোনো বেশ কয়েকজন আমলার উপর তাকে কিছুটা হলেও ভরসা করতে ইবে, না হলে ইন্টারমেশন আরও গ্যাপ হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে তারা অনেকেই উনাকে সত্যি কথাও বলছে না এবং উনার পক্ষে কাজ করছে এ রকম বাস্তবভিত্তিক প্রমাণ নেই। উপরে দেখানো যায়, কিন্তু সত্যিকারে যে টুকু কাজ হচ্ছে এটা রাজনীতিবিদদের দ্বারাই হচ্ছে। অনেক আমলারা একদম বিশ্বাসযোগ্য ভাবে ছাত্রলীগ থেকে এসেছে আগের রাজনৈতিক, তারা কিন্তু জান-প্রাণ দিয়ে নেত্রীর জন্য কাজ করছে যেই পজিশনেই থাকুক না কেনো তাদের অনেকেরই সামান্য কোন পরিবর্তন নেই। কিন্তু অল্প কয়েকজন যারা নেত্রীকে নেত্রীর কাছের লোক সেজে কাজ করছে তাদের বিষয়ে আমার গভীর সন্দেহ হয় যে তারাই কি এই যে যারা ব্যবসায়ী কমিউনিটি, সাংবাদিক কমিউনিটি থেকে শুরু করে প্রফেশনাল বিভিন্ন কমিউনিটির সাথে কিন্তু নেত্রীর ধীরে ধীরে গ্যাপ তৈরি হচ্ছে। এইটা বুঝার জন্য কোন পিএইচডি করার দরকার নেই। যেহেতু দুই বছর পরেই নির্বাচন এবং নেত্রীকে যারা কিছুতেই সহ্য করতে  পারে না তারা যেহেতু খুবই সচেতনভাবে সাথে রোড ম্যাপ করে কাজ করছে এই কারণের জন্য যারা নেত্রীর সত্যিকারে মঙ্গল কামনা করেন তাদেরও  রোডঃ ম্যাপ করে এবং বিভিন্ন ভাবে কাজ করতে হবে। একটি গ্রুপের দেখতে হবে যে এই যে প্রফেশনাল বিভিন্ন গ্রুপ। যেমন- ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে গণ্ডগোল হলো তার জন্য বন্ধ করে দিতে হলো আমাদের সরকার পুলিশ সবকিছু একটি মেডিকেল কলেজ আমরা কন্ট্রোল করতে পারলাম না। লোক তো আর চোখ বন্ধ করে থাকে না। এতে কি  আমাদের পজিশন খারাপ হয় নাই? এটা বুঝতে কি বিরাট বিজ্ঞ হওয়া লাগে? তার মানে হচ্ছে যে ইনহেরেন্ট ওয়েতে আমরা এখানে ফেইল করছি। যেমন এই যে মন্দিরে অ্যাটাক হলো এই সময় এবং তার আগে থেকে বারবার হোম মিনিস্ট্রি থেকে বলা হলো পূজা নির্বিঘ্নে করার জন্য অথচ যেতে যদি ৫ মিনিটও লেইট হয় সেই দুর্বলতা তো আমাদের, সরকারের। এই যে দুর্বলতাটা হলো এবং আমাদের কর্মীরা যে দেরি করলো এই দুর্বলতাটা হতেই পারে। হঠাত করে এস্টিমেট করা যায় না। এটা সবকিছু তো হয়ে যাওয়ার পরে যত বুদ্ধি বাড়ে হওয়ার আগে আমাদের নিজেদের বিষয়েও এত চিন্তা করা যায় না ফ্যাক্ট। কিন্তু ভবিষ্যতে যাতে আর কিছু না হয় তার জন্য আমরা কতটুকু প্রস্তুত হচ্ছি সে বিষয়েও কিন্তু আমাদের সজাগ থাকতে হবে। ব্যবসায়ী কমিউনিটির সাথে যারা রাজনীতিবিদ আছে আওয়ামী লীগের তাদের কি সুবিধা অসুবিধা আছে তাদেরকে কি করে নেত্রীর থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সে বিষয়গুলো তাদের দেখার দায়িত্ব। এবং দেখে যেভাবেই হউক যেহেতু নেত্রী এত কিছু করেছেন তার কারণে ফলটা আমাদের ঘরে আসার দরকার।

আমরা এই কমিনিটির সাথে কেনো যেনো ঠিক মত সম্পর্ক ধরে রাখতে পারছি না। দুই বছর আগেও যাদের সাথে আমার দেখা হত তাদের সাথে এখনো যখন দেখা হয় তখন তাদের আচরণে আমি কিছু পরিবর্তন দেখতে পাই। তারা আমার সাথে তেমন কিছু না বললেও তাদের আচরণ দেখে আমি বুঝতে পারি যে তারা আগে যেভাবে আওয়ামী লীগকে শতভাগ সমর্থন করতো কিন্তু এখন তাতে নড়চড় দেখা দিয়েছে এবং এটা আমি যেনে বলছি। এসব কাজগুলো দলীয় লোকদের দেখতে হবে এবং নেত্রীর সাথে আলাপ করে করতে হবে। এখন এসব কাজগুলো করতেছে আমলারা আর আমলারা যা করতেছে তাতে পরবর্তী নির্বাচন কঠিন হবে। যদি প্রেসিডেন্টশীয়াল নির্বাচন হত তবে কেউ ক্যান্ডিডেটই দাড়াতে চাইতো না এটা পার্লামেন্টারি নির্বাচন, এখানে অনেক ফ্যাক্টর যোগ হবে। যারা নেত্রীর বিরুদ্ধে তাদের কিন্তু দেশ-বিদেশ বিভিন্ন জায়গা থেকে কত অর্থ যে জোগাড় হচ্ছে তার কোন হিসাব করা যায় না। তবে যতই বলা হক না কেনো এই বড় বড় কথা, ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেয়েছে আরো অনেকে পেয়েছে অনেক রাজনীতিবিদরাও পেয়েছে এটা একটা ফ্যাক্ট কিন্তু বাস্তবতা হল নির্বাচনের সময় এই টাকা নেত্রীর হাতে আসবে না। কিন্তু বিরোধীদের টাকা অর্গানাইজ, এখানে নেত্রীকে প্রতিটা সিদ্ধান্ত একা নিতে হয় অনেক কিছু দেখতে হয় এবং আল্লাহর অশেষ রহমত তিনি নির্ভুলভাবে দেখতে পারছেন। কিন্তু এখন থেকে আমরা যদি তাকে তার কাজটি সহজ করে না দেই তাহলে সোজা কাজটি বিনা কারণে কঠিন করা হবে কারণ এখনো মেজরিটি জনগণ আওয়ামী লীগেরই পক্ষে এমনকি ব্যবসায়ীরাও পক্ষে। কিন্তু কিছু আমলারা ধীরে ধীরে এদেরকে নেত্রীর সমর্থন থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা করছেন এবং এই প্রচেষ্টা যদি তারা দুই বছর চালাতে পারে তবে নেত্রীর জন্য নির্বাচন কঠিন হবে। তাই এখন থেকে আওয়ামী লীগকে অবশ্যই সচেষ্ট হতে হবে এবং এই সচেষ্ট হওয়ার জন্য প্রথম কাজটিই হক ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করা দিয়ে। এরপর প্রফেশনাল বডি এবং একের পর এক কাজ করে গেলেই আগামী নির্বাচন খুব সহজ হবে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশই দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ


Thumbnail

দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। আজ এ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ নিয়ে লিখেছেন দেশবরেণ্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী

বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি অনন্য, অসাধারণ। আজকের দিনটিকে আমি মনে করি, প্রান্তিক মানুষের বিজয়ের দিন। জনগণের ক্ষমতায়নের দিন। আজ কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

এপ্রিল মাস বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৭ এপ্রিল জাতির পিতার নির্দেশে এবং তার নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন করে মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান জাতীয় চার নেতা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি ক্ষুধামুক্ত সাম্যের বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আর সেজন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার জায়গা হলো অসাম্প্রদায়িক, সাম্য এবং বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ। আর এ এপ্রিল মাসেই প্রথম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল। এপ্রিল মাস বাংলাদেশের জন্য আরেকটি চেতনার পতাকা বহন করে চলেছে। তা হলো, এই এপ্রিলেই দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গিমাডাঙ্গায় কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এবং সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত এবং স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক তার অভিযাত্রা শুরু করেছিল। আমি এ কারণেই মনে করি যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অভিযাত্রা বা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভিযাত্রা যেমন এপ্রিল মাসে, তেমনি প্রান্তিক মানুষের অধিকার এবং জনগণের ক্ষমতায়নের পূর্ণতার বৃত্ত পূরণ এ এপ্রিল মাসেই হয়েছিল। এ কারণেই আমি আজকের দিনটিকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ মনে করি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল দর্শন হলো জনগণের ক্ষমতায়ন। আর এ দর্শনটি তিনি আত্মস্থ করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন চেয়েছিলেন জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে। জনগণের সাম্যতা এবং ন্যায্যতার জন্য তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। আর সে কারণে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে তিনি একটি শান্তি, প্রগতিশীল এবং উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। আর এ কারণেই তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা-সংক্রান্ত অংশে স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জাতির পিতার এ স্বপ্নযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ওইদিন শুধু জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল বাঙালির স্বপ্ন, বাঙালির অগ্রযাত্রা এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্ধকার যাত্রা শুরু হয়েছিল ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই। আর এ অন্ধকার যাত্রাকে থামাতে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশে একটি সত্যিকারের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।

২০২৩ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি অর্জন আসে। জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয় ‘কমিউনিটি ক্লিনিক: দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। এটি বাংলাদেশের জন্য গৌরবের।

কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন শেখ হাসিনার একটি উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, তেমনি আজকের যে বাংলাদেশ ক্ষুধা, দরিদ্রমুক্ত, স্বনির্ভর, উন্নয়নের রোলমডেল বাংলাদেশ, সেটিও দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ। আজকে বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব আজ কল্পনাও করা যায় না। শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের এ অভিযাত্রা কেউ স্বপ্নেও ভাবেননি। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নগুলোকে হৃদয়ে ধারণ করেননি, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তিনি একজন দক্ষ নির্মাতা বটে। আর এ কারণে তিনি বাংলাদেশকে এমন এক উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, যেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তার অধিকারগুলো পাচ্ছে, জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটছে। জনগণের ক্ষমতায়ন এবং প্রান্তিক মানুষের অধিকার প্রাপ্তির এক অসাধারণ মডেল হলো বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে অনেক নীরব বিপ্লব বাংলাদেশে ঘটেছে, আমি সেদিকে সামান্য একটু আলোকপাত করতে চাই।

প্রথমত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে এই প্রজাতন্ত্রের মালিক যে জনগণ তা স্বীকৃত হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল এমন একটি মডেল, যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। জনগণ জমি দিচ্ছে আর সরকার ভবন নির্মাণ করছে। জনগণ দেখছে যে, তারা সেবা পাচ্ছে কি না। জনগণের কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। কমিউনিটি গ্রুপগুলো জনগণের ক্ষমতায়নের ছোট ছোট বাতিঘর। দ্বিতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত এ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দর্শন তৈরি করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধই যে একটি সুস্থ জাতি গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত, সেটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। আর এ কারণেই গত বছর ১৭ মে জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত হয়েছে। শুধু কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ নয়, বাংলাদেশের বদলে যাওয়া, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের অভাবনীয় এ উন্নতির মূল উদ্যোক্তা দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজকের যে বাংলাদেশ তা হলো ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’। আমরা যদি বাংলাদেশর উন্নয়ন কাঠামো লক্ষ্য করি, তাহলে সবচেয়ে যেটি বিস্ময়কর ব্যাপার তা হলো, বাংলাদেশে সমন্বিত উন্নয়ন বাস্তবতা চলছে। একদিকে যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের কথা বলছি, দেখছি; তেমনি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বেড়েছে। বাংলাদেশ একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। কল্যাণকামী রাষ্ট্রের অন্যতম শর্ত হলো, মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিকে যেমন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য অধিকার এবং তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করছেন, অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের আবাস্থলের নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে।

সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে একটি সুবিন্যস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছেন। যে উন্নয়ন পরিকল্পনাই কেউই বাদ যাবেন না। আর বাদ না যাওয়ার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূল উদ্যোক্তা হলেন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি এমন একটি উন্নয়ন মডেল বাংলাদেশে তৈরি করেছেন, যে উন্নয়ন মডেলের মাধ্যমে সব মানুষ উন্নয়নের সুবিধা পাবে এবং বৈষম্য দূর হবে। আমি মনে করি, কমিউনিটি ক্লিনিক শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশ তৈরি করতে চান তার একটি প্রতিরূপ। সারা বাংলাদেশে সাম্য, ন্যায্যতা এবং সবার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীরব বিপ্লব চলছে। আর সেই নীরব বিপ্লবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমরা জানি যে, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন যে, তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবেন। স্মার্ট বাংলাদেশ মানে কী? স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হলো এমন একটি আধুনিক, প্রগতিশীল এবং উন্নত বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশের সব নাগরিক সমান অধিকার পাবে। সব নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। যেটি বাংলাদেশের সব মানুষকে সুখী এবং সমৃদ্ধ করবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি প্রতিটি গ্রামকে যদি স্মার্ট গ্রাম করতে পারি, আধুনিক করতে পারি, সুখী করতে পারি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে যদি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে সারা বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মিত হবে।

কাজেই কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন বাংলাদেশকে স্মার্ট করতে পারে তেমনি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে আরও উন্নত করা এবং স্বপ্নের সোনার বাংলার চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সবচেয়ে বড় অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর সে কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমি মনে করি, ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ আমরা যদি হৃদয়ে ধারণ করি, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা কী চান, তিনি কী ভাবেন, মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি কী কী কাজ করতে চান, সেটি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি এবং তার নীতি এবং চিন্তার প্রতি আমরা যদি সৎ থাকি, আদর্শবাদ থাকি, তাহলে বাংলাদেশের বদলে যাওয়া রূপ আরও বিস্তৃত হবে, বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি রোলমডেল রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হবে। আর এ কারণেই কমিউনিটি ক্লিনিক দিবসকে আমরা ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছি।


দ্য শেখ হাসিনা   ইনিশিয়েটিভ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকেই প্রস্তুতি প্রয়োজন


Thumbnail

১৯৯৮ সাল। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকুরী করি। স্থানীয় চাইনিজ রেস্তোরাতে একটি সেমিনার হবে। ঢাকা থেকে ওষুধ কোম্পানির এক কর্মকর্তা এসেছেন। তিনি একই মেডিকেলে আমার এক বছরের সিনিয়র। বেশ খাতিরের বড় ভাই। তিনি তাঁর ব্যাগ থেকে একটি যন্ত্র বের করলেন। যন্ত্রটি অন করার পর দেখি সেটি একটি কম্পিউটার। কোন তার ছাড়া কম্পিউটার।  জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি জিনিস এটা, নাম কি ? বললেন, ল্যাপটপ। জীবনে এই প্রথম আমার ল্যাপটপ দেখা। তবে নাম শুনেছি এর তিন বছর আগে, ১৯৯৫ সালে। যখন নাম শুনেছি, তখন বুঝিনি জিনিসটা কি ?

১৯৯৫ সালে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেই, ১৭তম বিসিএস। জীবনে একবারই এই পরীক্ষা দেই। উত্তীর্ণ হই। সাড়ে আট বছর চাকুরী করেছি, ছেড়েও দিয়েছি । সে অন্য প্রসঙ্গ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল, ল্যাপটপ কি ? অপশন ছিল- ছোট কুকুর, পর্বতারোহন সামগ্রী, বাদ্যযন্ত্র ও ছোট কম্পিউটার। উত্তর কি দিয়েছিলাম তা মনে নেই। তবে এটুকু মনে আছে যে, আমি উত্তরের জায়গায় ছোট কম্পিউটারে টিক দেইনি। জীবনে যে জিনিসের নামই শুনিনি তাতে টিক দেই কেমনে ? সেকালের কোন গাইড বইতে এ ধরণের কোন প্রশ্ন বা তার উত্তর নেই বলে শুনেছি। পরীক্ষার্থীদের প্রায় ৯৯ ভাগ সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। গাইড পড়ে এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব নয়। তবে যারা আধুনিক প্রযুক্তি বা অনাগত প্রযুক্তি সম্পর্কে ধ্যান ধারণা রাখে তারা সঠিক উত্তর দিয়েছিল।

ঘটনাটি মাথায় এলো সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও দেখে। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী হুড়োহুড়ি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ঢুকছে। শুনলাম তারা আসন্ন বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিবে। ভিডিওটি আবার দেখার জন্য গুগলে অনুসন্ধান করলাম- 'ঢাবি লাইব্রেরিতে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়'। সেখানে দেখি শত শত খবর। প্রতি বছর নাকি এমনটি হয়। লাইব্রেরিতে ঢুকতে হুড়োহুড়ি। পরীক্ষার আগে নাকি সেখানে এমন যুদ্ধ চলে। বিসিএস কি দু এক মাস বা দু এক বছরের প্রস্তুতির ব্যাপার ? একবার পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে তা মনে হয়নি। আমার মতে, এর জন্য সমগ্র শিক্ষা জীবন ধরে প্রস্তুতি প্রয়োজন। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। আমার সাথে অনেকেই একমত নাও হতে পারেন।

ছোট কাল থেকে নিয়মিত অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদপত্র পড়া প্রয়োজন। জগৎ সংসার, দেশ বিদেশ, বিজ্ঞান, সাহিত্য, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, খেলাধুলা বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা দরকার। কোন একটি দেশি বা বিশ্ব ইভেন্ট চলছে। সেটি চলাকালে দৈনন্দিন খোঁজ খবর রাখার পাশাপাশি ওই ইভেন্টের অতীত জেনে নিলেন। কবে থেকে ইভেন্টটি চলছে, কোথায় সেটি শুরু হয়েছিল, সেটি জেনে নিলেন। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়লে বা টিভি সংবাদ দেখলে সেগুলি আপনা আপনি জেনে যাবেন।

তবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য একটু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। আমি নিয়েছি এক সপ্তাহের। তাও ইন্টার্নি চলাকালে ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে। আপনি এর জন্য সর্বোচ্চ এক মাস বরাদ্ধ রাখতে পারেন। বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস অংশে কিছু সাল মনের মধ্যে গেঁথে নেয়ার জন্য গাইড বইটি একটু চোখ বুলাতে পারেন। যে সব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো একটু দেখতে পারেন। অংকের ফর্মুলা গুলো একটু ঝালাই করে নিতে পারেন। সমসাময়িক বিশ্ব বিষয়ে অনেকের দুর্বলতা থাকে। সংবাদপত্রের এ অংশটুকু প্রায়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ অধ্যায়টিও দেখে নিতে পারেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে যদি এর চেয়েও বেশি সময় প্রয়োজন হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার দুর্বলতা অনেক। বিসিএস পরীক্ষার জন্য ছোট বেলা থেকে আপনার প্রস্তুতি নেই। সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

মতিউর রহমানই প্রথম আলো বিক্রির প্রধান বাঁধা?


Thumbnail

দেশের শীর্ষ স্থানীয় গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ বিক্রির বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’। বাংলাদেশের বিভিন্নি গ্রুপ কোম্পানি এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে বলেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক মতিউর রহমানের এতে শেয়ার রয়েছে। তিনিও প্রতিষ্ঠানটির মালিক। মালিকানা থাকলেও এখন মতিউর রহমান তার সম্পাদক পদটা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য তিনি কর্ণফুলী গ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করার জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন বাস্তব কারণে কর্ণফুলীগ্রুপের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির বিষয়টিতে রাজি হয়নি বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

শুধু কর্ণফুলী গ্রুপই নয়, প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করতে স্কয়ার গ্রুপের সাথেও বেশ অগ্রসর হয়েছিলেন মতিউর রহমান। এর মধ্যে বসুন্ধারাসহ আরও কয়েকটি গ্রুপ এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমার জানা মতে সর্বশেষ এস আলম গ্রুপ এই প্রতিষ্ঠানটি কেনার জন্য বেশ অগ্রসর হয়েছে এবং তারাই এখন সবচেয়ে অগ্রগামী। কিন্তু এস আলম গ্রুপ কেনার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। কারণ উনি দেখছেন যে, একমাত্র কর্ণফুলী ছাড়া অন্য যে কোন গ্রুপে গেলে তার সম্পাদক পদের নিশ্চয়তা নেই।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, যারাই ‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করুক না কেন, তারা মতিউর রহমানকে প্রথম দিকে রাখলেও পরবর্তীতে তারা পরিবর্তন করবে। যদি প্রথম আলোতে কেউ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন, আমার ধারণা আনিসুল হক আসতে পারেন। কারণ আনিসুল হক সবার কাছে যেমন সম্মানিত তেমনি জ্ঞানী ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

‘প্রথম আলো’ প্রতিষ্ঠানটি যদি এস আলম গ্রুপ কিনে নেয় তাহলে প্রধান বাঁধা হবে মতিউর রহমান। কিন্তু তার বাঁধা টিকবে না। কারণ কোন প্রতিষ্ঠানের যদি ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব দেখা দেয় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানটি কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। ‘প্রথম আলো’ নিজেদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের ফলে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। সাধারণত যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে তারা দেখবে। সরাসরি না হলেও প্রথম আলোর মতিউর রহমান এই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছেন। যদিও মতিউর রহমান বিভিন্নিভাবে বিষয়টি প্রকাশ করে বুঝাতে চেষ্টা করছেন যে, এতে উনার কোন আগ্রহ নেই। 

তবে এর আগে থেকেই কিছু গণমাধ্যমে এসেছিল যে, মতিউর রহমন ও ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম এই দ্বন্দ্বে জড়িত রয়েছেন। যদিও বিষয়টি তাদের মধ্যকার বিষয়। কিন্তু এখন প্রথম আলো বিক্রিতে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মতিউর রহমান। অচিরেই এই বাঁধা অতিক্রম করে ‘প্রথম আলো’ বিক্রি হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি কিনবে এস আলম। কারণ এস আলম একজন বিচক্ষণ ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসাতেই যুক্ত হচ্ছেন ব্যর্থ হচ্ছেন না। বরং সফল হচ্ছেন।

‘প্রথম আলোর’ কেনার জন্য দেশে যেসব কর্পোরেট হাউজগুলো আছে তাদের অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। তবে এক একজনের আগ্রহ একেক কারণে। কেউ চান প্রথম আলোর জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞ জনবলের কারণে, আবার কিছু কর্পোরেট হাউজের ইচ্ছে হলো ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে আনা। এসব বিভিন্ন কারণে আগ্রহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে আমার বিশ্বাস প্রথম আলো বিক্রিতে যে প্রধান বাঁধা মতিউর রহমান। তার বাঁধা টিকবে না। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি একটা কর্পোরেট হাউজের হাতেই যাবে। আমার ধারণা মতে, এস আলম গ্রুপই প্রথম আলোকে কিনতে সক্ষম হবে। আমরা হয়ত কয়েক মাসের মধ্যেই দেখব যে, প্রথম আলোর নতুন মালিক হিসেবে আরেকটি কর্পোরেট হাউজ এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম আলোতে বর্তমানে যারা অভিজ্ঞ সাংবাদিক আছেন যারা শিক্ষিত তাদেরকে ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞ লোকদের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। 

আমার ধারণা, এ পর্যায়ে প্রথম আলো বিক্রি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। এমনকি মতিউর রহমানের চেষ্টাও সফল হবে না। তবে আমার সবসময়ের আকাঙ্খা, সংবাদপত্রের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরি যেন অবশ্যই নিশ্চয়তা থাকে। কারণ এরা দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নিজেদেরকে একটা পর্যায়ে এনেছেন আর এদের চাকরি অবশ্যই থাকতে হবে এবং তাদের যে মেধা, সেই মেধা থেকে জাতি যেন বঞ্চিত না হয়।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

এক বছরের রাষ্ট্রপতির যত অর্জন


Thumbnail

আজ ২৪ এপ্রিল। গত বছর এই দিনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সে হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আজ এক বছর পূর্ণ হল। অঙ্কের হিসেবে এক বছর সময় অনেক কম মনে হলেও এই সময় তিনি সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যে সময় দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সময়টা ছিল নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে ইত্যাদি নানা রকম শঙ্কা ছিল অনেকের মধ্যে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতির প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন বিষয়টি যদিও নির্বাচন কমিশনের কাজ। কমিশন এটা আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এর পিছনে আসল কাজটি করেছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা এবং সেটাকে দেশে-বিদেশি সবার কাছে যোগ্য করে তোলার আসল কাজটি করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। এই কাজটি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত খুব ভালো ভাবে এবং সফল ভাবে করতে সক্ষম হয়েছেন। গত এক বছরে এটিই এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সেরা অর্জন বা সেরা সাফল্য বলে আমি মনে করি। রাষ্ট্রপতি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভাবে না করতে পারতেন তাহলে দেশের গণতন্ত্র এক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সেটি ভালো ভাবে সামাল দিতে পেরেছেন। আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে, গণতন্ত্রের জয় হয়েছে।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ কথা না বললেই নয় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আমি ব্যক্তিগত ভাবে গর্বিত। কারণ দেশের এক নম্বর নাগরিক বা রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্বেও তিনি যেভাবে সবার সাথে মিশেন সেটা অতুলনীয়। একজন মানুষ প্রকৃত অর্থেই মাটির মানুষ না হলে তার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। এখনও রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের গায়ে গ্রামের সেই ধুলোবালির গন্ধ পাওয়া যায়। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার যে ধ্যান ধারণা থাকার কথা সেটাও তার মধ্যে অত্যন্ত প্রখর এবং সেই চেতনা তিনি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন বলেই আমার কাছে দৃশ্যমান হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তিগত ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা এ রকম একজন রাষ্ট্রপতিকে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়ন শুরুতে সবাইকে অবাক করলেও সেটা ছিল আমাদের অগত্যা। কারণ অনেকে তার সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানতেন না। অথচ তিনি একজন স্থানীয় নেতা হয়েও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। এমনকি পাবনার মত একটি জেলা শহরে থেকে তিনি এটি করেছেন। আমরা সেটার মাহাত্ম্য বুঝতে না পারলেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকরী ষড়যন্ত্রকারীরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন আর সেজন্য রাষ্ট্রপতিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। আমি প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফের কাছে শুনেছি যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং তার (প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন ইউসুফ হাত পা খাটের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এভাবে অনেক দিন তিনি জেল খেটেছেন। এরপর তিনি জেলে থেকেই আইন পাশ করেন। তিনি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি নেন এবং জেলা জজ পর্যন্ত হয়ে তিনি তার চাকরির জীবন শেষ করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হন। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে এবং আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি হলেও এখনও তিনি আগের মতই সহজ-সরল রয়ে গেছেন। তার এই সরলতা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছে।

গত এক বছরে রাষ্ট্রপতির আরেকটি উল্লেখ্য করার মত সাফল্য হল যে, তিনি এমন ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বা এখন পর্যন্ত তার কাজকর্ম কিংবা সিদ্ধান্তগুলো দেখে বুঝার উপায় নেই যে তিনি আগে কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার নিরপেক্ষতা ধরে রাখতে পেরেছেন। রাষ্ট্রের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সহ সর্বশেষ তিনজন রাষ্ট্রপতি গণ মানুষের রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ দিতে পেরেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, এরপর অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ এবং মো. সাহাবুদ্দিন তারা প্রত্যেকই অতি সাধারণ জীবন যাপন করে আপামর জনগণের মন জয় করে নিতে পেরেছেন। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে সাধারণ জীবন যাপন করেছেন রাষ্ট্রপতি হবার পরও একই ভাবে থেকেছেন।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকায় এমন রাষ্ট্রপতিও আছেন যারা রাষ্ট্রপতি হবার আগে এক রকম ছিলেন পরে আবার অন্যরকম ভাবে আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি হবার আগে যে আদর্শ ধারণ করতেন রাষ্ট্রপতির চেয়ার বসলে তাদের সেই আদর্শের বিচ্যুক্তি ঘটে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই তিনজন ব্যক্তি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা আগে যা ছিলেন রাষ্ট্রপতি হবার পর একই রকম থেকেছেন, আদর্শচ্যুত হননি। মো. সাহাবুদ্দিন যে আদর্শ ধারণ করেন সেই আদর্শে তিনি তার কাজকর্ম সফলতা সাথে করে যাচ্ছেন। আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।


রাষ্ট্রপতি   মো. সাহাবুদ্দিন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড থট

শেখ হাসিনা ছাড়া কেউই অপরিহার্য নয়


Thumbnail

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন শেষ হয়েছে গতকাল। কিন্তু অবাক করার বিষয় যে, একমাত্র পলকের শ্যালক ছাড়া আর কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। অথচ আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা আছে যে, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনরা কেউ নির্বাচন করতে পারবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনা ইতোমধ্যে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী, এমপিদের পরিবারের সদস্য বা নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তাদেরকে প্রত্যাহারের জন্য তিনি নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি শেষ পর্যন্ত কেউই তা মানেননি। এতে করে সুস্পষ্ট ভাবে তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনাকে অমান্য করেছে। যা দলীয় সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন এবং গুরুতর অপরাধও বলে আমি মনে করি।

আওয়ামী লীগ যদি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সেটি ভিন্ন কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি টিকে থাকতে চায় তাহলে দলকে এবার কঠোর সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। যারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি তারা ইনিয়ে বিনিয়ে এখন নানান অজুহাত তৈরি করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের উচিত হবে এ সমস্ত অজুহাত না শোনা। কারণ যিনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কাজ করেছেন এটা সুস্পষ্ট। সুতরাং এখানে দল উচিত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দল করলে তাকে দলীয় শৃঙ্খলা মানতেই হবে। অনথায় দল থেকে বাদ দিতে হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেন তারা কখনই দলের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এদের মত আট-দশ দলে না থাকলে আওয়ামী লীগের কিছু যায়-আসে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ সভাপতি দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক ছাড়া আর কেউই আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। শেখ হাসিনাই কেবল মাত্র আওয়ামী লীগ এবং দেশের স্বার্থে অপরিহার্য। সুতরাং, এখন আমরা দেখতে চাই শৃঙ্খলা পরিপন্থীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

যারা আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্দেশনা অমান্য করেছেন তিনি দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। দরকার হলে দল থেকে তাদেরকে বাদ দিতে হবে কিংবা বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। শুধু বহিষ্কারই নয়, তাদের প্রাথমিক সদস্য পদও বাতিল করতে হবে। এতে করে কারও যদি এমপিত্ব চলে যায় তো যাবে। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে দলের স্বার্থে। তাদের আসনে যে কাউকে নির্বাচন করে জিতে আসতে পারবেন। কোন মন্ত্রী এমপি আওয়ামী লীগের জন্য অপরিহার্য নয়। যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন উপজেলা গুলো প্রার্থী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দল কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার জন্য গোটা দেশের মানুষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দিকে তাকিয়ে আছে।

অতীতে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা আওয়ামী লীগের প্রতিটি তৃণমূল নেতাকর্মীর। এখন আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় আমরা সেটার অপেক্ষা আছি।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন