শীত একদম জাঁকিয়ে
বসেছে। শৈত্যপ্রবাহে সারাদেশের মানুষ অনেকটাই বিপর্যস্ত। পৌষের শেষে এসে ঘন কুয়াশা
আর হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষ। তাপমাত্রা সামান্য
বাড়লেও হাড় কাঁপানো শীতে যেন কাবু হয়ে পড়েছে সব মানুষ। রাতভর হিম বাতাস আর ঘন
কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চারদিক। টিপটিপ বৃষ্টির মতো ঝরা কুয়াশা থাকছে পুরোটা রাত। সকাল
সকাল ভেজা রাস্তা দেখেই সারা রাতের কুয়াশার আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছে।
সারাদিন দেখা
মিলছে না সূর্যের মুখ। শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করায় জেলার হাসপাতালগুলোতে দিন দিন
শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট রোগীর সংখ্যা বেশি। শীতে
সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গত কয়েকদিন ধরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে
প্রতিদিন শীতজনিত শতাধিক রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। বহির্বিভাগ থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। যারা
বেশি অসুস্থ তারা কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
শুক্রবার (১২
জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করে
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস, যা বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন ছিল ১২ দশমিক
৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার এ পরিস্থিতিতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে
জানিয়েছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।
এদিকে
বৃহস্পতিবার দিনের তাপমাত্রা (সর্বোচ্চ) ১৫ দশমিক ৬ থেকে বেড়ে রেকর্ড করা হয়।
কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায় পুরো এলাকা। রাতভর বৃষ্টির মতো ঘন
কুয়াশা ঝরেছে। সাথে উত্তরের হিম বাতাসের কারণে তীব্র শীত অনুভূত হয়েছে। তবে গত তিন
ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। এতে হিম বাতাসে খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
শীতের কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ রিকশা-ভ্যানে উঠতে চান না। কনকনে শীতে দৈনন্দিন
আয় কমে গেছে রিকশা-ভ্যানচালকসহ এসব শ্রমজীবী মানুষের।
ভোর থেকেও ঘন
কুয়াশায় ঢেকে ছিল পুরো এলাকা। ঘন কুয়াশা আর বাসাতের কারণে স্থবিরতা দেখা দেয়
জনজীবনে। কিন্তু জীবিকার তাগিদে সকালে কাজে যোগ দেওয়া খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ
বেড়েছে। সীমাহীন কষ্টে রয়েছেন রিকশা-ভ্যানচালক ও কৃষি শ্রমিকরা। শীতের কারণে জরুরি
প্রয়োজন ছাড়া কেউ রিকশা-ভ্যানে উঠতে চায় না। কনকনে শীতের কারণে দৈনন্দিন আয় কমে
গেছে এসব শ্রমজীবী মানুষের। শীতের দাপট বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
সকালের ঠান্ডা
বাতাসে কাবু হয়ে পড়া মানুষ গরম কাপড় পরে বের হওয়ার পাশাপাশি অনেকেই খড়কুটো
জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিম ঠান্ডা বাতাস ও
শীতের কারণে বাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলা ও উপজেলার
হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগী বাড়তে শুরু করেছে। চিকিৎসার পাশাপাশি শীতজনিত রোগ
থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা।
তেঁতুলিয়া
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ বলেন, তেঁতুলিয়ার আকাশের উপরিভাগে ঘন কুয়াশা থাকায় এবং দিনের ও রাতের
তাপমাত্রা সামন্য কমবেশি থাকায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। এ ছাড়া উত্তরের হিম বাতাস এ
জনপদে শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এখন থেকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাজধানীসহ সারা দেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ
পরিস্থিতিতে আরো ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন ধরে এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে হিট অ্যালার্ট
জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রোববার (২৮ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক
বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশের উপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৮ এপ্রিল) হতে
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি
পেতে পারে।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর
থেকে প্রথমবার তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়। এরপর কয়েক ধাপে তা বাড়ানো হয়।
হিট অ্যালার্ট আবহাওয়া অধিদপ্তর
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের সব স্থানে দীর্ঘতম সময়ের তাপদাহ শেষ হওয়ার পর আগামী
মাসে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ
করেছে আবহাওয়া অফিস।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, ‘আমাদের গাণিতিক
মডেল বিশ্লেষণ বলছে, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের কিছু অংশে প্রত্যাশিত বৃষ্টিপাত
হলেও মে মাসে দেশে সর্বকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট অঞ্চল, বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের
কিছু অংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব চট্টগ্রাম অঞ্চলে কিছু স্বস্তির বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা
থাকলেও এতে সারা দেশে চলমান তাপদাহ হ্রাসের সম্ভাবনা কম।’
দেশে গত ১ এপ্রিল থেকে ২৭ দিন ধরে তাপপ্রবাহের দীর্ঘতম সময় প্রত্যক্ষ
করছে এবং আবহাওয়া অফিস সতর্ক করেছে যে এ অবস্থা পরবর্তী মাসজুড়ে অব্যাহত থাকবে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক মন্তব্য করেন, ‘আগের তাপদাহের বিপরীতে
এ বছর তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’ আবহাওয়াবিদ জেবুন্নেসাও একথা সমর্থন করেন।
দৃশ্যত, প্রথমবারের মতো আবহাওয়াবিদরা জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাক্টিভিস্টদের
সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে স্বীকার করেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া অস্বাভাবিক আচরণ
করেছে এবং এর ফলে ধীরে ধীরে তাপদাহের অঞ্চল প্রসারিত হচ্ছে।
তারা বলছেন, তাপদাহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ অংশ এবং আংশিকভাবে পূর্ব
এশিয়ার দেশ ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামকে
প্রভাবিত করেছে।
আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বুলেটিন অনুসারে, এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে
৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, পশ্চিমা
লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এই অবস্থায় রোববার
(২৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ
বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে
পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক
থাকতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং রাজশাহী,
পাবনা, সিরাজগঞ্জ, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাগুলোর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
দিনাজপুর, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ
এবং ঢাকা ও বরিশাল বিভাগগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে
এবং তা অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা
প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান
থাকবে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে
দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে
শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া
প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে দিন এবং রাতের
তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব
বিরাজমান থাকবে।
সোমবার (৩০ এপ্রিল) দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে
পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র
অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ
অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা
প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান
থাকবে। বর্ধিত পাঁচ দিনের শেষের দিকে দেশে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে
এবং দিনের তাপমাত্রা কমতে পারে।
মন্তব্য করুন
দেশের সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে
ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি
হতে পারে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা থেকে পর্যন্ত দেশের
অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম
অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ
অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরসমূহকে ১ নম্বর
সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে, শনিবার (২৭ এপ্রিল) দেওয়া আগামী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে
বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ এবং টাঙ্গাইল,
বগুড়া,বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলাগুলোর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়াও মৌলভীবাজার, রাঙামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান
জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের
ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
অপরদিকে, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং
রাতের তাপমাত্রা প্রায় একইরকম থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব
বিরাজমান থাকতে পারে।
রোববার (২৮ এপ্রিল) সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে
দমকা, ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে
শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
পরের দিন সোমবার সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা,
ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে
শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ঝড়ো বৃষ্টি বজ্র
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এরই মধ্যে তিন বার জারি হয়েছে হিট অ্যালার্ট। তবে আবহাওয়ার পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আপাত্ত কোন সম্ভবনা নেই। বর্তমানে এ অবস্থা যে শুধু বাংলাদেশে চলছে তা নয়, এশিয়ার অনেক দেশেই চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ।
বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা এরইমধ্যে ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। ভারতের একাধিক রাজ্যে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা গেছে। একই পরিস্থিতি পাকিস্তানেও।
ইরানে গত বছর সর্বাধিক তাপমাত্রা ছাড়িয়েছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই নিরিখে এ বছরের চলতি মাসের চিত্র বিশেষ আশার আলো দেখাতে পারছে না। দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সেই সমস্ত শহর যার তাপমাত্রা এখন সর্বাধিক।
ভারত: ভারতের ওড়িশার বারিপদা ও পশ্চিমবঙ্গের পানাগড়ে এরই মধ্যে ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস না থাকলেও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি হবে আগামী তিনদিনে। গত এক সপ্তাহে ওই তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯ ডিগ্রির মধ্যে।
হরিয়ানাতেও তাপমাত্রার দিল্লির কাছাকাছি রয়েছে। বিহার, পূর্ব মধ্য প্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং পন্ডিচেরির একাধিক অঞ্চলসহ পূর্ব উত্তর প্রদেশের বিচ্ছিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৪-৬ ডিগ্রি বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
পাকিস্তান: সিন্ধ প্রদেশের একাধিক অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। সিন্ধের নওয়াব শাহতে গত এক সপ্তাহে সর্বাধিক তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৪২ ডিগ্রি, মহেঞ্জোদারোতে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। লাহোরে গত এক সপ্তাহে সর্বাধিক তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে।
উষ্ণতম শহরের তালিকায় বেলুচিস্তানের তুরবত অঞ্চলের নাম অনেক আগেই নথিভুক্ত হয়েছে। সেখানে গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলুচিস্তানের ন্নকুন্দিতে ৩৭ ডিগ্রি এবং সিব্বিতে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
অন্যদিকে করাচিতে চলতি মাসে সর্বাধিক তাপমাত্রা রয়েছে ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। গত এক সপ্তাহে করাচির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মালদ্বীপ: চলতি মাসে মালের গড় তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহে সর্বাধিক তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি।
মালদ্বীপের আদ্দু অ্যাটলের দক্ষিণতম দ্বীপ গান-এ গত এক সপ্তাহে নথিভুক্ত করা তথ্য বলছে সেখানে সর্বাধিক তাপমাত্রা রয়েছে ৩২ ডিগ্রি থেকে ৩৩ ডিগ্রির মধ্যে। হিথাধুর পরে গান হলো দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। মালদ্বীপের ফুভাহমুলাহতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গত এক সপ্তাহে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মালদ্বীপের আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩-এর মে মাস ছিল সেখানকার উষ্ণতম মাস।
নেপাল: চলতি মাসে নেপালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকছে। রাজধানী কাঠমান্ডুর গড় তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানা গেছে। চলতি সপ্তাহে কাঠমান্ডুর বাগমতি অঞ্চলের তাপমাত্রা রয়েছে ৩০-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
অন্যদিকে নেপালের লুম্বিনী অঞ্চলে অবস্থিত গৌতম বুদ্ধ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত এক সপ্তাহে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, বিরাটনগর বিমানবন্দর এলাকায় গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করেছে ৩৫ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
নেপালের জ্বালানি, জলসম্পদ ও সেচ মন্ত্রণালয়ের ২০২৩ সালের জলবায়ু রিপোর্ট অনুযায়ী, নেপালের সারা বছরের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ০.৬ শতাংশ বেড়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সে বছর তরাইয়ের নাওয়ালপারাসির দামকাউলি রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা (৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছে যা গত ৪৪ বছরে দেখা যায়নি।
শ্রীলঙ্কা: চলতি মাসে শ্রীলঙ্কার গড় তাপমাত্রা ২৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কলম্বোতে এ সপ্তাহে সর্বাধিক তাপমাত্রা রয়েছে ৩৩ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক শহর অনুরাধাপুরার বিমানবন্দর অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা গিয়েছে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক সপ্তাহে সাবারাগামুওয়া প্রদেশের রাজধানী শহর রত্নপুরায় সবচেয়ে বেশি উষ্ণতা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চল প্রদেশে অবস্থিত অন্যতম বৃহত্তম শহর ক্যান্ডিতে গত এক সপ্তাহে যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা গিয়েছে তা হল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। এরই মধ্যে তিন বার জারি হয়েছে হিট অ্যালার্ট। তবে আবহাওয়ার পরিস্থিতি ভালো হওয়ার আপাত্ত কোন সম্ভবনা নেই। বর্তমানে এ অবস্থা যে শুধু বাংলাদেশে চলছে তা নয়, এশিয়ার অনেক দেশেই চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা এরইমধ্যে ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। ভারতের একাধিক রাজ্যে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা গেছে। একই পরিস্থিতি পাকিস্তানেও। ইরানে গত বছর সর্বাধিক তাপমাত্রা ছাড়িয়েছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই নিরিখে এ বছরের চলতি মাসের চিত্র বিশেষ আশার আলো দেখাতে পারছে না। দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সেই সমস্ত শহর যার তাপমাত্রা এখন সর্বাধিক।