লিট ইনসাইড

পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি (পর্ব-১)


Thumbnail

শুরু হলো শোকাবহ আগস্ট মাস। মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। আগস্ট ষড়যন্ত্রের আদ্যোপান্ত নিয়ে অধ্যাপক . সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সারা জাগানো বইপিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছিএর ধারাবাহিক পর্বের প্রথম পর্ব পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।

 

পিতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, এতদনি আমাদের অনেকেরই দৃষ্টি ঝাপসা ছিল। যতদিন যাচ্ছে, ধীরে ধীরে আমাদের দৃষ্টি স্বচ্ছ হচ্ছে। হ্যাঁ পিতা সবকিছুতেই বড় বেশি সময় লাগে। আর অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, সঠিক বিষয়গুলোতে সময় বেশি লাগলেও ভুল বোঝার জন্যে, কোনো সময়ের প্রয়োজন হয় না।

বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার প্রায় উনিশ বছর পর, ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ঢাকার একটি পত্রিকা অফিসের নিজ অফিসকক্ষে বসে স্বগতক্তি করলেন পত্রিকার সম্পাদক। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে তাঁর মনে পড়ে গেল। চাকরিকালীন অবস্থার কিছু ঘটনা। তিনি সেই অতীতের কথা রোমন্থন করা শুরু করলেন। ১৯৭৪ সাল। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির সঙ্গে অতিবিপ্লবীরা হাত মিলিয়েছে। তারা বিভিন্ন কায়দায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি ঘটাতে থাকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সাধারণ মানুষকে বাঁচাবার জন্যে, দেশের স্বাধীনতাকে সুসংহত করার জন্যে আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্যে তৎপর হওয়ার আদেশ দিলেন সময় পার হতে থাকে। কিন্তু প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে ধরা সম্ভব হল না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় সকলেই জাতির পিতার কাছে আবেদন। জানান আরও কঠিন আইন প্রণয়নের। এর পরই বঙ্গবন্ধু বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রণয়ন অনুমোদন করলেন, যাতে করে স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাঙালিরা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে, রাস্তায় স্বচ্ছন্দে হেঁটে বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে। কিন্তু দিনের পর দিন গেল। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এল না। দুষ্কৃতকারীদের স্বর্গরাজ্যে কাজকর্ম কোনো বাধাপ্রাপ্ত হল না। বঙ্গবন্ধু তখন নির্দেশ দিলেন, যারা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রাক্ষার। কাজে কোনো না কোনোভাবে নিয়োজিত, তাদেরকে অবশ্যই কঠিন হতে হবে। এজন্যে জাতির পিতা প্রতিদিনই চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। উপদেশ দিতে থাকেন। এতে কাজ হল। বঙ্গবন্ধুর চাপের ফলে অনেক দুষ্কৃতকারী ধরা পড়ল। কিন্তু তাদের পরিচয় পাওয়ার। পর বঙ্গবন্ধু তো অবাক। কারণ এসব ধরাপড়া দুষ্কৃতকারী আর কেউ নয়, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা। ধরা পড়া এসব দামাল ছেলেই একাত্তরে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে এবং সকলেই দেশের স্বাধীনতার জন্যে কোনো-না-কোনোভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছে। এই ত্যাগ স্বীকার করতে গিয়ে অনেকের অবস্থা এমন হয়েছে, তাদের ক্ষে জীবনযুদ্ধে টিকে থাকাও কঠিন। বিষয়টি বঙ্গবন্ধুকে বেশ ভাবিয়ে তোলে। তিনি ইলার করে দেখলেন, শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা, যারা তাঁর আদর্শে বিশ্বাসী তারাই দুষ্কৃতকারী হয়ে গেল, অথচ আর কোনো দুষ্কৃতকারী নেই, এটা কেমন করে হয়। বঙ্গবন্ধুর মনে প্রশ্ন দীপল যে, টাইট দিতে বললে শুধুমাত্র তাঁর আদর্শে বিশ্বাসী মুক্তিযোদ্ধারা, কেন টাইট হয়। হলে বাকি দুষ্কৃতকারী কি রাতারাতি ফেরেস্তা হয়ে গেল? এর ফলে বাস্তব অবস্থায় দ্রুতকারীদের টাইট দেয়া বন্ধ হয়ে গেল। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও কোনো উন্নতি চোখে পড়ল না।

অতীত দিনের এসব স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে পত্রিকা সম্পাদক আবীর মনে সংশয় জেগে ওঠেতা হলে এসব কাজ নিশ্চয় বিচ্ছিন্নভাবে হয়নি। তিনি বঙ্গবন্ধুর ১৯৭২ সালে দেশে ফেরা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ঘটনাবলী সম্পর্কে আরে মনোযোগ দিলেন।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে এলে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সূর্য তা হল। বাঙালি জাতি যেন আসল মুক্তির স্বাদ সেদিনই পেল। অনেকের মনোভাব নে মনে হল তাদের কাছে প্রকৃত বিজয় দিবস হচ্ছে দিনই। কেননা, ১৬ ডিসেম্বর দেখে ভূখণ্ড হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হলেও বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মানুষের বে মুক্তির স্বাদ ছিল না। আর মুক্তির স্বাদ না পেলে তো বিজয়ের স্বাদ পাওয়া সম্ভব বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসার পর তাঁর অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মাসের বি বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করার চেষ্টা করলেন। এমনি এক পর্যায়ে একদিন সকাল ১০টার দি হঠাৎ করে মুজিবকোট গায়ে দিয়ে গণভবনস্থ বঙ্গবন্ধুর অফিস কক্ষে ঢুকলেন খোন্দক মোশতাক আহমেদ। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে করমর্দন করে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে একথা সেক বলে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রবাসী সরকারের কিছু ঘটনার কথা তিনি বর্ণনা করে চললো। বঙ্গবন্ধু নিবিষ্ট মনে সবকিছু শুনতে থাকলেন। সুযোগ বুঝে খোন্দকার মোশতাক বলে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করার জা বঙ্গবন্ধুর মেজো ছেলে শেখ জামাল গিয়েছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেও জান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পায়নি। সুচতুর মোশতাক ইনিয়ে বিনিয়ে এমনভা ঘটনা বর্ণনা করলেন, হাত ব্যস্ততার কারণেই তাজউদ্দিন সাহেব জানালের সঙ্গে দে করতে পারেননি। কিন্তু আফটার অল জামাল তো জাতির জনকের ছেলে। এটি যাওয়া কারো জন্যেই বোধহয় উচিত নয়। এরপর মোশতাক বঙ্গবন্ধুর জন্যে যে কত কি করেছেন, তার ফিরিস্তি দিতে গিয়ে অঝোরে চোখের পানি ফেলতে শুরু করেন। বঙ্গব একদৃষ্টে তাকিয়ে চোখের সেই পানিপড়া দেখতে থাকেন। চোখের পানি আর থামে না কিছু সময় চলে যেতে বঙ্গবন্ধুর মনটাও হাহাকার করে ওঠে। তিনি তাঁর আসন ছেড়ে এলেন এবং মোশতাকের পিঠে হাত রেখে সান্ত্বনা দিলেন। বঙ্গবন্ধু বললেন, এসব কথা আলোচনার প্রয়োজন নেই।

বঙ্গবন্ধু মোশতাককে জানান যে বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অধিকাংশ তথ্য তিনি পেয়েছেন। পিঠে বঙ্গবন্ধুর হাতের স্পর্শ লাগায় সাপের মাথায় তাবিজ পড়লে সা যেমন আপনা-আপনি মাথা নুইয়ে ফেলে, ঠিক তেমনিভাবে খোন্দকার মোশতাক শান্ত গেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে চোখের পানি মুছে তিনি বঙ্গবন্ধুর গণভবনের অফিসকক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন।

বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসার পর বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ পেতেন না। জাতির জন্য হিসেবে, দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে নানাভাবে ব্যস্ত থাকতে হত। এই বাস্তবতার মাঝেই একদিন তার অফিসকক্ষে জাতীয় স্বার্থের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এমন কিছু ফাইল তিনি দেখতে শুরু করলেন। মাসের যুদ্ধের ফলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। কিভাবে এই মেরুদণ্ডকে আবার ঠিক করা যায়, সে চিন্তাই তখন বঙ্গবন্ধুর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ফাইল দেখতে দেখতে হঠাৎ করে তাঁর মনে পড়ল, সেদিনকার এক বিদেশি পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের কথা। পত্রিকাটি বঙ্গবন্ধু হাতে করেই তার অফিস কক্ষে এসেছিলেন। পত্রিকাটি চোখের সামনে মেলে ধরে রিপোর্টটি আবার পড়লেন। তাতে এই আশয্যা প্রকাশ করা হয়েছে যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে বাস্তব অবস্থার কারণেই লক্ষ লক্ষ বাঙালি অনাহারে মৃত্যুবরণ করবে। এদের সংখ্যা মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার পাকিস্তানি বাহিনি তার সহযোগীদের হাতে নিহত ৩০ লক্ষ বাঙালির চেয়ে বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে। খাদ্যের অভাবে সমগ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে যেমন অসন্তোষ সৃষ্টি হবে, তেমনি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। যাদের হাতে অস্ত্র রয়েছে, তারা আর সরকারকে অস্ত্র জমা দেবে না। কেননা, এই হাতের অস্ত্র তাদেরকে খাদ্য জোগাড় করে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেবে। স্বভাবতই সুযোগ তারা হাতছাড়া করতে চাইবে না।

বিদেশি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি বঙ্গবন্ধু গভীর মনোনিবেশ সহকারে কয়েকবারই পড়লেন। এরপর গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো আবার দেখতে থাকেন। এরপর ফাইলগুলো জায়গা মতো ফেরত পাঠিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্যে তলব করলেন। প্রথমে এলেন গুরুত্বপূর্ণ এক মন্ত্রী। তিনি আসার পর বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তিকে কক্ষে ঢোকার ব্যাপারে নিষেধ করে দেন। এরপর তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে দেশের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে একান্তে আলোচনায় বসলেন। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীটি সমস্যা সম্পর্কে যুক্তি সহকারে একের পর এক তাঁর বক্তব্য দিতে থাকেন। বঙ্গবন্ধু চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে পাইপ টানতে থাকেন এবং গভীর মন দিয়ে বক্তব্য শুনতে থাকলেন। মনে হল, কোনো কম্পিউটারে কিছু ইনফরমেশন এবং ডাটা ঢোকানো হচ্ছে। এদিকে আবার খাবারের সময় পেরিয়ে তোল। কারো সাহস হল না বঙ্গবন্ধুকে খাবারের কথা মনে করিয়ে দিতে। বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য শোনার পর বেলা তিনটার দিকে বঙ্গবন্ধু তাঁর অফিসকক্ষ থেকে বেরিয়ে এলেন। এরপর গণভবনের দোতলায় বিশ্রামকক্ষে গিয়ে তাঁর জন্যে রক্ষিত খাবারের দিকে একবার তাকিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লেন। তারপর কি যেন ভাবতে থাকলেন।



মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

কবিতা

প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

বিশ্বের সেরা এবং আকর্ষণীয় পাচ মসজিদ

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের এমন পাঁচটি মসজিদ সম্পর্কে জেনে নিন:


১. মসজিদুল হারাম, মক্কা, সৌদি আরব:

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখতে যায়, এমন মসজিদের তালিকায় সবার প্রথমে আছে পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদুল হারাম। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই মসজিদে যান। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। একসঙ্গে ১৫ লাখ মানুষ এখানে প্রবেশ করে ঘুরে দেখতে পারেন। মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তিন স্থানের একটি এই মসজিদুল হারাম। মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাশরিফ এখানেই অবস্থিত।

তবে যে কেউ চাইলেই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারেন না। অমুসলিমদের জন্য মক্কা নগরীতে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।


২. শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত:

২০০৭ সালে স্থাপিত এই মসজিদ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি ও সবচেয়ে বড় গালিচাও আছে এই মসজিদে।

আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই প্রবাসী, যাঁরা মূলত শ্রমজীবী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যান। এই বৈচিত্র্যময়তাই মসজিদটির নকশার মূল ভিত্তি। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতি স্থপতিরা মিসর, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ জায়েদ মসজিদের নকশা এঁকেছেন।

প্রতিবছর মসজিদটি দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। শুধু ২০১৭ সালেই এসেছেন প্রায় ৫৮ লাখ দর্শনার্থী। নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় অমুসলিম দর্শনার্থীরাও মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। তবে শুক্রবার অমুসলিম দর্শনার্থীদের এই মসজিদে প্রবেশ নিষেধ।


৩. আয়া সোফিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক:

ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরগুলোর একটি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। আর ইস্তাম্বুল বা গোটা ইউরোপের অন্যতম সুন্দর মসজিদ আয়া সোফিয়া। ৩৬০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থাপিত এ স্থাপনা শুরুতে মসজিদ ছিল না। ১৪৬৩ সালে সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এটিকে আবার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৮৫ সালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।


৪. আল–আকসা মসজিদ, পূর্ব জেরুজালেম, ইসরায়েল:

মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর শুরুর দিককার অন্যতম নিদর্শন জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ।

বলা হয়ে থাকে, খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্যতম খলিফা হজরত উমর (রা.)–র শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় মসজিদটির নির্মাণকাজ। তবে বর্তমানে আল-আকসা বলতে পুরো চত্বরটাকেই বোঝানো হয়। ‘হারাম আল শরিফ’ নামে পরিচিত এই চত্বরের চার দেয়ালের মধ্যে আছে কিবলি মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মূল আল–আকসা বা কিবলি মসজিদ হলো ধূসর সীসার পাতে আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপনা। তবে পর্যটকের কাছে আল–আকসা নামে বেশি প্রসিদ্ধ সোনালি গম্বুজের স্থাপনা কুব্বাতুস সাখরা।

জেরুজালেমের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় উঠে আসে ১৯৮১ সালে। এখানে প্রায় চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। কোনো মুসল্লিকে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছে না। পবিত্র স্থানটির দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ওয়াক্‌ফ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


৫. দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো:

আলজেরিয়ার জামা এল জাযের মসজিদের মিনার সবচেয়ে উঁচু, ৮৭০ ফুট। তারপরেই কাসাব্লাঙ্কার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার, উচ্চতা ৬৮৯ ফুট। মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটির নকশাকার ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনসু।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি শৈলান্তরীপের মাথায় মসজিদটির অবস্থান। মেঝের একটা অংশ স্বচ্ছ কাচের বলে আটলান্টিকের নীল পানি দেখতে পান নামাজে যাওয়া মুসল্লিরা। দেয়ালে মার্বেলের চোখধাঁধানো কারুকাজ। ছাদ অপসারণযোগ্য বলে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা রাতের আকাশও দেখতে পান।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার থেকে একটি লেজাররশ্মি মুসলমানদের কিবলা কাবাঘরের দিকে তাক করা। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য জগৎ–খ্যাত এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার সুবিধা আছে।


মসজিদ   সেরা  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

মুখের ঠিকানা

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

স্পর্শে তুমি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন