লিট ইনসাইড

পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি (পর্ব-১৩)


Thumbnail

চলছে শোকাবহ আগস্ট মাস। এ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। আগস্ট ষড়যন্ত্রের আদ্যোপান্ত নিয়ে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সারা জাগানো বই ‘পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি’ এর ধারাবাহিক পর্বের ত্রয়োদশ পর্ব পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবন। সারাদিনের কাজের শেষে পরিশ্রান্ত বঙ্গবন্ধু শয়নকক্ষের বিছানায় শুয়ে পড়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এমন সময় বেগম মুজিব এলেন। কক্ষে প্রবেশ করেই তিনি বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তানে আসন্ন ইসলামি সম্মেলনে যোগদানের বিষয়টি তুললেন। বেগম মুজিব কোনোরকম ভূমিকা ছাড়াই বঙ্গবন্ধুকে সরাসরি বললেন যে, তিনি চান না পাকিস্তানে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ইসলামি সম্মেলনে যোগদান করুন। তাঁর স্পষ্ট কথা হল মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিশ লাখ বাঙালি হত্যার আসল হোতা ভুট্টো পাকিস্তানের ক্ষমতার মসনদে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানে গেলে কূটনৈতিক শিষ্টতা অনুযায়ী ভুট্টোকে বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানাতে হবে। বেগম মুজিবের দৃঢ় বিশ্বাস ভুট্টো সুযোগ ছাড়বেন না। তাঁর কথা হচ্ছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও বাংলাদেশে অন্ততপক্ষে তাদের এক লাখ অনুচর রেখে গেছে। ভুট্টো বাংলাদেশে এলে এসকল খুনীরা তার সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ এবং নতুন উৎসাহ উদ্দীপনা পাবে। তারা আবার স্বাধীন বাংলাদেশ ও তার জনক বঙ্গবন্ধুকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা নতুনভাবে শুরু করবে। বেগম মুজিব জানান, বাংলাদেশে রেখে যাওয়া পাকিস্তানের এই এক লাখ অনুচর বাংলা ভাষায় কথা বললেও তারা আসলে বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। এদের ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। এই সতর্কতার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর কোনো অবস্থাতেই পাকিস্তানে যাওয়া চলে না।

বঙ্গবন্ধু তাঁর সহধর্মিনীর কথা মন দিয়ে শুনলেন। তিনি জানান যে, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সে কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপর বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গ পাল্টানোর উদ্দেশ্যে বেগম মুজিবকে বললেন—হাসু কোথায়? ওর তো আজ জামাইকে সঙ্গে নিয়ে আমার সঙ্গে ভাত খাওয়ার কথা।

বেগম মুজিব বেশ অসন্তুষ্ট চিত্তেই জানান যে, জামাইকে সঙ্গে নিয়ে হাসু খাবারের জিনা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাড়িতে ফিরে আসার পরও বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে মধ্যরাত প্রায় পার করে দিয়েছেন দেখে হাসু মন মারাপ করে তার জামাইকে নিয়ে তার নিজ বাসায় চলে গেছে।

সহধর্মিনীর মনের ভাব আঁচ করতে পেরেই বঙ্গবন্ধু পরিবেশ হালকা করার জন্য বললেন—হাসুকে বোলো, সে অনেক দিন ধরে তার বাবার হাতের নখ কেটে দিচ্ছে না। বেগম মুজিব জানান যে, হাসুকে তিনি কথাটা বলবেন। সঙ্গে এ কথাটিও বলবেন যে হাসুকে পিতার নখ কাটতে হলে বোধহয় ভোররাতের দিকেই আসতে হবে। এর পূর্বে পিতার সাক্ষাৎ পাওয়া কঠিন। পরিবেশ বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু তাড়াতাড়ি খাবারের কথা বলে বিছানা ছেড়ে উঠলেন।

বঙ্গবন্ধু যথাসময়ে পাকিস্তান গেলেন। কারণ বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস ছিল, পাকিস্তানে গিয়ে ইসলামি সম্মেলনে যোগ দিলে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠবে এবং এর ফলে বাংলাদেশ সম্পর্কে মুসলিম বিশ্বে যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে তার অবসান ঘটবে। মুসিলম বিশ্বে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের বন্ধুর সংখ্যা বাড়বে। অন্যদিকে ইসলামি সম্মেলনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে হাবিবুর রহমান গং আগে থেকেই সক্রিয় ছিল। সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই তাদের কয়েকজন বিশ্বস্ত লোক গিয়ে ভুট্টোর সঙ্গে দেখা করে এবং গুরুত্বপূর্ণ শলাপরামর্শ সেরে আসে। হাবিবুর রহমান গং-এর পরামর্শ অনুযায়ী ভুট্টো শুধু বঙ্গবন্ধুর দেয়া বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণই করলেন না, অনতিবিলম্বে এই সফরের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেন। বাংলাদেশে এসে ভুট্টো সাহেবকে কি কি কাজ করতে হবে, তার একটি নীলনকশাও হাবিবুর রহমানের বিশ্বস্ত সহযোগীরা পাকিস্তানে বসে ঠিক করে দিয়ে এল। তাদের কাজে ভুট্টো অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন।

কিছুদিন পরে জনাব ভুট্টো রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে এলে হাবিবুর রহমান গং যথেষ্ট টাকা খরচ করে এবং সুসংগঠিতভাবে তাকে বিরাট সংবর্ধনা দেয়ার ব্যবস্থা করে। এই সংবর্ধনা দেখে ভুট্টো খুব খুশি হলেন। শুধু তাই নয়, এই সংবর্ধনা দেয়ার ফলে বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রায় এক লাখ পাকিস্তানি অনুচর তাদের কাজে খুবই উৎসাহ পেয়ে গেল। ভুট্টোর আগমনের দিন সাম্প্রদায়িক শক্তি মন্ত্রী ফণীভূষণ মজুমদারকে লাঞ্ছিত করার মতো সাহসও পেল। হাবিবুর রহমানেরাও বুঝতে পারল, বঙ্গবন্ধুর প্রতি চূড়ান্ত আঘাত হানার উপযুক্ত সময় ঘনিয়ে এসেছে। কেননা, ভুট্টোকে রিসেপশন দেয়ার আগ পর্যন্ত তারা জনগণের সামনে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন সম্পর্কে নিশ্চিত ছিল না। ষড়যন্ত্রকারীরা দেখল যে তারা এখন ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তৎপরতা চালানোর দিকে এগুতে পারে। এরপর থেকেই হাবিবুর রহমান গংরা সফলতার দিকে সহজভাবে পৌঁছানোর আলামত দেখতে পায়।


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান   ১৫ আগস্ট  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

কবিতা

প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

বিশ্বের সেরা এবং আকর্ষণীয় পাচ মসজিদ

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের এমন পাঁচটি মসজিদ সম্পর্কে জেনে নিন:


১. মসজিদুল হারাম, মক্কা, সৌদি আরব:

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখতে যায়, এমন মসজিদের তালিকায় সবার প্রথমে আছে পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদুল হারাম। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই মসজিদে যান। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। একসঙ্গে ১৫ লাখ মানুষ এখানে প্রবেশ করে ঘুরে দেখতে পারেন। মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তিন স্থানের একটি এই মসজিদুল হারাম। মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাশরিফ এখানেই অবস্থিত।

তবে যে কেউ চাইলেই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারেন না। অমুসলিমদের জন্য মক্কা নগরীতে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।


২. শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত:

২০০৭ সালে স্থাপিত এই মসজিদ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি ও সবচেয়ে বড় গালিচাও আছে এই মসজিদে।

আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই প্রবাসী, যাঁরা মূলত শ্রমজীবী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যান। এই বৈচিত্র্যময়তাই মসজিদটির নকশার মূল ভিত্তি। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতি স্থপতিরা মিসর, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ জায়েদ মসজিদের নকশা এঁকেছেন।

প্রতিবছর মসজিদটি দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। শুধু ২০১৭ সালেই এসেছেন প্রায় ৫৮ লাখ দর্শনার্থী। নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় অমুসলিম দর্শনার্থীরাও মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। তবে শুক্রবার অমুসলিম দর্শনার্থীদের এই মসজিদে প্রবেশ নিষেধ।


৩. আয়া সোফিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক:

ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরগুলোর একটি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। আর ইস্তাম্বুল বা গোটা ইউরোপের অন্যতম সুন্দর মসজিদ আয়া সোফিয়া। ৩৬০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থাপিত এ স্থাপনা শুরুতে মসজিদ ছিল না। ১৪৬৩ সালে সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এটিকে আবার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৮৫ সালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।


৪. আল–আকসা মসজিদ, পূর্ব জেরুজালেম, ইসরায়েল:

মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর শুরুর দিককার অন্যতম নিদর্শন জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ।

বলা হয়ে থাকে, খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্যতম খলিফা হজরত উমর (রা.)–র শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় মসজিদটির নির্মাণকাজ। তবে বর্তমানে আল-আকসা বলতে পুরো চত্বরটাকেই বোঝানো হয়। ‘হারাম আল শরিফ’ নামে পরিচিত এই চত্বরের চার দেয়ালের মধ্যে আছে কিবলি মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মূল আল–আকসা বা কিবলি মসজিদ হলো ধূসর সীসার পাতে আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপনা। তবে পর্যটকের কাছে আল–আকসা নামে বেশি প্রসিদ্ধ সোনালি গম্বুজের স্থাপনা কুব্বাতুস সাখরা।

জেরুজালেমের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় উঠে আসে ১৯৮১ সালে। এখানে প্রায় চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। কোনো মুসল্লিকে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছে না। পবিত্র স্থানটির দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ওয়াক্‌ফ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


৫. দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো:

আলজেরিয়ার জামা এল জাযের মসজিদের মিনার সবচেয়ে উঁচু, ৮৭০ ফুট। তারপরেই কাসাব্লাঙ্কার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার, উচ্চতা ৬৮৯ ফুট। মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটির নকশাকার ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনসু।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি শৈলান্তরীপের মাথায় মসজিদটির অবস্থান। মেঝের একটা অংশ স্বচ্ছ কাচের বলে আটলান্টিকের নীল পানি দেখতে পান নামাজে যাওয়া মুসল্লিরা। দেয়ালে মার্বেলের চোখধাঁধানো কারুকাজ। ছাদ অপসারণযোগ্য বলে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা রাতের আকাশও দেখতে পান।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার থেকে একটি লেজাররশ্মি মুসলমানদের কিবলা কাবাঘরের দিকে তাক করা। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য জগৎ–খ্যাত এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার সুবিধা আছে।


মসজিদ   সেরা  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

মুখের ঠিকানা

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

স্পর্শে তুমি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন