লিট ইনসাইড

পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি (পর্ব-১৯)


Thumbnail

চলছে শোকাবহ আগস্ট মাস। এ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ষড়যন্ত্রকারীরা। আগস্ট ষড়যন্ত্রের আদ্যোপান্ত নিয়ে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সারা জাগানো বই ‘পিতা, আমরা মুক্ত আকাশ দেখছি’ এর ধারাবাহিক পর্বের ঊনবিংশ পর্ব পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল-

ঢাকার মগবাজার এলাকার একটি বাড়িতে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে ৭১-এর ঘাতক আল-বদর, আল-শামসের সদস্যরা। আলোচনার মূল বিষয় হল, কিভাবে বঙ্গবন্ধু এবং তার সরকারকে খতম করা যায়। কেননা, বঙ্গবন্ধু ক্ষমতায় থাকলে এদেশকে কিছুতেই পাকিস্তানের অনুগত রাখা যাবে না। তা ছাড়া ৭১-এর পরাজয়কে আল-বদর, আল-শামসরা কিছুতেই ভুলতে পারেনি।

সভায় বক্তারা যেসকল বক্তব্য প্রদান করে চলল, তাতে স্পষ্ট হল যে, ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে হাবিবুর রহমান গংদের যোগাযোগ হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান তাদের এই তৎপরতাকে সমর্থন করার জন্যে যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছুই করতে প্রস্তুত। হাবিবুর রহমানদের তরফ থেকে তাদেরকে এই আশ্বাস দেয়া হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে তাদের কাজকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। কাজেই হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে বিষয়টি জটিল হওয়াতে তাদের সকলকে বাহ্যিকভাবে আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে যেতে হবে যাতে করে জনগণ কিছুতেই আঁচ করতে না পারে যে ষড়যন্ত্রকারীদের এক গ্রুপের সঙ্গে আরেক গ্রুপের কোনোপ্রকার যোগাযোগ আছে। কাজের সুবিধা এবং জনগণকে সহজে বিভ্রান্ত করার জন্যেই তারা গ্রুপে গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন মগবাজারের মিটিং- ৭১-এর আল-বদর, আল-শামস হিসেবে যারা উপস্থিত হয়েছে, তাদেরকে সাংকেতিক নাম দেয়া হয়েছে মগবাজার গ্রুপ। কাজেই মগবাজার গ্রুপ বললেই বুঝে নিতে হবে, তারা কারা।।

ষড়যন্ত্রকারীদের একটি অঙ্গ হিসেবে মগবাজার গ্রুপ কাজ চালিয়ে গেলেও তাদের আসল নেতা দেশের বাইরে অবস্থান করছিল। এতে তাদের অসুবিধা নয়, বরং সুবিধাই হয়। কেননা, জনগণ থেকে শুরু করে সরকারের অধিকাংশ লোকই বুঝতে পারেনি যে, মগবাজার গ্রুপ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বরং তাদের ধারণা ছিল যে, দেশের পরিস্থিতি ৭১-এর ঘাতকদের অনকূলে নয়। কারণেই তারা নিজেদের গা বাঁচাতে ব্যস্ত। সুতরাং ওদের তরফ থেকে কোনোরকম ক্ষতির আশঙ্কা নেই। অথচ প্রকৃত অবস্থা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত।

যা হোক, মগবাজারের সভায় উপস্থিত সদস্যদের আশ্বস্ত করা হয় যে, তাদের নেতা বিদেশে অবস্থান করলেও নিয়মিত টাকা পাঠাচ্ছেন। দেশের অভ্যন্তরে কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ চালিয়ে যেতে হবে, সে নির্দেশও তিনি বিদেশ থেকে দিয়ে চলেছেন। তারই নির্দেশে মগবাজার গ্রুপ কুমিল্লা গ্রুপ হিসেবে পরিচিত হাবিবুর রহমান। চলেছে এবং নিজেদের শক্তি সম্পর্কে অনেক বেশি আশাবাদী হয়েছে। তারা মনে করে, গং-এর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে একে অপরের সহযোগী হিসেবে কাজ করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করাটা এখন আর কোনো কঠিন কাজ নয় এবং হত্যাপরবর্তী জামেলাটা সামাল দেয়াও তেমন কঠিন কাজ হবে না।

মগবাজার গ্রুপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল যে, তাদের সদস্যরা দেশের যে-কোনো স্থানেই অবস্থান করুক না কেন, তাদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখতে হবে। জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের অংশ হিসেবে বেশি করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। এর ধর্মীয় অনুষ্ঠান মগবাজার গ্রুপের সদস্যরা কৌশলে নিয়ন্ত্রণ করবে। ইয়লামের পবিত্র বাণী-প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে কৌশলে বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যেতে হবে। একই লক্ষ্যে দেশের অধিকাংশ মসজিদের সঙ্গে গ্রুপ সদস্যদের সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকতে হবে। তাদের মনে রাখতে হবে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান মসজিদের মাধ্যমে এদেশের ধর্মভীরু জনগণের যত কাছাকাছি যাওয়া যাবে, অন্য কোনো পন্থায় ততটা কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব নয়। ধর্মীয় অনুষ্ঠান মসজিদের মাধ্যমে লোকজনকে ধীরে ধীরে বোঝাতে হবে, বঙ্গবন্ধু সরকারের এদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র করার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ থেকে ইসলামকে শেষ করে দেয়া। জনগণকে যদি কথাটা ভালভাবে বোঝানো যায়, তা হলে তাদের মধ্যে জেহাদি মনোভাব সৃষ্টি হবে। সাধারণ মানুষকে এভাবে বিভ্রান্ত করা গেলে বঙ্গবন্ধুকে সহজেই জনগণ থেক বিচ্ছিন্ন করা যাবে। জনগণকে আরো বোঝাতে হবে, ভারত থেকে অনেক হিন্দুকে আমদানি করা হয়েছে, যাদের কাজই হচ্ছে দেশ থেকে ইসলামকে উচ্ছেদ করে দেয়া। এসকল হিন্দু বিভিন্নভাবে মুসলমানদের বেশ ধারণ করে তাদের কাজ গোপনে গোপনে চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মুসলমান পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছে। কাজেই সাচ্চা মুসলমান হিসেবে এদেরকে রুখতে হবে। এটা সকলের জন্যে ফরজ হয়ে গেছে।

তখন ৭১ সালে ট্রেনিংপ্রাপ্ত আল-বদর, আল-শামসের সদস্যরাই সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। এমনকি বিভিন্ন উপায়ে ক্ষমতাসীন দল প্রশাসনে ঢুকতে সক্ষম হয় তাদের অনেকেই। ছাড়া নিজেদের অস্তিত্বরক্ষার স্বার্থেই নতুন রাজনৈতিক দল জাসদে ভিড়ে যাওয়া সদস্যরা তো ছিলোই। মগবাজার গ্রুপ এসকল খুনীদেরকেই আবার সংগঠিত করতে থাকে। কারণ তারা জানত, সুসংগঠিত আল-বদর, রাজকাররা আবার মনোবল ফিরে পাবে এবং ৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগও হাতছাড়া করবে না। কথায় আছে, যে বাঘ একবার মানুষের মাংসের স্বাদ পেয়েছে, সে সুযোগ পেলেই মানুষ হত্যা করবে। ৭১- যারা একবার নিরীহ জনগণকে হত্যা করে হত্যার স্বাদ পেয়েছে, মা-বোনদের ধর্ষণ করে ধর্ষণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেসেইসকল সাচ্চা কর্মীদের দিয়ে দুনিয়ার এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা করানো যাবে না।

মগবাজারের সভা শেষ হল। যে যার বাড়ির দিকে বেশ সন্তুষ্ট চিত্তেই পা বাড়াল। এতদিন পর কাজের মতো কাজ পেয়ে তারা যেন নিজেদের ধন্য মনে করল। এভাবেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র এগিয়ে চলল।



মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

কবিতা

প্রকাশ: ০২:০৩ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

বিশ্বের সেরা এবং আকর্ষণীয় পাচ মসজিদ

প্রকাশ: ১১:০২ এএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের এমন পাঁচটি মসজিদ সম্পর্কে জেনে নিন:


১. মসজিদুল হারাম, মক্কা, সৌদি আরব:

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দেখতে যায়, এমন মসজিদের তালিকায় সবার প্রথমে আছে পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদুল হারাম। প্রতিবছর প্রায় ৮০ লাখ মানুষ এই মসজিদে যান। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মসজিদ। একসঙ্গে ১৫ লাখ মানুষ এখানে প্রবেশ করে ঘুরে দেখতে পারেন। মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তিন স্থানের একটি এই মসজিদুল হারাম। মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাশরিফ এখানেই অবস্থিত।

তবে যে কেউ চাইলেই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারেন না। অমুসলিমদের জন্য মক্কা নগরীতে প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ।


২. শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত:

২০০৭ সালে স্থাপিত এই মসজিদ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি ও সবচেয়ে বড় গালিচাও আছে এই মসজিদে।

আরব আমিরাতে বসবাসকারীদের বেশির ভাগই প্রবাসী, যাঁরা মূলত শ্রমজীবী হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে সেখানে যান। এই বৈচিত্র্যময়তাই মসজিদটির নকশার মূল ভিত্তি। ব্রিটিশ, ইতালীয় ও আমিরাতি স্থপতিরা মিসর, মরক্কো, তুরস্ক, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শেখ জায়েদ মসজিদের নকশা এঁকেছেন।

প্রতিবছর মসজিদটি দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। শুধু ২০১৭ সালেই এসেছেন প্রায় ৫৮ লাখ দর্শনার্থী। নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় অমুসলিম দর্শনার্থীরাও মসজিদ ঘুরে দেখতে পারেন। তবে শুক্রবার অমুসলিম দর্শনার্থীদের এই মসজিদে প্রবেশ নিষেধ।


৩. আয়া সোফিয়া, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক:

ইউরোপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরগুলোর একটি তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল। আর ইস্তাম্বুল বা গোটা ইউরোপের অন্যতম সুন্দর মসজিদ আয়া সোফিয়া। ৩৬০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থাপিত এ স্থাপনা শুরুতে মসজিদ ছিল না। ১৪৬৩ সালে সুলতান মেহমেদ এটিকে মসজিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেন।

১৯৩৪ সালে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে তৎকালীন তুরস্ক সরকার। কিন্তু ২০২০ সালে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এটিকে আবার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের কাছে উন্মুক্ত করে দেন। ১৯৮৫ সালে আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যর স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।


৪. আল–আকসা মসজিদ, পূর্ব জেরুজালেম, ইসরায়েল:

মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর শুরুর দিককার অন্যতম নিদর্শন জেরুজালেমের আল–আকসা মসজিদ।

বলা হয়ে থাকে, খোলাফায়ে রাশিদিনের অন্যতম খলিফা হজরত উমর (রা.)–র শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় মসজিদটির নির্মাণকাজ। তবে বর্তমানে আল-আকসা বলতে পুরো চত্বরটাকেই বোঝানো হয়। ‘হারাম আল শরিফ’ নামে পরিচিত এই চত্বরের চার দেয়ালের মধ্যে আছে কিবলি মসজিদ, কুব্বাতুস সাখরা (ডোম অব দ্য রক) ও বুরাক মসজিদ। মূল আল–আকসা বা কিবলি মসজিদ হলো ধূসর সীসার পাতে আচ্ছাদিত গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপনা। তবে পর্যটকের কাছে আল–আকসা নামে বেশি প্রসিদ্ধ সোনালি গম্বুজের স্থাপনা কুব্বাতুস সাখরা।

জেরুজালেমের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় উঠে আসে ১৯৮১ সালে। এখানে প্রায় চার লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন । তবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। কোনো মুসল্লিকে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকতে দিচ্ছে না। পবিত্র স্থানটির দায়িত্বে থাকা ইসলামিক ওয়াক্‌ফ বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


৫. দ্বিতীয় হাসান মসজিদ, কাসাব্লাঙ্কা, মরক্কো:

আলজেরিয়ার জামা এল জাযের মসজিদের মিনার সবচেয়ে উঁচু, ৮৭০ ফুট। তারপরেই কাসাব্লাঙ্কার দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার, উচ্চতা ৬৮৯ ফুট। মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসানের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মসজিদটির নকশাকার ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনসু।

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি শৈলান্তরীপের মাথায় মসজিদটির অবস্থান। মেঝের একটা অংশ স্বচ্ছ কাচের বলে আটলান্টিকের নীল পানি দেখতে পান নামাজে যাওয়া মুসল্লিরা। দেয়ালে মার্বেলের চোখধাঁধানো কারুকাজ। ছাদ অপসারণযোগ্য বলে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা রাতের আকাশও দেখতে পান।

দ্বিতীয় হাসান মসজিদের মিনার থেকে একটি লেজাররশ্মি মুসলমানদের কিবলা কাবাঘরের দিকে তাক করা। অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য জগৎ–খ্যাত এই মসজিদে একসঙ্গে ১ লাখ ৫ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার সুবিধা আছে।


মসজিদ   সেরা  


মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

মুখের ঠিকানা

প্রকাশ: ১২:১৬ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


লিট ইনসাইড

স্পর্শে তুমি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail




মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন