ইনসাইড বাংলাদেশ

নাসিক নির্বাচন: এক নজরে আদ্যোপান্ত

প্রকাশ: ০৮:০৪ এএম, ১৬ জানুয়ারী, ২০২২


Thumbnail নাসিক নির্বাচন: এক নজরে আদ্যোপান্ত

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) মেয়র পদে তৃতীয়বারের মত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ রোববার (১৬ জানুয়ারি)। এ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছে উত্তাপ। বিশেষ করে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা বেড়েছে। ২০১১ সালের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, কদম রসুল পৌরসভা ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভাকে বিলুপ্ত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠনের গেজেট প্রকাশ করে সরকার।

প্রথমবার (২০১১) ৯টি ওয়ার্ডে ইভিএমে, বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হয়। ২০১৬ সালে সব কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে এবং এবার পুরো সিটিতে ভোট হচ্ছে ইভিএমে।

অন্যদিকে, প্রথমবার নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হয় এ সিটিতে। দলীয় প্রতীকে এবার দ্বিতীয় নির্বাচন হচ্ছে। দলীয় নির্বাচনের সুযোগ শুধু মেয়র পদে।


নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন - ২০২২

১. রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোট চলবে।
২. মোট ভোটার রয়েছেন ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৬ জন পুরুষ; ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১১ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪ জন।
৩. একজন মেয়র, ৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং ২৭টি ওয়ার্ডে একজন করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন এ ভোটে।
৪. মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন আছেন ভোটের লড়াইয়ে।
৫. ১৯২ কেন্দ্রের ১৩৩৩টি কক্ষে ভোট প্রদান করবেন ভোটাররা।
৬. গণনা শেষে ফল ঘোষণা হবে রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গত ৩০ নভেম্বর এবারের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।

সে অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল ১৫ ডিসেম্বর। ২০ ডিসেম্বর বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২৭ ডিসেম্বর। ২৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর শুরু হয় ভোটের প্রচার।


মেয়রের লড়াইয়ে ৭ জন

বাংলদেশ আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি), খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেওয়াল ঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ) এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি), স্বতন্ত্র মো. কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)।


ইভিএমে ভোট

১. ইভিএমে ভোট হওয়ায় প্রতিটি ভোটকক্ষে থাকবে মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের একটি করে ব্যালট ইউনিট।
২. কেন্দ্রভিত্তিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি থাকবে কারিগরি টিম। কোথাও কোনো ধরনের প্রযুক্তিগত প্রয়োজনে কারিগরি টিম সহযোগিতা করবে।
৩. ইভিএমে ভোট দেওয়ার আগে আঙ্গুলের ছাপ, ভোটার নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ব্যবহার করে ভোটার শনাক্ত করা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট কেন্দ্রের ভোটকক্ষে একজন পোলিং অফিসার ভোটার ভেরিফিকেশনের কাজটি করেন।
৪. ডেটাবেইজে ভোটার বৈধ বা অবৈধ হিসেবে শনাক্ত হলে মনিটরের মাধ্যমে তা দেখতে পান পোলিং এজেন্টরা।
৫. ভোটার বৈধ হলে ভোটিং মেশিনে ভোটারকে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
৬. ভোটার সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছে গেলে গোপন কক্ষে থাকা ব্যালট ইউনিটে ব্যালট ইস্যু করা হয়।
৭. গোপনকক্ষে গিয়ে ভোটার পছন্দের প্রার্থী ও প্রতীক বেছে নিয়ে ব্যালট ইউনিটের ডান দিকের সাদা বোতামে চাপ দিলে প্রতীক সিলেক্ট হবে। ওই ব্যালট ইউনিটে সবুজ রংয়ের CONFIRM বোতামে চাপ দিলে তার ভোট দেওয়া হয়ে যাবে।


কর্মী বাহিনী

১. নারায়ণগঞ্জে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার।
২. তার সঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে আছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান, উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, আব্দুল কাদির, আফরোজা খাতুন, মো. ইউসুফ-উর-রহমান, মোসা. মাহফুজা আক্তার, সুলতানা এলিন, মো. আ. আজিজ ও আল-আমিন।
৩. রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ছাড়াও প্রতি কেন্দ্রে একজন করে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা; ১৩৩৩ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২৬৬৬ জন পোলিং কর্মকর্তা আছেন।
৪. সব মিলিয়ে ভোটের দায়িত্বে আছেন চার সহস্রাধিক কর্মকর্তা।


আইনশৃঙ্খলায় হাজার সদস্য

১. নির্বাচনী এলাকায় ভোটের পরদিন পর্যন্ত পুলিশের ২৭টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে।
২. পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ৬৪টি; প্রতি টিমে ৫ জন করে সদস্য থাকবে।
৩. প্রতি কেন্দ্রে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে ৫ জন পুলিশ এবং ১২ (৮ জন পুরুষ, ৪ নারী) আনসার সদস্য থাকবে।
৪. বিজিবি থাকবে ১৪ প্লাটুন। আরও ৬ প্লাটুনের চাহিদা দেওয়া হয়েছে।
৫. র‍্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে ৩টি, চেকপোস্ট ৬টি, টহল টিম ৭টি ও স্ট্যাটিক ফোর্স ২টি।
৬. প্রচারের শুরু থেকে ওয়ার্ডগুলোতে ২৭ জন নির্বাহী হাকিম এবং ৯ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ভোটের দিন আরও ৩৬ জন নির্বাহী ও ১৪ জন বিচারিক হাকিম মাঠে থাকবেন।


নজর রাখবে যারা

ইসির নিবন্ধিত নয়টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৪২ জনকে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পর্যবেক্ষক সংস্থার মধ্যে আছে– জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ), সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন, রিহাফ ফাউন্ডেশন, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন এবং মানবাধিক ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (মওসুস)।

পর্যবেক্ষণ নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতিটি সংস্থা প্রতি দলে সর্বোচ্চ পাঁচজনের ভ্রাম্যমাণ দল নিয়োগ করতে পারবে। তারা নির্ধারিত ইউনিটের সব ভোটকেন্দ্রের প্রতি বুথে স্বল্প সময়ের জন্য অবস্থান ও কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। ভোটকেন্দ্রের বুথভিত্তিক সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা যাবে না।

ভোটকেন্দ্রের ভোট গণনার কক্ষে ও রিটার্নিং অফিসারের দপ্তরে ফলাফল একত্রীকরণের সময় একজন করে পর্যবেক্ষক পাঠানো যাবে।

পর্যবেক্ষক ছাড়াও হাজারখানেক স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী নিয়োজিত থাকবেন ভোটের খবর সংগ্রহে।


নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) বিগত নির্বাচন

প্রথম নির্বাচন ২০১১: ওই বছরের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থী সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানকে এক লাখের বেশি ভোটে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী।

১. আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী পান ১৮০০৪৮ ভোট; তার প্রতীক ছিল দোয়াত কলম।
২. নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত শামীম ওসমানের দেয়াল ঘড়িতে জুটেছিল ৭৮৭০৫ ভোট।
৩. বিএনপি সমর্থিত তৈমুর আলম খন্দকারের প্রতীক ছিল আনারস; তিনি পান ৭৬১৬ ভোট।
৪. এছাড়া গরুর গাড়ি প্রতীকে আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সী ৬৬১২ ভোট, হাঁস প্রতীকে শরীফ মোহাম্মদ ১৪৯৩ এবং তালা প্রতীকে আতিকুল ইসলাম জীবন ১৮৫৫ ভোট পান।


দ্বিতীয় নির্বাচন ২০১৬ : ওই বছর ২২ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে সিটি ভোটে ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে পৌনে ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র পদে পুনঃনির্বাচিত হন নৌকা প্রতীকের আইভী।

১. নৌকা প্রতীকে আইভী পান ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোট। আর সাখাওয়াত পান ৯৬ হাজার ৪৪ ভোট।
২. মেয়র পদে দুই প্রধান প্রার্থীর পর তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৯১৪ ভোট পান হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাছুম বিল্লাহ। কোদাল প্রতীকে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মাহবুবুর রহমান ইসমাইল পান ৬৭৪ ভোট; মিনার প্রতীকে ইসলামী ঐক্যজোটের এজহারুল হকের প্রাপ্ত ভোটসংখ্যা ৯১০।

টানা দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি শপথ নেন। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি কর্পোরেশনের প্রথম সভা হয়। ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটির নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যেই রোববার ভোট হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন   নাসিক   ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী   তৈমুর আলম খন্দকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী: টিআইবি

প্রকাশ: ০৩:২৪ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক . মো ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ প্রার্থী ক্ষমতাশীল দলের। অনেকেই ক্ষমতাশীলদের আত্মীয় স্বজন। প্রার্থীদের মধ্যে পুরুষের অধিক্য রয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য একই রকম। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী। রাজনীতির সঙ্গে সম্পদ বৃদ্ধির একটি যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতা আয় বৃদ্ধির সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি সম্পৃক্ততা দেখা যাচ্ছে। যে কারণে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারছে না। 

রোববার (১৯ মে) ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব কথা বলেন তিনি।

দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১৬০ উপজেলায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে পেশা হিসাবে ব্যবসায়ীদের আধিক্য রয়েছে। পর্যায়ে দ্বিতীয় ধাপে পেশা হিসাবে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৭০.৫১ শতাংশ ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৮.৭৩ শতাংশ ব্যবসায়ী।

যেখানে প্রথম ধাপে পেশা হিসাবে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৭০ শতাংশই ছিলেন ব্যবসায়ী, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৭ শতাংশ নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ২৪ শতাংশ ব্যবসাকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন।

দ্বিতীয় দাপে ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ১৫৭টির প্রার্থীর হলফনামা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে, বাকি তিনটি করেনি। প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া আট ধরনের তথ্যের বহুমাত্রিক তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।


উপজেলা   নির্বাচন   চেয়ারম্যান   টিআইবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চার বছরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরলেন মেয়র তাপস

প্রকাশ: ০২:১৪ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

দায়িত্ব গ্রহণের ৪ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিগত দিনের উন্নয়ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

রোববার (১৯ মে) নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে দায়িত্বভার গ্রহণের চার বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বৈশ্বিক করোনা মহামারির সময়ে আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করি। করোনার মাঝেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে প্রায় সব খাতেই আমরা আমূল পরিবর্তন আনতে সচেষ্ট হই। একটি উন্নত, বাসযোগ্য ঢাকা বিনির্মাণে বিগত চার বছরে সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন খাতে বিদ্যমান অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করে সুশাসন নিশ্চিত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন সাধন, আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলসহ মাণ্ডা, শ্যামপুর, জিরানি কালুনগর খাল পুনরুদ্ধার নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টিতে উদ্যোগ গ্রহণ, বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, ঢাকার সচলতা আনয়নে বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণ বাস্তবায়ন, দশকের পর দশক ধরে চলা দখল সাম্রাজ্যের অবসান ঘটানো, প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ-উদ্যান- কাঁচাবাজার, গণশৌচাগার প্রতিষ্ঠা, জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ঢাকাকে বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে নানাবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালন বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং তা অব্যাহতভাবে চলমান রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দায়িত্বভার গ্রহণের প্রথম দিন হতেই কর্পোরেশনের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি, অনিয়ম, দুর্নীতি দূর করার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমি শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ বাস্তবায়ন করে চলেছি। প্রশাসনিক সংস্কারের আওতায় এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’

দায়িত্ব পালনে অবহেলা, গাফিলতি দুর্নীতির দায়ে বিগত বছরে বিভিন্ন স্তরের ৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও কর্পোরেশনের প্রাত্যহিক কার্যক্রম সম্পাদনে জনবলের যে তীব্র সংকট ছিল তা উত্তরণে বিগত বছরে ভারী গাড়ির ১৪৩ জন চালক, ৬৬ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ৭৭ জন হিসাব সহকারী, ২৭ জন রেভিনিউ সুপারভাইজার, ৩১ জন পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক, ২০ জন স্প্রেম্যান সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন বিভাগে সর্বমোট ৮৭৯ জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ২১৭ জনের নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মেয়র বলেন, ‘মেয়র নির্বাচনের আগে আমি ঢাকাবাসীর ওপর কোনো রকমের করের বোঝা না চাপিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছিলাম। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিগত চার বছরে আমরা কোনো খাতে কোনো কর বৃদ্ধি করিনি। বরং এসময়ে ২৫টি নতুন খাত সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ১৪টি নতুন খাত হতে আমরা রাজস্ব আদায় শুরু করেছি। ফলে করোনা মহামারির মতো বৈশ্বিক সংকটের মাঝেও রাজস্ব আদায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ইতিহাস সৃষ্টি করে চলেছে, যা অদ্যাবধি অগ্রসরমান। ২০১৯-২০ অর্থবছরে কর্পোরেশনের রাজস্ব আদায় ছিল মাত্র ৫১৩.৯৬ কোটি টাকা, যা ২০২০-২১, ২০২১-২২ ২০২২-২৩ অর্থবছরে যথাক্রমে ৭০৩.৩১ কোটি, ৮৭৯.৬৫ কোটি ১০৩১.৯৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত যে রাজস্ব আদায় হয়েছে তা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫৪ কোটি টাকা বেশি। ফলে চলমান অর্থবছরে আমরা পূর্বেকার মাইলফলক অতিক্রম করতে পারব বলে আশাবাদী।’

আগে সব উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য কর্পোরেশনকে প্রকল্প নির্ভর থাকতে হতো। কিন্তু রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ঢাকাবাসীর কল্যাণে অনেক উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য আমাদেরকে এখন আর প্রকল্প নির্ভর থাকতে হয় না। বিগত চার বছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে হাজার ২০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে নানাবিধ অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন সংস্কার করেছে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ২০২০-২১ সালে ১২১.৮৫ কোটি, ২০২১-২২ সালে ৩৩৯.৪৪ কোটি, ২০২২-২৩ সালে ৩৯০.১৬ কোটি এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০০ কোটি টাকার বেশি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র, খাল- নর্দমা-বক্স কালভার্ট হতে বর্জ্য অপসারণ, সড়ক, জলাবদ্ধতা নিরসনে অবকাঠামো, সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র, গণশৌচাগার ইত্যাদি অনেক উদ্যোগ অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন সংস্কার করেছি।

তিনি আরও বলেন, ‘দখলমুক্তির ধারাবাহিকতায় আমরা দীর্ঘ এক শতাব্দী পর নলগোলা ভাওয়াল রাজবাড়ি (রাজকুঠি), ৮০ বছর পর সূত্রাপুরের মাইশা খাল, তিন দশক পর রায় সাহেব বাজার মোড়, যুগ পর লক্ষ্মীবাজারে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পার্কিংয়ের জায়গা, চার দশক পর ধলপুর ক্লিনার কলোনি হতে অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়েছি। ফলে, বিগত চার বছরে শতাধিক উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে ৫৭.৭২৪ একর ভূমি উদ্ধার করেছি, যার আনুমানিক বাজার মূল্য হাজার শত ৮৩ কোটি টাকার বেশি।’

এই চার বছরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অটল, অদম্য অনমনীয় কর্মোদ্যোগের ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে সুশাসন নিশ্চিত হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকাবাসীর আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে, যে সংস্থা একসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতো সে সংস্থা আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ, আত্মনির্ভরশীল মর্যাদাপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মেয়র।


মেয়র তাপস   চার বছর   উন্নয়ন কার্যক্রম   ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মেট্রোরেলে ভ্যাট এনবিআরের ভুল সিদ্ধান্ত: কাদের

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের এনবিআর জনপ্রিয় পরিবহন মেট্রোরেলে হঠাৎ করে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের ঘোষণা দিল। বিষয়টি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। এনবিআরের সিদ্ধান্ত ভুল। এতে করে মেট্রোরেলের সুনাম নষ্ট হয়। প্রধানমন্ত্রী এটি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

রোববার (১৯ মে) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড আয়োজিত ঢাকা মেট্রোরেলের ব্রান্ডিং সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের মেট্টোরেল অনেক সুন্দর, শব্দদূষণ নেই। মেট্টোরেল আমাদের সম্পদ। ২০৩০ সালে আমাদের টার্গেট ছিল ৬টি এম আর টি লাইনের যে কাজ শেষ হবে। 

সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের সচিব বি এম আমিনুল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন সিদ্দিক, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি জাইকা বাংলাদেশে প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহোদি।


মেট্রোরেল   ভ্যাট   এনবিআর   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মধ্যরাত থেকে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০১:৫৪ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সাগরে মাছের উৎপাদন ও প্রজনন বাড়াতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা পালনে ইতোমধ্যে কুয়াকাটা উপকূল এলাকাসহ মৎস্য বন্দর আলিপুর-মহিপুরের জেলেরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।

সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ঘোষিত ৬৫ দিনের সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে রোববার রাত ১২টায়। এই নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে রোববার (২৩ জুলাই) রাত ১২টা পর্যন্ত।

বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন সমুদ্রে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়াতে জেলেরা পড়বেন অস্তিত্ব সংকটে। একদিকে বছরে দুই বার নিষেধাজ্ঞা। অপরদিকে এই বছর ভরা মৌসুমে সাগরে মাছের আকাল পড়েছে। ঋণের বোঝা এবং ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে জেলেরা রয়েছে চরম বিপাকে। এদিকে দীর্ঘদিন কর্মহীন সময় পার করবেন তারা। তবে সরকার এই ৬৫ দিনের অবরোধের জন্য জেলে প্রতি ৫৬ কেজি করে চাল বরাদ্দ করেছে।

সমুদ্রে বর্তমানে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের প্রজননকাল হওয়ায় বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নদীর মোহনায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই সময়ে দেশের সামুদ্রিক জলসীমানায় সব ধরনের মৎস্য শিকার, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ঘোষণায় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

উপকূলীয় জেলেরা জানান, সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সমুদ্রে মাছ শিকার করা যাবে না। এতে মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সুরক্ষিত থাকলেও উপকূলে এই পেশার সঙ্গে জড়িত অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধ থাকবে দীর্ঘ দুই মাস।

অনেক জেলে অভিযোগ করে বলেন, অবরোধকালীন সময়ে প্রতিবছর ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমানায় মাছ ধরলেও কোনো ভূমিকা দেখা যায় না প্রশাসনের। তা না হলে আমাদের জালে চাহিদানুযায়ী মাছ ধরা পড়ত। তারা আরও দাবি করে বলেন, সরকার দু'বছরের স্থলে বছরে একবারসহ ভারতের সময়সীমার সঙ্গে যেনো নিষেধাজ্ঞা (অবরোধ) দেওয়া হয়।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জেলেদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলেদের ঋণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পরিকল্পনাও চলছে।


মাছ শিকার   নিষেধাজ্ঞা   মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উত্তরা-টঙ্গী পর্যন্ত মেট্রোরেলের আরও ৫ স্টেশন

প্রকাশ: ০১:৪৫ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা উত্তর স্টেশনের পরে আরও ৫ টি স্টেশন হবে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দক।

রেববার (১৯ মে) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ডিএমটিসিএল আয়োজিত ঢাকা মেট্রোরেলের ব্র্যান্ডিং সেমিনারে তিনি কথা বলেন।

মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন- রুটটি বর্তমানে মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এখন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত কাজ সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। 

রুটের কাজ শেষ হলে মেট্রোরেল অতিরিক্ত লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে বলে উল্লেখ করেন এম এন সিদ্দিক।

উত্তরা উত্তর থেকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত রুটের দৈর্ঘ্য হবে . কিলোমিটার। রুটে নতুন স্টেশন হবে। এগুলো হলো দিয়াবাড়ী বাজার, সোনারগাঁও জনপদ রোড পূর্ব, পশ্চিম, টঙ্গী বাজার, টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন।

সেমিনার উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের সচিব বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়ামা কিমিনোরি প্রমুখ।


মেট্রোরেল   স্টেশন   টঙ্গী   উত্তরা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন