ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

জ্বলছে ইউক্রেন: প্রেক্ষাপট ও পেছনের গল্প

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২


Thumbnail জ্বলছে ইউক্রেন: প্রেক্ষাপট ও পেছনের গল্প

“বিচ্ছেদের করুণ সুর বাজে আজ এই মধুর অনুরাগে
পুড়ে ছারখার এই পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়
হে প্রিয়তমা, তুমি আমার
মনে রেখো না কোনো দ্বিধা, ভয়, সংশয়”

গত দু’দিন ধরে ইউক্রেনিয়ান এক যুগলের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মাস্ক পরিহিত তরুণ-তরুণীর চেহারা বোঝা না গেলেও তাদের অব্যক্ত অনুভূতির কথা ঠিকই বোঝা যাচ্ছে। হয়ত তারা একে অপরকে আশ্বস্ত করছেন ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ইউক্রেন একদিন নিশ্চয়ই শান্ত হবে। তখন তাদের আবার দেখা হবে, পরিণয় হবে, মিলন হবে। নেটিজেনরা ছবিটিকে নানাভাবে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক ডামাডোলে অনেকেই ভুলে গিয়েছেন আজ এই যুগলের যে অবস্থা, তা তো হবার কথা ছিল না। নাকি ছিল? আসুন, একটু প্রেক্ষাপটের দিকে ফেরা যাক-

সময়টা তখন ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রতিবাদের ঢল নেমেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে বেশ লাভজনক একটি অর্থনৈতিক চুক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ। স্টেট সিকিউরিটি ফোর্স রাস্তায় নামিয়ে দেয়ার পর তারা আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। ফলে আন্দোলনটি আরও বেগবান হলো। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্ট চাপ সামাল দিতে না পেরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন।

২০১৪ সালের মার্চ মাস। রাশিয়ান সেনারা ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করলো। ক্রিমিয়রা রাশিয়ান ফেডারেশনে যোগ দেবার আগেই প্রয়োজন ছিল একটি স্থানীয় গণভোটের আয়োজনের। তার আগেই রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বললেন রাশিয়ান জনসাধারণ এবং ক্রিমিয়া ও দক্ষিন-পূর্ব ইউক্রেনের রুশ বক্তাদের অধিকার তিনি রক্ষা করতে চান। দুই মাস পর দনেতস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলের মানুষেরা একটি ভোটের আয়োজন করলো, যেখানে তারা চায় ইউক্রেন থেকে নিজেদের স্বাধীনতা হাসিল করতে।  

রাশিয়ার মদদ পাওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এবং ইউক্রেনিয়ান সেনাবাহিনীর মধ্যকার গোলযোগ পূর্ব ইউক্রেনে বেড়ে চলেছে। ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে এই পর্যন্ত যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার তিনশত মানুষেরও অধিক প্রাণ হারায়, আহত হয় প্রায় ২৪ হাজার। মস্কো তার সংযুক্তি থাকবার কথা অস্বীকার করলেও ইউক্রেন এবং ন্যাটো বারংবার বলে আসছে যে দনেতস্ক এবং রুশ ক্রস-বর্ডারে রাশিয়ান সেনা নিযুক্ত রয়েছে এবং তারা যোদ্ধাদের নানা অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে।

২০১৪ সালের জুলাই মাস থেকেই দেখা গেলো যে ইউক্রেনের আভ্যন্তরীণ সমস্যা একটি আন্তর্জাতিক মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে রাশিয়ার অবস্থা আরও সঙ্কটময় হয়ে দাঁড়ায়, যখন ইউক্রেনের আকাশসীমায় একটি মালয়েশিয়ান ফ্লাইটকে গুলি করে অন্তত ২৯৮ জন যাত্রীকে হত্যা করা হয়। ডাচ এয়ার এক্সিডেন্ট তদন্তকারীরা তাদের তদন্তের ফলাফলে ২০১৫ সালের অক্টোবরে জানায় যে রাশিয়ার তৈরি একটি সারফেস-টু-এয়ার মিসাইলের মাধ্যমে এই আঘাত হানা হয়েছে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তারা আরও জানায় যে মিসাইল সিস্টেমটি তৈরি করা হয়েছিল রাশিয়ায়। ধারণা করা হয়েছিল এটি নেয়া হয়েছিল পূর্ব ইউক্রেনে এবং এয়ারপ্লেনটি বিধ্বস্ত করবার পর তা আবার রাশিয়ার সীমানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং ইউক্রেন চেষ্টা করে যাচ্ছে মিনস্ক চুক্তির সাপেক্ষে এই হানাহানি বন্ধ করবার। এই চুক্তির মধ্যে রয়েছে যুদ্ধসমাপ্তি, ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারের সমাপ্তি, গোলযোগপূর্ন স্থানে ইউক্রেনিয়ান সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। তবে তাদের এই কূটনৈতিক বোঝাপড়ার ব্যাপারটি আর সদগতির দিকে যায়নি।

২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে ন্যাটো ঘোষণা দেয় যে মিত্রশক্তির সেনাবাহিনী পূর্ব ইউরোপে চক্কর দেবে যাতে রাশিয়ার আগ্রাসন রোধ করা যায়। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ড। মূলত, বাল্টিক অঞ্চলে রাশিয়া যেন আধিপত্য বিস্তার করে আগ্রাসন চালাতে না পারে, সেটিই ছিল ন্যাটোর লক্ষ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটো ট্যাঙ্ক ব্রিগেডকে সেনাদলের সাথে পোল্যান্ডে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে যোগ দেয়, যাতে আরও জোরদার বাঁধার মুখে তারা তীব্রভাবে রুখে দাঁড়াতে পারে।

২০১৪ সালে সংকটময় পরিস্থিতি শুরু হবার পর থেকে এই পর্যন্ত ইউক্রেন বেশ কয়েকবার সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে। ২০১৫ সালের দিসেম্বর মাসে প্রায় সোয়া দুই লক্ষ মানুষ সাইবার আক্রমণের কারণে সংযোগ হারায়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে কিয়েভ ঠিক একইধরণের একটি সাইবার আক্রমণের কারণে ব্ল্যাকআউটের শিকার হয়। ২০১৭ সালের জুন মাসে ইউক্রেনের সরকার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নটপেট্যা সাইবার আক্রমণের শিকার হয়। এই আক্রমণের ফলে ইউক্রেনের কম্পিউটার সিস্টেমে এককথায় ধস নামে এবং বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিসাধন হয়।  

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ইউক্রেনে সিকিউরিটি সহায়তা আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়, যদিও পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা তখনও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন রাশিয়ার বেশ কিছু কর্মকর্তাসহ ২১ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এছাড়াও নয়টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় যারা এই সঙ্কটের সাথে যুক্ত ছিল। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ইউক্রেনের কাছে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ওয়েপন বিক্রি করার জন্য সবুজ সঙ্কেত দেয়া হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ইউক্রেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোভুক্ত আরও সাতটি দেশের সাথে যোগ দেয়। পশ্চিম ইউক্রেনে এই আকাশসীমায় কুচকাওয়াজ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ২০১৮ সালে সবচেয়ে বিশাল আকারের কুচকাওয়াজ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।

ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এই আঘাত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খুবই বিশাল এবং সংঘাতময় পদক্ষেপ। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক আরও তলানিতে এসে ঠেকেছে। এছাড়াও ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশের সাথে রাশিয়ার যে সম্পর্ক, তাও ক্রমহ্রাসমান। ইউক্রেনের সাথে এই সংঘাতময় পরিস্থিতি রাশিয়া ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের সম্পর্কও খারাপের দিকে নিয়ে যাবে। বৈশ্বিকভাবে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে প্রতিটি দেশে। অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ, সাইবার সিকিউরিটি, নিউক্লিয়ার চুক্তি, এনার্জি সিকিউরিটি, কাউন্টার টেরোরিজমসহ রাজনৈতিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে। সিরিয়া, লিবিয়ার মতো দেশগুলো হয়ে পড়বে আরও সংঘাতময় এবং অসহায়। ইতোমধ্যেই ন্যাটো বলে দিয়েছে যে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো যদি আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, তাহলে এই সংঘাতের মধ্যে তারা জড়াবে না। ইউক্রেনের অবস্থা হয়ে গিয়েছে এখন পাড়ার যুদ্ধগুলোর মতো, যেখানে বড়ভাইয়ের ভরসায় বাকিরা যুদ্ধে নেমে দেখে বড়ভাই পিঠটান দিয়েছে।

সংঘাতময় এই পরিস্থিতি থেকে ইউক্রেনের উত্তরণের উপায় কী, সেটা সময়ই বলে দেবে!

ইউক্রেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

জার্মানিতে আবাসিক ভবনে বিস্ফোরণ, আগুনে পুড়ে নিহত ৩

প্রকাশ: ০২:৫৬ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

জার্মানির ডুসেলডর্ফে একটি আবাসিকভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। 

দমকল ও পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছয়তলা বাড়িটির একতলায় একটি খাদ্য ও পানীয়র দোকান ছিল। সেখানেই বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। তারপর আগুন লাগে। আশপাশের বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে যায়।   

ওই বাড়িতে আগুন দ্রুত ছড়াতে থাকে। দুই ও তিনতলার বাসিন্দাদের অনেকেই কাচ ছড়ানো রাস্তায় লাফিয়ে নামেন।

পুলিশ জানিয়েছে, আগুন কেন লাগলো, তা স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে তাদের মনে হয়েছে আগুন লাগানো হয়নি।

দমকল, পুলিশ ও জরুরি সার্ভিসের প্রায় একশটি গাড়ি ঘটনাস্থলে যায়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের প্রথমে উদ্ধার করা হয়।

দমকলবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নয় ঘণ্টা ধরে চলা অপারেশনে ৭০ জনকে তারা সাহায্য করেছেন।

এই ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন। একজন তার অ্যাপার্টমেন্টে। বাকি দুইজন সিঁড়িতে। ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাড়িটিতে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি থেকে বিস্ফোরণ হয়েছিল, নাকি এটা নিছক দুর্ঘটনা ছিল বা আগুন লাগানো হয়েছে, তা এখানো স্পষ্ট নয়।


জার্মানি   বিস্ফোরণ   আগুন   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

স্বেচ্ছামৃত্যুতে ব্যতিক্রমী আয়োজন নেদারল্যান্ডসের তরুণীর

প্রকাশ: ০১:৪১ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

স্বেচ্ছায় মৃত্যুর অনুমতি পেয়েছেন নেদারল্যান্ডসের তরুণী জোরায়া বিক। ২০২০ সালে কর্তৃপক্ষের কাছে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন করেন ২৯ বছর বয়সী এ তরুণী। আবেদনের প্রেক্ষিতে এবার মে মাসে তিনি অনুমতি পেয়েছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করবেন এ ডাচ তরুণী।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছেন জোরায়া বিক। ছোটবেলা থেকেই দীর্ঘস্থায়ী হতাশা, উদ্বেগ, ট্রমা এবং ব্যক্তিত্বের অভাব বোধ করতেন তিনি। এমনকি তার অটিজম ধরা পড়েছে। যখন জোরায়া তার প্রেমিককে খুঁজে পান তখন ভেবেছিলেন তার প্রেমিক তাকে যে নিরাপদ পরিবেশ দিয়েছিল তা তাকে সুস্থ করে তুলবে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। তারপরও জোরায়া নিজের ক্ষতি করা অব্যাহত রেখেছিলেন এবং আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠেছিলেন।

এ ধরনের সমস্যার জন্য তিনি চিকিৎসা নেওয়া শুরু করলেও দীর্ঘমেয়াদি কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে একপর্যায়ে তিনি বাঁচার আশা হারিয়ে ফেলেন। তবে তার এক স্কুলের বন্ধুর আত্মহত্যা ও পরিবারের ওপর বিরূপ প্রভাব তাকে আত্মহত্যা করতে নিরুৎসাহিত করে। তারপরই স্বেচ্ছায় মৃত্যুর জন্য আবেদন করেন জোরায়া।

দীর্ঘ ও কঠোর প্রক্রিয়া অনুসরণের পর গত সপ্তাহে তার আবেদন গ্রহণ করা হয়। নেদারল্যান্ডসে ২০০২ সাল থেকেই স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণের আইন রয়েছে। যেসব ব্যক্তি কঠিন রোগে ভুগছেন এবং সেরে ওঠার কোনো সম্ভাবনা নেই তারাই কেবল স্বেচ্ছায় মৃত্যুর অনুমতি পেতে পারেন।

এরই মধ্যে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর সকল প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হবে তাও জানিয়েছেন জোরায়া বিক। মৃত্যুর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তার বাড়িতেই চিকিৎসক আসবেন। শুরুতে তাকে ঘুমের ওষুধ দেয়া হবে, যতক্ষণ না পর্যন্ত তিনি কোমাতে যাচ্ছেন। তারপর তাকে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বন্ধের ওষুধ দেওয়া হবে। বিষয়টি এমন হবে যে তিনি মনে করবেন তিনি ঘুমিয়ে পড়ছেন। এ সময় জোরায়ার সঙ্গে তার প্রেমিক উপস্থিত থাকবেন, তবে মৃত্যুর আগমুহূর্তে তার প্রেমিক চাইলে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে পারবেন বলেও জানান জোরায়া।

জোরায়া জানান, মৃত্যুর কথা চিন্তা করলে তার ভয় লাগে। অপরদিকে পরিবারের কথা চিন্তা করলে খারাপ লাগে। তবে তিনি সব জেনে বুঝেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি চাইলে যে কোনো মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারবেন।


স্বেচ্ছামৃত্যু   নেদারল্যান্ডস   তরুণী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি সত্য নয়: যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ০১:৪০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হচ্ছে, এমন দাবি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মূখ্য উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

ব্রিফিংয়ে অংশ নেওয়া এক সাংবাদিক জানতে চান-বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর সঙ্গে একটি বৈঠক শেষে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেছেন, র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হোয়াইট হাউস এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট কাজ করছে। এ বিষয়ে বিচার বিভাগকে বলা হয়েছে এবং প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।

এই দাবি কী সত্য?

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, এমন দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যুক্তরাষ্ট্র র‍্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে না। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা সমূহ আরোপ করা হয়েছে আচরণ পরিবর্তন এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ কমার কথা স্বীকার করেছেন ডোনাল্ড লু।

ঢাকায় আলোচনায় তিনি বলেছেন, পররাষ্ট্র দপ্তর, হোয়াইট হাউসও র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পক্ষে। তবে এটি আইনি বিষয়। এটি পুরোপুরি তাদের হাতেও নেই। ডোনাল্ড লু র‌্যাবের উন্নতির প্রশংসার পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী অন্য সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন।


র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

১০ হাজারের অধিক বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য

প্রকাশ: ০১:২২ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদনকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বড় রকমের দুঃসংবাদ দিয়েছে ইউরোপের এই দেশটির সরকার। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তিতে সম্মত হয়েছে এবং এই চুক্তির আওতায় অ্যাসাইলাম আবেদন প্রত্যাখান হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাসাইলাম আবেদন করে ব্যর্থ হওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির অধীনে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। মূলত ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর দেশটির ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহারকারীদের মধ্যে বাংলাদেশিরা শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে রয়েছে।

দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, গত বছর প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশ করেছেন শুধুমাত্র স্থায়ীভাবে দেশটিতে থাকার প্রয়াসে। আর দেশটিতে প্রবেশের পর আশ্রয়ের আবেদন জমা দিয়েছেন তারা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, অভিবাসীরা গত বছরের মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, কর্মী বা ভিজিটর ভিসায় ব্রিটেনে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করেছেন। মূলত ব্রিটেনে প্রবেশেরপেছনের দরজাহিসেবে কাজে লাগানোর প্রয়াসে এসব ভিসা ব্যবহার করেছেন তারা। তবে দেশটিতে বাংলাদেশিদের প্রাথমিক আশ্রয় আবেদনের মাত্র শতাংশই সফল হয়েছে।

এমন অবস্থায় যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বাংলাদেশের সাথে একটি ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তির অধীনে কেবল ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীরাই নয়, বিদেশি নাগরিকদের যারা অপরাধী এবং যেসব ব্যক্তি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশের পর বাড়তি সময় অতিবাহিত করেছেন তাদেরও নির্বাসনের কাজ সহজতর হবে।


বাংলাদেশি   যুক্তরাজ্য  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গণআন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশে ফিরেছেন যারা

প্রকাশ: ০১:২০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বৈরশাসনের জন্য অনেক গণতন্ত্রকামী নেতাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে দীর্ঘ সময় তারা নির্বাসিত জীবনযাপন করেছে। সেইসব নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার জনগণ বা দেশের স্বার্থে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনও করেছে। তাদের মধ্যে বহুল আলোচিত- ইরানে ইসলামী বিপ্লবের সূচনাকারী আয়াতুল্লাহ খোমেনি, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর কন্যা বেনজির ভুট্টো। মিয়ানমারের সাবেক নেত্রী অং সান সুচি এবং থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা।

আয়াতুল্লাহ খোমেনি 

১৯৭৮ সালে ইরানে যখন চরম অস্থিরতা এবং সহিংসতা শুরু হয়, আয়াতোল্লাহ খোমেনি তখন ইরাকে শিয়াদের পবিত্র নগরী নাজাফে কড়া পাহারায় নির্বাসিত জীবনে ছিলেন।

ইরাকে তখন সাদ্দাম হোসেনের শাসন। ইরানের শাহ আয়াতোল্লাহ খোমেনিকে ইরাক থেকে বহিষ্কারের জন্য সাদ্দাম হোসেনকে অনুরোধ করেন। বহিষ্কৃত আয়াতোল্লাহ ফ্রান্সে পাড়ি জমালেন এবং সেখান থেকে সহজে সারা পৃথিবীর উদ্দেশ্যে কথা বলার সুযোগ পেয়ে গেলেন। তার আপোষহীন এবং জোরালো সব বক্তব্যের কারণে দ্রুত তিনি সারা বিশ্বের নজর কাড়েন। শেষ পর্যন্ত ১৯৭৯ সালে জানুয়ারিতে যখন শাহ দেশ ছাড়তে বাধ্য হন, আয়াতোল্লাহ দেশে ফেরার সুযোগ পান এবং ফিরেই রাজতন্ত্র উপড়ে ফেলেন। রাজতন্ত্র ধ্বংস হয়ে ইরানে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠিত হলো। মুসলিম বিশ্ব পক্ষে-বিপক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়লো এবং পশ্চিমা উদারপন্থার প্রধান চ্যালেঞ্জার হয়ে পড়লো আয়াতোল্লাহ খোমেনির নতুন ইরান।

নওয়াজ শরিফ

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিরোধ ছিল দেশটির মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) প্রধান নওয়াজ শরীফের। তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুতও হয়েছিলেন। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালে নওয়াজকে সরকারি পদে অযোগ্য বলে ঘোষণা করেন। ২০১৮ সালে দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। দুর্নীতির অভিযোগে জেলেও ছিলেন নওয়াজ শরীফ। তবে স্বাস্থ্যগত বিবেচনায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। চিকিৎসার কারণে তিনি লন্ডনে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান। চার বছরের স্বেচ্ছানির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের আগে গত বছর ২১ অক্টোবর দেশে ফিরেছেন। এর আগে সৌদি আরবে দশ বছর স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে ফিরে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন নওয়াজ।

বেনজির ভুট্টো

বেনজির ভুট্টো। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। মুসলিম বিশ্বের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর কন্যা। বাবা জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা, দাদা শাহ নাওয়াজ ভুট্টো ছিলেন বড় রাজনীতিবিদ। ১৯৮৮ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন বেনজীর ভুট্টো। কিন্তু ১৯৯০ সালে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের মাত্র দুই বছরের মাথায় তাকে অব্যাহতি দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গুলাম ইসহাক খান।

পরের বছর আবারো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বেনজীর ভুট্টো। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে বেনজিরকে ফের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করেন পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ওয়াসিম সাজ্জাদ। তিনি ও তার স্বামী জারদারীকে গ্রেপ্তার করে কারাদন্ড দেয়া হয়। তিনি ফের নির্বাসনে লন্ডনে পাড়ি জমান। ৮ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ এর আমলে ২০০৭ সালের অক্টোবরে করাচি ফেরেন বেনজির ভুট্টো। বেনজির ভুট্টোর রাজনৈতিক জীবন ছিল উত্থান-পতনে ভরা। তাকে নির্বাসনে যেতে হয়েছিল দু'বার - যুক্তরাজ্যে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে । দু'বারই তিনি নির্বাসন থেকে পাকিস্তানে ফিরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।

অং সান সু চি

২০২১ সালে রক্তপাতহীন এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন মিয়ানমারের তৎকালীন নেত্রী অং সান সু চি (৭৮)। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ, ঘুষ কেলেঙ্কারি, আইন লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তাঁর; যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। এর আগে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় ১৯৮৮ সালে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে সবার নজর কাড়েন সচিব। ওই বছরই রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি এনএলডি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি আন্দোলনের কারণে সামরিক জান্তার বিরাগভাজন হয়ে পরের বছরই নিজ বাড়িতে গৃহবন্দি হতে হয় তাকে। মানবাধিকারের বাতিঘর আর ক্ষমতাহীনদের জন্য নির্ভরতার অনন্য উদাহরণ। ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হন। সূচি বিশ্বে পরিচিতি পান গণতন্ত্রের রোল মডেল হিসেবে। ২০১০ সালে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে আবারও সক্রিয় হন। রাজনীতিতে অধিকার আদায়ের লড়াইকে সামনে রেখে ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসে তার রাজনৈতিক দল এনএলডি স্টেট কাউন্সিলর বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শুরু হয় তার নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়। 

থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা

১৫ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফিরেন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা। গত বছর ১০ আগস্ট বিমানে করে তিনি দেশে আসেন। ৭৪ বছর বয়সী থাকসিন থাইল্যান্ডের দুইবারের প্রধানমন্ত্রী। তবে ২০০৬ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর দুর্নীতির দায়ে সাজা এড়াতে ২০০৮ সালে থাইল্যান্ড থেকে পালিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই চলে যান তিনি। এরপর থেকে তিনি দুবাইয়ে বসবাস করছেন।


গণআন্দোলন   নওয়াজ শরীফ   গণতন্ত্র   থাকসিন সিনাওয়াত্রা   বেনজির ভুট্টো   আয়াতুল্লাহ খোমেনি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন