ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

অস্ত্র কেনার আড়ালে যে উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টায় পুতিন!

প্রকাশ: ০৪:২৬ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য রাশিয়া সফরে গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই কিমের এ রাশিয়া যাত্রার কথা শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে রাশিয়ায় পৌঁছালেন তিনি। রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কিম জং উন রাশিয়ার পূর্বাঞ্চল সফর করবেন। তবে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে কিমের মূল লক্ষ্য মূলত রাশিয়ায় অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা করা। জানা গেছে, রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনবে আর এ কারণেই পুতিনের সাথে বৈঠক করতে কিমের এই রাশিয়া সফর। কিন্তু পরাশক্তি রাশিয়ার মত পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডারে পরিপূর্ণ দেশ কেন অস্ত্রের জন্য উত্তর কোরিয়ার দ্বারস্থ হবে? নাকি এর পেছনে আছে আরও বৃহৎ স্বার্থ, যাতে লাভ হতে পারে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়া দু’দেশেরই?

অতি নিভৃতিকামী উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করলে এর উত্তর পাওয়া খুব কঠিন। কেননা, দেশটি কখনো তাদের বাণিজ্যের পরিসংখ্যান জানায় না। তেমনি জানায় না এর সম্পদের পরিমাণও।

কোভিড মহামারির কারণে কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় গত তিন বছর ধরে সীমান্ত বন্ধ রেখেছিল উত্তর কোরিয়া। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এমনকী তাদের বাণিজ্যও স্থগিত করা হয়েছিল। মানবিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর মতে এর ফলেই দেশটিতে খাদ্য ও ওষুধের চরম ঘাটতি দেখা দেয়। দু বছর আগে মি. কিম দেশটিতে “খাদ্য সংকটেরকথাও স্বীকার করেছেন যা বেশ বিরল। সাথে সাথে দেশটির অর্থনীতিও পড়ে চরম ধ্বংসের মুখে, যে সংকট অবস্থা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি উত্তর কোরিয়া। আর এই সংকট অবস্থা কাটাতেই মি. কিমের এই রাশিয়া সফর বলে অনেকে মনে করছেন।

মূলত, রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রির মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া দেশটির অর্থনৈতিক ভগ্নদশা কিছুটা হলেও কাটাতে চাইছে। অস্ত্রের দিক দিয়ে বেশ ভালো ক্ষমতাধর দেশটির এদিক দিয়ে কোনো কমতি নেই, যেরকম অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আছে। তাই, রাশিয়ার সাথে অস্ত্রের এ বাণিজ্য উত্তর কোরিয়ার জন্য ব্যাপক লাভজনক হবে।

অপরদিকে, রাশিয়া চাইছে বিশ্ব অর্থিনীতিতে ডলারের প্রভাব বিস্তার কমাতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই বিশ্বের রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে মার্কিন ডলারের একাধিপত্য বজায় রয়েছেআন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য অনুসারে (আইএমএফ) বর্তমানে বিশ্বের ৬০ শতাংশ রিজার্ভই মার্কিন ডলারে। বিশ্ব বাণিজ্যেও মার্কিন ডলারই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাতে বিশ্বের অনেক দেশই ডলারের রিজার্ভ ও লেনদেন নিয়ে বর্তমানে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ভারত ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলো এখনই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের বিকল্প হিসেবে অন্য মুদ্রা ব্যবহারের তোড়জোড় শুরু করেছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্য মুদ্রা ব্যবহারও শুরু করে দিয়েছে।

ডলারের আধিপত্য নিয়ে বিশ্বের দেশগুলোর এ অস্বস্তি বহু বছর ধরেই চলমান। মার্কিন মিত্র দেশগুলোও এই বিষয়টি নিয়ে নিজেদের অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। কিন্তু বর্তমান ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এটি আরও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর করার পরপরই ইউরোপ এবং আমেরিকা মিলে রাশিয়ার উপর নানা ধরণের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। কিন্তু পুতিনের চমৎকার কুটনীতির প্রয়োগ এসকল নিষেধাজ্ঞাকে ম্লাণ করে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের প্রবল নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে রাশিয়া তাদের প্রায় মূল্যহীন হয়ে পড়া মূদ্রা রুবলকে তাদের জীবাশ্ম জ্বালানী অর্থাৎ গ্যাস ও তেল রপ্তানির মাধ্যমে শক্তিশালী করে তোলে। রাশিয়া বলে, তাদের কাছ থেকে যারা তেল গ্যাস ক্রয় করবে, সেটির মূল্য পরিশোধ করতে হবে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের মাধ্যমে। এর ফলে ইউরোকে রুবলে পরিবর্তন করা হয়।

এছাড়াও যারা রুবল বিক্রি করে ডলার বা ইউরো কিনবেন না, অর্থাৎ রুবল সঞ্চয় করবেন, তাদের জন্য প্রণোদনাও ঘোষণা করে রাশিয়া। রাশিয়ার অনেক কোম্পানি বিদেশি কোম্পানিগুলোর সাথে ব্যবসা করে ডলার, ইউরো এবং ইয়েন আয় করে। কিন্তু এখন রাশিয়ার কোম্পানিগুলো বিদেশে ব্যবসা করে যে আয় করবে তার ৮০ শতাংশ রুবলে কনভার্ট করে নিতে হচ্ছে। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের একটি বড় চাহিদা তৈরি হয়েছে। রাশিয়ার কোন নাগরিক যাতে দেশের বাইরে অর্থ নিতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নিয়েছে পুতিন সরকার। কারণ আগে দেশের বাইরে অর্থ পাঠাতে হলে সেটি ডলার বা ইউরোতে পাঠতে হতো। যেহেতু সেটি বন্ধ করা হয়েছে, সেজন্য ডলার বা ইউরোর চাহিদা কমেছে। ফলে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা দেশের ভেতরে রয়ে গেছে। আর এটি রুবলের দরপতন ঠেকাতে সাহায্য করেছে।

রাশিয়ার এ অবস্থা দেখে আন্তর্জাতিক বিশ্বের অন্য দেশগুলোও ডলারের বিকল্প খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠছে। কারণ মার্কিন মুদ্রানীতি বাকি বিশ্বের উপর খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই প্রভাবকে অস্বস্তিকর বলে মনে করে এবং তারা মার্কিন ডলারের বিকল্প হিসেবে অন্যান্য মুদ্রার ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ফ্রান্স ও ভারতও রয়েছে।

বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিমের সাথে অস্ত্র কেনা বিষয়ক বৈঠক করছেন পুতিন। মূলত, রাশিয়ান মূদ্রা রুবলের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনে বিশ্ব বাণিজ্যে রুবলের ব্যবহারের বিস্তার ঘটানোই পুতিনের মূল উদ্দেশ্য বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকগণ। কিম এই অস্ত্র বেচা অর্থ বা রুবল নিয়ে চীনের সাথে বাণিজ্য করলে রুবলের ব্যবহার বা প্রসার আরও বাড়বে।

মূলত প্রত্যেক দেশ তার নিজস্ব মূদ্রা ব্যবহার করে ব্যবসা বাণিজ্য করলে বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলার বা ইউরোর চাহিদা কমবে এটিই পুতিনের আসল উদ্দেশ্য।

এদিকে মি. কিমের এই রাশিয়া সফর নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার পুতিনকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “সাহায্যের জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন ও অস্পৃশ্য কিমের কাছে হাত পেতে পুতিন এটিই দেখাচ্ছেন যে, ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন চালানো তার (পুতিনের) অবশ্যই ‘কৌশলগত ব্যর্থতা’ ছিল।“

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে মিলারের এসব কথাবার্তা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো আর কিছু নয় বলেই মনে করেন বিশ্লেষকগণ। কারণ পুতিনের এসব কুটনৈতিক চাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অজানা কিছু নয়। বিশ্ব অর্থনীতিতে রুবলের ব্যবহারের প্রসার ঘটানো বা ডলারের প্রভাব বিস্তার রোধ করতে যে পুতিন বর্তমানে বদ্ধপরিকর। আর এ কারণেই ইউক্রেন যুদ্ধকে পুঁজি করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছে দেশটি।


পুতিন   কিম জং উন   অস্ত্র আলোচনা   রাশিয়া   উত্তর কোরিয়া   রুবল   ডলার   বিশ্ব অর্থনীতি   বিশ্ব সংবাদ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির লাশ উদ্ধার

প্রকাশ: ০৪:১৩ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান। পরে দুর্ঘটনাস্থল থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আর এর মাধ্যমে অনুসন্ধান অভিযানও সমাপ্ত করা হয়েছে। সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

সোমবার ইরানের রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান এবং অন্যদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর এর মাধ্যমে অনুসন্ধান অভিযানও শেষ হয়েছে। 

রেড ক্রিসেন্ট প্রধান পীর হোসেইন কুলিভান্দ রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেন, 'আমরা শহীদদের মরদেহ ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজে স্থানান্তর করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি। তল্লাশি অভিযান শেষ হয়েছে।'

প্রসঙ্গত, রোববার উত্তর-পশ্চিম ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এবং আরও কয়েকজন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি জানায়।

এর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার বেশ লম্বা সময় পর অবশেষে উদ্ধারকারীরা রাইসির হেলিকপ্টার খুঁজে পান। তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন এবং আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ জানিয়েছিল, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির দুর্ঘটনাস্থলে 'কোনও জীবিত ব্যক্তি' পাওয়া যায়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইরানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, 'প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হেলিকপ্টারে থাকা সকল যাত্রী দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন'।

পরে ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহসেন মনসুরি এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক বিবৃতিতে রাইসির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।


ইরান   প্রেসিডেন্ট   ইব্রাহিম রাইসি   পররাষ্ট্রমন্ত্রী   হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ

প্রকাশ: ০৩:৫১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর সন্ধান মিলল ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি কেউই আর বেঁচে নেই।

সোমবার (২০ মে) এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের ছবি-ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

ইরানের রাষ্ট্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি একাধিক ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে।

এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন এবং আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির দুর্ঘটনাস্থলে 'কোনও জীবিত ব্যক্তি' পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত রোববার (১৯ মে) একটি বাঁধ উদ্বোধন করে ইরানি প্রদেশ পূর্ব আজারবাইজানের তারবিজে যাচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এই সময় তার সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। তারবিজে ফেরার পথেই হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।


ইব্রাহিম রাইসি   হেলিকপ্টার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাইসির মৃত্যুতে ইরানে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:৪১ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ানের নিহতের ঘটনায় পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ইরান। সোমবার (২০ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে এমন পরিস্থিতিতে ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটির বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবেরের নাম অনুমোদন করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। তিনি দুই মাস এ দায়িত্ব পালন করবেন।

ইরানের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ গার্ডিয়ান কাউন্সিল সোমবার (২০ এপ্রিল) জানিয়েছে, মোখবার দেশের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করার ৫০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আলি খামেনি জানিয়েছেন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মোখবারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পাঁচ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেন তিনি।

আলি খামেনির বরাত দিয়ে ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম ইরনা জানায়, মোখবার দেশের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করবেন এবং ৫০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবেন।

উল্লেখ, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মিলেছে দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর। তবে প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ ৯ জন নিহত হয়।


ইব্রাহিম রাইসি   ইরান   হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা   রাষ্ট্রীয় শোক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানকে সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় সব করতে প্রস্তুত রাশিয়া

প্রকাশ: ০৩:২৭ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ার পর রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান শোক প্রকাশ করেছেন। সেই সাথে ইরানের এমন পরিস্থিতিতে সহযোগিতা করার জন্যও হাত বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্র।

ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইরানকে সহযোগিতা করার জন্য এই মুহূর্তে যা যা প্রয়োজন সব করতে প্রস্তুত রয়েছে রাশিয়া। রোববার (১৯ মে) ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন মস্কোয় ইরানি রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালির সঙ্গে দেখা করে এ কথা বলেন।

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর শুনে প্রেসিডেন্ট পুতিন ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তার কার্যালয়ে জরুরি আমন্ত্রণ জানান। এ সময় তিনি দুর্ঘটনার বিস্তারিত খোঁজখবর নেন এবং ইরানের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রস্তুতির কথা জানান।

যদিও রোববার রাশিয়ায় সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন ছিল তবুও প্রেসিডেন্ট পুতিন জরুরিভিত্তিতে তার অফিসে আসেন এবং ইরানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় সেখানে শীর্ষপর্যায়ের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, এই দুর্ঘটনায় তারা অত্যন্ত দুঃখিত এবং মর্মাহত। রাশিয়ার পক্ষ থেকে শোকবার্তা ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রদূত কাজেম জালালীকে অনুরোধ জানান।

প্রেসিডেন্ট পুতিন আরও বলেন, উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়ার জন্য তারা দুটি বিমান প্রস্তুত রেখেছেন, সঙ্গে রয়েছে ৫০ সদস্যের একটি শক্তিশালী ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল।

এর আগে রোববার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। হেলিকপ্টারে রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি এবং এই প্রদেশে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন।

দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়। এ দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমাতি কেউই আর বেঁচে নেই। সোমবার (২০ মে) বিবিসি, রয়টার্সসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ইব্রাহিম রাইসি ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট। তিনি একাধারে রাজনীতিবিদ ও বিচারক। রাইসি বিশ্ব রাজনীতিতেও অন্যতম প্রভাবশালী নেতাদের একজন। ইব্রাহিম রাইসি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার কারণেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমেছে।

ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।


পুতিন   রাশিয়া   রাইসি   ইরান   ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা

প্রকাশ: ০৩:১০ পিএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান মারা গেছেন। এর ফলে ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোহাম্মদ মোখবেরের নাম অনুমোদন করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। তিনি দুই মাস এ দায়িত্ব পালন করবেন।

ইরানের সংবিধান অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মারা গেলে বা কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে হবে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলাবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

নতুন প্রেসিডেন্ট যিনিই হন না কেন, তাকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদন নিতে হবে। ইরানে রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনি। ক্ষমতাকাঠামোয় এরপরই রয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাকে সরকারের প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

রাইসি নিহত হওয়ায় খামেনির অনুমোদন সাপেক্ষে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবারের ইরানের পরবর্তী কাণ্ডারি হওয়ার পথ খুলে গেছে বলা যায়।

আগে ইরানে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছিল। ১৯৮৯ সালে তা বিলুপ্ত করা হয়। সরকারে প্রেসিডেন্টের পরবর্তী পদে বসানো হয় একজন ভাইস প্রেসিডেন্টকে। তবে প্রেসিডেন্টের মতো এই পদ নির্বাচিত নয়। ভাইস প্রেসিডেন্টকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

২০২১ সালের আগস্টে ইরানের প্রেসিডেন্ট হন ইব্রাহিম রাইসি। এর পরপরই খামেনির অনুমতি সাপেক্ষে মোহাম্মদ মোখবারকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সংবিধান সংশোধনের পরবর্তী সময়ে ইরানের সপ্তম ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ মোখবার।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে মোহাম্মদ মোখবার ইরানের সিতাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা ইরানের অন্যতম শক্তিশালী একটি অর্থনৈতিক কনগ্লোমারেট (একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অধীন থাকা বিভিন্ন শিল্পগোষ্ঠী)। মূলত দাতব্যকাজের জন্য এ প্রতিষ্ঠান বিশেষভাবে পরিচিত। সর্বোচ্চ নেতার সরাসরি তত্ত্বাবধানে এটা পরিচালিত হয়। একসময় ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের গভর্নর ছিলেন মোহাম্মদ মোখবার।

ইরানের প্রেসিডেন্ট   ইব্রাহিম রাইসি   হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন