আওয়ামী লীগ টানা দেড় দশক ক্ষমতায়। তাই
দেশ জুড়ে ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করা মানুষগুলো 'আওয়ামী লীগ' হয়ে গেছে। কথায় কথায় আওয়ামী লীগ বলতে বলতে মুখে ফেনা তোলে।
বঙ্গবন্ধুর নাম বলতে বলতে তসবি টেপে। কিন্তু মনে প্রাণে আওয়ামী লীগের আদর্শ মানে না।
বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করে না। প্রশাসনেও একই অবস্থা। প্রশাসনের সর্বস্তর যেন এখন আওয়ামী
লীগের প্রাণকেন্দ্র। বড় বড় অফিসারদের অফিস কক্ষে বা বাসার ড্রয়িং রুমে বঙ্গবন্ধুর লেখা
দু তিনটি বই শোভা পায়। বইগুলা তাঁরা পড়ে দেখেছেন কিনা তাতে আমি সন্দিহান। পড়ে দেখলে
বঙ্গবন্ধুর জীবনী থেকে শিক্ষা নিতেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করতেন।
বঙ্গবন্ধু সরকারী কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে
বলে গেছেন, "মনে রেখো এটা স্বাধীন দেশ। এটা বৃটিশের কলোনি নয়, পাকিস্তানের কলোনি
নয়। যে লোককে দেখবে তার চেহারাটা তোমার বাবার মতো, তোমার ভাইয়ের মতো, ওদেরই পরিশ্রমের
পয়সা, ওরাই সম্মান বেশি পাবে। কারণ ওরা নিজেই কামাই করে খায়।" অথচ মানিকগঞ্জের
শিবালয়ের কৃষি অফিসের দুজন কর্মকর্তা বাবার বয়সী, বড় ভাই এর মত দেখতে ৬৫ বছরের কৃষক
ফজলুর রহমানের সাথে সম্মান দিয়ে কথা বলেননি। অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। অপমান করেছেন।
অবজ্ঞা করেছেন। অফিস থেকে বের করে দিয়েছেন।
কৃষক ফজলুর রহমানের অপরাধ কি? তিনি
তাঁর ক্ষেতের একগুচ্ছ পোকা ধরা ধানগাছ নিয়ে যান উপজেলা কৃষি অফিসে। ধান গাছের পোকার
প্রতিকার চান। ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন একজন উপ-সহকারী কৃষি
কর্মকর্তা। কৃষককে বলেন, ‘আমি কি আপনার কামলা দেই? আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন?
আপনি বললেই মাঠে যেতে হবে? যা পারেন করেন গা। আপনি বেরিয়ে যান। যদি বয়স্ক লোক না হতেন,
তাহলে আপনাকে দেখে নিতাম।’ অথচ বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন, "আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে
দেয় গরীব কৃষক, আপনার মাইনে দেয় ওই গরীব শ্রমিক, আপনার সংসার চলে ওই টাকায়….। ওদের
সম্মান করে কথা বলুন। ইজ্জত করে কথা বলুন। ওরাই মালিক।… ওদের দ্বারাই আপনার সংসার চলে।"
যাদের টাকায় কৃষি কর্মকর্তাদর সংসার চলে, যাঁরা দেশের মালিক, তাঁদেরকেই তিনি অস্বীকার
করলেন।
ওই ঘটনায় উক্ত ভুক্তভোগী কৃষক দুই সাংবাদিককে
সঙ্গে নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে গেলে কৃষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তিনিও।
সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ করলে তাঁদের সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন কৃষি কর্মকর্তা।
অথচ এসব অফিসার সাহেবদের জন্য বঙ্গবন্ধুর বাণী হচ্ছে, "কার টাকায় অফিসার সাব?....
কার টাকায় সব সাব? সমাজ যেন ঘুনে ভরে গেছে। এ সমাজকে আমি চরম আঘাত করতে চাই।"
বঙ্গবন্ধুর সুরে সুর মিলিয়ে দরিদ্র কৃষক ফজলুর রহমান সমাজের এই ঘুনে আঘাত হেনেছেন।
কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া অসম্মান দেশবাসীর নজরে এনেছেন। স্যালুট কৃষক ফজলুর
রহমানকে।
সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা
আছে, প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। এ কথাটা সব সময় মনে রাখা প্রয়োজন। জনগণের করের পয়সায়
যাদের বেতন হয়, যারা কথায় কথায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কথা বলে মুখে
ফেনা তোলেন, তাঁরা বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটি হয় শোনেননি অথবা পড়েননি। পড়লে বা শুনলেও এর
অর্থ বোঝেননি। বুঝলে ফজলুর রহমানকে অফিস থেকে বের করে দিতেন না। সমস্যা নজরে আনার জন্য
তাঁকে ধন্যবাদ দিতেন, সম্মান দিতেন। তাঁর কথার গুরুত্ব দিতেন। ধান ক্ষেত পরিদর্শনে
যেতেন। তারপর প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেন।
খবর পেলাম, অভিযুক্ত উপ সহকারী কৃষি
কর্মকর্তাকে দিনাজপুরে বদলি করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে ফরিদপুরের
সালথায়। কি লাভ তাতে? যা ঘটেছে শিবালয়ে, তা এবার ঘটবে সালথায় বা দিনাজপুরে। অফিসার
সাহেবদের চরিত্র না বদলালে যাঁরা দেশের মালিক, তাঁদের কোন লাভ হবে না, উন্নতি হবে না।
বরং শাস্তি যদি দিতে হয়, তাহলে তাঁকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ক'টি বই পড়াতে বাধ্য করা প্রয়োজন।
বাজারে এমন বই অনেক পাওয়া যায়। বইগুলিতে ২৬ মার্চ ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে সরকারি
কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে উপরে উল্লেখিত কথাগুলো রয়েছে। সেগুলি উপহার দিন। বইগুলি পড়ার
জন্য সময় বেঁধে দিন। উনারা পড়ুক। পড়া শেষে পরীক্ষা দিক। সে পরীক্ষায় পাশ করলে চাকুরীতে
পুনর্বহাল করুন। তাতে অভিযুক্তদের চরিত্র বদলাবে। দেশের মালিকরা তাঁদের ন্যায্য সম্মান
পাবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আজ থেকে চার বছর আগে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মোকাবেলায় প্রায় সব দেশেই জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছিল যার জের আজও চলছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের মাত্রা এতোই তীব্র যে, কে কখন আক্রান্ত হয়েছে বা কে নীরব আক্রান্তের ঝুঁকির মধ্যে আছে তা তাৎক্ষণিক যাচাই করাও কঠিন ছিল। পরীক্ষার সীমিত ব্যবস্থাদি বা সুযোগের সীমাবদ্ধতার প্রধান কারণ সবগুলো দেশ প্রায় একই সাথে আক্রান্ত হয়েছে ও পরীক্ষার কীট ও যন্ত্রপাতি সব দেশে সমান্তরাল রীতিতে বিতরণ নিশ্চিত করা যাচ্ছিল না। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্যে এই সঙ্কট আরও জটিল কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সময়োচিত পদক্ষেপ নেয়ার ফলে বাংলাদেশ পরিস্থিতিকে আয়ত্তাধীন রাখতে সক্ষম হয়েছে।
কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের সাধারণ স্বাস্থ্য ও হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার নিয়মগুলো সঠিকভাবে বজায় রাখা। কোভিড ও নন-কোভিডের পার্থক্য নিরূপণ প্রথম শর্ত না কি মানুষের স্বাস্থ্য জটিলতার আপাত নিরসণ কাম্য – এই নিয়ে সরব তর্ক চলেছে দেশ জুড়ে। কিন্তু আমাদের চিকিৎসক সমাজকে সংখ্যানুপাতে বেশী মানুষের সেবা দিতে হয় ও তাঁদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ঝুঁকিও কোন অংশে কম নয়। শুধু চিকিৎসকই নয়, স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত অন্যান্য জনশক্তির সংখ্যা সামর্থ্যও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত একটি বিপুল জনগোষ্ঠী ও অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের পরিবারের সদস্যগণও আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী মারাও গেছেন যা বাংলাদেশের জন্যে অপূরণীয় ক্ষতি। আমাদের এ-ও বিবেচনায় রাখতে হবে পরিবারের কোন সদস্য আক্রান্ত হলে বা দুর্ভাগ্যবশত মারা গেলে সমগ্র পরিবারেই তার প্রভাব পড়ে ফলে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মীদের পারিবারিক দুর্গতি ও মানসিক স্বাস্থ্যের কথাও আমাদের ভাবতে হবে।
ফলে আমরা চিকিৎসা কেন্দ্রে তখন রোগী কম দেখে বা চিকিৎসকদের একটি নিয়মের মধ্যে সেবা দিতে দেখে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে বলে যে হইচই করেছি তা বাস্তবসম্মত ছিল না। যেমন ধরুন, করোনা পরিস্থিতির আগে আমাদের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর যে উপচে পড়া ভিড়ের চিত্র আমরা দেখেছি শেষের দিকে তা ছিল না। এর অন্যতম প্রধান কারণ আমাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়েছে ও বেশিরভাগ মানুষ উপসর্গ অনুযায়ী বাড়ি বসে চিকিৎসা নিয়েছে ও যথাসম্ভব ভালো থেকেছে। সামান্য উপসর্গে মানুষের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার যে সাধারণ প্রবণতা তা অনেক কমে এসেছে ও তাতে চিকিৎসকদের উপর চাপও কমেছে। আমার বন্ধু চিকিৎসকদের অনেকেই বলেছেন তখন শান্তিতে অন্তত মনোযোগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে পেরেছি, আগে এতো ভিড়ের চাপে রোগী সামলানো কঠিন ছিল। সবচেয়ে বড়ো কথা, চিকিৎসকগণ সানন্দে এগিয়ে এসেছেন যাতে সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই ফোনের মাধ্যমে তাঁদের পরামর্শ সেবা পেয়ে ভালো থাকেন। বাংলাদেশের অনেক চিকিৎসক বিনামূল্যে এই সেবা দিয়েছেন এমন কি মোবাইল ফোনের ভিডিওতেও রোগীর সাথে কথা বলে, লক্ষণের সামগ্রিক বিবরণ শুনে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন ও ফলো-আপ করছেন। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে রোগীকে চিকিৎসা কেন্দ্রে যাবার পরামর্শও দিয়েছেন।
এই বাস্তবতা মাথায় রেখে আমাদের বুঝতে হবে চিকিৎসা কেন্দ্রে বেশী মানুষের উপস্থিতি চিকিৎসার মান মোটেও নিশ্চিত করে না বা ব্যবস্থাপনার সাফল্য নির্দেশ করে না। অসুস্থ বা রোগপ্রায় মানুষ চিকিৎসা সেবা পেয়ে ও যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে পেরে যুগপৎ জনসাধারণ ও চিকিৎসক সমাজ কতখানি নিশ্চিত বোধ করছেন সেখানেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সাফল্য নির্ভর করে। ফলে আমাদের সেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখন নিশ্চিত করতে হবে যেখানে দেশের সব মানুষ সেবার আওতায় আসবে। আমার বিশ্বাস গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে দূর-নিরীক্ষণ পরামর্শ সেবা তা নিশ্চিত করতে পারে যা মোবাইল ফোন, ভিডিও কথোপকথন ওই ইন্টারনেটের অন্যান্য সুবিধা দিয়ে নিশ্চিত করা যায়।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পরামর্শ সেবার বহির্বিভাগের চাপ কমাতে আরও বিনিয়োগ না বাড়িয়েও আমরা খুব সহজে ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা সম্প্রসারণ করতে পারি কারণ সরকারের উদ্যোগে এখন প্রায় সব গ্রাম ও ইউনিয়ন পর্যায়ে উচ্চ গতির ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়েছে। একটি গ্রামের প্রশিক্ষিত ও সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত স্বাস্থ্যকর্মী ইন্টারনেট পরিষেবায় শারীরিক লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ তৈরি করিয়ে দিতে পারে (শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে সেসব চিকিৎসক যেন সরকার স্বীকৃত নিবন্ধনপ্রাপ্ত হয় নতুবা এই সেবায় এক শ্রেণীর ফড়িয়া চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণাও করতে পারে)। একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ থেকে চিকিৎসকের তথ্য নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে সারা দেশে প্রাথমিক পরামর্শ সেবা ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব। আর এই সেবার বাস্তবায়ন, তত্ত্বাবধান ও মনিটরিং-এর দায়িত্ব দেয়া যাবে নানা স্তরে- কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোকে।
ইন্টারনেট ব্যবহার করে স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় এরকম একটি দূর-নিরীক্ষা চিকিৎসা পরামর্শ সেবা ২০০৯ সাল থেকে চালু আছে খুলনা ও বাগেরহাটের গ্রামাঞ্চলে। ‘আমাদের গ্রাম’ পরিচালিত এই প্রকল্পটি ইতোমধ্যে দেশে বিদেশে একটি মডেল হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। পরামর্শের জন্যে আগত সকল রোগীর বিস্তারিত তথ্য একটি নির্ধারিত ইন্টারনেটভিত্তিক সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকে। এরকম ক্ষেত্রে কেবল চিকিৎসার দ্বিতীয় ধাপে সন্দেহভাজন বা সম্ভাব্য রোগীকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের এরকম আরও অনেক অভিজ্ঞতা দেশের নানা স্থানে ছড়িয়ে আছে যেগুলো পর্যবেক্ষণ করে ও আধুনিক ভাবনার সাথে মিলিয়ে আমরা একটি নতুন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি। এখানে একটি বিষয় হয়তো সামনে আসবে সে হলো চিকিৎসার নৈতিক শর্ত যা হলো রোগীকে উপস্থিত স্পর্শ করে পরীক্ষা করা যাকে আমরা ‘ইন্টারমেডিয়ারী’ বলি তা কেমন করে নিশ্চিত হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখতে হবে প্রযুক্তির হাতে তাপমাত্রা নিরীক্ষণ বা নাড়ী নিরীক্ষণ-সহ অনেক চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা অনেক আগেই আমরা ছেড়ে দিয়েছি। সে ক্ষেত্রে একজন প্রশিক্ষিত ও নিবন্ধিত স্বাস্থ্য কর্মী শর্ত অনুযায়ী যেটুকু নিরীক্ষা করা সঙ্গত তার একটি প্রাথমিক নীতিমালা/গাইডলাইন নিশ্চয়ই আমরা তৈরি করে নিতে পারি।
দেশের বেশিরভাগ মানুষের জন্যে একটি উপযুক্ত দূর-নিরীক্ষণ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রক্রিয়া গঠন ও তা মানসম্মত উপায়ে সমুন্নত রাখা এখন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। সদাশয় সরকার ও আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিকল্পনার সাথে যুক্ত সকলে মিলে এই ভাবনার বাস্তব ও নীতিসঙ্গত উপায় তৈরি করে নেয়া এখন জরুরি। আশা করি সংশ্লিষ্ট সবাই বিষয়টি ভেবে দেখবেন।
--রেজা সেলিম
পরিচালক, আমাদের গ্রাম গবেষণা প্রকল্প
দূর-নিরীক্ষণ স্বাস্থ্য সেবা রেজা সেলিম মতামত মাটির টানে
মন্তব্য করুন
আশ্রয়ণ প্রকল্প বিতর্ক আম্পায়ারিং
মন্তব্য করুন
প্রকাশ: ০১:০১ পিএম, ১১ জুন, ২০২৪
আজ ১১ জুন। এদিন দীর্ঘ ১১ মাস জেল খাটার পর দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা জেল থেকে মুক্তি পান। এই মুক্তিটি অনেক অর্থ বহন করে। এই ১১ মাসে তাকে মূলত যে মানসিক কষ্ট দেয়া হয়েছে তা চিন্তার বাইরে। সেসময় তাকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে ফেলার সমস্ত রকমের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি অত্যন্ত সুদৃঢ় ছিলেন এবং বিশ্বাস করতেন তিনি কোন অন্যায় করেননি এবং করেন না। জনগণের মঙ্গলের জন্যই তিনি কাজ করেছেন এবং কাজ করে চলেছেন।
আমরা
যখন জেলাখানায় তাকে দেখতে যেতাম
সেসময় তিনি আমাদের মুখ
কালো দেখলেই বলতেন, ‘আপনাদের মুখ কালো কেন?’
এরকমভাবেই তিনি আমাদের উজ্জীবিত
করতেন। আমি অবাক হয়ে
তখন ভাবতাম, তিনি জেলে থাকার
কারণে আমাদের মন খারাপ আর
উল্টো তিনি আমাদের সৎ
সাহস দিচ্ছেন যে তিনি সৎ
পথে আছেন তার কিছুই
হবে না এবং তিনি
কারামুক্ত হবেন। এজন্য কারামুক্তি দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি
জেলে থাকতেই তার দার্শনিক চিন্তাকে
কিভাবে বাস্তবে রূপান্তরিত করবেন সেই সব বিষয়গুলো
ঠিক করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন
তাঁর কারামুক্তির পরই নির্বাচন হবে
এবং নির্বাচনে কাদের মনোনয়ন দিবেন সেটির চিন্তাও তিনি সেসময় করে
রেখেছিলেন। তাছাড়া ‘আমার বাড়ি আমার
খামার’ থেকে শুরু করে
বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, কমিউনিটি ক্লিনিক, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’ গুলোর মতো জনবান্ধব কর্মসূচির চিন্তা
তিনি জেলে থাকতেই ঠিক
করে রেখেছিলেন।
২০০৮
সালের ১১ জুন থেকে
২০২৪ সালের ১১ জুন পর্যন্ত
যদি চিন্তা করি তাহলে একটি
জিনিস খুবই পরিষ্কার হয়ে
যায়। তাহলো আজকের বাংলাদেশের অপর নাম শেখ
হাসিনা। এটি তিনি রূপান্তরিত
করতে সক্ষম হয়েছেন। একারণেই ১১ জুন বারবার
মনে করা দরকার। এবং
এটি মনে করে আমাদের
নতুনভাবে উজ্জীবিত হয়ে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক
শেখ হাসিনার প্রতিটি কাজে অত্যন্ত আন্তরিক
এবং সততার সাথে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ
করতে হবে। না হয়
আমরা আমাদের বিবেকের কাছে অপরাধী হবো।
অপরাধী হবো বঙ্গবন্ধুর কাছে
এবং বঙ্গবন্ধু
কন্যা শেখ হাসিনার কাছে।
কেননা আমরা দাবি করি,
আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করি এবং আমাদের
চলার পথে পাথেয় হচ্ছেন
শেখ হাসিনা। এই যদি বলি
তাহলে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দর্শনকে
এড়িয়ে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য নিয়ে চলি তাহলে
আমরা আমাদের বিবেকের কাছে দায়ী।
জিল্লুর
রহমান, মতিয়া চৌধুরী, আতাউর রহমান খান কায়সার, সৈয়দ
আশরাফ, হাছান মাহমুদ থেকে শুরু করে
অনেকেই সেসময় দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার মুক্তির
জন্য চেষ্টা করে গেছেন। আর
অনেকেই ভেবেছিল, বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শেখ হাসিনাকে অন্ধকার
টানেলের ভেতরে ফেলে দিতে সক্ষম
হয়েছে যেখান থেকে তিনি আর
বেরোতে পারবেন না। তারা যে
সংস্কারবাদী হয়েছিল সেটি ষড়যন্ত্রের অংশ।
তারা হয়তো ভেবেছিল কোন
দিন শেখ হাসিনা আর
আলোর মুখ দেখবে না।
সেই
সকল ভেতরের ষড়যন্ত্র, বাইরের ষড়যন্ত্র, ভবিষ্যতের দেশ গড়ার যে
পরিকল্পনা সমস্ত কিছুই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা একা
সামলেছেন। আমি বিশ্বাস করি
১১ জুন আমাদের শিক্ষা
দেয় দেশ গড়ার যদি
মানসিকতা থাকে এবং মনের
দৃঢ়তা থাকে তাহলে কোন
বাধায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়
না। দেশ গড়ার জন্য
শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেছেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। অর্থাৎ মানুষের মৌলিক যে চাহিদা তার
প্রত্যেকটির ব্যবস্থা করেছেন। এটিই হচ্ছে দার্শনিক
রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বড়
প্রাপ্তি। যদিও তিনি বলেন,
এগুলো জনগণের উদ্দেশ্যে তিনি উৎসর্গ করেন।
সেজন্য আমি বলবো, আজকের
বাংলাদেশের অপর নাম শেখ
হাসিনা।
কারামুক্তি দিবস শেখ হাসিনা এক এগারো ওয়ান ইলাভেন দেশ গড়ার শিক্ষা
মন্তব্য করুন
স্বেচ্ছায় ক্যাডার চাকুরী ছেড়ে দেয়ার অনেক নজির রয়েছে। কিন্তু স্বেচ্ছায় পদাবনতি। স্বেচ্ছায় ক্যাডার চাকুরী ছেড়ে নন ক্যাডার চাকুরী গ্রহণ। এসব খবর সচরাচর শোনা যায় না। সম্প্রতি বিসিএস তথ্য ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা ক্যাডার চাকুরী ছেড়ে দিয়ে সাব রেজিস্ট্রার হয়েছেন। সাব রেজিস্ট্রার পদটি নন ক্যাডার ভুক্ত। পদোন্নতির সম্ভাবনা সীমিত। কিন্তু এখানে নিজের অর্থনৈতিক উন্নতির অপার সম্ভাবনা। বিয়ের বাজারেও খুব দাম। অফিস কক্ষটিতে একটা আদালত ভাব রয়েছে। সভা কক্ষটি যেন একটি এজলাস। শান শওকত মন্দ নয়। আশে পাশে শুধু টাকা আর টাকা। বোধ করি সেজন্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরাট হৈচৈ। সবাই তাকে নিয়ে ট্রল করছে। অনেকেই বলছেন, তিনি বুদ্ধিমান, তিনি স্মার্ট। টাকার খনির মালিক হবার জন্য তার এ স্বেচ্ছায় পদাবনতি।
টি-২০ ফরম্যাটে যে কোন দল অন্য দলকে হারাতে পারে। তাই বলে র্যাংকিং এর ৮৮ নম্বরের একেবারে তলানির দল ক্রোয়েশিয়া, এক নম্বর দল ভারতকে হারাবে সেটি নিশ্চয়ই কেউ বিশ্বাস করবে না। ব্যতিক্রম যে হয় না, তা নয়। যেমন ৭ নম্বর দল পাকিস্তান সেদিন ১৭ নম্বর দল আমেরিকার কাছে হেরেছে। সেসব ব্যতিক্রম সব সময় হয় না, কালে ভদ্রে হয়।
আজ থেকে চার বছর আগে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মোকাবেলায় প্রায় সব দেশেই জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছিল যার জের আজও চলছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণের মাত্রা এতোই তীব্র যে, কে কখন আক্রান্ত হয়েছে বা কে নীরব আক্রান্তের ঝুঁকির মধ্যে আছে তা তাৎক্ষণিক যাচাই করাও কঠিন ছিল। পরীক্ষার সীমিত ব্যবস্থাদি বা সুযোগের সীমাবদ্ধতার প্রধান কারণ সবগুলো দেশ প্রায় একই সাথে আক্রান্ত হয়েছে ও পরীক্ষার কীট ও যন্ত্রপাতি সব দেশে সমান্তরাল রীতিতে বিতরণ নিশ্চিত করা যাচ্ছিল না। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্যে এই সঙ্কট আরও জটিল কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সময়োচিত পদক্ষেপ নেয়ার ফলে বাংলাদেশ পরিস্থিতিকে আয়ত্তাধীন রাখতে সক্ষম হয়েছে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুরু হয়েছে। প্রথমবারের মত টুর্নামেন্টটি চলছে আমেরিকায়। এবারই প্রথম সবচেয়ে বেশি ২০টি দল খেলছে এ টুর্নামেন্টে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে দুটি খেলেছে। একটিতে জয়। আরেকটিতে হার। জয়টি নিয়ে যতটা না আলোচনা, হারটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা তার চেয়ে ঢের বেশি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষের খেলাটির আম্পায়ারিং নিয়ে তুমুল সমালোচনা। আম্পায়ার কেন মাহমুদউল্লাহকে আউট দিল। ভুল আউট টি না দিলে বাংলাদেশ চার রান পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় না। চার রান পেলে বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতে যেত। আম্পায়ার কেন কয়েকটি ওয়াইডও দেয়নি যা ওয়াইড ছিল। এসবের মধ্যে আরেকটি ক্রিকেট ম্যাচ দেখলাম ছিন্নমূল, ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের মাঝে দলিলসহ জমি-ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে। অন্যান্য ক্রিকেট ম্যাচের মত এ অনুষ্ঠানটিও টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল। সেখানেও ছিল বিতর্কিত আম্পায়ারিং।
আজ ১১ জুন। এদিন দীর্ঘ ১১ মাস জেল খাটার পর দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা জেল থেকে মুক্তি পান। এই মুক্তিটি অনেক অর্থ বহন করে। এই ১১ মাসে তাকে মূলত যে মানসিক কষ্ট দেয়া হয়েছে তা চিন্তার বাইরে। সেসময় তাকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে ফেলার সমস্ত রকমের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি অত্যন্ত সুদৃঢ় ছিলেন এবং বিশ্বাস করতেন তিনি কোন অন্যায় করেননি এবং করেন না। জনগণের মঙ্গলের জন্যই তিনি কাজ করেছেন এবং কাজ করে চলেছেন।