নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
‘শুধু ছাত্রলীগই নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন রয়েছে, তারা প্রত্যেকেই আশাবাদী ডাকসু নির্বাচন এবার আলোর মুখ দেখবে। ছাত্রলীগ সব সময় এটা চায় নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিরাই ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করুক, তাদের অধিকারের কথা বলুক, তাদের নৈতিক দাবির পক্ষে আওয়াজ তুলুক, পাশে দাঁড়াক।’
দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগামী বছরের মার্চে ডাকসু নির্বাচন করার লক্ষ্যে কাজ করছে। ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে ইতিমধ্যে ছাত্র সংগঠনগুলোও তাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন। বর্তমান সময়ের দেশের অন্যতম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষে ছাত্রলীগের কি ভাবনা ও উদ্যোগ সেই বিষয়ে জানতে কথা হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে। বাংলা ইনসাইডারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে উপরোক্ত কথাগুলো তিনিই বলেন। নিম্নে বাংলা ইনসাইডারের পাঠকদের জন্য তাঁর সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো:
বাংলা ইনসাইডার : ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্রলীগের প্রতিক্রিয়া কি?
গোলাম রাব্বানী : শুধু ছাত্রলীগই নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন রয়েছে, তারা প্রত্যেকেই আশাবাদী ডাকসু নির্বাচন এবার আলোর মুখ দেখবে। ছাত্রলীগ সব সময় এটা চায় নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিরাই ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করুক, তাদের অধিকারের কথা বলুক, তাদের নৈতিক দাবির পক্ষে আওয়াজ তুলুক, পাশে দাঁড়াক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের সভায় অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতাদের প্রতিক্রিয়া কি ছিল?
এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদের যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে তেরটি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি উপস্থিত ছিল এবং আমরা অনেক শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশে কথা বলেছি, মতামত দিয়েছি। ঐ সভায় সকল আবাসিক হলের প্রভোস্টগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার, প্রোভিসি ম্যাম উপস্থিত ছিলেন। চার ঘণ্টা ব্যাপী এ মিটিং-এর জিস্ট ছিল সবাই ডাকসু নির্বাচন চায় এবং শিক্ষার্থীর দাবি পূরণে কাজ করতে চায়।
ছাত্রদল ঢাবি ক্যাম্পাসে বর্তমানে নিষ্ক্রিয়, তারা কেন ক্রিয়াশীল দলের অন্তর্গত?
ছাত্রদল নিস্ক্রিয় কিভাবে? তারা তো জ্বালাও-পোড়াও এ সক্রিয়। আর তাদের কেন ক্রিয়াশীল দলের মধ্যে রাখা হয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভালো বলতে পারবে। আমাদেরকে চিঠি দেয়া হয়েছে, তারাও চিঠির মাধ্যমে আমন্ত্রিত। ডাকসু যেহেতু একটি বড় প্লাটফর্ম সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হয়তো মনে করেছে, ছাত্রদলকে যদি বাদ দেয়া হয় তবে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এটা অবশ্য আমার ধারণা। আমি এর নীতি নির্ধারক নই। আমি একজন ছাত্র প্রতিনিধি, এ বিষয়ে ভিসি স্যার এবং প্রোক্টর স্যার ভালো বলতে পারবেন।
ছাত্রদল ক্যাম্পাসে ফিরলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপুর্ণ পরিবেশ কি হুমকির সম্মুখীন হতে পারে, এক্ষেত্রে আপনার মতামত কি?
এ বিষয়ে গত মিটিং-এ কথা হয়েছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহত করা হয়েছে। ছাত্রদল যেন তাদের অতীত কুকর্ম মানে জ্বালাও-পোড়াও এর রাজনীতি চর্চা কিংবা সরকার বিরোধী গুজব ও অপপ্রচার করতে না পারে সে বিষয়ে ছাত্রলীগ তৎপর রয়েছে। সর্বশেষ দু’টি আন্দোলনে তাদের কেন্দ্রীয় যেভাবে গুজব ও অপপ্রচার চালিয়েছে তাতে তাদের বিন্দুমাত্র অনুশোচনাও নেই। তাদের এ সাম্প্রতিক আচরণ থেকে এটা প্রতীয়মান যে তারা তাদের সহিংসটার রাজনীতি থেকে বের হতে পারবে না। তবে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীর পাশে আছে। কেননা, ছাত্রলীগ সর্বদা মানুষের অধিকারের কথা বলে, গণমানুষের নিরাপত্তার কথা বলে।
ছাত্রদলের অধিকাংশ নেতাই তো বয়স্ক, তারা কি ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে?
ছাত্রদলের অধিকাংশই অনিয়মিত ও অছাত্র। নিয়মিত ছাত্র ছাড়া কেউই ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবে না। শিবির ও ছাত্রদল এখন একে অন্যের পরিপূরক। তাদের রাজনৈতিক আচার-আচরণও এখন এক। আমরা মিটিং-এ তাদের সামনেই তাদের জ্বালাও-পোড়াও এর রাজনীতির কথা উল্লেখ করেছি। এমন রাজনৈতিক চর্চা ক্যাম্পাসে গ্রহণযোগ্য নয় বলেও জানানো হয়েছে তাদের। ছাত্রদল যদি শিবিরকে পরিত্যাগ করে এবং তাদের দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে না নিশ্চয়তা দিয়ে প্রমাণ প্রমাণ করতে পারে তবে আমরা তাদের স্বাগত জানাবো।
ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্রলীগের প্রস্তুতি কি?
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীনতম ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে ডাকসুর ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ইতিপূর্বে ছাত্রলীগের একাধিক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ডাকসুর ভিপি-জিএস ছিলেন এবং ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। আমরা আশাবাদী ছাত্রলীগ মাঠে কাজ করে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ভালবেসে তাদের মন জয় করে নির্বাচনে অংশ নিবে।
ডাকসু নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের পরে কেন?
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই সবগুলো হল প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, নির্বাচনের ব্যবস্থা এতো দ্রুত করা সম্ভব না। এছাড়াও ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রক্রিয়া শেষ হতেও সময় লাগবে। সেইসঙ্গে, কারা ক্যাম্পাসের নিয়মিত ছাত্র, কারা প্রার্থী হতে পারবেন, এগুলো যাচাই-বাছাইের কাজ কোন ভাবেই এতো দ্রুত সম্ভব হতো না। ইতিপূর্বে আমাদের একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে নব্বই-এর নির্বাচনকে ঘিরে। ভোটার তালিকা করতেই দুই বছর সময় লেগেছে। আমরা এ তিক্ত অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা চাই ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোটার তালিকার হালনাগাদের কাজ সম্পন্ন হোক এবং মার্চের মাঝামাঝি ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এজন্যই জাতীয় নির্বাচনের পর ডাকসু নির্বাচন। এটা আমাদের ধারণা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি পারে তবে আমরা তাতে ওয়েলকাম জানাবো।
ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছাত্রলীগের প্রত্যাশা কি?
আমাদের শুধু একটাই প্রত্যাশা, শুধুমাত্র নিয়মিত ছাত্ররাই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। যারা ইভিনিং-এর ছাত্র, পাশাপাশি যারা এখানে বিভিন্ন কোর্স করছে তারা নয় বরং যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করেছে শুধুমাত্র তারাই যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচনে আসুক ছাত্রলীগের চাওয়া এটাই। আমাদের নিয়মিত ছাত্রদেরই আমরা নেতৃত্বে দেখতে চাই। এর আগে মাহমুদুর রহমান মান্না চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করে ডাকসুর জিএস হয়েছিলেন। আমরা এর পুনরাবিত্তি চাইনা।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে ছাত্রলীগের প্রস্তুতি কি?
২৯ তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাত ধরে ছাত্রলীগের যে নতুন কমিটি এসেছে ইতিমধ্যেই তারা তাদের পজিটিভ কাজের মাধ্যমে ইতিবাচক ধারার বার্তা সারাদেশে পৌছিয়ে দিয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার ছায়াতলে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত বর্তমানের ছাত্রলীগ ইতিবাচক ধারার। এখন আমাদের সকল পদক্ষেপই নির্বাচনমুখী। আমাদের প্রথম পদক্ষেপই ছিল ছাত্রলীগের ইতিবাচক ইমেজ সাধারণ মানুষ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরা। আর এ বিষয়ে আমারা অনেকটাই সফল। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো এবং ছাত্রলীগ এখন ইতিবাচক ধারার রাজনীতি করতে শুরু করেছে তা সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী ও গণমানুষের পাশে আছি এ বার্তা অনেকের মাঝে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। উন্নয়নের ধারা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই, এই বার্তা গণমানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রচার-প্রচারণা অতীতেও ছিল, আগামীতেও থাকবে। জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সকল পদক্ষেপই হবে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক
মন্তব্য করুন
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল আসলে সমালোচনার তীর ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদীর দিকে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান বলেও আম আদমি পার্টির এই নেতা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। আর এই বক্তব্য নিয়েই বিএনপির মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বিএনপির নেতারা শুধু ইউটিউবেই এটি রিপোস্ট করেনি, তারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং টুইটারেও এই বক্তব্যের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধী প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ভারতের সমালোচনা করা এবং ভারত এই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে এমন বক্তব্য বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। যদিও ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সম্পর্ক আরও গভীর করার বার্তা দিয়েছেন। ভারতের অন্য একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসও আওয়ামী লীগ এবং বর্তমান সরকারের সমর্থক। বিজেপি গত এক দশকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এরকম অবস্থায় ভারতের নির্বাচনে যে ফলাফলই হোক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যত্যয় হবে না বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
এর মধ্যে আম আদমি পার্টির বক্তব্য নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস নিয়ে অনেকেই নানারকম টীকা-টিপ্পনি কেটেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, এর আগে যখন কংগ্রেসকে হারিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিলেন তখনও বিএনপির মধ্যে উৎসব উৎসব ভাব সৃষ্টি হয়েছিল। বিএনপি নেতারা মিষ্টিমুখ করিয়েছিলেন। তাদের ধারণা ছিল যে, কংগ্রেস চলে গেলেই আওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, বিজেপির সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন কেজরিওয়ালের নির্বাচনের মাঠের বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপি আশায় বুক বেঁধে আছে। মুখে মুখে ভারত বিরোধীতা করলেও ভারতের অনুগত এবং ভারতের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বিএনপি কম চেষ্টা করেনি।
আর এখনও বিএনপি যে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বক্তব্যকে নিজেদের দলের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার রাজনৈতিক বক্তব্য, আর ক্ষমতায় এসে তার প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড- দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেউলিয়া রাজনীতির কারণে বিএনপি সবসময় অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ে কেজরিওয়ালের বক্তব্য বিএনপির ইউটিউবে ছাড়ার মধ্য দিয়ে সেই দেউলিয়াত্ব আরেকবার প্রকাশিত হল বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে দেশটিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। চলতি মাসের শেষের দিকে ৫০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চীনে যাবে।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছরপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। এই সফর কর্মসূচির লক্ষ্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়ন এবং মতবিনিময়।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ১৪ এপ্রিল এক চিঠিতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছে ৫০ সদস্যের একটি তালিকা পাঠিয়েছেন। এতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগ এবং আওয়ামী লীগের ডেটাবেজ টিমের সদস্যরা রয়েছেন।
দলীয় একাধিক সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলটিকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সংগঠন গড়ে তোলা, সুশাসন, ইতিহাসসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবে।
৫০ সদস্যের প্রতিনিধি টিমে রয়েছেন:
আওয়ামী যুব লীগ:
সহ সভাপতি মৃনাল কান্তি জোয়ারদার ও তাজউদ্দীন আহমদ; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম; সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, মো জহির উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, উপ আন্তর্জাতিক সম্পাদক মো সাফেড আসফাক আকন্দ।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ:
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান, সহ সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক, তানভীর শাকিল জয় এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, একেএম আজিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল ফজল মো নাফিউল করিম, আবদুল্লাহ আল সায়েম৷
বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ:
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিরিন রোকসানা, মিনা মালেক, সুলতানা রেজা, মিসেস রোজিনা নাসরিন, নীলিমা আক্তার লিলি, সাংগঠনিক সম্পাদক ঝর্না বাড়ুই, মরিয়ম বিনতে হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহেনিগার হোসেন।
বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ:
সভাপতি আলেয়া সারোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা, সহ সভাপতি বিনা চৌধুরী, রাফিয়া আক্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিউটি কানিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন।
মহিলা শ্রমিক লীগ:
সভাপতি সুরাইয়া আক্তার, সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার, কার্যকরী সভাপতি শামসুর নাহার, সহ সভাপতি মেহেরুন নেসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিনাত রেহেনা নাসরিন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ:
সহ সভাপতি মো. রাকিবুল হাসান, কুহিনূর আক্তার, খাদেমুল বাশার জয়, খন্দকার মো আহসান হাবিব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো হোসাইন আহমেদ, মো আবদুল্লাহ হিল বারী, এসডিজি বিষয়ক সম্পাদক রাইসা নাহার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জান্নাতুল হাওয়া আখি।
ডেটাবেজ টিম মেম্বার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ:
মো নুরুল আলম প্রধান, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, কাজী নাসিম আল মমিন, জাফরুল শাহরিয়ার জুয়েল, অদিত্য নন্দী, মো. সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ইতোমধ্যে তিনি একটি হ্যাটট্রিক করেছেন। টানা তিন তিনবার আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র যিনি আওয়ামী লীগের তিনবার বা তার বেশি সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। এখন ওবায়দুল কাদেরও আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। এবার তিনি আরেক রকম হ্যাটট্রিক করলেন।
আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের একটি বক্তব্যকে নিয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে আম আদমি পার্টির জামিনে মুক্তি পাওয়া এই নেতার একটি বক্তব্য বিএনপি তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল বক্তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছেন। তিনি রাশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়া নির্বাচনে পুতিন একচ্ছত্রভাবে বিরোধী দল দমন করে বিজয়ী হয়েছেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সকল বিরোধী দলের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন বলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন। তিনি পাকিস্তানে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে তার দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি যেন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তী কোন্দল বন্ধে বিভিন্ন রকম উদ্যোগও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একাধিক বার দলীয় কোন্দল বন্ধের জন্য তাগাদা দিয়েছেন। কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। বরং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাংগঠনিক অবস্থা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। এই কোন্দল এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন বা অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই। দলের এই কোন্দল এতদিন তৃণমূল পর্যায় থাকলেও সেটি এখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে।