শুধু মনোনয়নপত্র বাতিলই নয় ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহারেও প্রথম হবে বিএনপি। কারণ অনেক মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পরও ৫৫৫টি মনোনয়ন টিকে গেছে রিটার্নিং অফিসারদের যাচাই-বাছাইয়ের পর। কিন্তু দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার তিন তিনটি মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেছে দুর্নীতির মামলায় দণ্ড থাকার কারণে। গত পরশু মনোনয়ন যাচাইয়ের সময় বিএনপি মনোনীতদের মধ্যে ১৪১ জন আর আওয়ামী লীগের বাতিল হয়েছে মাত্র তিনটি। মঙ্গলবার ২৩৫টি আপিল জমা হয়েছে। এর মধ্যে যদি আপিলে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের আরও কিছু মনোনয়নপত্র বৈধ হয় , তাহলে কিন্তু বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে প্রত্যাহারের সংখ্যা আরও বাড়বে। তাহলে কি বিএনপি অভিযোগ করবে যে ক্ষমতাসীন দলের ‘ইশারা’ ‘হুমকি’ বা ‘ভয়ে’ তাদের প্রার্থীরা এত বেশি সংখ্যায় প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে এটা ঠিক যে বিএনপি এমন কটি দলের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছে যে সেসব দলের উপযুক্ত প্রার্থী হাতে গোনা। ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন নিজেই নির্বাচন করবেন না। আর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দীকির মনোনয়নও বাতিল হয়ে গেছে ঋণখেলাপীর দায়ে ।
রাজনৈতিক কারণে ৭৮৬ মনোনয়নপত্র বাতিলের অভিযোগ ধোপে টেকে না । কারণ সংসদ সদস্য তথা আইন প্রণয়নকারী হিসেবে নির্বাচন করার যে মনোনয়নপত্র তা সঠিকভাবে পূরণ করবেন না, কিন্তু বাতিল হলে রাজনৈতিক কারণ দেখানোর সুযোগ কম। তবে ছোট-খাটো ভুলত্রুটির কারণে সংশোধনের সময় না দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তারা অহেতুক কঠোর হয়েছিলেন কি না,আপিলের সময় নির্বাচন কমিশন তা খতিয়ে দেখতে পারে। আমরা বলতে পারি যে যারা জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবে, তারা না দলবদলের সকাল-সন্ধ্যা এপার ওপারের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন । কিন্তু নৌকায় ওঠেন বা ধানের শীষের মুঠো ধরেন , মনোনয়নপত্র নির্ভুল হওয়ার জন্য তো প্রস্তুতির সময় নিতে হবে অনেক আগে থেকেই। একইভাবে নির্বাচনী এলাকার জনতার সঙ্গে যোগাযোগ নাই, সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন, উড়ে এসে জুড়ে বসা প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হলে তা নিয়ে হৈ চৈ করার কিছু নাই।
গত ১০টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবারই বেশি আলোচনা হলো মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই আর বাতিল আপিল নিয়ে । সবচেয়ে এলোমেলো অবস্থা দেখা গেলো বিএনপি। ৩০০ আসনের একক প্রার্থী করতে যে তারা ব্যর্থ হয়েছেন তার বড় প্রমাণ বিএনপির পক্ষ থেকে প্রায় তিনগুণ ব্যক্তিকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও ৮টিরও বেশি আসনে দুজন করে প্রার্থী দিয়েছেন। এবার মনোনয়নে আরও একটি বিষয় হলো জামায়াতে ইসলামীর নেতারাও বিএনপি নেতা সেজে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। কারণ জামায়াতের নাই নিবন্ধন আর মার্কা।
আগামী ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। তার আগেই মহাজোট, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত হবে। ফলে এটা এবার আগামই বলা যায় যে এবার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সংখ্যাও বেশি হবে। প্রশ্ন হচ্ছে বেশি হবে কি স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যাও।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
রাজনীতিতে প্রায় পরিত্যক্ত আবর্জনার ডাস্টবিনে পড়ে থাকা মাহমুদুর রহমান মান্না নিজের ওজন বাড়াতে এবং রাজনীতিতে নিজের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য নতুন স্টান্টবাজি গ্রহণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।