ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার গিলে খাচ্ছে আওয়ামী লীগকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৬ মার্চ, ২০১৯


Thumbnail

টানা দশ বছর ক্ষমতায় থেকে তৃতীয় মেয়াদের জন্য দেশ পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী এই সংগঠনটি বাংলাদেশের সবেচেয়ে বড় সংগঠন হিসেবেই পরিচিত। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের কিছুটা বিধ্বস্ত সময় কেটেছিল। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা  ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের পুনর্গঠন করেন এবং ক্রমশ আওয়ামী লীগ আবার পূর্বের রূপে যায় এবং শক্তিশালী, জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। একানব্বইয়ের নির্বাচনে পরাজয়ের পরও আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বড় রাজনৈতিক দল ছিল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগই প্রকৃত অর্থে রাজনৈতিক দল যে দলের তৃণমূল পর্যন্ত কর্মীবাহিনী আছে এবং আদর্শভিত্তিক সংগঠন আছে। তুলনা করলে দেখা যায় যে, বিএনপি আসলে ক্ষমতায় বসে কতিপয় সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত একটি ক্লাবের মত। আর আওয়ামী লীগ হলো তিলে তিলে গড়ে ওঠা একটি সংগঠন। যে সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে শুধু ত্যাগ তিতিক্ষা করেছে, মানুষের জন্য, জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছে নিজেদের জীবন যৌবনকে। কিন্তু টানা দশ বছর ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগের সংগঠনের অবস্থা কি এই প্রশ্ন উঠছে। আওয়ামী লীগের সংগঠন আজ ঘুনে ধরা, আওয়ামী লীগের সংগঠন আজ আদর্শহীন, আওয়ামী লীগের সংগঠন আজ সরকারমুখী। এরকম অভিযোগ হরহামেশাই উঠছে। তৃতীয় মেয়াদে দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক তৎপরতা নেই বললেই চলে। আওয়ামী লীগের সংগঠনকে গিলে খাচ্ছে সরকার।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন দল এবং সরকারকে আলাদা করতে। এজন্যই তিনি যখন মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন, সংগঠন করার জন্য মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়ে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সংগঠনই হচ্ছে রাজনীতির প্রাণ। সংগঠনই যদি না থাকে তাহলে একজন রাজনীতিবীদের কোনো পরিচয় থাকে না। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে সরকার এবং সংগঠন একাকার হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগের প্রধান এবং সভাপতি শেখ হাসিনা, তিনি প্রধানমন্ত্রীও বটে। সভাপতির দায়িত্ব পালনের চেয়ে সরকারের দায়িত্ব পালন করাটাই তাঁর মূল দায়িত্ব। যার জন্য তাঁকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজে সময় দিতে হয়। কিন্তু দেখা যায় যে, এবারের মন্ত্রিসভার অধিকাংশ মন্ত্রীই নতুন , আনকোরা। এজন্য সবগুলো মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তই গ্রহণ করতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। এরপরও তিনি সংগঠনে যে পরিমাণ সময় দেন তা অন্য যে কারও চেয়ে বেশি।

সাংগঠনিক কাঠামোতে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সংগঠন থাকার কথা। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠন নেই বললেই চলে। ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা ইউনিয়ন পরিষদের টেন্ডারসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেই ব্যস্ত থাকেন। দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা যারা তারা নানারকম দেন দরবার, তদ্বিরে সময় কাটান। সংগঠন দেখার তাঁদের সময় কই?

এরপর আসে উপজেলা পর্যায়। উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগ বিভক্ত এবং পরস্পর মুখোমুখি প্রায়। এমপিদের সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যানদের বিরোধ নতুন নয়। এবার উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এই বিরোধ আরও নতুন করে গরে উঠেছে। পাশাপাশি এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীতা উন্মুক্ত করে দেয়ার ফলে আওয়ামী লীগ একের অন্যের মুখোমুখি ও শত্রুতে পরিণত হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। বরং এক পক্ষ, অন্য পক্ষকে কীভাবে কুপোকাত করবে সেই চেষ্টাতেই ব্যস্ত।

এরপর আসে জেলা পর্যায়। জেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অবস্থা তথৈব। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে জেলা প্রশাসনের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা যেন আওয়ামী লীগ নেতারাই হয়ে গেছেন। নেতাদের একমাত্র কাজ হলো বিভিন্ন সরকারী কাজ তদারকি করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা, বিভন্ন তদ্বিরে সময় দেওয়া। জেলা পর্যায়ের নেতারা অধিকাংশ সময় ঢাকায় কাটান এবং স্থানীয় পর্যায়ের সংগঠন চালানোর মত বা কর্মসূচি দেওয়ার মত কোনো সময় তাঁদের হাতে নাই। শুধু দায়সারা গোছের একটি দিবস পালন। দিবসে পুষ্প স্তবক অর্পন করা। মন্ত্রী বা এমপিরা গেলে তাদেরকে সময় দেওয়া, এই নিয়েই তারা তৎপর।

এরপর আসে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় পর্যায় কমিটি। বিভাগীয় পর্যায়ের কমিটি নাজুক, দুর্বল এবং অস্তীত্ববিহীন প্রায়। কেন্দ্রীয় কমিটিতে একটা বড় অংশ মন্ত্রী, যারা দাপ্তরিক কাজেই ব্যস্ত থাকেন। আর যারা মন্ত্রী না,  তারা হতাশ ও কিছু না পাওয়ার বেদনায় আপ্লুত এবং তারা সব সময় খোঁজেন কোথাও কিছু পাওয়া যায় কিনা। প্রধানমন্ত্রী বা আওয়ামী লীগ প্রধান তাদের অনুগ্রহ বা অনুকম্পা পৃষ্ঠ হয়ে তাদেরকে কোন পদ পদবি দেয় কিনা, সেই চিন্তায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দর মূল ভরসা। সংগঠন দেখা, সংগঠনকে শক্তিশালী করা এবং সংগঠনকে সময় দেওয়ার মত সময় তাদের হাতে নেই। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় আড্ডা এবং কথাবার্তা বলার জন্য সাধারণত ব্যবহৃত হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। মহানগরীর কার্যক্রম হলো সিটি কর্পোরেশনকে ঘিরে। মহানগরীর কার্যালয় বা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যারা আসে, তার স্রেফ কিছু সময় কাটানো ও দলের একে অন্যের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করার জন্য আসে। শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অধিকাংশই থাকে নানা রকম তদবির ব্যবসা বাণিজ্য এবং ব্যক্তিগত কাজে কাটান।

আওয়ামী লীগ দশ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। এই ক্ষমতায় থাকার মূল্য দিতে হচ্ছে সংগঠনকে। এই সময় আওয়ামী লীগের সংগঠন সবচেয়ে ক্ষয়িঞ্চু এবং দুর্বল বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে এর বিরুদ্ধ মতও আছে। অনেকেই মনে করে করছে যেহেতু রাজনৈতিক কর্মকান্ড বেশি নেই। বিরোধী দলের কার্যক্রম নেই। কাজেই এখন রাজনৈতিক কর্মকান্ড সীমিত হয়ে গেছে। সীমিত রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সাংগঠনিক শক্তির দুর্বলতা বোঝার কোন উপায় নেই। আওয়ামী লীগ যে কোন সময় সংগঠিত হতে পারে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। সারাদেশে আওয়ামী লীগের বিস্তৃর্ণ নেতাকর্মী রয়েছে। কাজেই আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে দুর্বল একথা ঠিক নয়। হয়তো কর্মসূচী নেই বলে আওয়ামী লীগকে দুর্বল মনে করা হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের যারা পোড় খাওয়া তারা মনে করেন যে, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরে ক্ষমতার নানা রকম সুবিধা পেয়ে পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন আর আগের মতো ত্যাগ স্বীকার করতে কতটুকু প্রস্তুত সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। দুর্দিনে এই সমস্ত নেতাকর্মীরা কতটুকু রাজপথে নামবেন বা কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করবেন সেটা সময়ই বলে দিবে। তবে একটা ব্যাপারে সবাই একমত যে আওয়ামী লীগের আদর্শিক অবক্ষায় ঘটেছে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষীকি উদযাপন হবে আগামী বছর। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি হবে। এই সময়কে ঘিরে যতসব কর্মসূচী সব সরকারী উদ্যোগে নেওয়া হচ্ছে। দলীয় উদ্যোগে কর্মসূচী কম। দলীয় উদ্যোগে কর্মসূচী নেই বললেই চলে। যার ফলে সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে কোন কাজ নেই। প্রত্যেকেই নিজেদের আখের গুছিয়ে নিজেদের অবস্থান ভালো করার জন্যই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এটা একটা সংগঠনের জন্য বিপদজনক বলে মনে করা হচ্ছে।

মূলত সরকারে থাকার জন্য সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী মন্ত্রিসভায় বা এমপি হিসেবে আছেন তারা বাইরে এসে মনে করছেন তারা সরকারের অংশ। তাঁরা সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এরফলে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে অনেকে মনে করছে। আওয়ামী লীগের যারা প্রবীণ রাজনীতিবিদ তারা মনে করছেন, দু:সময়ে আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালি হয়। বিশেষ করে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, একানব্বইয় থেকে ছিয়ানব্বই বিরোধী দলের সময় আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত ছিল এবং আওয়ামী লীগ সম্বেন্ধে একজন প্রবীন নেতা বলেছেন, বন্যেরা যেমন বনে সুন্দর, শিশু মাতৃকোরে। সেরকম আওয়ামী লীগও সবচেয়ে বেশি তার সাংগঠনিক দক্ষতা দেখাতে পারে, যখন সে বিরোধী দলে থাকে। তাহলে কী দীর্ঘদিন সরকারে থাকার ফলে আওয়ামী লীগ আর দশটা রাজনৈতিক দলের মত একটি সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে? সময়ই এই প্রশ্নের উত্তর দিবে।  

বাংলা ইনসাইডার/এসআর/এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ডোনাল্ড লুর সফর ঘিরে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা বিএনপির

প্রকাশ: ০৮:৪৫ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

আগামী ১৪ ও ১৫ মে দুদিনের ঢাকা সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে তাঁর। গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন বা এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করলেও এবার তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। রাজনীতিতে তেমন কোন উত্তেজনা বা আতঙ্কও নেই যেমনটি ছিল নির্বাচনের আগে আগে। তবে ডোনাল্ড লুর সফর ঘিরে নতুন করে আশার বুক বাঁধছে বিএনপি। রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলটির মধ্যে। এরই মধ্যে বিএনপি গত শুক্রবার ঢাকায় সমাবেশ করেছে। পাশাপাশি সরকারবিরোধী দেশের সব সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু করেছে দলটি।

আজ রোববার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোট ও এলডিপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করে দলটি। বৈঠকে চলমান আন্দোলন ও আগামী দিনে করণীয় নির্ধারণে সমমনাদের মতামত গ্রহণ করেন বিএনপি নেতারা। বৈঠকে বিএনপি লিয়াজোঁ কমিটির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান। 

বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে এখনও তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি। তারা হয়তো কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং সুশাসন নিয়ে দেশটির কোন অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। আর সেজন্যই ডোনাল্ড লুর সফর বলে ধারণা বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীর। এ কারণেই দলটি চলমান রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটকে কাজে লাগাতে চায়। আবার সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় হতে চায়। 

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, ডোনাল্ড লু এবার ঢাকা সফর করছেন বেশকিছু সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে। আর তা হল বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় দেশটি। এ ছাড়াও জলবায়ু সংকট ও দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা নিয়ে আলোচনা করবেন ডোনাল্ড লু। এই সফরে তিনি সরকারি ও বেসরকারি নানা পর্যায়ে কয়েকটি বৈঠক ও মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন। 

ডোনাল্ড লু   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচন ঘিরেও সহিংসতা

প্রকাশ: ০৭:১১ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধ নিরসন না হতেই উপজেলা নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিভক্তি বাড়ছে, বাড়ছে সহিংসতা। এবার উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক নৌকায় নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি দলটি কেন্দ্রীয়ভাবেও কাউকে সমর্থন দেয়নি। এর ফলে নির্বাচনে দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন। যদিও দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, কোন মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু সে নির্দেশনা মানছেন আওয়ামী লীগের কেউই। বরং মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পরিবারের সদস্য বা মাই ম্যানদের পক্ষে সরাসরি ভূমিকা রাখছে। এর ফলে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। আর যার ফলে বাড়ছে কোন্দল, বাড়ছে সহিংসতা। সংসদ নির্বাচনের পর পরই দলীয় প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে যেমন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল উপজেলা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই রকম আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, গত ৮ মে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম। এখানে বিজয়ী হয়েছেন নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী ছেলে সাবাব চৌধুরী। নির্বাচনের চারদিন পর দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘরে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে এমপি পুত্র সাবাব চৌধুরীর বিরুদ্ধে। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতারা এমন অভিযোগ করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, গত ৮ মে অনুষ্ঠিত সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটারদের আসতে বাধা দেয় আনারস প্রতীকের কর্মীরা। কুপিয়ে আহত করে দোয়াত কলমের কর্মীদের। সন্ধ্যায় চারটি কেন্দ্রের ভোট উলটপালটও করা হয়। চরমহি উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, চরমহি উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরমহি উদ্দিন এনএ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজীপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বহুমুখী আশ্রয় কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত রেখে পুনঃভোট দেয়া এবং বাতিল হওয়া ১৯১৪টি ভোট পুনঃগননা করার পর চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার দাবী জানান তারা।

নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর থেকে প্রতিদিন সুবর্ণচরের বিভিন্ন উপজেলায় হামলা চালানো হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি হামলা, ভাঙচুর ও লুটের ঘটনা ঘটেছে চরজব্বার ইউনিয়নে। সেখানকার চাউয়াখালী বাজারে অন্তত ১৫টি দোকানপাট, আশপাশে অন্তত ২০টি বসত বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ সময় পিটিয়ে আহত করা হয় অর্ধশত কর্মী ও তাদের স্বজনদের। বিয়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘটনার একটি ভিডিও উপস্থাপন করা হয়। অভিযোগকারীরা, ঘটনার বিষয়ে খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।

উপজেলা নির্বাচন   সহিংসতা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘ডোনাল্ড লুকে নিয়ে বিএনপি উদ্ভট চিন্তা করছে’

প্রকাশ: ০৬:২৩ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কথা বার্তা বলবেন। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে তিনি আসবেন। বিএনপি মনে করেছে আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না। এই ধরনের উদ্ভট চিন্তা করছে।

রোববার (১২ মে) বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।


আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিবের সংবাদ সম্মেলন মানে অসত্যকে সত্য বলে চালানোর সুনিপুণ কৌশল। অসত্য বলা বিএনপি নেতাদের মৌলিক চরিত্র। সরকার পরিচালনা করছে জনগণের সরকার। অদৃশ্য শক্তি দ্বারা সরকার পরিচালনা বিএনপির চরিত্র। বিএনপির সময় হাওয়া ভবন থেকে সরকার পরিচালনা হতো। 


তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির বরপুত্র তারেক রহমানের অনুমোদন ছাড়া কিছু হতো না। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্র হাওয়া ভবন থেকে হয়। অদৃশ্য শক্তির মানসিক ট্রমায় ভুগছে বিএনপি।

এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ডোনাল্ড লু   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০২:১২ পিএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। তা হয়নি, বরং আরও বেড়েছে। সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।  

রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।

গত বুধবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের পূর্বে বহু নেতাকর্মীকে একতরফাভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। এখনো গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা কারাগারে রয়েছেন। বিরাজনীতিকরণ করতে ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসারস্থল হচ্ছে কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।

সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র তখন ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে যায়, রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা টাকা পাচার করে সেটি বিনিয়োগ করেছে বিদেশে, অথচ বাংলাদশের মানুষের অবস্থা খারাপ।

ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কে আসলো তাতে ইন্টারেস্ট নেই। জনগণই বিএনপির শক্তি। সরকার মনে করছে নির্বাচনের পর সংকট উতরে গেছে। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য খুবই খারাপ। তাকে হাসপাতালে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টাই তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন। 


মির্জা ফখরুল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন: কুমিল্লায় চার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের চার স্বজন প্রার্থী

প্রকাশ: ০৯:৩৯ এএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

কুমিল্লায় তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চারটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র চার সংসদ সদস্যের চার স্বজন প্রার্থী হয়েছেন। ওই চার সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হলেও তাঁরা আওয়ামী লীগের নেতা। এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ভোটাররা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে কুমিল্লার চারটি আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় চার নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হন।

কুমিল্লা-২ (হোমনা ও মেঘনা) আসনের সংসদ সদস্য হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল মজিদের স্ত্রী রেহানা বেগম হোমনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন। রেহানা বেগম কুমিল্লা উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

জানতে চাইলে রেহানা বেগম বলেন, ‘২০১৯ সালেও আমি চেয়ারম্যান হয়েছি নৌকা প্রতীক নিয়ে। এবার দল সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত রেখেছে। নেতা-কর্মীদের চাপে প্রার্থী হয়েছি।’

কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে আহসানুল আলম সরকার উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালেও আহসানুল চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। আহসানুল আলম সরকার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সদস্য। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

কুমিল্লা-৫ ( বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এম এ জাহেরের বড় ভাইয়ের ছেলে আবু তৈয়ব ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তৃতীয় ধাপে প্রার্থী হয়েছেন। আবু তৈয়ব কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।

স্বজনদের প্রার্থী হওয়া বিষয়ে সংসদ সদস্য মো. আবদুল মজিদ ও জাহাঙ্গীর আলম সরকারে ভাষ্য, প্রার্থীরা গতবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। তাই এবারও তাঁরা প্রার্থী।

সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, দল প্রার্থিতা সবার জন্য উন্মুক্ত রেখেছে। সারা দেশে বড় নেতাদের ভাই, ছেলে, স্ত্রী, সন্তানেরা প্রার্থী হয়ে ইতিমধ্যে অনেকে জয়ী হয়েছেন। দেবীদ্বারের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা মামুনুরকে চান। অনেকটা একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন সংসদ সদস্য এম এ জাহের। 


উপজেলা   নির্বাচন   কুমিল্লা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন