ইনসাইড বাংলাদেশ

চুক্তিচ্যাপ্টা প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:২৯ পিএম, ৩১ মে, ২০১৭


Thumbnail


প্রশাসনে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। বর্তমান সরকার শুরুর দিকে এই প্রবণতা এড়িয়ে চললেও সম্প্রতি বেশ কয়েকটি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে এই প্রথা অব্যাহত রেখেছে। যার ফলে প্রশাসনে সচিব নিয়োগে চুক্তিচ্যাপ্টা হয়ে পড়েছে প্রশাসন।

১৯৭৪ সালের গণকর্মচারী অবসর আইনের ৫(৩) ধারা অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্মচারীদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে পারেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন এই আইনের স্পিরিট হচ্ছে, সরকারি কাজে যদি কাউকে বিশেষভাবে প্রয়োজন হয়, কিন্তু প্রজাতন্ত্রের ওই কর্মচারি অবসরে চলে যাচ্ছেন, সেই ক্ষেত্রে। হতে পারে কোনো একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে একটা বিশেষ কাজ শুরু করেছিল সরকার। কিন্তু কাজটি সম্পন্ন হতে আরও কয়েক মাস বাকি থাকলেও ওই কর্মকর্তা বা কর্মচারি এখনই অবসরে চলে যাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা যেতে পারে।

তবে বাস্তবতা ভিন্ন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া এই গণকর্মচারীদের কমবেশি সবাই ক্ষমতাসীনদের ‘নিজের লোক’ বিবেচনায় এই নিয়োগ পেয়ে থাকেন। যারা সত্যিকারার্থেই প্রয়োজনে এই নিয়োগ পেয়ে থাকেন, তারাও সরকারের লোক বলে বিবেচিত হন।

বলা হয়ে থাকে, চুক্তিভিত্তিক একটি নিয়োগের ফলে নিচের দিকে ক্রমান্বয়ে প্রায় চারজন পদোন্নতি বঞ্চিত হন। তারাসহ পদোন্নতি বঞ্চিতরা সরকার পরিবর্তন হলে পদোন্নতির আশা করেন। কিন্তু এরই মধ্যে যাদের অবসরের সময় হয়ে যায়, তারা আবার নতুন সরকারের কাছে পদোন্নতি প্রত্যাশা করেন। আর এভাবেই বছরের পর বছর প্রজাতন্ত্রের প্রয়োজনে নয়, বরং রাজনৈতিক কারণে বাড়তে থাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ। তাছাড়া ‘নিজেদের লোক’ বিবেচনায় পদোন্নতি দেয়া এবং ‘নিজেদের নয়’ বিবেচনায় পদোন্নতি বঞ্চিত করার রেওয়াজতো সব সরকারের মধ্যেই আছে।

তারা বলছেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ফলে পদোন্নতি বঞ্চিতদের মধ্যে কাজ করে হতাশা, কমে যায় কর্মস্পৃহা। যার ফলে নতুন ক্যাডারদের অনেকেই ছুটি নিয়ে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি জমান। পরবর্তীতে এসব মেধাবীদের অনেকেই আর দেশে ফেরেন না।

সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রজাতন্ত্রের সেবার স্থলে ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি প্রধান হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক সব দলই এই ধারাটি লালন করছে। কোন দলই এই ধারা থেকে বের হতে চায় না, বরং অব্যাহত রাখে।

জানা গেছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরকালে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে নীতিমালা করার তাগিদ দিয়েছিলেন। এই বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠিও দিয়েছেন তিনি। চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বলেছে, অবসরের পরে চাকরির মেয়াদ বাড়ালে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের কোনো দলের সদস্য বলে অপবাদ দেওয়া সহজ হয়।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকে নিরুৎসাহিত করতে চিঠিতে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সরকারি কর্মচারীদের চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে তাঁদের চুক্তিভিত্তিক চাকরি পরিহার করতে হবে। আগে তাঁরা ৫৭ বছরেই চাকরি থেকে অবসরে যেতেন। ২০১১ সালে সেটা বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে।
তবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়টিকে একেবারে বাদও দেননি অর্থমন্ত্রী। সে কারণে এ বিষয়ে একটি সমীক্ষা করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। প্রস্তাবে তিনি বলেছেন, কী ধরনের জনবল ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে অবসরে যাবে, তাদের কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রজাতন্ত্রের প্রয়োজনে সরকারের দরকার, যে পদে বা ক্যাডারের কোন কর্মকর্তাকে অবসরের পরও সরকার ব্যবহার করতে চায় তাঁদের ক্যাডারবহির্ভূত বিশেষ পদে নিয়োগ করার পরামর্শ দেন তিনি। অবশ্য অর্থমন্ত্রীর এসব প্রস্তাব ফাইলবন্দী অবস্থাতেই আছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।

জানা গেছে, সচিবদের মধ্যে সর্বশেষ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম। গতবছর ২৭ নভেম্বর জনপ্রশাসন সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে বদলি করা হয়। ৩১ ডিসেম্বর তাঁর অবসরে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২৭ ডিসেম্বর অবসরোত্তর ছুটি বাতিল করে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়।

তথ্যসচিব মরতুজা আহমদ গত ২২ জানুয়ারি এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। গত ২৭ নভেম্বর নতুন পদ ‘এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক’ সৃষ্টি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদকে। গত ১০ অক্টোবর এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সাবেক সচিব এম এ এন ছিদ্দিক। সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সচিব কাজী মো. আমিনুল ইসলামকে তিন বছরের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দেওয়া হলেও চাকরি থেকে চলে যাওয়ার অনেক দিন পর সরকারি কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, নৌপরিবহন সচিব অশোক মাধব রায়কে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ১৯ জুলাই শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত পদে প্রেষণে কর্মরত সরকারের সচিব মো. সাহাব উল্লাহকে গত ১৫ মে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরাকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটনের প্রধান কার্যালয়ে ‘বিকল্প নির্বাহী পরিচালক’ পদে যোগদানের জন্য ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞাকে তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় সরকার। সম্প্রতি সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়িয়েছে সরকার। আর বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল কে এম মমিনুর রহমানকে আরো এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পিআরএল বাতিল করে কেনিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মেজর জেনারেল আবুল কালাম মো. হুমায়ুন কবিরকেও চুক্তি ভিত্তিতে এক বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

এছাড়া সম্প্রতি বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপারও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ভিত্তিতে কাজ করছেন।
সবমিলে বর্তমান প্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা আছেন দেড় শতাধিক। তাছাড়া আরো শতাধিক সরকারি কর্মচারী রয়েছেন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ভিত্তিতে।

জানা গেছে, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিবসহ দায়িত্বশীল পদ প্রায় ৮৩টি। এর মধ্য ১৭ জন অতিরিক্ত সচিব দিয়ে দায়িত্ব চালিয়ে নিচ্ছেন। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে সরকারের নীতিনির্ধারণী ফোরামের সুপারিশের ভিত্তিতে সম্প্রতি ১৩ জনকে চুক্তিতে নিয়োজিত করা হয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার/এমএএম



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী: টিআইবি

প্রকাশ: ০৩:২৪ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক . মো ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ প্রার্থী ক্ষমতাশীল দলের। অনেকেই ক্ষমতাশীলদের আত্মীয় স্বজন। প্রার্থীদের মধ্যে পুরুষের অধিক্য রয়েছে। ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য একই রকম। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী। রাজনীতির সঙ্গে সম্পদ বৃদ্ধির একটি যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতা আয় বৃদ্ধির সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি সম্পৃক্ততা দেখা যাচ্ছে। যে কারণে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারছে না। 

রোববার (১৯ মে) ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব কথা বলেন তিনি।

দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১৬০ উপজেলায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে পেশা হিসাবে ব্যবসায়ীদের আধিক্য রয়েছে। পর্যায়ে দ্বিতীয় ধাপে পেশা হিসাবে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৭০.৫১ শতাংশ ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৮.৭৩ শতাংশ ব্যবসায়ী।

যেখানে প্রথম ধাপে পেশা হিসাবে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৭০ শতাংশই ছিলেন ব্যবসায়ী, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৭ শতাংশ নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ২৪ শতাংশ ব্যবসাকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন।

দ্বিতীয় দাপে ১৬০টি উপজেলার মধ্যে ১৫৭টির প্রার্থীর হলফনামা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে, বাকি তিনটি করেনি। প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া আট ধরনের তথ্যের বহুমাত্রিক তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।


উপজেলা   নির্বাচন   চেয়ারম্যান   টিআইবি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চার বছরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরলেন মেয়র তাপস

প্রকাশ: ০২:১৪ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

দায়িত্ব গ্রহণের ৪ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিগত দিনের উন্নয়ন কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

রোববার (১৯ মে) নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে দায়িত্বভার গ্রহণের চার বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বৈশ্বিক করোনা মহামারির সময়ে আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করি। করোনার মাঝেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে প্রায় সব খাতেই আমরা আমূল পরিবর্তন আনতে সচেষ্ট হই। একটি উন্নত, বাসযোগ্য ঢাকা বিনির্মাণে বিগত চার বছরে সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন খাতে বিদ্যমান অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করে সুশাসন নিশ্চিত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন সাধন, আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলসহ মাণ্ডা, শ্যামপুর, জিরানি কালুনগর খাল পুনরুদ্ধার নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টিতে উদ্যোগ গ্রহণ, বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, ঢাকার সচলতা আনয়নে বহুমাত্রিক উদ্যোগ গ্রহণ বাস্তবায়ন, দশকের পর দশক ধরে চলা দখল সাম্রাজ্যের অবসান ঘটানো, প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ-উদ্যান- কাঁচাবাজার, গণশৌচাগার প্রতিষ্ঠা, জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর বাস্তবভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং সর্বোপরি ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ঢাকাকে বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে নানাবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালন বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং তা অব্যাহতভাবে চলমান রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দায়িত্বভার গ্রহণের প্রথম দিন হতেই কর্পোরেশনের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি, অনিয়ম, দুর্নীতি দূর করার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমি শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ বাস্তবায়ন করে চলেছি। প্রশাসনিক সংস্কারের আওতায় এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’

দায়িত্ব পালনে অবহেলা, গাফিলতি দুর্নীতির দায়ে বিগত বছরে বিভিন্ন স্তরের ৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও কর্পোরেশনের প্রাত্যহিক কার্যক্রম সম্পাদনে জনবলের যে তীব্র সংকট ছিল তা উত্তরণে বিগত বছরে ভারী গাড়ির ১৪৩ জন চালক, ৬৬ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ৭৭ জন হিসাব সহকারী, ২৭ জন রেভিনিউ সুপারভাইজার, ৩১ জন পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক, ২০ জন স্প্রেম্যান সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন বিভাগে সর্বমোট ৮৭৯ জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ২১৭ জনের নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মেয়র বলেন, ‘মেয়র নির্বাচনের আগে আমি ঢাকাবাসীর ওপর কোনো রকমের করের বোঝা না চাপিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছিলাম। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিগত চার বছরে আমরা কোনো খাতে কোনো কর বৃদ্ধি করিনি। বরং এসময়ে ২৫টি নতুন খাত সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ১৪টি নতুন খাত হতে আমরা রাজস্ব আদায় শুরু করেছি। ফলে করোনা মহামারির মতো বৈশ্বিক সংকটের মাঝেও রাজস্ব আদায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ইতিহাস সৃষ্টি করে চলেছে, যা অদ্যাবধি অগ্রসরমান। ২০১৯-২০ অর্থবছরে কর্পোরেশনের রাজস্ব আদায় ছিল মাত্র ৫১৩.৯৬ কোটি টাকা, যা ২০২০-২১, ২০২১-২২ ২০২২-২৩ অর্থবছরে যথাক্রমে ৭০৩.৩১ কোটি, ৮৭৯.৬৫ কোটি ১০৩১.৯৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত যে রাজস্ব আদায় হয়েছে তা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫৪ কোটি টাকা বেশি। ফলে চলমান অর্থবছরে আমরা পূর্বেকার মাইলফলক অতিক্রম করতে পারব বলে আশাবাদী।’

আগে সব উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য কর্পোরেশনকে প্রকল্প নির্ভর থাকতে হতো। কিন্তু রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ঢাকাবাসীর কল্যাণে অনেক উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য আমাদেরকে এখন আর প্রকল্প নির্ভর থাকতে হয় না। বিগত চার বছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে হাজার ২০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে নানাবিধ অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন সংস্কার করেছে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ২০২০-২১ সালে ১২১.৮৫ কোটি, ২০২১-২২ সালে ৩৩৯.৪৪ কোটি, ২০২২-২৩ সালে ৩৯০.১৬ কোটি এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪০০ কোটি টাকার বেশি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র, খাল- নর্দমা-বক্স কালভার্ট হতে বর্জ্য অপসারণ, সড়ক, জলাবদ্ধতা নিরসনে অবকাঠামো, সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র, গণশৌচাগার ইত্যাদি অনেক উদ্যোগ অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন সংস্কার করেছি।

তিনি আরও বলেন, ‘দখলমুক্তির ধারাবাহিকতায় আমরা দীর্ঘ এক শতাব্দী পর নলগোলা ভাওয়াল রাজবাড়ি (রাজকুঠি), ৮০ বছর পর সূত্রাপুরের মাইশা খাল, তিন দশক পর রায় সাহেব বাজার মোড়, যুগ পর লক্ষ্মীবাজারে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পার্কিংয়ের জায়গা, চার দশক পর ধলপুর ক্লিনার কলোনি হতে অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটিয়েছি। ফলে, বিগত চার বছরে শতাধিক উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে ৫৭.৭২৪ একর ভূমি উদ্ধার করেছি, যার আনুমানিক বাজার মূল্য হাজার শত ৮৩ কোটি টাকার বেশি।’

এই চার বছরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অটল, অদম্য অনমনীয় কর্মোদ্যোগের ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে সুশাসন নিশ্চিত হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকাবাসীর আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে, যে সংস্থা একসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতো সে সংস্থা আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ, আত্মনির্ভরশীল মর্যাদাপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মেয়র।


মেয়র তাপস   চার বছর   উন্নয়ন কার্যক্রম   ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মেট্রোরেলে ভ্যাট এনবিআরের ভুল সিদ্ধান্ত: কাদের

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের এনবিআর জনপ্রিয় পরিবহন মেট্রোরেলে হঠাৎ করে ১৫ শতাংশ ভ্যাটের ঘোষণা দিল। বিষয়টি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। এনবিআরের সিদ্ধান্ত ভুল। এতে করে মেট্রোরেলের সুনাম নষ্ট হয়। প্রধানমন্ত্রী এটি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

রোববার (১৯ মে) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড আয়োজিত ঢাকা মেট্রোরেলের ব্রান্ডিং সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের মেট্টোরেল অনেক সুন্দর, শব্দদূষণ নেই। মেট্টোরেল আমাদের সম্পদ। ২০৩০ সালে আমাদের টার্গেট ছিল ৬টি এম আর টি লাইনের যে কাজ শেষ হবে। 

সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের সচিব বি এম আমিনুল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন সিদ্দিক, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি জাইকা বাংলাদেশে প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহোদি।


মেট্রোরেল   ভ্যাট   এনবিআর   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মধ্যরাত থেকে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০১:৫৪ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সাগরে মাছের উৎপাদন ও প্রজনন বাড়াতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা পালনে ইতোমধ্যে কুয়াকাটা উপকূল এলাকাসহ মৎস্য বন্দর আলিপুর-মহিপুরের জেলেরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।

সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ঘোষিত ৬৫ দিনের সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে রোববার রাত ১২টায়। এই নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকবে রোববার (২৩ জুলাই) রাত ১২টা পর্যন্ত।

বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন সমুদ্রে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়াতে জেলেরা পড়বেন অস্তিত্ব সংকটে। একদিকে বছরে দুই বার নিষেধাজ্ঞা। অপরদিকে এই বছর ভরা মৌসুমে সাগরে মাছের আকাল পড়েছে। ঋণের বোঝা এবং ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে জেলেরা রয়েছে চরম বিপাকে। এদিকে দীর্ঘদিন কর্মহীন সময় পার করবেন তারা। তবে সরকার এই ৬৫ দিনের অবরোধের জন্য জেলে প্রতি ৫৬ কেজি করে চাল বরাদ্দ করেছে।

সমুদ্রে বর্তমানে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের প্রজননকাল হওয়ায় বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নদীর মোহনায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই সময়ে দেশের সামুদ্রিক জলসীমানায় সব ধরনের মৎস্য শিকার, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ঘোষণায় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

উপকূলীয় জেলেরা জানান, সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সমুদ্রে মাছ শিকার করা যাবে না। এতে মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সুরক্ষিত থাকলেও উপকূলে এই পেশার সঙ্গে জড়িত অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধ থাকবে দীর্ঘ দুই মাস।

অনেক জেলে অভিযোগ করে বলেন, অবরোধকালীন সময়ে প্রতিবছর ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমানায় মাছ ধরলেও কোনো ভূমিকা দেখা যায় না প্রশাসনের। তা না হলে আমাদের জালে চাহিদানুযায়ী মাছ ধরা পড়ত। তারা আরও দাবি করে বলেন, সরকার দু'বছরের স্থলে বছরে একবারসহ ভারতের সময়সীমার সঙ্গে যেনো নিষেধাজ্ঞা (অবরোধ) দেওয়া হয়।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জেলেদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলেদের ঋণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির পরিকল্পনাও চলছে।


মাছ শিকার   নিষেধাজ্ঞা   মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উত্তরা-টঙ্গী পর্যন্ত মেট্রোরেলের আরও ৫ স্টেশন

প্রকাশ: ০১:৪৫ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা উত্তর স্টেশনের পরে আরও ৫ টি স্টেশন হবে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দক।

রেববার (১৯ মে) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ডিএমটিসিএল আয়োজিত ঢাকা মেট্রোরেলের ব্র্যান্ডিং সেমিনারে তিনি কথা বলেন।

মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন- রুটটি বর্তমানে মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এখন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত কাজ সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। 

রুটের কাজ শেষ হলে মেট্রোরেল অতিরিক্ত লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে বলে উল্লেখ করেন এম এন সিদ্দিক।

উত্তরা উত্তর থেকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত রুটের দৈর্ঘ্য হবে . কিলোমিটার। রুটে নতুন স্টেশন হবে। এগুলো হলো দিয়াবাড়ী বাজার, সোনারগাঁও জনপদ রোড পূর্ব, পশ্চিম, টঙ্গী বাজার, টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন।

সেমিনার উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের সচিব বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়ামা কিমিনোরি প্রমুখ।


মেট্রোরেল   স্টেশন   টঙ্গী   উত্তরা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন