ইনসাইড পলিটিক্স

কাউন্সিল নিয়ে খালেদা-তারেক যুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:৩০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯


Thumbnail

বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে কাউন্সিল অধিবেশনের সিদ্ধান্ত নিলেও লন্ডন থেকে সবুজ সংকেত না আসায় কাউন্সিলের কোন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে না। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিএনপি তৃনমূলের কাছ থেকে নেতৃত্বের পরিবর্তন করে নতুন নেতৃত্ব এবং কাউন্সিল অধিবেশনের একটা তাগড়া দেওয়া হয়েছে। কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়াও কারাগার থেকে দ্রুত কাউন্সিল করে নেতৃত্ব পুনর্গঠনের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এনিয়ে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা করেছিলেন, চলতি বছরই বিএনপির কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেকের অনাগ্রহের কারণে কাউন্সিল থমকে গেছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, কাউন্সিল অধিবেশন হলেই তারেকের একক কর্তৃত্ব খর্ব হতে পারে। তৃনূমলের ক্ষোভ প্রকাশ হতে পারে। বিএনপিতে তারেকের বদলে খালেদার কর্তৃত্ব পুন:প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। এ কারণেই কাউন্সিল থেকে তারেক জিয়া দূরে সরে এসেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চত করেছেন।

উল্লেখ্য যে, দুটি দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া কারান্তরীণ রয়েছেন। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং অন্যদের মাধ্যমে দলের নিয়মিত বার্তা পাঠাচ্ছেন। অন্যদিকে তারেক জিয়া লন্ডন থেকে বিএনপি পরিচালনার জন্য নানা রকম নির্দেশনা দিচ্ছেন। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বীকার করেছেন যে, খালেদা জিয়ার নির্দেশনা এবং তারেকের নির্দেশনার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। দুইজনের কৌশল সম্পূর্ণ দুই মেরুতে। যার ফলে দলের নেতারা বিভ্রত এবং এ কারণে দলের নেতারা কোনদিকে যাবেন তা নিয়ে একটা বিভ্রান্তিতে ভুগছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, গত সপ্তাহে কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলনের নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি বলেছেন যে, তার কারান্তরীণ (বেগম খালেদা জিয়া) ইস্যুকে ঘিরে একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ধাপে ধাপে আন্দোলনকে চুড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে  বেগম খালেদা জিয়ার ওই বার্তায় এটা স্পষ্ট করে বলেছেন, আগামী ডিসেম্বর নাগাদ যেন সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় আন্দোলন গড়ে তোলা যায় তার প্রস্ততি নিতে হবে। এই আলোকেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের কিছু কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তারেক জিয়া লন্ডন থেকে এই ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, এখন আন্দোলন করার সময় নয়। বরং ঐক্যফ্রন্টকে ঘিরে একটি শক্তিশালি মোর্চা গঠন করার ব্যাপারে তিনি নেতাকে নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে রংপুর উপনির্বাচনসহ সমস্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় তারেক জিয়ার এই নির্দেশনা গৃহীত হয় এবং দল আসন্ন সাতটি উপজেলা নির্বাচন, রংপুর উপনির্বাচনসহ ঢাকা তিন সিটি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। এই বার্তা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে পৌঁছানো মাত্র বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এই সমস্ত অর্থহীন নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার কি মানে তা তিনি জিজ্ঞেস করেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসককে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন যে, যখন আমরা এই সরকারকে অবৈধ বলছি। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন মানছি না, তখন এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে তা তার বোধগম্য নয়।

মা-ছেলের এই দ্বন্দ্বে এখন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এখন মোটামুটি ভিরমি খাওয়ার মতো অবস্থা। তারা বুঝতে পারছেন না তারা কোনদিকে যাবেন। সম্প্রতি গত বুধবার বেগম খালেদা জিয়া অনতিবিলম্বে দলের কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা এবং জেলা পর্যায়গুলোতে কাউন্সিল করা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থাকবেন, যারা জেলা নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না-সহ বিভিন্ন নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। কিন্তু এই নির্দেশনা পাওয়ার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লন্ডনে তারেক জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারেক জিয়া আপাতত কাউন্সিলের কোন দিন তারিখ না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। একাধিক সূত্র বলছে যে, নির্বাচনের পর থেকে তারেক জিয়া তৃণমূলের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে স্কাইপিতে যোগাযোগ করছেন। তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন। কিন্তু এসব বৈঠকে তারেক জিয়ার নেতৃত্ব এবং বিচক্ষণতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তারেক জিয়ার একের পর এক বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

দুই বছর আগেও তারেক জিয়ার যে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব বিএনপিতে ছিল তা আলগা হয়ে গেছে। বরং বিএনপির তৃণমূলের নেতৃত্ব মনে করছে যে, বিএনপির একমাত্র নেতা তারেক জিয়া নয়। এই অবস্থায় বিএনপির তৃণমূলের কর্তৃত্ব খর্ব হওয়ার প্রেক্ষিতে তারেক জিয়া এখনি কাউন্সিল করার পক্ষপাতি নয়। ফলে তারেক জিয়া- খালেদা জিয়ার দ্বন্দ্ব এখন বিএনপির নেতৃবৃন্দকে এক মহা বিভ্রান্তিতে ফেলেছে।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

স্বেচ্ছা নির্বাসনে ফখরুল

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কী স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলেন? গতকাল তিনি ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পরেও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তাঁর কোন উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রচন্ড বিরক্ত এবং অনুৎসাহী। বারবার সাংবাদিকদের তিনি অনুরোধ করেছিলেন তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি বাড়িতে গিয়েছেন এবং সেখানে রীতিমতো নিজেকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। আজ সারাদিন দলের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে কোন যোগাযোগ করতে পারেননি। এমনকি ফোন করা হলেও তিনি ঘুমিয়ে আছেন, বিশ্রামে আছেন কিংবা পরে ফোন করুন- এরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই নীরবতা বিএনপির মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। 

সাধারণত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিদেশ থেকে ফেরার পর ফুরফুরে থাকেন, স্বতঃস্ফূর্ত থাকেন এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। যেমন- দলকে কীভাবে পরিচালিত করতে হবে, তাঁর আন্দোলনের লক্ষ্য কী ইত্যাদি।

প্রতিবারই দেখা গেছে, বিদেশ থেকে ফেরার পরপরই তিনি পরের দিন দলীয় কার্যালয়ে অথবা চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গেছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন, সিনিয়র নেতাদের সাথে কুশল বিনিময় করেছেন। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, অতীতে বিদেশ থেকে ফিরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সব নেতাকে ফোন করতেন, তাদের খোঁজখবর নিতেন এবং আন্দোলন সংগ্রামের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য হালনাগাদ করতেন। কিন্তু এবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় ফেরার পর সেই যে বাড়িতে গেছে এখন পর্যন্ত তিনি কারও সঙ্গে দেখা করেননি। আজ বিএনপির দলীয় কার্যালয়েও তাকে দেখা যায়নি। এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে তখন পর্যন্ত তিনি দলের চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে যাননি।

তবে বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসলে শারীরিক ভাবে অসুস্থ। বিদেশ ভ্রমণের সময় তাঁর একটা ধকল গেছে। বিশেষ করে ওমরা পালনের সময় বেশ কিছু শারীরিক কাজ করতে হয়। একারণেই তিনি একটু অসুস্থ বোধ করছেন। দু একদিনের মধ্যেই তিনি আবার স্বরূপে ফিরবেন এবং রাজনীতির মাঠে তাকে দেখা যাবে। তবে বিএনপি নেতারা এমনটি মনে করছেন না। 

এর আগেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন সিঙ্গাপুর থেকে ফিরলেন তখনও তিনি নীরবে ছিলেন এবং যে ক দিন তিনি দেশে ছিলেন সে কয়েকদিন রুটিন দু একটি কাজ ছাড়া কোন কাজেই তাকে খুব একটা উৎসাহী এবং আগ্রহী দেখা যায়নি। 

বিএনপির ঢাকা মহানগরীর একজন নেতা বলেছেন, আগের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেন মরে গেছেন। এখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আগের মতো সপ্রতিভ উদ্যোমী দেখা যায় না। তাঁর মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা একেবারেই নেই।

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় কারাগারে ছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পরপরই মির্জা ফখরুল বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার কাছে দলের মহাসচিব পদ ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেন এবং শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি এখন আর দায়িত্ব পালন করতে চান না- এমন বক্তব্য দেন। কিন্তু সেই বক্তব্য আমলে নেননি তারেক জিয়া। আর এ কারণেই নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন এবং আস্তে আস্তে দলে নিজেকে অপ্রয়োজনীয় প্রমাণের জন্য তিনি যেন চেষ্টা করে চলছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি পাচ্ছে বিএনপি, তবে...

প্রকাশ: ০৮:১৬ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসাসহ নিঃশর্ত মুক্তি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ঢাকায় সমাবেশ করার অনুমতি পাচ্ছে বিএনপি। তবে  সুনির্দিষ্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে। 

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সমাবেশের অনুমতি নিতে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কার্যালয়ে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম এবং সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু।

বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দলের আবদুস সালাম জানান, সমাবেশের ব্যাপারে পুলিশের মনোভাব পজিটিভ। আমরা আগেই এই সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিলাম। তবে তাপপ্রবাহের কারণে সেটি পিছিয়ে আগামীকাল শুক্রবার (১০ মে) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে এ সমাবেশ ও মিছিল করা হবে।

তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা বলেছেন বিকেলের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাবেন। যেহেতু শুক্রবার ট্রাফিক সংক্রান্ত কোনো ইস্যু নেই, তাই আমরা প্রত্যাশা করছি তাদের সহযোগিতা পাবো।

বিএনপি সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেই না। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচি করবে এটিই স্বাভাবিক। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা কিছু শর্ত আরোপ করি।’

তিনি বলেন, ‘জনদুর্ভোগ সৃষ্টি যাতে না হয় সে ব্যাপারে বিএনপিকে বলা হয়েছে। শর্ত মানলে তাদের নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।’

বিএনপি   সমাবেশ   রাজনীতির খবর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় আরও বিভক্ত হল আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগের মধ্যে লড়াই করে জিতেছে। এর ফলে উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি আরও তীব্র আকার ধারণ করলো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয় স্বজনদের কারণে স্থানীয় পর্যায়ে অনেক ত্যাগী পরীক্ষিত নেতা পরাজিত হয়েছেন। আবার অনেক জায়গায় ত্যাগী পরীক্ষিত নেতারা বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু এই বিজয় বা পরাজয় আওয়ামী লীগের কোন্দল মেটাতে পারেনি। বরং অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে আওয়ামী লীগের কোন্দল এবং বিভক্তি আরও বেড়ে যাবে। উপজেলা নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক ছিল নোয়াখালীর সুবর্ণচর। সেখানে আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম পরাজিত হয়েছেন একরামুল করিম চৌধুরীর পুত্র সাবাব চৌধুরীর কাছে। এটি তৃণমূলের মধ্যে একটা বড় ধরনের নাড়া দিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে যে, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এবং এমপিদের সমর্থিত প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। 

উপজেলা নির্বাচন গুলোর মধ্যে যেখানে যেখানে মন্ত্রী এবং এমপিদের স্বজনেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে সেখানে নির্বাচন হচ্ছে উত্তেজনাপূর্ণ এবং এই উত্তেজনার কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েছে। এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে যে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মুখ দেখাদেখি রীতিমতো বন্ধ হয়ে গেছে। এটি আওয়ামী লীগের জন্য ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য স্বীকার করেছেন যে, উপজেলা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী যে কৌশল গ্রহণ করেছিলেন, সেই কৌশল যদি বাস্তবায়িত হত তাহলে আওয়ামী লীগে বিভক্তি থাকত না। এসময় প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচন থেকে দূরে থাকবেন। তৃণমূলের নেতারা যে যার মতো করে নির্বাচন করবেন এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাকে ভোট দিবে তিনি বিজয়ী হবেন। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় মন্ত্রী-এমপিদের ভূমিকা। মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয় স্বজন অথবা নিজস্ব লোককে জেতানোর জন্য শুরু থেকেই নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। অনেক জায়গায় তারা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেন যে আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রচারণার জন্য সুযোগ পাচ্ছিলেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সমস্ত উপজেলাগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং ভোটার উপস্থিতি কম হয়। তারচেয়েও বড় কথা হলো এ ধরনের অবস্থান গ্রহণের ফলে আওয়ামী লীগের মধ্যে দুটি পক্ষ হয়ে গেছে এবং তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি আক্রমণের ঘটনাও ঘটিয়েছে কোথাও কোথাও। উপজেলা নির্বাচনের পর বেশ কয়েকটি জায়গায় সহিংসতার ঘটনাও খবর পাওয়া গেছে। এই বিভক্তি আওয়ামী লীগ কীভাবে মেটাবে সেটি হলো দেখার বিষয়।

উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   দলীয় কোন্দল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলাতেও ভুল কৌশলে ব্যাকফুটে বিএনপি

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই অবস্থান গ্রহণ করেছিল। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচন বিএনপি বর্জন করবে এবং এই নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। যেমন কথা তেমন কাজ। উপজেলা নির্বাচনে প্রথম দফায় ৭৩ জন বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৬৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপির এই বহিষ্কারাদেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা উপজেলা নির্বাচনে বহাল ছিলেন। 

প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর বিএনপির বহিষ্কৃত কোনো প্রার্থী নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনেননি। নির্বাচনকে নিয়ে তাদের কোন প্রশ্ন ওঠেনি। স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে যে ধরনের সহিংসতা এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার কথা তেমন কিছু ঘটেনি। বরং উপজেলা নির্বাচন বা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের তুলনায় এবার উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। কিন্তু একেবারেই হতাশাজনক নয়। 

নির্বাচন কমিশন বলেছে, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোটার উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন। প্রধান বিরোধী দলের নির্বাচন বর্জনের পরও ৪০ শতাংশ ভোটার ভোট দেওয়াটা খুব একটা খারাপ দৃষ্টান্ত নয়। 

বিএনপি শুধু উপজেলা নির্বাচনে তাদের দলীয় প্রার্থীদেরকে নিরুৎসাহিত করেনি, ভোটারদেরকে ভোট বর্জনের জন্য  প্রচারণায় অংশ নিয়েছিল। বিএনপি বলেছিল যে, জনগণকে ভোট বর্জনের জন্য তারা উদ্বুদ্ধ করবে। কিন্তু বিএনপির এই ভোট বর্জনের প্রচারও না ফ্লপ করেছে। বিএনপির ভোট বর্জনের ডাকে সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি। কোনো কোনো উপজেলাতে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে দুই পক্ষের মধ্যে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচন একেবারে নিষ্প্রাণ হয়েছে এমনটি বলা যাবে না। এই নির্বাচন আরও ভালো হতে পারতো যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতো। কিন্তু বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াও যে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গেছেন এবং নির্বাচন সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে এটা বিএনপির জন্য একটা বড় পরাজয়। তার চেয়ে বিএনপির বড় পরাজয় যে, দলের শৃঙ্খলা এখন ভেঙে পড়েছে। দলের নির্দেশনা মানছেন না বিদ্রোহীরা। এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে যাবে বলেই অনেকে মনে করছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির যে ভোট বর্জনের প্রচারণা সেই প্রচারণায় জনগণ সাড়া দেয়নি। তাহলে উপজেলা নির্বাচনের ভুল কৌশল কি বিএনপিকে আরও এক ধাপ নিচে নামিয়ে দিলো?


উপজেলা নির্বাচন   বিএনপি   রাজনীতির খবর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

প্রকাশ: ০৫:১১ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাজ্যের ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

বুধবার (৮ মে) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের বাসভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুকও অংশ নেয়।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোয়া এক ঘণ্টার ওই বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, মানবাধিকার সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ অংশ নেন।


যুক্তরাজ্য   পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন