ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চীনে উইঘুর গণহত্যা ও পূর্ব তুর্কিস্তানের স্বাধীনতা দিবস

প্রকাশ: ০৬:৩৮ পিএম, ১২ নভেম্বর, ২০২১


Thumbnail

চীনের একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ জিংজিয়াং বা শিনচিয়াং। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট চীন সরকার প্রদেশটিকে শিনচিয়াং প্রদেশ নামে ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এটি চীনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রদেশটির মূল জনগোষ্ঠী হল উইঘুর মুসলিমরা। উইঘুররা প্রধানত তারিম অববাহিকা এবং তাকলামাকান মরুভু্মির নানা মরূদ্যানে বসবাসকারী তুর্কি বংশোদ্ভূত কৃষিজীবী মানুষ। যারা এই অঞ্চলটিতে প্রায় ৪০০০ হাজার বছর ধরে বসবাস করে আসছে। কিন্তু কমিউনিস্ট শাসিত গণচীন সরকার প্রদেশটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে উইঘুর মুসলমানদের উপর যেনো এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। 

প্রদেশটিতে বর্তমানে ৪৫শতাংশ উইঘুর ও ৪০শতাংশ চীনের প্রধান ভাষাভাষী সম্প্রদায় হানগোষ্ঠীর বসবাস। চীন সরকার প্রদেশটিতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে আস্তে আস্তে চীনের অন্যান্য অঞ্চল থেকে হান গোষ্ঠীর মানুষদের এই অঞ্চলে স্থানান্তরের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। হানদেরকে ভালো কাজ ও বেশি বেতন দিয়ে এই অঞ্চলে স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। যার ফলে দিন দিন এই অঞ্চলের প্রধান জনগোষ্ঠী উইঘুররা সংখ্যা লঘিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। 

উইঘুর সংস্কৃতির সাথে মূলত টার্কিশ সংস্কৃতি দৃঢ় মিল বন্ধন রয়েছে। চীনারা মনে করে ইসলামের ছায়া তলে এসে উইঘুররা নিজেদের কলুষিত করে ফেলেছে। অনেক ঐতিহাসিকদের মতে খ্রিষ্টাব্দ নবম-দশম শতক থেকে উইঘুররা ইসলাম ধর্মে দীক্ষায়িত হওয়া শুরু করে। বর্তমান চীনা শাসকদের আগে থেকে চীনা রাজবংশের সাথে উইঘুরদের দ্বন্দ্ব বিদ্যমান ছিলো। চীনা রাজবংশও উইঘুরদের উপর জোর পূর্বক নিজেদের শাসন ব্যবস্থা জারি করে রেখেছিলো যা বর্তমানে এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। 

পূর্ব তুর্কিস্তান

পূর্ব তুর্কিস্তান স্বাধীনতা আন্দোলন অথবা উইঘুর স্বাধীনতা আন্দোলন এমন একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন যার প্রধান লক্ষ্য চীনের শিংচিয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলকে উইঘুর জাতির জন্য এক স্বাধীন দেশে পরিণত করা যার নাম হবে "পূর্ব তুর্কিস্তান"। তবে চীন সরকার পূর্ব তুর্কিস্তান স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে যেকোনো সমর্থনকে "জঙ্গিবাদ,সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদের" অংশ বলে মনে করে। যারা এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত হতে ইচ্ছুক কিংবা যুক্ত তাদের চীন সরকারের পক্ষ থেকে ‘ডিটেনশন সেন্টারে’ পাঠিয়ে শুদ্ধি করণ করার নামে ভয়ানক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। নিজেদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের আন্দোলন উইঘুররা বিংশ শতকের শুরু থেকেই চালিয়ে আসছে। উইঘুরদের এই আন্দোলনকে মোট দুটি সময়ের নিরিখে ভাগ করা যায়। 
১. চীন প্রজাতন্ত্রের অধীনে: এই সময়টা বিংশ শতকের শুরুর দিকের। তবে উইঘুরদের এই প্রচেষ্টা খুব বেশি দিন স্থায়ী রূপ পায় নি। `প্রথম পূর্ব তুর্কিস্তান প্রজাতন্ত্র` (বা তুর্কি ইসলামি পূর্ব তুর্কিস্তান প্রজাতন্ত্র) যার স্থায়ীত্ব ছিল ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৪ পর্যন্ত। কাশগরের বেশ কিছু অঞ্চল উইঘুররা দখলে নিলে চীন সেনাবাহিনী কাশগারের প্রথম যুদ্ধ(১৯৩৩) ও কাশগারের দ্বিতীয় যুদ্ধে(১৯৩৪) জয়ী হবার পর এই প্রজাতন্ত্রকে পুনরায় চীনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। 

২. দ্বিতীয় তুর্কিস্তান প্রজাতন্ত্র: নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্রের আন্দোলন আবারো বেগ পায় যখন চীন প্রজাতন্ত্র নিজেদের শেষ সময়ে  চাইনিজ কমিউনিস্ট দের সাথে গৃহযুদ্ধে ব্যস্ত ছিল। ঠিক সেই সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন শিনচিয়াং আক্রমণ করে এবং ইনিং শহর বিদ্রোহ ঘটাতে সাহায্য করে। এই বিদ্রোহের ফলে `দ্বিতীয় তুর্কিস্তান প্রজাতন্ত্রের` (১৯৪৪-১৯৪৯) সৃষ্টি হয় যা শিনচিয়াং এর উত্তরের তিনটি জেলায় সীমাবদ্ধ ছিল (ইলি,তারবাগাতাই,আলতাই)। নতুন গঠিত রাষ্ট্রটি গোপনে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্য পেত। তবে ১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধে জয়ের পর গণচীনের `লিবারেশন আর্মি`,শিনচিয়াংকে পুনরায় চীনে অন্তর্ভুক্ত করে।

জিংজিয়াংর বর্তমান পরিস্থিতি 

গণচীন জিংজিয়াংর পূর্ণ দখল প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই প্রদেশটিতে এক অমানবিক পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে চীন সরকার। জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ততা ও নানা ঠুনকো অভিযোগে উইঘুর মুসলিমদের আটক করছে চীনা সরকার। তবে এই পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নেয় যখন চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং ২০১৩ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হান সম্প্রদায়ের মানুষদের জিংজিয়াং্যে প্রবেশ আরো তীব্র থেকে তীব্র করা হয়। উইঘুর মুসলিম নারী ও পুরুষদের সংশোধনের নামে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে তাদের উপর তীব্র শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা হচ্ছে। প্রদেশটিতে বিদেশি লোক বিশেষ করে কোন ধরণের সংবাদ কর্মীদের প্রবেশে কড়া বিধি নিষেধ আরোপ করা আছে। যদিও কিছু কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যম কর্মীরা সেখানে প্রবেশের সুযোগ পেলেও তাদের প্রতিনিয়ত নজরদারির আওয়ায় রাখা হয়। 

গণমাধ্যম কর্মীরা চীনের প্রদেশটিতে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে না পারলেও তারা সেখানে চীনা সরকারের অতিরিক্ত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে উইঘুর মুসলমানদের উপর নজর রাখার বিষয়টি সামনে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। প্রদেশটির প্রতিটি রাস্তায় পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি সিসি টিভি ক্যামেরার ব্যবহার, উইঘুর মুসলিমদের বাড়িতে বাড়িতে নজর রাখার জন্য কিউআর কোড স্ক্যান ও নানা অবৈধ কার্যক্রমের চিত্র সারা বিশ্বের কাছে সামনে নিয়ে আসতে সক্ষম হন।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে, অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইন্সটিটিউট (এএসপিআই) তার জিনজিয়াং ডেটা প্রজেক্ট প্রকাশ করে। যেখানে প্রদেশটিতে ৩৮০টির বেশি উইঘুর মুসলিমদের জন্য ডিটেনশন সেন্টার বা বন্দি শিবির এবং আটক কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে আর এমন দাবি করা সত্ত্বেও ক্যাম্প নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। 

এইসব ক্যাম্পে নারীদের উপর ভয়াবহ রকমের শারীরিক নির্যাতনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। কোন কারণ ছাড়াই উইঘুরদের আটক করে ক্যাম্পে সংশোধনের নামে আটকে রাখা হচ্ছে। বন্দি শালা গুলো থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক উইঘুর বাসিন্দা তাদের উপর ভয়াবহ নির্যাতনের কথা পশ্চিমা গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরতে শুরু করেছে। তাদের মতে চীন সরকারের হাতে ঐসব বন্দি শিবিরে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার উইঘুর জনগোষ্ঠী মৃত্যু বরণ করেছে যা একপ্রকার গণহত্যার শামিল বলছে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর এমন অভিযোগ প্রতি মুহূর্তে মিথ্যা বলে নাকচ করে দিচ্ছে চীন সরকার। তাদের মতে এইসব ক্যাম্পে শুধু মাত্র অভিযুক্ত অপরাধীদের কেই নিয়ে গিয়ে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার কার্যক্রম তারা পরিচালনা করে আসছে। অনেক পশ্চিমা দেশের মতে প্রায় ৪০০মত বন্দি শিবিরে কম পক্ষে ১০ লক্ষের উপর উইঘুর মুসলিমদের বন্দি করে রেখেছে শির সরকার। 

আর এই প্রেক্ষিতে চীনের বিরুদ্ধে শিনচিয়াং এর উইঘুরদের আটকে রাখা ও "পুনঃশিক্ষাদান" এর নামে উইঘুর সম্প্রদায়ের ধর্ম,সংস্কৃতি,ভাষা এবং পরিচিতিকে মুছে ফেলার অভিযোগ ওঠায় পূর্ব তুর্কিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে গুরুত্বের সাথে আলোচিত হচ্ছে। নিজেদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের যে চিন্তা উইঘুর মুসলিমরা শতাব্দী ধরে লালন করছে তা যেন নতুন রূপ পাচ্ছে চীন সরকারের এমন আচরণে। পূর্ব তুর্কিস্তান আন্দোলনের সবচেয়ে বড় সংহতিটি প্রকাশ পায় যখন ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০৪ তারিখে ওয়াশিংটন ডিসি-তে বিশ্বজুড়ে উইঘুর, কাজাখ এবং উজবেক পূর্ব তুর্কিস্তানই স্বাধীনতা কর্মীদের একটি দল দ্বারা নির্বাসিত পূর্ব তুর্কিস্তান সরকার প্রতিষ্ঠা করে। এর ফলে সারা বিশ্বব্যাপী এই আন্দোলন একটি ভিন্ন মাত্রা পায়। তবে প্রথম পূর্ব তুর্কিস্তান প্রথম সরকার গঠিত হয় ১২ নভেম্বর ১৯৪৪ সালে। সেই সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আলিহান তরে। সেই দিনটি হিসেবে সারা বিশ্বে উইঘুর মুসলিমদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করার জন্য প্রতি বছরের ১২ নভেম্বর পালন করা হয় পূর্ব তুর্কিস্তান স্বাধীনতা দিবস।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভয়ংকর ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে এলেন পুতিন

প্রকাশ: ০৮:৫৩ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ রাশিয়া কেএইচ-১০১ নামে একটি দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে আধুনিকায়ন করেছে। এতদিন এই ক্ষেপণাস্ত্রে একটি ওয়ারহেড থাকলেও এখন থেকে দুটি থাকবে। ফলে এই অস্ত্রের ধ্বংস ক্ষমতা আরও বেড়েছে। এখন থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুঘাঁটি ও সেনার ওপর ভয়ংকর ও কার্যকরভাবে আঘাত হানতে পারবে পুতিন বাহিনী। 

বুধবার (৮ মে) যুক্তরাজ্যের সর্বশেষ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাতে এসব তত্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম নিউজউইক।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ান অ্যারোস্পেস ফোর্সেস ভিকেএস-এর লং রেঞ্জ এভিয়েশন কমান্ড (এলআরএ) তাদের প্রধান দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংস ক্ষমতা আরও বাড়িয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রে একটির বদলে দুটি ওয়ারহেড যুক্ত করেছে তারা।

এর আগে কেএইচ-১০১ ক্ষেপণাস্ত্রকে রাশিয়ার প্রধান নির্ভুল গাইডেড যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছিল যুক্তরাজ্য। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ৪ হাজার কিলোমিটার উড়ে গিয়ে শত্রুশিবিরে আঘাত হানতে পারে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুরো ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভের জ্বালানি অবকাঠামোতে বড় আকারের হামলা চালাতে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে পুতিন বাহিনী। এ ছাড়া কম উঁচু দিয়ে উড়ায় এসব ক্ষেপণাস্ত্র সহজে শত্রু দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে বলে উল্লেখ করেছিল স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ সেন্টার।

পুতিনের নতুন অস্ত্রের সক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এই ক্ষেপণাস্ত্রের একটি দুর্বল দিকও উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা বিশ্লেষণে দাবি করা হয়েছে, আধুনিকায়ন করায় কেএইচ-১০১ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হানার পরিসীমা অর্ধেকে নেমে গেছে। তবে দূরত্ব সীমা কমলেও ইউক্রেনে হামলা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই রুশ বাহিনীর। কেননা ইউক্রেন ও রাশিয়া প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় খুব সহজে কিয়েভের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে রাশিয়ার সেনারা।

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য নিউজউইকের পক্ষ থেকে ইমেলের মাধ্যমে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে রুশ মন্ত্রণালয় কোনো জবাব দিয়েছে কিনা, তা জানায়নি সংবাদমাধ্যমটি।


ক্ষেপণাস্ত্র   ভ্লাদিমির পুতিন   রাশিয়া   প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

এবার রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে শীর্ষ দেশ ভারত

প্রকাশ: ০৮:১৮ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

২০২২ সালে ১১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে ভারত। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ও ১১১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে ভারত। যার ফলে রেমিট্যান্সপ্রাপ্তির দিক থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে দেশটি। 

মঙ্গলবার ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২৪ প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের মাইগ্রেশন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)। এই প্রতিবেদন থেকেই এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে শীর্ষ রেমিট্যান্স আয়কারী দেশ ছিল ভারত।  শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য দেশগুলো হচ্ছে- যথাক্রমে মেক্সিকো, চীন, ফিলিপাইন ও ফ্রান্স। 

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতের রেমিট্যান্স আয় বছর বছর বেড়েই চলছে। ২০১০ সালে ভারতের রেমিট্যান্স আয় ছিল ৫৩.৪৮ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫ সালে এই আয় দাঁড়ায় ৬৮.৯১ বিলিয়ন ডলারে।

২০২০ সালে আয় আরও বেড়ে হয় ৮৩.১৫ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২২ সালে দেশটির রেমিট্যান্স আয় ছিল ১১১.২২ বিলিয়ন ডলার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স গ্রহণে ২০২২ সালে বিশ্বে অষ্টম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ এবং ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে পাকিস্তান। ২০২২ সালে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয় ছিল ২১.৫০ বিলিয়ন ডলার আর পাকিস্তানের ছিল ২৯.৮৭ বিলিয়ন ডলার। এতে আরও বলা হয়, ভারতের এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার ১.৩ শতাংশ প্রবাসী।

এর ফলে দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাসী শ্রমিক সরবরাহকারী দেশ। দেশটির সবচেয়ে বেশি শ্রমিক রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবে। ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ সময় ভারত সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আয় করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

দেশটির মোট রেমিট্যান্সের ২৩.৪ শতাংশ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ১৮ শতাংশ আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।

তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ৬.৮ শতাংশ আসে যুক্তরাজ্য থেকে, চতুর্থ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ৫.৭ শতাংশ আসে সিঙ্গাপুর থেকে এবং পঞ্চম সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স ৫.১ শতাংশ আসে সৌদি আরব থেকে। 


রেমিট্যান্স   ভারত   আইওএম  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আরও তিন দেশে সৌদির ই-ভিসা পদ্ধতি চালু

প্রকাশ: ০৮:১৩ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

গত বছরের ডিসেম্বরে ই-ভিসা পদ্ধতি চালু করে সৌদি আরব। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন দেশকে ই-ভিসার অন্তর্ভুক্ত করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশিদের জন্য সৌদির এই ডিজিটাল ভিসা চালু হয় চলতি মাসের শুরুতে। এবার আরও ৩টি দেশকে ই-ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশ। 

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ জানিয়েছে, ক্যারিবীয় অঞ্চলের তিন দেশ বার্বাডোজ, বাহামাস ও গ্রেনাডাকে ই-ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। 

এর আগে ৬৩ টি দেশকে ই-ভিসা সুবিধার আওতায় এনেছিল সৌদি আরব। ই-ভিসা সুবিধার আওতায় থাকা দেশগুলোর নাগরিকরা অনলাইনে সহজেই সৌদি আরবের ভিসার জন্য আবেদন করতে এবং সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর বা সমুদ্রবন্দরের মতো প্রবেশপথগুলো থেকেই এই ভিসাসংক্রান্ত সব সুবিধা নিতে পারেন।

নতুন এই সুবিধা চালুর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর বাসিন্দাদের জন্য সৌদি আরবের পর্যটক ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, উপসাগরীয় জোট গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকরাও এই ই-ভিসা সেবা নিতে পারবেন। এই ভিসার আওতায় জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর বাসিন্দারা সৌদি আরবে পর্যটন, ওমরাহ, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎসহ বিভিন্ন সম্মেলনে অংশগ্রহণের সুবিধা পেয়ে আসছেন।

এর বাইরে, সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহন সংস্থা সৌদিয়া এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের যাত্রীদের জন্য ট্রানজিট ভিসাও চালু করেছে সৌদি আরব সরকার। এই ক্ষণকালীন ভিসার সাহায্যে এই সংস্থা দুটির যাত্রীরা চাইলে সৌদি আরবে ৯৬ ঘণ্টার যাত্রাবিরতি করতে পারবেন।


ই-ভিসা   সৌদি আরব   মধ্যপ্রাচ্য  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বেলজিয়ামে শিশুদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার আরেক শিশু

প্রকাশ: ০৮:০২ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেলজিয়ামে ১৪ বছরের এক মেয়ে শিশুকে সংঘবদ্ধ করেছে কয়েকজন ছেলে শিশু। যাদের মধ্যে একজনের বয়স মাত্র ১১ বছর।

বেলজিয়াম সংবাদমাধ্যম ব্রাসেলস টাইমস জানিয়েছে, যৌন নির্যাতনে জড়িত ছিল মোট ১০ শিশু। যাদের সবার বয়স ১৬ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। তারা মেয়েটিকে লোভ দেখিয়ে বনের মধ্যে নিয়ে যায়। এরপর তার ওপর ২ এপ্রিল থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত অন্তত তিনবার নির্যাতন চালায়।

এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নিরাপত্তার জন্য মেয়ে শিশুটির নাম প্রকাশ করা হয়নি। সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ইস্টারের ছুটি চলার সময় শিশুটির এক ছেলে বন্ধুর বন্ধুরা তাকে লোভ দেখিয়ে বনের ভেতর নিয়ে যায়। ওই সময় তার একাধিক বন্ধু তাকে নির্যাতন করে। মেয়েটির ছেলে বন্ধুটি এতে জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যম।

কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, মেয়ে শিশুটিকে দুইদিন সেখানে আটকে রাখা হয়। নির্যাতনকারী শিশুরা নিজেদের স্মার্টফোনে নির্যাতনের বিভিন্ন চিত্র ধারণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেগুলো প্রকাশ করে।

বেলজিয়ামের অপর সংবাদমাধ্যম নিউজব্লাড জানিয়েছে, ছেলে শিশুদের দলটির সবাই কম বা বেশি এই নির্যাতনে অংশ নিয়েছে। এমনকি তাদের মধ্যে কেউই এই নির্যাতন থামানোর কথা বলেনি।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে অভিযুক্ত শিশুরা অভিবাসীদের সন্তান। তাদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে শিশু কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অপর চারজনকে গৃহবন্দি করা হয়েছে।  

ওয়েস্ট ফ্লেমিসের পাবলিক প্রসিকিউটর বলেছেন, সবচেয়ে কম বয়সী অভিযুক্তের বয়স ১১ বছর। যেহেতু অভিযুক্তরা খুবই কম বয়সী। তাই আমরা খুব বেশি তথ্য প্রকাশ করছি না। তবে তাদের সবার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এখন তদন্ত করা হবে অভিযুক্ত শিশুরা কতটা নির্যাতন চালিয়েছে। এছাড়া আশপাশের কেউ এতে অংশ নিয়েছিল কিনা সে বিষয়টিও দেখা হবে।


বেলজিয়াম   শিশু   সংঘবদ্ধ ধর্ষণ   শিকার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চিকিৎসার অভাবে গাজাবাসীর যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু

প্রকাশ: ০৭:৪৪ পিএম, ০৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চিকিৎসার অভাবে সাধারণ মানুষের ধীর ও যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু হচ্ছে বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

দখলদার ইসরায়েলের সেনারা সীমান্তগুলি বন্ধ করে দেওয়ায় আহতরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে পারছেন না। পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় গাজার ভেতরও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছেন না তারা।

এ ব্যাপারে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, 'আহত এবং অসুস্থরা ধীরে ধীরে মৃত্যুবরণ করছেন। কারণ এখানে চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই এবং তাদের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করার সুযোগও নেই। গাজার একমাত্র ডায়ালাইসিস কেন্দ্রটিও বন্ধ হয়ে গেছে।'

মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, 'ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ এবং আহত ও অসুস্থদের বাঁচানোর জন্য, সীমান্ত খুলে দেওয়ার জন্য এবং হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদি পৌঁছতে দেওয়ার জন্য আমরা একটি দ্রুত ও মানবিক আবেদন জানাচ্ছি।'

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ বাধে। সাত মাস ধরে চলা এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১ লাখ মানুষ।


চিকিৎসা   গাজা   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন