নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯
রাষ্ট্রপতি হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে কাজ করছেন আবদুল হামিদ। যদিও সংবিধানের একাদশ সংশোধনীর পর যখন বাংলাদেশ সংসদীয় পদ্ধতিতে পুনর্যাত্রা করে তখন সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন কবর জিয়ারত ছাড়া রাষ্ট্রপতির করণীয় কিছু নেই। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতিরা শুধু রুটিন ওয়ার্কের মধ্যে নিজেদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন। রাষ্ট্রীয় কাজকর্মে তাদের উপস্থিতি দৃশ্যমান ছিল না। যদিও ২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বদরুদ্দোজা চৌধুরী কিছু কর্মকাণ্ড করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপির মধ্যেই প্রবল প্রতিরোধের অভিশংসনের আগেই পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি। এরপর ইয়াজ উদ্দিনের বিতর্কিত এবং গণতন্ত্র বিনাশী তৎপরতা ছাড়া রাষ্ট্রপতিরা কখনোই আলোচনায় ছিলেন না।
রাষ্ট্রপতিদের নিয়ে সাধারণ মানুষ কোনো আগ্রহ বা গুরুত্বও দিত না। আব্দুর রহমান বিশ্বাস, ড. ইয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের মতো রাষ্ট্রপতিরা এই পদটিকে অবমাননাই করেছিলেন। তাই রাষ্ট্রপতি নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ, মাথাব্যথা সবটাই আস্তে আস্তে কমে গিয়েছিল।
কিন্তু আবদুল হামিদ দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হয়ে যেন জ্বলে উঠেছেন। তিনি যেন জাতির বিবেক হয়ে উদ্ভাসিত হয়েছেন। সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও তিনি জাতির কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন। গত কয়েক মাসে বেশ আলোচিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি। বিশেষ করে তরুণ সমাজের কাছে তাকে নিয়ে আগ্রহ অনেক বেড়েছে। এখন রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমাবর্তনের মূল আকর্ষণে পরিণত হয়েছেন। তরুণদের কাছে তার জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে।
তরুণ শিক্ষার্থীরা বলেন, রাষ্ট্রপতি তাদের মনের কথাটা বলেন। রাষ্ট্রপতি জনগণের ভাষায় কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি তার আভিজাত্যের দেয়াল ভেঙে সাধারণ একজন মানুষের মতোই দু:খ বেদনা ও কষ্টের কথাগুলো বলেন।
এজন্যই রাষ্ট্রপতি এখন তরুণদের কাছে একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রপতির কিছু কিছু বিষয় নিয়ে খোলামেলা বক্তব্য শুধু তরুণদের নয় গোটা সমাজকে নাড়া দিয়েছে। যেমন;
১. রাজনীতি এখন রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। রাজনীতি এখন ব্যবসায়ী এবং আমলাদের হাতে চলে গেছে। এ ধরণের একটি বক্তব্য দিয়ে তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। আর এটি অনেক মানুষের মনেরও কথা।
২. সাম্প্রতিক সময়ে পেঁয়াজের দামের উর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন দূর্নীতিবাজদের ঐক্য আছে, ব্যবসায়ীদের ঐক্য আছে, পরিবহণ মালিকদের ঐক্য আছে কিন্তু জনগণের মধ্যে ঐক্য নেই। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যদি একদিন পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ করে তাহলে পেঁয়াজের আরতদাররা বা মুনাফা ভোগীরা কম দামে পেঁয়াজ দিতে বাধ্য হবে এরকম মন্তব্য করে তিনি জননন্দিত হন।
৩. সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এসে রাষ্ট্রপতি সান্ধ্যকালীন কোর্সগুলোর বিষয়ে সোচ্চার বক্তব্য রাখেন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে সন্ধ্যা বেলায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয় এরকম খোলামেলা বক্তব্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি জনধন্য হয়েছেন।
সাধারণ মানুষ মনে করছেন রাষ্ট্রপতি এমনই হওয়া উচিত। যিনি জনগনের কথা বলবেন। জনগণের দু:খ বেদনাগুলোকে ধারণ করবেন এবং জনগণের শব্দগুলোই উচ্চারণ করবেন। রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা। কাজেই তিনি জনগণের কণ্ঠস্বর শুনতে পারেন না। দেশ জাতির দু;খ, কষ্ট, আনন্দ ও বেদনার ঢেউ তাকে স্পর্শ করে না। এরকম একটি ধারণা ভেঙে আবদুল হামিদ অন্য আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছেন। তিনি দেখাচ্ছেন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা যতই সীমিত হোক তিনি জাতির বিবেকে পরিণত হতে পারেন। ক্রমশই আবদুল হামিদ নিজেকে জাতির বিবেক হিসেবে উপস্থাপন করছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।