বিশ্বের
সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও বেড়ে চলছে ইন্টারনেটের ব্যবহার। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে সর্বসাধারণের
জন্য ইন্টারনেট চালুর পর থেকে বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটিতে পৌঁছেছে।
এটি অবশ্যই দেশের জন্য গর্ব করার মত একটি বিষয়। কিন্তু ইন্টারনেটের মাধ্যমে অপরাধের
প্রবণতাও বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। অনলাইনে পর্নোগ্রাফি, পর্নো ভিডিও, ছবি বিকৃতি, মানসিক
হয়রানি ইত্যাদির শিকার হচ্ছে নারী-পুরুষ এমনকি শিশুরাও।
অপরাধীরা
এই ইন্টারনেট ব্যবহার করে কম্পিউটার, মোবাইল বা বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের মাধ্যমে
যেসব অপরাধ ঘটিয়ে থাকে তাকে সাধারণত সাইবার অপরাধ বলে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে হ্যাকাররা
মানুষের ডিভাইস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নানা অপকর্ম করছে।
সাইবার
অপরাধের ধরনঃ
সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, ইমেইল ইত্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির পর্নোগ্রাফি
কনটেন্ট প্রচার, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া, ছবি বিকৃতি করে অপপ্রচার,
মানসিক হয়রানি, যৌন হয়রানি, সম্মানহানির জন্য অনলাইনে ও ফোনে হুমকি ইত্যাদি সাইবার
বুলিং নামে পরিচিত। এই সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে অনেক নারী আত্মহত্যার মতো ভয়াবহ
পথ বেছে নিয়েছেন।
সাইবার
অপরাধের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অপরাধীরা সমাজে
ছড়িয়ে দিচ্ছে বিষাক্ত মাদক, ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কম্পিউটার ভাইরাস। এমনকি ইকমার্সের
নামে ভুয়া পেজ খুলে নিম্নমানের পণ্য বিক্রি হচ্ছে অহরহ।
বিভিন্ন
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ওয়েব সাইট হ্যাক, ক্রেডিট কার্ডের নম্বর চুরি, জাল সার্টিফিকেট
তৈরি, জাল টাকা বা ভেজাল পাসপোর্ট, বিভিন্ন প্রকার দলিল-দস্তাবেজ কম্পিউটারের মাধ্যমে
তৈরির ঘটনাও উদ্ঘাটিত হচ্ছে।
সাইবার
অপরাধের মধ্যে আরো রয়েছে তথ্য চুরি, তথ্য বিকৃতি, প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল, অর্থ চুরি,
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে নেটে প্রচার, রাষ্ট্রবিরোধী তত্পরতা নেটে প্রচার, মুক্তিযুদ্ধের
কর্মকাণ্ড, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ইত্যাদি।
যেভাবে
করবেন সাইবার অপরাধের মামলাঃ
কেউ
ইন্টারনেটের মাধ্যমে সাইবার হামলার শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে হয়রানির বিষয়গুলো স্ক্রিন
শট দিয়ে রাখতে হবে, ওয়েবসাইট ও পেজের ইউআরএলগুলো সংরক্ষণ এবং ছবি ও ভিডিওগুলো সংগ্রহ
করে রাখতে হবে।
যদি
থানায় সাইবার অপরাধের মামলা থানা না নেয় তাহলে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালে
বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে পিটিশন মামলা দায়ের করা যায়। অপরাধী যদি হয়রানিমূলক তথ্য মুছেও
ফেলে, তাহলেও ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের মাধ্যমে হয়রানিমূলক তথ্য অনুসন্ধান করা সম্ভব।
সাইবার
অপরাধের জন্য দণ্ডসমূহঃ
সাইবার
অপরাধের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ অধীনে উল্লেখযোগ্য দণ্ডসমূহ হলো : ক. কম্পিউটার,
ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম ইত্যাদি প্রবেশের দণ্ড হিসেবে ১৮ (৩) অধীনে অপরাধের
জন্য আমাদের তিন বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত
হতে হবে। খ. মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার
বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা প্রচারের দণ্ড হিসেবে ২১ (২) ধারার অধীনে আমাদের
১০ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। গ.
পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণার অপরাধে ২৪ (২) ধারা অধীন পাঁচ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক
৫ লাখ টাকা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। ঘ. আক্রমণাত্মক মিথ্যা বা ভীতিপ্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত
প্রেরণ, প্রকাশের অপরাধে ২৫ (২) ধারা মোতাবেক তিন বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ৩ লাখ টাকা
অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। ঙ. সাইবার সন্ত্রাসী কার্য সংগঠনের অপরাধে
২৭ (২) ধারা মোতাবেক অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে
দণ্ডিত হতে হবে।
সাইবার বুলিং স্বতন্ত্র কোন অপরাধ নয় বরং সাইবার অপরাধেরই একটি অংশ। বর্তমানে উঠতি বয়সী তরুণেরা বিশেষ করে মেয়েরা প্রতিনিয়ত সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। এর ফলে অনেক তরুণ তরুণী মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে আত্মহননের মতো জঘন্য পথ বেছে নিচ্ছে। কার্যত সাইবার অপরাধের লাগাম টানতে দেশে যে প্রচলিত আইন রয়েছে সেগুলোর সুষ্ঠু প্রয়োগ ঘটাতে হবে।
সাইবার অপরাধ ইন্টারনেট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বর্তমানে মানুষের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্মার্টফোন। কিন্তু আগামী ১০/১৫ বছরের মধ্যেই নাকি বিলুপ্ত হয়ে যাবে স্মার্টফোন। তখন এটি আর মানুষের হাতে হাতে দেখা যাবে না। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন মেটার শীর্ষ এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুন।
তিনি বলেন, শেষপর্যন্ত আমরা যেটা চাই, সেটা হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন অ্যাসিস্ট্যান্ট। যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সাহায্য করবে। আর সেই কারণেই আমাদের পকেটে থাকে স্মার্টফোন। কিন্তু আজ থেকে দশ বা পনেরো বছরের মধ্যেই আমাদের আর স্মার্টফোনের প্রয়োজন পড়বে না। তখন এসে যাবে অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাসেস।
লেকুনের দাবি, ওই বিশেষ ধরনের চশমা আর ব্রেসলেটই সব কাজ করে দেবে। ফলে স্মার্টফোনের প্রয়োজন শেষ হয়ে যাবে।
স্মার্টফোন নিয়ে এমন ভবিষ্যদ্বাণী লেকুনেরই প্রথম নয়। এর আগে নোকিয়ার প্রধান নির্বাহী (সিইও) পেক্কা লান্ডমার্ক ২০২২ সালে বলেছিলেন, ২০৩০ সালের মধ্যেই স্মার্টফোন আর প্রাসঙ্গিক থাকবে না। বরং শরীরেই বসানো থাকবে নানা যন্ত্র!
প্রসঙ্গত, বছরের শুরুতেই ‘অসাধ্য সাধন’ করেছে ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা নিউরোলিঙ্ক। মানব মস্তিষ্কে বসানো হয়েছে একটি ‘ব্রেইন ইন্টারফেস’ অর্থাৎ চিপ। যা মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটারের সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারে। সেই ব্যক্তি তার মস্তিষ্ককে ব্যবহার করে অর্থাৎ ‘টেলিপ্যাথি’র মাধ্যমে ভিডিও গেম বা অনলাইন দাবা খেলতে পারছেন! এটি নিত্যনতুন উদ্ভাবনে আগের সবকিছুকেই টেক্কা দিচ্ছে। ফলে স্মার্টফোনের অবলুপ্তি সংক্রান্ত এমন ভবিষ্যদ্বাণীকে উড়িয়ে দিতে পারছে না কেউ।
মন্তব্য করুন
জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। বার্তা আদান প্রদানের জন্য বর্তমানে তুমুল জনপ্রিয় এই মাধ্যমটি। সারাবিশ্বের পাশাপাশি ভারতেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে এই হোয়াটসঅ্যাপ। তবে সম্প্রতি ভারত থেকে পরিষেবা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মেটার জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি। দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানিতে এমনটাই দাবি করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) আদালতে হোয়াটসঅ্যাপের আইনজীবী বলেছেন, সাধারণ মানুষ গোপনীয়তার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। ব্যবহারকারীদের সকল বার্তা এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্ট করা হয়। এই এনক্রিপশন ভাঙলে তা ব্যবহারকারীদের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গের সামিল হবে।
ভারতের ২০২১ সালের তথ্য প্রযুক্তি আইনে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায়কে কোন তথ্য দিচ্ছে তা চিহ্নিত করতে হবে। অর্থাৎ কোনো তথ্যের মূল উৎস কিংবা কোন মেসেজ কোথা থেকে শুরু হয়েছে সেটা খুঁজে বের করার জায়গা রাখতে হবে। কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলে মেসেজের তথ্য চিহ্নিত করার সুযোগ রাখতে হবে। এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করেছিল হোয়াটসঅ্যাপ। যার শুনানির দিন ধার্য হয় আগামী ১৪ আগস্ট। তার আগেই হোয়াটসঅ্যাপ দিল্লি হাইকোর্টকে তাদের অবস্থান জানিয়ে দিলো।
হোয়াটসঅ্যাপের দাবি, এই ধারা মানতে গেলে বিপুল সংখ্যক মেসেজ নির্দিষ্ট কিছু বছরের জন্য স্টোর করে রাখতে হবে হোয়াটসঅ্যাপকে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি দিল্লি হাইকোর্টকে জানিয়েছে, এর জন্য মেসেজের কমপ্লিট চেন রাখতে হবে কারণ কখন কোন মেসেজ নিয়ে জানতে চাওয়া হবে তার ঠিক নেই। এমন পদ্ধতি বিশ্বের কোথাও নেই।
এদিকে, ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বলছে, হোয়াটসঅ্যাপ ভারতে ব্যবহারকারীদের মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘন করছে। মন্ত্রণালয়টির দাবি, যদি তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০২১ বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জন্য ভুয়া তথ্যের উৎস খোঁজার কাজ কঠিন হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, মোদি সরকার ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০২১-এর গাইডলাইন প্রকাশ করেছে। সেখানে টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের মতো বড় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে নিয়ম মেনে চলার কথা বলা হয়।
মন্তব্য করুন
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে
ইন্টারনেট পরিষেবা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে।
গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ সাবমেরিন
কেব্লস (বিএসসিপিএলসি)-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএসসিপিএলসির সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো
যাচ্ছে, কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্ল রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এ কারণে বৃহস্পতিবার
দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এই কেব্লের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ পরিষেবা
বন্ধ থাকবে।
বিএসসিপিএলসি জানিয়েছে, এতে গ্রাহকরা সাময়িকভাবে ইন্টারনেটে ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারেন বা ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। তবে একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে অন্য সাবমেরিন কেব্লের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সেবা যথারীতি চালু থাকবে।
মন্তব্য করুন
জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ। বার্তা আদান প্রদানের জন্য বর্তমানে তুমুল জনপ্রিয় এই মাধ্যমটি। সারাবিশ্বের পাশাপাশি ভারতেও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে এই হোয়াটসঅ্যাপ। তবে সম্প্রতি ভারত থেকে পরিষেবা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে মেটার জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি। দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলার শুনানিতে এমনটাই দাবি করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।