ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সালতামামি ২০২১: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত ১০

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১


Thumbnail সালতামামি ২০২১: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত ১০

দেখতে দেখতে নানা ঘটন-অঘটনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে গেলো আরো একটি বছর। ২০২১ থেকে ২০২২ এ পদার্পণে এখন শুধু আর একটি রাতের অপেক্ষা। আর এই রাতের সাথে শেষ হতে চললো এই বছরের আলোচিত কিছু ঘটনাও যা সারা বছর জুড়ে বিশ্বকে রেখেছে সরগরম। দীর্ঘ ২০ বছর যুদ্ধ শেষে তালেবানের আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ, আমেরিকার ক্যাপিটাল হিলে উগ্র ট্রাম্প সমর্থকদের হামলা, তাইওয়ান-চীন রাজনৈতিক উত্তেজনা কিংবা ভারতের কৃষক আন্দোলন সব কিছুই আমাদের আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে সারা বছর জুড়েই আলোচনার জন্ম দিয়ে গেছে। সভ্য জাতি বলে নিজেদের পরিচয় দেওয়া পশ্চিমা দেশগুলো থেকে এশিয়া, আফ্রিকা সব খানেই ছিলো চরম অস্থিরতা, বিক্ষোভ, দাঙ্গা ও সহিংসতা।

২০২১ শুরু হয়েছিলো আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদের দেশটির ক্যাপিটাল হিলে উগ্র হামলার মধ্য দিয়ে। ট্রাম্পের উস্কে দেওয়া সমর্থকদের হামলায় ক্ষত বিক্ষত হয় ক্যাপিটাল হিল আর দাঙ্গায় মারা যান ৫জন। আর বছর শেষ হচ্ছে সুদানে সেনা-শাসনের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে।

১. তালেবানের আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ: এই বছরের সব থেকে আলোচিত ঘটনাটি ঘটে তালেবানের দীর্ঘ ২০ বছর আমেরিকান সৈন্যদের সাথে লড়াই চালিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণ। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সিরিজ হামলার পর মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে অভিযান চালিয়ে তৎকালীন তালেবান সরকারকে উৎখাত করে এবং নিজেদের পছন্দের সরকারকে ক্ষমতায় বসায়। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে ২০ বছর আফগানিস্তানে অবস্থান করেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর সেনা সদস্যরা। আগস্টে আমেরিকার আফগানিস্তান ছাড়ার প্রাক্কালে দেশটির সেনাবাহিনীকে অবিশ্বাস রকম দ্রুততার সাথে পরাজিত করে ১৫ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণ করে তালেবান। তালেবানের এই জয়কে প্রতিবেশী ইরান ও পাকিস্তান স্বাগত জানালেও দেশটির অন্যান্য প্রতিবেশীদের জন্য তালেবানের এই জয় এটি একটি নতুন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

২. মার্কিন ক্যাপিটাল হিলে হামলা: জো বাইডেনের ক্ষমতা গ্রহণের প্রাক্কালে বছরের শুরুতেই জানুয়ারির ৬ তারিখ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উস্কানিতে তাঁর উগ্র সমর্থকরা দেশটির কংগ্রেস ভবনে সহিংস হামলা চালান। এই হামলার ঘটনায় পাঁচ জন নিহত এবং শতাধিকের উপর আহত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই ঘটনাটিকে অন্যতম নিন্দা জনক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত করা হচ্ছে।

৩. যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের ক্ষমতায় আরোহণ: বছরের শুরুতে জানুয়ারির ২০ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণ করেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন। দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা গ্রহণ করেন কমলা হ্যারিস। বিদায়ি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথা অনুযায়ী বিদায়ি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই পৃথকভাবে হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করেন। বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই ইরানের সঙ্গে ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি পুনর্বহাল করেন, ফিরে আসেন প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায়। আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার ছাড়াও ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সামরিক যুদ্ধে সহযোগিতা বন্ধ করেন তিনি।

৪. অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতায় ফের আসীন সেনাবাহিনী: মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতাসীন নেত্রী অং সান সু চিকে হটিয়ে আবারো ক্ষমতা গ্রহণ করে। সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে কারচুপি করেছে, এমন অভিযোগ তুলে তারা ফের দেশটির ক্ষমতার পালাবদল ঘটায়। বন্দি করা হয় অং সান সুচি সহ এনএলডির শত শত নেতা কর্মীকে। সেনা-শাসনের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে আসে। বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনী সহিংস পন্থা বেছে নেয়। মিয়ানমারে সেনা-শাসনবিরোধী বিক্ষোভে ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন হাজারো মানুষ।

৫. করোনা জোরালো আঘাত: অতিতে হাম, পোলিও বা ম্যালেরিয়ার টিকা উদ্ভাবন করতে অনেক বছর সময় লেগেছিল। করোনার টিকা আসতে এত সময় না নিলেও নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের একের পর এক আঘাতে বিশ্ববাসী অনেকটাই পর্যুদস্ত হয়ে পরে। করোনার মহামারি ঠেকাতে ব্যর্থতা, লকডাউন, অর্থনৈতিক প্রভাবকে ঘিরে বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হয়। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে প্রাণ গেছে ৫০ লাখের বেশি মানুষের। এ ভাইরাস শুধু মানুষের প্রাণ নিয়ে ক্ষান্ত থাকেনি, বৈশ্বিক রাজনীতি আর অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করেছে।

৬. পেগাসাস নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিরতা: পূর্ব থেকে পশ্চিমে, উত্তর থেকে দক্ষিণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার পেগাসাস সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিরোধী রাজনৈতিক, মানবাধিকারকর্মী, আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ফোনে আড়ি পাতছে, এমন অভিযোগ ওঠে, যা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে বিশ্ব রাজনীতি। ইসরায়েলই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এনএসওর তৈরি এই অবৈধ সফটওয়্যার ব্যবহার করে এক দেশের সরকার অন্য দেশের সরকারপ্রধানের ফোনে আড়ি পাতে। ‘দ্য পেগাসাস প্রজেক্ট’ নামে গত ১৮ জুলাই প্রকাশিত ওই তদন্ত প্রতিবেদনে নড়ে চড়ে বসে বিশ্ব রাজনীতিবিদরা।

৭. ভারতে সফল কৃষক আন্দোলন: তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন পাসের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে ভারতে কৃষক আন্দোলন জোরদার হয়। প্রায় বছরজুড়েই রাজ্যে রাজ্যে চলা এই আন্দোলন ভারতের ক্ষমতাসীনদের উস্কানিতে এক সময় রূপ নেয় সহিংসতায়। কৃষকদের তাদের ন্যায্য দাবি থেকে সরিয়ে নিয়ে আসতে অনেক চেষ্টা করে মোদি সরকার। আন্দোলনে সহিংসতায় কৃষকদের প্রাণহানি ঘটে। টানা আন্দোলনের মুখে বছরের শেষ দিকে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করে নরেন্দ্র মোদির সরকার।

৮. বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন নিয়ে একরাশ হতাশা: সভ্যতাকে বাঁচাতে হলে কার্বন নির্গমনের রাশ টেনে ধরার কোনো বিকল্প নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবেশ বিপর্যয় কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা বোঝার জন্য এখন কাওকে আলাদা করে কোন রিপোর্ট পড়ার দরকার পড়বে না বলে মন্তব্য করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অন্তেনিও গুতেরাঁ। ৯ আগস্ট জলবায়ু সম্মেলনের আগে জাতিসংঘের উদ্যোগে এ বিষয়ে ৪ হাজার পৃষ্ঠার এক বিশদ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বহু দেশই যে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করেনি তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরে জাতিসংঘ। নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৬) অনুষ্ঠিত হয়। ধরিত্রীকে রক্ষার জন্য এই সম্মেলনকে সর্বশেষ সেরা সুযোগ হিসেবে অনেকে অভিহিত করেন। জলবায়ু বিপর্যয় এড়ানোর লক্ষ্যে আমূল ও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাজারো মানুষ স্কটল্যান্ডে বিক্ষোভ করেন। তবে শেষ পর্যন্ত সম্মেলনের অর্জন নিয়ে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেন। ২০২১ সালে চরম ভাবাপন্ন আবহাওয়ার খবরগুলো মাঝে মধ্যে সংবাদ শিরোনাম হয়। আমেরিকা দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে তীব্র খরা, বেলজিয়াম ও জার্মানিতে বন্যা ও গ্রিসে ব্যাপক দাবানল যার কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। এছাড়া এ বছর নেপাল ও ভারতেও মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে বিস্তৃত এলাকা জুড়ে বন্যা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১৫ নভেম্বর ৫০ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু পরিবর্তন বিলে সই করেন। যদিওবা তিনি তেলের দাম নিম্নমুখী রাখার জন্য বেশি করে তেল উৎপাদন করার জন্য ওপেকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

৯. বরফ গলে সৌদি-কাতার সম্পর্কের: ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করা এবং দোহাভিত্তিক আল-জাজিরা নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া সহ নানা বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে মধ্যপ্রাচ্যর দুই প্রতিবেশী সৌদি আরব ও কাতার। কাতার তাদের অভিযোগ অস্বীকার করে এবং এই দেশগুলো যেসব দাবি করে কাতার সেগুলোও প্রত্যাখ্যান করে। ২০১৭ সালের জুনে চার প্রতিবেশী (সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মিশর) মিলে কাতারের উপর আরোপ করে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, যেটিকে কাতার তাঁর উপর অবরোধ হিসেবে বর্ণনা করে। তবে সৌদির যোগসাজশে করা নিষেধাজ্ঞা কোন বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে নি কাতারের উপর। বরং এর ফলে কাতারের সাথে সম্পর্ক আরো গভীর হয় ইরান, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রর সাথে। এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সমস্যা সমাধানের জন্য সৌদি আরবের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। বছরের শুরুর দিকে কাতারের সঙ্গে সীমান্ত খুলে দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পথে এগিয়ে আসে সৌদি আরব। ৫ জানুয়ারি সীমান্ত উন্মুক্ত করার পর সেখানে কাতারের আমীর শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানান সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব অবসানের লক্ষ্যে একটি চুক্তিও হয়।

১০. গাজায় ইসরায়েলের ফের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা: ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকা থেকে ছয় ফিলিস্তিনই পরিবারকে উচ্ছেদের পক্ষে রায় দেওয়ার পর গত ৬ মে থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ফিলিস্তিন। শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভ থেকে তা একসময় রূপ নেয় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ। মে মাসের ১০ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত ফিলিস্তিনই ভূখণ্ডের গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী। ১১ দিনের যুদ্ধে ফিলিস্তিনে শতাধিক নারী-শিশুসহ কমপক্ষে আড়াই শ জনের মৃত্যু হয়। ২১ মে ভোররাতে উভয়পক্ষের মধ্যে অস্ত্র-বিরতি হয়।

সালতামামি ২০২১  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতের নির্বাচন: মোদির ম্যাজিক কি ফুরিয়ে যাচ্ছে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৭ ধাপে। আজ দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১ জুন পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ৪ জুন ভোটের ফলাফল জানা যাবে। বিশ্বের বৃহত্তম এই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভোটের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা বিশ্ব। 

নির্বাচনের আগে ভারতের নির্বাচন নিয়ে যে সমস্ত জরিপ হয়েছে তার সবগুলোতেই নরেন্দ্র মোদির বিপুল বিজয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে এনডিএ জোটের ভোটপ্রাপ্তি সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ। সেখানে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের ভোট প্রাপ্তির হার সবচেয়ে বেশি হলে ৪২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন হলে ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আসনের হিসেবে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অবস্থান ৪১১ থেকে ৩৭৩ এর মধ্যে এবং ইন্ডিয়া জোট ১৫৫ থেকে ১০৫ এর মধ্যে উঠানামা করবে বলে বিভিন্ন জরিপের হিসেবে বলা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের পর অনেকেই ভারতের এই জরিপ শেষ পর্যন্ত ফলপ্রসূ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। 

অনেকেই মনে করছেন যে, এই নির্বাচনে কতগুলি ইস্যু বড় রকমের প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক সময়ে মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য ভারতের মুসলমান ভোটারদেরকে একাট্টা করেছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি তা বুঝতে পেরেছে। আর এ কারণে এবার মুসলিম ভোটারদেরকে ভোট দানে বাধা দেওয়া হচ্ছে-এমন অভিযোগও উঠেছে বিভিন্ন এলাকা থেকে। দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণে ট্রেন বন্ধ রেখে মুসলিম ভোটারদেরকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। 

নরেন্দ্র মোদি ইন্ডিয়াকে যে ক্ষমতাবান এবং উন্নয়নের রোল মডেলের নীতি নিয়ে টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় আছেন সেটি এখন উগ্র হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে অনেকে মনে করেন। তাছাড়া নিম্ন আয়ের মানুষ বিশেষ করে কৃষকদের নাজুক পরিস্থিতি নরেন্দ্র মোদি ম্যাজিককে ফিকে করে দিয়েছে। অনেকেই এই নির্বাচনে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সেই পূর্বাভাস শেষ পর্যন্ত সফল হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। 

অনেকে মনে করছেন যে, ২০০৪ সালে ভারতের চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ম্যাজিক দেখিয়েছিল। সে সময় বিজেপির ইন্ডিয়ার সাইনিং স্লোগানের আড়ালে সকলে জয়ের সম্ভাবনা দেখেছিল অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপি জোটের। কিন্তু সেই নির্বাচনে সকল জরিপকে মিথ্যে প্রমাণ করে কংগ্রেস বিজয়ী হয়েছিল। এবার নির্বাচনে তেমন কোন ফলাফল হবে কিনা তা নিয়ে নানা রকম জল্পনা কল্পনা চলছে। 

তবে নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা তেমন কোন সম্ভাবনা দেখছেন না। বরং তারা মনে করছেন যে, ভারতে শেষ পর্যন্ত বিজেপির নেতৃত্বে এনডিএ জোটই বিজয়ী হবে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি এবং তার নেতৃত্বে জোট যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ট আশা করেছিল সে সংখ্যাগরিষ্ট অনেকটাই কমে যাবে। তবে এই নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির এনডিএ জোট বিজয়ী হলেও নরেন্দ্র মোদির ম্যাজিক অনেকটাই ফিকে হয়ে যাকে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ভারতের নির্বাচন: নরেন্দ্র মোদি   কংগ্রেস   বিজেপি   ইন্ডিয়া জোট   এনডিএ জোট   লোকসভা ভোট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৮:১১ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশিসহ ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। চলছে গণগ্রেপ্তার। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শৃঙ্খলা ভঙের কারণে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা। এরই মধ্যে দেশটির কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশিসহ ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মায়মুনা ইসলাম নুহার রুমমেটসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 
চট্টগ্রাম জেলার সদ্বীপ উপজেলা বাসিন্দা মনির হোসেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করছে। এই বিক্ষোভের জেরে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৮ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে তার মেয়ে মায়মুনা ইসলাম নুহাও রয়েছেন।

তিনি আরও জানান, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যার প্রতিবাদে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মুখ সারির প্রতিবাদী হিসেবে কাজ করছেন তার মেয়ে নুহা। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নুহার রুমমেট ও মিনেসোটার কংগ্রেসওমেন ইলহান আবদুল্লাহি ওমরের মেয়ে ইসরা হিরসিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নুহা ফুল স্কলারশিপ নিয়ে নিউরো সায়েন্সের তৃতীয় সেমিস্টারে পড়াশোনার পাশাপাশি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিও করছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে নুহা লুকিয়ে ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তার বাবা। তিনি আরও জানান, মেয়ে নুহা এবং তার সহপাঠীরা আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় ইসরায়েলের ফান্ড প্রত্যাখানের দাবি জানাচ্ছেন। তারা অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধেরও দাবি জানাচ্ছেন। ইহুদি সম্প্রদায়ের অনেকেও তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

মনির হোসেন বলেন, নুহা ও তার সঙ্গীরা ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড, এমআইটিসহ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানবতার পক্ষের আন্দোলনে ক্রমশ যুক্ত হতে শুরু করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   গাজা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতীয় তিন কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ: ০৭:৩৫ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতীয় তিন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকায় এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে যেসব ড্রোন পেয়েছে তা গোপনে বিক্রিতে সহায়তা করেছে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোম্পানিগুলো। ইরানের এ বাণিজ্যিক কাজকে সামনে থেকে সমর্থন দিয়েছে ইরানি কোম্পানি সাহারা থান্ডার। এর সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনটি ভারতীয় কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

সাহারা থান্ডারকে এই প্রচেষ্টার সমর্থনে ইরানের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের তদারকিকারী প্রধান ফ্রন্ট কোম্পানি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সাহারা থান্ডারকে সমর্থন করার জন্য ভারত-ভিত্তিক তিনটি কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তারা হল জেন শিপিং, পোর্ট ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং সি আর্ট। শিপ ম্যানেজমেন্ট (ওপিসি) প্রাইভেট লিমিটেড।

চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে তিনশত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এরপর ইরানের ওপর প্রথম দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ড্রোন প্রযুক্তি ও উৎপাদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কোম্পানিকে লক্ষ্য করে ১৯ এপ্রিল এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   নিষেধাজ্ঞা   ইরান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্ক জাকারবার্গকে টপকে তৃতীয় শীর্ষ ধনীর আসনে ইলন মাস্ক

প্রকাশ: ০৬:৩৩ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মার্ক জাকারবার্গ টপকে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ধনীর অবস্থানে উঠে এসেছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ফলে বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় ধনীর জায়গা দখল করতে চলেছেন তিনি। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেটার শেয়ার বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ১১ শতাংশ কমেছে। প্রতিষ্ঠানটি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে নিজেদের বিক্রয় প্রত্যাশার চেয়ে কমতে পারে এমন পূর্বাভাসের পর এ পতন হয়েছে।

ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার সূচক অনুসারে, মেটার শেয়ার পতনের ফলে মার্ক জাকারবার্গের সম্পত্তি কমে এখন ১৫৭ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। অন্যদিকে ইলন মাস্কের সম্পদ ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ১৮৪ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে এ দুই বিলিয়নিয়ার নিজেদের অবস্থান থেকে ছিটকে যান। গত তিন মাসে টেসলার গাড়ি সরবরাহ কমে যাওয়ায় ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো জাকারবার্গ মাস্ককে ছাড়িয়ে যান।

এর আগে ফোর্বস প্রকাশিত ২০২৪ সালের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দেখা গেছে, বিশ্বের শীর্ষ ধনীর স্থান দখল করে নিয়েছেন ফ্রান্সের বিলাসবহুল পোশাক ও দ্রব্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান লুই ভুতোঁ মালিক বার্নার্ড আর্নল্ট ও তার পরিবার। তার সর্বমোট সম্পদমূল্য ২৩৩ বিলিয়ন ডলার।

এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। বর্তমানে তার সম্পদের পরিমাণ ১৯৫ বিলিয়ন ডলার।

এ ছাড়া তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজস। গত বছরের তুলনায় এবার তার সম্পদমূল্য বেড়েছে প্রায় ৮৫ বিলিয়ন ডলার। তার মোট সম্পদমূল্য ১৯৪ বিলিয়ন ডলার।

১৭৭ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। গতবার সম্পদমূল্য ছিল ৬৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।


মার্ক জাকারবার্গ   ইলন মাস্ক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্র ও চীন অংশীদার হওয়া উচিত, শত্রু নয়: শি জিনপিং

প্রকাশ: ০৬:১৮ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শত্রুতা নয় বরং অংশীদার হওয়া উচিত। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বেইজিং সফরের দ্বিতীয় দিনে শি ও ব্লিঙ্কেনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই তিনি এমন মন্তব্য করেন। খবর বিবিসি 

বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তারা চীনের সঙ্গে রাশিয়া, তাইওয়ান ও বাণিজ্য নিয়ে নানা পার্থক্যের বিষয়টি তুলে ধরেন। 

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বেইজিংয়ের গ্রেট হলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শি বলেন, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দুই দেশ সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জন করেছে। প্রচেষ্টা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। 

চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, বেইজিংয়ের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র আরও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখাবে। যখন এই মৌলিক সমস্যার সমাধান হবে, তখন সম্পর্ক আরও টেকসই, উন্নত ও অগ্রগামী হবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং হি বলেন, তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমা লঙ্ঘন করা উচিত হবে না।

ব্লিঙ্কেনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিনি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠক করেছেন। তাদের আলোচনা নিবিড় ও গঠনমূলক ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র   চীন   শি জিনপিং   অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন