ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

এবার কি বিদায় নেবে রাজপক্ষে পরিবার?

প্রকাশ: ০২:১২ পিএম, ০৪ এপ্রিল, ২০২২


Thumbnail এবার কি বিদায় নেবে রাজপক্ষে পরিবার?

রাবণের লঙ্কা যেমন হনুমানের লেজে পুড়ে ছারখার হয়েছিলো ঠিক তেমনি আবারও আগুন লেগেছে লঙ্কায়। গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে দেশটিতে। নানা অব্যবস্থাপনার কারণে একক অর্ধ রাষ্ট্রপতি শাসিত প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রটি গণবিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে। একের পর এক কারফিউ এবং কারফিউ ভেঙে রাস্তায় মানুষের বিক্ষোভ এখন দেশটিতে নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটির কাছে আমদানিকৃত জ্বালানির দাম পরিশোধ করার মতো পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা নেই। জ্বালানি সংকটে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না, পাশাপাশি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর জলাধারের পানি বিপজ্জনক মাত্রায় নেমে যাওয়ায় সেখানেও উৎপাদন সংকট দেখা দিয়েছে; ফলে দেশেজুড়ে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

এসব কিছু হয়েছে একটি পরিবারকে ঘিরে। যে পরিবার একাই নিয়ন্ত্রণ করছে সমগ্র লঙ্কাবাসির ভাগ্য। আর আধুনিক যুগে লঙ্কার এই রাবণ হলো রাজপক্ষে পরিবার। সমুদ্রে ঘেরা অপার সুন্দর এই দেশকে যেনো একাই ভোগ দখল করছে রাজপক্ষে পরিবারের সদস্যরা। সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে প্রশাসনের বড় বড় কর্তা ব্যক্তি সবাই এই পরিবারের অনুগত। আর তাই তো ২০০৪ সালে পরিবারটির নাটের গুরু মাহেন্দ্র রাজপক্ষে দেশটির ক্ষমতায় বসার পর থেকেই গত প্রায় দেড় যুগ ধরে যেনো শ্রীলঙ্কাবাসীর ভাগ্যর বিধায়কই বনে গেছে এই একটি পরিবারটি। সীমাহীন দুর্নীতিতে আজ শ্রীলঙ্কার অবস্থা এখন খাদের কিনারায়। আর এই দুর্নীতির পেছনের সবচেয়ে বড় কারিগর শুধু একাই এই রাজপক্ষে পরিবার। এসব কারণে এখন দেশটির সবাই আঙ্গুল তুলছে রাজপক্ষে পরিবারের দিকেই। প্রশ্নও উঠছে লঙ্কাবাসির ভাগ্য নির্ধারনী এই রাজপক্ষে পরিবার কি এবার বিদায় নেবে শ্রীলঙ্কার ক্ষমতা থেকে?

চীনের কাছ থেকে বিলাসী এবং অপ্রয়োজনীয় ঋণ গ্রহণ থেকে শুরু করে দেশের সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যেনো নিছকই খেলায় খেলায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে এই পরিবার। বিশেষ করে চীনের ঋণ দেশটির জন্য বড় একটি গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে হাম্বান্টোটা সমুদ্র বন্দর ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে লীজ দিতে বাধ্য হয়েছে লঙ্কান সরকার। ঠিক তেমনিভাবে করোনা মহামারি ও শিল্পখাতে বিনিয়োগের অভাব দেশটির রাজস্ব একেবারে শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসেছে। আর এসবের ফলে দেশটিতে দেখা দিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার অভাব। ফলে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি একেবারেই শূন্যর কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে। দেখা দিয়েছে চাল, তেল, গ্যাস, ওষুধ, কাগজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যর ব্যাপক ঘাটতি। কাগজের অভাবে দেশটিতে বদ্ধ হয়ে গেছে স্কুল-কলেজ ও ছাপাখান, তেল ও গ্যাসের অভাবে বন্ধ বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যবস্থার ঘাটতিতে দেশিটতে দেখা দিয়েছে দিনে ১৩ ঘণ্টার লোড শেডিং। বিদ্যুৎ ও ওষুধের অভাবে বিভিন্ন হাসপাতালে বন্ধ রাখা হয়েছে অপারেশন ও জরুরি সেবা। আর তাই রাজপক্ষের রাবণের রাজ্য জ্বালিয়ে দিতে রাস্তায় নেমে এসেছে হনুমানের দল। 

রাজপক্ষে পরিবারের নাটের গুরু বলা হয় মাহেন্দ্র রাজাপক্ষেকে । ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ক্ষমতায় আরোহণ করেন মাহেন্দ্র। দেড় বছর পর ২০০৫ সালে প্রেসিডেন্টের পদ দখলে নেন মাহেন্দ্র। সেই থেকে টানা ১০ বছর ২০১৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন মাহেন্দ্র। ক্ষমতা দখলের পর মাহেন্দ্র রাজপক্ষের সবচেয়ে বড় সফলতা আসে তামিল বিদ্রোহীদেরকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করার মাধ্যমে। সারা বিশ্বে তখন মাহেন্দ্রর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বললেও এই সব কিছু থেকে এড়িয়ে যান চতুর মাহেন্দ্র। সেই সময় লঙ্কার প্রধান জনগোষ্ঠী সিংহলীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন মাহেন্দ্র। তবে সেই সাথে সাধারণ জনগণ খুব অল্প সময়ের মাঝেই বুঝতে পারেন এ যেনো খাল কেটে কুমির নয় আস্ত হাঙ্গরকেই ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছেন তার। 

মাহেন্দ্রর শাসনামলে চীনের সাথে ব্যাপক সম্পর্কর উন্নয়ন ঘটে শ্রীলঙ্কার। তামিলদের সাথে গৃহযুদ্ধে সারা বিশ্ব যখন লঙ্কার বিরুদ্ধে তখন একাই চীন সরকার লঙ্কান সরকারকে অর্থ এবং সামরিক দিক থেকে সহযোগিতা করে গেছে। যুদ্ধ শেষ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার ঋণও নিয়েছেন মাহেন্দ্রা, তবে তার প্রায় সব উন্নয়ন প্রকল্পে সীমাহীন দুর্নীতি ঘটেছে। মাহেন্দ্রর শাসনামলে তামিলদের সাথে যুদ্ধ জয় হলেও তামিলদের এখনো কোণঠাসা করে রেখেছেন তিনি। যুদ্ধ শেষে তামিলদের সাথে সিংহলিদের সম্পর্ক উন্নয়নে কোনো প্রকার উদ্যোগই গ্রহণ করেননি তিনি। গৃহযুদ্ধে সংগঠিত ব্যাপক প্রাণহানির ফলে বিশ্বে অনেকেই তাকে কসাই বলেও সম্বোধন করে থাকেন। 

রাজপক্ষে পরিবারের সবচেয়ে ভয়ংকর সদস্য হলেন দেশটির প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় থাকা গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তার নিজ পরিবারের সদস্যরাই তাকে ‘দ্য টার্মিনেটর’ বা ‘বিধ্বংসী’ নামে সম্বোধন করে থাকেন। এর সবচেয়ে বড় কারণ প্রতিপক্ষকে বিনষ্ট করায় তার জুড়ি মেলা ভার। অল্পতেই মেজাজ হারান যেকোনো কাজে আর তাই তাকে ভয় পায় প্রতিপক্ষর লোকেরাও। 

গোতাবায়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিপক্ষের লোকজনকে গুম করে ফেলার জন্য ‘ডেথ স্কোয়াড’ গঠন করেছিলেন তিনি। তবে বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ‘দ্য টার্মিনেটর’ গোতাবায়া। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদে থাকার পাশাপাশি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও তার অধীনে। মাহেন্দ্র রাজপক্ষে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তার প্রধান সহচর বা লেফটেন্যান্ট ছিলেন গোতাবায়া রাজপক্ষে। একসময় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে কাজ করেছেন গোতাবায়া। সেই সময় থেকেই দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী এই মন্ত্রণালয়ে নিজের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেন গোতাবায়া। 

যদিও ২০১৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর দ্রুত কাজ শুরু করেন গোতাবায়া। যদিও তার কাজগুলো হিতে বিপরীত হওয়ার যোগাড়। ২০১৬ সালে ইস্টারে বোমা হামলায় এমনিতেই বিপর্যস্ত লঙ্কার পর্যটন শিল্প করোনায় ধাক্কায় আরো কোমর ভেঙ্গে পড়ে। সেই সাথে অর্থনৈতিক দুর্যোগ রুখতে বিভিন্ন খাতে কর ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি বাজারে নগদ অর্থ ছাড় দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি আরো বৃদ্ধি করে। কমে আসে কর আদায়। ফলে, বাজেট ঘাটতি আরও বেড়ে যায় অপরিকল্পিত বাজেট প্রণয়ন, কর ছাড় এবং সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণে ব্যর্থতায় রাজপক্ষে পরিবারের দেশটিকে আরো বিপদেই ফেলে গেছে প্রতি নিয়ত। 

শ্রীলঙ্কার বর্তমান অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাহিন্দা ও গোতাবায়া রাজপক্ষের ছোটভাই বাসিল রাজপক্ষে। সরকারি ও বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে তিনি এখন পরিচিত কমিশন ব্যবসায়ী হিসেবে। সরকারি বিভিন্ন কাজে তার বিরুদ্ধে ১০ শতাংশ কমিশন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আর এই কারণের তিনি এখন সমগ্র শ্রীলঙ্কা জুড়ে মি. টেন পার্সেন্ট নামেও পরিচিত। ঘুষ নেওয়ার পাশাপাশি অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে বাসিলের বিরুদ্ধে। দেশের বাইরে বিভিন্ন ব্যাংকে লাখ লাখ ডলার পাচারের করেছেন বাসিল এমন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদিও এসব বিষয়ে তার বিরুদ্ধে বেশ কবার তদন্ত হলেও কোন অদৃশ্য কারণে কোনবারই অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। বড় ভাই গোতাবায়া রাজপক্ষে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়।

পরিবারের সবচেয়ে বড় সদস্য চামাল রাজপক্ষে। পরিবারের সকল সমস্যা তিনি সামলে যাচ্ছেন সামনে থেকেই। পরিবারের গুরু মাহেন্দ্র চেয়েও তিন বছরের বয়সে বড় চামাল ছোট ভাই প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সামলেছেন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকারের দায়িত্ব। বলা চলে সংসদে ছোট ভাইকে সব ধরণের বিরোধী আক্রমণ থেকে রক্ষার রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে গেছেন তিনি। স্পিকারের দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তার রয়েছে শ্রীলঙ্কার জাহাজ পরিচালনা ও বিমান পরিবহন পরিষেবা মন্ত্রণালয় সামলানর অভিজ্ঞতাও। বর্তমানে যদিও সরকারের সেচ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী তিনি, কিন্তু তার মূল প্রভাব প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে। গোতাবায়ার পর ওই মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হয় চামালকে।

পুরনো একটা প্রবাদের প্রচলন আছে আমাদের দেশে। রাজার ছেলে রাজাই হয়। ঠিক সেই মতোই নিজের দায়িত্ব সামলে যাচ্ছেন মাহেন্দ্রর বড় ছেলে নামাল রাজপক্ষে। সবাই তাকে পরবর্তী দেশ শাসক হিসেবেই বিবেচনা করে থাকেন। রাজপক্ষে পরিবারও ঠিক তেমনিভাবে গড়েও তুলছে নামালকে। পেশায় আইনজীবী নামাল ২০১০ সালে মাত্র ২৪ বছর বয়সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিপুল ভোটে জয় লাভ করে পার্লামেন্টে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। পার্লামেন্টের সদস্য হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে নামালকে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া না হলেও বুদ্ধিমান নামাল বাবার প্রেসিডেন্টের পদের প্রভাব খাটিয়ে দেশটির বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিজের শক্তির জানান দিয়েছেন ঠিকই। 

বর্তমানে তিনি শ্রীলঙ্কার যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও তার বিরুদ্ধেও ব্যাপক আকারের দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেই সাথে তার বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারের অভিযোগ করে আসছে বিরোধী শিবির। যদিও বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন নামাল রাজপক্ষে। শ্রীলঙ্কায় জোর গুঞ্জন বাবা মাহেন্দ্র রাজপক্ষে ছেলে নামালকে দেশটির ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট হিসেবে তৈরি করছেন। নামালও নিজেও ভালো বা খারাপ যাই হোক না কেনো নিজ কাজের যোগ্যতা দিয়ে ইতিমধ্যে ভবিষ্যতের পরিবারের স্বপ্নপূরণের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, শ্রীলঙ্কায় রাজাপাক্ষে পরিবারের বিভিন্ন দুর্নীতি গুরুতর অর্থনৈতিক সংকটে ফেলেছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটিকে। মূলত পর্যটনের জন্য বিখ্যাত এই দেশটি একে করোনার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন, এর মধ্যে সীমাহীন দুর্নীতি দেশটিকে শেষ করে দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্তও তাদের পতনের মুখে দাঁড় করারো ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। এখন এই দেশটি দেউলিয়া হতে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজপক্ষে পরিবারের পতন দেখছেন বিশ্লেষকরা।

শ্রীলঙ্কা   কারফিউ   অর্থনীতি   সংকট   পদত্যাগ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আরও এক ব্যাংকের পতন যুক্তরাষ্ট্রে

প্রকাশ: ০৬:৫১ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এবার আরেকটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিল যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ‘রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক করপোরেশন’ নামক ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ তারা। ইতিমধ্যে এ ব্যাংকটি তারা ফুলটন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করতেও রাজি হয়েছে।

ফিলাডেলফিয়া-ভিত্তিক রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংকটি নতুন বিনিয়োগ নিয়ে বেশ কিছু বিনিয়োগকারীর সঙ্গে আলোচনায় ছিল। কিন্তু এসব আলোচনা শেষ পর্যন্ত কোনো ফল আনতে না পারায় পেনসিলভানিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ব্যাংকিং অ্যান্ড সিকিউরিটিজ এ ব্যাংকটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের চারটি আঞ্চলিক ব্যাংকের পতনের পর আরও একটি আঞ্চলিক ব্যাংকের এই পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, দেশটির আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর কী অবস্থা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন রিসিভার হিসেবে কাজ করবে। গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) তারা বলেছে, আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে ফুলটন ব্যাংক রিপাবলিক ব্যাংকের সব আমানত অধিগ্রহণ করার পাশাপাশি সব সম্পদ কিনে নেবে।

চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিপাবলিক ব্যাংকের মোট সম্পদমূল্য ছিল ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলার; তাদের আমানত ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি ডলার। এফডিআইসির আনুমানিক হিসাব, এই ব্যাংকের ব্যর্থতায় তাদের ক্ষতির পরিমাণ ৬৬৭ মিলিয়ন বা ৬৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।

এদিকে আমানত ছাড়াও রিপাবলিকের ঋণ ও অন্যান্য দায়ের পরিমাণ প্রায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ১৩০ কোটি ডলার, এক বিবৃতিতে এ তথ্য দিয়েছে ফুলটন। তারা আরও বলেছে, এই রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক কেনার মধ্য দিয়ে ফিলাডেলফিয়া অঞ্চলে তাদের প্রভাব আরও বাড়বে। দুই ব্যাংকের সম্মিলিত আমানতের পরিমাণ ৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ৮৬০ কোটি ডলারে উঠতে পারে।

গত বছর যেভাবে ব্যাংক কেনাবেচা হয়েছিল, এবারও সেই পদ্ধতিতে হবে। এমনভাবে তা করা হচ্ছে যাতে গ্রাহকদের গায়ে বিশেষ আঁচড় না লাগে। আগামী সোমবার অর্থাৎ ওইদিন স্থানীয় সময় সকালে নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া ও নিউইয়র্কে রিপাবলিক ব্যাংকের ৩২টি শাখা ফুলটন ব্যাংকের শাখা হিসেবে কার্যক্রম শুরু করবে। দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে গত বছর বিনিয়োগকারী জর্জ নরক্রস এবং ফিলপ নরক্রসের সঙ্গে চুক্তি করে রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।

ওয়াল স্ট্রিটের সূত্রে রয়টার্স বলেছে, সেই চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পর এফডিআইসি যথারীতি ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে এটি বিক্রি করার চেষ্টা করে। মুনাফা বাড়াতে না পেরে ও উচ্চ ব্যয়ের চাপে ২০২৩ সালে কর্মী ছাঁটাই করার পাশাপাশি মর্টগেজ ব্যবসা থেকে সরে আসে রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক।

এই পরিস্থিতিতে রিপাবলিক ফার্স্টের শেয়ারের দামেও পতন ঘটে। বছরের শুরুতে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ছিল দুই ডলারের কিছুটা ওপরে, এখন তা দাঁড়িয়েছে এক সেন্টের সামান্য বেশি। ব্যাংকটির বাজার মূলধন কমে ২০ লাখ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ফলে এই ব্যাংক কোম্পানিটির শেয়ার নাসডাকের লেনদেন থেকে বাদ পড়েছে। এখন শুধু ওটিসিতে লেনদেন হয় তাদের শেয়ার।

২০২৩ সালে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশের ব্যাংক খাত চাপের মুখেই ছিল। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে চারটি ব্যাংকের পতন হয়, আর সুইজারল্যান্ডের অন্যতম বড় ব্যাংক ক্রেডিট সুইসও বিক্রি হয়ে যায়। বছরের প্রথম ভাগে যুক্তরাষ্ট্রে পরপর দুটি ব্যাংকের পতনের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আর্থিক খাতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। একই বছরে যুক্তরাষ্ট্রে তিন দিনের ব্যবধানে দুটি ব্যাংকের পতন হলে অনেকের মনেই এমন শঙ্কা তৈরি হয় যে ২০০৭-০৮ সালের আর্থিক সংকটের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না। তবে শেষ পর্যন্ত তা ঘটেনি। বছরের শেষ ভাগে এসে অবশ্য আর্থিক খাতে তেমন সংকট দেখা যায়নি। তবে এবার ২০২৪ সালের এপ্রিলে মাসে এসে আবার আরেকটি ব্যাংকের পতন হলো।

ব্যাংকের এই পতনে অবশ্য গ্রাহকদের বিশেষ ক্ষতি হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো শুরু থেকেই সোচ্চার থাকায় তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।


ব্যাংক   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফেসিয়াল থেকে এইডসে আক্রান্ত

প্রকাশ: ০৩:৪০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

অনেকেই দীর্ঘ সময়ের জন্য তরুণ দেখাতে কসমেটিক সার্জারি এবং মুখে ইনজেকশনের মাধ্যমে ত্বক সুন্দর ও টানটান রাখতে 'ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল' করেন। সম্প্রতি এই ফেসিয়াল সংক্রান্ত ভীতিকর তথ্য সামনে এসেছে। ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ জন নারী। 

বৃহস্পতিবার(২৫ এপ্রিল) ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিডিসি) জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো রাজ্যের একটি স্পা'তে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করার কারণে সম্ভবত নারীরা এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। 

সিডিসি বলেছে, কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা তাদের জানা নেই। আক্রান্ত মহিলারা লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন ২০১৮ সালে।

সিডিসির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে একজন মহিলা মেক্সিকোতে একটি লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে প্লেটলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা মাইক্রোনিডলিং পদ্ধতির মাধ্যমে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন। তারপরে তিনি এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন। এরপরে 'সিডিসি' নিউ মেক্সিকোর স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে কীভাবে এইচআইভি সংক্রমণ ঘটেছে তা তদন্ত করে। 

সিডিসি জানিয়েছে, যে মহিলাটি ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ করেননি, তাকে সংক্রামিত রক্ত সঞ্চালনও দেওয়া হয়নি বা এইচআইভি সংক্রামিত কোনও সঙ্গীর সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কও হয়নি। তিনি শুধু একটি ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করেছেন এবং এরপরে তার এইচআইভি পরীক্ষা পজিটিভ পাওয়া গেছে।

২০১৯ সালে নিউ মেক্সিকো হেলথ ডিপার্টমেন্ট বলেছিল, আলবুকার্কের ভিআইপি স্পা-তে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল গ্রহণের ফলে এইচআইভি সংক্রমণ হয়েছিল। স্পাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং সে সময় স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছিল, যারা স্পাটিতে ফেসিয়াল করেছেন তাদের এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হবে।

সিডিসি বলছে, ২০২৩ সালের মধ্যে চারজন মহিলা এবং একজন পুরুষসহ পাঁচজন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছে। পুরুষটি সেই চারজন নারীর একজনের স্বামী।

সিডিসি জানিয়েছে, দুইজন এইচআইভি-আক্রান্ত রোগী বলেছেন, তারা কসমেটিক ইনজেকশন নেওয়ার আগে কোনোভাবে সংক্রামিত হয়ে থাকতে পারেন। তবে তিনজন রোগী স্পা থেকে এই সংক্রমণ পেয়েছেন। আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি জানিয়েছে, ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল পদ্ধতিতে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে।

বার্ধক্যের লক্ষণ লুকানোর জন্য মানুষ ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকে৷ এতে হাত থেকে রক্ত বের করে একই ব্যক্তির মুখে ইনজেকশন দেওয়া হ


ফেসিয়াল   এইডস   আক্রান্ত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মাঝরাতে আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো ইতালি

প্রকাশ: ১২:৪৮ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মধ্যরাতের পর আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ করে একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে ইতালির মিলানে। বাসিন্দাদের প্রশান্তির স্বার্থে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে মিলানের স্থানীয় সরকার। 

ইতালির সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে আইসক্রিম। অনেকেই গভীর রাতে আইসক্রিম খেয়ে থাকেন। প্রস্তাবিত নতুন আইনের অধীন এভাবে আইসক্রিম খাওয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

মিলান শহরের স্থানীয় সরকার ইতিমধ্যে আইনের খসড়া তৈরি করে আইনসভায় জমা দিয়েছে। যদি প্রস্তাবিত আইনটি পাস হয়ে যায়, তাহলে আগামী মাস থেকে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে।

মিলানের ১২টি এলাকায় আইনটি কার্যকর হবে। এই আইনের অধীনে মধ্যরাতের পর পিৎজা, পানীয়সহ সব ধরনের খাবার বাড়িতে সরবরাহ করা নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। শহরের সড়কে রাতের বেলায় যাতে হইচই না হয় এবং বাসিন্দারা প্রশান্তিতে থাকতে পারেন, সে জন্য এই আইন করা হচ্ছে।

মিলানের ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্র্যানেলি বলেন, সামাজিকতা ও বিনোদনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির কথা বিবেচনায় নিয়ে এই আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত এই আইন 'মধ্য মে' থেকে কার্যকর এবং নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। 

সপ্তাহের কর্মদিবসে রাত সাড়ে ১২টা এবং সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটির দিনে রাত দেড়টা থেকে আইনটির প্রয়োগ শুরু হবে। সড়ককে কোলাহলমুক্ত রাখতে খোলা আকাশের নিচে বসানো খাবার টেবিলে এই আইনের প্রয়োগ করা হবে।

নাগরিকেরা চাইলে মে মাসের গোড়ার দিকে প্রস্তাবিত আইনের কোনো ধারার পরিবর্তন বা সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মধ্যরাতে আইসক্রিম খাওয়া বন্ধে মিলানের স্থানীয় সরকার এবারই যে প্রথম উদ্যোগ নিচ্ছে, তা নয়। এর আগে ২০১৩ সালে তৎকালীন মেয়র জুইলিয়ানো পিসাপিয়া মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তুমুল সমালোচনার মুখে তিনি পিছু হটতে বাধ্য হন।


আইসক্রিম   নিষিদ্ধ   ইতালি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

জার্মানির বিরুদ্ধে মামলার রায় ৩০ এপ্রিল

প্রকাশ: ১১:৫৩ এএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল চলমান যুদ্ধে গণগত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইসরায়েলের এই অমানবিক কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগ এনে জার্মানির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করে মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া।

আগামী ৩০ এপ্রিল সেই মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করেছে আইসিজে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইসিজে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে- ইসরায়েলকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে গণহত্যা ‘সহজতর’ করার দায়ে জার্মানিকে অভিযুক্ত করে ১ মার্চ নিকারাগুয়া যে মামলা করে তার রায় ৩০ এপ্রিল ঘোষণা করা হবে।

বিবৃতি অনুসারে, দ্য হেগের পিস প্যালেসে ওই দিন স্থানীয় সময় বিকাল তিনটায় আদালতের প্রধান বিচারপতি নওয়াফ সালাম মামলার রায় পাঠ করবেন।

নিকারাগুয়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের কাছে ‘জার্মানিকে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করার নির্দেশ এবং গাজা উপত্যকায় আন্তর্জাতিক আইনের অন্যান্য বিধিনিষেধের বিষয়ে’ জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা জারি করার অনুরোধ জানিয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪,৩৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়াও আহত হয়েছে ৭৭,৩৬৮ ফিলিস্তিনি।


জার্মান   বিরুদ্ধে   মামলা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইসরায়েলের সঙ্গে সশস্ত্র লড়াই বন্ধে ইচ্ছুক হামাস

প্রকাশ: ১১:৪৮ এএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলের সঙ্গে সশস্ত্র লড়াই বন্ধে ইচ্ছুক ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তবে তাদের একটি শর্ত রয়েছে। সংগঠনটির কয়েকজন নেতা এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তা হলো, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল যেসব অঞ্চল দখল করেছিল, ওই অঞ্চলগুলো নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। 

২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করেছে হামাস। ইসরায়েলের পতনের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় উপত্যকাটিতে হামাসের ভবিষ্যৎ অনেকটাই অনিশ্চিত। এমন পরিস্থিতিতে সংগঠনটির নেতাদের এ ইঙ্গিতে বোঝা যায়, আগের অবস্থান নিয়ে সুর নরম করছেন তারা।

হামাসের এই নেতাদের একজন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বসবাসকারী বাসেম নাইম। তিনি হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য। বৃহস্পতিবার নাইম যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, জেরুজালেমকে রাজধানী করে যদি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা হয়, আর শরণার্থীদের সেখানে ফেরার অধিকার দেওয়া হয়, তাহলে আল কাশেম ব্রিগেডকে (হামাসের সামরিক শাখা) ভবিষ্যতে জাতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। 

হামাসের শর্তগুলো মেনে নেওয়া হলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই 'অবশ্যই' বন্ধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন বাসেম নাইম। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) যদি তাদের গঠনতন্ত্র ও প্রশাসনে 'সংস্কার' আনে, তাহলে সংগঠনটির সঙ্গে যোগ দিতে চায় হামাস।

তবে হামাসের নেতারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শর্ত সাপেক্ষে অস্ত্র প্রত্যাহারের কথা বললেও আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এখনো কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। আর বিদেশে অবস্থান করা হামাসের নেতাদের বক্তব্য গাজায় থাকা সংগঠনটির সামরিক শাখার নেতাদের চিন্তাভাবনার সঙ্গে মেলে কি না, তা স্পষ্ট নয়।

হামাস বরাবরই স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠায় দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের বিরোধিতা করে আসছে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান অনুযায়ী, ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা হবে। এর বিপরীতে এত দিন  ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক সব অঞ্চল নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার কথা বলে এসেছে হামাস। এসব অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে আজকের ইসরায়েল, অধিকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা।


ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন