ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সম্পর্কের শীতলতা ঝেড়ে হঠাৎ কেনো সৌদির ঘনিষ্ঠ হতে উদগ্রীব তুরস্ক?

প্রকাশ: ১২:২০ পিএম, ২৪ জুন, ২০২২


Thumbnail সম্পর্কের শীতলতা ঝেড়ে হঠাৎ কেনো সৌদির ঘনিষ্ঠ হতে উদগ্রীব তুরস্ক?

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে সাংবাদিক জামাল খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষুব্ধ তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান খোলাখুলি আঙ্গুল তুলেছিলেন যুবরাজ মোহামেদ সালমানের দিকে।

তারপর খুব দ্রুত মুসলিম বিশ্বের দুই প্রভাবশালী দেশের সম্পর্কে ধস নামতে শুরু করে। বছরে খানেকের মধ্যে সম্পর্ক এতটাই তলানিতে গিয়ে ঠেকে যে সৌদি আরব অনানুষ্ঠানিকভাবে তুরস্কের পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

অন্যদিকে, বহুদিন পর্যন্ত সুযোগ পেলেই সৌদি রাজপরিবারকে একহাত নিতে ছাড়েননি মি. এরদোয়ান। দুই দেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় নিয়মিত দুই সরকারের মধ্যে প্রকাশ্যে নিয়মিত কাদা ছোঁড়াছুড়ি চলেছে অনেকদিন।

কিন্তু এপ্রিলে হঠাৎ মি. এরদোয়ানের সৌদি আরব সফর এবং জেদ্দায় যুবরাজ সালমানের সাথে তার করমর্দনের ছবি প্রকাশ হওয়ার পর ইঙ্গিত মেলে হাওয়া বদলাতে শুরু করেছে।

গত কয়েক মাসে দুই দেশের সম্পর্কে উষ্ণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ব্যবসা, বিমান চলাচলে বিধিনিষেধ উঠে গেছে। সৌদি আরবে তুর্কি টিভি সিরিজের সম্প্রচার শুরু হয়েছে । দু দেশের মিডিয়ার পরস্পরের বিরুদ্ধে যে প্রচারণা চলছিল তা বন্ধ হয়েছে। এরপর বুধবার যুবরাজ মি. এরদোয়ানের বিশেষ আমন্ত্রনে যুবরাজ সালমান তুরস্কে যাওয়ার পর এটি এখন পরিষ্কার যে আঙ্কারা এবং রিয়াদের সম্পর্কের জমাট বরফ গলছে।

কেন হাত বাড়ালেন এরদোয়ান?

আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই যে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানই সৌদি আরবের সাথে নতুন করে সুসম্পর্ক তৈরিতে উদগ্রীব হয়ে পড়েছেন।

"আমি বলবো মি. এরদোয়ান কিছুটা হলেও নতজানু হয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরে বিশেষ করে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে চটে যাওয়া সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে তিনি উঠে-পড়ে লেগেছেন," বিবিসি বাংলাকে বলেন লন্ডনে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশন্যাল ইন্টারেস্টের প্রধান সাদি হামদি।

কিন্তু কেন মি. এরদোয়ান তার চিরাচরিত যুদ্ধংদেহী ভাবমূর্তি আড়ালে রেখে নতজানু হচ্ছেন? সাদি হামদি মনে করেন, প্রথম এবং প্রধান কারণ তুরস্কের অর্থনৈতিক সংকট।

তুরস্কের মুদ্রা লিরা একরকম মুখ থুবড়ে পড়েছে। রয়টার্স বার্তা সংস্থার খবর অনুয়ায়ী ২০২১ সালে এক বছরেই ডলারে বিপরীতে লিরার মূল্যমান অর্ধেক হয়ে গেছে। মুদ্রাষ্ফীতির হার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। 



"নির্বাচনের মাত্র এক বছর বাকি। নির্বাচনের আগে উপসাগর থেকে বিশেষ করে সৌদি আরব থেকে বিনিয়োগ ফিরিয়ে এনে অর্থনৈতিক সংকট কিছুটা হলেও সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন মি. এরদোয়ান," বলেন মি. হামদি।

গত সপ্তাহে মি. এরদোয়ান বলেন, তিনি এবং সৌদি যুবরাজ "দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কতটা উচ্চতায় নেওয়া সম্ভব" তা নিয়ে কথা বলবেন। তার সরকারের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, সৌদি যুবরাজের সফরের ফলে দুই দেশের মধ্যে "সংকট পূর্বকালীন (২০১৮ সালে খাসোগজি হত্যাকান্ডের আগে) সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্টিত হবে এবং সম্পর্ক পুরোপুরি স্বভাবিক হবে।"

জানা গেছে, জ্বালানি, ব্যবসা এবং নিরাপত্তা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হবে। সেই সাথে, তুর্কি স্টক মার্কেটে সৌদি বিনিয়োগ নিয়ে কথা হবে। সৌদি আরবের কাছে তুরস্কের তৈরি সামরিক ড্রোন বিক্রি নিয়ে কথা হবে।

অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুনের নির্বাচনের আগে তুরস্কের অর্থনীতির দুরাবস্থা কাটাতে মি.এরদোয়ান সৌদিদের কাছ থেকে ব্যবসা এবং বিনিয়োগ চাইছেন।

পিছু হটছেন এরদোয়ান?

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশন্সের গত মাসে প্রকাশিত একটি প্রকাশনায় গবেষক স্টিভেন এ কুক লিখেছেন - মি. এরদোয়ান তার 'স্বভাবসুলভ আগ্রাসি' পররাষ্ট্রনীতি থেকে হয়তো পিছু হটছেন।

"তার অনর্থক আগ্রাসি পররাষ্ট্র নীতির কারণে মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে ধনী উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছিলেন তিনি। তাতে তুরস্কের কোনো লাভ হয়নি," বলছেন মি. কুক।

২০১৩ সালে মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুড সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর প্রেসিডেন্ট সিসির ওপর প্রচণ্ড খেপে যান মি. এরদোয়ান। তখন থেকেই মিশরের বিরোধী রাজনীতিকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন তিনি। ইস্তাম্বুলে বসে সিসি সরকারের বিরুদ্ধে তৎপরতা চালাতে দিয়েছেন।

সৌদি আরব মিশরের ঐ সামরিক অভ্যুত্থান সমর্থন করলে সৌদি রাজপরিবারের ওপর ক্ষেপে যান মি. এরদোয়ান। ফলে, ২০১৭ সালে সৌদি আরব, ইউএই সহ চারটি উপসাগরীয় দেশ কাতারের ওপর অবরোধ দিলে কাতারের সমর্থনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তুরস্ক।



এরপর ২০১৮ সালে খাসোগজি হত্যাকান্ডের পর সৌদি আরব এবং ইউএইকে একহাত নেওয়ার সবরকম চেষ্টা করেন মি এরদোয়ান। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের বিচারের চেয়ে মি. এরদোয়ানের প্রধান লক্ষ্য ছিল ঐ ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে সৌদি আরবকে ঘায়েল করা।

ফলে, ক্রমশ চটে যেতে থাকে সৌদি আরব, ইউএই এবং মিশরের মত মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলোর সাথে তুরস্কের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক।

সম্পর্কে চিড় ধরার আগে সৌদিরা ছিল তুরস্কে স্থাবর সম্পত্তির সবচেয়ে বড় ক্রেতা। একশো'রও বেশি তুর্কি কোম্পানি সৌদি আরবে ব্যবসা করছিল। এক লাখের মত তুর্কি নাগরিক সৌদি আরবে কাজ করে।

সৌদি অর্থনৈতিক বিশ্লেষক আমাল আব্দুল-আজিজ আল-হাজানির দেওয়া হিসাব মতে তুরস্ক ২০২৩ সালের মধ্যে ২,৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের সৌদি বিনিয়োগ টার্গেট করেছিল, আর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২,০০০ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। সেসব টার্গেট ভেস্তে যায়।

'বন্ধু কমছে, শত্রু বাড়ছে'

সাদি হামদি বলেন, তুরস্কের ভোটারদের কাছে পররাষ্ট্রনীতির চেয়ে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির গুরুত্ব অনেক বেশি। "অনেক মানুষের ভেতর এমন ধারণা শক্ত হচ্ছে যে মি. এরদোয়ানের কারণে তুরস্কের বন্ধু কমছে, শত্রু বাড়ছে।"

সম্প্রতি একটি ভিডিও ফুটেজ তুরস্কের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় যেখানে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে এক নারী উদ্যোক্তা দাঁড়িয়ে চিৎকার করে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে বলছেন সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক চটে যাওয়ার তার ব্যবসা লাটে ওঠার পথে।



শুধু অর্থনীতিই নয়, ভূ-রাজনীতিতে তুরস্ককে পাল্টা ঘায়েল করতে সৌদি আরব এবং ইউএই তৎপরতা শুরু করেছিল। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মজুদ জ্বালানির মালিকানা নিয়ে তুরস্কের সাথে বিরোধে সাইপ্রাস ও গ্রিসের সমর্থনে এগিয়ে আসে মিশর, সৌদি আরব আরব এবং ইউএই।

২০২০ সালে গ্রীষ্মে গ্রীসের বিমানবাহিনীর এক মহড়ায় অংশ নেয় সৌদি এবং আমিরাতে বিমান বাহিনীর পাইলটরা।

এসব ঘটনা তুরস্ককে উদ্বিগ্ন করে তুলছিল।

স্টিভেন এ কুক তার বিশ্লেষণে বলেন, "এরদোয়ান সরকার এখন উপলব্ধি করছে যে আঞ্চলিক দেশগুলোর ওপর তার ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার মত শক্তি তাদের নেই।"

আর এসব প্রেক্ষাপটেই দৃশ্যত উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করেছেন মি এরদোয়ান।

যেসব ছাড় দিয়েছে তুরস্ক

সম্প্রতি খাসোগজির বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।

মিশরের বিরোধী বেশ কিছু রাজনীতিক ইস্তাম্বুলে বসে প্রেসিডেন্ট সিসির সরকারের বিরুদ্ধে যে তৎপরতা চালাচ্ছিল তা প্রায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের পরিচালিত অনেক টিভি চ্যানেলে তালা ঝোলানো হয়েছে। মিশরীয় সরকার বিরোধীদের পরিচালিত বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া সাইটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের অনেককে তুরস্ক ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তাহলে মি. এরদোয়ান তার পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে অনুশোচনা করছেন? ভুল স্বীকার করছেন? সাদি হামদি মনে করেন ভুল স্বীকার না করলেও মি. এরদায়ান মেনে নিচ্ছেন যে তিনি যেমনটা চেয়েছিলেন তা হয়নি।

মি হামদির মতে - নির্বাচনের আগে তিনি তুরস্কের মানুষকে দেখাতে চাইছেন যে অভ্যন্তরীন বিষয়গুলোকে তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে তিনি মনে করেন না যে মি. এরদোয়ান তার বিদেশ নীতি বর্জন করছেন, বড়জোর "স্বল্প মেয়াদে অগ্রাধিকার বদলাচ্ছেন।"

সৌদি আরবের দিতে হাত বাড়িয়ে এরদোয়ানের শক্তিশালী ভাবমূর্তি চোট খেয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু একইসাথে এটাও সত্যি যে তুরস্ক এখনও সদম্ভে লিবিয়ায় রয়েছে। মধ্য এশিয়ায় প্রভাব বাড়াচ্ছে। ভূমধ্যসাগরে এখনও তুরস্ক অনেক বড় শক্তি। সিরিয়া থেকে তারা নড়বে বলে মনে হয়না। এমনকি সাব-সাহারা অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের পথ থেকে সরে যাবার কোনো লক্ষণ তারা দেখাচ্ছে না।

মি. হামদি মনে করেন, সম্ভবত সৌদি আরব এবং ইউএই বা মিশরের নেতারাও মি. এরদোয়ানের মনোভাব সম্পর্কে এখনও সন্দিহান।

"প্রথম যখন এরদোয়ান সৌদি এবং আমিরাতিদের কাছে যান, তারা উৎসাহ দেখায়নি। তাদের আস্থা অর্জন করতে গত কয়েকমাসে অনেক ছাড় দিয়েছেন এরদোয়ান। তারপরও মিশর এখনও তার ব্যাপারে শীতল।"

মি. হামদি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক বিশ্লেষক বলছেন এবং লিখছেন যে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট ঘুচলে এবং নির্বাচন পেরুলে মি.এরদোয়ানের পুরনো রূপ ধারণ করবেন।

কেন সাড়া দিচ্ছে সৌদি আরব

এমন সন্দেহ থাকা সত্বেও সৌদি আরব বা ইউএই কেন সাড়া দিচ্ছে?

প্রথম কথা, খাসোগজি হত্যাকান্ডের পর গোত্তা খাওয়া ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছেন যুবরাজ সালমান। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তাকে খানিকটা হলেও সুযোগ করে দিয়েছেন।

তবে একইসাথে সাদি হামদি মনে করেন, বর্তমান অথনৈতিক সংকটে সস্তায় তুরস্কের সম্পদে অংশীদার বা মালিক হওয়ার সুযোগ সৌদি আরব ছাড়তে চাইছে না।

তাছাড়া, তিনি বলেন, তুরস্কের সমাজ ও রাজনীতির অন্যান্য অংশের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ পেয়েছে সৌদি আরব এবং আমিরাত।

"মোহাম্মদ সালমান এবং মোহামেদ বিন জায়েদ হয়তো মনে করছেন এরদোয়ান দীর্ঘদিন থাকবেন না এবং তুরস্কের বিরোধীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের এটাই সুযোগ।" সূত্র: বিবিসিবাংলা 

সৌদি আরব   তুরস্ক   আরব আমিরাত   এরদোয়ান   মোহাম্মদ বিন সালমান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে ভূলুন্ঠিত মানবাধিকার: সতর্ক করবে কে?

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারের বড় ফেরিওয়ালা। দেশে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে, সতর্ক করে, হুমকি দেয়, বিবৃতি দেয়। কিন্তু এখন খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তাতে পুরো বিশ্ব স্তম্ভিত। সারা বিশ্ব হতবাক। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কিছুদিন ধরে ছাত্র আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করছে। বিশ্বের সেরা এবং নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাঁজার গণহত্যার প্রতিবাদে ছাত্ররা রুখে দাঁড়িয়েছে, প্রতিবাদ করছে, বিক্ষোভ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর এটি বড় ধরনের ছাত্র বিক্ষোভ। আর এই ছাত্র বিক্ষোভে যারা অংশগ্রহণ করছে তারা মুসলমান নয়, তারা বিভিন্ন ধর্মালম্বী। তারা বিভিন্ন মতে, বিভিন্ন পথে। তারা সরাসরি অনেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন, রাজপথে নেমেছেন, প্রতিবাদ করছেন শুধুমাত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গাঁজায় গণহত্যার নিন্দা জানাতে। ইসরায়েলকে যেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা না করে সেই আবেদন নিয়ে। 

ছাত্ররা হলো জাতির বিবেক। যে কোনো জাতি রাষ্ট্রের ছাত্রদের সচেতনতা এবং ছাত্রদের দেখানো পথেই মুক্তি আসছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ছাত্ররাই এখন তাদের রাষ্ট্রের ক্ষতগুলোকে উন্মোচন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রত্যাশিত ছিল ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তারা সম্মান দেখাবে, ছাত্রদের ন্যায্য দাবিগুলো তারা মারার চেষ্টা করবে এবং গাঁজায় গণহত্যা এবং মানবিক বিপর্যয় রোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবে কিন্তু সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করছে না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুলিশি আক্রমণ চালাচ্ছে, তাণ্ডব হচ্ছে। ছাত্রদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও যেভাবে শিক্ষার্থীদেরকে নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে সেটি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। 

প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে মানবাধিকারের সবক দেয়। এখন তাদেরকে মানবাধিকার শেখাবে কে? 

মার্কিন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নয়শ’র বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শর্তহীন। সেই দেশের যে কোনো নাগরিক যে কোন মত প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু গাঁজার ঘটনা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরীহ শিক্ষার্থীরা যে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে এবং তাকে যে ভাবে দমন করা হচ্ছে তার নিকৃষ্ট স্বৈরাচারী তৎপরতার একটি অংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী বলবে? অন্য দেশে যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটত তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়ই এত দিনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত, নানারকম বক্তব্য বিবৃতি দিত। 

চীনের তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের ঘটনার কথাই ধরা যাক। সেই সময় চীনের এই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে মানবাধিকার নিয়ে আর্তনাদ করছিল, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নীরব কেন? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশের র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিচার বহির্ভূত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে বিচার বহির্ভূত নিপীড়ন নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ঘটছে তাতে বিশ্ব বিবেক স্তব্ধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন কী আর অধিকার রাখে মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার? অন্য বিশ্বকে মানবাধিকার নিয়ে জ্ঞান দেওয়ার আগে এখন কী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরই লজ্জিত হওয়া উচিত না? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজের মানবাধিকার সুরক্ষা করতে না পারে, নিজ দেশের জনগণ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় তাহলে অন্য দেশকে মানবাধিকারের উপদেশ দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী শোভা পায়? 


যুক্তরাষ্ট্র   মানবাধিকার   ছাত্র আন্দোলন   গাঁজায় গণহত্যা   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের অভিযানে শতাধিক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৭:৫০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত সাড়ে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নির্বিচার হামলা ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে মার্কিন পুলিশ প্রশাসন। সবশেষ যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিউইয়র্কের সিটি কলেজ ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে পরিচালিত হয়েছে পুলিশি অভিযান। এ অভিযানে ক্যাম্পাস দুটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতাধিক ফিলিস্তিন সমর্থকারীকে।

বুধবার (১ মে) মার্কিন এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সিএনএন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হ্যামিল্টন হলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর রাতে তাদের সরাতে ভবনে প্রবেশ করে পুলিশ।

নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, দুই ঘণ্টারও কম সময়ের এ অভিযানে হ্যামিল্টন হল থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় কেউ আহত হয়নি বলেও দাবি পুলিশের।

এর আগে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত নিউইয়র্ক পুলিশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই চিঠি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে রাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশের বড় একটি দল।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের সরাতে প্রথম ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে নিউইয়র্ক পুলিশ। ওই অভিযানে শতাধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। গত এক সপ্তাহে পুলিশ ৫৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র   কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ট্রুডোকে ‘উন্মাদ’ বলায় বিরোধী নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৭:০৮ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

কানাডার বিরোধীদলীয় নেতাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। উত্তর আমেরিকার এই দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ আখ্যা দেওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে দিনের বাকি অংশের জন্য পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়।

বুধবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্স থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অস্বাভাবিক এই পদক্ষেপের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘পাগল’ বা ‘উন্মাদ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

রয়টার্স বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধী দলে থাকা কনজারভেটিভরা জরিপে বেশ এগিয়ে আছে এবং কার্বন ট্যাক্সের জন্য বিরোধী নেতা পিয়েরে পয়লিভের ক্ষমতাসীন লিবারেল সরকারকে নিয়মিত আক্রমণ করছেন। এর ফলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে বলেও সমালোচনা করছেন তিনি।

মঙ্গলবার এই বিরোধী নেতা হাউস অব কমন্সে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রুডোকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞাসা করেন, ‘এই উন্মাদ প্রধানমন্ত্রীর এই উন্মাদ নীতির অবসান কবে হবে?’

এই বক্তব্যের পর স্পিকার গ্রেগ ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তার মন্তব্যটি অসংসদীয় এবং অগ্রহণযোগ্য। এরপর তাকে ওই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে চারবার আহ্বান জানান লিবারেল এই স্পিকার।

তবে পয়লিভের প্রতিবারই সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, এর পরিবর্তে তিনি চরমপন্থি বা মৌলবাদী শব্দটি ব্যবহার করতে চান।

এই পর্যায়ে স্পিকার ফার্গাস বিরোধী নেতা পয়লিভেরকে বলেন, তিনি স্পিকারের কর্তৃত্বকে উপেক্ষা করছেন। এরপর তিনি বলেন: ‘আমি আপনাকে আদেশ দিচ্ছি, আপনি হাউস থেকে চলে যান ... দিনের অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য।’

এরপর পয়লিভের এবং তার বেশিরভাগ আইনপ্রণেতা তখন চলে যান।

রয়টার্স বলছে, ট্রুডোর সঙ্গে পয়লিভেরের বেশ উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তাকে তিনি (ট্রুডো) একজন চরমপন্থি এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন আন্দোলনের সমর্থক বলে অভিহিত করেছেন।

কানাডা প্রধানমন্ত্রী   জাস্টিন ট্রুডো  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিনেমা নয় বাস্তবে যুদ্ধ করছে রোবট!

প্রকাশ: ০৪:১০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

হলিউড সিনেমাতে হরহামেশাই আমরা দেখে থাকি, অস্ত্র চালনা কিংবা হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট, যুদ্ধক্ষেত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রোবট। কখনো মানুষের পক্ষে কখনো মানুষের বিপক্ষে বিরাট রোবট বাহিনী। এবার সিনেমাতে নয়, বাস্তবেই যুদ্ধের ময়দানে দেখা যাচ্ছে রোবট। সিনেমায় দেখানো রোবটের মতো এত উন্নত প্রযুক্তির না হলেও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে দেখা যাচ্ছে কিলার রোবটের ব্যবহার।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অধ্যাপক টোবি ওয়ালশ বলেন, কিলার রোবট শুনলে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির মুভিতে দেখা রোবটের কথা মনে হয়৷ কিন্তু সমস্যা হলো, এগুলো এখন বাস্তবে হচ্ছে৷ এগুলো টার্মিনেটর রোবট নয়৷ এগুলো একধরনের ড্রোন যার ব্যবহার আমরা ইউক্রেন যুদ্ধে দেখতে পাচ্ছি৷ এসব ড্রোনকে মানুষের চেয়ে কম্পিউটার দিয়ে নিয়ন্ত্রণের পরিমাণ বাড়ছে৷

ট্যাঙ্ক, পরিখায় সৈন্য- ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার শুরুতে আমরা এমনটা দেখেছিলাম৷ কিন্তু পরবর্তীতে দুই পক্ষই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শুরু করে৷ যেমন বায়রাক্তার ড্রোন৷ একেকটির দাম ১১ মিলিয়ন ইউরোর বেশি৷

জার্মান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. গারি শাল বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার কাছে থাকা অনেক অস্ত্রকে পরবর্তীতে এআই-সমৃদ্ধ করা হয়েছে৷ ফলে যুদ্ধে পরিবর্তন এসেছে৷ যেমন রাশিয়াকে আমরা এআই-সমৃদ্ধ গ্লাইড বোমা ব্যবহার করতে দেখেছি৷ আর ইউক্রেনের এআই-সমৃদ্ধ অস্ত্রের মধ্যে আছে ড্রোন৷ যুদ্ধের প্রথম কয়েক মাসে ইউক্রেন যে কার্যকর ও সফল ছিল, তার কারণ ছিল তারা পরিস্থিতি খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিল৷

সামরিক সংঘাত মানে হলো, তথ্য সংগ্রহ ও সেগুলোর অর্থ বুঝতে পারা৷ কত দ্রুত সেটা করা যাচ্ছে তাও গুরুত্বপূর্ণ৷ এআই সেটা করতে পারে ও সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷

মিউনিখের বুন্ডেসভেয়ার ইউনিভার্সিটির আক্সেল শুলটে বলেন, এখন অনেক কিছু স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাওয়ায় মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যে শ্রম বিভাজন করতে গিয়ে আমাদের সতর্কতার সঙ্গে ভাবতে হবে৷ মানুষের উদ্দেশ্য আছে, যন্ত্রের নেই৷ আমরা এসব যন্ত্রকে, এসব স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাকে, হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করি৷

কিন্তু ড্রোন কি হিউম্যানয়েড কিলার রোবট বা টার্মিনেটর হতে পারে? আক্সেল শুলটে বলেন, টার্মিনেটর? না সেটা সম্ভব না৷ আমরা এখনো প্রযুক্তিগতভাবে অতদূর এগোইনি৷ হ্যাঁ, ইউটিউবে আমরা বস্টন ডাইনামিক্সের দারুন সব ভিডিও দেখি বটে৷ আমরা দেখি, গতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এসব যন্ত্রের দক্ষতা বেশ ভালো৷ তারা ডিগবাজি বা সে রকম কিছু দিতে পারে৷ কিন্তু এর মানে এই নয় যে, সেগুলো বিপজ্জনক কিলার রোবট হয়ে গেছে৷

২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় দুই ট্রিলিয়ন ইউরো ছাড়িয়ে গেছে- যা একটি রেকর্ড৷ ৭৫০ বিলিয়ন ইউরো খরচ করে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে চীনও কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ ২০২২ সালে রাশিয়া তার সামরিক বাজেট নয় শতাংশ বাড়িয়েছিল৷

জার্মান প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. গারি শাল বলেন, যদি আপনার এমন বাহিনী থাকে যেটা এআই ব্যবহার করে, তাহলে, অন্য যারা এআই ব্যবহার করে না, তাদের চেয়ে আপনার কৌশল ভিন্ন হবে৷ এটা শুধু যন্ত্রের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ঢোকানোর বিষয় নয়৷ এটা পুরো ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়: প্রশিক্ষণ, কৌশল, সংগঠন সবক্ষেত্রে৷

স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র তৈরিতে কাজ করছে পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশ। শান্তিপূর্ণ প্রয়োজনে রোবট বানাচ্ছে তারা। তবে এসকল রোবট বা স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের দিকে ঝুঁকলে নিঃসন্দেহে তা হবে ভয়ংকর।


যুদ্ধ   রোবট  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্র ‘ভণ্ডামি’ করছে: রাশিয়া

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি)তদন্তের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে এ আদালতের দেওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সমর্থন করেছে। মস্কো ওয়াশিংটনের এই আচরণকে ‘কপট’ উল্লেখ করে বলেছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভণ্ডামি।

আইসিসি যুদ্ধাপরাধের দায়ে ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করার পাশাপাশি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যার তদন্ত করতে পারে। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ও সাত মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার তদন্ত করছে সংস্থাটি।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ–পিয়েরে গত সোমবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্ত সমর্থন করে না । এ ছাড়া এই বিষয়ে আদালতের এখতিয়ারের বিষয়টিতেও বিশ্বাস করে না তারা। তবে এর আগে গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি ছিল ন্যায়সংগত। ইউক্রেনে কথিত রুশ যুদ্ধাপরাধের বিবরণ আইসিসির কাছে তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মস্কো বলেছে, পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করা পশ্চিমাদের অর্থহীন প্রয়াস। এর মধ্য দিয়ে তারা রাশিয়ার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। তারা ইউক্রেনে কোনো যুদ্ধাপরাধ করেনি। তবে ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করেছে। রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেন যে অপরাধ করেছে, তা এড়িয়ে গেছে পশ্চিমারা। তবে কিয়েভ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা টেলিগ্রামে করা এক পোস্টে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আইসিসির দেওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা পুরোপুরি সমর্থন করে ওয়াশিংটন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখন তাদের ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আইসিসির তদন্তের বৈধতা স্বীকার করতে চাইছে না। জাখারোভা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থান কপটতার শামিল।

রাশিয়া আইসিসির সদস্যদেশ নয়। ইসরায়েলও এর সদস্য নয়। তবে ২০১৫ সালে ফিলিস্তিন আইসিসির সদস্য হয়। গত শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, আইসিসির কোনো সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের কার্যক্রমের ওপর প্রভাব ফেলবে না; কিন্তু বিপজ্জনক একটি উদাহরণ তৈরি করবে। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা অবশ্য আইসিসির আদেশ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। তাঁদের ধারণা, আইসিসির পক্ষ থেকে গাজায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলে অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে। একই সঙ্গে হামাস নেতাদের বিরুদ্ধেও এ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।


যুক্তরাষ্ট্র   ভণ্ডামি   রাশিয়া  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন