ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যেভাবে স্বাধীনতা থেকে শৃঙ্খলে আটকা পড়েন ইরানের নারীরা

প্রকাশ: ০৮:৪৫ এএম, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail স্বাধীন হয়েও যেভাবে শৃঙ্খলে আটকা পড়েন ইরানের নারীরা

‘নারী’, ‘জীবন’ ও ‘স্বাধীনতা’। ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে আটক অবস্থায় মাসা আমিনি (২২) নামের এক তরুণীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের স্লোগানে এসব শব্দই উচ্চারিত হচ্ছে। হিজাব পরায় সঠিক নিয়ম মানা হয়নি অভিযোগে মাসা আমিনিকে আটক করেছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ যারা কি না ‘গাশত–এ এরশাদ’ বা ‘গাইডেনস পেট্রল’ নামেও পরিচিত। নারী পর্দা মেনে চলছে ও ইসলামি পোশাক পরছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব তাদের। কর্তৃপক্ষ বলছে, হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন মাসা আমিনি, তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে ইরানের জনসাধারণের বিশ্বাস, তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছে নৈতিকতা পুলিশের সদস্যরা।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাসা আমিনির মৃত্যু যেনো স্ফুলিঙ্গের মতো ইরানিদের ক্ষোভের আগুনকে জ্বালিয়ে দেয়, যা দানা বাঁধছিল কয়েক দশক ধরে। এর মূলে রয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের চার দশকের পুরুষতান্ত্রিক নিপীড়ন আর নারীরদের প্রতি সহিংসতা। এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়িয়েছেন ইরানি নারীরা।

১৯৪১ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ইরানের ক্ষমতায় ছিল মোহাম্মদ রেজা পাহলাভির (মোহাম্মদ রেজা শাহ) সরকার। তাঁর শাসনামলে ইরানে নারীদের অর্জন ছিল উল্লেখযোগ্য। সে সময় তাদের উচ্চ শিক্ষা, পেশাগত উৎকর্ষ, ভোটাধিকার, সরকারি দপ্তরের দায়িত্ব, পুরুষের সমান বেতনের আইন, স্বাস্থ্যসেবা ও সন্তান নেওয়া বা না নেওয়ার অধিকার ছিল। নারীদের বিষয়গুলো দেখভালের জন্য মন্ত্রিসভায় পদও রাখা হয়েছিল, যা ছিল বিশ্বে দ্বিতীয়। নারীরা কেমন পোশাক পরবেন, তা তাঁরা নিজেরাই পছন্দ করতে পারতেন। ইরানের ১৯৬৭ সালের পারিবারিক সুরক্ষা আইন এবং ১৯৭৫ সালে এ আইনের সংশোধিত রূপ ছিল ইসলামী বিশ্বে এ ধরনের সবচেয়ে উদার আইনগুলোর অন্যতম। এই আইনে সমতা রক্ষা করে নারীর বিয়ে, বিয়ে বিচ্ছেদ এবং নারীর উত্তরাধিকার নিশ্চিত হয়েছিল। বহুবিবাহও বহুলাংশে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছিল।

রেজা শাহের সরকার পতনের আন্দোলনে অনেক নারীই অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৯ সালে তাঁকে উৎখাত করা হলে ইরানে নতুন ইসলামি প্রজাতন্ত্র গড়ে তোলা হয়। এই ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রধান লক্ষ্য হয়ে ওঠে নারীদের নিয়ন্ত্রণ ও দমিয়ে রাখা। কট্টরপন্থী শিয়া ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ছিলেন এই বিপ্লবের নেতা। তিনি যে কঠোর ইসলামি শাসনের সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন সেখানে নারীর সমঅধিকারকে বেমানান মনে করা হতো।

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শাহের দেশ ছেড়ে পালানোর কয়েক সপ্তাহ পর ১৯৭৯ সালের ৬ মার্চ পারিবারিক সুরক্ষা আইন বাতিল করতে চাওয়ার কথা ঘোষোণা দেন খোমেনি। ঘরের বাইরে নারীদের অবশ্যই হিজাব পরতে হবে, চুল ঢাকতে হবে বলে নির্দেশ জারি করা হয়। এর প্রতিবাদে হাজারো নারী দেশজুড়ে তিন দিন বিক্ষোভ করেছিলেন। ইরানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মেহদি বাজারগান ছিলেন উদারপন্থী। রুহুল্লাহ খোমেনিকে তখনো তাঁর মতো উদার রাজনীতিকদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে চলতে হচ্ছিল। ফলে প্রতিবাদের মুখে রুহুল্লাহ খোমেনি সাময়িকভাবে পিছিয়ে আসেন এবং তাঁর ওই ঘোষণা প্রত্যাহার করেন।


কিন্তু ১৯৮০ সালে ক্ষমতা যখন পুরোপুরি খোমেনির হাতে চলে আসে, সে সময় তিনি নারীদের জন্য আবার পর্দা বাধ্যতামূলক করেন। সব নারী বিচারককে বরখাস্ত করেন। এর প্রতিবাদে নারীরা আবারও রাস্তায় নামলেও এবার তারা আর খোমেনিকে দমাতে পারেননি। ১৯৮৩ সালে ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসেবে ইরান নারী অধিকারের ওপর অন্যান্য বিধিনিষেধের সঙ্গে পর্দাকে বাধ্যতামূলক করে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনে অন্তর্ভুক্ত করে।

১৯৮০-এর দশক ছিল ইরানি নারীদের জন্য কঠোর দমন-পীড়নের। ওই সময়ে নারীরা সংগঠিতভাবে খুব কমই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। তখন ইসলামিক প্রজাতন্ত্র জনগণের ওপর নজরদারি করত। আচরণগত কঠোর নিয়ম অমান্য করলেই শাস্তি দেওয়া হতো। ওই সময়ে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ যা শুরুতে ‘গশত–এ এরশাদ’ নামে পরিচিত ছিল, তারা নিয়মিত রাস্তাঘাটে টহল দিতে শুরু করে। তারা ‘নিয়ম মতো’ পোশাক না পরার অভিযোগে নারীদের (মাঝে মাঝে পুরুষদেরও) অনেককে আটক করত। বাড়িঘরে তল্লাশি চালিয়ে অ্যালকোহল জব্দ করত। সে সময় সরকার নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু চাকরিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়। এমনকি নারী শিক্ষার্থীরা পশুচিকিৎসা বিজ্ঞান এবং ভূতত্ত্বের মতো নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়তে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। সরকার শাহ শাসনামলের পারিবারিক সুরক্ষা আইন বাতিল করে দেয়। এর ফলে নারীরা বিয়ে, বিয়ে বিচ্ছেদ এবং সন্তানকে হেফাজতে নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তখন মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স কমিয়ে প্রথমে ১৩ ও পরে ৯ এ নামিয়ে আনা হয় (২০০২ সালে আবার ১৩ বছর করা হয়) এবং বহুবিবাহকে উৎসাহিত করা হয়। নারীরা তখন একা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারতেন না। এমনকি বিদেশে যাওয়ার জন্যও একজন পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হতো।

আরও খারাপ যেটা দাঁড়ায় তা হলো, ইরানি কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে নারীদের ওপর সহিংসতা চালাত। ১৯৮০ সালে খোমেনি যখন সব ক্ষমতার কেন্দ্রে, তখন কর্তৃপক্ষের কাউকে সন্দেহজনক অপরাধী মনে হলেই তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। যে নারী পর্দা বা ইসলামী শাসনের বিরোধিতা করেছে তাকেও ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে। বলা হতো এসব নারী যৌনবৃত্তির সঙ্গে জড়িত বা ‘আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ করতে চায়। নারী রাজনৈতিক বন্দীদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত করা হতো এবং প্রায়ই নির্যাতন বা যৌন নির্যাতন করা হতো। তাদের মধ্যে অনেককে পাথর ছুড়ে মারা হয়েছে, যা ইরানে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত ছিল না।

তবে ইরানের নারীরা ১৯৯০ এর দশকে দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে লড়াই শুরু করেন, যা ‘গোলাপী বিপ্লব’ নামে পরিচিত। বিশেষত শহুরে এলাকায় নারীরা সম্মিলিতভাবে মেকআপ, রঙিন হেডস্কার্ফ এবং চাদরের পরিবর্তে লম্বা কোট পরে এবং স্কার্ফের নিচ থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে চুল একটু আধটু দেখিয়ে হিজাব আইনের সীমা থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন। এই নারীদের সংখ্যা বিপুল হওয়ায় তখন নৈতিকতা পুলিশের পক্ষে সবাইকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব ছিল না।

বিক্ষোভের এ সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে ইরানি নারীরা অন্যভাবে সংগঠিত হতে শুরু করেন। ২০০৬ সালে তাঁরা নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আইন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই প্রতিবাদের বাইরে ইরানি নারীবাদীরা বৈষম্যমূলক আইন প্রত্যাহার করার জন্য তৃণমূলে ১০ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিলেন; যা ‘সমতার জন্য পরিবর্তন’ নামেও পরিচিত। কট্টরপন্থী মাহমুদ আহমাদিনেজাদ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে কর্তৃপক্ষের দমন পীড়ন ও হয়রানি সত্ত্বেও এই প্রতিবাদ ঘটেছিল। তাঁর সময়ে নৈতিকতা পুলিশের বর্তমান রূপ দাঁড়ায়।

২০০৯ সালে আহমেদিনেজাদের বিতির্কত পুনর্নির্বাচন নিয়ে গণবিক্ষোভে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিলেন ‘সমতার জন্য পরিবর্তন’ আন্দোলনের কর্মীরা। নারীদের মেকআপ, সানগ্লাস, মাথায় হিজাব, পরনে নীল জিন্স-এমন প্রতিবাদের ছবিগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছিল। তবে এই বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত সরকারের সহিংসতার মুখে শেষ হয়। সে সময় নিরাপত্তা বাহিনী নেদা আগা সোলতান নামে এক তরুণীকে গুলি করে হত্যা করে। সেই দৃশ্য একটি মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়েছিল।


গত এক দশকে পর্দার বিরুদ্ধে নারীদের সংগঠিত প্রতিরোধ বেড়েছে। কম বয়সী নারীরা জনসমক্ষে তাদের মাথার স্কার্ফ খুলে ছবি তুলেছেন। ‘ঠিকভাবে’ হিজাব না পরার কারণে নৈতিকতা পুলিশ বা অন্যরা নারীদের জনসমক্ষে যেভাবে হয়রানি করেছে তাদের লজ্জা দিতে এই ভিডিও অনলাইনে ছাড়া হয়েছে। তারা বাধ্যতামূলক পর্দার নিন্দা জানাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করেছেন। তারা আইনের প্রতি অবজ্ঞা জানাতে ‘মাই স্টিলথি ফ্রিডম’ নামে প্রচার চালিয়েছেন, যেখানে নারীরা হিজাববিহীন ছবি পোস্ট করেছেন। সরকার গ্রেপ্তার ও কারাদণ্ডের মধ্য দিয়ে তা দমনের চেষ্টা চালিয়েছে।

ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট কট্টরপন্থী ইব্রাহিম রাইসি ২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভিন্নমত দমন করে চলেছেন। নারীদের বিক্ষোভ রুখতে পর্দা করার ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে তাঁর সরকার। রাইসি সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হিজাববিরোধী ভিডিওগুলোতে উপস্থিত তরুণীদের গ্রেপ্তার এবং শাস্তি দিতে ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন’ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। চলতি বছরের শুরুতে এ ধরনের ভিডিওতে থাকা একজন তরুণীকে আটক করে মারধর করা হয়েছিল। পরে তাঁকে দিয়ে তাঁর আচরণের জন্য ক্ষমা চাওয়ানো হয়, যা টেলিভিশনে প্রচার করা হয়।

মাসার আটক ও মৃত্যুর ঘটনায় সরকার ধরেই নিয়েছিল, তারা নারী নির্যাতন থেকে দায়মুক্তি পেতে পারে। তাই এ ঘটনার পর ইরানজুড়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ সম্ভবত দেশটির নেতাদের জন্য বিস্ময়কর ছিল।

ইতিমধ্যে ইরান বিদ্রোহ দমনে কঠোরতা অবলম্বন করছে। ইন্টারনেট এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সীমিত করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিও চালানো হয়েছে। বিক্ষোভে সহিংসতায় অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ক্ষুব্ধ নারীরা পিছপা হচ্ছেন না। তাঁরা প্রকাশ্যে মাথার স্কার্ফ পুড়িয়ে ফেলছেন এবং চুল কেটে ফেলছেন। ১৯৭৯ সালের মতোই এবারের বিক্ষোভেও বিপুলসংখ্যক পুরুষ তাঁদের সঙ্গে প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন। সরকার যতই হিংস্র হয়ে উঠছে, বিক্ষোভ ততই বাড়ছে।

সুপেয় পানির অভাব বা অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের বিপরীতে এই প্রতিবাদটি ইসলামি প্রজাতন্ত্রের একটি মূল নীতি- নারীদের দমিয়ে রাখার বিরুদ্ধে। এর ফলে বিক্ষোভকারীরা প্রকাশ্যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ও এর ধর্মতান্ত্রিক শাসনের অবসানের আহ্বান জানাচ্ছেন। ইরানের সরকার দাবি করে, এ ধরনের বিক্ষোভের নেপথ্যে শত্রুরা রয়েছে। এগুলো দেশের শত্রুদের কাজ, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই বিক্ষোভ ৪০ বছর আগের অসন্তোষের ফল এবং বর্তমান শাসনের জন্য একটি শক্তিশালী হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইরান হয়তো অন্যদের যেভাবে দমন করে, সেভাবে এই প্রতিবাদ আন্দোলনকে দমন করতে পারে। কিন্তু যদি তা ঘটে, তাহলে তা ইরানিদের ক্ষোভ বাড়িয়ে দেবে। অথবা হয়তো মাসা আমিনির হত্যাকাণ্ড ইরানি নারীদের দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের বাঁকবদল হয়ে উঠতে পারে। হয়তো আরও একটি বিপ্লবের সূচনা হতে যাচ্ছে। আর এ বিপ্লবের স্লোগান সেই তিন শব্দ: নারী, জীবন ও স্বাধীনতা।


বিশ্ব   ইরান   ইসলামি প্রজাতন্ত্র   হিজাব বিরোধী আন্দোলন   সহিংসতা   নৈতিকতা পুলিশ   মাসা আমিনি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতীয় নির্বাচনে মার্কিন হস্তক্ষেপের অভিযোগ রাশিয়ার

প্রকাশ: ০১:৪২ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে রাশিয়া। তবে মস্কোর সেই অভিযোগকে উড়িয়ে দিল ওয়াশিংটন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার নিয়মিত প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা ভারতীয় নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করছি না। এমনকি আমরা পৃথিবীর কোনো নির্বাচনেই হস্তক্ষেপ করি না।

এর আগে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করে, ভারতে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ফেডারেল কমিশনের রিপোর্টে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ভারতের সমালোচনা করার পর ওয়াশিংটেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে মস্কো।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা মার্কিন অভিযোগকে দেশ ও রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের প্রতি ‘অসম্মানজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। 


ভারতীয়   নির্বাচন   মার্কিন   রাশিয়া  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন

প্রকাশ: ১০:৩৪ এএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিখাইল মিশুস্তিনের নাম প্রস্তাব করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (১০ মে) প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুতিন তার নাম প্রস্তাব করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষের স্পিকার। খবর রয়টার্সের।

মিখাইল মিশুস্তিন এর আগেও পুতিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবার নতুনভাবে ক্ষমতায় এসে এই মিশুস্তিনকেই সরকার প্রধানের দায়িত্ব দিতে চলেছেন পুতিন।

এর আগে মিশুস্তিন রাশিয়ার কর বিভাগের প্রধান হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। ৫৮ বছর বয়সী মিশুস্তিন ১৯৯৯ সাল থেকে আমলা হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে ফেডারেল ট্যাক্স সার্ভিসের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার আগে গত মঙ্গলবার পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন পুতিন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে মস্কোর গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসের সুসজ্জিত সেইন্ট অ্যান্ড্রিউ হলে শপথ নেন তিনি। রাশিয়ার সরকারি-বেসরকারি সকল টেলিভিশন চ্যানেল সরাসরি এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। গত মার্চে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন পুতিন। মঙ্গলবারের শপথ গ্রহণের মধ্যে দিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি।

 


রাশিয়া   প্রধানমন্ত্রী   মিখাইল মিশুস্তিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রকে চোখ রাঙিয়ে যা বললেন নেতানিয়াহু

প্রকাশ: ১০:২৫ এএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজার রাফাহয় সেনা অভিযান চালালে ইসরায়েলকে অস্ত্র দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এমন ঘোষণা দেয়ার পর আরও বেঁকে বসেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এবার নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরায়েল একাই লড়বে। 

এই ইসরায়েলি কট্টরপন্থী নেতা বলেছেন, ‘যদি আমাদের দরকার পড়ে... আমরা একাই লড়বো। আমি বলছি যদি প্রয়োজন হয় আমরা আমাদের হাতের আঙুলের (অস্ত্রের বদলে) নখ দিয়েই লড়াই করবো।’

এরইমধ্যে ইসরায়েলকে বোমা সরবরাহ করা বন্ধ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে নেতানিয়াহু ১৯৪৮ সালের প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন চোখ রাঙানি গায়েই মাখেননি।

তিনি বলেছেন, ‘৭৬ বছর আগের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা ছিলাম কয়েকজন, বিপক্ষে ছিলো অনেকেই।’ ‘আমাদের অস্ত্র ছিলো না। ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ছিলো। তবে আমাদের মধ্যে চরম উদ্যম, নায়কত্ব ও একতা ছিলো। আমরা জয়ী হয়েছিলাম।’

তিনি আরও বলেছেন, মার্কিন অস্ত্রের চেয়েও বেশি কিছু করার ক্ষমতা ইসরায়েলিদের নখের আছে!


যুক্তরাষ্ট্র   নেতানিয়াহু   ইসরায়ল   গাজা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ব্যর্থ যুদ্ধবিরতি আলোচনা, রাফায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত

প্রকাশ: ১০:০১ এএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ইসরায়েলি আগ্রাসন। সেই আগ্রাসন বন্ধে যুদ্ধবিরতির আলোচনা কোনও ধরনের চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনী রাফা অঞ্চলে নতুন করে বোমাবর্ষণ শুরু করেছে।

চুক্তি ছাড়াই যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষ হওয়ায় ইসরায়েল রাফাতে হামলা চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানিয়েছে। শুক্রবার (১০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী বৃহস্পতিবার রাফা অঞ্চলে বোমাবর্ষণ করেছে বলে ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাফাতে হামলা করলে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার যে হুমকি প্রেসিডেন্ট বাইডেন দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহু এক ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যদি আমাদের প্রয়োজন হয়, আমরা আমাদের নখ দিয়ে লড়াই করব। কিন্তু আমাদের নখের চেয়ে অনেক বেশি আছে।’ অন্যদিকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং ইসলামিক জিহাদ বলেছে, তাদের যোদ্ধারা শহরের পূর্ব উপকণ্ঠে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলোতে ট্যাংক-বিধ্বংসী রকেট এবং মর্টার নিক্ষেপ করেছে।

গাজার সবচেয়ে বড় শহুরে এলাকা রাফা। রাফা শহরের সাবরা এলাকায় দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েল বলেছে, হামাস যোদ্ধারা রাফাতে লুকিয়ে আছে। মূলত ইসরায়েলের আগ্রাসনের কারণে লাখ লাখ গাজাবাসী বর্তমানে রাফাতে আশ্রয় নিয়েছেন। গত সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে গাজা ভূখণ্ডের বেশিরভাগ অংশই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইসরায়েল রাফাতে পূর্ণাঙ্গ অভিযান চালাবে না বলে তারা আশা করে। এই ধরনের কোনও অভিযান হামাসকে পরাজিত করার বিষয়ে ইসরায়েলের লক্ষ্য পূরণের জন্য ভালো হবে বলেও তারা বিশ্বাস করে না।

মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘(প্রেসিডেন্ট বাইডেনের) দৃষ্টিতে রাফাতে কোনও ধরনের আঘাত করা ইসরায়েলের সেই উদ্দেশ্যকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে না। 

কিরবি বলেন, ইসরায়েলের মাধ্যমে হামাসকে উল্লেখযোগ্যভাবে চাপ দেওয়া হয়েছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি থাকায় সেখানে অভিযান চালানোর চেয়ে গোষ্ঠীর নেতৃত্বের অবশিষ্টাংশ খুঁজে বের করার জন্য আরও ভালো বিকল্প পন্থা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি এই আক্রমণের ফলে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে প্রায় ৩৫ হাজার লোক নিহত এবং আরও প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এই আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন এক রায়ে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা করছে। সেসময় ওই রায়ে ইসরায়েলকে এই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।


যুদ্ধবিরতি   বাইডেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পাল্টে যাচ্ছে ইরানের পারমাণবিক নীতি

প্রকাশ: ০৮:৫৪ এএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

অস্তিত্ব রক্ষায় ইরান পারমাণবিক নীতি পরিবর্তন করতে পারে। দেশটি ঝুঁকতে পারে পরমাণু অস্ত্র বানানোর দিকে।  ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা কামাল খারাজি এ কথা জানিয়েছেন।

ইরানের স্টুডেন্ট নিউজ নেটওয়ার্কে তিনি জানান, তাদের পারমাণবিক বোমা তৈরির কোনও সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু ইরানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে সামরিক মতবাদ পরিবর্তন করা ছাড়া তাদের কোনও উপায় থাকবে না।

খামেনির উপদেষ্টা খারজি ২০২২ সালে বলেছিলেন, ইরান প্রযুক্তিগতভাবে পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে সক্ষম। তবে বোমা তৈরি করবে কিনা সে সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের এক ঊর্ধ্বতন জেনারেল নিহত হওয়ার পর ঘটনাপ্রবাহ বিপজ্জনক দিকে মোড় নিয়েছিল। দুই দেশই নিজেদের মাটি থেকে সরাসরি একে অপরের ভূখণ্ডে পাল্টাপাল্টি হামলা করে।


ইরান   পারমাণবিক নীতি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন