ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিশ্ব ভোগান্তির এক বছর; পুতিন কি তবে ব্যর্থ?

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩


Thumbnail

করোনা মহামারির ভয়াবহতা শেষ হতে না হতেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল বিশ্ব। এরই মধ্যে ইউরোপে যুদ্ধ  হতবাক করে বিশ্ববাসীকে। যুদ্ধের ফলে যথারীতি ভাগ হয়ে গেল বিশ্বশক্তি। আসতে থাকল পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা। এতে গোলা-বারুদ আর কামান-ক্ষেপণাস্ত্রের যুদ্ধ একটি ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ থাকলেও বৈশ্বিক রাজনীতি এর সাথে যুক্ত হওয়ায় ভুগতে শুরু করল পুরো বিশ্ব। সেই ভোগান্তির এক বছর হয়ে গেল আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু এর শেষ কোথায়, সেই আঁচ এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।

যুদ্ধের অশনিসংকেত দেখা গিয়েছিল হামলার কয়েক সপ্তাহ আগেই। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট বা ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদান নিয়ে চলছিল গুঞ্জন। তবে প্রতিবেশী দেশের এ সিদ্ধান্ত নিজেদের নিরাপত্তায় হুমকি তৈরি করতে পারে মনে করে ইউক্রেনকে বারবার সতর্ক করে আসছিল রাশিয়া। এর মধ্যেই ২১ ফেব্রুয়ারি লুহানস্ক ও দনেৎস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন পুতিন।

পশ্চিমা দেশগুলো তখন ইউক্রেনকে অভয় দিয়েছিল। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকেই আশঙ্কা সত্যি করে হামলা চালান পুতিন। ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ স্বাধীনতা চায় দাবি করে তিনি সামরিক আগ্রাসন শুরু করেন।

হামলার পর দেখা যায় রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েই খালাস পশ্চিমা নেতারা। যে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়ে পুরো বিশ্বের উপর। সময় যত গড়াতে থাকে, যুদ্ধকে আরও পাকাপোক্ত করতে থাকেন ইউক্রেনের পাশে থাকা বিশ্বনেতারা। ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বাড়াতে থাকেন। নতুন দিকে মোড় নেয় সংঘাত।

ঘটনাক্রম ও বর্তমান অবস্থা

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিনের হামলার ঘোষণার পরই কিয়েভে শুরু হয় বিস্ফোরণ। বাজতে থাকে সাইরেন। সীমান্তে আসতে শুরু করেন রুশ সেনারা। একপর্যায়ে কিয়েভ দখল করে নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে এপ্রিলে কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়েন সেনারা। মে মাসে মারিওপোল দখলে জোর লড়াই শুরু হয়। তিন মাসের বেশি সময় পর দখল হয়ে যায়।

তবে এর আগেই জুলাইয়ে সামরিক সহায়তা পাঠাতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সেপ্টেম্বরে ঘুরে দাঁড়ায় ইউক্রেন। তবে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে জাপোরিঝিয়া, লুহানস্ক, দনেৎস্ক ও খেরসন অঞ্চল সংযুক্তির ঘোষণা দেন পুতিন। পরের মাসেই খেরসন হারাতে হয়।

যুদ্ধের কৌশল বদলান পুতিন। হামলা করা হয় জ্বালানি অবকাঠামোতে। শীতে সংকটে পড়ে ইউক্রেনবাসী। এর মধ্যেই গত মাসে সোলেদার দখল করে রাশিয়া।

হামলার এক বছর সামনে রেখে সম্প্রতি পারমাণবিক হামলার ব্যাপারে হুঁশিয়ারিমূলক বার্তা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেন।

এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, রাশিয়া কখনোই যুদ্ধে জিততে পারবে না। আর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বরাবরের মতোই পশ্চিমাদের কাছে সামরিক সহায়তা কামনা করেন। 
বিবিসি বলছে, এখনো রাশিয়ার দখলে রয়েছে ইউক্রেনের লুহানস্ক, দনেৎস্ক, মারিওপোল, মেলিটোপোল। তবে দখলে নেওয়ার পরও হারাতে হয়েছে লাইম্যান, ইজিয়াম ও খেরসন।

জাতিসংঘ বলছে, এক বছরে এ যুদ্ধে মারা গেছে ৮ হাজার বেসামরিক মানুষ এবং আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩০০ জন। ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ মানবিক সংকটে পড়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ। মার্কিন অলাভজনক গণমাধ্যম সংস্থা এনপিআর বলছে, এ পর্যন্ত যুদ্ধে ২ লাখ রুশ ও ১ লাখ ইউক্রেনীয় সেনা হতাহত হয়েছেন। ৩০ হাজার বেসামরিক মানুষ মারা গেছে।

তবে পূর্ব ইউরোপের এ দুই দেশের সীমান্ত ছাড়িয়ে বিশ্বব্যবস্থাকে এলোমেলো করে দিয়েছে এ যুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধের পর ফের নতুন মেরুকরণ হয়েছে বিশ্বে। এই এক বছরে কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়াল, সেই জলে কারা হাবুডুবু খেল, এক প্রতিবেদনে সেটিই বলার চেষ্টা করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। 

বিশ্বে আবারও মেরুকরণ

সংঘাত ও সাংঘর্ষিক অবস্থান আরও প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে এ যুদ্ধ। ওয়াশিংটন ও বেইজিংকেন্দ্রিক দেশগুলোর মধ্যকার বিভক্তি স্পষ্ট হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছিলেন, ‘আমরা একটি বহু মেরুর বিশ্বে প্রবেশ করেছি, যেখানে প্রধান অস্ত্র জ্বালানি, ডেটা, অবকাঠামো ও অভিবাসন।’

প্যারিসভিত্তিক থিংকট্যাংক এফএমইএসের প্রধান পিয়েরে রাজৌক্স বলেন, বর্তমান এ সংকটই বাস্তবতা, হয়তো সাময়িক। অনিবার্যভাবেই যুদ্ধের অবসান রাশিয়া ও ইউরোপকে দুর্বল করবে। বড় দুই সুবিধাভোগী হবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।

ইইউ ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের এশিয়াবিষয়ক বিশ্লেষক অ্যালিস একমান বলেন, চীন দূরে সরছে না। বরং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করছে। তাঁর কথার সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার। চীনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মস্কো সফর করেছেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সফর নিয়েও কথা হচ্ছে। এর আগেও বেশ কয়েকবার যুদ্ধ বন্ধ করা নিয়ে মন্তব্য করেছেন সি।

জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট

ফ্রিকা থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য, উষ্ণতা ও আশ্রয়ের পেছনে ব্যয় বেড়েছে। করোনা মহামারি শুরুর আগে থেকেই জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে বৈশ্বিক সংকট ছিল। করোনার পর বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে থাকে। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হতেই মুখ থুবড়ে পড়ে সবকিছু। রাশিয়ার ওপর একের একের পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা নেমে আসে।

জ্বালানি সরবরাহে দেখা দেয় সংকট। এ ছাড়া ইউক্রেন অন্যতম শস্য রপ্তানিকারক দেশ হওয়ায় খাদ্যশস্যেও পড়ে প্রভাব।

যুদ্ধের কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বেড়ে যায় সবকিছুর দাম। দেশে দেশে বাড়তে থাকে ডলারের দাম। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ব্যয় কমাতে এক বেলা খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে দেশবাসী।

জার্মানিভিত্তিক ফ্রেডেরিখ এবার্ট ফাউন্ডেশন এক গবেষণায় উল্লেখ করেছে, সবচেয়ে বেশি ভুগছে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। কারণ, তাদের বিপুল পরিমাণ খাদ্য আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে দরিদ্র দেশগুলোতে জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে সংকট তো ছিলই।

এই যুদ্ধে কী পেলেন পুতিন?

২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে অবৈধভাবে রুশ ভূখণ্ডের অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। এই যুদ্ধে সবচেয়ে বড় যে সাফল্যের দাবি করতে পারেন তিনি, তা হলো রাশিয়ার সীমান্ত থেকে ক্রিমিয়া পর্যন্ত একটি স্থল সেতু স্থাপন করা। যে কারণে রাশিয়া এখন কের্চ স্ট্রেইটের ওপর নির্মিত সেতুতে নির্ভরশীল নয়।

তিনি ‘রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য অর্জন’ হিসাবে মারিউপোল এবং মেলিতোপোল শহরসহ ওই অঞ্চলটি দখলে নেওয়ার কথা বলেছেন। কের্চ স্ট্রেইটের অভ্যন্তরের আজভ সাগর ‘রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ সাগরে পরিণত হয়েছে’ বলেও তিনি ঘোষণা দেন। তিনি বলেছেন, এমনকি রাশিয়ান জার পিটার দ্য গ্রেটও এটি করতে পারেননি।

পুতিন কী তাহলে সফল নন??

ক্রিমিয়ার একটি আঞ্চলিক করিডোর দখলে নেওয়ার বাইরে রাশিয়ার রক্তক্ষয়ী ও বিনা উসকানির এই যুদ্ধ নিজের এবং ইউক্রেনের জন্য এক বিপর্যয় তৈরি করেছে। এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠুরতা এবং অক্ষমতাই বেশি প্রকাশ পেয়েছে।

মারিউপোলের মতো ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরকে সমতল ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে, কিয়েভের কাছের বুচাতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যুদ্ধাপরাধ চালানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক একটি স্বতন্ত্র তদন্ত প্রতিবেদনে রাশিয়ার সৈন্যদেরকে রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

 



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেন আত্মহত্যা করতে গেছেন বাইডেন?

প্রকাশ: ১০:৪২ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জীবনে আত্মহত্যা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে গিয়ে অনেকেই হয়েছেন হতাশা, ব্যর্থতা কিংবা গ্লানির তিক্ততায়ও আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এমন আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকটা নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। যা অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার।

জো বাইডেন ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর জন্ম নিয়েছেন। শুরুতে আইনজীবী হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। ১৯৬৬ সালে প্রথমবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল নেইলিয়া হান্টার। এই দম্পতির তিন সন্তান ছিল জোসেফ, রবার্ট হান্টার এবং নাওমি ক্রিস্টিনা অ্যামি।

এরপর ১৯৭২ সালে ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় বাইডেনের স্ত্রী এবং কন্যা নিহত হন। দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে বিউ এবং হান্টারও ছিলেন, তবে তাদের আঘাত গুরুতর না হওয়ায় বেঁচে যান তারা। কাকতালীয়ভাবে ওই বছরই মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বাইডেনই সবচেয়ে কম বয়সে সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড গড়েন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে সিনেট সদস্য হন তিনি।

তবে পৃথিবীর অন্য অনেক সাধারণ মানুষের মতো জো বাইডেনও ওই সময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। সম্প্রতি বিখ্যাত মার্কিন সাংবাদিক হাওয়ার্ড স্টার্নকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই।

বাইডেন বলেন, তার প্রথম স্ত্রী নিহত হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। সারাক্ষণ বিষণ্ন থাকতেন। এক রাতে মদ্যপ অবস্থায় তার মনে হয়েছিল এই জীবনের কোনো অর্থ নেই। এ কথা মনে হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ডেলাওয়্যার মেমোরিয়াল ব্রিজের উদ্দেশে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পড়েন বাইডেন। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে চান।

‘কিন্তু ব্রিজে পৌঁছানোর পর হঠাৎ তার মনে হলো, তার আরও দুটি ছোট সন্তান আছে। যদি তিনি আত্মহত্যা করেন, তাহলে তাদের দেখাশোনা করার কেউ থাকবে না। সন্তানদের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠামাত্র বাইডেন গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলেন। ফিরে আসেন বাড়িতে। এরপর ১৯৭৮ সালে জিল ট্রেসি জ্যাকবকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর তার নাম হয় জিল বাইডেন।

বাইডেন বলেন, ‘আসলে প্রত্যেক মানুষের জীবনেই এমন মুহূর্ত আসে, যখন তার আত্মহত্যা করার প্রবল ইচ্ছে জাগে। কিন্তু ওই সময়টায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং বলতে হয়, আত্মহত্যা হলো সবচেয়ে বোকামি কাজ।

সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দুই ছেলে বিউ এবং হান্টারকে একাই বড় করেছেন তিনি। পাশাপাশি সিনেটর হিসেবে রাজনৈতিক দায়িত্বও পালন করেছেন।


জো বাইডেন   আত্মহত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

আরও এক ব্যাংকের পতন যুক্তরাষ্ট্রে

প্রকাশ: ০৬:৫১ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

এবার আরেকটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিল যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ‘রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক করপোরেশন’ নামক ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ তারা। ইতিমধ্যে এ ব্যাংকটি তারা ফুলটন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করতেও রাজি হয়েছে।

ফিলাডেলফিয়া-ভিত্তিক রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংকটি নতুন বিনিয়োগ নিয়ে বেশ কিছু বিনিয়োগকারীর সঙ্গে আলোচনায় ছিল। কিন্তু এসব আলোচনা শেষ পর্যন্ত কোনো ফল আনতে না পারায় পেনসিলভানিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ব্যাংকিং অ্যান্ড সিকিউরিটিজ এ ব্যাংকটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের চারটি আঞ্চলিক ব্যাংকের পতনের পর আরও একটি আঞ্চলিক ব্যাংকের এই পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, দেশটির আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর কী অবস্থা।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন রিসিভার হিসেবে কাজ করবে। গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) তারা বলেছে, আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে ফুলটন ব্যাংক রিপাবলিক ব্যাংকের সব আমানত অধিগ্রহণ করার পাশাপাশি সব সম্পদ কিনে নেবে।

চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিপাবলিক ব্যাংকের মোট সম্পদমূল্য ছিল ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলার; তাদের আমানত ৪ বিলিয়ন বা ৪০০ কোটি ডলার। এফডিআইসির আনুমানিক হিসাব, এই ব্যাংকের ব্যর্থতায় তাদের ক্ষতির পরিমাণ ৬৬৭ মিলিয়ন বা ৬৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে।

এদিকে আমানত ছাড়াও রিপাবলিকের ঋণ ও অন্যান্য দায়ের পরিমাণ প্রায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ১৩০ কোটি ডলার, এক বিবৃতিতে এ তথ্য দিয়েছে ফুলটন। তারা আরও বলেছে, এই রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক কেনার মধ্য দিয়ে ফিলাডেলফিয়া অঞ্চলে তাদের প্রভাব আরও বাড়বে। দুই ব্যাংকের সম্মিলিত আমানতের পরিমাণ ৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ৮৬০ কোটি ডলারে উঠতে পারে।

গত বছর যেভাবে ব্যাংক কেনাবেচা হয়েছিল, এবারও সেই পদ্ধতিতে হবে। এমনভাবে তা করা হচ্ছে যাতে গ্রাহকদের গায়ে বিশেষ আঁচড় না লাগে। আগামী সোমবার অর্থাৎ ওইদিন স্থানীয় সময় সকালে নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া ও নিউইয়র্কে রিপাবলিক ব্যাংকের ৩২টি শাখা ফুলটন ব্যাংকের শাখা হিসেবে কার্যক্রম শুরু করবে। দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে গত বছর বিনিয়োগকারী জর্জ নরক্রস এবং ফিলপ নরক্রসের সঙ্গে চুক্তি করে রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।

ওয়াল স্ট্রিটের সূত্রে রয়টার্স বলেছে, সেই চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পর এফডিআইসি যথারীতি ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে এটি বিক্রি করার চেষ্টা করে। মুনাফা বাড়াতে না পেরে ও উচ্চ ব্যয়ের চাপে ২০২৩ সালে কর্মী ছাঁটাই করার পাশাপাশি মর্টগেজ ব্যবসা থেকে সরে আসে রিপাবলিক ফার্স্ট ব্যাংক।

এই পরিস্থিতিতে রিপাবলিক ফার্স্টের শেয়ারের দামেও পতন ঘটে। বছরের শুরুতে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ছিল দুই ডলারের কিছুটা ওপরে, এখন তা দাঁড়িয়েছে এক সেন্টের সামান্য বেশি। ব্যাংকটির বাজার মূলধন কমে ২০ লাখ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। ফলে এই ব্যাংক কোম্পানিটির শেয়ার নাসডাকের লেনদেন থেকে বাদ পড়েছে। এখন শুধু ওটিসিতে লেনদেন হয় তাদের শেয়ার।

২০২৩ সালে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশের ব্যাংক খাত চাপের মুখেই ছিল। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে চারটি ব্যাংকের পতন হয়, আর সুইজারল্যান্ডের অন্যতম বড় ব্যাংক ক্রেডিট সুইসও বিক্রি হয়ে যায়। বছরের প্রথম ভাগে যুক্তরাষ্ট্রে পরপর দুটি ব্যাংকের পতনের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আর্থিক খাতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। একই বছরে যুক্তরাষ্ট্রে তিন দিনের ব্যবধানে দুটি ব্যাংকের পতন হলে অনেকের মনেই এমন শঙ্কা তৈরি হয় যে ২০০৭-০৮ সালের আর্থিক সংকটের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কি না। তবে শেষ পর্যন্ত তা ঘটেনি। বছরের শেষ ভাগে এসে অবশ্য আর্থিক খাতে তেমন সংকট দেখা যায়নি। তবে এবার ২০২৪ সালের এপ্রিলে মাসে এসে আবার আরেকটি ব্যাংকের পতন হলো।

ব্যাংকের এই পতনে অবশ্য গ্রাহকদের বিশেষ ক্ষতি হয়নি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো শুরু থেকেই সোচ্চার থাকায় তেমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।


ব্যাংক   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফেসিয়াল থেকে এইডসে আক্রান্ত

প্রকাশ: ০৩:৪০ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

অনেকেই দীর্ঘ সময়ের জন্য তরুণ দেখাতে কসমেটিক সার্জারি এবং মুখে ইনজেকশনের মাধ্যমে ত্বক সুন্দর ও টানটান রাখতে 'ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল' করেন। সম্প্রতি এই ফেসিয়াল সংক্রান্ত ভীতিকর তথ্য সামনে এসেছে। ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ জন নারী। 

বৃহস্পতিবার(২৫ এপ্রিল) ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড কন্ট্রোল (সিডিসি) জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো রাজ্যের একটি স্পা'তে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করার কারণে সম্ভবত নারীরা এইচআইভিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। 

সিডিসি বলেছে, কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা তাদের জানা নেই। আক্রান্ত মহিলারা লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন ২০১৮ সালে।

সিডিসির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে একজন মহিলা মেক্সিকোতে একটি লাইসেন্সবিহীন স্পা থেকে প্লেটলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা মাইক্রোনিডলিং পদ্ধতির মাধ্যমে ফেসিয়াল করিয়েছিলেন। তারপরে তিনি এইচআইভি পজিটিভ ছিলেন। এরপরে 'সিডিসি' নিউ মেক্সিকোর স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কসমেটিক ইনজেকশনের মাধ্যমে কীভাবে এইচআইভি সংক্রমণ ঘটেছে তা তদন্ত করে। 

সিডিসি জানিয়েছে, যে মহিলাটি ইনজেকশনের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ করেননি, তাকে সংক্রামিত রক্ত সঞ্চালনও দেওয়া হয়নি বা এইচআইভি সংক্রামিত কোনও সঙ্গীর সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কও হয়নি। তিনি শুধু একটি ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করেছেন এবং এরপরে তার এইচআইভি পরীক্ষা পজিটিভ পাওয়া গেছে।

২০১৯ সালে নিউ মেক্সিকো হেলথ ডিপার্টমেন্ট বলেছিল, আলবুকার্কের ভিআইপি স্পা-তে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল গ্রহণের ফলে এইচআইভি সংক্রমণ হয়েছিল। স্পাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং সে সময় স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছিল, যারা স্পাটিতে ফেসিয়াল করেছেন তাদের এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি বিনামূল্যে পরীক্ষা করা হবে।

সিডিসি বলছে, ২০২৩ সালের মধ্যে চারজন মহিলা এবং একজন পুরুষসহ পাঁচজন এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়েছে। পুরুষটি সেই চারজন নারীর একজনের স্বামী।

সিডিসি জানিয়েছে, দুইজন এইচআইভি-আক্রান্ত রোগী বলেছেন, তারা কসমেটিক ইনজেকশন নেওয়ার আগে কোনোভাবে সংক্রামিত হয়ে থাকতে পারেন। তবে তিনজন রোগী স্পা থেকে এই সংক্রমণ পেয়েছেন। আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি জানিয়েছে, ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল পদ্ধতিতে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে।

বার্ধক্যের লক্ষণ লুকানোর জন্য মানুষ ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকে৷ এতে হাত থেকে রক্ত বের করে একই ব্যক্তির মুখে ইনজেকশন দেওয়া হ


ফেসিয়াল   এইডস   আক্রান্ত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মাঝরাতে আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো ইতালি

প্রকাশ: ১২:৪৮ পিএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মধ্যরাতের পর আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ করে একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে ইতালির মিলানে। বাসিন্দাদের প্রশান্তির স্বার্থে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে মিলানের স্থানীয় সরকার। 

ইতালির সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে আইসক্রিম। অনেকেই গভীর রাতে আইসক্রিম খেয়ে থাকেন। প্রস্তাবিত নতুন আইনের অধীন এভাবে আইসক্রিম খাওয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

মিলান শহরের স্থানীয় সরকার ইতিমধ্যে আইনের খসড়া তৈরি করে আইনসভায় জমা দিয়েছে। যদি প্রস্তাবিত আইনটি পাস হয়ে যায়, তাহলে আগামী মাস থেকে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম খাওয়া নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে।

মিলানের ১২টি এলাকায় আইনটি কার্যকর হবে। এই আইনের অধীনে মধ্যরাতের পর পিৎজা, পানীয়সহ সব ধরনের খাবার বাড়িতে সরবরাহ করা নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। শহরের সড়কে রাতের বেলায় যাতে হইচই না হয় এবং বাসিন্দারা প্রশান্তিতে থাকতে পারেন, সে জন্য এই আইন করা হচ্ছে।

মিলানের ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্র্যানেলি বলেন, সামাজিকতা ও বিনোদনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির কথা বিবেচনায় নিয়ে এই আইনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত এই আইন 'মধ্য মে' থেকে কার্যকর এবং নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। 

সপ্তাহের কর্মদিবসে রাত সাড়ে ১২টা এবং সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটির দিনে রাত দেড়টা থেকে আইনটির প্রয়োগ শুরু হবে। সড়ককে কোলাহলমুক্ত রাখতে খোলা আকাশের নিচে বসানো খাবার টেবিলে এই আইনের প্রয়োগ করা হবে।

নাগরিকেরা চাইলে মে মাসের গোড়ার দিকে প্রস্তাবিত আইনের কোনো ধারার পরিবর্তন বা সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মধ্যরাতে আইসক্রিম খাওয়া বন্ধে মিলানের স্থানীয় সরকার এবারই যে প্রথম উদ্যোগ নিচ্ছে, তা নয়। এর আগে ২০১৩ সালে তৎকালীন মেয়র জুইলিয়ানো পিসাপিয়া মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তুমুল সমালোচনার মুখে তিনি পিছু হটতে বাধ্য হন।


আইসক্রিম   নিষিদ্ধ   ইতালি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

জার্মানির বিরুদ্ধে মামলার রায় ৩০ এপ্রিল

প্রকাশ: ১১:৫৩ এএম, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল চলমান যুদ্ধে গণগত্যা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইসরায়েলের এই অমানবিক কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগ এনে জার্মানির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করে মধ্য আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়া।

আগামী ৩০ এপ্রিল সেই মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করেছে আইসিজে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইসিজে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে- ইসরায়েলকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে গণহত্যা ‘সহজতর’ করার দায়ে জার্মানিকে অভিযুক্ত করে ১ মার্চ নিকারাগুয়া যে মামলা করে তার রায় ৩০ এপ্রিল ঘোষণা করা হবে।

বিবৃতি অনুসারে, দ্য হেগের পিস প্যালেসে ওই দিন স্থানীয় সময় বিকাল তিনটায় আদালতের প্রধান বিচারপতি নওয়াফ সালাম মামলার রায় পাঠ করবেন।

নিকারাগুয়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের কাছে ‘জার্মানিকে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করার নির্দেশ এবং গাজা উপত্যকায় আন্তর্জাতিক আইনের অন্যান্য বিধিনিষেধের বিষয়ে’ জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা জারি করার অনুরোধ জানিয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪,৩৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এছাড়াও আহত হয়েছে ৭৭,৩৬৮ ফিলিস্তিনি।


জার্মান   বিরুদ্ধে   মামলা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন