ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান অনুপস্থিত। গত এক দশকে চীনের বৈশ্বিক দৃঢ় অবস্থানে যখন ভারত মহাসাগরের পানি বাড়তে শুরু করে, তখন দেশটি পশ্চিম থেকে বঙ্গোপসাগরের পূর্ব উপকূলে নজর দিচ্ছে। বাংলাদেশে যেহেতু স্থিতিশীল সরকার রয়েছে এবং সেখানকার অর্থনীতি যেহেতু দ্রুত বর্ধনশীল, সেহেতু ভারতের প্রতিবেশী নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক ছিল এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যসহ একাধিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। একই সঙ্গে দেশটিতে ভারতীয় বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেয়েছে। রত্নদীপ চক্রবর্তী ও একামপ্রীত কাউর: লেখকদ্বয় কৌশলগত সম্পর্কবিষয়ক প্রতিষ্ঠান দ্য অনেস্ট ক্রিটিক-এর সঙ্গে যুক্ত; এশিয়া টাইমসে তারা মত প্রকাশ করেন যে, ভারত থেকে লাইন অব ক্রেডিট বা নমনীয় ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রগণ্য বাংলাদেশ। ২০২২ সালে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৩ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আমদানির পরিমাণ ছিল ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা বেড়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশ ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২০১৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী ভারত ২৫ বছরের জন্য ঝাড়খণ্ডের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্যও বাংলাদেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে– তেজস হালকা যুদ্ধবিমান ও ধ্রুব হালকা হেলিকপ্টার, সুরক্ষামূলক গিয়ার ছাড়াও রয়েছে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং হেলমেট।
ঐতিহাসিকভাবে
বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতি যৌথ সহযোগিতামূলক
নীতির ভিত্তিতে তৈরি; ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা
দেশটি এড়িয়ে চলতে চায়। বাংলাদেশের
পররাষ্ট্রনীতি হলো– ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব,
কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’। এ
বছরের ২৪ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ কে আব্দুল মোমেন
বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা ঘোষণা করেন। সেখানে তিনি দেশটির বৈদেশিক
নীতির আলোকে ‘অবাধ, মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও সুরক্ষিত ইন্দো-প্যাসিফিক’ অঞ্চলের কথা ঘোষণা করেন।
এর সঙ্গে বাংলাদেশের ‘ভিশন ২০৪১’-এ
২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার
যে লক্ষ্য নিরূপিত, তার মিল রয়েছে।
বাংলাদেশের
ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখার সঙ্গে ভারতের এ বিষয়ক রূপকল্পের
সাযুজ্য রয়েছে। ভারত মুক্ত ও
নিয়মভিত্তিক ইন্দো-প্যাসিফিকের পক্ষে। যদিও ভারত নিরপেক্ষ
বলে দাবি করে; এতে
পশ্চিমা প্রভাব রয়েছে। পশ্চিমারা বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে যুক্ত করার চেষ্টা করছে
এবং গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অংশীদার
হওয়ার মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে তারা
অনেক দূর এগিয়েছে।
বাংলাদেশ
সরকার সম্প্রতি ১৫-দফা দৃষ্টিভঙ্গি নীতি
নথি সহ একটি ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের রূপরেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান,
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের
আগে এক সংবাদ সম্মেলনে
এ অঞ্চলের জন্য দেশটির নির্দেশিকা
ও উদ্দেশ্য প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের
মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দরটি
জাপান ও ভারতের কাছে
অত্যন্ত কৌশলগত গুরুত্বের বলে মনে করা
হয়। বাংলাদেশের প্রথম গভীর-সমুদ্র বন্দরের
ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব গত মার্চে জাপানের
প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার ভারত সফরের সময়
স্পষ্ট হয়েছিল কারণ বন্দরটি টোকিওর
ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক
(এফওআইপি) এজেন্ডার একটি গুরুত্বপূর্ণ তক্তা
হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
একই
মাসে, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি
কৌশলগত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে ১৬৫
বিলিয়ন ইয়েন ($১.২ বিলিয়ন) নতুন
ঋণ দিতে সম্মত হয়।
নয়াদিল্লি সফরকালে কিশিদা বলেছিলেন যে টোকিও দক্ষিণ
এশিয়ায় বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের
সহযোগিতায় বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পূর্ব
ভারত পর্যন্ত অঞ্চলের উন্নয়ন চায়।
বাংলাদেশ
এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার কোয়াড
অংশীদারদের দ্বারা অনুসৃত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের আলিঙ্গনের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে, যা
ঘোরে। এই পদক্ষেপটি এসেছে
যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কয়েকটি মূল
মিত্ররা ইঙ্গিত দিয়েছে যে বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশ হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ-ভারত সরকারের মধ্যে
সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং ভারতের
ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে অংশগ্রহণে বাংলাদেশের আগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য নয়াদিল্লিকে
তার নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল উপলব্ধি করতে
বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে অতিরিক্ত মাইল
যেতে হবে।
বাংলাদেশ
মূলত প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রগুলোর সাথে সম্পর্কের ভারসাম্য
রক্ষার লক্ষ্য রাখে। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব
ডিম এক ঝুড়িতে রাখেন
না। এইভাবে, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,
রাশিয়া, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন,
আরব এবং অবশ্যই ভারতের
সাথে "অসমভাবে" হলেও কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক
এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় রাখতে চান।
বাংলাদেশ
ও ভারতের বর্তমান সরকারগুলি খুব কাছাকাছি, এবং
নয়াদিল্লি সম্ভবত ঢাকাকে কৌশলটি গ্রহণ করতে উৎসাহিত করেছিল।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে।
বাংলাদেশ ভারত সরকারের কাছ
থেকে আস্থা অর্জন করতে পারে কারণ
ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক জোটের সক্রিয় সদস্য। অন্যদিকে, বাংলাদেশ চীনের দুর্দশাকে বুদ্ধিমত্তার সাথে মোকাবেলা করতে
পারে কারণ এর লক্ষ্য
সামরিকভাবে না হয়ে কাঠামোগতভাবে
জড়িত হওয়া। বাংলাদেশ তার ইন্দো-প্যাসিফিক
ওরিয়েন্টেশনের রূপরেখা দিয়ে অন্যান্য উপকূলীয় দেশগুলির জন্য মূলত একটি
উদাহরণ স্থাপন করেছে। বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার
সম্প্রতি সংলাপ ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তির জন্য একটি দৃষ্টিভঙ্গি
তৈরি করেছে।
দৃষ্টিভঙ্গির
চারটি নির্দেশক নীতি এবং ১৫টি
উদ্দেশ্য রয়েছে। রূপরেখায় চারটি নীতি উল্লেখ করা
হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমটি
হল ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা
নয়’। নীতিগুলি টেকসই
উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, মানবিক
পদক্ষেপ এবং মৌলিক অধিকার
ও স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার জন্য গঠনমূলক আঞ্চলিক
ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেয়।
এর ১৫টি উদ্দেশ্য রয়েছে।
এর মধ্যে একটি হল ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সকলের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি,
নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায়
রাখার লক্ষ্যে পারস্পরিক আস্থা ও সম্মান বজায়
রাখা, অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ক্ষেত্র
সম্প্রসারণ করা এবং আলোচনা
ও বোঝাপড়ার ওপর জোর দেওয়া।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রাসঙ্গিক অংশীদারদের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ, শান্তিরক্ষা, শান্তি বিনির্মাণ এবং সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে
অর্থপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক মূল্যে
অবদান রাখা।
বাংলাদেশকে
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তার অবস্থান স্পষ্ট
করতে হবে যাতে কেউ
ভুল বুঝতে বা বিভ্রান্ত করতে
না পারে। ফলে ভালো অবস্থানে
চলে গেছে বাংলাদেশ। তখন
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানত। এ অবস্থানের ভিত্তিতে
বাংলাদেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক এগিয়ে যাবে।
ঐতিহাসিকভাবে
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি যৌথ সমবায় নীতির
উপর ভিত্তি করে; দেশটি ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এড়াতে চায়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হলো ‘সবার সঙ্গে
বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা
নয়’। চলতি বছরের
২৪ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল
মোমেন বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখা ঘোষণা করেন। সেখানে তিনি দেশের পররাষ্ট্রনীতির
আলোকে ‘মুক্ত, মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক’ অঞ্চল ঘোষণা করেন। এটি ২০৪১ সালের
মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার
বাংলাদেশের ‘ভিশন ২০৪১’ লক্ষ্যের
সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এ বিষয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপরেখার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভারত একটি মুক্ত
এবং সুশৃঙ্খল ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য দাঁড়িয়েছে। যদিও
ভারত নিজেকে নিরপেক্ষ বলে দাবি করে;
এতে পশ্চিমা প্রভাব রয়েছে। পশ্চিমারা বাংলাদেশকে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে একীভূত করার চেষ্টা করছে
এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য
ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে এ ক্ষেত্রে
অনেক দূর এগিয়েছে।
বাংলাদেশের
কৌশলগত অবস্থান দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব
এশিয়া– উভয়ের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। কোয়াড
জোটের সদস্যদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পশ্চিম ও ভারতের জন্য
তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক রূপকল্পে যুক্ত হওয়ার জন্য বাংলাদেশ আদর্শ
অংশীদার হিসেবে বিবেচিত। ভারতের দিক থেকে দেশটির
নিরাপত্তা বজায় রাখা ও সংকটপূর্ণ
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সহজ যাতায়াত নিশ্চিত
করা এবং বঙ্গোপসাগরে সরাসরি
প্রবেশাধিকার শুধু বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত
করার মাধ্যমেই সম্ভব হতে পারে। এর
সঙ্গে ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি আরও শক্তিশালী
করার এবং এ অঞ্চলে
চীনের সামরিক উত্থানকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও বাংলাদেশ
গুরুত্বপূর্ণ। নয়াদিল্লি এ বিষয়ে সচেতন
এবং সার্ক ও বিমসটেকের মাধ্যমে
সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশকে যুক্ত করছে।
ভারতে
যেহেতু এ বছর জি২০
সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে সদস্য
নয় এমন দেশকেও নিমন্ত্রণের
ঐতিহ্য অনুসারে দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুধু বাংলাদেশকে
আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে পূর্বদিকের
প্রতিবেশী এবং ইন্দো-প্যাসিফিক
রূপকল্পে বাংলাদেশকে যে ভারত যথেষ্ট
গুরুত্ব দিচ্ছে, তা-ই প্রমাণ
হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশের স্বাভাবিক
বাণিজ্যিক সম্পর্কের বাইরেও ভারত জলবায়ু পরিবর্তন
বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার দিল্লি সফরের পর জ্বালানির উৎস
রূপান্তরে সহযোগিতা বিষয়েও আলোচনা হয়। এর বাইরেও
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সেবা, বিনিয়োগসহ নানা খাতে অর্থনৈতিক
সহযোগিতার পথ আরও ত্বরান্বিত
করতে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট-সেপা চুক্তি করতে
যাচ্ছে।
মার্কিন
ডলারের প্রভাব যেহেতু কমছে, সে জন্য বাংলাদেশ
ও ভারত উভয়েই তাদের
বাণিজ্য ও আর্থিক আদান-প্রদানে ডলারের ওপর নির্ভরতা কমানোর
জন্য বিকল্প হিসেবে ভারতীয় রুপিতে লেনদেন শুরু করেছে। তবে
সেপা চুক্তি যৌথ উৎপাদন কেন্দ্র
এবং নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন তৈরির সুযোগও
খুলে দেবে। আঞ্চলিক সংযোগের এ বিষয়কে ব্যবসায়িক
ক্ষেত্রে রূপান্তরিত করলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
বাংলাদেশ-ভারত সরকারের মধ্যে
সুসম্পর্ক বজায় রেখে এবং
ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে অংশ হওয়ার জন্য
বাংলাদেশের আগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্য নয়াদিল্লিকে
তার নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিতে আরও অতিরিক্ত
পথ পাড়ি দিতে হবে।
বাংলাদেশ-ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল
মন্তব্য করুন
আবারও নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে একনায়ক হয়ে দেশকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দেবেন। দেশটিতে মানুষের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, তা নষ্ট করে ফেলবেন, হিন্দু-মুসলিম লড়াই বাধিয়ে দেবেন বলে দাবি করেছেন জাতীয় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি ও 'ইন্ডিয়া' জোটের মুখ মল্লিকার্জুন খাড়গে।
ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে ইতিমধ্যে দুই দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ৭ মে তৃতীয় দফায় মালদা উত্তর, মালদা দক্ষিণ, জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে হবে ভোটগ্রহণ। তার আগে রোববার (৫ মে) মালদার সুজাপুর হাতিমারি ময়দানে আয়োজিত জনসভায় উত্তর মালদা ও দক্ষিণ মালদা আসনগুলোতে বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক আলম এবং ইশা খান চৌধুরীর সমর্থনে ভাষণ দেন মল্লিকার্জুন খাড়গে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে খাবার খান, তা হজম করার জন্য কংগ্রেসের নামে কু-কথা বলতে হয়। কু-কথা না বললে তার খাবার হজম হয় না।
কংগ্রেস সভাপতি বলেন, কংগ্রেস সরকার মনরেগার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প তৈরি করেছে, গরিবদের পেট ভরার জন্য ফুড সিকিউরিটি অ্যাক্ট'র মাধ্যমে বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করেছে। নরেন্দ্র মোদী কি এ ধরনের কোনো প্রকল্প দিয়েছেন? আমাদের সরকার শিক্ষা সুরক্ষার জন্য কাজ করছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী ভারতে অশিক্ষার আলো জ্বালাতে চান। গরিবকে আরও গরিব করে রাখতে চান। এ ধরনের মানুষ তিনি।
মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ভাই এবং বোনেরা বলা ছাড়া নরেন্দ্র মোদী দেশের জন্য কিছুই করেননি। এখানে এসে বলেছিলেন, কংগ্রেসের নেতারা বিদেশে বেআইনি অর্থ রেখেছেন, সেই অর্থ আমি সুইস ব্যাংক থেকে আনবো, আর ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ রুপি দেওয়া হবে। কোথায় গেলো সেইসব অর্থ?
এরপর বিজেপি নেতাকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, প্রতি বছর দুই কোটি যুবককে চাকরি দেবো। ১০ বছরে কত চাকরি হওয়ার কথা ছিল? ২০ কোটি। ভারতে বেকার যুবকরা কি ২০ কোটি চাকরি পেয়েছে? পায়নি।
তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী জনগণকে কখনো সত্যি কথা বলেন না। এ কারণেই বলতে হয়, মোদীজি, আপনি মিথ্যাবাদীদের সর্দার।
ইন্ডিয়া জোটের প্রধান আরও বলেন, এখন নরেন্দ্র মোদী আরও একটি মিথ্যা কথা বলছেন যে, জাতীয় কংগ্রেস জনগণনা প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণের সম্পত্তি ভাগ করে দিতে চায়। আর সেই সম্পত্তি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের দিতে চায়। কিন্তু আমি নরেন্দ্র মোদীকে বলবো, আপনি জেনে রাখুন, ভারতের সংবিধানে রয়েছে, সবার সমান অধিকার। মুসলিমদের যেমন সমান অধিকার, তেমনি হিন্দুদেরও সমান অধিকার। শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান- সবার জন্য সমান অধিকার, যা বাবা সাহেব বিআর আম্বেদকর লিখে গেছেন।
কংগ্রেসের বর্ষীয়ান এ নেতা বলেন, আমরা সবসময় দেশকে একজোট করে রাখতে চাই। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী কখনোই দেশকে একজোট করে রাখতে চান না। কখনো জাতির নামে, কখনো হিন্দু-মুসলিমদের নামে, কখনো নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের নামে দেশকে ভাগাভাগি করতে চান। তিনি আরও একবার প্রধানমন্ত্রী হলে একনায়ক হয়ে দেশকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দেবেন। দেশে জাতিগুলোর মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, তা নষ্ট করে ফেলবেন, হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে লড়াই বাধিয়ে দেবেন। কিন্তু জাতীয় কংগ্রেস কখনো দেশকে ভাঙতে দেবে না। আমরা সবাই এক হয়ে লড়াই করবো দেশের জন্য।
নরেন্দ্র মোদী ভারত প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা ইসরায়েলে আল জাজিরার কার্যক্রম বন্ধ করার পক্ষে সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়েছে। একটি সরকারি বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
চলমান গাজা যুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত বিদেশি টিভি চ্যানেল অস্থায়ীভাবে বন্ধ করার অনুমতি চেয়ে একটি আইন পাস করেছিল ইসরায়েলের সংসদ। এরপরই রবিবার দেশটির মন্ত্রিসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুমোদিত আইন অনুযায়ী নেতানিয়াহু ও নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ৪৫ দিনের জন্য ইসরায়েলে বিদেশি টিভির কার্যালয় বন্ধ করতে পারবে, যা নবায়নযোগ্য। এটি জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত বা গাজায় বড় সামরিক অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বজায় থাকবে।
নেতানিয়াহু আল জাজিরাকে উস্কানিমূলক গণমাধ্যম বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলে উস্কানিমূলক চ্যানেল আল জাজিরা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আল জাজিরা বন্ধ ইসরায়েল সংসদ ভোট
মন্তব্য করুন
পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২২৮ জনে পৌঁছেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে গত কয়েকদিনে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে বলে রোববার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাতে কেনিয়াজুড়ে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। দেশটিতে মে মাসে আরও খারাপ আবহাওয়া পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এক বিবৃতিতে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বন্যায় আরও নিচু, নদী তীরবর্তী এলাকা ও শহরাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ সময় খাড়া ঢালু, উঁচু পাহাড় ও গিরিখাত এলাকায় ভূমিধস অথবা কাদা ধস ঘটতে পারে।
বন্যায় পূর্ব আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটিতে অনেক বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, সেতু এবং অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈরী আবহাওয়ায় আরও কমপক্ষে ১৬৪ জন আহত ও ২ লাখ ১৩ হাজার ৬৩০ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন
ইউক্রেনের খারকিভ ও দিনপ্রো ও ওডিশায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ হামলা দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং একটি খাদ্য কারখানায় আগুন ধরে যায়। তাছাড়া বেশ কিছু বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনের পাশাপাশি অন্যান্য অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, হামলায় বিভিন্ন ধরনের আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ৭০টি গাইডেড এরিয়াল বোম ব্যবহার করা হয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনের এয়ার ফোর্স খারকিভ ও দিনপ্রো লক্ষ্য করে ছোড়া ১৩টি শাহেদ ড্রোন ভূপাতিত করে।
সম্প্রতি ইউক্রেনের জন্য সহায়তা বিল পাস হয়েছে মার্কিন সিনেটে। এরপরই কিয়েভের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া।
মন্তব্য করুন
নিউইয়র্ক বাংলাদেশি হত্যা উইন রোজারিও
মন্তব্য করুন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা ইসরায়েলে আল জাজিরার কার্যক্রম বন্ধ করার পক্ষে সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়েছে। একটি সরকারি বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। চলমান গাজা যুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত বিদেশি টিভি চ্যানেল অস্থায়ীভাবে বন্ধ করার অনুমতি চেয়ে একটি আইন পাস করেছিল ইসরায়েলের সংসদ। এরপরই রবিবার দেশটির মন্ত্রিসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইউক্রেনের খারকিভ ও দিনপ্রো ও ওডিশায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ হামলা দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং একটি খাদ্য কারখানায় আগুন ধরে যায়। তাছাড়া বেশ কিছু বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনের পাশাপাশি অন্যান্য অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, হামলায় বিভিন্ন ধরনের আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ৭০টি গাইডেড এরিয়াল বোম ব্যবহার করা হয়েছে।