ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিশ্বজুড়ে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ০৮ অক্টোবর, ২০২৩


Thumbnail

সারা বিশ্বে আমেরিকার প্রায় ৭৫০টি মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে। ইরাকে যেসব ঘাঁটি এখনো চালু রয়েছে সেসব ঘাঁটিকে বিবেচনায় নিলে এ সংখ্যা আরও বেশি হবে। বিশ্বব্যাপী আমেরিকার এসব ঘাঁটি পরিচালনার জন্য প্রতি বছর প্রায় ১৫৬ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়। যদিও এর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে ধারণা সমর বিশেষজ্ঞদের। পৃথিবীর সাত মহাদেশেই রয়েছে একাধিক মার্কিন ঘাঁটি। তালিকা থেকে বাদ যায়নি বরফের মহাদেশ অ্যান্টার্টিকাও। সেখানেও রয়েছে তিন তিনটি মিলিটারি গবেষণা কেন্দ্র। এই সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তি পৃথিবীর ৮০টি দেশের সামরিক ঘাঁটি ছাড়াও ১৫৯টি দেশে তাদের মোট ১৭ লাখ ৩০ হাজারের বেশি সৈন্য মোতায়েন রেখেছে। যে কোনো অজুহাতে যে কোনো দেশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মার্কিন হস্তক্ষেপের পেছনে এ ঘাঁটিগুলোর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। বিদ্রোহ বা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে অনুগত শাসক শ্রেণি তৈরি অথবা কোনো দেশকে সর্বদা কূটনৈতিক চাপে রাখার ক্ষেত্রেও এসব সামরিক ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অস্ত্র। 

ঘাঁটিগুলো দুটি প্রধান বিভাগের অধীনে বা আওতায় পড়ে 

বড় ঘাঁটি বা ঘাঁটি: যেখানে সাধারণত ২০০ জনের বেশি মার্কিন সামরিক কর্মী থাকে তাকে বড় ঘাঁটি ধরা হয়। এগুলো ৪ হেক্টর (১০ একর) বা ১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের সামরিক স্থাপনা । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩৯ বা ৬০ শতাংশ বিদেশি ঘাঁটি এই বিভাগের অধীনে রয়েছে।

ছোট ঘাঁটি বা লিলি প্যাডস: এই ছোট  ঘাঁটিগুলো ‘লিলি প্যাডস’ নামে পরিচিত । ৪ হেক্টর (১০ একর) থেকে ছোট বা ১০ মিলিয়ন ডলারের কম মূল্যের সামরিক স্থাপনাগুলোয় এর অংশ। ঘাঁটিগুলোয় সমবায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ফরোয়ার্ড অপারেটিং সাইট আছে। বাকি ৪০ শতাংশ ঘাঁটি এই বিভাগের আওতাধীন।

কোন দেশে কত সামরিক ঘাঁটি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ৮০টি দেশে প্রায় ৭৫০টি সামরিক ঘাঁটি নিয়ন্ত্রণ করে। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অধ্যাপক ডেভিড ভাইন তার ‘Base Nation’ গ্রন্থ এর মধ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি পরিচালনার কারণে কী পরিমাণ অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং মানুষের জীবনহানি হচ্ছে তার একটি হিসাব নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন। অবাক করা তথ্য হচ্ছে- ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি বিস্তারের কাজ নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। তবে সারা বিশ্বে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির বেশিরভাগ আবির্ভূত হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। সে সময় আমেরিকা বিশ্বনেতায় পরিণত হয় এবং জাপান ও জার্মানিতে শান্তিরক্ষীর দায়িত্ব পালন করে। কোরিয় উপদ্বীপের যুদ্ধ এবং স্নায়ুযুদ্ধও বিভিন্ন দেশে মার্কিন ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার কাজ জোরদার করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কমিউনিজম বিস্তারের অজুহাত দেখিয়ে সারা বিশ্বে দ্রুতগতিতে আমেরিকা সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করে। জাপান, জার্মানি ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উন্নত দেশগুলো যেখানে গণতন্ত্র সুসংহত রয়েছে। এসব দেশেও বহুসংখ্যক মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে এবং এসব দেশে আমেরিকার হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা আছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং স্নায়ুযুদ্ধের অবসান হলেও আমেরিকা তার ঘাঁটি অক্ষত রেখেছে এবং সেসব ঘাঁটিতে সামরিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমেরিকা বিশ্বে তার ভূ-রাজনৈতিক উপস্থিতি নিশ্চিত করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে জাপান, জার্মানি ও ইতালি ছিল এক পক্ষে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখনো যুদ্ধে যোগ না দিলেও মিত্র দেশগুলোকে ব্যাপক সামরিক-বেসামরিক সহায়তা দিচ্ছিল। এর আওতায় ১৯৪০ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত পুরনো ৫০টি ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ ব্রিটেনকে দিয়ে দেয় আমেরিকা। বিনিময়ে তারা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে থাকা আটটি ব্রিটিশ নৌ-ঘাঁটি নিজেদের ব্যবহারের জন্য ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়ে নেয়। প্রাথমিকভাবে এভাবে বিদেশে সামরিক ঘাঁটি বানানোর কাজ শুরু করেছিল মার্কিন সামরিক বাহিনী। বিশ্বযুদ্ধে জাপান, জার্মানি ও ইতালি (এক পক্ষ) পরাজিত হয়। যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে মিত্রদের কাছে জাপানিদের আত্মসমর্পণের পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন কোরিয়াকে বিভক্ত করে। যা ছিল জাপানি শাসনের অধীনে। ১৯৫০ সালের ২৫ জুন উত্তর কোরিয়ার বাহিনী চীন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থনে দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রমণ করে। শুরু হয় কোরিয়ান যুদ্ধ। তখন দক্ষিণ কোরিয়ার মিত্রশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিপুল সৈন্য মোতায়েন করে। যে যুদ্ধে ২০ থেকে ৩০ লাখ বেসামরিক মানুষ মারা গিয়েছিল। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের তথ্য মতে, সে যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩ হাজার ৭৩৯ জন নিহত হয়েছে। সে যুদ্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক শান্তি চুক্তি হয়নি।

১৯৯০ সালের ২ আগস্ট ইরাকি সেনাবাহিনী দক্ষিণের তেলসমৃদ্ধ দেশ কুয়েতে আক্রমণ করে। এক সপ্তাহ পরে ৯ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অপারেশন ডেজার্ট শিল্ডের অংশ হিসেবে সৌদি আরবে হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করে। সংক্ষিপ্ত ওই যুদ্ধে প্রায় ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৫৫০ আমেরিকান সৈন্য ওই অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছিল। ১৯৯১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন। একই বছরের ৩ এপ্রিল জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে সংঘাতের অবসানে একটি প্রস্তাব পাস করে।

৯/১১ হামলার পরের সময়কালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সশস্ত্র সংগঠন আল-কায়েদাকে ধ্বংসের অজুহাতে ২০০১ সালে আফগানিস্তান এবং সাদ্দাম সরকারের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে এই অজুহাতে ২০০৩ সালে ইরাক উভয়ের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এরপরই মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সৈন্যসামন্ত বৃদ্ধি পায়। ২০০১-২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ সৈন্য আফগানিস্তানে এবং ১৫ লাখেরও বেশি সৈন্য ইরাকে কাজ করেছে। ধারণা করা হয়, যুদ্ধে ৯ লাখেরও বেশি লোককে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশির ভাগ ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুটির বেসামরিক মানুষ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৭৮ বছর পার হয়েছে। এত বছর পরও আমেরিকার জার্মানিতে ৫০টি, ইতালিতে সাতটি এবং জাপানে ১৩০টি ঘাঁটি রয়েছে। কোরীয় উপদ্বীপে আছে ১৫টি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া, বুলগেরিলা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, সৌদি আরব, কাতার ও কেনিয়াসহ বিশ্বের ৮০টি দেশ ঘাঁটি গড়ে তুলেছে বিশ্বের সবচেয়ে সেরা পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

সামরিক বাহিনীতে কত খরচ?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের প্রথম পাঁচটি বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সজ্জিত সশস্ত্র বাহিনীর একটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর পেছনে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করে। প্রতিরক্ষা খাতে এই বিশ্ব মোড়লদের বার্ষিক বাজেট যে কাউকে চমকে দেবে।  স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক বাহিনীতে ৭৭৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।  যা তালিকায় থাকা পরবর্তী ১০টি দেশের সম্মিলিত বাজেটের চেয়েও বেশি। প্রতিরক্ষা বাজেটে চীন ২৫২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। ভারত ৭৩ বিলিয়ন ডলার, রাশিয়া ৬২ বিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাজ্য ৫৯ বিলিয়ন ডলার।

ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কস্টস অব ওয়ার প্রজেক্টের তথ্য অনুসারে, বিগত ২০ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বযুদ্ধ’-এর জন্য ৮ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে। যার মধ্যে কেবল আফগানিস্তানে ব্যয় করেছে ২.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। ইরাক এবং সিরিয়ার যুদ্ধে ২.১ ট্রিলিয়ন ডলার এবং ৩৫৫ বিলিয়ন ডলার অন্যান্য যুদ্ধের ব্যয় করা হয়।

কার অর্থে পরিচালিত হয় এসব ঘাঁটি? 

মার্কিন সরকার সারা বিশ্বে ৮০০ সামরিক ঘাঁটি পরিচালনার জন্য আমেরিকার জনগণের কাছ থকে ট্যাক্স আদায় করে এবং সেই অর্থে ঘাঁটিগুলো পরিচালিত হয়। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা স্পুৎনিকের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে মোতায়েন একজন সেনার জন্য মার্কিন করদাতাদেরকে বছরে ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার ডলার ট্যাক্স দিতে হয়। পরোক্ষভাবে বিশ্বের বহু দেশের জনগণকেও বহন করতে হয় সে অর্থ।কারণ বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ’র মাধ্যমে আমেরিকা নানা কায়দায় বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে আছে। এ দুটি সংস্থার মাধ্যমে আমেরিকা বিভিন্ন দেশের কাঁধে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়। সারা বিশ্বের অর্থনীতির একক নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে আমেরিকা বিশ্ববাসীর ঘাড়ে তার ঋণ ও ব্যয়ের ভাগ চাপিয়ে দিচ্ছে তা নতুন কিছু নয়। অন্যদিকে, এসব মার্কিন সেনাদের নানা রকম অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়। এর মধ্যে জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপে বহুসংখ্যক ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে মার্কিন সেনারা। আর ইরাক ও আফগানিস্তানে তো হেন অপরাধ নেই যা মার্কিন সেনারা করে নি। এমনকি, শিশুদের ওপর গুলি করার প্র্যাকটিসও করেছে; খেলতে খেলতে মানুষ হত্যা করেছে। কার হাতে কত ‘এইম’ তার পরীক্ষা করেছে আফগান শিশুদের ওপর। অভিযানের নামে আফগানিস্তান ও ইরাকের বহু পরিবারের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং আফগান নাগরিকদের হত্যার পর তাদের মুখে প্রস্রাব করার মতো ঘৃণ্য ঘটনাও মার্কিন সেনারা ঘটিয়েছে।  

কেন সামরিক ঘাঁটি?

স্থল, বিমান ও নৌ ঘাঁটিগুলোর মাধ্যমে সারা বিশ্বে ব্যাপক মাত্রায় আমেরিকা সামরিক তৎপরতা চালিয়ে থাকে আর এর মাধ্যমে তার একক প্রভাব নিশ্চিত হয়েছে। এসব ঘাঁটির মাধ্যমে মূলত সারা বিশ্বে আমেরিকা তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়; সেইসঙ্গে চায় দেশে দেশে অনুগত শাসক শ্রেণি তৈরি করতে। যেখানে বাধা দেয়া হয় সেখানেই সেনা অভিযান কিংবা গোপন মিশনে বাধা সৃষ্টিকারী শাসককে সরিয়ে দেয়া হয়। বিশ্বের  সব দেশে ও সব অঞ্চলে ‘গোলাম’ মানসিকতার শাসক শ্রেণিপাওয়া যাবে না। ফলে সামরিক শক্তি ও ঘাঁটি বাড়ানোর বিকল্প কোনো চিন্তা আপাতত আমেরিকার মনে নেই। কথায় কাজ না হলে সামরিক বাহিনী দিয়ে সব ব্যবস্থা করা হয়।

অঞ্চলভেদে আমেরিকার সামরিক ঘাটির সংখ্যা: ইউরোপীয় অঞ্চল

ইউরোপে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির যাত্রা শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়কালে। এই মহাদেশে অন্তত ৬০ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেনা ও সামরিক ঘাঁটি রয়েছে জার্মানিতে। ইউরোপের এই দেশটিতে প্রায় ৩৩ হাজার ৯০০ মার্কিন সৈন্য রয়েছে। যদিও ২০০৬ সালে এর সংখ্যাটা ছিল ৭২ হাজার ৪০০। তবে ২০২০ সালে জার্মানিতে অবস্থানরত মার্কিন সৈন্যের সংখ্যা অর্ধেকেরও নিচে নেমে আসে। ইউরোপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক সৈন্য ও ঘাঁটি মোতায়েন রয়েছে ইতালিতে। ইতালিতে রয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৩০০ মার্কিন সৈন্য। আর যুক্তরাজ্যে মোতায়েন রয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৩০০ মার্কিন সৈন্য। জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটি ইউরোপে মার্কিন সেনা ও সামরিক সরবরাহের বৃহত্তম কেন্দ্র। ১ হাজার ২০০ হেক্টর (৩ হাজার একর) জায়গায় রয়েছে ল্যান্ডস্টুল আঞ্চলিক মেডিকেল সেন্টার, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নির্মিত বৃহত্তম মার্কিন সামরিক হাসপাতাল। আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধে রামস্টেইন ঘাঁটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। যুদ্ধে হাজার হাজার আহত সৈন্যের চিকিৎসা এই হাসপাতালে করা হয়েছিল। প্রায় সব মার্কিন ঘাঁটির মতো রামস্টেইনেও রয়েছে হাসপাতাল, স্কুল, পাওয়ার স্টেশন, অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স এবং অনেক সুযোগ-সুবিধা নির্মিত। যা প্রায়ই ‘বার্গার কিংস এবং বোলিং অ্যালি’ হিসেবে পরিচিত। এ ছাড়া নরওয়ের সাতটি ঘাঁটিতে ৭৩৩ সেনা, স্পেনের চারটি ঘাঁটিতে ৩১৬৮ সেনা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাথমিক সদস্যপদ লাভ করা তুরস্কের ১৩টি ঘাঁটিতে আছে ১ হাজার ৬৮৫ মার্কিন সেনা। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য একমাত্র মুসলিম এই দেশটি থেকেই ইরাক আক্রমণ পরিচালনা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ অঞ্চলে মার্কিন প্রভাব বৃদ্ধি ও ধরে রাখার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ইউরোপে রাশিয়ার প্রভাব ঠেকানো। গ্রিস, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, ডেনমার্ক, আয়ারল্যান্ডসহ গোটা ইউরোপকে ঘিরেই রয়েছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি।

মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল

ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুসারে, ২০০১ সাল থেকে প্রায় ১৯ লাখ থেকে ৩০ লাখ মার্কিন সেনাসদস্য আফগানিস্তান এবং ইরাকে কাজ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি হলো- আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি, যা কাতারের রাজধানী দোহার ঠিক পশ্চিমে অবস্থিত। ১৯৯৬ সালে এই সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এখানে প্রায় ১১ হাজার আমেরিকান এবং কোয়ালিশন সার্ভিস সদস্য রয়েছেন। ২৪ হেক্টর (৬০ একর) এলাকাজুড়ে বিস্তৃত সামরিক স্থাপনাটিতে প্রায় ১০০টি বিমানের পাশাপাশি অত্যাধুনিক ড্রোনও রয়েছে। ৯/১১ হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর মার্কিন সামরিক বাহিনী ইরাকে হামলা চালায়। তার নেতৃত্বাধীন জোটটি তৎকালীন আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে ৯/১১ হামলার দায় স্বীকারকারী আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তোলে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটির কস্টস অব ওয়ার প্রকল্পের তথ্য অনুসারে, এই যুদ্ধে আনুমানিক ২ লাখ ৪১ হাজার মানুষ মারা যায়। এ ছাড়াও আরও কয়েক হাজার মানুষ (যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক লোক) ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে ক্ষুধা, রোগ এবং বোমার আঘাতে মারা যায়। এরপর ২০০৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরাক আক্রমণ করেছিল। ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগ তোলে আমেরিকা। যদিও এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। ২০০৭ সালে দেশটিতে ১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান নেয়। বর্তমানে ইরাকি সরকারের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তির অংশ হিসেবে দেশটিতে প্রায় ২ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতের প্রায় ১৩ হাজার সৈন্য রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদেশ সিরিয়ায় আসাদ বিরোধী বিদ্রোহীদের সাহায্যে ২ হাজার হাজারের বেশি মার্কিন সেনা তৎপর আছে। সৌদি আরবে রয়েছে ৩ হাজার, দ্বীপরাষ্ট্র বাহরাইনে রয়েছে ৭ হাজার মার্কিন সৈন্য।

আফ্রিকা অঞ্চল

আফ্রিকায় কোনো যুদ্ধ করছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তথাপি আফ্রিকা মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশেই রয়েছে আমেরিকার সামরিক উপস্থিতি। নেভি সিলস গ্রিন বিরেটস এবং আরও বেশ কয়েকটি বিশেষ বাহিনী অন্তত ২০টি আফ্রিকান দেশে অবস্থান করছে। ১ হাজার সামরিক ঠিকাদারসহ প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা মোতায়েন রয়েছে আফ্রিকায়। সাম্প্রতিককালের নাইজার অভ্যুত্থানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রায় ১ হাজার ১০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। লিবিয়া, সোমালিয়া, নাইজেরিয়াসহ অনেক দেশেই মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ও সৈন্য রয়েছে। এ ছাড়াও আলজেরিয়া, বুরুন্ডি, শাদ, কঙ্গো, জিবুতি, মিসর, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সুদান, দক্ষিণ সুদান, তিউনিশিয়া ও উগান্ডার মতো দেশগুলোতেও মার্কিন বাহিনীর সেনা সদস্যরা কাজ করছে।

দূর প্রাচ্য

দূর প্রাচ্যের দেশ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ঘাঁটি। এ অঞ্চলে চীন ও তার মিত্র উত্তর কোরিয়ার প্রভাব ঠেকাতে বৃহৎ সামরিক প্রস্তুতি গড়ে তুলেছে আমেরিকা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-১৯৪৫) শেষ হওয়ার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানে তাদের সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে। আর কোরিয়ান যুদ্ধের (১৯৫০-১৯৫৩) পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটি স্থাপন করেছে আমেরিকা। বিদেশে মোতায়েন করা সমস্ত মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ৮০ হাজার ১০০ আমেরিকান কর্মী, ৫৩ হাজার ৭০০ মার্কিন সৈন্য জাপান এবং ২৬ হাজার ৪০০ মার্কিন সৈন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ক্যাম্প হামফ্রেসের হোস্ট অঞ্চলটির সবচেয়ে বড় বিদেশি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি, যা রাজধানী সিউল থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার (৪০ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত। জাপানের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোরীয় উপদ্বীপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে দুই পরাশক্তির মদদে। দক্ষিণ কোরিয়া আমেরিকার সহায়তা লাভ করে এবং উত্তর কোরিয়া চীন ও রাশিয়ার সাহায্যে লড়াই শুরু করে।

ল্যাটিন আমেরিকা

ল্যাটিন আমেরিকার অনেক দেশেই রয়েছে মার্কিন সেনারা। আমেরিকার চিরশত্রু কিউবা উপকূলের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত গুয়ানতানামো বে নৌঘাঁটি দেশটির সবচেয়ে পুরনো বিদেশি সামরিক ঘাঁটি। ১১৬ বর্গ কিলোমিটার (৪৫ বর্গমাইল) এলাকা বিস্তৃত সামরিক ঘাঁটিটি ১৯ শতকের শেষ থেকে আজ অবধি আমেরিকান নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই দ্বীপকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কিউবার মধ্যে সম্পর্ক চরমে ওঠে। যার শুরুটা হয়েছিল ১৮৯৮ সালে। যদিও ১৯০৩ সালে আমেরিকা স্থায়ীভাবে লিজ নেয়। এই দ্বীপটিতে ৭৩৩ মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। এ ছাড়া হন্ডুরাসের দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ৩৬৯ সেনা রয়েছে। কলাম্বিয়া, পানামা, নিকারাগুয়া, গুয়েতেমালা, ব্রাজিলেও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বিদ্যমান।

ওশেনিয়া ও অ্যান্টার্কটিকা

ওশেনিয়া মহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দুই দেশ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে রয়েছে মার্কিন ঘাঁটি ও সেনা উপস্থিতি। অস্ট্রেলিয়ায় মার্কিন নৌবাহিনীর একটি মাত্র ঘাঁটি রয়েছে। আর নিউজিল্যান্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সামরিক ঘাঁটি সক্রিয় রয়েছে। দেশগুলো যেন মার্কিন বলয় থেকে বের হতে না পারে সে জন্য সেখানকার রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যক্তিদের ওপর কড়া নজর রাখে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া পৃথিবীর দুর্গমতম, উচ্চতম, শীতলতম, শুষ্কতম তথা নির্জনতম জনমানবহীন মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা। নির্জন এই বরফের রাজ্য অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশেও তিনটি সামরিক গবেষণাগার স্থাপন করেছে পরাশক্তি আমেরিকা। ১৯৬২ সাল থেকে এই মহাদেশের বুকে কাজ করে চলেছে মার্কিন পরমাণু চুল্লি ম্যাকমার্ডো স্টেশন।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামরিক ঘাঁটি বসানোর চিন্তা পেন্টাগনের

ইন্দো-ওয়েস্ট প্যাসিফিক (ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর) নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কমতি নেই। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের জন্য সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের কথা ভাবছে বিশ্বের শীর্ষ এই পরাশক্তি। এ ছাড়াও এ অঞ্চলে নতুন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পাশাপাশি পুরনো ঘাঁটি নতুন জায়গায় সরিয়ে আনার কথাও ভাবা হচ্ছে। যদিও জটিল ভৌগোলিক গঠনের ইন্দো-প্যাসিফিকে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুব একটা সহজ নয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর অনেকে নিজ ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রকে ঘাঁটি স্থাপন করতে দিতে রাজি নয়। এ ক্ষেত্রে সংঘাত এড়িয়ে চলার বিষয়ে রয়েছে আঞ্চলিক ভূরাজনীতির জটিল হিসাব-নিকাশও। এ ছাড়াও রসদ-সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়টিও বড়। সামরিক ও ভূরাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ইন্দো-প্যাসিফিকে দক্ষিণ এশীয় পরিমণ্ডলে নৌঘাঁটি স্থাপনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক স্থান হলো বঙ্গোপসাগর বা সংলগ্ন এলাকা। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সামরিক ঘাঁটি করতে দেওয়ার মতো সহযোগী দেশ খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ বহরের (সারফেস শিপ) ৬০ শতাংশই ইন্দো-প্যাসিফিকে মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য সংলগ্ন আরব সাগর, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং বঙ্গোপসাগরে নিরাপদ স্থানের খোঁজে রয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী। ইউরেশিয়া টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ অঞ্চলে সামরিক ঘাঁটি বসাতে সামরিক ও কূটনৈতিক সব চ্যানেলকেই কাজে লাগানো হচ্ছে।


মার্কিন   সামরিক   আমেরিকা   ডলার   যুদ্ধ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: বিজেপির আসন বাড়ার পরীক্ষা হয়ে গেল

প্রকাশ: ১০:১৮ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

৪০০ পারের স্লোগান দিয়ে ভোট ময়দানে নামা বিজেপি আশা করেছিল দক্ষিণ ভারতে এবার গেরুয়া ঝড় উঠবে। সেই দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে ভোট শেষ হয়ে গেল আজ চতুর্থ দফায়। ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ুতে ভোট হয়েছে। কেরেলা, কর্নাটকেও মিটেছে ভোট-পর্ব। চতুর্থ দফায় অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় নির্বাচন। বিজেপির আশা, এই দুই রাজ্যেই আগেরবারের থেকে অনেক ভালো ফল করবে দল।

প্রথম তিন দফায় ভোটারদের মধ্যে সেভাবে উৎসাহ চোখে পড়েনি। তিন দফাতেই ভোটের হার কমেছে। ভোটের হার কমাটা বিজেপির জন্য মোটেই ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন বিভিন্ন মহল। গেরুয়া শিবিরের অন্দরেও গোবলয় নিয়ে উদ্বেগের আভাস রয়েছে। যদি উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান বা বিহারে আসন খোয়াতে হয়, তাহলে সেটা পুষিয়ে দেয়ার জন্য মূলত অন্ধ্র এবং তেলেঙ্গানাকে টার্গেট করছে গেরুয়া শিবির।

বিজেপির আশার উৎস প্রধানত অন্ধ্র প্রদেশ ও তেলেঙ্গানা। এই দুই রাজ্যের ৪২ আসনের ভোট আজ সোমবার হয়ে গেল। সেই সঙ্গে হলো অন্ধ্র প্রদেশের ১৭৫ বিধানসভা আসনেরও ভোট। লোকসভার গত দুটি ভোটে অন্ধ্র প্রদেশে বিজেপি একটি আসনেও জিততে পারেনি। তেলেঙ্গানায় পেয়েছিল ৪টি আসন। বিজেপির আশা, এবার দুই রাজ্য মিলিয়ে তারা জোট শরিকদের সঙ্গে নিয়ে ২২ থেকে ২৫টি আসন আদায় করে নেবে। তা হলে তারা তৃতীয়বার ক্ষমতা ধরে রাখার পথে এগিয়ে যাবে অনেকটাই।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য নিয়েও আশাবাদী বিজেপি। উত্তরবঙ্গের ঘাঁটি ছেড়ে ভোট এসেছে দক্ষিণবঙ্গে। এই দফায় ৮ আসনে ভোটের গতিপ্রকৃতি বুঝিয়ে দেবে, গতবার পাওয়া ১৮ আসন তারা এবার ধরে রাখতে পারবে কি না। ৮ আসনের নিরাপত্তা রক্ষায় নির্বাচন কমিশন তৎপর। প্রায় চার হাজার বুথ তাদের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর।

পাশের রাজ্য অন্ধ্রে আগের দুই নির্বাচনে খাতা খুলতে পারেনি গেরুয়া শিবির। তবে এবার টিডিপি (টিডিপি) এবং জন সেনার সঙ্গে জোট রয়েছে বিজেপির। ২৫ আসনের মধ্যে লোকসভায় বিজেপি লড়ছে ৬ আসন। জোটে ভর করে অন্ধ্রেও এবার একাধিক আসন পাওয়ার আশায় গেরুয়া শিবির। জোট হিসাবে সেরাজ্যেও অন্তত ১৫-১৭ আসন পাওয়ার আশা রয়েছে গেরুয়া শিবিরের।

উত্তরপ্রদেশে যে ১৩টি আসনে ভোট হচ্ছে, তার মধ্যে ১১টিতে গত বার বিজেপি জেতে। এবার সে রাজ্যে সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস জোট ভালো লড়াই দিচ্ছে বিজেপিকে। প্রথম তিন পর্বে মুসলিম, যাদব এবং জাঠ, রাজপুতদের একাংশ বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে বলেই দাবি বিরোধীদের। এই পর্বেও তেমন হলে চাপে পড়ে যাবে বিজেপি। মহারাষ্ট্র, বিহারেও এবার শক্তিশালী বিরোধী জোট বাধা হতে পারে বিজেপির জন্য। এই রাজ্যগুলিতে বিজেপির কিছু আসন ঘাটতি হবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। দক্ষিণের দুই রাজ্যে বাড়তি আসন পেয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করতে চায় গেরুয়া শিবির।

এই ৯৬ আসনের মধ্যে উনিশে এনডিএ জোট পায় ৪৯ আসন। বিজেপি একা পায় ৪২টি। ৪৭টি আসন ছিল বিরোধী শিবিরের দখলে। গেরুয়া শিবির সার্বিকভাবে এই পর্বেই স্ট্রাইক রেট বাড়ানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি দেখছে। সেটা মূলত তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে।


লোকসভা নির্বাচন   বিজেপি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মালয়েশিয়ায় বন্য হাতির আক্রমণে বাংলাদেশির মৃত্যু

প্রকাশ: ০৮:২২ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

মালয়েশিয়ার পোস ব্লাউয়ের কাম্পুং ওম শহরে বন্য হাতির আক্রমণে বাংলাদেশি এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। 

স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৫টার দিকে হাতির আক্রমণে ওই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

ব্লাউ কাম্পুং জেলার প্রধান পুলিশ সুপার সিক সিক চুন ফু এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, কাম্পুং ওম শহরে রোববার বিকেল ৫টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেছেন, নিহত বৃক্ষরোপণ কর্মীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। মো. নওশের আলী (২৯) নামের ওই কর্মী তার এক সহকর্মীকে নিয়ে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে হাতির আক্রমণের শিকার হন। 

সোমবার দেশটির পুলিশের এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে হাতির আক্রমণের সময় পালিয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ পাননি ওই ভুক্তভোগী। মরদেহের পাশেই হাতির পায়ে ছাপ পাওয়া গেছে।

পুলিশ সুপার সিক সিক চুন ফু বলেছেন, ওই ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য ওই ব্যক্তির মরদেহ গুয়া মুসাং হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আকস্মিক মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।


মালয়েশিয়া   বন্য হাতি   বাংলাদেশি   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: মহিষে চড়ে ভোট দিতে গেলেন যুবক, ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশ: ০৮:১১ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভোটাধিকার মানুষের অন্যতম রাজনৈতিক অধিকার। প্রথমবার ভোট দেওয়ার দিনটি মানুষের জীবনে স্মরণীয় একটি দিন বটে। তাই তো ভারতের এক যুবক তার প্রথম ভোটের দিনকে স্মরণীয় করতে মহিষের পিঠে চড়ে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে এলেন। এরই মধ্যে যুবকের এই কাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

ভারতের বিহার রাজ্যের উজিয়ারপুর এলাকার। ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, এক যুবক মহিষে চড়ে ভোট দিতে এসেছেন। কালো শার্ট, ধূসর রঙের প্যান্ট ও মাথায় পাগড়ি পরে আছেন তিনি। মহিষের মাথায়ও সবুজ রঙের কাপড় জড়ানো। তাকে এভাবে আসতে দেখে আশেপাশে লোকজন ভিড় করেছেন। অনেকে ছবি তুলছেন কিংবা ভিডিও করে রেখে দিচ্ছেন তার এই কাণ্ড। 

অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবক বলেন, প্রথমবার ভোট দিতে এসে এক ধরনের উদ্দীপনা কাজ করছে। আশা করি, নির্বাচনে যিনি জিতবেন, তিনি আমাদের গ্রামের দারিদ্র্য দূর করবেন, তরুণদের চাকরি ব্যবস্থা করবেন ও মুদ্রাস্ফীতি কমানোর চেষ্টা করবেন।

বিহারের সমস্তিপুর জেলার উজিয়ারপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ ভোটার। এই আসনে বিভিন্ন দলে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী হলেন বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। এবার জিতলে এই আসন থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করবেন তিনি। তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরজেডি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আলোক মেহতা।


লোকসভা নির্বাচন   ভোট   ভিডিও   ভাইরাল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: চতুর্থ দফায় পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা

প্রকাশ: ০৭:৪১ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে চলছে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। ভারতের লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করে সহিংসতা ও গণ্ডগোল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্ধ্রপ্রদেশে। পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে। 

অন্যদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশে তেলেগু দেশম পার্টি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। 

নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভারত জুড়েই একাধিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে ছিল কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী। এছাড়াও নির্বাচন কেন্দ্রিক যেকোনো অশান্তি রুখতে প্রস্তুত রাখা ছিল কুইক রেসপন্স টিম, ফ্লাইং স্কোয়াড, ভিডিও সার্ভেলেন্স টিম, স্ট্যাটিক সার্ভেলেন্স টিমের সদস্যরা। কিন্তু ঠেকানো গেলো না সহিংসতা। ঝরলো রক্ত, প্রাণ গেল। গণমাধ্যমের গাড়িও হামলার শিকার হয়েছে।

সোমবার চতুর্থ দফায় ১০টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জুড়ে ৯৬টি সংসদীয় আসনে ভোট নেওয়া হয়। এই কেন্দ্রগুলি হল- অন্ধ্রপ্রদেশের (২৫), তেলেঙ্গানা (১৭), উত্তরপ্রদেশ (১৩), মহারাষ্ট্র (১১), পশ্চিমবঙ্গ (৮), মধ্য প্রদেশ (৮), বিহার (৫), ঝাড়খন্ড (৪), ওড়িশা (৪) এবং  জম্মু-কাশ্মীর (১)। 

লোকসভার পাশাপাশি এদিন অন্ধপ্রদেশের ১৭৫ আসনে এবং উড়িষ্যার ২৮টি আসনে বিধানসভার ভোট নেওয়া হয়। 

গোটা ভারতে ভোট শুরু হয় স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় তা চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। কিন্তু ভোট শুরুর আগে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসাতায় প্রাণ যায় এক তৃণমূল কর্মীর। বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কেতুগ্রামের চেঁচুড়ি গ্রামে তাকে হত্যা করা হয়। রবিবার রাতে মিন্টু শেখ নামে ৪৫ বছর বয়সি ওই ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর পাশাপাশি বোমা মেরে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর মিন্টু শেখ যখন তার এক সঙ্গীকে নিয়ে বাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন, সে সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার বাইক আটকায়। তিনি বাইক থামাতেই তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। 

এদিন সকালের দিকে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের মন্তেশ্বর ব্লকের টুললা এলাকায় বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা। দিলীপ ঘোষের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে এক গ্রামবাসী। এ সময় দিলীপ ঘোষকে ঘিরে 'গো ব্যাক' স্লোগানও দেওয়া হয়। এই সংবাদসংগ্রহ করতে গিয়ে গণমাধ্যমের গাড়িও ভাংচুর করা হয়। বেলা গড়াতেই বিকেলে ফের দিলীপ ঘোষের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। বর্ধমান-উত্তর ২০৪ নম্বর বুথের দলীয় এজেন্টকে বের করে দেওয়ার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান দিলীপ ঘোষ। এই হামলায় আহত হন দিলীপ ঘোষের দুই নিরাপত্তারক্ষী। এর মধ্যে একজনের মাথা ফেটে রক্ত বেরোতে থাকে। নিরাপত্তা রক্ষীদের গাড়ি বহরেও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। 

দুর্গাপুর ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি কর্মীদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী ও এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। 

কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তেহট্টের রামজীবনপুরের কয়েকটি বুথে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ভোট দিতে আসার সময় বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাঁশ ও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমুলের দাবি এটা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। 

ভোট পরিদর্শনে গিয়ে গ্রামবাসীদের অভাব অভিযোগের মুখে পড়েন বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। 

বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের নানুর বিধানসভার অধীন আট গ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি বুথে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়া একাধিক জায়গা থেকেই ইভিএম বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটে, ফলে সেইসব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হতে দেরী হয় কিভাবে সেসব কেন্দ্রগুলিতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। 

দুর্গাপুরে তানসেন রোডের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের ক্যাম্প অফিস ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ তারা যখন মধ্যাহ্ন ভোজনের জন্য গিয়েছিলেন সেই সুযোগে বিজেপির বহিরাগতরা বাইক বাহিনী নিয়ে এসে তাদের নারী সদস্যদের উপর হামলা চালায় এবং ক্যাম্প অফিসে ভাঙচুর করে। এই ঘটনায় তৃণমূলের বেশ কয়েকজন মহিলা তৃণমূল কর্মী আহত হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি লেগে গেলে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় পুলিশ বাহিনী। 

এ দফায় ভারতে মোট ভোটার ছিল ১৭ কোটি ৭০ লাখ। ভাগ্য নির্ধারণ হয় মোট ১৭১৭ জন প্রার্থীর। হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং (বেগুসারাই), বিজেপি প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা (কুন্তী), সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব (কনৌজ), সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কংগ্রেস প্রার্থী অধীর রঞ্জন চৌধুরী (বহরমপুর), ওই কেন্দ্রেই তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সাবেক ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান, তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র (কৃষ্ণনগর), তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা (আসানসোল), তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী শতাব্দী রায় (বীরভূম), তৃণমূল নেত্রী সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ (বর্ধমান-দুর্গাপুর), ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রার্থী ওমর আব্দুল্লাহ (জম্মু-কাশ্মীর), অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েসি (হায়দরাবাদ)। 

ভোটের পরবর্তী ধাপে পঞ্চম দফা ২০ মে, ষষ্ঠ দফা ২৬ মে এবং সপ্তম ও শেষ দফার ভোট ১ জুন। গণনা আগামী ৪ জুন।


লোকসভা নির্বাচন   চতুর্থ দফা. পশ্চিমবঙ্গ   সহিংসতা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাফা ছেড়ে পালালেন ৩ লাখ ফিলিস্তিনি

প্রকাশ: ০৬:৫২ পিএম, ১৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখন বাকি রয়েছে অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটির রাফা শহর। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরেই ইতোমধ্যেই হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।

আর এরই জেরে শহরটি ছেড়ে ইতোমধ্যেই পালিয়ে গেছেন ৩ লাখ মানুষ। জাতিসংঘ এই তথ্য সামনে এনেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার অন্যান্য অংশ থেকে এসব মানুষ এখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

রোববার (১২ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৩ লাখ মানুষ গত সপ্তাহে রাফা থেকে পালিয়ে গেছে বলে গাজায় ফিলিস্তিনিদের সাহায্যকারী জাতিসংঘের প্রধান সংস্থা রোববার জানিয়েছে। ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে বাঁচতে গাজা উপত্যকার দক্ষিণ প্রান্তের এই শহরটি গত সাত মাস ধরে ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের কাছে আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।

ইসরায়েলি সরকার রাফা এবং গাজার অন্যত্র নতুন স্থানান্তর আদেশ জারি করার কয়েক ঘণ্টা পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘোষণা দেয় ইউএনআরডব্লিউএ নামে পরিচিত জাতিসংঘের সংস্থা। আন্তর্জাতিক সতর্কতা সত্ত্বেও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শহরটিতে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গত কয়েকদিনে আশঙ্কা আরও গভীর হয়েছে।


রাফা   ফিলিস্তিন   জাতিসংঘ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন