কট্টর রিপাবলিকানরা নতুন করে তুমুল সমালোচনা শুরু করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্য ইলহান ওমরের বিরুদ্ধে। তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারেরও দাবি তুলেছেন তাঁরা।
মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের আইনপ্রণেতা ইলহানের বিরুদ্ধে এবার সমালোচনা করা হচ্ছে তাঁর দেওয়া একটি বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে। সোমালি–আমেরিকানদের উদ্দেশে সম্প্রতি এ বক্তৃতা দিয়েছিলেন তিনি।
ইলহানের বক্তৃতা বিশ্লেষণ করেছে দুটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যম। এই বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যেসব শব্দ উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, তা ভুলভাবে অনুবাদ করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।
মার্কিন কংগ্রেসের মুসলিম এই সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইলহান তাঁর বক্তৃতায় সোমালি ভাষায় বলেছেন, তিনি মার্কিন স্বার্থের চেয়ে বিদেশি স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেবেন।
তবে একাধিক সংবাদমাধ্যম ইলহানের বক্তৃতার ভাইরাল হওয়া অনুবাদে বড় ধরনের ত্রুটি থাকার কথা বলেছে। ইলহানের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে তারা।
তবে সংবাদমাধ্যমগুলো ত্রুটির কথা বললেও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মার্জোরি টেইলর গ্রিনকে তা থামিয়ে রাখতে পারেনি। গ্রিন গত বৃহস্পতিবার ইলহানের নিন্দায় প্রতিনিধি পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।
ইলহান মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম সোমালি-আমেরিকান আইনপ্রণেতা, প্রথম সাবেক আফ্রিকান শরণার্থী। বাইরের একটি দেশের হয়ে বিদেশি এজেন্ট হিসেবে ইলহানের বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন গ্রিন। আপাতদৃষ্টে গ্রিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইলহানকে ‘সোমালি’ প্রতিনিধি হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ইলহানের ব্যাপারে ইতিমধ্যে নৈতিকতা-সংক্রান্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান পার্টির হুইপ টম এমমার। তাঁর এমন দাবির পরদিনই ইলহানের বিষয়ে প্রতিনিধি পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব তোলা হয়।
ফ্লোরিডার গভর্নর ও রিপাবলিকান পার্টির প্রাথমিক বাছাইয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রন ডিস্যান্টিস যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইলহানকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছেন।
ইলহান তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ নাকচ করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর জাতি ও ধর্মীয় পরিচয়কে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে রিপাবলিকানরা তাঁকে আক্রমণের চেষ্টা করছেন।
মিনেসোটা স্টার ট্রিবিউনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইলহান তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগকে মিথ্যা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তাঁর প্রতি এই আক্রমণের মূলে রয়েছে বিদেশিদের ব্যাপারে অহেতুক ভীতি ও ইসলামভীতি।
ইলহান বলেছেন, সম্পূর্ণভাবে প্রেক্ষাপটের বাইরে গিয়ে একটি ভুল অনুবাদের ওপর ভিত্তি করে এই বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে।
সমালোচকেরাও এই বিতর্ককে ‘স্কোয়াড’ নামে পরিচিত প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের আক্রমণের সবশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। ইলহান প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাট হিসেবে পরিচিত।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইলহানকে এক ভোটের ব্যবধানে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়। তখন তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছিল, তার মধ্যে আছে—তিনি ইহুদিবিরোধী ও ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্য দিয়েছিলেন। সে সময় ইলহান বলেছিলেন, আফ্রিকান মুসলিম নারী পরিচয়ের কারণে তাঁকে নিশানা করা হচ্ছে।
গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ ইসরায়েলবিরোধী মন্তব্যের জন্য নিম্নকক্ষের সদস্য রাশিদা তালিবের নিন্দার পক্ষে ভোট দেয়। তালিব তাঁর মন্তব্যে অটল থাকেন। ইহুদিবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে তাঁর সমালোচনা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে সোমালি বংশোদ্ভূত মার্কিনদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছিলেন ইলহান। তাঁর এ বক্তব্য নিরপেক্ষভাবে অনুবাদ করে মিনেসোটার মিনিয়াপোলিস-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার ট্রিবিউন ও মিনেসোটা রিফর্মার। উভয় সংবাদমাধ্যম দেখতে পায়, যে কথা রিপাবলিকানদের মধ্যে ক্ষোভ জাগিয়েছে, সে কথা প্রকৃতপক্ষে ইলহান বলেননি।
ইলহানের বক্তব্যের ত্রুটিপূর্ণ অনুবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে লেখা হয়েছে, তিনি বলেছেন: ‘মার্কিন সরকার শুধু তা-ই করবে, যা যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সোমালিয়ানরা তাদের করতে বলবে। আমরা যা চাই, তারা তা–ই করবে, অন্য কিছু নয়। তাদের অবশ্যই আমাদের আদেশ অনুসরণ করতে হবে এবং এভাবেই আমরা সোমালিয়ার স্বার্থ রক্ষা করব...আমরা একসঙ্গে সোমালিয়ার স্বার্থ রক্ষা করব।’
স্টার ট্রিবিউনের যাচাই বলছে, সঠিক অনুবাদ অনুযায়ী, ইলহান একটি ভিন্ন বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে সোমালি–আমেরিকান নাগরিক সম্পৃক্ততায় উৎসাহিত করেছিলেন।
ইলহান প্রকৃতপক্ষে বলেছিলেন, ‘আমার জবাব হলো, মার্কিন সরকার তা করবে, যা আমরা মার্কিন সরকারকে করতে বলব। সোমালি হিসেবে আমাদের নিজেদের ওপর সেই আস্থা থাকা উচিত। আমরা এই দেশে বাস করি। আমরা এ দেশে কর দিই। এটি এমন একটি দেশ, যেখানে আপনাদের নিজেদের একজন কংগ্রেসে বসেন...আপনারা যে নারীকে কংগ্রেসে পাঠিয়েছেন, তিনি আপনাদের সম্পর্কে সচেতন ও আপনাদের মতোই একই বিষয়ে তাঁর আগ্রহ আছে।’
স্টার ট্রিবিউনের তথ্যমতে, ইথিওপিয়া ও স্বশাসিত সোমালিল্যান্ডের মধ্যকার একটি নতুন চুক্তি নিয়ে নিজ এলাকার মানুষের উদ্বেগের বিষয়ে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন, তা বক্তৃতায় বর্ণনা করেছিলেন ইলহান।
সোমালিল্যান্ডকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে সোমালিয়া। নতুন চুক্তি অনুযায়ী, সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখার একটি অংশ ইথিওপিয়াকে ইজারা দেওয়া হবে। এই চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করে আসছে সোমালিয়া।
পর্যবেক্ষকেরা উল্লেখ করেছেন, ইলহান তাঁর বক্তব্যে দীর্ঘদিনের মার্কিন নীতির সমর্থনেও কথা বলেছিলেন।
সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে কিছুটা সম্পর্ক বজায় রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তারা সোমালিল্যান্ডের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয় না। স্থলবেষ্টিত ইথিওপিয়ার সঙ্গে সোমালিল্যান্ডের একতরফা চুক্তির বিষয়টিকেও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের সমালোচনা করেছেন সোমালিল্যান্ডের কর্মকর্তারা।
ইলহান সোমালিয়ার পক্ষে কাজ করছেন কিংবা তিনি তাঁর মার্কিন আইনপ্রণেতার দায়িত্ব-কর্তব্যের চেয়ে সোমালি শিকড়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে যে ধারণা রিপাবলিকানরা দিচ্ছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ডেমোক্র্যাটরা।
ইলহানের বক্তব্যের নিন্দার জন্য গ্রিনের নেওয়া পদক্ষেপকে ‘অর্থহীন’ বলে বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছেন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেটিক নেতা হাকিম জেফ্রিস। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য আরও বিভক্তি, উত্তেজনা ও তিরস্কারের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া।
মন্তব্য করুন
অরবিন্দ কেজরিওয়াল লোকসভা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ভারতের
নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে রাশিয়া। তবে
মস্কোর সেই অভিযোগকে উড়িয়ে দিল ওয়াশিংটন।
মার্কিন
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার নিয়মিত প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের প্রশ্নের
জবাবে বলেন, আমরা ভারতীয় নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপ করছি না। এমনকি আমরা পৃথিবীর কোনো
নির্বাচনেই হস্তক্ষেপ করি না।
এর
আগে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করে, ভারতে অনুষ্ঠিত লোকসভা নির্বাচনকে অস্থিতিশীল
করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ফেডারেল কমিশনের রিপোর্টে ধর্মীয় স্বাধীনতা
লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ভারতের সমালোচনা করার পর ওয়াশিংটেনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে
মস্কো।
রাশিয়ার
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা মার্কিন অভিযোগকে দেশ ও রাষ্ট্র
হিসেবে ভারতের প্রতি ‘অসম্মানজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
ভারতীয় নির্বাচন মার্কিন রাশিয়া
মন্তব্য করুন
রাশিয়ার
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মিখাইল মিশুস্তিনের নাম প্রস্তাব করেছেন
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (১০ মে) প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে পুতিন তার নাম প্রস্তাব
করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির
সংসদের নিম্নকক্ষের স্পিকার। খবর রয়টার্সের।
মিখাইল মিশুস্তিন এর আগেও পুতিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবার নতুনভাবে ক্ষমতায় এসে এই মিশুস্তিনকেই সরকার প্রধানের দায়িত্ব দিতে চলেছেন পুতিন।
এর আগে মিশুস্তিন রাশিয়ার কর বিভাগের প্রধান হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। ৫৮ বছর বয়সী মিশুস্তিন ১৯৯৯ সাল থেকে আমলা হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। তিনি ২০১০ সাল থেকে ফেডারেল ট্যাক্স সার্ভিসের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার
আগে গত মঙ্গলবার পঞ্চমবারের
মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন
পুতিন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার
দিকে মস্কোর গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসের সুসজ্জিত সেইন্ট অ্যান্ড্রিউ হলে শপথ নেন
তিনি। রাশিয়ার সরকারি-বেসরকারি সকল টেলিভিশন চ্যানেল
সরাসরি এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান
সম্প্রচার করা হয়। গত
মার্চে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৮৭ শতাংশ ভোট
পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন পুতিন।
মঙ্গলবারের শপথ গ্রহণের মধ্যে
দিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি।
রাশিয়া প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন
মন্তব্য করুন
গাজার রাফাহয় সেনা অভিযান চালালে ইসরায়েলকে অস্ত্র দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এমন ঘোষণা দেয়ার পর আরও বেঁকে বসেছেন ইসরায়েলি
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এবার নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, ইসরায়েল একাই
লড়বে।
এই ইসরায়েলি কট্টরপন্থী নেতা বলেছেন, ‘যদি আমাদের দরকার পড়ে...
আমরা একাই লড়বো। আমি বলছি যদি প্রয়োজন হয় আমরা আমাদের হাতের আঙুলের (অস্ত্রের বদলে)
নখ দিয়েই লড়াই
করবো।’
এরইমধ্যে ইসরায়েলকে বোমা সরবরাহ করা বন্ধ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে
নেতানিয়াহু ১৯৪৮ সালের প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন চোখ রাঙানি গায়েই মাখেননি।
তিনি বলেছেন, ‘৭৬ বছর আগের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমরা ছিলাম কয়েকজন,
বিপক্ষে ছিলো অনেকেই।’ ‘আমাদের অস্ত্র ছিলো না। ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ছিলো।
তবে আমাদের মধ্যে চরম উদ্যম, নায়কত্ব ও একতা ছিলো। আমরা জয়ী হয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেছেন, মার্কিন অস্ত্রের চেয়েও বেশি কিছু করার ক্ষমতা
ইসরায়েলিদের নখের আছে!
যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহু ইসরায়ল গাজা
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ইসরায়েলি আগ্রাসন। সেই আগ্রাসন বন্ধে যুদ্ধবিরতির আলোচনা কোনও ধরনের চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনী রাফা অঞ্চলে নতুন করে বোমাবর্ষণ শুরু করেছে।
চুক্তি
ছাড়াই যুদ্ধবিরতি আলোচনা শেষ হওয়ায় ইসরায়েল
রাফাতে হামলা চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানিয়েছে। শুক্রবার
(১০ মে) এক প্রতিবেদনে
এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা
রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী বৃহস্পতিবার রাফা অঞ্চলে বোমাবর্ষণ করেছে বলে ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাফাতে হামলা করলে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার যে হুমকি প্রেসিডেন্ট বাইডেন দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু এক ভিডিও বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যদি আমাদের প্রয়োজন হয়, আমরা আমাদের নখ দিয়ে লড়াই করব। কিন্তু আমাদের নখের চেয়ে অনেক বেশি আছে।’ অন্যদিকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এবং ইসলামিক জিহাদ বলেছে, তাদের যোদ্ধারা শহরের পূর্ব উপকণ্ঠে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলোতে ট্যাংক-বিধ্বংসী রকেট এবং মর্টার নিক্ষেপ করেছে।
গাজার
সবচেয়ে বড় শহুরে এলাকা
রাফা। রাফা শহরের সাবরা
এলাকায় দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি
বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ
অন্তত ১২ জন নিহত
হয়েছেন।
ইসরায়েল বলেছে, হামাস যোদ্ধারা রাফাতে লুকিয়ে আছে। মূলত ইসরায়েলের আগ্রাসনের কারণে লাখ লাখ গাজাবাসী বর্তমানে রাফাতে আশ্রয় নিয়েছেন। গত সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে গাজা ভূখণ্ডের বেশিরভাগ অংশই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইসরায়েল রাফাতে পূর্ণাঙ্গ অভিযান চালাবে না বলে তারা আশা করে। এই ধরনের কোনও অভিযান হামাসকে পরাজিত করার বিষয়ে ইসরায়েলের লক্ষ্য পূরণের জন্য ভালো হবে বলেও তারা বিশ্বাস করে না।
মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘(প্রেসিডেন্ট বাইডেনের) দৃষ্টিতে রাফাতে কোনও ধরনের আঘাত করা ইসরায়েলের সেই উদ্দেশ্যকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে না।
কিরবি
বলেন, ইসরায়েলের মাধ্যমে হামাসকে উল্লেখযোগ্যভাবে চাপ দেওয়া হয়েছে
এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি
থাকায় সেখানে অভিযান চালানোর চেয়ে গোষ্ঠীর নেতৃত্বের অবশিষ্টাংশ খুঁজে বের করার জন্য
আরও ভালো বিকল্প পন্থা
রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি এই আক্রমণের ফলে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে প্রায় ৩৫ হাজার লোক নিহত এবং আরও প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
এছাড়া আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এই আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন এক রায়ে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা করছে। সেসময় ওই রায়ে ইসরায়েলকে এই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন