ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারত মহাসাগরের সমীকরণ পাল্টে দেবে মালদ্বীপ?

প্রকাশ: ০৯:২০ এএম, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রে এখন ভারত-চীন-মালদ্বীপ সম্পর্ক। ভারত মহাসাগরের একেবারে কেন্দ্রে থাকা মালদ্বীপে দুই দেশের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা বহু আগে থেকেই। দেশটিতে ক্ষমতায় কে থাকছেন, তার ওপর নির্ভর করে চীন-ভারতের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে মালেতে নির্বাচনী ডামাডোল শুরুর পর থেকেই পুরো সময়টা নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের নজর ছিল; দেশটির নির্বাচনে কে আসছেন ক্ষমতায়? মালদ্বীপের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, এখানে বেশিরভাগ সময়ই ভারতপন্থি সরকার ছিল। চীনপন্থি সরকার ছিল মাত্র দুবার। এবারের নির্বাচনেও প্রেসিডেন্ট হয়েছেন চীনপন্থি মুইজ্জু। আর মুইজ্জু আসা মাত্রই মালদ্বীপ ঘিরে দুই দেশের রাজনীতির পালে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে।
কারণ, মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পরই মালদ্বীপের ‘বড় দাদা’ হিসেবে পরিচিত ভারতের সঙ্গে চলছে সম্পর্কের টানাপোড়েন। আর এই সুযোগে মালের কাছাকাছি আসতে শুরু করেছে বেইজিং। ‘ইন্ডিয়া আউট, চাইনা ইন’- মালদ্বীপের সাম্প্রতিক এই রাজনৈতিক পরিবর্তনে চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে ভারত মহাসাগরের ভূরাজনৈতিক ইস্যু।  
 
বিশেষ করে, এই সাগর ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার দুই শক্তিশালী দেশ ভারত ও চীনের ভূরাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কেননা, ভারত মহাসাগরে মালদ্বীপের কৌশলগত গুরুত্ব অনেক। যে কারণে ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রটি চীন-ভারত দুই দেশেরই আগ্রহের ক্ষেত্র। এমনকি বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রেরও।

মালদ্বীপের প্রতি চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের অন্যতম কারণ হলো ভারত মহাসাগরে এর ভূকৌশলগত অবস্থান। ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রটি সমুদ্রপথের মাধ্যমে পূর্ব এশিয়াকে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। ভারত মহাসাগরে মালদ্বীপ আন্তর্জাতিক শিপিং লেন এবং সি লাইন অব কমিউনিকেশন এর গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলে অবস্থিত। যার মাধ্যমে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ তেল এবং এর অর্ধেক কন্টেইনার পরিবহন করা হয়।  
 
‘সি লাইন অব কমিউনিকেশন’ বলতে গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বাণিজ্য রুটগুলোকে বোঝায়। যেখান দিয়ে বিপুল পরিমাণ পণ্য পরিবহন হয়। ভারত মহাসাগরকে বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান মহাসড়ক হিসেবে দেখা হয়। মালদ্বীপ ভৌগোলিকভাবে পশ্চিম ভারত মহাসাগরের এডেন উপসাগর ও হরমুজ প্রণালী এবং পূর্ব ভারত মহাসাগরের মালাক্কা প্রণালীর মধ্যে ‘টোল গেট’ হিসেবে কাজ করে। ভারত মহাসাগরে মালদ্বীপের এই কৌশলগত সামুদ্রিক অবস্থানই দেশটিকে চীন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
 
মালদ্বীপ এবং ভারতের স্বার্থ
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-মালদ্বীপ মিত্রদেশ হিসেবেই পরিচিত। ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে মাত্র ৩০০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে মালদ্বীপ। আর ভারতের লাক্ষাদ্বীপ থেকে মাত্র ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে। ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে নৃতাত্ত্বিক, ভাষাতাত্ত্বিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।  
 
১৯৬৫ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ভারতই প্রথম মালদ্বীপকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭২ সালে মালেতে দূতাবাস স্থাপন করে। মালদ্বীপ কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মালদ্বীপ যেহেতু পশ্চিম ভারত মহাসাগরের দুটি চোকপয়েন্ট এবং পূর্ব ভারত মহাসাগরের মালাক্কা প্রণালীর মধ্যে ‘টোল গেট’ হিসেবে কাজ করে, তাই গুরুত্বপূর্ণ এই সামুদ্রিক বাণিজ্য রুট দিয়ে ভারতের বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ৫০ শতাংশ এবং জ্বালানি আমদানির ৮০ শতাংশ পরিবহন হয়ে থাকে।  

নির্বিঘ্নে বাণিজ্য পরিচালনার জন্য মহাসাগরে নিরাপত্তা অত্যন্ত জরুরি। এ জন্যই মালদ্বীপকে নিজের বলয়ে রেখে এই পথে নিশ্চিন্তে বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারছে ভারত। তাছাড়া, নিজেদের স্বার্থেই দেশটির সঙ্গে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারও করেছে নয়াদিল্লি। এরচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভারত মহাসাগরে চীনা আধিপত্য ঠেকাতে মালদ্বীপকে ভারতের অন্যতম ‘হাতিয়ার’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
 
মালদ্বীপ এবং চীনের স্বার্থ

নয়াদিল্লির মতো ভারত মহাসাগরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে জোর দিয়েছে বেইজিংও। চীনের জন্য ভারত মহাসাগরের গুরুত্ব অনেক। জ্বালানি তেলের জন্য চীন ভারত মহাসাগরের সি লাইনস অব কমিউনিকেশনের ওপর নির্ভরশীল। জ্বালানি সম্পদ আমদানি নিশ্চিত করতে চীন দুটি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ‘মুক্তার মালা’ (String of Pearls) এবং ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ হচ্ছে চীনের সেই পরিকল্পনার অংশ।  
 
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নৌবাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর পাশাপাশি আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে কাজ করছে চীন। যে কারণে চীন তার মুক্তার মালায় মরিশাস, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোকে যুক্ত করছে। মালদ্বীপের ক্ষেত্রেও তাই।
 
মালদ্বীপে চীনের উপস্থিতি প্রকাশ্যে আসে ২০০৯ সালের পর থেকে। এরপর ২০১১ সালে মালদ্বীপে দূতাবাস খোলে বেইজিং। সেসময় মালদ্বীপের রাজনীতিতে চলছিল অস্থিতিশীলতা। ২০১২ সালে গণবিক্ষোভের মুখে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ নাশিদ পদত্যাগ করলে ২০১৩ সালে মালদ্বীপে ইয়ামিন আব্দুল গাইয়ুম ক্ষমতায় আসেন। এরপর নয়াদিল্লি ও মালের দূরত্ব তৈরি হয়। ঠিক সেই সুযোগটি কাজে লাগায় চীন। মালদ্বীপে চীনের বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ বাড়তে থাকে।  
 
মহাপ্রাচীরের দেশটি যখন আন্তঃমহাদেশীয় বাণিজ্য বাড়াতে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ কর্মসূচি হাতে নেয়, তখন বেইজিংয়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে মালদ্বীপ। মালদ্বীপের পাশ দিয়ে চীনের সঙ্গে ইউরোপ ও আফ্রিকার জাহাজ-যোগাযোগের প্রাচীন সমুদ্রপথটি তখন ‘গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ’ হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে।  

মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে সাগরপথে চীন যে পরিমাণ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে তার প্রায় ৬২ শতাংশ পরিবহন করা হয় মালদ্বীপের পাশ দিয়ে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে সঙ্গে  ভারত সাগর ও মালদ্বীপে ভারতের প্রভাব ঠেকাতে মালেকে কাছে টানা বেইজিংয়ের জন্যও গুরুত্বের। তাই, ইয়ামিন আব্দুলও মালের উন্নয়নে চীন থেকে কোটি কোটি ডলার অনুদান ও ঋণ পেতে শুরু করেন।  
 
২০১৬ সালে চীনের দেয়া ৮০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে মালদ্বীপের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করা হয়। রাজধানী মালের কাছে হুলহুমালে দ্বীপ কৃত্রিমভাবে সম্প্রসারিত করে সরকারি আবাসন প্রকল্পের অধীনে বহু অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করা হয়। আর সবচেয়ে আলোচিত হয়ে উঠে ‘চীন-মালদ্বীপ মৈত্রী সেতু’। চীনের দেয়া প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার খরচ করা হয় এই সেতু তৈরিতে। সম্প্রতি, মুইজ্জুর বেইজিংয়ের দিকে ঝুঁকে পড়াকে গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক সফলতা হিসেবেও দেখছেন অনেকে।
 
মালদ্বীপ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এশিয়ার ছোট দেশটি ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রেরও স্বার্থ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মালদ্বীপের দূরত্ব প্রায় ৯ হাজার ৫৫৭ মাইল। প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে মালদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থটা কী? সেই ভারত মহাসাগরই।  
 
ভারত মহাসাগরে মালদ্বীপের ভৌগোলিক অবস্থান এবং দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ ও সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এই দিয়েগো গার্সিয়া থেকে নৈকট্যের কারণে ক্ষুদ্র এই দেশটিও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অনেক কিছু। ভারত মহাসাগরে চীনের প্রভাব ঠেকাতে মালদ্বীপকে হাতে রাখা প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রেরও।  
 
মালদ্বীপের কৌশলগত গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করে। এটা ছিল ভারতের বাইরে কোনো দেশের সঙ্গে মালদ্বীপের প্রথম প্রতিরক্ষা চুক্তি। ২০২০ সালে মালদ্বীপ সফরে গিয়ে সেখানে মার্কিন দূতাবাস খেলার ঘোষণা দেন তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।  
 
মালদ্বীপ ইন্দো প্যাসিফিকের অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়ায় দেশটির রাজনৈতিক পরিবেশ ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার জন্য আগ্রহের। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মুইজ্জুর ‘চীনপ্রীতি’ পাল্টে দিতে পারে এই অঞ্চলের সমীকরণ।




ভারত মহাসাগর   মালদ্বীপ   চীন   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কেনিয়ায় বন্যা, প্রাণহানি বেড়ে ২২৮

প্রকাশ: ০৬:৫০ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ২২৮ জনে পৌঁছেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে গত কয়েকদিনে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটেছে বলে রোববার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাতে কেনিয়াজুড়ে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। দেশটিতে মে মাসে আরও খারাপ আবহাওয়া পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এক বিবৃতিতে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বন্যায় আরও নিচু, নদী তীরবর্তী এলাকা ও শহরাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ সময় খাড়া ঢালু, উঁচু পাহাড় ও গিরিখাত এলাকায় ভূমিধস অথবা কাদা ধস ঘটতে পারে।

বন্যায় পূর্ব আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটিতে অনেক বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, সেতু এবং অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈরী আবহাওয়ায় আরও কমপক্ষে ১৬৪ জন আহত ও ২ লাখ ১৩ হাজার ৬৩০ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।


কেনিয়া   বন্যা   প্রাণহানি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউক্রেনের কয়েক অঞ্চলে রাশিয়ার হামলা

প্রকাশ: ০৬:৩৪ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ইউক্রেনের খারকিভ ও দিনপ্রো ও ওডিশায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ হামলা দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং একটি খাদ্য কারখানায় আগুন ধরে যায়। তাছাড়া বেশ কিছু বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনের পাশাপাশি অন্যান্য অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, হামলায় বিভিন্ন ধরনের আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ৭০টি গাইডেড এরিয়াল বোম ব্যবহার করা হয়েছে।

এর আগে ইউক্রেনের এয়ার ফোর্স খারকিভ ও দিনপ্রো লক্ষ্য করে ছোড়া ১৩টি শাহেদ ড্রোন ভূপাতিত করে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের জন্য সহায়তা বিল পাস হয়েছে মার্কিন সিনেটে। এরপরই কিয়েভের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া।


ইউক্রেন   রাশিয়া   হামলা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নিউইয়র্কে বাংলাদেশি হত্যার ভিডিও প্রকাশ

প্রকাশ: ০৬:২০ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

নিউইয়র্কে নিজ বাড়ির রান্নাঘরে বাংলাদেশি উইন রোজারিও (১৯) নামের বাংলাদেশি তরুণকে দুই পুলিশ গুলি করে হত্যা করার ৩৬ দিন পর ৩ মে পুলিশের বডি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ করেছেন নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল (এজি) লেটিশা জেমস। 

সেই ভিডিও ফুটেজ দেখার পর ডুকরে কাঁদতে কাঁদতে উইনের মা নট্যান আভা কোস্টা, বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও এবং ছোটভাই উৎস রোজারিও বলেছেন, ‘প্রতিটি দিনক্ষণ আমরা উইনের অনুপস্থিতি গভীর বেদনার সঙ্গে অনুভব করছি। এমন নিদারুন কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছি না। এ অবস্থায় আমরা আশা করছি সেই ফুটেজ জনসমক্ষে প্রকাশের কোনো প্রয়োজন নেই। ফুটেজ স্পষ্ট করেছে যে, উইনের বেঁচে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু পুলিশ এসে তাকে হত্যা করেছে। আমাদের এবং উইনের সুরক্ষার পরিবর্তে পুলিশ অফিসাররা উইনকে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় গুলি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। তাই আমরা চাচ্ছি সেই দুই পুলিশ অফিসারকে বরখাস্ত করে যত দ্রুত সম্ভব তাদের বিচারে সোপর্দ করা হোক।’  

উল্লেখ্য, উইন রোজারিও ছিল মানসিক রোগী। গত ২৭ মার্চ দুপুরে নিউইয়র্ক সিটির ওজোনপার্কে তার মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করলে ৯১১-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাওয়া হয়। নিউইয়র্ক পুলিশের দুই অফিসার বাসায় এসে উইনকে নিবৃত্ত করার চেষ্টার একপর্যায়ে টেজার (এক ধরনের অস্ত্র, যা বিদ্ধ করে উত্তেজিত/অবাধ্য লোকদের নিস্তেজ করা যায়) ছোঁড়া হয়। সে সময়ে উইনের মা উইনকে জড়িয়ে ধরে পুলিশের প্রতি আকুতি জানাচ্ছিলেন গুলি না করার জন্য। তবুও পুলিশ সাড়া দেওয়ার পরিবর্তে উপর্যুপরি টেজার ছোড়ার আতঙ্কে মানসিক বিকারগ্রস্ত উইন চেয়ারের ওপরে রাখা মাছ/মাংস কাটার কেঁচি হাতে নিয়ে পুলিশের প্রতি ধেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেই উভয় অফিসার কয়েক রাউন্ড গুলিতে উইনকে ধরাশায়ী করেন। ফুটেজে তা স্পষ্ট হয়েছে। 

ফুটেজ দেখে সুস্থ মস্তিষ্কের অনেকেই বলছেন যে, টেজার ছোড়ার পর উইনকে গুলি করার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু পুলিশ অফিসারদ্বয় সে চেষ্টা করেননি। উইন হত্যাকান্ডের পর থেকেই পরিবার এবং কমিউনিটির পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছিল বডি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশের জন্য। কিন্তু নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট তা আমলে না নেওয়ায় স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল তা প্রকাশ করল। 

নিউইয়র্ক   বাংলাদেশি হত্যা   উইন রোজারিও  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লেবার পার্টির কাউন্সিলর হলেন 'কাল মার্কস'

প্রকাশ: ০৫:৪৯ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

স্টকপোর্টের আসনে লেবার পার্টির কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন 'কাল মার্কস'। এই রাজনীতিবীদের পুরো নাম কার্ল পিটার মার্ক্স ওয়ার্ডলো। 

বৃহস্পতিবার (০২ মে) যুক্তরাজ্যের স্থানীয় নির্বাচনে ব্রিনিংটন ও স্টকপোর্ট অঞ্চলের প্রতিনিধি নির্বাচিত হন তিনি। শুক্রবার (০৩ মে দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ব্রিটিশ এ রাজনীতিবীদের সঙ্গে জার্মান দার্শনিক কাল মার্কসের নামের মিল রয়েছে। তিনি একাধারে জার্মান দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, ইতিহাসবেত্তা, সমাজ বিজ্ঞানী, রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবী। সমগ্র মানব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের একজন হলেন কাল মার্কস। তার নামের সঙ্গে মিল থাকা এ রাজনীতিবীদ নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছেন। মোট ভোটের ৬১ শতাংশই অর্জন করেছেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের স্থানীয় নির্বাচনে সাফল্য পেয়েছেন লেবার পার্টির কয়েক ডজন প্রার্থী। এ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন মার্কস। যদিও স্টকপোর্টের কাউন্সিলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ কারও হাতে নেই। কেননা এ জায়গাটিতে লিবারেল ডেমোক্রেটরা সমচেয়ে বেশি আসন পেয়েছেন।

কাল মার্কস আগে গ্রিন পার্টির সদস্য ছিলেন। তবে লেবার পার্টির হয়ে তার সাফল্য ধরা দিয়েছে। ২০১৯ সালে লেবার পার্টির হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচনে অংশ নিয়ে মাত্র ১৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। ওই সময়ে তিনি লেবার পার্টির তৎকালীন প্রার্থী কেরি ওয়াটার্সের কাছে হেরে যান।


লেবার পার্টি   কাউন্সিলর  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধ করায় বিপাকে ইসরায়েল

প্রকাশ: ০৪:৪৭ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজা যুদ্ধের জের ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলো তুরস্ক। ২ মে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে দেশটি। যতদিন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধ না হবে ততদিন এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ।

তুরস্কের এই সিদ্ধান্তে চরম বিপাকে পড়তে যাচ্ছে ইসরায়েল। তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্তের ৩ দিন পর এমন আভাস দিলো ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ক্যালকালিস্ট। 

ক্যালকালিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের এই বাণিজ্য বয়কটের প্রভাব আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ভুগতে শুরু করবে ইসরায়েল। 

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তুরস্কের এই সিদ্ধান্তের কারণে ইসরায়েলে মৌলিক পণ্য, খাদ্য পণ্য এবং বাড়িঘরের দাম বেড়ে যাবে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, তুরস্ক বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার পর ইসরায়েলি সরকার বেশ অবাক হয়েছে। কারণ তারা ভেবেছিল তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলেও; এটি কখনও কার্যকর করবে না। কিন্তু তাদের অবাক করে দিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেন।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্কের বিকল্প বের করতে লম্বা সময় প্রয়োজন হবে। সঙ্গে নতুন করে চুক্তিও করতে হবে। এমনকি বিকল্প কোনও দেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও পণ্যের দাম বেশিই থাকবে।

পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির এই ভার সাধারণ ইসরায়েলিদেরই বহন করতে হবে। যারা যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে আগের তুলনায় বেশি দাম দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন।

তুরস্কের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে ইসরায়েলি নির্মাণ শিল্পের ওপর। সঙ্গে অটোমোবাইল খাতেও এটির প্রভাব পড়বে।


তুরস্ক   বন্ধ   ইসরায়েল   বাণিজ্য  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন