ইনসাইড বাংলাদেশ

ব্যবসায়ীরা ও সারা দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছে: বসুন্ধরা চেয়ারম্যান

প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০২৩


Thumbnail বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।

দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশ পরিচালনায় যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তাতে করে আগামী দিনেও তাকেই প্রয়োজন। শেখ হাসিনার বিকল্প শুধুই শেখ হাসিনা। আর এজন্য ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

শনিবার (১৫ জুলাই) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এফবিসিসিআইয়ের উদ্যোগে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ী সম্মেলনে এ কথা বলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তার উপস্থিতিতে বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা আজীবন আপনার সঙ্গে থাকবো। 

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ব্যবসায়ীদের ম্যান্ডেট তো আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী পেয়ে গেছেন। এখানে যে কজন ব্যবসায়ী আছেন- তারা এ দেশের মেরুদণ্ড বলেন, চাবিকাঠি বলেন, তারা এ দেশ পরিচালনা করেন। এখন তো আপনার ম্যান্ডেট সম্পর্কে আমার মনে হয় না কারো কোনো সংশয় আছে।

প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য কী কী করেছেন তার সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরে বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, উনার সম্বন্ধে যদি বলতে হয় তাহলে সাতদিনেও শেষ হবে না। যদিও উনার সংস্পর্শে খুব কম যাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যতদূর জানি, যদি সাত দিনও বলি তবুও বলার শেষ হবে না। উনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রথমেই কাজ করেছেন আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে। শহর সম্বন্ধে প্রথম দিকে তিনি কম চিন্তা করেছেন। গ্রামের অর্থনীতিকে উন্নত করার জন্য পাঁচ কোটি মানুষকে ভাতা দিয়েছেন। বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিকলাঙ্গ ভাতা- এ ধরনের বিভিন্ন ভাতা দিয়ে বছরে ৫৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছেন। এসব কিছুর সুফল ভোগ করছেন আমাদের দেশের গ্রামীণ গরীব জনসাধারণ। সবাই বলেছে শেখ হাসিনা বার বার। আমি বলবো, আমরা যেমন বঙ্গবন্ধুর কোনো বিকল্প পাইনি। আজকে শেখ হাসিনার বিকল্পও শুধু শেখ হাসিনা।

আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা একটা অনুরোধ জানাবো সবাইকে, ব্যবসায়ীরা চায় সব সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা থাকি, শান্তিপূর্ণভাবে আমরা ব্যবসা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। কিন্তু আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য যে প্রতিটা দিন…, এক সময় আমরা দেখেছি আগুন সন্ত্রাস। আবার শুরু হয়েছে হরতাল, অবরোধ। আমরা মনে হয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ- মিছিল করুক, মিটিং করুক; জনজীবনকে বিচ্ছিন্ন করে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে কোনো রাজনীতি হতে পারে না। আমাদের সব রাজনীতির মূল লক্ষ্য অর্থনীতি। এ দেশের কোটি মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। গণতন্ত্র মানে এই না যে যা খুশি তাই করবো। মানুষের যান-মাল রক্ষা করতে হবে। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হবে। এক সময় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ বলতো, এখন বঙ্গবন্ধু প্লাস শেখ হাসিনার বাংলাদেশ বলে। সি ইজ এ ব্র্যান্ড ওব দ্য ওয়ার্ল্ড। সারা দেশ আজকে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে কী এমন জাদুর কাঠি আছে সেটা দিয়ে সারা বিশ্বকে তিনি আকর্ষণ করেন। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আজকে কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী।

আমার মনে হয় এ দেশের চার কোটি মানুষ ট্যাক্স দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। কিন্তু আমাদের ট্যাক্স শুধু ৩৫ লাখ মানুষ দেয়, যারা বিত্তবান। আমাদের ট্যাক্সে আরও জোর দেওয়া উচিত। সরকার, জনগণ, ব্যবসায়ী সবাইকে হাত মিলিয়ে চলতে হবে।

বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, আজ আরেকটা কথা আমার বলতে হয়। এখানে যারা আছেন তারা অনেকেই ওয়ান-ইলেভেনে জেলে গেছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন। আমার সৌভাগ্য আমি বাংলাদেশে ছিলাম না। তবু আমার কর্মচারীদের জেলে নিয়ে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানে আবার সেই ১-১১ এর সরকার। এই স্বপ্ন যদি কেউ দেখে, আমার মনে হয় আমাদের এই ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট, এটাকে কীভাবে প্রতিহত করতে হবে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখে আর কারো কোনো লাভ নাই।

ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আবার ততত্ত্বাবধায়কের নামে ১-১১ এর সরকার নিয়ে আসবো এবং যত বিত্তশালী, ১৫ বছর, ২০ বছর, ৫০ বছর ধরে যারা আজ সমাজে একটা প্রতিষ্ঠিত অবস্থানে গেছেন তাদের ওপর একটা জুলুম-অত্যাচার হবে। আমাদের প্রয়াত যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান জেলে ছিলেন, আমাদের উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান জেলে ছিলেন। এদেশের যত নামি দামি ব্যবসায়ী সবাইকে তারা জেলে নিয়েছিল। কী ছিল তাদের উদ্দেশ্য? আমি ধন্যবাদ জানাবো আমাদের সমস্ত ব্যবসায়ীকে যে আমি তখন লন্ডনে ছিলাম। আমিও সেখান থেকে বলেছিলাম সব বন্ধ করো, সমস্ত কিছু বন্ধ কর। বিভিন্নভাবে আমাদের ব্যবসায়ীদের কাছে ম্যাসেজও দিয়েছি, তোমরা মুভ করো। আমি জাতিসংঘে একাধিক চিঠি দিয়েছি- কী হচ্ছে বাংলাদেশে।   

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজকে এসব ষড়যন্ত্র রুখতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন, সেই অনুযায়ী যদি আমরা এগিয়ে যাই তাহলে এদেশে গরীব মানুষ বলে কোনো শব্দ থাকবে না। আমাদের ১৭ কোটি মানুষ একটা শক্তি। আজকে চীনের শক্তি তার মানুষ। আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি মানুষ। আজকে ইউরোপ-আমেরিকা সবাই এখানে কেন, সবাই এখানে কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বলেছে। ওদের আন্ডার সেক্রেটারি বলে গেছেন যে আমরা সম্পর্ক জোরদার করার জন্য বাংলাদেশে এসেছি। তারা এমন কিছু আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়নি যে তোমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার করো, তোমরা এই করো, সেই করো। আমাদের নেত্রীও চান, আমরা সবাই চাই একটা সুন্দর নির্বাচন হোক। এই ব্যাপারে তো কারো কোনো অপোস নেই। আমি সরাসরি রাজনীতির মাঠে জড়িত নই, কিন্তু এই কথা মনে হলে আমার ইচ্ছা হয় আবার রাজনীতির মাঠে আমিও আসি। কারণ, আমরা এখানে ভুক্তভোগী। যারা ভুক্তভোগী তারা জানি। আমার নয় জন অফিসারকে নিয়ে গেছে। দুই মাস তাদেরকে জেলে আটকে রেখেছে এবং তাদেরকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেওয়ানো হয়েছে। এমনকি মার্ডার কেসেরও সাক্ষী দেওয়ানো হয়েছে জোর করে। কিছু কিছু লোককে ৮-৯ মাস জেলে রেখে দিয়েছে। এর যদি আমরা পুনরাবৃত্তি চাই, তাহলে আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনতে পারেন। আমি নিশ্চিত আপনারা আর কেউ চান না সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসুক।

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এখানে একশভাগ মানুষ বর্তমান সরকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ম্যান্ডেট দিয়েছেন। আমরা ব্যবসায়ীরা আছি। আজীবন আপনার সঙ্গে থাকবো, আমৃত্যু আপনার সঙ্গে থাকবো। কারণ, আপনার ব্যতিক্রম তো আপনি। আজ সারা দুনিয়ার চমক শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা সারা দুনিয়াকে আকৃষ্ট করতে পারেন। ইউরোপ-আমেরিাকা-ভারত এবং কূটনীতির দিকে তিনি আমাদের দেশকে একটা মিডল অবস্থানে রাখছে। আমাদের সঙ্গে সবার ভালো সম্পর্ক। কারো সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক নেই। তার যে একটা অভিজ্ঞতা, ২০-২৫ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে অভিজ্ঞতা, এটা আরেক জনের ২০ বছর লাগবে। সুতরাং আমাদের সার্বক্ষণিক ওনার সেবা নিতে হবে। আমাদের টাইম টু টাইম ওনার সঙ্গে বসতে হবে। এতে করে কিছু সাজেশন তো দিতে পারবো।

তিনি বলেন, সব থেকে একটাই কথা, সারাদেশ, সারাদেশের মানুষ, ব্যবসায়ী আপনার সঙ্গে আছে। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। দ্বিমত থাকার কারো কোনো অবকাশ নেই। ইনশাল্লাহ আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সংবিধানের বাইরে যেন কেউ এক ইঞ্চিও ব্যত্যয় না ঘটায় তার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টার ১৮ ঘণ্টা আপনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন জানিয়ে বসুন্ধরা চেয়ারম্যান বলেন, ৬ ঘণ্টা হয়তো বাবা-মা-ভাইবোন সবার কথা ভাবতে হয়। আপনাকে বিনিদ্র রজনীও কাটাতে হয়। আমরা যদি সেই সব চিন্তা করি তাহলে ঘর থেকে বের হতাম না। আপনার দুঃখ আমরা শেয়ার করতে পারবো না, কিন্তু আমরা সবাই, সারা বাংলাদেশের মানুষ বলি আপনি কীসের নেশায় বাংলাদেশে আছেন। আপনি বঙ্গবন্ধুর যে প্রতিশ্রুতি তা বাস্তবায়নের জন্য আপনি চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।

সব শেষে আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আমি আশা করি, বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ বুঝবে, আগামী দিনে তার ফল পাবে। আজ পদ্মাসেতু, পদ্মাসেতুর ওই সময় এয়ারপোর্টটা হওয়ার কথা কিন্তু বিভিন্ন মিডিয়ার কারণে হলো না। আজকে পদ্মাসেতুর সুবিধাভোগী কারা আজকে মংলা থেকে তরকারি (সবজি) নিয়ে বিক্রি করে যাচ্ছে। আগে যে তরকারি বিক্রি করতে পারতো না আজকে সেই তরকারি অনেক বেশি দামে বিক্রি করতে পারছে। এই সেতু নিয়ে কত রকমের ষড়যন্ত্র। তারপরেও আমাদের নেত্রী সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন। আল্লাহ ওনাকে দীর্ঘজীবী করুক। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ওনার বিকল্প শুধু উনি। আপনারা সবাই ওনার জন্য দোয়া করবেন।

ব্যবসায়ী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে দেশের ব্যবসায়ী নেতা, বিভিন্ন চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।


বসুন্ধরা গ্রুপ   চেয়ারম্যান   আহমেদ আকবর সোবহান   প্রধানমন্ত্রী   এফবিসিসিআই  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জি কে শামীমের জামিন ঘিরে ফের প্রতারণা

প্রকাশ: ১১:২৬ এএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীমের জামিন ঘিরে আবারো প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে তার আইনজীবী নিখিল কুমার সাহাকে আগামী ১ সপ্তাহ মামলা না লড়তে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৮ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জি কে শামীমের জামিনের আদেশ কার্যতালিকার ৪ নাম্বার সিরিয়ালে ছিলো যা দেখে অবাক হয়ে যান প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘এটি কি ভাবে আদেশের জন্য আসে, এ বিষয়ে শুনানিই তো হয়নি।’

পরে এবিষয়ে আইনজীবী নিখিল কুমার সাহাকে এজলাসে ডাকেন প্রধান বিচারপতি। তিনি আইনজীবীকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এটা কি করে হলো?’ এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি আইনজীবী নিখিল কুমার। এ সময় প্রধান বিচারপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘চালাকি করেন? কটা টাকার জন্য এসব করেন! কেন করেন?’

পরে নিখিল কুমার সাহাকে ১ সপ্তাহ মামলা না লড়তে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। এসময় তিনি পাল্টা যুক্তি দিতে চাইলে প্রধান বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন, বেশী কথা বললে ১ বছর নিষিদ্ধ করা হবে।

এর আগেও জি কে শামীমের জামিন ঘিরে প্রতারণার ঘটনা ঘটেছিলো হাইকোর্টে। ২০২০ সালে মার্চ মাসে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও আলোচিত ঠিকাদার জিকে শামীম। পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, মাস খানেক আগে করা জামিন আবেদনে পুরো নাম উল্লেখ করেননি তিনি। যদিও জামিন আদেশে ঠিকই লেখা ছিল পুরো নাম।


জি কে শামীম   জামিন   প্রতারণা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশের পথে এমভি আবদুল্লাহ

প্রকাশ: ১০:৫২ এএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের পথে রওনা হয়েছে সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। কয়লা নিয়ে মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবার সময় জিম্মি জাহাজটি এবার দেশের পথে বহন করছে ৫৬ হাজার মেট্রিক টন চুনাপাথর। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) মধ্যরাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এমভি আবদুল্লাহ।

আগামী ১২ বা ১৩ মে জাহাজটি কুতুবদিয়ায় পৌঁছাবে বলে জাহাজটির পরিচালনা প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং আশা করছে। এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ বিষয়টি গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। 

শনিবার সকালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে কয়লা খালাস করে মিনা সাকার বন্দরে যায় এমভি আবদুল্লাহ। সেখান থেকেই ৫৬ হাজার মেট্রিক টন জাহাজিকরণ করা হয়। চুনাপাথরের চালানটি চট্টগ্রামের কুতুবদিয়ায় খালাস করা হবে।

ক্যাপ্টেন আবদুর রশিদ বলেন, 'মিনা সাকার বন্দরের লাইম স্টোন লোড করা শেষে আমরা ২৯ এপ্রিল রাতে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এ চুনাপাথর কুতুবদিয়ার কাছাকাছি গভীর সমুদ্রবন্দরে নোঙর করে খালাস করা হবে।' 

এর আগে চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মালিকানাধীন এস আর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম বলেন, 'এমভি আবদুল্লাহ ফেরার পথে একটি বন্দর থেকে তেল ও খাবার সংগ্রহ করবে। আশা করছি আগামী ১২ বা ১৩ মে জাহাজটি দেশে পৌঁছাবে। কুতুবদিয়ায় জাহাজের কার্গো খালাস করে চট্টগ্রাম বিচে নোঙর করবে। তখন নাবিকরা বাড়িতে যাবেন।'

উল্লেখ্য, ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এমভি আবদুল্লাহ। ১২ মার্চ বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালি দস্যুরা। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে জাহাজটি জিম্মি করা হয়।

এর ৩২ দিন পর গত ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্ত করে দেয় জলদস্যুরা। এরপরই সেটি সোমালিয়া উপকূল থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। টানা এক সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রা শেষে ২১ এপ্রিল বিকেলে জাহাজটি আল হামরিয়াহ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।


এমভি আবদুল্লাহ   জাহাজ   সংযুক্ত আরব আমিরাত   সমুদ্রবন্দর   সোমালি জলদস্যু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জয়পুরহাটে চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ

প্রকাশ: ১০:৩৪ এএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাকিম মন্ডলের নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদারের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তবে দুলাল মিয়া সরদার এবং অভিযুক্ত সমর্থক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

 

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

 

ঘটনার পর পর মোস্তাকিম মন্ডলের সমর্থকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলে দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায়। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, মোস্তাকিম মন্ডলের সমর্থকরা দলবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন।

 

এনিয়ে সোমবার (২৯ এপ্রিল) মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডলের সমর্থক মেহেদী হাসান রিটার্নিং অফিসার ও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামের পলাশের মোড়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাকিম মন্ডলের মোটরসাইকেল প্রতীকের একটি নির্বাচনী প্রচারণা অফিস স্থাপন করা হয়। সেখানে ঘটনার দিন দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদারের সমর্থক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম দলীয় রাজনৈতিক কোন্দলের জেরে ১০/১২ জনের দলবল নিয়ে সেই অফিসে চেয়ার টেবিল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ৪৫ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। 

 

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল মিয়া সরদার এবং মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম।

 

তাদের অভিযোগ মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল ষড়যন্ত্র করে নিজেই নিজের অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

অভিযুক্ত মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো। মোস্তাকিম মন্ডলের সমর্থকরা সেখানে টাঙানো আমাদের দোয়াত কলম প্রতীকের পোস্টার ছিড়ে ফেলে। পরে আমি খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও ওসি স্যারকে জানিয়ে সেখান থেকে চলে আসি। পরে তারা ভয় পেয়ে নিজেরাই নিজেদের অফিসে ভাংচুর করে আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে এবং গা বাঁচাতে মোস্তাকিম মন্ডলের পক্ষ নিয়ে ভোটের মাঠে নেমে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। এমনকি তারা আমাকে বাড়ি থেকে তুলে চৌমুহনী বাজারে নিয়ে গিয়ে মারবে বলেও হুমকি দিয়েছে।’


উপজেলা নির্বাচন   নির্বাচনী অফিস   ভাঙচুর   অগ্নিসংযোগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তিন জেলায় চালু হচ্ছে নতুন বিদ্যুৎ লাইন, সতর্কতা জারি

প্রকাশ: ১০:৩৩ এএম, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বগুড়া (পশ্চিম) ৪০০/২৩০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র পর্যন্ত ৮৯ দশমিক ৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ '৪০০ কেভি সিঙ্গেল সার্কিট সঞ্চালন লাইন' নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। 

মঙ্গলবার(৩০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় এ লাইন পরীক্ষামূলক চালু হওয়ার কথা। এ কারণে পাবনা, নাটোর ও বগুড়া জেলার কিছু এলাকার জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)।    

সোমবার রাতে পিজিসিবি'র আইডিআরএনপিপির প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাসুদুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে নবনির্মিত লাইনটি সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে। এ অবস্থায় নবনির্মিত ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের টাওয়ারে আরোহণ, গবাদিপশু বাঁধা, টাওয়ারে রশি বেঁধে কাপড় শুকানো, লাইনের নিচে ও পাশে বাঁশঝাড় ও বড় গাছ রোপণসহ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সবাইকে ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন থেকে নিরাপদ (উভয় পাশে ২৩ মিটার) দূরত্বে থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। উচ্চ ভোল্টেজের এই সঞ্চালন লাইন বা টাওয়ারের সংস্পর্শে এসে কেউ বিদ্যুতায়িত হলে পিজিসিবি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

নতুন লাইন যেসব এলাকা দিয়ে যাচ্ছে-

পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী, সলিমপুর ও মুলাডুলি ইউনিয়ন। নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর, নগর, মাঝগাঁও ও বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন। গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন এবং সিংড়া উপজেলার চামারী, কলম, চৌগ্রাম ও রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়ন।

এছাড়া বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার নন্দীগ্রাম ও ভাটগ্রাম ইউনিয়ন এবং কাহালু উপজেলার জামগ্রাম ইউনিয়ন এই নির্দেশনার আওতাভুক্ত থাকবে।


পিজিসিবি   বিদ্যুৎ   পাবনা   ঈশ্বরদী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কক্সবাজারে দৌরাত্ম বাড়ছে মানব পাচার সিন্ডিকেটের


Thumbnail

কক্সবাজারে মানব পাচারকারীদের দৌরাত্ম দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে রোহিঙ্গাসহ স্থানীয়দের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এরই মধ্যে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা করেছে সরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তালিকায় ৩০ জন রোহিঙ্গা ও ৩০ জন স্থানীয় বাসিন্দার নাম পেয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।

 

তদন্তে উঠে এসেছে মানব পাচারের ভয়ংকর তথ্য। পাচারকারীরা ভুক্তভোগীদের উন্নত জীবনযাপনের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখিয়ে সাগর পথে নিয়ে যাওয়ার পর অনেকে ফিরেছেন লাশ হয়ে। পাচারকারী ৬০ জনের ৩০ জনই রোহিঙ্গা সদস্য। আর ভুক্তভোগীদের মধ্যে মিয়ানমারের বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা সদস্যদের সংখ্যাই বেশি।

 

স্থানীয়দের মধ্যে বাংলাদেশি এই চক্রের অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ হোসাইন ওরফে ডাকাত হোসাইন ওরফে দালাল। চক্রের ৬০ জনই মানব পাচারের সিন্ডিকেট বিদেশি নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত।

 

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশি মানব পাচারকারী চক্রটি মিয়ানমারের নৌ বাহিনী ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সংশ্লিষ্টতায় এবং সেখানকার দালাল চক্রের মাধ্যমে নৌ পথে প্রথমে থাইল্যান্ড বা ইন্দোনেশিয়া নিয়ে যায়। সেখানে বিমানযোগে বৈধভাবে অন্যান্য দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আদায় করে লাখ লাখ টাকা। এরপর সেখানে বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের জিম্মি করা হয়।

 

আকাশপথে নেওয়ার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ট্রলারে করে থাইল্যান্ড থেকে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর পাচার করে সেখানকার দালালদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যাদের জিম্মি করা হয় তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের মুক্তিপণ নিয়ে সাগরপথে আশপাশের দেশগুলোতে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৯ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত ১৯ টি মানব পাচারের মামলা হয়। মামলাগুলোর বিচারিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

 

যে কৌশলে পাচার হয়ে থাকে:

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা ট্রলার ও কার্গোতে আমদানিকৃত পণ্যসামগ্রী খালাসের পর রপ্তানি যোগ্য পণ্যের জন্য ট্রলার ও কার্গো নাফ নদীর জাইল্লার দ্বীপে নোঙ্গর করে থাকে। মাদক চোরা চালান ও মানব পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত রোহিঙ্গারা নাফ নদীর জাইল্লার দ্বীপে নোঙ্গরকৃত ট্রলার ও কার্গোর পরিচালকের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে চুক্তি করে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার জন্য।

 

গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে তথ্য উঠে এসেছে, তৎকালীন রোহিঙ্গা শরণার্থী পাচারের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গারা সাগরপথে ট্রলারযোগে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত তাদের আত্মীয়দের কাছে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন।

 

উল্লেখ্য, আশ্রয় শিবিরের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় কর্মহীন অবস্থায় বসবাস করায় এবং মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রলম্বিত হওয়ায় আত্মস্বীকৃতি ও কাজের সন্ধান করতে গিয়ে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে এসব রোহিঙ্গারা। এভাবে কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়ায় সাগরপথে যাওয়া স্বল্প সংখ্যক রোহিঙ্গা স্বজনদের কাছে পৌঁছাতে পারলেও এদের বেশিরভাগই সমুদ্রে ট্রলার ডুবিতে মারা যান। আবার কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার ও উদ্ধারও হন।

 

বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে উন্নত জীবনযাপনের আশায় বিদেশে অবৈধভাবে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের একটি অংশ বিভিন্ন উপায়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরেকটি অংশ অবৈধভাবে সমুদ্রপথে বিদেশ গিয়ে কাজের পাশাপাশি বাংলাদেশি পরিচয়ে অবৈধভাবে বসবাস এবং পাসপোর্ট সংগ্রহের চেষ্টা করে থাকে। রোহিঙ্গাদের এমন কার্যকলাপের কারণে সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের শ্রম বাজারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

 

বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা বিগত সময়ে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া হয়ে ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন। বিদেশে চাকরি প্রত্যাশী যারা যাচ্ছেন সেসব রোহিঙ্গারা দালালদের মাথাপিছু আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে থাকেন। আর টাকা দিয়েও প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকে।

 

কারাভোগ শেষে ফিরে এলেন ১৭৩ জন:

প্রায় আড়াই বছর মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে মিয়ানমারের নৌ বাহিনী ও বিজিপির কাছে আটক হয়ে কারাভোগের পর গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ১৭৩ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জনই কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন থানার, ৩০ জন বান্দরবান জেলার এবং ৭ জন রাঙ্গামাটি জেলার, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার বাসিন্দা। তবে পুলিশের ভাষ্য, এই ১৭৩ জন শুধু মানব পাচারকারীদের কাছেই নয় বিভিন্ন কারণে তারা ওই দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করেছেন।

 

গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ১৭৩ জনের মধ্যে কারাভোগের পর দেশে ফিরে আসেন টেকনাফ উপজেলার রাজারছড়া এলাকার মোস্তাক আহমেদের ছেলে নোমানসহ আরও ৫০ জন। তারা মিয়ানমারের নৌবাহিনীর হাতে আটক হয়েছিলেন আড়াই বছর আগে। তারা সমুদ্রপথে ট্রলার করে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে আটক হয়েছিলেন।

 

ওই ট্রলারে দেশের বিভিন্ন স্থানের আরও ৪৯ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের বহনকারী ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান অবস্থায় ছিল। চার থেকে পাঁচ দিন সাগরে ভাসমান থাকার পর মিয়ানমারের নৌ বাহিনী তাদের আটক করে। পরে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে সে দেশের কারাগারে পাঠায়। প্রায় আড়াই বছর (৩০ মাস) কারাভোগের পর বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রচেষ্টায় গত ২৪ এপ্রিল স্বদেশে ফেরত আসেন নোমান।


নোমান জানান, উন্নত মানের চাকরির আশায় উনছিপ্রাং এলাকার হোসাইন দালালের প্রলোভনে পড়ে তিনিসহ রামু, মহেশখালী এবং আরও বিভিন্ন এলাকার ৪৯ জন মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিলেন। তাদের আটক করার পর প্রতিদিন এক বেলা খাবার দেওয়া হতো। কারাগারে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের পাশাপাশি অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধারণা করা হয়েছিল, কখনো আর ফেরা হবে না দেশে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টায় দেশে ফিরতে সক্ষম হয়েছে তারা।

 

কইভাবে নোমানের মতো হোসাইন দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন হোয়াইক্ষ্যং এলাকার বাসিন্দা রশিদ আহমদ। কক্সবাজারে বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে দুই ছেলের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, ‘আমার দুই ছেলে মুক্তার আহমেদ আল মামুনকে অল্প টাকায় মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে হোসাইন দালাল টেকনাফের বাহারছড়ার জাহাজপুরা এলাকা থেকে বোটে তুলে দেন। বোটে কয়েক দিন থাকার পর মিয়ানমার সীমান্তে নামিয়ে দেয়। পরে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি তাদের আটক করে। হোসাইন দালাল মালয়েশিয়া পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে দুই লাখ টাকা নেন। ছেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখান। পরে দুই ছেলে মিয়ানমার থেকে কল করে জানায়, তারা কারাগারে আছে। হোসাইন দালালের ঘরে বেশ কয়েকবার গেলেও উল্টো আমাকে হুমকি দিয়ে তিনি বের করে দিয়েছিলেন। তিনি অনেক প্রভাবশালী। তার এক ভাগনে নাকি মন্ত্রীর সচিব।



মানব পাচার   রোহিঙ্গা   সাগরপথে   উন্নত জীবন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন