নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৭ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
রোহিঙ্গা নির্যতনের ঘটনা নতুন না। সেই ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে যখন বার্মার খ্রিস্টান রাজা আরাকান দখল করে তখন থেকে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন হয়েই আসছে। এরপর যখন জাপান বার্মা দখল করে নেয় ১৯৪২ সালে আরেকবার রোহিঙ্গারা নির্যাতনের শিকার হয়, এরপর ১৯৬২, ১৯৮২, ১৯৮৪, ১৯৮৫, ১৯৯০ এবং ২০১২ সালে রোহিঙ্গা উচ্ছেদে বর্বরতম অভিযান পরিচালনা করে বার্মার সামরিক জান্তা। বরাবরই নৃশংস নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে এই রোহিঙ্গারা। সম্প্রতি আবারো মিয়ানমারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। মিয়ানমার থেকে জাতিগত কারণে রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদের অভিযান চালাচ্ছে সে দেশের সেনাবাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশেসহ আন্তর্জাতিক ভাবে মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করায় তারা এখন নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করছে রোহিঙ্গা তাড়াতে।
এ অবস্থায় রক্তাক্ত জনপদ রাখাইনের হত্যাযজ্ঞ চলমান অবস্থায় আরও ভয়ানক পরিস্থিতির উদ্ভব হলো। রোহিঙ্গাশূন্য গ্রামগুলোতে মিয়ানমার বাহিনী লাল পতাকা উড়িয়ে দিয়েছে। পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা যাতে পুনরায় ফিরে আসতে না পারে সে লক্ষ্যেই এ অপতৎপরতা বলে সীমান্তের সূত্রগুলো জানিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, নতুন করে আরও গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। নির্বিচারে গুলি করে হত্যা অব্যাহত রয়েছে। ফলে অবশিষ্ট যেসব রোহিঙ্গা দুঃসাহসিকভাবে অবস্থান করছিল তারাও এখন ভিটামাটি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে। সকলের গন্তব্য বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকারও মানবিক কারণে অঘোষিতভাবে সীমান্ত খোলা রেখেছে।
এদিকে, রাখাইন রাজ্যজুড়ে সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে অভিযান শুরুর পর এখন সীমান্ত এলাকাকে ‘আর্মি অপারেশন জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। সেনা পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে রাখাইন রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে মাইকিং। বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) জীপ ও চাইক্যা (রিক্সাজাতীয়) যোগে কিছু রোহিঙ্গা হাতে নিয়ে তাদের দিয়ে আঞ্চলিক ভাষায় এই মাইকিং চালানো হচ্ছে। মাইকিংয়ে ঘোষণা করা হচ্ছে, ‘রোহিঙ্গারা এদেশ ছেড়ে চলে যাও, তোমরা বাঙালী, বাংলাদেশ তোমাদের দেশ’ এখন মিয়ানমারে ১৭৬টি গ্রাম জনমানবশূন্য। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের দপ্তরের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে গনমাধ্যমকে জানায়, চলমান সেনা অভিযানে গ্রামগুলোর বাসিন্দারা পালিয়ে গেছে।
প্রেসিডেন্টের দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাখাইন রাজ্যের তিনটি শহরতলি এলাকায় সর্বমোট ৪৭১টি গ্রাম রয়েছে। এর মধ্যে ১৭৬টি গ্রাম এখন জনমানবশূন্য। অন্য ৩৪টি গ্রাম থেকেও কিছু কিছু রোহিঙ্গা পালিয়েছে। তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে প্রতিবেশী দেশগুলোতে।
তিনি আরও বলেন, পালিয়ে যাওয়া বাসিন্দারা মিয়ানমারে ফিরতে চাইলে অবশ্যই সবাইকে ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হবে না। যাচাইবাছাই করতে হবে। এরপরই মিয়ানমার কেবল তাদের গ্রহণ করতে পারে।
এদিকে, ইউরোপ প্রবাসীদের সংগঠন আয়েবার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের পক্ষে কর্মসূচি নেওয়া হযেছে। এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে, রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা। জেনেভাস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) সদর দফতরের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে।
এখনো রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন্ এলাকা মংডু, বুচিদং, রাচিদং থেকে দলে দলে রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুর অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এদের সঙ্গে গুলিবিদ্ধ, আহত, বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গবিহীন রোহিঙ্গাও রয়েছে। কক্সবাজার অঞ্চলের বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক ছাড়াও চকরিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া অঞ্চলের হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোতেও আহত রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা চলছে। এছাড়া টেকনাফ, উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় বিভিন্ন মেডিক্যাল টিম রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। পর্যাপ্ত ডাক্তার বা চিকিৎসা সহায়তা কর্মী না থাকায় অনেকেই চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে কাতরাচ্ছে। এছাড়া খাদ্য সঙ্কট, বাসস্থান সঙ্কট তো হয়েছেই। খোলা আকাশের নিচে রয়েছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। মোদ্দা কথায়, প্রশাসনের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা। একদিকে মানবিকতা, অপরদিকে দুর্ভোগ।
বাংলা ইনসাইডার/আরএ/জেডএ
মন্তব্য করুন
এভিয়েশন শিল্প যুক্তরাজ্য বিমান মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারত পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা লোকসভা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
সরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
এবার জাতীয় সংসদে তোপের মুখে পড়লেন সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন। কারও নাম উল্লেখ্য না করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু অভিযোগ করেছেন একজন সদস্য সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে গিয়ে ৩৪৯ জন এমপির জন্য মর্যাদাহানিকর ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ জন্য তিনি স্পিকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
ভারতে এখন লোকসভা নির্বাচন চলছে। এই লোকসভা নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী ৪ জুন জানা যাবে নতুন সরকার কারা গঠন করছে। নির্বাচন নিয়ে চলছে অনিশ্চয়তা। বিজেপির কপালে ভাঁজ। কিন্তু এর মধ্যেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা আগামীকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা সফরে আসছেন। দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাতেই বিনয় মোহন কোয়াত্রার এই বাংলাদেশ সফর বলে কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
দেশে সরকারি মালিকানাধীন ২৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান লোকসানে চলছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। তিনি জানান, লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) অধীন চারটি, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন ১৫টি এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) অধীন নয়টি কোম্পানি রয়েছে।
আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে উপজেলা নির্বাচন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ না থাকলেও স্থানীয় পর্যায়ে এই নির্বাচন নিয়ে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিএনপিকে ছাড়াও বাংলাদেশের গণতন্ত্র যে অব্যাহত থাকতে পারে এবং নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ থাকতে পারে- সেটি প্রমাণের নির্বাচন উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হারানোর কিছু নেই। অর্জন করবার আছে অনেক কিছুই। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচনের জন্য তিনটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন।