ইনসাইড ইকোনমি

সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাপী খাবারের দাম ছিল সবচেয়ে কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:৪৮ পিএম, ০৭ অক্টোবর, ২০১৮


Thumbnail

চলতি বছর সেপ্টেম্বরে বছরের সবচেয়ে কম দামে খাবার কেনার সুযোগ পেয়েছে বিশ্ববাসী। এ সময় বিশ্বব্যাপী চিনির দাম কিছুটা বাড়লেও ভোজ্যতেল, খাদ্যশস্য, দুগ্ধ ও আমিষ পণ্যের মূল্যসূচকে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় ছিল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সর্বশেষ মাসভিত্তিক ফুড প্রাইস ইনডেক্সে (এফএফপিআই) এ তথ্য উঠে এসেছে।

এ বছরের শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়তি থাকার পর গত জুনে বৈশ্বিক খাদ্যমূল্য প্রথমবারের মতো কমে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় টানা চতুর্থ মাস হিসেবে সর্বশেষ সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম কমতির দিকে ছিল। এ সময় খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে এফএও। সংস্থাটির মাসভিত্তিক ফুড প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, জুনে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ছিল ১৭৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট। পরের মাসে তা ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ১৬৮ দশমিক ৮ পয়েন্টে নেমে আসে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের পর এটিই বৈশ্বিক খাদ্যমূল্যের সর্বোচ্চ পতন। এরপর গত আগস্টে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আরো কমে ১৬৭ দশমিক ৬ পয়েন্টে পৌঁছায়। আর সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৬৫ দশমিক ৪ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কম।

এফএও’র তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। এ সময় ভোজ্যতেলের গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৩৪ দশমিক ৯ পয়েন্টে, যা আগের মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ২ পয়েন্ট কম। বিগত ৩৬ মাসের মধ্যে এটাই ভোজ্যতেলের সবচেয়ে কম বৈশ্বিক মূল্যসূচক বলে জানিয়েছে এফএও।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের রপ্তানি চাহিদা তুলনামূলক কম রয়েছে। এ কারণে টানা পাঁচ মাস মালয়েশিয়ার বাজারে পাম অয়েলের দাম কমতির দিকে রয়েছে। এরই প্রভাব পড়েছে ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজারে। তাছাড়া কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোয় সূর্যমুখী তেলের বাড়তি উৎপাদনের কারণে তারাও এর দাম আগের তুলনায় কমিয়ে দিয়েছে। মুলত এসব কারণেই বিশ্বব্যাপী ভোজ্য তেলের দাম কমেছে।

গত আগস্টে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক ছিল ১৬৮ দশমিক ৪ পয়েন্টে। সেপ্টেম্বরে তা ৪ দশমিক ৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬৪ পয়েন্টে। ২০১৭ সালের একই সময়ের তুলনায় গত সেপ্টেম্বরে এ সূচকমান ৮ শতাংশ বাড়তি ছিল বলে জানিয়েছে এফএও। এছাড়া আগস্টের তুলনায় ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমে গত সেপ্টেম্বরে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়িয়েছে ১৯১ দশমিক ৫ পয়েন্টে। এনিয়ে টানা চতুর্থ মাসের মতো দুগ্ধপণ্যের দাম কমতির দিকে ছিল। নিউজিল্যান্ডে তরল দুধের বাড়তি উৎপাদনের কারণেই দুগ্ধপণ্যের দাম কমছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে আমিষ পণ্যের বৈশ্বিক মূল্যসূচক ছিল ১৬৬ দশমিক ২ পয়েন্ট। এর আগের মাস আগস্টে তা ছিল ১৬৬ দশমিক ৩ পয়েন্ট। চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের কারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে আমিষ পণ্যের দাম আগের তুলনায় কমতির দিকে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সেপ্টেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম কমতির দিকে থাকলেও একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল চিনি। এ সময় চিনির গড় মূল্যসূচক ছিল ১৬১ দশমিক ৪ পয়েন্ট, যা আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ২০১৮-১৯ মৌসুমে ব্রাজিল ও ভারতে আখের ফলন ব্যাহত হওয়াকেই চিনির মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি মাসে এর দাম আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি/জেডএ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশ: ০৮:৫৩ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ন্যাশনাল ব্যাংকের বিদ্যমান পর্ষদ ভেঙে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি খলিলুর রহমানকে প্রধান করে নতুন পরিচালনা পর্ষদও গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

রোববার (৫ মে) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। আগের পর্ষদের পারভিন হক শিকদারসহ অধিকাংশ পরিচালকই বাদ পড়েছেন।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে আরও শক্তিশালী করতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিকে চেয়ারম্যান করে পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। যাতে ব্যাংকটিতে সুশাসন নিশ্চিত হয়।

ন্যাশনাল ব্যাংক   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

দুর্বল ব্যাংকগুলোর চাপে নুয়ে পড়ার শঙ্কায় ভালো ব্যাংক

প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হলেও এখন পর্যন্ত অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মিলছে না। বিশেষ করে দুর্বল ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমাণ মন্দ ঋণ বা খারাপ সম্পদ কোন প্রক্রিয়ায় সমন্বয় করা হবে, তা কারও কাছেই স্পষ্ট নয়। এ ক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ নিতে না পারলে দুর্বল ব্যাংকগুলোর মন্দ ঋণের চাপে ভালো ব্যাংকও নুয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘তুলনামূলক ভালো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে সাধারণ আমানতকারীসহ অনেক ব্যাংকের পরিচালকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কারণ ভালো ব্যাংক যেগুলো আছে, সেগুলো তো নিয়মকানুন মেনে, কমপ্লায়েন্স মেনে, নানা ধরনের প্রতিকূলতা পার করে ভালো হয়েছে। ফলে তারা কেন একটি দুর্বল ব্যাংকের দায়িত্ব নেবে?’

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত বছরের ডিসেম্বরে ‘প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন (পিসিএ) ফ্রেমওয়ার্ক’ ঘোষণার মধ্য দিয়ে ব্যাংক একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে বিষয়টি স্পষ্ট করে গত ফেব্রুয়ারিতে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সংস্থাটি। এর পরই একীভূতকরণ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। গত মার্চে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ডেকে ডিসেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তা না হলে আগামী বছরের মার্চে ব্যাংকগুলোর ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

যদিও এখন পর্যন্ত একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার অনেক বিষয়ই স্পষ্ট করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশেষ করে দুর্বল ব্যাংকগুলোর যেসব ঋণ মন্দ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়ে আছে, সেগুলো কীভাবে সমন্বয় করা হবে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নীতিমালা করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে ঋণ বা সম্পদ ব্যবস্থাপনায় আলাদা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত সে বিষয়ে আইনি কাঠামো তৈরি হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া উদ্যোগের শুরুতেই গত ১৪ মার্চ পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার ঘোষণা দেয় এক্সিম ব্যাংক। এ দুটি ব্যাংকের মধ্যে এক্সিম ব্যাংক তুলনামূলক ভালো হলেও বিভিন্ন সময়ে অনিয়ম, ঋণ কেলেঙ্কারি আর সুশাসনের অভাবে ডুবতে বসেছিল পদ্মা ব্যাংক।

তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত পদ্মা ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। এরই মধ্যেই খেলাপি হয়ে পড়েছে ১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এর বাইরেও ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের বড় অংশ অবলোপনের খাতায় যুক্ত আছে। পদ্মা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের মধ্যে ১ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা আদায় অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ৬০৭ কোটি টাকা।

অন্যদিকে এক্সিম ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৪৬ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এক্সিম ব্যাংকের আদায় অযোগ্য ঋণ ১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকটির কোনো মূলধন ঘাটতি নেই। এর বাইরেও ব্যাংক দুটির বিপুল পরিমাণ ঋণ অবলোপন করা হয়েছে।

তথ্য বলছে, ব্যাংক দুটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন থেকে যদি আর না-ও বাড়ে, তাহলেও একীভূত হওয়ার পর এক্সিম ব্যাংকে খেলাপির হার দাঁড়াবে মোট ঋণের ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ব্যাংকের খেলাপি ৫ শতাংশের নিচে থাকার কথা।

যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালা বলছে, খারাপ ব্যাংকের দায় বিক্রি করা যাবে। তবে এখন পর্যন্ত ওই ধরনের কোনো নীতিমালা জারি হয়নি। এমনকি মন্দ সম্পদ কম দামে বিক্রির পর বাকি দায় কীভাবে সমন্বয় করা হবে তারও কোনো স্পষ্ট বর্ণনা নেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায়। শুধু তাই নয়, এক্সিম ব্যাংকের মূলধনে বর্তমানে কোনো ধরনের ঘাটতি নেই। অথচ, সমন্বয় না করা হলে পদ্মা ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকটি ৬০৭ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়বে। এক্ষেত্রে মূলধন হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, পদ্মা ব্যাংক যেসব ঋণ বিতরণ করেছে তার বিপরীতে পর্যাপ্ত জামানত নেওয়া হয়নি। এমনকি বিতরণ করা ঋণের বেশিরভাগই আর ফিরে না আসায় তারল্য সংকটে পড়ে ব্যাংকটি। পরে ২০২২ সালের মার্চে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত পদ্মা ব্যাংকের বিধিবদ্ধ জমা এসএলআর থেকে অব্যাহতি দেয়। বর্তমানেও ওই সুবিধা বহাল রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্যোগে পড়তে পারে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। কারণ এই প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের চেয়ে কয়েক গুণ বড় ন্যাশনাল ব্যাংকের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। আকৃতিতে বিশাল, কিন্তু আর্থিকভাবে ভেঙে পড়া একটি প্রতিষ্ঠানের দায়দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ইউসিবি নিজেই ভেঙে পড়ে কি না—তা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, তালিকাভুক্ত ইউসিবির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। অথচ ব্যাংকটির সঙ্গে একীভূত হতে যাওয়া ন্যাশনাল ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ৫ হাজার কোটি টাকা আর পরিশোধিত মূলধন ৩ হাজার ২২০ কোটি টাকা।

শুধু তাই নয়, ন্যাশনাল ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের অঙ্ক ৪২ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে মন্দ ঋণ ১১ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা। আর মোট খেলাপি ঋণ ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা বা ২৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। একীভূত হলে ইউসিবির ৪৯ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকার সঙ্গে মিলে মোট ঋণ হবে ৯২ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। বর্তমানে ইউসিবির খেলাপি আড়াই হাজার কোটি টাকা হলেও তখন দাঁড়াবে ১৪ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। বর্তমানে ইউসিবির খেলাপি ঋণের হার ৫ দশমিক ০১ শতাংশ। একীভূত হওয়ার পর এ হার দাঁড়াবে ২৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

ইউসিবির কোনো প্রভিশন ঘাটতি না থাকলেও ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি ১১ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা। এর বাইরেও প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার ডেফারেল সুবিধা নিয়ে রেখেছে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ২৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া ব্যাংকটির ২ হাজার ২৪ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিও রয়েছে। সব মিলিয়ে একীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আর্থিক হিসেবে দুর্বল ব্যাংকের তালিকায় ঢুকে যাবে ইউসিবি।

যদিও ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালকরাই ইউসিবির সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। এরই মধ্যে বোর্ড সভা করে একীভূত না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংক একটি সুসংগঠিত ব্যাংক। ব্যাংকের প্রায় ৩০০ শাখা-উপশাখার মধ্যে হাতেগোনা ১১ থেকে ১২টি শাখা ছাড়া সব মুনাফা করছে। এখন বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার ফলে খেলাপি আদায় বেড়ে গেছে। সামনে লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, শিগগির খেলাপি সন্তোষজনক পর্যায়ে চলে আসবে। যদি না আসে, তখন একীভূত করা যেতে পারে।’

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল)। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিডিবিএলের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে আছে ৯৮২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এর বাইরেও ব্যাংকটি অবলোপন বা গোপন করা ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের বেশিরভাগই খেলাপি।

আর সোনালী ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ ৯৩ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। প্রভিশন ঘাটতি না থাকলেও সোনালী ব্যাংকের ডেফারেল সুবিধা নেওয়া আছে ৩ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এ ছাড়া গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটির অবলোপন করা ঋণের পরিমাণ ৬ হাজার ৬১১ কোটি টাকা।

একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি বেসিক ব্যাংককে যুক্ত করা। এরই মধ্যে বেসিক ব্যাংক এ প্রক্রিয়ায় না যেতে সরকারের উচ্চমহলে চিঠি দিলেও প্রক্রিয়া থেকে সরে আসা ব্যাংকটির জন্য কঠিন। সে ক্ষেত্রে সিটির সঙ্গেই একীভূত হতে পারে বেসিক। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের মোট ঋণ ছিল ১২ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর মধ্যে মন্দ ঋণ ৮ হাজার ৪২ কোটি টাকা। ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি ৫ হাজার ১৯৫ টাকার সঙ্গে বিশেষ সুবিধা নিয়ে ঘাটতি কম দেখানো আছে ৪ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়াবে ৯ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। ফলে ব্যাংকটির মন্দ ঋণের কোনো নিরাপত্তা নেই।

শুধু তাই নয়, সরকারি এই ব্যাংক ২ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে। আর মূলধন ঘাটতি আছে ৩ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বর্তমানে সিটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার মাত্র ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি নেই, নেই মূলধন ঘাটতিও। অথচ বেসিক ব্যাংকের দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যাংকটি দুর্বল হয়ে পড়বে।

এ ছাড়া একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত দুই বিশেষায়িত ব্যাংক কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। এর মধ্যে রাকাবের বিতরণ করা ঋণ ৭ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে মন্দ ঋণ ১ হাজার ৩১১ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ ছাড়া রাকাবের মূলধন ঘাটতি ২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

সার্বিক বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জোর করে একটা ব্যাংককে অন্য একটা ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ করে দিলে তো ব্যাংক খাতের মূল সমস্যার সমাধান হবে না। খেলাপি ঋণে জর্জরিত পদ্মা ব্যাংককে এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ করা হচ্ছে। যেসব পরিচালকের কারণে পদ্মা ব্যাংকের আজকের এ পরিণতি তাদের কোনো শাস্তির আওতায় না এনে পাঁচ বছর পর নাকি তারা আবার এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবে। এটা কোনো কথা হলো? প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিয়ে এবং আন্তর্জাতিক রীতিনীতি না মেনে বাংলাদেশ ব্যাংক জোরপূর্বকভাবে তড়িঘড়ি করে মার্জ করে দিচ্ছে। এতে আমানতকারীরা আতঙ্কিত হয়ে তাদের আমানত তুলে নিচ্ছেন। পুরো ব্যাংক খাতে একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।’


দুর্বল ব্যাংক   বাংলাদেশ ব্যাংক   একীভূত  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

টানা ৮ দফায় কমল সোনার দাম

প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ০২ মে, ২০২৪


Thumbnail

দুই দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও কমল সোনার দাম। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮৭৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৯ হাজার ১৬৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২ মে) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা শুক্রবার থেকে কার্যকর হবে।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮৭৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ১৬৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮০৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫৫২ টাকা কমিয়ে ৮৯ হাজার ৩১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা কমিয়ে ৭৪ হাজার ২৭৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে ৩০ এপ্রিল, ২৯ এপ্রিল, ২৮ এপ্রিল, ২৭ এপ্রিল, ২৫ এপ্রিল, ২৪ এপ্রিল ও ২৩ এপ্রিল ৭ দফা সোনার দাম কমানো হয়। ৩০ এপ্রিল ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৪২০ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ১ লাখ ১১ হাজার ৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। 

গত ২৯ এপ্রিল ১ হাজার ১১৫ টাকা, ২৮ এপ্রিল ৩১৫ টাকা, ২৭ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২ হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৩ এপ্রিল ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমানো হয়। এখন আবার দাম কমানোর মাধ্যমে ৮ দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ২৬৫ টাকা কমল।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন   বাজুস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

এবার ঈদে প্রবাসী আয় কমেছে

প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের মৌসুম ধরা হয় দুই ঈদে। ঈদকে সামনে রেখে এ সময় প্রবাসীরা দেশে থাকা তাদের আত্নীয় স্বজনদের কাছে টাকা পাঠায়। তবে গেলো ঈদের মাসে অর্থাৎ এপ্রিলে প্রবাসী আয় কমেছে। এ মাসে প্রবাসী আয় এসেছে  ১৯০ কোটি ৮০ মার্কিন ডলার। এ মাসের প্রথম ১৯ দিনে এসেছিল ১২৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে পরের ১০ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৬২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। প্রতিদিন গড়ে ছয় কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। 

বুধবার (১ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে প্রবাসী আয়ের এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে মার্চ মাসে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১০ কোটি ডলার ও ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল।

বেশির ভাগ ব্যাংক এখন ১১৫ থেকে ১১৬ টাকা দরে প্রবাসী আয় কিনছে। তবে সংকটে থাকা কিছু ব্যাংক বেশি দামেও ডলার কিনছে বলে জানা গেছে। যদিও ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১০ টাকা। ফলে আমদানিকারকদেরকে অতিরিক্ত দামে ডলার কিনে আমদানি দায় মেটাতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তার ওপর। দেশে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হার এখনো উচ্চ রয়ে গেছে।

গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে আয় আসে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসী আয় আসে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, যা এখন পর্যন্ত এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়।

ঈদ   প্রবাসী আয়   বাংলাদেশ ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড ইকোনমি

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১০টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনগুলো

প্রকাশ: ০৪:২৪ পিএম, ০১ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী তালিকায় যে ১০টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক রয়েছে, তারা সবাই বড় ও গুরুত্বপূর্ণ দেশের অর্থনীতি পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত। তাদের যেকোনো কর্মকাণ্ড বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারে।
দেখা নেওয়া যাক, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১০টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনগুলো। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

১. ফেডারেল রিজার্ভ

তালিকার একেবারে ওপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফেডারেল রিজার্ভের মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ৭ লাখ ৫৪ হাজার কোটি ডলার। আর্থিক খাতের মানুষজন এই ব্যাংককে ডাকেন ‘ফেড’ নামে। ১৯১৩ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশটির ব্যাংকিং ব্যবস্থা নজরদারি ও মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানকে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি যে কত বড়, ফেডারেল রিজার্ভের হাতে থাকা বিশাল সম্পদ সেটাই প্রমাণ করে। একই সঙ্গে এটাও দেখায় যে মার্কিন অর্থনীতি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

২. ব্যাংক অব জাপান

এটি জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, জাপান বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। এই ব্যাংকের হাতে থাকা সম্পদের আর্থিক মূল্য ৫ লাখ ২১ হাজার কোটি ডলার। ব্যাংক অব জাপানের প্রতিষ্ঠা ১৮৮২ সালে। বাজারে মুদ্রা ছাড়া, বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের ব্যবস্থাপনা ও মুদ্রানীতি পরিচালনা করা এই ব্যাংকের মূল কাজ।

সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক অব জাপানের সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে জাপানের অর্থনীতি দুর্বল থাকার কারণে যে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, সেই অর্থের ব্যবস্থাপনার দিকটি বাস্তবায়ন করছে এই কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ব্যাংক অব জাপানকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সরবরাহ করতে হচ্ছে। সে কারণে তাদের সম্পদ বেড়েছে।

৩. পিপলস ব্যাংক অব চায়না

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি। এর মোট সম্পদের পরিমাণ ৫ লাখ ১৪ হাজার কোটি ডলার। এটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৪৮ সালে। মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা, বাজারে মুদ্রা ছাড়া এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের ব্যবস্থাপনা চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানতম কাজ।

সাম্প্রতিক দশকগুলোয় পিপলস ব্যাংক অব চায়নার সম্পদ বিপুলভাবে বেড়েছে। এর কারণ হলো, একটি ছোট অর্থনীতির দেশ থেকে চীন এখন বিশাল অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। দেশটি এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।

৪. ডয়েশে বুন্ডেসব্যাংক

ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ জার্মানির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডয়েশে বুন্ডেসব্যাংক। ফোর্বসের তালিকায় জার্মানি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। সব মিলিয়ে ২ লাখ ৭২ হাজার কোটি ডলার সম্পদের মালিক জার্মানির এই ব্যাংক। এটি প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৫৭ সালে। ইউরোপের একক মুদ্রা ইউরো চালু করার পেছনে এই ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

জার্মানির জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা বুন্ডেসব্যাংকের মূল দায়িত্ব। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যখন মুদ্রানীতিসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তখন তাতে অংশগ্রহণ করে বুন্ডেসব্যাংক।

৫. ব্যাংক অব ফ্রান্স

ইউরোপের আরেক বড় অর্থনীতির দেশ ফ্রান্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি। এর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৭২ হাজার কোটি ডলার। ব্যাংক অব ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠা হয় ১৮০০ সালে। বিশ্বে যত কেন্দ্রীয় ব্যাংক রয়েছে, তাদের মধ্যে প্রাচীনতম ব্যাংকগুলোর একটি ব্যাংক অব ফ্রান্স।

ফ্রান্সের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা ব্যাংক অব ফ্রান্সের মূল দায়িত্ব। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যখন মুদ্রানীতিসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তখন তাতে অংশগ্রহণ করে এই ব্যাংক।

৬. ব্যাংক অব ইতালি

ইতালির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি। এর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি ডলার। ব্যাংক অব ইতালির প্রতিষ্ঠা ১৮৯৩ সালে। ইতালির জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা ছাড়া ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতিসংক্রান্ত সিদ্ধান্তেও অংশগ্রহণ করে এই ব্যাংক।

৭. ব্যাংক অব স্পেন

স্পেনের এই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা ১৭৮২ সালে। অনেক পুরোনো এই ব্যাংকের সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি ডলার। এটি স্পেনের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে। পাশাপাশি ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি প্রণয়নসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডেও অংশ নেয়।

৮. ব্যাংক অব ইংল্যান্ড

বিশ্বে যতগুলো পুরোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক রয়েছে, তাদের অন্যতম ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। এটির প্রতিষ্ঠা ১৬৯৪ সালে। নামে ইংল্যান্ডের ব্যাংক হলেও এটি মূলত যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি ডলার।

যুক্তরাজ্যের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। বাজারে মুদ্রাও ছাড়ে এই কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

৯. সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক

এটি সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাদের হাতে যে সম্পদ আছে, তার আর্থিক মূল্য ১ লাখ ৩ হাজার কোটি ডলার। সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯০৭ সালে। সুইজারল্যান্ডের মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুতের ব্যবস্থাপনা এই ব্যাংকের মূল দায়িত্ব।

সুইজারল্যান্ডের মুদ্রা ফ্রাঙ্কের মূল্যমান যাতে না বেড়ে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে মাঝেমধ্যেই বাজারে হস্তক্ষেপ করে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে সে কারণে তাদের একটি বিশেষ পরিচিতি রয়েছে।

১০. রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি। তাদের হাতে থাকা সম্পদের পরিমাণ ৮১ হাজার কোটি ডলার। ১৯৩৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো রিজার্ভ ব্যাংক  অব ইন্ডিয়াও নিজের দেশের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন করে এবং বাজারে মুদ্রা ছাড়ে।

চীনের মতো ভারতের অর্থনীতিও এখন অনেক বড় হয়েছে। পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এখন ভারত। ফলে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদও সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।


বিশ্ব   ধনী   ১০টি   কেন্দ্রীয় ব্যাংক  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন