ইনসাইড পলিটিক্স

ইউপি নির্বাচনের সপ্তমধাপে আরও পেছালো আওয়ামী লীগ

প্রকাশ: ০৯:০৯ এএম, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২


Thumbnail ইউপি নির্বাচনের সপ্তমধাপে আরো পেছালো আওয়ামী লীগ

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন যেনো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য এক অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি করেছে। নির্বাচনের প্রতিটি ধাপে দলটি ঠিক আগের ধাপের তুলনায় খারাপ ফলাফল অর্জন করেছে। ইউপি নির্বাচনের সর্বশেষ বা সপ্তম ধাপের যে অবস্থান শোচনীয়। 

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ইউনিয়ন পরিষদের সপ্তম ও শেষ ধাপের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ১৩৬টি ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মাত্র ৩৭টিতে জয় পেয়েছেন। বিপরীতে বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন ৩৯টিতে। 

এ পর্যন্ত সারা দেশে ৪ হাজার ১১১টি ইউপিতে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ২ হাজার ১৭০টি ইউপিতে (৫৩ শতাংশ) জিতেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। অবশ্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ৩৬৮ জন, অর্থাৎ ৯ শতাংশ প্রার্থীর প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা। সে হিসাবে সাত ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রায় ২ হাজার ৫৩৮টি বা ৬২ শতাংশ ইউপিতে জয় পেয়েছে। 

সাত ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ক্রমান্বয়ে খারাপ ফল করেছেন। প্রথম ধাপে ৭৩ শতাংশ ইউপিতে জয়ী হলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা দ্বিতীয় ধাপে ৫৮, তৃতীয় ধাপে ৫২, চতুর্থ ধাপে ৪৭, পঞ্চম ধাপে ৪৮, ষষ্ঠ ধাপে ৫৩ এবং সপ্তম ধাপে মাত্র ২৭ শতাংশ ইউপিতে জয় পেয়েছেন।

এর বিপরীতে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করা বিদ্রোহীরা জিতেছেন ৯১১টি বা ২২ শতাংশ ইউপিতে। এদিকে বিএনপি থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে জয় পেয়েছেন ৩৪৯ জন (৮%) প্রার্থী। দলীয় মনোনয়নের বাইরে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করে সারা দেশে বিজয়ী হয়েছেন ৩১৩ জন (৮%)।

তবে সপ্তম ধাপের ইউপি নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হিসাব বলছে, ১৩৮টি ইউপির মধ্যে ৮৫টিতেই জয়লাভ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ৮৫টির মধ্যে ২৪টি ইউপিতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বাকি ৬১টি ইউপিতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীও হতে পারেননি আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। ইসি সূত্রে গতকাল মঙ্গলবার এসব তথ্য জানা যায়। ইসি সূত্র জানায়, সপ্তম ধাপের ভোটে ৩২টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। এর বাইরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করা ১১ জনের মধ্যে ১০ জনই আওয়ামী লীগের।

বিএনপি এবারের ইউপি নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে অংশ নেয়নি। তবে দলটির স্থানীয় নেতাদের অনেকেই চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করলেও ভোটের ফলে গতবারের (পাঁচ বছর আগে) চেয়ে ভালো করেছেন বিএনপির নেতারা। ২০১৬ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ইউপি চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ছয় ধাপে মোট ৪ হাজার ১০৪টি ইউপিতে ভোট হয়। এর মধ্যে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি জয় পেয়েছিল ৩৬৭টি ইউপিতে। অর্থাৎ বিএনপি জয় পেয়েছিল ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ ইউপিতে। এবার ৪ হাজার ১১১টি ইউপিতে ভোট হয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের তথ্য অনুযায়ী, বিএনপির নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন ৩৪৯টি ইউপিতে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে বিএনপি নেতারা কতটিতে জয় পেয়েছিলেন, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। বাকি নির্বাচনগুলোর মধ্যে বিএনপি নেতারা দ্বিতীয় ধাপে ৬৪টিতে, তৃতীয় ধাপে ৯১, চতুর্থ ধাপে ৭৫, পঞ্চম ধাপে ৮৩, ষষ্ঠ ধাপে ২৫ এবং সপ্তম ধাপে ১১টি ইউপিতে জয়লাভ করেছেন। সে হিসাবে বিএনপি নেতাদের জয়ের হার ৮ শতাংশ।

ইউপি নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   বিদ্রোহী প্রার্থী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সূচনা বক্তব্যেই শেষ হলো আওয়ামী লীগের যৌথ সভা!

প্রকাশ: ০৭:২৬ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, উত্তর, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনকে দলের কর্মসূচি অবহিত করতে যৌথ সভা ডেকেছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে সেই যৌথ সভা সূচনা বক্তব্যেই শেষ হয়ে যায়।

শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এ যৌথ সভা ডাকা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সব সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা।


জানা যায়, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ৪টা ১২ মিনিটে সূচনা বক্তব্য শুরু করে প্রায় ৩৬ মিনিট বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে সাধারণ সম্পাদক দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. রাজ্জাক ও জাহাঙ্গীর কবির নানককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আর কেউ কিছু বলবেন? বলেন... এসময় আওয়ামী লীগের এই দুই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ‘না’ বলেন। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়ে যায় যৌথ সভা। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান। আর সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কার্যালয়ে নিজ অফিসে চলে যান।


যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, আইন বিষয় সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু প্রমুখ।

আওয়ামী লীগ   যৌথ সভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ভারতের কাঁটাতারে ঝুলছে: গয়েশ্বর

প্রকাশ: ০৭:০২ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফেলানীর মতো বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ভারতের কাঁটাতারে ঝুলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন সারাবিশ্বের মানুষ ষড়যন্ত্র করছিল, তখন ভারত যদি আমাদের পাশে না থাকত এই নির্বাচন করতে পারতাম না। তার মানে আওয়ামী লীগের কাছে গণতন্ত্র হচ্ছে অব দ্য ভারত, বাই দ্য ভারত, ফর দ্য ভারত। এর বেশি কিছু বলে মনে হয় না।

বাংলাদেশ আজ কাঁটাতারে ঝুলছে দাবি করে তিনি বলেন, অনেক বছর আগে প্রতীক ছিল ফেলানী। ফেলানী যেমন কাঁটাতারে ঝুলছিল, আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কাঁটাতারে ঝুলছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, অনেকে বলেন শেখ হাসিনার জনসমর্থন শূন্যের কোটায়। পায়ের নিচে মাটি নেই। আসলে তো মাটি নেই। উনি তো পাথরের ওপর হাঁটেন। সাধারণ মর্ম তিনি বোঝেন না।

এসময় প্রধানমন্ত্রীর জনসমর্থনের দরকার নেই বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর। আওয়ামী লীগ জোড়াতালির সরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, এদের ক্ষমতায় বসিয়ে রাখলে বছরের পর বছর মিছিল করবেন, মিটিং করবেন, লাখ লাখ লোক হবে, কিন্তু তার (শেখ হাসিনা) জায়গায় সে থাকবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আরও উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, আব্দুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।

সমাবেশে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় সামনে থেকে মিছিল বের করে নাইটেঙ্গেল মোড় ঘুরে ফকিরাপুল হয়ে আবার নয়াপল্টনে এসে শেষ হয়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাঁচ সংকট

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

প্রথম দফায় ১৩৯টি উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। যথারীতি বিরোধী দল বিহীন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় জয়কার। আওয়ামী লীগের নেতারাই অধিকাংশ উপজেলায় নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু তারপরেও উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে সন্তুষ্টি নেই। আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি এবং শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিরক্তি কাজ করছে।

নানা কারণে উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক ফলাফল আনতে পারেনি বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারা উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে উদ্বিগ্ন এবং দল ও গণতন্ত্রের জন্য সামনের দিনগুলোতে আরও সংকট অপেক্ষা করছে বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা।

প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সামনে পাঁচটি সংকটকে উন্মোচন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে-


১. ভোটার উপস্থিতি কম: উপজেলা নির্বাচনে ভোটের হার এবার সর্বনিম্ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যতগুলো উপজেলা নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে এবার ভোট পড়েছে সবচেয়ে কম। ২০০৮ এর ভূমিধস বিজয়ের পর প্রথম আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন হয় ২০০৯ সালে। সেই উপজেলা নির্বাচনে ৬৮ ভাগের বেশি ভোট পড়েছিল। দ্বিতীয় দফায় ৬১ ভাগ ভোটার উপজেলা নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। ২০১৯ সালে এই হার ছিল ৪০ শতাংশের বেশি।

কিন্তু এবার নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ ভোটার উপজেলা নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। এটি কখনোই স্বস্তি দেওয়ার খবর নয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাধারণত ভোটাররা উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দেয়। কিন্তু এবার উপজেলা নির্বাচনে ভোটাররা উৎসাহ নেয়নি। এমনকি আওয়ামী লীগের যে রিজার্ভ সমর্থক বলে যারা পরিচিত সেই ভোটাররাও ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত ছিল না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের নেতা কর্মীদেরকে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা, তারা যেন ভোটকেন্দ্রে যায় সে জন্য উৎসাহিত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশ মাঠে প্রতিফলিত হয়নি। ভোটার উপস্থিতি কম থাকার ফলে আওয়ামী লীগের জন্য অস্বস্তির কারণ।

২. অভ্যন্তরীণ কোন্দল:
আওয়ামী লীগের জন্য এই নির্বাচন ছিল অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর মাধ্যম। এ কারণেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপজেলা নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, দলীয় প্রতীক উপজেলা নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে না। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আশা করেছিলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের যে কোন্দল এবং বিভক্তি প্রকাশ্য রূপ নিয়েছিল তার কিছুটা হলেও অবসান ঘটবে।

কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগকে আরও বিভক্ত করেছে। বিশেষ করে যে সমস্ত স্থানে স্বতন্ত্রদের সাথে আওয়ামী লীগের বিরোধ ছিল, সেই বিরোধে গুলো আরও সহিংস রূপ নিয়েছে। এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি অশনী সংকেত।

৩. কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করার প্রবণতা: আওয়ামী লীগের জন্য উপজেলা নির্বাচনে একটি বড় অস্বস্তির বিষয় ছিল কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করা। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদেরকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ মাঠে প্রতিফলিত হয়নি। দু একজন মন্ত্রী-এমপি ছাড়া অধিকাংশই তাদের আত্মীয় স্বজনদেরকে নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন এবং প্রভাব বিস্তার করে জিতিয়ে এনেছেন। এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি সতর্কবার্তা। কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করার এই প্রবণতা যদি বাড়তে থাকে সেটি ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের জন্য একটি খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।

৪. এলাকায় এলাকায় জমিদারতন্ত্র-পরিবারতন্ত্র কায়েম: এবার উপজেলা নির্বাচনে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয় স্বজনদেরকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তারা এলাকায় এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছেন। এর ফলে বিভিন্ন এলাকায় একটি গোষ্ঠীতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র বা জমিদারতন্ত্র কায়েম হচ্ছে। এটিও আওয়ামী লীগের জন্য একটি খারাপ সংবাদ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

৫. অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনে অনীহা: আওয়ামী লিগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার নেতাকর্মীদেরকে বলেছিলেন যে- অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু দেখা গেছে, নির্বাচনে যারা শক্তিশালী প্রার্থী হয়েছেন তারা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন। পেশিশক্তির প্রয়োগ ঘটিয়েছেন, কালো টাকা ছড়িয়েছেন। আর এগুলো আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট করেছে এবং জনগণের কাছে ভুল বার্তা দিয়েছে। এই সমস্ত অস্বস্তিগুলো উপজেলা নির্বাচনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। এখন ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ কীভাবে এই সংকটগুলো কাটিয়ে উঠবে, সেটাই দেখার বিষয়।


উপজেলা নির্বাচন   আওয়ামী লীগ   কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি ভোটারদের ভয় পায়, তাই নির্বাচনে আসে না: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ: ০৬:১০ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি ভোটারদের ভয় পায়, তাই নির্বাচনে আসে না। এই ভয় থেকে নির্বাচন বয়কট করে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।

শুক্রবার (১০ মে) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভার শুরুতে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থতা, এই ব্যর্থতার পর বিএনপি আবারো আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। অনেকে বলেন- পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করছি। আজ কিন্তু আমরা কোনো সমাবেশ করিনি। সমাবেশ আমরা করব, কারণ বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা, রক্তপাত। বিএনপির কাছে গোটা রাজধানীকে যদি ছেড়ে দিই, তাহলে জনগণের জানমাল সুরক্ষায় সমস্যাও হতে পারে। এ কারণে আমাদের থাকতে হয়।

সমাবেশ থেকে এ পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি মারামারি, সংঘর্ষ, বিরোধ কিছু হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা নাম দিয়েছি শান্তি সমাবেশ, আমরা সেভাবেই শুরু ও শেষ করেছি। আমরা যদি মাঠে না থাকি তাহলে অতীতের অভিজ্ঞতা বলে বিএনপির সমাবেশ মানেই নৈরাজ্য, পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হাসপাতালে হামলা। এটা ২৮ অক্টোবর লক্ষ্য করেছি। আন্দোলন করেছে, আমরা নাকি পালানোর পথ পাব না। আর সেদিন দেখলাম কত যে দ্রুত মঞ্চ থেকে নেমে অলিগলি খুঁজে পাচ্ছিল না, পালাচ্ছিল। পালায় বিএনপি।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০০৭ সালে মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই নেতার আজও দেশে ফেরার সৎ সাহস হয়নি। যে নেতার নির্দেশে বিএনপি চলে সেটা রিমোট লিডারশিপ। নেতৃত্ব যদি দেশে না থাকে সে আন্দোলন কোনো দিন সফল হয় না। আন্দোলনে ব্যর্থ হলে নির্বাচনেও ব্যর্থ হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামীকাল (শনিবার) মোহাম্মদপুরে আমরা শান্তি উন্নয়ন সমাবেশ করব। সেটি বিকাল সাড়ে ৩টায় শুরু হবে।

এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ, আইন বিষয়ক সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি   ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিজয়ীদের ফিরিয়ে আনবে বিএনপি

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ গুলোতে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির ২৭ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এদের মধ্যে সাতজন বিজয়ী হয়েছেন। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদেরকে দলে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য নীতি নির্ধারক মহলে আলোচনা চলছে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, সবগুলো নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করবে। যারা বহিষ্কৃত হয়েছে, তাদের মনোভাব যাচাই করবে এবং তারা যদি ক্ষমাপ্রার্থনা করে দলে ফিরতে চান তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হবে। 

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বলেছেন, যারা পরাজিত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে বিএনপির নেতিবাচক অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ফলাফল অনুযায়ী বিএনপির যে সাত জন নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের আশরাফ হোসেন আলিম, ভোলাহাটে আনোয়ার হোসেন, শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় আমিনুল ইসলাম বাদশা, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, গাজীপুর সদরে ইজাদুর রহমান মিলন, বান্দরবান সদরে আব্দুল কুদ্দুছ ও সিলেট বিশ্বনাথের সোহেল আহমেদ চৌধুরী। এই সাতজনই বিএনপির জনপ্রিয় নেতা এবং এলাকায় তাদের প্রভাব রয়েছে। 

সরজমিনে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যে সমস্ত উপজেলাগুলোতে বিএনপির প্রার্থীদের পক্ষে বিএনপির কর্মী সমর্থকরা নেমেছিল সেই সমস্ত স্থানে তারা বিজয়ী হয়েছেন। আর যে সমস্ত স্থানে বিএনপির বহিষ্কৃত প্রার্থীদের পক্ষে দলের নেতাকর্মীরা নামেননি, তারা ভীত ছিলেন এবং দলের নির্দেশ অমান্য করার জন্য তাদেরকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, তাদেরকে পরাজয়বরণ করতে হয়েছে। 

বিএনপির মধ্যে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপির একজন যুগ্ম মহাসচিব বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ইতিহাসে সর্বনিম্ন। আর এটি বিএনপির আন্দোলনের ফসল। এটিকে তিনি বিএনপির জন্য একটি বিজয় হিসেবে দেখছেন। একই রকম মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তাঁর মতে, উপজেলা নির্বাচনে মানুষ ভোট দেয়নি। বিএনপি যে ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছিল তাতে জনগণ সাড়া দিয়েছিল বলেই বিএনপির এই নেতা মনে করেন। 

তবে বিএনপির মধ্যে এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন, বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করার সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত ভোট হয়েছে এবং উপজেলাগুলোতে এখন আওয়ামী লিগের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

বিএনপির একজন যুগ্ম মহাসচিব বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে কম ভোট হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়েছে। আমাদের প্রার্থীদেরকে যদি আমরা সমর্থন দিতাম, প্রার্থীরা যদি মাঠে কাজ করতে পারত কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সেক্ষেত্রে নির্বাচনের ফলাফল অন্য রকম হতে পারত। তার মতে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে উপজেলা নির্বাচন করেছেন তারা সকলে নিজ দায়িত্ব করেছেন। একদিক থেকে তারা যেমন দলের পৃষ্ঠপোষকতা পাননি অন্যদিক কর্মী সমর্থকেরা তাদের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে এক ধরনের আড়ষ্ট ছিলেন। আর এ কারণেই তারা নির্বাচনে পিছিয়ে পড়েছেন।

বিএনপির কোনো কোনো নেতা অবশ্য দাবি করেন যে, এই নির্বাচনের ফলাফল পূর্বনুমতি ছিলো। কারণ ক্ষমতাসীন দল যে তাদের পক্ষে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আসবে এটি আগে থেকে জানা ছিলো। আর এ কারণেই বিএনপি ভোট বর্জনের সুযোগ নিয়েছিলো। তবে নির্বাচনের পর বিএনপি দ্বিমুখী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলেই বিভিন্ন সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। যারা নির্বাচনে পরাজিত হবে তাদের আপাতত বিএনপিতে ফেরা সম্ভাবন নাই। আর যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদেরকে নানারকম কৌশলে বিএনপিতে ফিরিয়ে আনা হবে বলে ধারণা করা হয়েছে।

বিএনপি   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন