গত ২৯ জুলাই (শনিবার) ঢাকার প্রবেশ পথে বিএনপি ঘোষিত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের যৌথ আক্রমণ-হামলা, নির্যাতন ও পাইকারি হারে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ রোববার সারাদেশে জনসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় সোমববার (৩১ জুলাই) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এক জনসমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় কমিটির সদস্যরা। কিন্তু গত ২৮ জুলাই (শুক্রবার) বিএনপি মহাসমাবেশে যে জনতার ঢল নামিয়েছিল, ২৯ জুলাই (শনিবার) অবস্থান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলটি ঠিক ততটাই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এর কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ২৯ জুলাই বিএনপির দু’জন নেতার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যেই জনগণের মধ্যে আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ২৮ জুলাইয়ের পর বিএনপির লাগাতার কর্মসূচি থাকলেও এসব কর্মসূচিতে তেমন জনসম্পৃক্ততা দেখাতে পারছে না দলটি। বিএনপির ওই দুই নেতার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ফলে বিএনপির কর্মীদের মধ্যে নানা রকমের প্রশ্ন ও সন্দেহের ডালাপালা ছড়িয়েছে। এ কারণেই মূলত দলটি ধীরে ধীরে কর্মী শূণ্য হয়ে পড়ছে। তাই প্রশ্ন ওঠেছে, তবে কি চুপসে গেল বিএনপি?
জানা গেছে, টানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে বিএনপির জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জনসমাবেশ শুরুর আগে বৃষ্টি শুরু হয়। এর মধ্যেও দলটির নেতাকর্মীরা দলে দলে মিছিল নিয়ে জনসভায় এসেছেন। শান্তিপূর্ণভাবে তারা জনসমাবেশ করেছেন। কিন্তু সমাবেশে আগত নেতাকর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সেই ২৮ জুলাইয়ের উৎফুল্লভাব দেখা যায়নি। দলে দলে আসার সময় প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মীদের মুখে সরকার বিরোধী স্লোগান থাকলেও স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়নি সমাবেশস্থল এবং আশেপাশের এলাকা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন,সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ বিএনপির যে সমাবেশ হলো, সেখানে জনসাধারণের খুব একটি উপস্থিতি দেয়া যায়নি। গত ২৮ জুলাই নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশে যে জনগণের উপস্থিতি বিএনপি দেখিয়েছিল, পরবর্তী টানা কর্মসূচির কোনো কর্মসূচি বা সমাবেশে সে ধরনের আর কোনো জনসম্পৃক্ততা বা জনসমাবেশ দেখাতে পারছে না বিএনপি। দুদিন আগেও বিএনপির মধ্যে উল্লাস যে ছিল, তা আজ থিতিয়ে পড়েছে। বিএনপির আজকের সোহরাওর্দী উদ্যানের সমাবেশ ছিল ম্লান, ম্রিয়মান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি মুখে টানা আন্দোলন বা কর্মসূচির ঘোষণা দিলেও, এ ধরনের কোনো টানা আন্দোলন করার জন্য যে ধরনের কর্মী দরকার, যে ধরনের জনগণের সমর্থন দরকার সেটা বিএনপির নেই। গত কয়েকটি কর্মসূচি দিয়ে বিএনপির মধ্যে যে উৎসাহ, উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল, তা গত শনিবার (২৯ জুলাই) অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে ম্লান হয়ে গেছে। ফলে বিএনপির কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা দেখা দিয়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে এই আন্দোলনের কারণে অনেক কর্মীরা নতুন করে আবারও মামলায় পড়ছেন। কিন্তু দলটির বড় দুই নেতা সরকারের সাথে আঁতাত করে ঠিকই ফল-ফলাদি, পোলাও-কোরমা খাচ্ছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত শনিবার (২৯ জুলাই) বিএনপিকে আবার দেখা গেছে সেই পুরনো বৃত্তে। ২০১৩ সালে বিএনপি যে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি করেছিল, তারই পণরাবৃত্তি শনিবারের অবস্থান কর্মসূচিতে দেখা গেছে। ওই সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছিল এবং সেই মামলাগুলোর ফলে বিএনপির কর্মীরা পলাতক হলো, তারা হতাশ হয়ে গেল, আবার সেই একই ছকে বাধা পড়ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ২০১৪ সালেও ঘটেছিল সেই একই ঘটনা। বিএনপির অনেক ভুল রাজনীতি এবং হঠকারি সিদ্ধান্তের কারণে মাশুল দিতে হয় বিএনপির কর্মীদেরকে। মামলায় পরে অনেক কর্মীরাই ইতিমধ্যে পলাতক রয়েছে। এই মামলাজটে আবারও আটকে যাচ্ছে বিএনপির কর্মীরা।
তবে আজকের সমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্যথায় পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।
কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, অসারের তর্জন গর্জনই সার। ইতিমধ্যেই সরকার হটানোর অনেক আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। আর ধরনের বক্তব্যতো হরহামেশা দিয়েই যাচ্ছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিএনপির এসব আন্দোলন সমাবেশে জনগণের সম্পৃক্ততা কতটা হচ্ছে, জনগণ কি চাইছে- সেটাই দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন
মন্তব্য করুন
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে একদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায়
নেওয়া হচ্ছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরবেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন,
‘ম্যাডামকে আজকে বাসায় আনার কথা রয়েছে। তবে এখনও সময় নির্ধারণ হয়নি’।
এর আগে, বুধবার (০১ মে) সন্ধ্যায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া
হয়। সেখানে সিসিইউতে রেখে তার বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হয়।
মন্তব্য করুন
শেষ পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত পাঁচবার সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। একই সাথে বলা হয়েছিল যে, সারাদেশে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হচ্ছে না।