যখনই বিএনপির আন্দোলন তীব্র হয় এবং বেগম খালেদা জিয়ার তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়, তখনই বেগম জিয়াকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন, এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তাহলে কি বিএনপিরই কেউ কেউ বিশেষ করে তারেক রহমান তার মাকে হাসপাতালে নিয়ে বন্দি করে রাখেন? তিনি যেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখতে না পারেন, এই কারণে?- এই প্রশ্নটিই এখন বিএনপির মধ্যে বেশ জোরালোভাবে উত্থাপিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করেছে। এক দফা আদায়ের লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। আর এই কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রায়ই বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া তাকে আন্দোলনের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছিলেন।
বেগম জিয়ার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ এবং কথা বলার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উত্তরার বাসা ছেড়ে ফিরোজার পাশে একটি বাসা নিয়েছেন এবং সেখানেই তিনি এখন অবস্থান করছেন। এর প্রধান লক্ষ্য হলো, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আন্দোলনের ব্যাপারে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং পরামর্শ গ্রহণ করা। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এটা পছন্দ করেননি বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর এই পছন্দ না করার জন্যই বেগম জিয়াকে তিনি হাসপাতালে এক ধরনের বন্দিদশায় রেখেছেন- এমনটি মনে করেন বিএনপির কোনো কোনো নেতা। তারা বলছেন, এর আগেও যখন বেগম জিয়া রাজনীতিতে কিছুটা সক্রিয় হয়েছিলেন, তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে বেশ কিছুদিন রাখা হয়েছিল। হাসপাতালে থাকলে তারেক জিয়ার দুই ধরনের লাভ হয়।
এক. বেগম জিয়ার সঙ্গে সরকারের কোনো লোকজন যোগাযোগ করতে পারেন না। কারণ হাসপাতালে সরকারি কোনো লোকজন গেলে সেটি দৃশ্যমান হবে এবং সংবাদ শিরোনাম হবে। ফিরোজায় যেটা খুব সহজেই সম্ভব। তারেক জিয়াপন্থিরা মনে করেন, সরকার ট্রাম কার্ড হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে ব্যবহার করছেন। কারণ বেগম খালেদা জিয়া তার বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পাবেন এই প্রত্যাশায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে নির্বাচন অভিমুখী করতে পারেন। এ নিয়ে বেগম জিয়ার সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন মহলের একাধিক আলাপ-আলোচনা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ কারণেই আন্দোলনকে তীব্র করতে তারেক জিয়া বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে স্থানান্তর করেছেন বলে অনেকে মনে করেন।
দুই. আন্দোলনের গতি তীব্র হলে সরকার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে প্রেরণ করতে পারেন। তাকে যেন কারাগারে প্রেরণ না করা হয়, এজন্যই খালেদা জিয়া অসুস্থ- এটি দেখানোর জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফলে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে স্থানান্তর করা হলে, সেটি একটি অমানবিক সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হবে। এটি তারেক জিয়ার একটি রাজনৈতিক কৌশল। আবার কেউ কেউ মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়া সক্রিয় হলেই তারেক জিয়া বিএনপিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে, তার প্রভাব নষ্ট হয়ে যায়, তিনি যা খুশি তাই- বিএনপিতে করতে পারেন না। এ কারণেই বেগম জিয়াকে হাসপাতালে বন্দি করে তারেক জিয়া বিএনপিতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ভোগ করতে চান।
যেটিই হোক না কেন, বেগম খালেদা জিয়ার বারবার হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হওয়া রহস্যময়। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরাও এখন পর্যন্ত বলতে পারছেন না যে, কেন তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন? কি বিশেষ উপসর্গের কারণে তাকে হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে? বিএনপি’র একাধিক নেতা বলছেন, খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা এভারকেয়ারে গত দুই দিন হচ্ছে, সেই চিকিৎসাই তার বাসায় হচ্ছিল। তাহলে কার হাতে বন্দী বেগম খালেদা জিয়া?
বন্দী বেগম খালেদা জিয়া তারেক জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতাল
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন কার্যনির্বাহী কমিটি ওবায়দুল কাদের রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার তারেক জিয়া রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচন করতে পারবে না- এই অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পিছু হঠেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে যে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে অর্থাৎ নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন তাদের আপাতত কিছু হচ্ছে না। অথচ ক’দিন আগেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বারবার নির্দেশনা দিচ্ছিলেন এবং যারা এই দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও তাদের ব্যাপারে নমনীয় মনে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত কিছুই হচ্ছে না আওয়ামী লীগের নির্দেশ অমান্যকারী মন্ত্রী-এমপিদের। উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যে, মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অন্তত পাঁচবার সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিল তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল। দলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল। একই সাথে বলা হয়েছিল যে, সারাদেশে যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হচ্ছে না।