আন্দোলন
প্রত্যাশিত ফলাফল আনতে ব্যর্থ হওয়ায়
বিএনপি নেতৃত্ব ক্রমবর্ধমান হতাশার মধ্য দিয়ে পথ
অতিক্রম করছে। উত্তেজনাপূর্ণ ও অপ্রত্যাশিত রাজনৈতিক
পরিবেশের মধ্যেই নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা বিএনপিকে আরও কোণঠাসা করার
সুযোগ হিসেবে দেখছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
বিএনপির ডাকা
হরতাল ভোঁতা করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই রাজপথে নিজেদের ক্ষমতার জানান দিতে প্রস্তুতি
নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। রোববারের হরতাল বিএনপি যাতে সফল করতে না পারে, সে জন্য আওয়ামী লীগের
নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবেন। আর হরতাল ব্যর্থ করে দিতে পারলে পরবর্তী সময়ে নতুন কর্মসূচি
নিয়ে বিএনপির পক্ষে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে।
বিএনপি সাংগঠনিকভাবে
জটিল সমস্যার মোকাবিলা করছে কারণ তাদের আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণের অভাব রয়েছে। সাধারণ
জনগণ এই ধরনের আন্দোলনে সমর্থন প্রদানের পরিবর্তে ক্রমশ সতর্ক হয়ে উঠছে। বিএনপির এই
প্রচেষ্টা দেশকে ধীরে ধীরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে বলে তারা উদ্বিগ্ন।
সামনে নির্বাচন।
তফসিল ঘোষণার আর কয়েকটি দিন বাকি মাত্র।সে কারণে গত বৃহস্পতিবার থেকেই মিছিল আর সমাবেশের
মাধ্যমে রাজপথে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছে শাসক দল। আওয়ামী লীগ মনে করে বিএনপি-জামায়াত
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে আর সে জন্যই তাদের মাঠে
দরকার।
আওয়ামী লীগের
উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফার দাবি নিয়ে
বিএনপি আওয়ামী লীগকে চাপে ফেলতে চেয়েছে। আর আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ছিল, কোনো একটা কর্মসূচিতে
বিএনপি ভুল করলে বা ব্যর্থ হলে চেপে ধরতে হবে। যাতে তফসিল ঘোষণার আগে আর দাঁড়াতে না
পারে। গতকাল পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘাতকে দলটিকে চেপে ধরার জন্য ব্যবহার করা হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি রাজপথে বিপুল লোক জমায়েত করতে পেরেছে। কিন্তু গতকাল পুলিশ মারমুখী
হওয়ার পর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে তারা গুটিয়ে গেছে। এ থেকে আওয়ামী লীগ খুশি যে বিএনপি
আগামী নির্বাচন বানচাল বা রাজপথ দখলে নেওয়ার মতো ঝুঁকি তৈরি করতে পারবে না।
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় চলমান ঘটনাপ্রবাহ
নিয়ে প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, আবারও হিংস্র রূপে আবির্ভূত বিএনপি, আর
তাদের মিত্র জামায়াত। পল্টন কালভার্ট রোডে পুলিশ সদস্যকে আক্রমণ করার দৃশ্য! কী বীভৎস,
কী নির্মম বিএনপি-জামায়াত। বাংলাদেশের মানুষ আগেও এই নির্মমতাকে সমর্থন দেয়নি এখনো
দেবে না।
বিএনপি নেতাদের
ক্ষুব্ধ বক্তব্যের ফলে দলের কিছু সমর্থকরা হয়তো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে
কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে বর্তমান সরকার পদত্যাগ করবে তাদের দাবির মুখে। সরকার পতনের
আন্দোলনে সফলতা অর্জন করা একটি জটিল কাজ কারণ এই ধরনের আন্দোলনে দেশের আপামর জনগণের
অংশগ্রহণ প্রয়োজন হয়। ফলে বিএনপির চলমান এই আন্দোলনকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজেদের
স্বার্থে ব্যবহারের সুযোগ কখোনোই হাতছাড়া করতে চাইবে না।
পুলিশ বিএনপি সংঘর্ষ আওয়ামী লীগ হরতাল সমাবেশ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।