তিন দিনের অবরোধ আজ শেষ হল। বিএনপি এখন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, আবার তারা অবরোধের মতো কর্মসূচি দেবে। মাঝখানে তারা একদিন বা দুইদিনের একটি বিরতি দিতে পারে। বিশেষ করে ৭ই নভেম্বর বিএনপির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন৷ এই কারণে ওই দিনটিকে তারা বাদ রেখে টানা আন্দোলনের কর্মসূচির মধ্যে থাকতে চাচ্ছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া আন্দোলনকে অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি যেহেতু ঢাকায় থাকেন না, বাংলাদেশের বাস্তবতা সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। তার ঝুঁকিও নেই। তিনি প্রতিনিয়ত চাঁদার টাকা পান। আন্দোলন হলে চাঁদার রেট আরও বেড়ে যায়। এরকম অবস্থা থেকে আন্দোলনের ঘোষণা দিতে তার কোনও অস্বস্তি নেই। কিন্তু বিএনপির যে সমস্ত নেতা কর্মীরা ঢাকায় থাকেন, তাদেরকে অনেকগুলো বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়। যেমন এখন সাধারণ মানুষ এই ধরনের আন্দোলনকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
রোববার
থেকে যে অবরোধ শুরু
হয়েছে তা দ্বিতীয় দিনেই
ভেসতে গেছে। এখন রাস্তায় মোটামুটি
যানজট। শুধুমাত্র বিক্ষিপ্ত ভাবে বিএনপির কোনো
কোনো নেতা কর্মীরা হঠাৎ
যেয়ে কিছু ভাঙচুর এবং অগ্নি সংযোগ করছে। এর ফলে বিএনপি
সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আরও নেতিবাচক ধারণা
তৈরি হচ্ছে। শুধু তাই নয়,
এর ফলে বিএনপির দুর্বলতাও
প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। যাদের
একটি অবরোধ করার ক্ষমতা নেই
তারা আগামী নির্বাচন কী ভাবে প্রতিরোধ
করবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন
উঠছে।
তবে
এর ফলে সবচেয়ে বেশি
ক্ষতি হচ্ছে বিএনপির। বিএনপির একাধিক নেতা গ্রেফতার হয়েছেন
আরও অনেক নেতা আত্মগোপনে
আছেন। কর্মীরা ঘর থেকে পলাতক।
এরকম অবস্থা চলতে থাকলে এক
সময় বিএনপি নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়বে এমনটাই
মনে করছেন দলটির নেতা কর্মীরা। আর
এই রকম অবস্থায় নির্বাচন
প্রতিরোধ করা তো দূরের
কথা, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাও বিএনপির জন্য
কঠিন হয়ে পড়বে। সরকার
কেবল বিএনপিকে চাপে ফেলে নাই,
সাধারণ মানুষও বিএনপির সম্পর্কে এক ধরনের অনাস্থা
প্রকাশ করছে।
সবকিছু
মিলিয়ে একটি বাজে পরিস্থিতির
মুখোমুখি হয়েছে দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতায়
বাইরে থাকা দলটি। এরকম
পরিস্থিতিতে বিএনপির মধ্যে আবার অবরোধ এবং
টানা কর্মসূচি রাখা নিয়ে মতবিরোধ
তৈরি হচ্ছে। বিএনপির মধ্যে যারা চিন্তাশীল ব্যক্তি,
যারা রাজনীতি বোঝেন, তারা মনে করছেন,
এখন বিএনপির আন্দোলনের সময় নয়, এখন
বিএনপিকে কৌশলগত অবস্থান নিতে হবে। নির্বাচন
কমিশন যেহেতু বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে সেখানে শনিবারের সংলাপে বিএনপির অংশগ্রহণ করা উচিত এবং
এই সংলাপে যদি বিএনপি শেষ
পর্যন্ত অংশগ্রহণ করে তাহলে তাদের
ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হবে।
বর্তমান
পরিস্থিতিতে বিএনপির জন্য আন্দোলন করে
সরকারকে হটানো বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের
দাবি আদায় করা প্রায়
অসম্ভব ব্যাপার৷ আর এ কারণেই
বিএনপির অনেকেই মনে করছেন যে
এখন কৌশলগত অবস্থান নিতে হবে এবং
আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে
যাওয়ার ঘোষণা দিতে হবে। তারপর
যদি সরকার নির্বাচনের ক্ষেত্রে কারচুপি আশ্রয় নেয়, প্রভাব বিস্তার
করে বা অন্য কোনো
ঘটনা ঘটায় সেটির দায়িত্ব
সরকারের ওপর পড়বে। তখন
বিএনপি সম্পর্কে মানুষের এবং আন্তর্জাতিক মহলের
একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে৷ তারা
তাদের পাশে দাঁড়াবে।
কিন্তু
লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এরকম ফর্মুলার সাথে
একমত নন বরং অব্যাহত
আন্দোলন, ভাংচুর, নাশকতার মাধ্যমে একটি সন্ত্রাসী পরিস্থিতি
তৈরি করাই তার লক্ষ্য।
কিন্তু এই পরিস্থিতি তৈরি
করতে গিয়ে বিএনপির লাভের
চেয়ে ক্ষতি বেশি হচ্ছে বলেই
মনে করেন অনেকে।
বিএনপি অবরোধ তারেক জিয়া মইন খান
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।