নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:১১ পিএম, ০৭ জুলাই, ২০১৮
ভারত সফরে এক গুরুত্বপূর্ণ মত বিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ. টি. ইমাম বলেছেন, ‘তিস্তা এখন আর তেমন কোনো ব্যাপার নয়। এবারের নির্বাচনে বিরোধীরা নিশ্চয়ই বলার চেষ্টা করবে শেখ হাসিনার সরকার তো তিস্তা চুক্তিও করাতে পারল না, ভারত কিছুই দিলো না। কিন্তু আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, তিস্তা এখন আর তেমন কোনো বড় সমস্যা নয়। তিস্তা কোনো ইস্যুই নয়।’
আজ শনিবার দুপুরে দিল্লির স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কট্যাঙ্ক অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে একটি মতবিনিময় সভায় এইচ. টি. ইমাম একথা বলেন। তাঁর কথা গণমাধ্যমে আসার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে সমালোচনা দেখা গেছে।
দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এই প্রথম আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের একজনকে পাওয়া গেল যিনি মনে করেন তিস্তা কোনো ইস্যু নয়। আওয়ামী লীগ যেখানে মনে করছে তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। প্রধানমন্ত্রী যেখানে এই বিষয় নিয়ে নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা বার বার পুণর্ব্যক্ত করেছেন। সেখানে ভারতের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় এইচ. টি. ইমান কীভাবে এমন মন্তব্য করেন?
হেফাজতের সঙ্গে কি আপসের রাস্তায় হেঁটেছে সরকার? ভারতীয় সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে একই আলোচনায় এইচ. টি. ইমাম বলেছেন, হেফাজতের সমর্থকের সংখ্যা কত বেশি! দেশজুড়ে লাখ লাখ কওমি মাদ্রাসার ছাত্র এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কাজেই বলপ্রয়োগ করে তাদের সঙ্গে ডিল করা যাবে না, তাতে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। আমরা তাই জোর দিয়ে নয়, বরং কৌশলের সঙ্গে হেফাজতের সঙ্গে ডিল করছি। এখন তার সুফলও মিলছে। কওমি মাদ্রাসার বহু ছাত্র এখন আওয়ামী লীগকে সমর্থন করতে শুরু করেছে!
একই আলোচনায় বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে চীনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই দাবি করে এইচ. টি. ইমাম বলেন, বাংলাদেশে এখন আর এমন কোনও রাজনৈতিক দলই নেই, যারা ‘চীনের মুখ চেয়ে রাজনীতি করে’! চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা পুরোপুরি বাণিজ্যিক। আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যাপারে তাদের কোনও আগ্রহ নেই। শুধু বাণিজ্যিক স্বার্থে ঢাকায় একটা রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল সরকার দেখতে চায় চীন।
এইচ. টি. ইমাম আরও বলেন, বিএনপি যতই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর চেষ্টা করুক, তাদের মতো একটি পাকিস্তানপন্থী ও জামায়াত-সমর্থক দলের ওপর দিল্লি কিছুতেই ভরসা রাখবে না বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস। আসলে বিএনপি আজ জামায়াতে ইসলামীর একটা এক্সটেনশনে পরিণত হয়েছে। তাদের নিজেদের শক্তি বলতে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই, জামায়াত আর শিবিরের ভরসাতেই তারা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ও গণ্ডগোল বাঁধাতে চাইছে। এমন একটা পাকিস্তানপন্থী শক্তিকে ভারত কেন হঠাৎ করে বিশ্বাস করতে যাবে?
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।