নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৭ পিএম, ১৫ জুলাই, ২০১৮
কারান্তরীণ বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গতকাল শনিবার বিকেলে কারাগারে গিয়েছিলেন বেগম জিয়ার স্বজনরা। স্বজনদের মধ্যে ছিলেন খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা রহমান, ভাগ্নি এবং তার পরিবারের অন্য তিন সদস্য। তবে বেগম জিয়ার সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়নি। খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা রহমান দাবি, তাঁদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। যদি তাই হবে তাহলে বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তারা কারাগারে ঢুকলেন কীভাবে? কারা কর্তৃপক্ষ না চাইলে তো তাঁরা কারাগারেই ঢুকতে পারতেন না। কারাগারে গিয়েও বেগম জিয়ার স্বজনদের দেখা না করার নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
কারা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে বিস্তারিত। কারা বিধি অনুযায়ী একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির যদি ডিভিশন থাকে তাহলে মাসে দুইবার করে তাঁর আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। ভিআইপি বন্দী বেগম জিয়ার সঙ্গে তাঁর স্বজনরা সর্বশেষ দেখা করেছেন ৩০ জুন। এই হিসেবে ১৫ দিন পর আবার ১৪ জুলাই স্বজনরা দেখা করার সুযোগ পান। কারা কর্তৃপক্ষ থেকে বেগম জিয়ার স্বজনদের দেখা করার সুযোগ আছে বলে জানানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষের কথা অনুযায়ীই কারাগারে দেখা করতে আসেন বেগম জিয়ার স্বজনরা। তবে বেগম জিয়াই স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেননি বলে জানিয়েছে কারা সূত্র।
কারা বিধি অনুযায়ী কেউ দেখা করতে আসলে তাঁকে সাক্ষাৎ দেবেন কিনা তা বন্দীর ইচ্ছাধীন। কেউ দেখা করতে কারাগারে আসলে এবং কারা কতৃপক্ষ অনুমতি দিলেও বন্দী না চাইলে দেখা করতে পারবেন না। জোর করে কারা কর্তৃপক্ষ কোনো বন্দীর সঙ্গে তাঁর স্বজনদের দেখা করার ব্যবস্থা করতে পারে না। এই বিধি অনুযায়ীই বেগম জিয়ার অনিচ্ছার কারণে স্বজনরা কাল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। কিন্তু প্রশ্ন হলো বেগম জিয়া কেন স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে চাইবেন না?
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বেগম জিয়া শুধু স্বজন নয় কোনে বিএনপি নেতা এবং আইনজীবীর সঙ্গেও এই মুহূর্তে দেখা করতে রাজি নন। কারা সূত্রে জানিয়েছে, বেগম জিয়া এই মুহূর্তের সবার উপরই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। তিনি মনে করেন, সবাই তাঁকে ব্যবহার করে নিজের আখের গুছিয়েছে। সব স্বজনই বিত্ত বৈভব অর্জন করেছে শুধু তাঁর (বেগম জিয়া) কারণেই। অথচ তাঁর এই দু:সময়ে কোনো স্বজনই কিছু করতে পারছে না এটি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন না বেগম জিয়া। আর বিএনপি নেতা ও আইনজীবীদের উপর ক্ষুব্ধ তাঁদের ব্যর্থতার কারণে। ছয়মাস হতে চলল বিএনপি কোনো কার্যকর আন্দোলন করতে পারল না। আইনজীবীরা তাঁর মুক্তির কোনো ব্যবস্থাই করতে পারল না। বেগম জিয়ার তাই কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। সবাই মিলে যোগসাজোস করে তাঁকে কারাগারে রেখেছে বলেই মনে করেন বেগম জিয়া। এসব কারণেই বেগম জিয়া এই মুহূর্তে স্বজন, বিএনপি নেতা, আইনজীবীসহ সবার উপরই ক্ষুব্ধ। কারও সঙ্গে তিনি দেখা করতে রাজি হচ্ছেন না।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।