নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৮ জুলাই, ২০১৮
রোজার সময় বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা ছিল, ঈদের পর আন্দোলন। ঈদের পর একমাস পার হয়ে গেলেও কিছু বিবৃতি, সংবাদ সম্মেলন ছাড়া তেমন কোনো কর্মসূচি নেই দলটির। বিএনপির মূল দাবি দুর্নীতির দায়ে কারান্তরীণ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্দিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু ঈদের পর এই দুই ইস্যুতে বিএনপির কোনো আন্দোলন বা বড় কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। খালেদা জিয়ার কারাবাসের মেয়াদ সাত মাস হতে চলল। এক ঈদ পেরিয়ে আরেক ঈদ দুয়ারে কিন্তু তাঁর মুক্তির আন্দোলনে নেই বিএনপির।
এখন বিএনপিতে দেখা যাচ্ছে নানারকম ইস্যু খোঁজার চেষ্টা। সম্প্রতি কোটা আন্দোলনের উপর ভর করার চেষ্টা করেছিল বিএনপি। কিন্তু এরই মধ্যে কোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব চলে গেছে বামদের হাতে। কোটা আন্দোলনের একটি পক্ষ বিএনপি সমর্থিত হলেও মূল আন্দোলনটি আর তাঁদের হাতে নেই। এ কারণেই কোটা আন্দোলন নিয়ে আর সুবিধা করতে পারছে না বিএনপি। কোটা আন্দোলন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে দু-একটি বক্তৃতা-বিবৃতি দেওয়া হলেও, তার সবই এখন দায়সারা। নির্ভরযোগ্য সূত্রে খরব, বিএনপি নেতৃবৃন্দের আশা কোটা আন্দোলন আবার চাঙ্গা হবে। আর তখনই আবার এতে সম্পৃক্ততা বাড়াবে বিএনপি।
খুলনা-গাজীপুর দুই সিটিতে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত বিএনপি। দুই সিটিতে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে বলে অনেক বক্তৃতা-বিবৃতি দিলেন বিএনপি নেতারা। কিন্তু কোনো কারচুপিই প্রমাণ দেখাতে না পারায় ধোপে টিকেনি। আবার তিন সিটিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে বিএনপি কারচুপির অভিযোগ এরই মধ্যে মাটিচাপা পড়েছে।
গত দুদিন ধরে দেশের চাঞ্চল্যকর খবর হলো বাংলাদেশের ব্যাংকের ভল্ট থেকে স্বর্ণ উধাওয়ের অভিযোগ। একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করে নানা জন বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন। এই দলে শামিল বিএনপি নেতারাও। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্নীতি কোন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সোনা রাখার পর সেটা বদলে ধাতু জাতীয় জিনিস রাখা হয়েছে। অলংকারগুলো বদলে সেখানে নকল জিনিস রাখা হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিং করে টাকা লুট করা হলো। যার প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ করতে পারেনি।’ তবে প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবৃতির পর বোঝাই যাচ্ছে এই ইস্যু নিয়ে বেশিদূর আগাতে পারছে না বিএনপি। দু-একজন নেতার বক্তব্যই সার।
বিএনপি নেতাদের বক্তৃতা বিবৃতির ও আন্দোলনের নামে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ধরন দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইস্যু হীনতায় বিএনপি বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়েছে। যখন যেটা পাচ্ছে তা নিয়েই বিবৃতি দেওয়া ছাড়া কিছুই নেই দলটির কার্যক্রমে। খালেদা জিয়ার মুক্তি, চিকিৎসা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ইত্যাদি ইস্যুগুলোর কোনো খবর না থাকলেও অন্যের ইস্যুর উপর ভর করে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা বিএনপিতে প্রবল। বিএনপি এখন যা পাচ্ছে তাই আঁকড়ে ধরে ইস্যু খরা কাটাতে চাইছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ডুবন্ত মানুষ যেমন খড়কুটা ধরে বাঁচতে চায়, তেমন অবস্থা বিএনপির। মূল ইস্যুতে ব্যর্থ হয়ে অন্য ইস্যুর পিছনেই ছুটছে দলটির নেতারা। কিন্তু কোনো ইস্যুতেই জুতসই কিছু করতে পারছেন না তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কারান্তরীণ বেগম জিয়ার মুক্তি এবং জাতীয় নির্বাচনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার-এই দুই মূল দাবিতে ব্যর্থ বিএনপি। বিএনপি নেতৃবৃন্দ চাচ্ছে সরকারকে চাপে ফেলতে। কিন্তু ইস্যুর অভাবে নিজেরাই চাপে পড়েছে। খড়কুটোর মতো ছোট ছোট ইস্যুকে আঁকড়ে ধরছে ঠিকই। কিন্তু স্রোতের তোড়ে খড়কুটো যেমন হারিয়ে যায় তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে সেই ছোট ছোট ইস্যু। ইস্যু শূন্য বিএনপি নেতৃবৃন্দ খুঁজছে আবার নতুন কিছু।
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
এর কারণ হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সৌদি আরবে মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। যদিও মোসাদ্দেক আলী ফালুর ঘনিষ্ঠরা এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, যেহেতু মোসাদ্দেক আলী ফালু সৌদি আরবে অবস্থান করছেন এবং বিএনপির মহাসচিব সেখানে গেছেন, তারা দীর্ঘদিনের পরিচিত, ঘনিষ্ঠ- এ কারণে তার বাসায় আপ্যায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়টির সঙ্গে কোন রাজনীতি নেই।
ফালুর ঘনিষ্ঠ একজন আত্মীয় বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন যে শুধু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নন, বিএনপির যেকোন নেতা গেলেই ফালু তাদেরকে আপ্যায়িত করেন পুরনো সম্পর্কের জেরে। এর সঙ্গে কোন রাজনীতির সম্পর্ক নেই। মোসাদ্দেক আলী ফালু বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতি করেন না।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন সময় ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন, যখন বিএনপিতে অনেকগুলো ইস্যু নিয়ে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু খালেদাপন্থী বিএনপি অংশের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং বেগম জিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণেই তাকে তারেক জিয়া কোনঠাসা করেছেন- এমন বক্তব্য বিএনপিতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। আর এরকম পরিস্থিতির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে যারা বিএনপিতে এখন কোনঠাসা তারা এখন মোসাদ্দেক আলী ফালুর উত্থান চাচ্ছে। মোসাদ্দেক আলী ফালু যেন এখন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন সেটা তারা কামনা করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গেও মোসাদ্দেক আলী ফালুর এই সাক্ষাতের পর বিএনপিতে খালেদাপন্থীরা আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন। অনেকেই মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু যদি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতেন তাহলে বিএনপি একের পর এক এই ভুল সিদ্ধান্তগুলো করতেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, ফালু যখন বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখনও তিনি বিএনপির সমালোচনা করতেন, যে কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তার নিজস্ব মতামত রাখতেন। এ রকম লোক বিএনপিতে দরকার আছে।
তবে কেউ কেউ মনে করছেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার এখন সম্পদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে একটা টানাপোড়েন চলছে। কারণ খালেদা জিয়ার যে সমস্ত সম্পদ তার একটি বড় অংশ মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রয়েছে এবং ফালু এই সমস্ত সম্পত্তিগুলো দেখভাল করেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পত্তিগুলোর অংশীদারিত্ব চান, মালিকানা চান। এ কারণে তারেক জিয়া গত কিছুদিন ধরে মোসাদ্দেক আলী ফালুর উপর চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর এ কারণেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিষয়টির মধ্যস্থতা করার জন্যই ফালুর সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা তা নিয়েও কারও কারও অভিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, মোসাদ্দেক আলী ফালু একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং তার যে বিপুল সম্পদ তা পুরোটাই বেগম খালেদা জিয়ার। যেখান থেকে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথি কিছু পান এবং সেই টাকা দিয়ে তিনি লন্ডনে চলেন।
এখন তারেক জিয়া এই সমস্ত সম্পদের হিসাব এবং সম্পদগুলো যেন জিয়া পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় সেজন্য চাপ দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন একজন ব্যক্তি যিনি ফালু এবং তারেক জিয়া দুজনেরই ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। তিনি কি তাহলে ফালুর সঙ্গে তারেক জিয়ার সমঝোতা করতেই ওখানে গিয়েছিলেন? নাকি তারেকপন্থীদের কোণঠাসা করার জন্য ফালুকে রাজনীতিতে সামনে আনার নতুন করে চেষ্টা হচ্ছে।
তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মোসাদ্দেক আলী ফালু বিএনপি রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিএনপি ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
পর্দার আড়ালে ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিদেশে পলাতক জীবনযাপন করছেন। সেখানে বসেই বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করছেন। সরকারের সাথেও নানা রকম ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়েই হঠাৎ করে আলোচনা জমে উঠেছে। শুধু বিএনপির মধ্যে নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে মোসাদ্দেক আলী ফালুকে নিয়ে এখন আলোচনা জমজমাট।
কাগজে কলমে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছেন না। নৌকা প্রতীক ছাড়াই আওয়ামী লীগের এমপিরা যে যার মতো করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছেন। ১৫০ টি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৮ মে এই নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আজ মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে।